ব্যাংকে কর্মরত অফিসার ও সমমানের পদ থেকে মহাব্যবস্থাপক ও সমমানের পদ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পাস বাধ্যতামূলক করে বুধবার সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ নির্দেশনা ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
২০২০ সালের ১৩ অক্টোবর এ সংক্রান্ত জারিকৃত সার্কুলার রহিত বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এর আগে ব্যাংকে কর্মরত অফিসার ও সমমানের পদ থেকে মহাব্যবস্থাপক ও সমমানের (প্রধান নির্বাহীর অব্যবহিত নিচের এক স্তর ব্যতীত অন্যান্য সব কর্মকর্তা, যে নামেই অভিহিত হোক না কেন) পদ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে পদোন্নতির ক্ষেত্রে বরাদ্দকৃত মোট নম্বরের মধ্যে ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষার পাসের জন্য একটি নির্দিষ্ট নম্বর বরাদ্দ রাখতে হতো।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে জারিকৃত সার্কুলারে বলা হয়, ‘দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে ব্যাংকিং খাতের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই এ খাতে মৌলিক ব্যাংকিং জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির আবশ্যকতা অনস্বীকার্য। ব্যাংকিং আইন ও নিয়মাচার অনুশীলন সম্পর্কিত বিষয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার একটি মানদণ্ড হলো ইনস্টিটিউট অফ ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (আইবিবি) কর্তৃক পরিচালিত দুই পর্বের ব্যাংকিং ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন।
‘ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষার পাঠ্যক্রম ব্যাংকিংবিষয়ক যাবতীয় তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞান অন্তর্ভুক্ত করে প্রণয়ন করা হয়, যেখানে ব্যাংকিং সম্পর্কিত প্রাথমিক ও মৌলিক জ্ঞান এবং পরীক্ষায় উচ্চতর ব্যাংকিং জ্ঞান ও দক্ষতা যাচাই করা হয়।’
সার্কুলারে বলা হয়, JAIBE DAIBB পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ব্যাংকিং ডিপ্লোমা প্রদান করা হয়ে থাকে।
এতে আরও বলা হয়, ‘ব্যাংক কর্মকর্তাদের দক্ষতা, যোগ্যতা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সিনিয়র অফিসার অথবা সমতুল্য পদের পরবর্তী সকল পদে পদোন্নতির যোগ্যতার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য ব্যাংকিং ডিপ্লোমা উভয় পর্ব পাস বাধ্যতামূলক করা হলো। তবে ব্যাংকিং কার্যক্রমে সরাসরি সংশ্লিষ্ট নয়, যেমন: ডাক্তার, প্রকৌশলী (পুরকৌশল, যন্ত্রকৌশল, তড়িৎকৌশল ও আইটি প্রফেশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা) এবং প্রচার ও প্রকাশনা পদে নিয়োগকৃত কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে এ নির্দেশনা প্রযোজ্য নয়।’
বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিং খাত একেবারে নড়বড় হয়েছে গেছে। সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের (এসভিবি) পথে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছে দেশটির আরও ২০০ ব্যাংক। গ্রাহকদের আমানত তুলে নেয়ার ওপর নির্ভর করছে এই ব্যাংকগুলোর ভাগ্য; এখন সবকিছু নির্ভর করছে আমানতকারীদের ওপর।
নিউইয়র্ক পোস্টের এক গবেষণা প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিং খাত নিয়ে এই আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, যেসব কারণে যুক্তরাষ্ট্রেরএসভিবি কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে, একই কারণে দেশটির আরও অন্তত ২০০টি ব্যাংক ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। এক গবেষণার বরাতে নিউইয়র্ক পোস্ট বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ১৮৬টি ব্যাংক টালমাটাল হয়ে যেতে পারে যদি এগুলোর অর্ধেক গ্রাহক তাদের আমানত হঠাৎ তুলে নিতে শুরু করে। এতে এমনকি ব্যাংকগুলোর পতনও ঘটতে পারে।
