কোনো ব্যাংক নতুন শাখা খুলতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তের কার্যবিবরণীর কপিসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিগত অনুমোদনের জন্য যে বছরে নতুন শাখা খোলা হবে তার অব্যবহিত পূর্ববর্তী বছরের নভেম্বর মাসের মধ্যে দাখিল করতে হবে।
পাশাপাশি ব্যাংকিং সুবিধা বঞ্চিত এলাকার জনসাধারণের আর্থিক সেবা নিশ্চিত করতে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা এলাকার বাইরে কমপক্ষে ৬০ শতাংশ উপ-শাখা করতে হবে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ ‘ব্যাংকের ব্যবসা কেন্দ্র স্থাপন, ভাড়া ও ইজারা সংক্রান্ত নীতিমালা’ শীর্ষক সার্কুলারে এসব নির্দেশনা দেয়া হয়।
সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো সার্কুলারে বলা হয়েছে, ব্যাংকের নতুন শাখা খোলার ক্ষেত্রে আর্থিক সক্ষমতা, ঋণের মান, শাখা ব্যবস্থাপনা, আমানতকারীদের সেবা প্রদানসহ সার্বিক বিষয়াদি পর্যালোচনাপূর্বক বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত সংখ্যক শাখা স্থাপনের নীতিগত অনুমোদন দেবে।
এসএমই ও কৃষি শাখা ক্ষেত্রে নীতিগত অনুমোদনপ্রাপ্ত শাখাগুলোর মধ্য হতে প্রয়োজনে যে কোনো শাখাকে এসএমই বা কৃষি শাখা হিসেবে করার পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তের কার্যবিবরণীর কপিসহ নির্ধারিত ছকে আবেদন করতে হবে। এসব শাখা বিভাগীয় শহর বা সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে করতে হবে এবং ব্যাংকিং সুবিধা বঞ্চিত এলাকাকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। তবে এসএমই ও কৃষি শাখায় বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন ব্যতীত অন্য সব ব্যাংকিং কার্যক্রম করা যাবে। এসব শাখায় আমানতের অন্যূন ৫০ শতাংশ সংশ্লিষ্ট শাখার আওতাধীন এলাকার এসএমই বা কৃষি খাতে ঋণ দিতে হবে।
নতুন নীতিমালায় শহর ও পল্লী শাখার সংজ্ঞায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন থেকে সিটি করপোরেশন ও ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত পৌরসভা এলাকায় স্থাপিত বা স্থাপিতব্য শাখা ‘শহর শাখা’ এবং অন্যান্য এলাকায় স্থাপিত বা স্থাপিতব্য শাখা ‘পল্লী শাখা’ হিসেবে গণ্য হবে।
এছাড়া কোনো এলাকা নতুনভাবে সিটি করপোরেশন এলাকা হিসেবে ঘোষিত হলে বা বিদ্যমান সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত হলে কিংবা বিদ্যমান কোনো ‘খ’ বা ‘গ’ শ্রেণির পৌরসভা ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হলে তদস্থিত ব্যাংক শাখা শহর শাখা হিসেবে গণ্য করতে বলা হয়েছে।
উপশাখার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং সুবিধা বঞ্চিত এলাকার জনসাধারণের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে মোট উপ-শাখার কমপক্ষে ৬০ শতাংশ সিটি করপোরেশন ও ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত পৌরসভা এলাকার বাইরে স্থাপন করতে হবে। ব্যাংকে নিয়ন্ত্রণকারী শাখা থেকে কমপক্ষে ১ কিলোমিটার দূরত্বে কোনো উপ-শাখা করা যাবে না।
উপ-শাখার স্থাপনার ভাড়া চুক্তির মেয়াদ ন্যূনতম ৩ বছর করতে হবে। এছাড়া নির্ধারিত মেয়াদে ১৫ শতাংশের বেশি ভাড়া বাড়াতে পারবে না।
উপশাখার কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ন্যূনতম ২ জন কর্মকর্তা নিযুক্ত করতে হবে। উপশাখাতে প্রচলিত শাখায় ব্যাংকিং সেবার জন্য যে নির্ধারিত ফি, চার্জ ও কমিশন সেটাই বহাল থাকবে। তাছাড়া বিদ্যমান নীতিমালার অন্যান্য প্রযোজ্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত রেখে পরিমার্জন করে উপ-শাখা স্থাপনের জন্য একীভূত নির্দেশনা প্রস্তাব করা হয়েছে।
ইলেক্ট্রনিক বুথ স্থাপনের জন্য ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বা নির্বাহী কমিটির অনুমোদন থাকতে হবে এবং বুথ স্থাপনের ১৫ দিনের মধ্যে নির্ধারিত ছকে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হবে। গ্রাহকের ব্যবহারের সুবিধা বিবেচনায় প্রতিটি বুথে একক এটিএম বা সিডিএম স্থাপনের জন্য সর্বোচ্চ ১০০ বর্গফুট পরিসর এবং একাধিক এটিএম বা সিডিএম স্থাপনের জন্য আনুপাতিক হারে স্পেস ভাড়া গ্রহণ করা যাবে। এছাড়া এসব বুথ স্থাপনের ব্যয় ও ভাড়া সংক্রান্ত ব্যয়ের ক্ষেত্রে শাখার জন্য প্রযোজ্য নিয়ম অনুসরণ করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
