যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অফ নিউ ইয়র্ক থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির মামলা বাতিলের দুটি আবেদন খারিজ করে দিয়েছে নিউ ইয়র্কের আদালত। মামলায় অভিযুক্তদের ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে মধ্যস্থতারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এর মাধ্যমে রিজার্ভের চুরি হওয়া অর্থ ফেরত আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সোমবার সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠিত আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘রিজার্ভের অর্থ উদ্ধারে আমরা নিউ ইয়র্কে একটা মামলা করেছিলাম। বিপরীত পক্ষ মামলা বাতিলে আমাদের বিরুদ্ধে একটা মামলা করেছিল। তারা মোশন টু ডিসমিস চেয়েছিল।
‘নিউ ইয়র্ক প্রথম কোর্ট সেটা ডিসমিস করে আমাদের স্টেট কোর্টে মামলা করার নির্দেশ দেয়ার পর আমরা সেটা করি। এরপর আবার তারা মোশন টু ডিসমিস মামলা করে। ১৩ জানুয়ারি আমরা সেটার রায় পেয়েছি। সেখানে তাদের মোশন টু ডিসমিস মামলা খারিজ করে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, নিউ ইয়র্কেই মামলা পরিচালিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘স্টেট কোর্ট, আরসিবিসি ও অন্য বিবাদীদের ২০ দিনের মধ্যে তাদের জবাব দেয়ার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি বিবাদীদের মধ্যস্থতার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এর ফলে এখন থেকে মামলার সব কাজ নিউ ইয়র্কে পরিচালিত হওয়া আমাদের জন্য বড় অ্যাডভানটেজ। কারণ বিষয়টি সেখানেই হয়েছে। আমরা চাইছিলাম ওখানেই যেন বিচারটা হয়।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিউ ইয়র্কের সুপ্রিম কোর্ট বা স্টেট কোর্ট ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন বা আরসিবিসি ও ছয় আসামির করা মামলা বাতিলের আবেদন ১৩ জানুয়ারি খারিজ করে দিয়েছে। পাশাপাশি এ মামলার অভিযুক্ত অপর আসামি কিম অংয়ের মামলা বাতিলের আবেদনও খারিজ করে দেয়া হয়েছে।
নিউ ইয়র্কের আদালতের এ রায়ের ফলে বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির মামলার অভিযুক্ত ফিলিপাইনের আরসিবিসি, কিম অংসহ ১৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা চলার ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা নেই।
বিএফআইইউ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকে রক্ষিত বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট ফর দ্য সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট অফ নিউ ইয়র্ক বা ফেডারেল আদালতে ফিলিপাইনের বেসরকারি খাতের ব্যাংক আরসিবিসিসহ ২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। চুরি হওয়া রিজার্ভের অর্থ উদ্ধারে এ মামলা করা হয়। পরে ওই মামলা বাতিলে সংশ্লিষ্ট আদালতে আবেদন করে আরসিবিসিসহ ছয় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। আইনি প্রক্রিয়া শেষে ফেডারেল আদালত ২০২০ সালের ২০ মার্চ মামলা বাতিলের ওই আবেদন খারিজ করে মামলাটি ফেডারেল আদালতের বদলে স্টেট কোর্টে পরিচালনার নির্দেশ দেয়।
ফেডারেল আদালতের ওই নির্দেশনার পর ২০২০ সালের ২৭ মে নিউ ইয়র্কের সুপ্রিম কোর্ট তথা ডিস্ট্রিক্ট আদালতে নতুন করে মামলা করে বাংলাদেশ। নতুন আদালতেও মামলা বাতিলের আবেদন করে আরসিবিসিসহ ছয় আসামি। তাদের এ আবেদনের ওপর একাধিক দফা শুনানি হয়।
এদিকে সবশেষ ১৩ জানুয়ারি নিউ ইয়র্ক ডিস্ট্রিক্ট আদালত যে রায় দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, নিউ ইয়র্কের ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির ক্ষেত্রে আরসিবিসির উদ্দেশ্যপ্রণোদিত যোগসাজশ ছিল।
আরসিবিসির নিউ ইয়র্কের হিসাব এবং আরসিবিসির ফিলিপাইনের অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের সহযোগিতা না থাকলে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে এ অর্থ অন্য কোথাও যাওয়ার সুযোগ ছিল না। নিউ ইয়র্কের আদালত আরসিবিসিসহ অভিযুক্ত আসামিদের ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাদের জবাব দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি এ বিষয়ে মধ্যস্থতারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে নিউ ইয়র্কের ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ১ হাজার ৬২৩ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১০ কোটি টাকা) চুরির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে দুই কোটি ডলার শ্রীলঙ্কা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি আট কোটি ডলারের বেশি ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংক হয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে চলে যায়। ওই অর্থ এখনও ফেরত পায়নি বাংলাদেশ। সেই অর্থ উদ্ধারে মামলা চলছে নিউ ইয়র্কের আদালতে।
