স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসছে যে দেশ থেকে, সেই সৌদি আরবকে পেছনে ফেলে শীর্ষস্থানে চলে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর অর্থনীতির দেশটিতে বসবাসকারী প্রবাসীরা ১৯৬ কোটি ৬৭ লাখ (১.৯৭ বিলিয়ন) ডলার বাংলাদেশে পাঠিয়েছেন। আর সৌদি আরব থেকে এসেছে ১৯০ কোটি ৯১ লাখ (১.৯১ বিলিয়ন) ডলার।
এ ছয় মাসের চার মাসেই সৌদির চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। সবশেষ ডিসেম্বর মাসে ব্যবধান সবচেয়ে বেশি। এ মাসে সৌদি আরব থেকে এসেছে ৩০ কোটি ৬৪ লাখ ডলার আর যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে ৪২ কোটি ৮৩ লাখ ডলার।
সব মিলিয়ে জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে সৌদি আরবের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ছয় মাসের হিসাবে আমেরিকা থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স দেশে এলো। আর এর ওপর ভর করেই রেমিট্যান্স-প্রবাহে ইতিবাচক ধারা ধরে রেখেছে বাংলাদশ। অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) গত বছরের একই সময়ের চেয়ে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক প্রায় ৩ শতাংশ বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স বাড়ার কারণ জানতে চাইলে অর্থনীতির গবেষক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আমেরিকা থেকে প্রবাসীরা দেশে যে রেমিট্যান্স পাঠান, তার পুরোটাই ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে পাঠান। ওই দেশ থেকে অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠানোর কোনো সুযোগ নেই। অথচ বরাবরই সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে হুন্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা।
‘ব্যাংকের চেয়ে কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম অনেক বেশি হওয়ায় সম্প্রতি তা আরও বেড়ে গেছে। সে কারণেই সৌদি থেকে রেমিট্যান্স কমছে আর যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাড়ছে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের রেমিট্যান্স-সংক্রান্ত সর্বশেষ তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ১ হাজার ৪৯ কোটি ৩২ লাখ (১০.৪৯ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে প্রায় ২ বিলিয়ন (২০০ কোটি) ডলার। গত বছরের একই সময়ে এসেছিল ১ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ দশমিক ২২ শতাংশ।
অথচ সৌদি আরব থেকে এ ছয় মাসে রেমিট্যান্স কমেছে ২১ দশমিক ৫৫ শতাংশ। গত বছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে এসেছিল ২ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার। চলতি বছরের একই সময়ে এসেছে ১ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।
মধ্যপ্রাচ্যের আরেকটি দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে অবশ্য রেমিট্যান্সের পরিমাণ বেশ বেড়েছে। জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে দেশটি থেকে ১ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬৪ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে এসেছিল ৮১ কোটি ৫৩ লাখ ডলার।
যুক্তরাজ্য থেকে জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ৯১ কোটি ১১ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। গত বছরের একই সময়ে এসেছিল ৮৮ কোটি ডলার, বেড়েছে ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
প্রতি বছর দেশে যে রেমিট্যান্স আসে, তার প্রায় অর্ধেক পাঠান সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিরা। স্বাধীনতার পর থেকেই সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন সৌদি আরবে থাকা বাংলাদেশিরা। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত।
২০২০-২১ অর্থবছরে আরব আমিরাতকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় অবস্থানে চলে আসে যুক্তরাষ্ট্র। ওই অর্থবছরে সৌদি আরব থেকে ৫ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছিল। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে ৩ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার, আরব আমিরাত থেকে আসে ২ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার। আর যুক্তরাজ্য থেকে এসেছিল ২ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলার।