এখন থেকে কোনো ধরনের স্থাপনা ভাড়া নেয়ার সময় অগ্রিম বাবদ ভাড়া চুক্তির মেয়াদ ৪ বছর পর্যন্ত হলে সর্বোচ্চ ১২ মাসের ভাড়া, ৪ বছরের বেশি কিন্তু ৯ বছরের কম হলে সর্বোচ্চ ২৪ মাসের ভাড়া এবং ৯ বছর বা তদূর্ধ্বে হলে সর্বোচ্চ ৩৬ মাসের ভাড়ার সমপরিমাণ অগ্রিম প্রদান করা যাবে। নির্ধারিত মেয়াদে ন্যূনতম ৩ বছর অন্তর মূল ভাড়ার ১৫ শতাংশের বেশি ভাড়া বাড়াতে পারবে না।
বাজার দর বিবেচনায় প্রতি বর্গফুটের জন্য ব্যয়সীমা সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা এবং বিদ্যমান ব্যবসা কেন্দ্র স্থানান্তরের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গফুটের জন্য সর্বোচ্চ এক হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করা যাবে। আইটি সরঞ্জাম ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ব্যয়ও যুক্তিসঙ্গত পর্যায়ে থাকতে হবে। এতদিন এই ব্যয়সীমা ছিল প্রতি বর্গফুটে সর্বোচ্চ এক হাজার ৮৫০ টাকা ও এক হাজার ২৫০ টাকা।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় হওয়া মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমার জন্য আগামী ১৭ এপ্রিল দিন ঠিক করেছেন ঢাকার একটি আদালত।
মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ঠিক ছিল মঙ্গলবার। তবে মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান নতুন এ দিন ঠিক করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জালিয়াতি করে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করা হয়। পরে ওই টাকা ফিলিপাইনে পাঠানো হয়।
দেশের অভ্যন্তরের কোনো একটি চক্রের সহায়তায় হ্যাকার গ্রুপ রিজার্ভের অর্থ পাচার করে বলে ধারণা করেন সংশ্লিষ্টরা।
ওই ঘটনায় একই বছরের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্টের উপপরিচালক জোবায়ের বিন হুদা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মতিঝিল থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ (সংশোধনী ২০১৫)-এর ৪ এবং তথ্য ও প্রযুক্তি আইন-২০০৬- এর ৫৪ ধারা ও ৩৭৯ ধারায় একটি মামলা করেন।
মামলাটি বর্তমানে সিআইডি তদন্ত করছে।
আরও পড়ুন:রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া অর্থের ৮০ শতাংশ ফেরত আনা হয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, বাকি অর্থ আদায়ে মামলা চলছে। মামলায় জিতে বাকি অর্থও ফেরানো সম্ভব।
রাজধানীর একটি হোটেল শনিবার ‘ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠা হওয়ায় দেশ থেকে টাকা পাচার বন্ধ হয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও রেমিট্যান্স প্রবাহ স্মরণকালের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের একটি প্রতিষ্ঠানই ২০ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করেছে। সেসব অর্থ উদ্ধারে কাজ চলছে। বিদেশিরাও সহযোগিতা করছেন।
গভর্নর বলেন, পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন তথা এফবিআইসহ অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। বিদেশি আইনজীবীও নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
রেমিট্যান্স প্রসঙ্গে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আনতে আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ায় বছরে সরকারের ৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। গত ৫ মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৩০০ কোটি ডলার। রপ্তানি বেড়েছে ২৫০ কোটি ডলার।
তিনি বলেন, প্রশিক্ষিত কর্মী বিদেশে পাঠাতে পারলে রেমিট্যান্স বছরে ৬০০ কোটি ডলারে উন্নীত করা সম্ভব হবে।
সৌদি আরবকে টপকে রেমিট্যান্স পাঠানোয় শীর্ষে উঠে এসেছে দুবাই।
একে আশঙ্কাজনক উল্লেখ করে গভর্নর জানান, সৌদি আরব থেকে অর্থ প্রথমে দুবাইয়ে আসছে। সেখান থেকে বাংলাদেশে আসছে। দুবাইয়ের কিছু প্রতিষ্ঠান এই সুযোগে মুদ্রা বিনিময় হার ম্যানুপুলেট (হস্তক্ষেপ) করার চেষ্টা করছে।
এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিল পরিশোধের পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ২ হাজার ৪৯০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। এ ছাড়া বিপিএম-৬ গণনার মান অনুযায়ী রিজার্ভ এখন দুই হাজার কোটি ডলার হয়েছে।
গত ৮ জানুয়ারি বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৬৫৭ কোটি ডলার। আর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ১৬৭ কোটি ডলার।
এ প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, ‘চার মাস চলার মতো রিজার্ভ আছে। তাই ভয়ের কিছু নেই।’
আরও পড়ুন:নতুন বছরে প্রথম পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে পদ্মা ব্যাংক পিএলসির, যা ব্যাংকটির ১২১তম সভা।
ব্যাংকের হেড অফিসে গত ৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় সভাটি।
মো. শওকত আলী খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পদ্মা ব্যাংকের পর্ষদ সভায় অন্য পরিচালকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মজিবর রহমান, অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হোসেন, তামিম মারজান হুদা, শাহনুল হাসান খান, ডা. ফারহানা মোনেম, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান, ব্যারিস্টার-এট-ল’ এবং এইচএম আরিফুল ইসলাম এফসিএ।
সভা পরিচালনা করেন পদ্মা ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মো. তালহা (চলতি দায়িত্বে)।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা ডিসেম্বর মাসে রেকর্ড পরিমাণ ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। এটা আগের বছরের একই মাসের তুলনায় প্রায় ৩২ শতাংশ বেশি।
প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীরা ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দেশে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রাপ্তিতে প্রবৃদ্ধি ২৭ দশমিক ৫৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। কারণ এই সময়কালে মোট ১৩ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। গত বছর এটা ছিল ১০ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসস-এর সঙ্গে আলাপকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, সরকার অনাবাসী বাংলাদেশিদের (এনআরবি) বৈধ চ্যানেলে দেশে অর্থ প্রেরণে উৎসাহিত করায় দেশে রেমিট্যান্সের প্রবাহ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ১২ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে। বিএফআইইউর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সোমবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
একইসঙ্গে তাদের ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের তথ্যও চাওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা ইতোমধ্যে পাঠিয়েছে সংস্থাটি।
হিসাব তলব করা সাংবাদিকরা হলেন- সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ্র বাদল, ঢাকা টাইমস সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলন, বাংলাদেশ পোস্টের বিশেষ প্রতিনিধি নুরুল ইসলাম হাসিব, নাগরিক টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক দ্বীপ আজাদ, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসসের সাবেক প্রধান বার্তা সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, উপ-প্রধান বার্তা সম্পাদক মো. ওমর ফারুক, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের সাবেক মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, চ্যানেল আইয়ের বিশেষ প্রতিনিধি হোসনে আরা মমতা ইসলাম সোমা, দৈনিক জনকণ্ঠের ডেপুটি এডিটর ওবাইদুল কবীর মোল্লা, দৈনিক জাগরণ সম্পাদক আবেদ খান, ফ্রিল্যান্সার সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত এবং গ্লোবাল টিভির প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা।
বিএফআইইউর নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, হিসাব তলব করা ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী ইত্যাদি চিঠি দেয়ার তারিখ থেকে দুই কার্যদিবসের মধ্যে বিএফআইইউ-তে পাঠানোর জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, দেশে সুশাসনের ভিত্তি মজবুত হওয়ায় অর্থ পাচার উল্লেখযোগ্য হারে কমে এসেছে। এর ফলে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। অর্থ এখন আর বিদেশে ডাইভার্ট হচ্ছে না; বরং তা দেশের মধ্যেই অবস্থান করছে।