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জের ঘিওরে দুই নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে ওই দুই নারী বাদী হয়ে ঘিওর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলার পর অভিযান চালিয়ে সাত ব্যক্তি গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার সাতজন হলেন ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের হৃদয় খান, সোহেল রানা, রনি মিয়া, ফয়সাল ব্যাপারী, তামিম হোসেন, সাদিক হোসেন ও শাহ্ আলম।
মামলার বিবরণে উল্লেখ আছে, সোমবার সন্ধ্যায় দৌলতপুরে একটি এলাকায় অটোরিকশায় করে ঘিওর বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন দুই নারী। অটোরিকশাটি বরংগাইল-দৌলতপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের তেরশ্রী এলাকায় পৌঁছালে রিকশাচালক তাদের নামিয়ে দেন। এর পর হেঁটে রওনা দেন ওই দুই নারী। তখন কিছুদূর যাওয়ার পর রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন যুবক তাদের পেছনে হাঁটতে থাকেন এবং এক পর্যায়ে ওই দুই নারীর মোবাইল নাম্বর চান। তারা মোবাইল নাম্বর দিতে অস্বীকার করলে যুবকেরা পাশের একটি ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে তাদের ধর্ষণ করেন। সেই সঙ্গে তাদের মোবাইল, স্বর্ণালংকার ও টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যান।
ঘিওর থানার ওসি মো. আমিনুর রহমান জানান, থানায় মামলার পর অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে বিকেলে তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষার গণিতের প্রশ্ন ফাঁস করে বিক্রি করার দায়ে ইমাম হোসেন টুটুল নামের এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার বিকেলে গোপালগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র হালদার স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ওই শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়।
ইমাম হোসেন টুটুল টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বর্ণি ইউনিয়নের ১১ নম্বর দক্ষিণ বর্ণি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
এ বিষয়ে অবিভাবক রিনা বেগম ও কুমকুম বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘গত ২৩ নভেম্বর দুপুরে চারুকারু পরীক্ষা শেষ হয়। এরপর শিক্ষক ইমাম হোসেন টুটুল তার মোবাইল নম্বর কাগজে লিখে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে অভিভাবকদের ওই নম্বরে যোগাযোগ করতে বলেন। আমরা কয়েকজন অভিভাবক ওই নম্বরে ফোন করে যোগাযোগ করি। তখন ৫ শ’ টাকা থেকে এক হাজার টাকার বিনিময়ে গণিতের প্রশ্ন পাওয়া যাবে বলে টুটুল স্যার আমাদের প্রস্তাব দেন। কয়েকজন টাকা দিয়ে পরীক্ষার আগের দিন সন্ধ্যায় (২৫ নভেম্বর) গণিতের প্রশ্ন নেন ওই শিক্ষকের কাছ থেকে। কিন্তু শিক্ষকের এ ধরনের কাজে ক্ষুব্ধ হয়ে আমরা কয়েকজন মিলে এ সংক্রান্ত কয়েকটি কল রেকর্ড টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইমরান শেখ ও গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পাঠিয়ে দেই।’
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইমরান শেখ বলেন, ‘আমরা ২৫ নভেম্বর রাতেই টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল-মামুন ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানাই। পরে ওই রাতেই ইউএনও এবং জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার পরামর্শে ওই তিন শ্রেণির গণিত প্রশ্ন পরিবর্তন করা হয় বলে আমরা জানতে পারি।’
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, ‘গত ২৬ নভেম্বর নতুন প্রশ্নে ৩ নম্বর ক্লাস্টারের ২৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গণিত পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। ওই ক্লাস্টারভূক্ত ২৬টি বিদ্যালয়ে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হচ্ছিল।’
তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার পর ইউএনও এবং জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে তদন্ত শুরু হয়। প্রাথমিক তদন্তে প্রশ্ন বিক্রির সত্যতা মিলেছে। তাই সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ধারা ২০১৮-এর ৩ (বি) ধারায় অভিযুক্ত করে শিক্ষক ইমাম হোসেন টুটুলকে সোমবার (৪ ডিসেম্বর) জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত করেছেন।’
এ বিষয়ে জানতে বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক ইমাম হোসেন টুটুলের মোবাইল নম্বরে বারবার কল করা হলেও তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার সীমান্ত এলাকা থেকে প্রায় সাড়ে তিন শ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
মাগুড়া ইউনিয়নের রমজান পাড়া এলাকায় মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সীমান্তের কাছে এই স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল যুবায়েদ হাসান মঙ্গলবার রাতে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এসব তথ্য জানান।
ওই সময় তিনি বলেন, স্বর্ণ চোরাচালানের বিষয়টি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন তারা।
এর পর বিশেষ টহলে একটি টিম সীমান্ত পিলারের কাছে গেলে একটি ধান ক্ষেতে একজন ব্যক্তিকে সন্দেহজনক ঘোরাফেরা করতে দেখেন। তাকে কাছে ডেকে নাম জিজ্ঞেস করতেই ওই ব্যক্তি একটি কালো ব্যাগ ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে ওই ব্যাগ থেকে স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত স্বর্ণগুলো পঞ্চগড় জুয়েলারি সমিতিতে নিয়ে পরীক্ষা করা হলে তারা জানান সেখানে মোট তিন শ ৫১ ভরি চার আনা স্বর্ণ পাওয়া গেছে।
বিজিবি অধিনায়ক আরও জানান, আসামিকে আটক করতে সক্ষম হননি তারা। এ বিষয়ে আটোয়ারী থানায় জিডি করা হবে।
আরও পড়ুন:টাঙ্গাইলের মধুপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মা, দুই ছেলে ও এক ছেলের স্ত্রীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।
মধুপুর পৌর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুন্ডুরা গ্রামে মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। এর পর ৯৯৯-এ কল করে চারজনকে মুক্ত করা হয়।
তারা হলেন ওই গ্রামের প্রয়াত নুরুল ইসলামের স্ত্রী শাফিয়া বেগম, বড় ছেলে আলমগীর হোসেন, ছোট ছেলে জুব্বার আলী ও আলমগীরের স্ত্রী জোসনা বেগম।
তাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আলমগীরকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, পুন্ডুরার প্রয়াত নুরুল ইসলামের দুই ছেলে আলমগীর, জুব্বারের সঙ্গে প্রতিবেশী কালু মিয়া ও তার ভাইদের একটি জমি নিয়ে বিরোধ চলছে বহুদিন ধরে। এ নিয়ে ২৩ বছর বাটোয়ারা মামলা চলার পর চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি আলমগীর ও জুব্বাররা রায় পেয়ে জমির খাজনা খারিজ করেছেন। মাঠ ও প্রিন্ট পর্চা তাদের নামেই এসেছে।
প্রতিপক্ষ কালু মিয়া ও তার ভাইয়েরা এ নিয়ে গত কয়েক মাস আগে ওই জমির মালিক দাবি করে আদালতে ১৪৪ ধারা জারি চেয়ে আবেদন করলে, আদালত স্থানীয় সংশ্লিষ্ট বিভাগের তদন্ত রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে ১৪৪ ধারা জারি করে।
আলমগীর, জুব্বার কাগজপত্রের ভিত্তিতে ১৪৪ ধারার বিপরীতে জজ কোর্টে আপিল করেন। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে দুই পরিবারে উত্তেজনা চলছিল। মঙ্গলবার সকালে কালু মিয়া ৬০ শতক জমিতে গিয়ে ঘর নির্মাণ শুরু করেন। আলমগীর, জুব্বাররা বাধা দিতে গেলে তাদের গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলে কালু মিয়া ও তার ভাইয়েরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারুন অর রশীদ ও জনপ্রতিনিধিরা গিয়ে দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন।
এ বিষয়ে মধুপুর থানার ওসি মোল্লা আজিজুর রহমান জানান, জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের জেরে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। আজকের ঘটনায় কেউ লিখিত দেয়নি বলে মামলা হয়নি।
তবে দুই পক্ষকে ডেকে এনে ১৪৪ ধারা জারি ও আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শান্তি রক্ষায় জমিতে যেতে বারণ করা হয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে এক নারীকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের পকেট সীমান্ত এলাকায় মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন জানান, হাতীবান্ধা উপজেলার পকেট সীমান্তের ৮৯৩ নম্বর মেইন পিলারের ৮ নম্বর সাব পিলারের কাছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে কাপড় শুকাতে যায় জোহরা বেগম নামে এক বৃদ্ধা নারী। ওই সময় ভারতীয় কুচবিহার অঞ্চলের শিতলকুচি এলাকার ফুলবাড়ী বিএসএফ ক্যাম্পের এক সদস্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে জোহরা বেগমকে মারধর করেন।