এক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের এসভিবি ও সিগনেচার ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধের পর বিশ্বজুড়ে পুঁজিবাজারে দরপতনের মধ্যে সোশাল সায়েন্স রিসার্চ নেটওয়ার্কের (এসএসআরএ) এ গবেষণার তথ্য সামনে আনল নিউইয়র্ক পোস্ট। যুক্তরাষ্ট্রের দুই ব্যাংকের পর শেয়ারবাজারে ক্রমাগত দরপতনের মধ্যে থাকা সুইজারল্যান্ডের ক্রেডিট সুইস ব্যাংক সংকটে পড়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী এ ব্যাংকটি মাত্র ৩ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারে দেশটির সবচেয়ে বড় ব্যাংক কিনে নিচ্ছে ইউবিএস।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ তোলপাড় করা এমন খবরের মধ্যে আমেরিকার ব্যাংকগুলোর দুর্বলতার কথা উঠে এসেছে এসএসআরএ এর গবেষণায়। এতে বলা হয়, এমনকি ওই ১৮৬ ব্যাংকের বিমার আওতায় থাকা আমানতকারী অর্থাৎ যাদের জমা রাখা টাকার পরিমাণ আড়াই লাখ ডলার বা এর কম, তারাও টাকা পেতে সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন। যদি এসব ব্যাংকে এসভিবির মতো সংকট তৈরি হয়। গবেষণার সঙ্গে যুক্ত এক অর্থনীতিবিদ বলেছেন, ‘তাদের গবেষণা অনুযায়ী এই ব্যাংকগুলো অন্য সরকারি হস্তক্ষেপ বা পুনর্মূলধনের ব্যবস্থা না করা গেলে এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকি কোনোভাবেই কমবে না।’
এ অবস্থায় উদ্বেগের কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, আর্থিক এসব প্রতিষ্ঠান তাদের সম্পদের বড় অংশ সুদনির্ভর মূল্য সংবেদনশীল উপকরণ যেমন সরকারি বন্ড ও বন্ধকী সিকিউরিটিজের ওপর নির্ভরশীল। ফেডারেল রিজার্ভ গত এক বছরে সুদের হার বাড়ানোর কারণে পুরোনো ও কম সুদের বিনিয়োগও মারাত্মকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে। ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক এসভিবিও তাদের মূলধন দীর্ঘমেয়াদি সরকারি বন্ড আকারেই রেখেছিল। একে প্রাথমিকভাবে নিরাপদ হিসেবেই ধরা হয়। তবে এসভিবি যখন বন্ডগুলো কেনে তখন এগুলোর দাম বেশি ছিল। কারণ সুদের হার তখন থেকে বেড়েছে। সংকট শুরু হলে গ্রাহকের আমানত ফেরত দেয়ার জন্য মেয়াদ পূরণের আগেই হঠাৎ এসব বন্ড বিক্রির কারণে বড় লোকসানে পড়ে এসভিবি।
এতে দুই বিলিয়ন ডলার ক্ষতির বিষয়টি ঘোষণা দেয়া হলে দরপতন শুরু হয় ব্যাংকটির শেয়ারে। এক সপ্তাহ আগে ধসের মুখে পড়া এ সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক প্রযুক্তি খাতের চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচিত ছিল। ব্যাংকটি যখন এ খবর প্রকাশ করে এবং একইসঙ্গে ওয়াল স্ট্রিট থেকে অতিরিক্ত পাঁচ লাখ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহের পরিকল্পনা জানায় তখনই ব্যাংকটি দেউলিয়া হতে পারে বলে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। শেয়ারের দাম কমতে থাকে এবং একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বরাতে তা সাধারণ আমানতকারীদের মধ্যেও আতংক তৈরি করে। এতে এসভিবিসহ অন্য ব্যাংকেও আমানত তুলে নেয়ার হিড়িক পড়ে।
এমন উদ্বেগের কারণে ক্যালিফোর্নিয়ার স্টার্টআপগুলো ঝড়ের গতিতে অর্থ তুলে নিতে শুরু করে। যদিও এর নিয়ন্ত্রক সংস্থা ক্যালিফোর্নিয়া ডিপার্টমেন্ট অব ফাইন্যান্সিয়াল প্রটেকশন অ্যান্ড ইনোভেশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল এসভিবির বিমাকরা আমানত রক্ষা করবে ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স ন্যাশনাল ব্যাংক অব সান্তা ক্লারা। এমনকি আতঙ্ক কমাতে আড়াই লাখ ডলারের বেশি যাদের আমানত ছিল তাদেরও সেই ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এতে আমানতকারীরা আশ্বস্ত হতে পারেননি।
এমন প্রতিশ্রুতির পরও ‘এসভিবি সমমানের’ ব্যাংকগুলো থেকে আমানতকারীরা তাদের অর্থ তুলে নেয়া বন্ধ হচ্ছে না বলে নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এভাবে যদি ব্যাংকগুলো আমানত হারাতে থাকে তাহলে সিলিকন ভ্যালির মতোই এসব ব্যাংকও একই পরিস্থিতির শিকার হতে পারে বলে ওই গবেষণায় উঠে আসে। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ব্যাংকগুলোর সম্পদের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনাভিত্তিতে সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলোর বাজারমূল্য আনুমানিক ২ ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতির মুখে পড়েছে।
বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো তাদের খেলাপি ঋণের হিসাব ঠিকমতো দেখাচ্ছে না। খেলাপি ঋণ হিসাবের আন্তর্জাতিক আইন মানা হলে ব্যাংকগুলোর সম্পদ আরও কম হতো। কিন্তু ব্যাংকগুলো সেই আইন না মেনে নিজেদের সম্পদ বাস্তবের চেয়ে বেশি দেখাচ্ছে।
ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) চেয়ারম্যান মো. হামিদ উল্লাহ ভূঁঞা সোমবার এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
পুঁজিবাজারভিত্তিক সাংবাদিকদের সংগঠন ক্যাপিট্যাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) দেশের পুঁজিবাজার নিয়ে ‘সিএমজেএফ টক’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে।
হামিদ উল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশে আইএফআরএস মেনে হিসাব রাখার কথা। কিন্তু দেশের ব্যাংক খাতে আইএফআরএস ৯-এর নিয়ম মানা হচ্ছে না। বাংলাদেশে আইএফআরএস-এর সব আইন মানলে ব্যাংকের সম্পদ ৪০ শতাংশ অবলোপন করতে হবে বা কমে যাবে।
‘আইএফআরএস হচ্ছে হিসাব রক্ষণের আন্তর্জাতিক নিয়ম। এই নিয়মগুলো বিশ্বের সব দেশের কোম্পানি মেনে চলে, যাতে আর্থিক প্রতিবেদনগুলো স্বচ্ছ হয়।
‘আইএফআরএস-এর ৯ নম্বর আইনটিতে বলা আছে- কিভাবে একটি কোম্পানি তাদের আর্থিক দায় ও আর্থিক সম্পদের হিসাব রাখবে। ব্যাংক যে ঋণগুলো দেয় সেগুলো তাদের হিসাব বইয়ে আর্থিক সম্পদ হিসেবে থাকে। আন্তর্জাতিক মান ব্যবহার করলে এই ঋণ বা আর্থিক সম্পদ অনেক কম দেখাতে হতো।’
এফআরসি চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের আর্থিক প্রতিবেদনে জালিয়াতি ঠেকাতে ২০১৫ সালে গড়ে তোলা হয় ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি)। এখন যদি কোনো হিসাব নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান আর্থিক প্রতিবেদনে জালিয়াতি করতে সাহায্য করে তাকে শাস্তির আওতায় আনা যায়।
‘এ মুহূর্তে আইএফআরএস-এর ৯ ধারা বাস্তবায়ন করা হলে ব্যাংকের সম্পদ ৪০ শতাংশ রাইট অফ (অবলোপন) করতে হবে। আমরা চাই এটি বাস্তবায়ন করা হোক। তাহলে ব্যাংকের প্রকৃত চিত্র উঠে আসবে।’
রাজধানীর পল্টনে সিএমজেএফ-এর নিজস্ব কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সভাপতি জিয়াউর রহমান। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবু আলী।
হামিদ উল্লাহ ভূঁঞা বলেন, ‘খেলাপি ঋণ বছরের পর বছর টেনে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে। এই টাকা কি কখনো ফেরত পাওয়া যাবে? ব্যাংকগুলো যদি আদায় করতে সক্ষম হয় তাহলে সমস্যা নেই। তবে আমাদের দেশের সংস্কৃতিতে দেখি খেলাপি ঋণ আদায় করা যায় না। বরং ২ শতাংশ জমা দিয়ে এগুলোকে আবার নিয়মিত ঋণে কনভার্ট করা হয়।
‘এ ২ শতাংশ দিয়ে তো ইন্টারেস্ট (সুদ আয়) আসে না। কারণ ইন্টারেস্ট তার চেয়ে অনেক বেশি। অথচ রি-সিডিউল করে রেগুলার করা হচ্ছে। আর ওই ঋণখেলাপি তখন আরেক ব্যাংকে গিয়ে লোন নিচ্ছে।’
হামিদ উল্লাহ বলেন, ‘আমি মনে করি আইএফআরএস-৯ বাস্তবায়ন করা হোক। ব্যাংকের সব ফিগার রিটার্ন অফ করে ব্যাংক একটি সেটেলড পজিশনে আসুক। কিন্তু সম্ভব না। আমি অনেকবার চেষ্টা করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক এটা মেনেই নিচ্ছে না।’
এফআরসিতে নিবন্ধিত হতে হবে অডিটরদের
আগামী ৩০ মে-র মধ্যে অডিটরদের এফআরসিতে নিবন্ধিত হতে হবে। কোনো অডিটর নিবন্ধিত না হলে তিনি তালিকাভুক্ত কোম্পানিসহ জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠান অডিট করতে পারবে না।
এফআরসি চেয়ারম্যান বলেন, কোনো কোম্পানির রাজস্ব ৫০ কোটি টাকা বা তার বেশি হলে, সেই কোম্পানি জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট কোম্পানি হিসেবে বিবেচিত হবে।
