বন্দরনগরী চট্টগ্রামের প্রাণকেন্দ্র আগ্রাবাদে রোববার শাখা উদ্বোধন করেছে পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড। এটি ব্যাংকের ৬০তম শাখা।
একই দিনে উদ্বোধন করা হয় আগ্রাবাদ এটিএম বুথের।
এ বুথ থেকে গ্রাহকরা দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা যেকোনো সময় টাকা উত্তোলন করতে পারবেন নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী। এ ছাড়া আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় জিইসি ও জামাল খান রোড উপশাখার।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আগ্রাবাদ শাখার উদ্বোধন করেন স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ।
চট্টগ্রামের এ শাখায় গ্রাহকদের জন্য আছে আধুনিক সব ব্যাংকিং সেবা। সম্প্রতি কোর ব্যাংকিং সিস্টেম আপডেট করে পদ্মা ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য নিয়ে এসেছে আরও সহজ প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং পরিষেবা।
আগ্রাবাদ শাখা ও উপশাখাগুলোতে সব ধরনের ব্যাংক হিসাব খোলা, নগদ টাকা জমা ও উত্তোলন, চেক বই ও পে অর্ডার ইস্যু, ক্লিয়ারিং চেক ও পে-অর্ডার জমা, আমানত ও ঋণ সুবিধা, রিয়েল টাইম অনলাইন ব্যাংকিং সুবিধা, ইউটিলিটি বিল জমাসহ সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা পাওয়া যাবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ পরিচালনা পর্ষদকে ধন্যবাদ জানান নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়েও ব্যাংকটিকে এগিয়ে নিতে সক্ষম হওয়ায়।
চট্টগ্রামের প্রাণকেন্দ্রে পদ্মা ব্যাংকের ব্যাংকিং সেবা নিয়ে আসায় তিনি শুভেচ্ছা জানান সব কর্মকর্তাদের।
গ্রাহকদের আস্থার প্রতিদান দিয়ে ব্য্যাংকিংয়ের নতুন নতুন সেবা নিয়ে আসার জন্য নানা পরামর্শ দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক রিয়াজ খান বলেন, নতুন নতুন শাখা, উপশাখা ও এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট উদ্বোধনের মাধ্যমে চট্টগ্রামবাসীর দোরগোড়ায় ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতেই কাজ করে চলেছে পদ্মা ব্যাংকের সব কর্মী ও দক্ষ পরিচালনা পর্ষদ।
ওই সময় তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, চট্টগ্রামে ব্যাংকিং ক্যারিয়ারের লম্বা একটা সময় কাটিয়েছেন তিনি। এবার নতুন একটি ব্যাংকের শাখা খুলতে পেরে তিনি আনন্দিত।
তারেক রিয়াজ খান গ্রাহকদের ধন্যবাদ জানিয়ে আগামীতেও পাশে থাকার অনুরোধ জানান।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পদ্মা ব্যাংকের এসইভিপি ও সিএইচআরও এম আহসান উল্লাহ খান, এসইভিপি ও এইচওবি সাব্বির মোহাম্মদ সায়েম, ইভিপি ও সিওও সৈয়দ তৌহিদ হোসেন, এসভিপি ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রধান এম সাজিদুর রহমান মেহেদীসহ বিভিন্ন বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাসহ অনেকে।
অনুষ্ঠান শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
আগ্রাবাদ শাখার ঠিকানা: আকরাম-খালেদা হাইটস, বাড়ি ২৪২২/এ, সবদার আলী রোড, আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম।
আরও পড়ুন:নগদ অর্থের সংকটে পড়া দেশের কয়েকটি ব্যাংককে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকার তারল্য সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সদর দপ্তরের জাহাঙ্গীর আলম সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই পদক্ষেপের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করেন গভর্নর।
ব্যাংকিং খাতে তারল্য বাড়াতে টাকা না ছাপানোর সিদ্ধান্ত থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক সাময়িকভাবে সরে এসেছে বলে স্বীকার করেন ড. মনসুর।
তিনি বলেন, ‘ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে এবং আর্থিক প্রবাহ বজায় রাখার জন্য সাময়িকভাবে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কঠোর আর্থিক নীতি অপরিবর্তিত রয়েছে এবং বাজারে অতিরিক্ত তারল্য কমানোর জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
নতুনভাবে সংযোজন করা তহবিলের সম্ভাব্য অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগের বিষয়ে গভর্নর ড. মনসুর বলেন, ‘বর্তমান পদক্ষেপগুলো সাম্প্রতিক অতীতের পুনরাবৃত্তি নয়। সে সময় অর্থ মুদ্রণের ফলে অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল। চুরির সুযোগ দূর করে স্বচ্ছ ও নিরাপদে তহবিল বরাদ্দের বিষয়টি এবার নিশ্চিত করেছি আমরা।’
আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিশ্রুতির ওপরও জোর দেন গভর্নর। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ব্যাংকে প্রত্যেক মানুষের আমানত নিরাপদ ও সুরক্ষিত। আমানতকারীদের আস্থা ধরে রাখতে অবিরাম প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।’
ড. মনসুর বলেন, ‘ব্যাংকগুলোতে নগদ অর্থের সাময়িক ঘাটতি মেটাতে গ্রাহকদের প্রয়োজনীয় অর্থ উত্তোলনের সুযোগ করে দিতে তারল্য সহায়তা দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ সহায়তা সহজতর করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের অস্থায়ী প্রয়োজন মেটাতে সাময়িকভাবে অর্থ মুদ্রণ করবে।’
ব্যাংকে সব আমানত সুরক্ষিত রয়েছে বলে জনগণকে আশ্বস্ত করেন গভর্নর। একইসঙ্গে জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়া বা অযথা অর্থ উত্তোলন না করার আহ্বান জানান তিনি।
বাজারে প্রবর্তিত অতিরিক্ত তারল্য মুদ্রাস্ফীতির চাপ রোধে বিভিন্ন ধরনের বন্ডের মাধ্যমে পরিচালনা করা হবে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।
আরও পড়ুন:এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) পরিচালনা পর্ষদ সর্বসম্মতিক্রমে মাসাতো কান্ডাকে এডিবির ১১তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেছে।
ম্যানিলাভিক্তিক ঋণদাতা সংস্থাটি বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানায়।
মাসাতসুগু আসাকাওয়ার স্থলাভিষিক্ত হওয়া ৫৯ বছর বয়সী কান্ডা বর্তমানে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এডিবির নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কান্ডা ২০২৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করবেন এবং ২০২৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তার মেয়াদ শেষ হবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
প্রেসিডেন্ট আসাকাওয়ার ২০২৬ সালের ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত অসমাপ্ত মেয়াদেও দায়িত্ব পালন করবেন কান্ডা।
এডিবির বোর্ড অফ গভর্নরসের চেয়ারম্যান ও ব্যাংক অফ ইতালির গভর্নর ফ্যাবিও প্যানেট্টা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে কান্ডার ব্যাপক অভিজ্ঞতা এবং বহুপাক্ষিক পরিবেশে দক্ষ নেতৃত্ব এডিবিকে জটিল বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদারে সহায়তা করবে।’
তিনি বলেন, ‘এডিবির বোর্ড অফ গভর্নরস কান্ডার সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছে।’
প্রায় চার দশকের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কান্ডা জাপানের অর্থ মন্ত্রণালয়ে আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
আর্থিক খাতের নীতি এবং ম্যাক্রো-রাজস্ব নীতিতে তার ব্যাপক অভিজ্ঞতা রয়েছে।
তিনি আর্থিক পরিষেবা সংস্থার ডেপুটি কমিশনার, বাজেট ব্যুরোর উপমহাপরিচালক এবং নীতি পরিকল্পনা ও সমন্বয়ের উপসহকারী মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি শিক্ষা ও বিজ্ঞান নীতির পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারের ক্ষেত্রেও শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ।
বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংকের (এমডিবি) বিবর্তন, মহামারি প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া এবং ঋণের স্থায়িত্ব এবং স্বচ্ছতার মতো মূল নীতিগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কান্ডা জি-৭, জি-২০ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ফোরামে সক্রিয়ভাবে জড়িত।
আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপমন্ত্রী থাকাকালীন জাপান এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের ১৩তম পুনঃপূরণে ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি রেকর্ড অবদান রেখেছিল।
কান্ডা ২০১৬ সাল থেকে ওইসিডি করপোরেট গভর্ন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২৩ সালে করপোরেট গভর্ন্যান্সের জি২০/ওইসিডি নীতিমালা পর্যালোচনার তত্ত্বাবধান করেন তিনি।