তিনি জানান, পরে ওই বৃদ্ধা নারীর চিৎকারে সীমান্তবর্তী লোকজন ছুটে গিয়ে প্রতিবাদ করলে ভারতীয় বিএসএফ সদস্যরা ফাঁকা রাবার বুলেট ছুড়ে নিজ ভূখণ্ডে চলে যায়। এ নিয়ে সীমান্তে বেশ উত্তেজনা বিরাজ করে।
খবর পেয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সিঙ্গিমারী ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে পতাকা বৈঠক করে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
এ বিষয়ে সিঙ্গিমারী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সামছুল আলম জানান, প্রায় সময় ভারতীয় বিএসএফের সদস্যরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন। আজও তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে এক নারীকে মারধর করেন এবং ফাঁকা রাবার বুলেট ছুড়েন। এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন তিনি।
সিঙ্গিমারী বিজিবি ক্যাম্পের ইনচার্জ নাসির হোসেন এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি। তাৎক্ষণিক বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ ঘটনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।’
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইমাম হোসেন নামে এক রোহিঙ্গা যুবককে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে উখিয়ার কুতুপালং ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এফ/১৬-তে এ ঘটনা ঘটে।
৩০ বছর বয়সী ইমাম হোসেন ক্যাম্প-১ ইস্ট এর জি/১২ ব্লকের মনি উল্লাহর ছেলে।
উখিয়া থানার ওসি মো. শামীম হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এফ/১৬ ব্লকে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা ইমাম হোসেনকে সরাসরি গুলি করে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার পর ঘটনাস্থলে টহল বাড়ানো হয়েছে। এ ব্যপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
পুলিশের কাজে বাধা ও হত্যার উদ্দ্যেশ্যে হামলার বিষয়ে নাশকতার মামলায় তিন বিএনপি নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১০।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার কোন্ডা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ৬৭ বছর বয়সী মো. নূর হোসেন নুরু, কোন্ডা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারন সম্পাদক হাজী ৬৪ বছর বয়সী মো. আফজাল হোসেন শিকদার এবং কোন্ডা ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ৫৯ বছর বয়সী হাজী মো. সালাউদ্দিন।
মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর ও ফতুল্লা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বিকেলে র্যাব-১০-এর উপ-পরিচালক আমিনুল ইসলাম নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আমিনুল ইসলাম জানান, গত ২৮ অক্টোবর থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ও বিএনপি নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো অবরোধের নামে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাস, ট্রাক, সিএনজি, লেগুনা, অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন পরিবহনে ভাঙচুর, ককটেল নিক্ষেপ এবং অগ্নিসংযোগ করে। এমনকি ২৮ অক্টোবর একজন পুলিশ কনস্টেবলকে লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যাসহ সারা দেশে ব্যাপক নাশকতা শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার দিনভর ও রাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে ৩ জন বিএনপি নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার নাশকতা মামলার আসামি।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা বিভিন্ন সময় নাশকতার পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এছাড়া তারা আগেও কেরানীগঞ্জ, রাজধানীর কদমতলী, যাত্রাবাড়ী এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় গাড়ি ভাঙচুর, বাসে অগ্নি সংযোগসহ বিভিন্ন প্রকার নাশকতামূলক কার্যক্রমের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল বলে জানা গেছে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
মন্তব্য