এ ধরনের প্রতিষ্ঠান আছে ৩ হাজার চার শ’র মতো। এর বাইরে আড়াই হাজারের মতো ক্ষুদ্র ঋণ দেয়া প্রতিষ্ঠান আছে। এগুলোও জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হবে। সব মিলিয়ে সাড়ে ৫ হাজারের মতো প্রতিষ্ঠান জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট হিসেবে বিবেচিত হবে। কোনো অডিটর এফআরসিতে তালিকাভুক্ত না হলে এসব প্রতিষ্ঠান অডিট করতে পারবে না।
নিয়ম মানছে না বিমা কোম্পানি
হামিদ উল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, ‘জীবন বিমা কোম্পানিগুলো কখনও প্রফিট অ্যান্ড লস অ্যাকাউন্ট করে না। তারা একটা অ্যাকাউন্ট করে, সেটি হলো রেভিনিউ অ্যাকাউন্ট। কিন্তু আইএএস ১-এ স্পষ্ট বলা আছে, আপনার কোম্পানির নেচার যাই হোক না কেন প্রফিট অ্যান্ড লস অ্যাকাউন্ট করতে হবে। কিন্তু এরা তা করে না। এমনকি আমরা চিঠি দিলে রেসপন্সও করে না।
‘অন্যান্য রেগুলেটর কিছুটা হলেও রেসপন্স করে। এই একটা সেক্টর, যেখান থেকে আমরা আজ পর্যন্ত কোনো রেসপন্স পাইনি।’
এফআরসিকে শক্তিশালী করা হচ্ছে
হামিদ উল্লাহ ভূঁঞা বলেন, এফআরসিতে জনবল নিয়োগ দেয়ার পর আমি প্রথম হাত দেব ক্যাপিটাল মার্কেটে। আমি ক্যাপিটাল মার্কেটের কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতার অবস্থা দেখতে চাই। ক্যাপিটাল মার্কেটের কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদনে যদি ম্যানিপুলেশন হয় তাহলে অনেক মার্জিনাল ইনভেস্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচনে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নিজাম চৌধুরীসহ জয় পেয়েছেন আওয়ামীপন্থি গণতান্ত্রিক ঐক্য পরিষদের ২৫ প্রার্থী।
নির্বাচন কমিশনার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ রোববার এ ফল ঘোষণা করেন।
এই নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৪, ১১ ও ১৪ মার্চ ঢাকার বাইরের কেন্দ্রগুলোতে ভোটগ্রহণ হয়।
গত ১৮ মার্চ ঢাকায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়। গণনা শেষে ১৯ মার্চ ফল ঘোষণা করা হয়।
ঈদ ও রমজানসহ বিভিন্ন পার্বণ সামনে রেখে বরাবরই রেমিট্যান্সে বাড়তি প্রবাহ তৈরি হয়। ব্যতিক্রম হচ্ছে না এবারও। রমজান মাস সামনে রেখে বাড়তে শুরু করেছে রেমিট্যান্স। পরিবার-পরিজনের কাছে বেশি বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। চলতি মার্চ মাসের ১৭ দিনেই ১১৬ কোটি ৪২ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন তারা।
ব্যাংকগুলোতে বর্তমানে রেমিট্যান্সে প্রতি ডলারের বিপরীতে ১০৭ টাকা দেয়া হচ্ছে। সে হিসাবে এই ১৭ দিনে ১২ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা দেশে পাঠিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা। প্রতিদিন গড়ে এসেছে ৭৩৩ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) আট মাস ১৭ দিনে ১ হাজার ৫১৮ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় সাড়ে ৪ শতাংশ বেশি।
রেমিট্যান্স প্রবাহে বাড়তি গতি আসায় স্ফীত হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও। রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩১ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার।
ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পবিত্র রমজান মাস শুরু হবে ২৩ মার্চ (চাঁদ দেখাসাপেক্ষে)। রোজা ও ঈদ সামনে রেখে আগামী দিনগুলোতে রেমিট্যান্স আরও বাড়বে আশা করা যায়।
দেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ সূচক রেমিট্যান্সের প্রবাহ টানা তিন মাস বাড়ার পর ফেব্রুয়ারিতে হোঁচট খায়। ওই মাসে ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। তার আগের তিন মাসে এসেছিল যথাক্রমে ১৫৯ কোটি ৫২ লাখ, ১৬৯ কোটি ৯৭ লাখ ও ১৯৫ কোটি ৮৯ লাখ ডলার। সে হিসাবে প্রতিদিন এসেছিল ৫ কোটি ২৫ লাখ ডলার।