শনিবার টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে ইসলামী ব্যাংকের ৪০০তম শাখা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গভর্নর বলেন, ‘যারা অর্থ নিয়ে দেশ ছেড়েছে, তাদের অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি। ইনশাআল্লাহ আমরা সফল হবো, হয়তো একটু সময় লাগবে। তবে আমরা হাল ছাড়ব না।’
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘একসময় আমাদের রিজার্ভ হ্রাস পাচ্ছিল। ব্যালেন্স অফ ক্রেডিটের কারণে মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঘটেছিল। আমরা সেই সংকট থেকে বেরিয়ে এসেছি। এখন রিজার্ভ আর কমছে না।
‘গত ৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক এক ডলারও বিক্রি করেনি। ব্যালেন্স অফ পেমেন্টের ঘাটতিও দূর হয়েছে। বর্তমানে এটি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রেও বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটেছে। গত পাঁচ মাসে অতিরিক্ত তিন মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছে।’
দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের অবদানের উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, ‘বিদেশে কর্মরত ভাই-বোনদের পাঠানো টাকা এখন খুব দ্রুত এবং নিরাপদে পরিবারের হাতে পৌঁছাচ্ছে। ইসলামী ব্যাংক এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ইতিহাস বলে, ইসলামী ব্যাংক দেশের এক নম্বর রেমিট্যান্স সংগ্রাহক প্রতিষ্ঠান।’
ব্যাংকিং খাতে আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে খাদ্যপণ্যের উচ্চ মূল্যই মূল্যস্ফীতির প্রধান কারণ। তবে আমরা আশা করছি, আগামী চার থেকে পাঁচ মাসের মধ্যে খাদ্যপণ্যের দাম কমে একটি স্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। মনে রাখতে হবে, ব্যাংক কোনো ব্যক্তি বা পারিবারিক প্রতিষ্ঠান নয়। এটি একটি আমানতকারী প্রতিষ্ঠান, যা জনগণকে সেবা দেয়।’
ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড অফ ডাইরেক্টরসের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা।
বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জলিল, এফসিএস চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম, রিস্ক কমিটির চেয়ারম্যান ড. এম মাসুদ রহমান এবং ইনডিপেন্ডেন্ট ডাইরেক্টর মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব।
অনুষ্ঠানে শরীয়াহ্ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
আরও পড়ুন:দেশে বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন তথা রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন (দুই হাজার কোটি) ডলারের বেশি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
তিনি জানিয়েছেন, গত পাঁচ মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে তিন বিলিয়ন তথা ৩০০ কোটি ডলার সমপরিমাণের।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলা মিলনায়তনে শনিবার দুপুরে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ৪০০তম শাখা উদ্বোধন করার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গভর্নর এসব কথা জানান।
গভর্নর বলেন, ‘গত পাঁচ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ৩ বিলিয়ন। প্রথম দিকে বলেছিলাম ১০টি ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার পথে, কিন্তু সেগুলো এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ব্যাংকগুলো যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, সেটাই বড় বিষয়। এখন আর এগুলো পড়ে যাবে না।
‘সব মিলিয়ে ইসলামী ব্যাংক এখন শীর্ষেই অবস্থান করছে এবং আন্তর্জাতিক মানে প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে।’
অনুষ্ঠানে ইসলামী ব্যাংক বোর্ড অফ ডিরেক্টরের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুহাম্মদ মনিরুল মওলা। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর মুহাম্মদ আবদুস সামাদ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য