খেলাপি ঋণ কমানো নিয়ে নানা আলোচনার মধ্যেই তা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে গেছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ২৭৩ কোটি টাকার বেশি। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে তা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৭ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংক রোববার খেলাপি ঋণের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, কেবল টাকার অঙ্কে নয়, খেলাপি বেড়েছে শতকরা হিসাবেও। ডিসেম্বরে মোট বিতরণকৃত ঋণের ৮ দশমিক ১৬ শতাংশই খেলাপি, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এ সময়ে ব্যাংক খাতে মোট ঋণ ১৪ লাখ ৭৭ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা। ২০২১ সালের একই সময়ে তা ছিল ১৩ লাখ ১ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান শর্ত ছিল, ব্যাংকিং খাতের প্রধান সমস্যা খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে হবে। ঋণ নিয়ে আলোচনার জন্য ঢাকায় এসে সংস্থাটির প্রতিনিধি দলের সদস্যরাও বিষয়টি জোরালোভাবে উত্থাপন করেন।
এজন্য বিদায়ী বছরের তিন প্রান্তিকেই খেলাপি ঋণ বাড়লেও ডিসেম্বরে তা কিছুটা কমে আসে।
২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ব্যাংক মালিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আজ থেকে খেলাপি ঋণ আর এক টাকাও বাড়বে না। এ বিষয়ে ব্যাংক মালিকরা আমাকে কথা দিয়েছেন। বরং এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ খেলাপি ঋণ রয়েছে তা ধীরে ধীরে কমিয়ে আনা হবে।’
তবে অর্থমন্ত্রীর সেই কথার বাস্তব প্রতিফলন মেলেনি। বরং গত ৩ বছর ধরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে। চলতি বছরের শুরু থেকে খেলাপি ঋণে ঊর্ধ্বগতির ধারা অব্যাহত রয়েছে।
বছরের প্রথম প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ) শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। জুন শেষে তা দাঁড়ায় এক লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ আরও বেড়ে হয় এক লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা।
২০২০ ও ২০২১ সাল জুড়ে কয়েক দফায় করোনার কারণে ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে কোনো ঋণ পরিশোধ না করে কিংবা সামান্য পরিশোধ করে খেলাপিমুক্ত থাকার সুযোগ ছিল। এ ধরনের সুবিধাগুলোর বেশিরভাগের সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে। এরপর থেকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ব্যাপকভাবে।
২০২০ সাল থেকে দফায় দফায় খেলাপিমুক্ত থাকার সুবিধা বাড়ানো হয়। এখন অনেকের ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো গেলেও এক শ্রেণির ব্যবসায়ী ঋণ পরিশোধ করছেন না। ব্যাংকগুলো নানা উপায়ে চেষ্টা করেও তাদের থেকে টাকা আদায় করতে পারছে না।
গত বছরের ১৮ জুলাই ঋণ পুনঃতফসিলে ব্যবসায়ীদের বড় ছাড় দিয়ে নতুন নীতিমালা ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানোসহ নগদ এককালীন জমা দেয়ার হার কমিয়ে ব্যাংকের ক্ষমতা বাড়ানো হয়।
এর ১৬ দিনের মধ্যে সংশোধনী দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেয়া নতুন সার্কুলারে ঋণ খেলাপিদের আরও ছাড় দেয়া হয়। পাশাপাশি বেশকিছু ক্ষেত্রে কড়াকড়িও করা হয়।
খেলাপির হার বেশি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে
ডিসেম্বর শেষে রাষ্ট্রীয় সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট ও বেসিক- এই ছয় ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণ ৫৬ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। এটা বিতরণ করা ঋণের ২০ দশমিক ২৮ শতাংশ। এ সময়ে ব্যাংকগুলো দুই লাখ ৭৮ হাজার ৪২১ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে।
সেপ্টেম্বর শেষে এই ৬ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ৬০ হাজার ৫০১ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ২৩ দশমিক ০৪ শতাংশ।
জুনে এই ছয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ৫৫ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২১ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
আর মার্চ শেষে এই ছয় ব্যাংকের মোট ঋণ ছিল ২ লাখ ৪৩ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ৪৮ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা।
বেসরকারি ব্যাংক
বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ৫৬ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৫ দশমিক ১৩ শতাংশ। এ সময়ে ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণ করেছে এক লাখ ১০ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা।
সেপ্টেম্বর শেষে এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৬৬ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৬ দশমিক ২০ শতাংশ। এর আগে জুন শেষে তাদের খেলাপি ঋণ ছিল ৬২ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের ৬ দশমিক ০১ শতাংশই খেলাপি হয়ে আছে।