মার্চ মাসে এই সূচকে ফের গতি ফিরেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক রোববার রেমিট্যান্স প্রবাহের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, এই মাসের প্রথম ১৭ দিনে ১১৬ কোটি ৪২ লাখ ডলারের যে রেমিট্যান্স এসেছে, তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ৬ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে প্রায় ১৫ কোটি ডলার। বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২ কোটি ৫২ লাখ ২০ হাজার ডলার। ৪২টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৯৮ কোটি ৬১ লাখ ১০ হাজার ডলার। আর ৯টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩৭ লাখ ৪০ হাজার ডলার। এই গতিতে রেমিট্যান্স এলে মাস শেষে ২ বিলিয়ন বা ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন ব্যাংকাররা।
বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর সূচক বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভের অন্যতম প্রধান উৎস প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স।
২০২১-২২ অর্থবছরে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স আসে, যা আগের বছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ কম ছিল।
চলতি অর্থবছরটা বেশ উল্লম্ফনের মধ্য দিয়েই শুরু হয়। প্রথম মাস জুলাইয়ে ২১০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা। আগস্টে আসে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। পরের মাস সেপ্টেম্বরে এক ধাক্কায় তা নেমে আসে ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলারে। অক্টোবরে তা আরও কমে দাঁড়ায় ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলারে।
রেমিট্যান্সে নিম্নগতি থেমে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দেয় নভেম্বরে। এই মাসে রেমিট্যান্স আসে ১৫৯ কোটি ৫২ লাখ ডলার। আর ডিসেম্বরে আসে ১৭০ কোটি ডলার। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে তা বেড়ে হয় ১৯৬ কোটি ডলার। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে তা আবার ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলারে নেমে যায়।
ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স কমার কারণ জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, ‘প্রতি বছরই ফেব্রুয়ারি মাসে অন্যান্য মাসের চেয়ে রেমিট্যান্স কিছুটা কম আসে। কারণ ফেব্রুয়ারি মাস ২৮ দিনে শেষ হয়।’
বর্তমানে রেমিট্যান্স বাড়ার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রতি বছরই রোজা ও দুই ঈদের আগে রেমিট্যান্স বাড়ে; এবারও তাই হচ্ছে। দুই-তিন দিন পর রোজা শুরু হবে। রোজা সামনে রেখে প্রবাসীরা পরিবার-পরিজনের বাড়তি প্রয়োজন মেটাতে বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন।
‘এই ইতিবাচক ধারা রোজার ঈদ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছি। এরপর কোরবানির ঈদ সামনে রেখে চলতি অর্থবছরের শেষ মাস জুনেও রেমিট্যান্স বাড়বে।’
ব্যাংকের চেয়ে খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম বেশি হওয়ায় বেশি টাকা পাওয়ার জন্য মাঝে কয়েক মাস প্রবাসীরা অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে দেশে অর্থ পাঠিয়েছেন। এর ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স কমে গিয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক হুন্ডির বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়ায় এখন ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়তে শুরু করেছে।
২০২০-২১ অর্থবছরে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে, যা ছিল আগের বছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।
বাড়ছে রিজার্ভ
রোববার দিন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩১ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার। গত ৭ মার্চ এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের ১ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৩১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছিল। রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়ায় গত কয়েক দিনে তা কিছুটা বেড়ে ৩১ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।