গত ২০২১-২২ অর্থবছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা ২১ দশমিক ০৩ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন। ওই অঙ্ক ছিল আগের অর্থবছরের (২০২০-২১) চেয়ে ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ কম। এর মধ্যে সৌদি আরব থেকে ২৬ শতাংশ কমে ৪ দশমিক ৫৪ বিলিয়নে নেমে আসে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রায় সমান ৩ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা।
গত অর্থবছরে আরব আমিরাত থেকে ২ দশমিক ০৭ বিলিয়ন এবং যুক্তরাজ্য থেকে ২ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে।
২০২০ সালের মার্চে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এর পরই যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স-প্রবাহ বাড়ছে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১ কোটি ২৫ লাখ বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। তাদের বড় অংশই রয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে; কাজ করছেন বিভিন্ন শ্রমঘন পেশায়।
২০১২ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসত কুয়েত থেকে। একক দেশ হিসেবে কুয়েত থেকে আসা রেমিট্যান্সের পরিমাণ এখন ষষ্ঠ অবস্থানে।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশির সংখ্যা সব মিলিয়ে ১২ লাখের মতো হবে। এর মধ্যে নিউ ইয়র্কেই থাকেন প্রায় চার লাখ। নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস ও জ্যামাইকায় বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশির বসবাস।
কঠিন এ সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স কেন বাড়ছে, এমন প্রশ্নের উত্তরে গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসীরা যে টাকা দেশে পাঠাচ্ছেন, তার প্রায় পুরোটাই ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে আসছে। আর সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে হুন্ডির মাধ্যমে অনেকে দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন। সে কারণে এই দেশগুলো থেকে রেমিট্যান্স অনেক কমে গেছে।’
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশির সংখ্যা বাড়ছে। নানা পেশায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন তারা। অনেকের উপার্জনও ভালো। যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংকে টাকা রাখলে মুনাফা পাওয়া যায় না, কিন্তু দেশে টাকা পাঠিয়ে প্রবাসী বন্ড কিনলে ১০-১২ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা পাওয়া যায়।
‘আড়াই শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা এবং বন্ড কিনে মুনাফার আশায় এখন ইউএসএ থেকে বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা।’
আহসান মনসুর বলেন, ‘খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলারের দর এখন ১১২ থেকে ১১৩ টাকা। ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠালে ১০৭ টাকা পাওয়া যায়। তার সঙ্গে আড়াই শতাংশ প্রণোদনা যোগ হয়ে পাওয়া যায় ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। আর হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠালে যার নামে পাঠান তিনি ১১৩ টাকা পর্যন্ত পাচ্ছেন। এ কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ বেড়ে গেছে।’
‘আর সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর কারণে দেশে টাকা আসছে ঠিকই, কিন্তু ডলার আসছে না। আর এই ডলারই বিভিন্ন দেশে নানা প্রক্রিয়ায় চলে যাচ্ছে, যেটাকে অর্থ পাচার বলা হয়ে থাকে। হুন্ডিই এখন দেশ থেকে অর্থ পাচারের প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি এটা খুব বেড়ে গেছে।’
অর্থ পাচার রোধ করতে হুন্ডি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করে আসা বেসরকারি ব্র্যাক ব্রাংকের চেয়ারম্যান আহসান মনসুর।
জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাশার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২০২২ সালে আমরা প্রায় সাড়ে ১১ লাখ লোককে কাজের জন্য বিভিন্ন দেশে পাঠিয়েছি। ২০২১ সালে এই সংখ্যা ছিল ৬ লাখের কিছু বেশি, কিন্তু দুঃখজনক হলো জনশক্তি রপ্তানি বাড়লেও রেমিট্যান্স বাড়ছে না। এর প্রধান কারণ হচ্ছে হুন্ডি। ‘করোনা মহামারির কারণে সব কিছু বন্ধ থাকায় বিশ্বব্যাপী অবৈধ হুন্ডি কর্মকাণ্ড বন্ধ ছিল, কিন্তু করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকেই ফের হুন্ডি কর্মকাণ্ড চালু হয়েছে। ডলারের বাজারের অস্থিরতার কারণে সম্প্রতি তা আরও বেড়ে গেছে।’