আর মার্চ পর্যন্ত খেলাপি ঋণ ৫৭ হাজার ৮০৩ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
বিশেষায়িত তিন ব্যাংক
কৃষি, প্রবাসীকল্যাণ ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন- বিশেষায়িত এই তিন ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৪ হাজার ৭০৯ কোটি টাকা। এই অঙ্ক তাদের বিতরণ করা ঋণের ১২ দশমিক ৮০ শতাংশ।
সেপ্টেম্বরে এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ৪ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা, যা তাদের বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ।
জুনে তাদের খেলাপি ঋণ ছিল ৪ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৭৪ শতাংশ। মার্চে এই তিন ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ৪ হাজার ১৫ কোটি টাকা। এই অঙ্ক তাদের বিতরণ করা ঋণের ১২ দশমিক ০১ শতাংশ।
বিদেশি ৯ ব্যাংক
বিদেশি মালিকানার ৯ ব্যাংকের খেলাপি ঋণও বেড়েছে। এসব ব্যাংকের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৩ হাজার ৪৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৪ দশমিক ৯১ শতাংশ।
এসব ব্যাংকের সেপ্টেম্বরে খেলাপি ঋণ দাঁড়ায় ২ হাজার ৯৭০ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
জুনে তাদের খেলাপি ঋণ ছিল ২ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৪ দশমিক ৪০ শতাংশ। এর আগে মার্চে এই ৯ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ২ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
আরও পড়ুন:একীভূত করার লক্ষ্যে বেসরকারি খাতের পদ্মা ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে এক্সপোর্ট ইম্পোর্ট ব্যাংক অফ বাংলাদেশ (এক্সিম ব্যাংক)। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের উপস্থিতিতে এই সমঝোতা স্মারকে সই করেন এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফিরোজ হোসেন ও পদ্মা ব্যাংকের এমডি তারেক রিয়াজ খান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এক্সিম ব্যাংক ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্যাংকস (বিএবি)-এর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, পদ্মা ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিমসহ তিন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ায় মঙ্গলবার থেকে পদ্মা ব্যাংকের কার্যক্রম এক্সিম ব্যাংক নামে চলবে। একীভূত ব্যাংকটি বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হবে।
চুক্তি স্বাক্ষর শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে দুই পদ্ধতিতে একীভূতকরণ হয়ে থাকে। এর একটি হলো একুইজিশন (অধিগ্রহণ), অন্যটি মার্জ (একত্রিত করা)।
‘আমরা পদ্মা ব্যাংককে একুইজিশন করিনি, মার্জ করেছি। এর ফলে পদ্মা ব্যাংকের সব দায়-দেনা এখন এক্সিম ব্যাংক নিয়ে নিয়েছে। পদ্মা ব্যাংক আর থাকছে না। একীভূত করার মাধ্যমে ব্যাংকটির কার্যক্রম চলবে এক্সিম ব্যাংকের নামে। দুই ব্যাংকের পর্ষদ আলোচনার পর আজকে (সোমবার) এ বিষয়ে নীতিগত সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হলো। এই মার্জ বাস্তবায়নে আরও ৩-৪ মাস সময় লাগতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘পদ্মা ব্যাংক একীভূত করার ক্ষেত্রে সরকারের কোনো চাপ ছিল না। আমরা এটা করেছি দেশের স্বার্থে, দেশের অর্থনীতির স্বার্থে। পদ্মা ব্যাংককে একীভূত করা হলেও আমানতকারীদের কোনো সমস্যা হবে না, সবার আমানতই নিরাপদে থাকবে। পদ্মা ব্যাংকের আমানতকারীরা এক্সিম ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পারবেন।’
নজরুল ইসলাম মজুমদার আরও বলেন, ‘পদ্মা ব্যাংককে একীভূত করার কারণে নতুন কার্যক্রম চলবে এক্সিম ব্যাংকের নামে। একীভূত করা হলেও ব্যাংকটির কেউ চাকরি হারাবেন না। পদ্মা ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগে প্রায় ১২শ’ কর্মী রয়েছেন। তাদের কারও চাকরি যাবে না। সবাই কর্মরত থাকবেন এক্সিম ব্যাংকের হয়ে। আমাদের আমানতকারী ও শেয়ারহোল্ডারদেরও কোনো ক্ষতি হবে না। সবকিছু আগের মতোই চলবে।’
চুক্তির বিভিন্ন দিক নিয়ে পরে সংবাদ সম্মেলন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক।
তিনি বলেন, ‘ডিফল্টারদের পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। দুটি অডিট ফার্ম নিয়োগ করা হবে। অডিটের মাধ্যমে পরিচালকদের দায়-দেনাও উঠে আসবে। আইনি প্রক্রিয়া ফলো করে আমরা সামনের দিকে আগাবো। যত দ্রুত সম্ভব দুটি ব্যাংক মার্জ হয়ে এক্সিম ব্যাংকে পরিণত হবে।’
আরও পড়ুন:ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ১৭ মার্চ, ২০২৪ রোববার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোববার এ কথা জানানো হয়।
ব্যাংকের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ব্যাংকের ডাইরেক্টর বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন ও নাসির উদ্দিন, এফসিএমএ এবং অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর আলতাফ হুসাইন।
বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে যাচ্ছে চতুর্থ প্রজন্মের পদ্মা ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের উপস্থিতিতে একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শুরু করতে ব্যাংক দুটি একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করবে।
সোমবার ওই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে দুই ব্যাংকের উদ্যোক্তারাও উপস্থিত থাকবেন।
পদ্মা ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার বিষয়ে বৃহস্পতিবার এক্সিম ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। একীভূত হওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এদিন দুপুরের পর পরিচালনা পর্ষদের সভা ডাকে পদ্মা ব্যাংকও। এ সভায় ব্যাংক দুটি একীভূত হওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানা গেছে।
ব্যাংক দুটি একীভূতকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক স্ নিয়মকানুন ও ব্যাংকিং বিধিমালা সঠিকভাবে অনুসরণ করেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘কীভাবে এই একীভূত হওয়ার কার্যক্রম সম্পন্ন হবে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা ও পরামর্শক্রমে দুই ব্যাংকের আইনজীবী মিলে ঠিক করবেন। এ নিয়ে সোমবার একটি সমঝোতা চুক্তি হবে। ওই চুক্তির পর একীভূত হওয়ার কার্যক্রমের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
২০১৩ সালে চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংক হিসেবে অনুমোদন পায় সাবেক ফারমার্স ব্যাংক। প্রতিষ্ঠার মাত্র তিন বছর পর বেঁচে থাকার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল ব্যাংকটি। ফলে আওয়ামী লীগের প্রাক্তন প্রেসিডিয়াম সদস্য মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে ২০১৭ সালে ব্যাংকটির বোর্ড ভেঙে দেয়া হয়। তখন ফারমার্স ব্যাংককে আর্থিক মন্দা থেকে উদ্ধার করতে সরকার একটি আর্থিক লাইফলাইন নিয়ে পদক্ষেপ নেয়।
ফারমার্স ব্যাংকের নাম বদলে করা হয় পদ্মা ব্যাংক। ২০১৮ সালে পদ্মা ব্যাংকের নতুন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন দেশের বিশিষ্ট শিল্পোদ্যোক্তা ও শীর্ষ ব্যবসায়ী ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত। তার সুদক্ষ নেতৃত্বে ব্যাংকটি অনেক ক্ষেত্রেই সফলতা অর্জন করে। যেমন- ৯০০ কোটি টাকা নগদ আদায়, ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করা। পাশাপাশি ব্যক্তি এবং করপোরেট অ্যাকাউন্টের বিপরীতে ৪ হাজার ১০০ কোটি টাকা প্রদান করা। স্বতন্ত্র এবং ক্ষুদ্র আমানত ধরে রাখার হার ছিল ন্যূনতম ৫০ শতাংশ।
এ ছাড়া ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের নেতৃত্বে ব্যাংকটির কার্যক্রম পরিচালনায় বেশ কিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে ক্রেডিট অ্যাডমিনসহ লেনদেনের কেন্দ্রীয়করণ, ৩টি নতুন শাখা ও ১৪টি উপশাখা চালু করা, ইসলামী ব্যাংকিং সিস্টেম প্রবর্তন করা, বাংলাদেশ অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউস (বিএসিএইচ) এবং রিয়েল-টাইম গ্রোস সেটেলমেন্টের (আরটিজিএস) মাধ্যমে লেনদেন নিষ্পত্তিকরণ এবং কিউআর কোড, পদ্মা ওয়ালেট, ই-চালান ইত্যাদি চালু করা।
প্রসঙ্গত, পদ্মা ব্যাংককে অন্য একটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার নিমিত্তে ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত এ বছরের জানুয়ারি মাসে পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে বিরতি নেন এবং সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিমকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান-এর দায়িত্ব দেয়া হয়।
৪ মার্চ ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্যাংকসের (বিএবি) একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে গভর্নর জানান, চলতি বছরের মধ্যে ৭ থেকে ১০টি দুর্বল ব্যাংককে সবল বা ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা হতে পারে।
এক্সিম ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯৯ সালে। ২০০৪ সালে ব্যাংকটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। সবশেষ বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারে এক্সিম ব্যাংকের শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ১০ টাকা। এদিন ব্যাংকটির শেয়ারের দাম ১ শতাংশের মতো বেড়েছে।
আরও পড়ুন:নারী উদ্যোক্তা ও কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতে গ্যারান্টি সুবিধা প্রদানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি।