এমডিবিতে কৌশলগত আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণেও তার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি বিশ্বব্যাংকে জাপানের অল্টারনেট এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
কান্ডা ১৯৮৭ সালে টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক এবং ১৯৯১ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমফিল ডিগ্রি অর্জন করেন।
আরও পড়ুন:চলতি নভেম্বর মাসের প্রথম ২৩ দিনে দেশে ১৭২ কোটি ৬০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। সে হিসাবে, প্রতিদিন গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথে এমনটা জানানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি নভেম্বরের প্রথম ২৩ দিনে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৪ কোটি ডলার। তবে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে সবচেয়ে বেশি, ৯৫ কোটি ১০ লাখ ডলার। এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ১৩ কোটি ১০ লাখ ডলার ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
গত জুন মাসে দেশে ২৫৩ কোটি ৮৬ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স আসে। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। ওই মাসে আসা রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৯১ কোটি ডলার, যা গত ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
তবে আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর এই প্রবণতা স্থিতিশীল হতে শুরু করে এবং ওই মাসেই রেমিট্যান্স আসে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ডলার। এরপর সেপ্টেম্বরে আসে ২৪০ কোটি ৪৮ লাখ ডলার এবং অক্টোবরে তা সামান্য হ্রাস পেয়ে আসে ২৩৯ কোটি ৫১ লাখ ডলার।
পদ্মা ব্যাংকের বকশীগঞ্জ শাখার শীর্ষ ঋণখেলাপি ব্যবসায়ী ও শেরপুর চেম্বার অফ কমার্সের সাবেক সভাপতি মো. আশরাফুল আলম সেলিম ফের গ্রেপ্তার হয়েছেন।
গত বুধবার ব্যাংকের বকশীগঞ্জ শাখা ও রিকভারি টিমের সহযোগিতায় সাজাপ্রাপ্ত এই আসামিকে গ্রেপ্তার শেরপুর থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
পদ্মা ব্যাংক পিএলসির করা মামলায় জামালপুর অর্থঋণ আদালত সেলিমকে গ্রেপ্তারের আদেশ জারি করে। এই ঋণগ্রহীতাকে এর আগেও এনআই অ্যাক্ট মামলার সাজার অধীনে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এরপর অর্থ পরিশোধের শর্তে বন্ড দিয়ে জামিনে বেরিয়ে আসেন তিনি। কিন্তু তারপরও তিনি ব্যাংকের পাওনা অর্থ পরিশোধ করেননি।
প্রসঙ্গত, তিয়াশা মিনি অটো রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী আশরাফুল আলম সেলিমের কাছে সুদে-মূলে পদ্মা ব্যাংক পিএলসির পাওনা প্রায় ২৮ কোটি টাকা। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সার্বভৌম ক্রেডিট রেটিং অবনমনে মুডির সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বলেছে, এতে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে অর্জিত উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঠিক প্রতিফলন হয়নি।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আন্তর্জাতিক ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি মুডি’স ১৯ নভেম্বর বাংলাদেশের সার্বভৌম রেটিং বি১ থেকে বি২-এ নামিয়ে এনেছে এবং স্বল্প মেয়াদে ইস্যুয়ার রেটিং নট প্রাইম হিসেবে বহাল রেখেছে। এছাড়া দৃষ্টিভঙ্গিকে নেতিবাচক দিকে নিয়েছে।
অবনমনের কারণ হিসেবে রাজনৈতিক ঝুঁকি এবং সম্ভাব্য অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেছে রেটিং এজেন্সিটি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, এ বছরের শুরুতে ঐতিহাসিক রাজনৈতিক রূপান্তরের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শুরু করা মূল সংস্কার ও উন্নতিকে উপেক্ষা করা হয়েছে এই মূল্যায়নে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্র-নেতৃত্বাধীন অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের আগস্টে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। নতুন সরকার অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা, দুর্নীতি রোধ এবং সুশাসন শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে ব্যাপক সংস্কার শুরু করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করে সংস্থাটি চলমান সংস্কার প্রচেষ্টা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার বৃহত্তর চিত্র উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক যুক্তি দিয়ে বলেছে, রেটিং এজেন্সির মূল্যায়ন একটি ‘পশ্চাৎমুখী দৃষ্টিভঙ্গি’ এবং নতুন সরকারের অধীনে ইতিবাচক পরিবর্তনগুলো পুরোপুরি বিবেচনা করেনি।