হুন্ডি বন্ধে প্রণোদনার পরিমাণ আড়াই শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করার পরামর্শ দিয়েছেন আবুল বাশার।
তিনি বলেন, ‘এখানে প্রবাসী ভাই-বোনদের কোনো দোষ দেখি না। তারা প্রতি ডলারে দুই-তিন টাকা বেশি পাচ্ছেন বলেই ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা না পাঠিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে পাঠাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক হুন্ডি বন্ধে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে, কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না; হুন্ডি বন্ধ হচ্ছে না।
‘ব্যাংকিং চ্যানেলে বা বৈধ পথে টাকা পাঠালে সরকার এখন আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে। অর্থাৎ কেউ ১০০ টাকা দেশে পাঠালে তার সঙ্গে আরও ২ টাকা ৫০ পয়সা যোগ হয়ে ১০২ টাকা ৫০ পয়সা পাচ্ছেন। সরকার যদি প্রণোদনার পরিমাণ ৫ শতাংশ করে দেয়, তাহলে তারা ১০০ টাকা পাঠালে ১০৫ পাবেন। এটি করলে সব প্রবাসী বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে টাকা পাঠাবেন বলেন আমি মনে করি।
‘এখানে প্রবাসীদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। তারা যেখানে বেশি টাকা পাওয়া যাবে, সেখানে যাবেন। প্রণোদনা ৫ শতাংশ করলে যখন তারা দেখবে ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠালে যে টাকা পাওয়া যায়, হুন্ডির মাধ্যমে পাঠালেও সেই একই টাকা পাওয়া যায়, তখন তারা আর ঝুঁকি নিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠাবেন না। বর্তমান কঠিন সময়ে রিজার্ভ বাড়াতে এই কাজটি সরকারের দ্রুত করা উচিত বলে আমি মনে করি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবাসীদের হুন্ডির বদলে ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতারা সরকারপ্রধানের সঙ্গে মতবিনিময় করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রবাসীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা অনুরোধ করব আপনাদের, যে রেমিট্যান্স আপনারা পাঠান, সেটা হুন্ডিতে না পাঠিয়ে সরাসরি ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠাবেন। এতে দেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বাড়বে; অর্থনীতি আরও এগিয়ে যাবে।’
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভারতের আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে পুঁজিবাজারে ধোঁকাবাজির অভিযোগ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর এশিয়ার শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির সম্পত্তির পরিমাণ অব্যাহতভাবে কমছে। তিনি ফোর্বসের তালিকায় বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনী থেকে সপ্তমস্থানে নেমে গেছেন।
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ ফার্ম নামের ওই প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে শেয়ার দরে কারচুপি’র অভিযোগ আনার পর তিন দিন ধরে দরপতনে কোম্পানির শেয়ারদর প্রায় ২০ শতাংশ কমে গেছে।
ফোর্বস জানায়, আদানির সম্পদের মূল্য কমে বর্তমান দাঁড়িয়েছে আনুমানিক ৯ হাজার কোটি ডলারে। তিন দিনের ব্যবধানে তার ২২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ কমেছে।
তবে এখনও এ সম্পদ নিয়ে এখন ও এশিয়ার শীর্ষ ধনী আদানি রয়েছেন। এশিয়ার দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী হলেন মুকেশ আম্বানি, যার সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৮ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। আম্বানি বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় দশম স্থানে রয়েছেন। বর্তমানে এ তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন ফরাসি ধনকুবের বার্নার্ড আর্নল্ট
গৌতম আদানির মালিকানাধীন আদানি গ্রুপ ভারতের সবচেয়ে বড় বন্দর পরিচালনাকারী ও তাপ কয়লা উৎপাদন কোম্পানি। এছাড়া অবকাঠামো নির্মাণ, পণ্যদ্রব্য উৎপাদন, বিদ্যুৎ উৎপাদন, আবাসন ব্যবসায়ও বিনিয়োগ রয়েছে তারা।
ভারতের পুঁজিবাজারে শুক্রবার ব্যাপক দরপতন হয়েছে বিশ্বের অন্যতম ও এশিয়ার শীর্ষ ধনী গৌতম শান্তিলাল আদানির মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর শেয়ারের।
দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, সকালে লেনদেন শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আদানি গ্রুপের ৯ কোম্পানির সবগুলোর শেয়ারের দরপতন হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটিভিত্তিক বিনিয়োগ গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের এক প্রতিবেদনের পর শেয়ারদর ৮ শতাংশ হারিয়েছিল আদানির কোম্পানিগুলো। এর দুই দিন পর শুক্রবার লেনদেন শুরুর কয়েক ঘণ্টায় প্রায় ২ লাখ কোটি রুপি কমে যায় কোম্পানিগুলোর বাজার মূলধন।
সবশেষ দরপতনের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবারের পর পুঁজিবাজারে বাজার মূলধন ২ লাখ ৭৫ হাজার কোটি রুপি হারিয়েছে বহুজাতিক কোম্পানি আদানি গ্রুপ।
কোম্পানিটির মালিকানাধীন আদানি টোটাল গ্যাসের শেয়ারদর কমেছে ১৯.৬৫ শতাংশ। এ ছাড়া আদানি ট্রান্সমিশনের ১৯ শতাংশের বেশি এবং আদানি গ্রিন এনার্জির শেয়ারদর কমেছে সাড়ে ১৫ শতাংশ।
এগুলোর বাইরে আদানি পোর্টসের শেয়ারগুলোর দর কমে ৫.৩১ শতাংশ, যেখানে আদানি পাওয়ার ও আদানি উইলমারের শেয়ারদর কমে ৫ শতাংশ করে। গ্রুপের হোল্ডিং কোম্পানি আদানি এন্টারপ্রাইজেসের শেয়ারদর কমে ৬.১৯ শতাংশ।
আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে সম্প্রতি শেয়ার নিয়ে কারসাজির অভিযোগ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার গ্রুপের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা করা হবে, কিন্তু ওই বার্তার পরও পতন ঠেকানো যায়নি পুঁজিবাজারে।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানে ডলারের তীব্র সংকটে পণ্যবাহী হাজারো কন্টেইনার সমুদ্রবন্দরগুলোতে আটকে আছে জানিয়ে দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস (এফটি) বলেছে, পতনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে দেশটির অর্থনীতি।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি এ শঙ্কার কথা জানিয়েছে বলে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে এফটির খবরে বলা হয়, পাকিস্তানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিশ্চল হয়ে পড়ছে, যা শ্রীলঙ্কার মতো হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
বৈদেশিক মুদ্রার পর্যাপ্ত রিজার্ভ না থাকায় শ্রীলঙ্কা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনার সামর্থ্য হারায়, যা গত বছরের মে মাসে দেশটিকে খেলাপিতে পরিণত করে।
বস্ত্র কারখানার মালিকদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুৎ ও সম্পদ ব্যবহারে মিতব্যয়িতার অংশ হিসেবে কারখানাগুলো বন্ধ কিংবা কম সময় ধরে চালু রাখা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ সংকটে ভুগতে থাকা কারখানাগুলোর সংকট আরও ঘনীভূত হয় সোমবার, যেদিন ১২ ঘণ্টার বেশি সময় অন্ধকারে ছিল গোটা পাকিস্তান।
ইসলামাবাদভিত্তিক মার্কো ইকনোমিক ইনসাইটসের প্রতিষ্ঠাতা সাকিব শেরানি এফটিকে বলেন, এরই মধ্যে বেশ কিছু শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এসব কারখানা ফের চালু না হলে বেশ কিছু ক্ষতি হবে, যা অপূরণীয়।
তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে থাকা পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ৫০০ কোটি ডলারের নিচে নেমেছে। এ দিয়ে এক মাসের গোটা আমদানি ব্যয়ও মেটানো যাবে না।
এমন পরিস্থিতি থেকে অর্থনীতিকে টেনে তুলতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছ থেকে ৭০০ কোটি ডলার অর্থনৈতিক সহায়তা প্যাকেজ নিয়েও অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের সাবেক উপদেষ্টা আবিদ হাসান এফটিকে বলেন, এখন প্রতিটি দিনই গুরুত্বপূর্ণ। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায় কী, তা স্পষ্ট নয়।
পাকিস্তানের পরিকল্পনামন্ত্রী আহসান ইকবাল বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাঁচাতে দেশটি ব্যাপক হারে আমদানি কমিয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন:ডলারের বিপরীতে রেকর্ড পরিমাণ কমল পাকিস্তানি রুপির মান। বৃহস্পতিবার দেশটিতে প্রতি ডলার ২৫৫ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে, যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় ২৪ রুপি বেশি।
পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ পেতে ডলারের বিনিময় হারে নিয়ন্ত্রণ উঠিয়ে নেয় পাকিস্তান সরকার। এরপর থেকে দ্রুত নামতে থাকে পাকিস্তানি রুপির মান।
পাকিস্তানের বর্তমান সরকার দেশটির অর্থনীতি বাঁচাতে গত বছর আইএমএফের কাছে ৬৫০ কোটি ডলারের জরুরি ঋণ সহায়তার আবেদন করেছিল । ওই আবেদন পর্যালোচনা শেষে দেশটিকে ১১০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার কথা থাকলেও এখনও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল সেই অর্থ ছাড়েনি।
এই অর্থ ছাড়াও পুরো ঋণ সহায়তা পেতে দেশটির সরকারকে কিছু শর্ত দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল।
পাকিস্তানের বর্তমান রিজার্ভ ৬০০ কোটি ডলারের কম, যা গত আট বছরে সর্বনিম্ন। এ ছাড়া দেশটিতে গত বছরের ভয়াবহ বন্যার পর মূল্যস্ফীতিও ব্যাপক বেড়েছে। বন্যায় দেশটিতে ৩০০ কোটি ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে।
কর্মক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ১৭ কর্মকর্তা ও ৩ অংশীজনকে সার্টিফিকেট অফ মেরিট সম্মাননা দেয়া হয়েছে।
‘আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস’ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই সম্মাননা দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বারস অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। এতে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
সম্মাননাপ্রাপ্ত এনবিআরের কর্মকর্তারা হলেন- প্রথম সচিব ড. মো. নেয়ামুল ইসলাম; ঢাকা দক্ষিণ কাস্টমস, এক্সাইস ও ভ্যাট কমিশনারেটের যুগ্ম-কমিশনার মো. রুহুল আমিন; মোছা. শাকিলা পারভীন; আবদুল রশীদ মিয়া; মংলা কাস্টমস হাউসের যুগ্ম-কমিশনার মহিববুর রহমান ভূঞা; নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. পায়েল পাশা ও এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব মো. পারভেজ রেজা চৌধুরী।
সম্মাননা পাওয়া অন্যরা হলেন- বৃহৎ করদাতা ইউনিটের উপ-কমিশনার মিতুল বণিক; ঢাকা (পূর্ব) কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট মো. ইফতেখার আলম ভূঁইয়া; চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার মোছা. আয়শা সিদ্দিকা; ঢাকা কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার মিজ জেবন্নেছা; এনবিআরের সহকারী প্রোগ্রামার কামরুন নাহার মায়া; ঢাকা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাতের রাজস্ব কর্মকৰ্তা বিপ্লব রায়; সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা অনিমেষ মণ্ডল; মো. ফাহাদ চৌধুরী; মনিরুল ইসলাম এবং মো. আসাদুজ্জামান খান।
এছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক) অংশীজন হিসেবে অবদান রাখার জন্য সার্টিফিকেট অফ মেরিট এবং সম্মাননা স্মারক দেয়া হয়।
বাংলাদেশসহ ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউসিও) সদস্যভুক্ত ১৮৩টি দেশে বৃহস্পতিবার একযোগে দিবসটি উদযাপন হচ্ছে। ২০০৯ সাল থেকে ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশন এ দিনটিকে কাস্টমস দিবস হিসেবে ঘোষণার পর থেকেই বাংলাদেশও দিবসটি উদযাপন করছে।
এবার ১৫ম আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস উদযাপিত হচ্ছে। এবারের দিবসের মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের লালন: কাস্টমসে জ্ঞানচর্চা ও উত্তম পেশাদারত্বের বিকাশ’।
আরও পড়ুন:জনস্বার্থে গ্যাসের দাম পুনঃনির্ধারণের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছে ফেডারেশন অফ চেম্বার্স অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। সংগঠনটির সভাপতি
মো. জসিম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এ চিঠি বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে জসিম উদ্দিন যা লিখেছেন তা হুবহু তুলে ধরা হলো-
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আসসালামু আলাইকুম।
আপনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের পথে দৃপ্ত গতিতে এগিয়ে চলেছে। আপনার বিচক্ষণ পরিকল্পনা ও আন্তরিক প্রয়াস আমাদের অর্থনীতিকে সুদৃঢ় ভিত্তি দিয়েছে।
বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্রুততম অগ্রসরমান অর্থনীতি। আপনার সুপরিকল্পিত পরিকল্পনা সুষম বাস্তবায়নের ফলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণ করেছে বাংলাদেশ।