ক্ষুদ্র শিল্পের কাঙ্ক্ষিত বিস্তার, কর্মসংস্থান সৃষ্টি তথা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে নারী উদ্যোক্তা এবং কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতে ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধা প্রদানের জন্য মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে দুটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
চুক্তি দুটির অধীনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধা গ্রহণ করে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক নারী উদ্যোক্তা এবং কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতে জামানতবিহীন বিনিয়োগ করতে সক্ষম হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার এবং নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিনের উপস্থিতিতে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ হাবিব হাসনাত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ক্রেডিট গ্যারান্টি ডিপার্টমেন্টের পরিচালক নাহিদ রহমান চুক্তি দুটি স্বাক্ষর করেন। এ ছাড়াও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং বিনিয়োগ বিভাগের প্রধান এস এম মিজানুর রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ব্যাংকিং খাতে ব্যাংকিং অ্যাপ ‘সেলফিন’ ব্যবহারের মাধ্যমে ঢাকা ওয়াসার সর্বোচ্চ বিল সংগ্রহে প্রথম পুরস্কার অর্জন করেছে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডিএন্ডসি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, ১০ মার্চ প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ঢাকা ওয়াসা আয়োজিত ‘বিল কালেকশন অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান অনুষ্ঠানে ইসলামী ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার নিকট ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট হস্তান্তর করেন।
ঢাকা ওয়াসার ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও প্রকৌশলী তাকসিম এ খানের সভাপতিত্বে এতে এলজিআরডিএন্ডসি মন্ত্রণালয়ের সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার ও ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. সুজিত কুমার বালা।
এ সময় এলজিআরডিএন্ডসি মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন নির্বাহী ও কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। প্রেস রিলিজ
অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির হার সন্তোষজনকে পর্যায়ে উন্নীতকরণে সোনালী ব্যাংক পিএলসির উদ্যোগে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের কনফারেন্স কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ব্যাংকের সিইও অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আফজাল করিম।
ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মীর মোফাজ্জল হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির হার সন্তোষজনক পর্যায়ে উন্নীত করার লক্ষ্যে কৌশল ও কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়।
সভায় অন্যদের মধ্যে ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টরবৃন্দ ও জেনারেল ম্যানেজারবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশ নেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিতে ট্রান্সফাস্টের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠালে ডিজিটাল ড্রয়ের মাধ্যমে প্রতি ব্যাংকিং ডে-তে ১ লাখ টাকা এবং ক্যাম্পেইন শেষে মেগা বিজয়ী প্রবাসীর জন্য রয়েছে ১৫০০ সিসির একটি প্রাইভেট কার জিতে নেয়ার সুযোগ।
প্রত্যেক বিজয়ীকে কো-ব্র্যান্ডেড কার্ডের মাধ্যমে এই টাকা প্রদান করা হবে। এ অফার চলবে ১২ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত।
ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ কায়সার আলী সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে প্রধান অতিথি হিসেবে ইসলামী ব্যাংক- ট্রান্সফাস্ট বিশেষ রেমিট্যান্স মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য দেন ট্রান্সফাস্ট এর এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অফ ট্রান্সফার সলিউশন্স, মাস্টারকার্ড- অ্যালান মারকুয়ার্ড। ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মিফতাহ উদ্দীনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর জে.কিউ.এম. হাবিবুল্লাহ, এফসিএস ও মোঃ আলতাফ হুসাইন।
এসময় আরো বক্তব্য দেন ট্রান্সফাস্ট এর এশিয়া প্যাসিফিকের ডাইরেক্টর সুদীপ্ত ঘোষ এবং স্বাগত বক্তব্য দেন ব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিসেস উইং প্রধান মোহাম্মদ এহসানুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর এ এফ এম কামাল উদ্দীন, ক্যামেলকো তাহের আহমেদ চৌধুরীসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধতন নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া ব্যাংকের সকল জোনপ্রধান, শাখাপ্রধান ও উপশাখা ইনচার্জগণ ভার্চুয়াল প্লাটফর্মের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে সংযুক্ত ছিলেন। প্রেস রিলিজ
মন্তব্য