বাংলাদেশের সংস্কার ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি আরও পুঙ্খানুপুঙ্খ ও সরেজমিন পর্যালোচনার জন্য সংস্থাটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বলেছে, ‘মূল্যায়ন করার সময় মুডি’স দূরদৃষ্টির পরিচয় দেয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংক বিশ্বাস করে, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমর্থন এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারত্ব উভয়ের সমর্থনে অব্যাহত সংস্কারের মাধ্যমে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির আরও বিস্তৃত মূল্যায়নের আহ্বান জানিয়েছে। যার মধ্যে মূল অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ এবং প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ জড়িত। আর কেবল এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমেই মুডি’স বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের একটি সুষ্ঠু ও সঠিক মূল্যায়ন দিতে পারে।
আরও পড়ুন:সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ চুক্তিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ‘ভীতি প্রদর্শনমূলক প্রচারণা’র অভিযোগে ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়েছে এস আলম গ্রুপ।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
সম্প্রতি ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, সাইফুল আলম ও তার সহযোগীরা বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে এক লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।
গভর্নরের এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এস আলম পরিবারের পক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি পাঠিয়েছে আইনি প্রতিষ্ঠান কুইন ইমানুয়েল উর্কুহার্ট অ্যান্ড সুলিভান।
ওই চিঠির একটি অনুলিপি ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের হাতে এসেছে।
গভর্নরের ওই মন্তব্যকে ‘ভীতি প্রদর্শনমূলক’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, এস আলম গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ ভুল ও মানহানিকর। এ বিষয়ে তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটি আন্তর্জাতিক সালিশি প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেন।
তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, বাংলাদেশের আইন মেনে বিদেশে বিনিয়োগের কোনো অনুমোদন সাইফুল আলম নেননি। দেশের যে কয়টা প্রতিষ্ঠান বিদেশে বৈধভাবে বিনিয়োগ করেছে, সেই তালিকায় সাইফুল আলমের নাম নেই।
আরও পড়ুন:নগদ অর্থ প্রবাহের চলমান সংকটের মধ্যে দেশের ব্যাংকিং খাতকে স্থিতিশীল করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের আওতায় ২৬৫ কোটি টাকার তারল্য সহায়তা পেয়েছে আরও তিনটি ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনেয়ারা শিখা বলেন, আর্থিকভাবে সচ্ছল প্রতিষ্ঠান ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক ঋণ চুক্তির মাধ্যমে এই তহবিল সরবরাহ করেছে।
এর আগে সংকটে পড়া পাঁচ ব্যাংককে ছয় হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা তারল্য সহায়তা দেয়া হয়। সবশেষ ২৬৫ কোটি টাকা দেয়ার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগে মোট তারল্য সহায়তার পরিমাণ দাঁড়াল ছয় হাজার ৮৫০ কোটি টাকা।
সহায়তা গ্রহণকারী দুর্বল ব্যাংকগুলোর নাম প্রকাশে নীতিগত বিধিনিষেধের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এই ব্যবস্থা ব্যাংকিং খাতের তারল্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরে।’
এদিকে সংশ্লিষ্ট খাতের বিশ্লেষকরা বলছেন, তারল্য সংকটের মূল কারণগুলো মোকাবিলা এবং ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় এসব প্রচেষ্টাই যথেষ্ট নয়। এ জন্য বৃহত্তর কাঠামোগত সংস্কার জরুরি।
মন্তব্য