আরও পড়ুন:গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের চান্দিনা শাখা ১৯ মার্চ ২০২৩ তারিখ হতে নতুন ঠিকানা ‘সাহা প্লাজা’, ৫৪৪ মধ্যবাজার, চান্দিনা পৌরসভা, চান্দিনা, কুমিল্লায় আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করেছে। পূর্বে এই শাখার কার্যক্রম আলহাজ্ব ডা. রোসমত আলী সুপার মার্কেট, চান্দিনা পৌরসভা, চান্দিনা, কুমিল্লা হতে পরিচালিত হতো।
ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মশিউর রহমান জেহাদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শাখাটির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এ সময় ব্যাংকের ইভিপি ও জেনারেল সার্ভিসেস ডিভিশনের প্রধান জুলফিকার আলী খান, চান্দিনা শাখার ব্যবস্থাপক এবং ব্যাংকের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাসহ আমন্ত্রিত সম্মানিত অতিথি ও গ্রাহকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও বিশ্বস্ত ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক দেশব্যাপী স্বকীয়তা বজায় রেখে সেবা প্রদান করবে বলে অনুষ্ঠানে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
বিভিন্ন উৎসব-পার্বণ ঘিরে জালনোট চক্রের তৎপরতা বেড়ে যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আসন্ন পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে এমন অপতৎপরতা রোধের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অফ কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ রোববার সার্কুলারের মাধ্যমে এই নির্দেশ দিয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়, পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে জাল নোট প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ব্যাংকগুলোকে ঢাকা শহর এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা অফিসসহ নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে সন্ধ্যার পর কমপক্ষে এক ঘণ্টা এই সতর্কতা প্রচার করতে হবে।
উল্লিখিত ভিডিও চিত্রটি ব্যাংকের শাখাগুলোতে গ্রাহকদের জন্য স্থাপিত টিভি মনিটরগুলোতে পুরো ব্যাংকিং সময়ে দেখাতে হবে। এ নির্দেশনা অনুযায়ী শাখায় উচ্চ মূল্যমানের নোট গ্রহণ ও প্রদানকালে এবং এটিএম মেশিনে টাকা ফিডিংয়ের আগে আবশ্যিকভাবে জাল নোট শনাক্তকারী মেশিন দিয়ে নোট পরীক্ষা করতে হবে।
ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি ও মোটরসাইকেলসহ অটোমোবাইল জগতের নানা পণ্য নিয়ে সম্প্রতি রাজধানীতে হয়ে গেলো তিনদিনের ঢাকা মোটর শো। এখানে গ্রাহকদের অটো লোনের নানা সুবিধা জানাতে পসরা সাজিয়েছিল পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড।
মেলায় আগত গ্রাহকরা বিপুল উৎসাহে ঘুরে দেখেন পদ্মা ব্যাংকের স্টল। এই সময় তারা কার লোন সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন। গ্রাহকরা এমন আয়োজনে আসায় পদ্মা ব্যাংককে ধন্যবাদ জানান। কেননা পদ্মা ব্যাংক যে এত সহজ শর্তে গাড়ির ঋণ দেয় সেটা তাঁদের অনেকেরই জানা ছিল না। এখন এমন তথ্য জানায় অনেকের গাড়ি কেনার স্বপ্ন পূরণ হবে বলে মন্তব্য করেন।
পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত মেলায় পদ্মা ব্যাংকের স্টলটি পরিদর্শন করেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক রিয়াজ খান। এ সময় তিনি গাড়ি ব্যবসায়ী এবং লোন নিতে আগ্রহী গ্রাহকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় ছাড়াও পদ্মা অটো লোন সম্পর্কে মতবিনিময় করেন।
এর আগে স্টলটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পদ্মা ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড রিটেইল ব্যাংকিং হেড রকিবুল হাসান চৌধুরী। এই সময় উপস্থিত ছিলেন হেড অফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ব্র্যান্ডস সায়ন্তনী ত্বিষা, রিটেইল প্রোডাক্ট হেড কাজী মো. ফজলুর রহমান-সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
মন্তব্য