আপনার দিক-নির্দেশনা ও বিচক্ষণ পরিকল্পনা এবং আন্তরিক প্রয়াসে কোভিড-পরবর্তী বিদ্যমান বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করে যখন আমরা সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি সে মুহূর্তে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি আমাদের অর্থনীতিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।
আপনার ঘোষিত ২০৪১ সালের রূপকল্প বাস্তবায়ন, এসডিজি অর্জন ও ট্রিলিয়ন ডলার ইকনোমিতে পদার্পণ করতে আমাদের অধিকতর বিনিয়োগ ও টেকসই শিল্পায়নের বিকল্প নেই। চাহিদা অনুযায়ী স্পট মার্কেট থেকে জ্বালানি গ্যাস ক্রয় করা হলে উৎপাদন খাতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার শর্তে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে ক্যাপটিভ-এর ক্ষেত্রে গ্যাসের মূল্য প্রতি কিউবিক মিটার ১৬ টাকার স্থলে সর্বোচ্চ ২৫ টাকা অর্থাৎ ৫৭% বৃদ্ধি করা যেতে পারে বলে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল।
তবে ক্যাপটিভ খাতে গ্যাসের মূল্য ৮৭.৫% বৃদ্ধি করে ৩০ টাকা করা হয়েছে। পাশাপাশি বৃহৎ, মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প খাতে ব্যবহৃত গ্যাসের বর্তমান হার যথাক্রমে ১১.৯৮, ১১.৭৮ ও ১০.৭৮ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে সকল স্তরে একই হার ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ খাতে ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য ৫.০২ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১৪ টাকা করা হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন মূল্য কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, কোভিড মহামারি ও ইউক্রেন সংকটের ফলে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল ও উৎপাদন উপকরণসহ সব খাতে ব্যাপক মূল্য বৃদ্ধি সে সঙ্গে সার্বিক পরিবহন ব্যয় এবং মুদ্রা বিনিময় হার অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যবসা পরিচালনার খরচ অত্যধিক বেড়ে চলেছে। এতে শিল্প কারখানাগুলো সচল রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
এর আগে গত বুধবার জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে বিদ্যুতের পর শিল্প, বিদ্যুৎ ও বাণিজ্যিক খাতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়- যা ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
এতে দেখা যায়, বৃহৎ শিল্পে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম ১১ টাকা ৯৮ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়। অর্থাৎ দাম বেড়েছে প্রায় তিন গুণ।
শিল্পে উৎপাদিত নিজস্ব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (ক্যাপটিভ) জন্য ইউনিট প্রতি গ্যাসের দাম ১৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে। সার কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ১৬ টাকা (ইউনিট প্রতি) অপরিবর্তিত থাকছে।
মাঝারি শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ১১ টাকা ৭৮ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ১০ টাকা ৭৮ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে।
চা–বাগানের ক্ষেত্রে দাম ১১ টাকা ৯৩ পয়সা অপরিবর্তিত থাকছে। হোটেল ও রেস্তোরাঁ খাতে ব্যবহৃত বাণিজ্যিক শ্রেণির গ্রাহকেরা ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতি ইউনিটে দাম দেবেন ৩০ টাকা ৫০ পয়সা। আগে তারা দিচ্ছিলেন ২৬ টাকা ৬৪ পয়সা।
ঢাকার কেরানীগঞ্জে জেলি পুশ করা ৬ হাজার ১০০ কেজি চিংড়ি জব্দ করেছে কোস্টগার্ড।
বৃহস্পতিবার বিকেলে কোস্টগার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার ভোরে কেরানীগঞ্জে ধলেশ্বরী ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালায় কোস্ট গার্ড। এ সময় খুলনা থেকে চট্টগ্রামগামী যাত্রীবাহী চারটি বাস ও দুটি ট্রাকে তল্লাশি চালিয়ে জেলি পুশ করা চিংড়ি জব্দ করা হয়। এর পরিমাণ আনুমানিক ৬ হাজার ১০০ কেজি।
কোস্টগার্ডের এই কর্মকর্তা জানান, জেলিভরা বিপুল চিংড়ি জব্দ করা হলেও এর মালিককে আটক করা যায়নি। ওই অভিযানে কেরানীগঞ্জ উপজেলা উপ-সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. আশিকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে তার উপস্থিতিতে জব্দকৃত জেলি পুশকৃত চিংড়ি পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়।
মন্তব্য