পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইফাদ অটোস লিমিটেড ৩০০ কোটি টাকার বন্ড ছাড়বে। অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে অন্তর্ভুক্তির শর্ত দিয়ে বুধবার ৮৫০তম সভায় বন্ডটির অনুমোদন দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
নন-কনভার্টিবল, সিকিউরড, ফুল্লি রিডিম্যাবল, ফ্লোটিং রেট কুপন বিয়ারিং করপোরেট বন্ডটির প্রতি ইউনিটের অভিহিত মূল্য এক কোটি টাকা। বন্ডটির কুপন বা মুনাফার হার সর্বনিম্ন ৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
বন্ডটি প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, কর্পোরেট বন্ড ও উচ্চ সম্পদশালী একক বিনিয়োগকারীদের মাঝে ইস্যু করা হবে।
এ অর্থ কোম্পানিটি তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইফাদ মাল্টি প্রোডাক্টস লিমিটেডে বিনিয়োগ এবং নিজস্ব চলতি মূলধন হিসেবে ব্যবহার করবে। বন্ডটির ট্রাস্টি হিসেবে কাজ করবে ইসি সিকিউরিটিজ।
দেশের পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের পছন্দের শীর্ষে ছিল ঢাকা ইন্স্যুরেন্স। সাধারণ বিমার এ কোম্পানিটির শেয়ার দরে সপ্তাহজুড়েই ছিল উল্লম্ফন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনার তথ্য বলছে, ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীর কাছে গত সপ্তাহজুড়েই পছন্দের তালিকায় ছিল। আর এতে সপ্তাহ শেষে এ কোম্পানিটির শেয়ার সবার শীর্ষে উঠে আসে। এতে সপ্তাহজুড়েই কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
জানা গেছে, দুই সপ্তাহ ধরে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম টানা বাড়ছে। এতে ১৫ দিনের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে।
কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসই থেকে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে সতর্ক বার্তা প্রকাশ করা হয়েছে। তবে সেই সতর্ক বার্তা কোম্পনিটির শেয়ারের দাম বাড়ার প্রবণতা থামাতে পারেনি। বরং ডিএসইর বার্তা প্রকাশের পর দাম আরও বেড়েছে।
তথ্যে জানা যায়, ১২ জানুয়ারি ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দাম ছিল ৪৩ টাকা ৯০ পয়সা। এরপর দাম বাড়তে বাড়তে ২২ জানুয়ারি ৫৭ টাকা ২০ পয়সা ওঠে। এ পরিস্থিতিতে ২৩ জানুয়ারি ডিএসই থেকে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে সতর্ক বার্তা প্রকাশ করা হয়।
ডিএসইর ওই সতর্ক বার্তায় বলা হয়, ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানিটিকে নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশের উত্তরে কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সম্প্রতি শেয়ারের যে অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে তার পেছনে কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদশীল তথ্য নেই।
এরপরও কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে। ইতোমধ্যে প্রতিটি শেয়ারের দাম ৬৫ টাকায় উঠেছে। এর মধ্যে গত সপ্তাহেই দাম বেড়েছে ২৫ শতাংশ। টাকার অঙ্কে বেড়েছে ১৩ টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৬৫ টাকা। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে যা ছিল ৫২ টাকা।
কোম্পানিটি ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। তার আগে ২০২০ সালে কোম্পানিটি ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। এছাড়া ২০১৯ সালে ১৫ শতাংশ নগদ এবং ২০১৮ সালে ১৫ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি।
৪০ কোটি ১২ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের এই কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ৪ কোটি ১ লাখ ২৫ হাজার। এর মধ্যে ৬১ দশমিক ৩৫ শতাংশ আছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ৩৩ শতাংশ শেয়ার আছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং বিদেশিদের কাছে আছে দশমিক ১০ শতাংশ।
শেয়ারের দাম বাড়ার পাশাপাশি কোম্পানিটির শেয়ার বড় অঙ্কে লেনদেন হয়েছে। গত সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ৯৪ লাখ ৪২ হাজার টাকার। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ৯৮ লাখ ৮৮ হাজার টাকা।
গত সপ্তাহে দাম বাড়ার শীর্ষ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা সি পার্ল বিচ রিসোর্টের শেয়ারের দাম বেড়েছে ২০ দশমিক ৫০ শতাংশ। ১৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম বাড়ার মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ ওয়েল্ডিং।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য সূচকের সামান্য উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেয়া ৫১ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে টাকার অংকে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে।
বৃহস্পতিবার ডিএসইতে ৫০৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে ২২৯ কোটি ৬ লাখ টাকা কম। বুধবার ৭৩৪ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসই প্রধান বা ডিএসইএক্স সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৬ হাজার ২৯৬ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৭৪ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৩০ পয়েন্টে।
ডিএসইতে এদিন ৩৪৭টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৩টির, কমেছে ১৩৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭৮টির।
অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। সিএসই সার্বিক সূচক সিএসপিআই ১০ পয়েন্ট কমেছে। এদিন সিএসইতে ২১ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
সপ্তাহের চতুর্থ দিন বাংলাদেশের দুই পুঁজিবাজারে সূচক সামান্য বেড়েছে। তবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন বাড়লেও কমে গেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)।
বুধবার ডিএসই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২ পয়েন্ট বেড়ে হয়েছে ৬ হাজার ২৯৩ দশমিক ৪০ পয়েন্ট। এদিন সহ মোট তিনদিন সূচক বেড়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। তিন দিনে ডিএসই সূচক বেড়েছে ৩৭ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট।
আর এই বাজারে লেনদেন হয়েছে ৭৩৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এই লেনদেন আগের দিনের তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি। ডিএসইতে সূচক আর লেনদেন বাড়লেও বেশির ভাগ শেয়ারের দাম কমে গেছে।
বুধবার ডিএসইতে মোট ৩৪৬টি শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ৩৮টির বা ১১ শতাংশের। দাম কমেছে ১২৯টির বা ৩৭ শতাংশের। দাম অপরিবর্তিত ছিল ১৭৯টির বা ৫২ শতাংশের।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই এদিন ১৮ পয়েন্ট বেড়ে হয়েছে ১৮ হাজার ৫৭৬ দশমিক ১৯ পয়েন্ট। আর এই বাজারে লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ২৭ লাখ টাকা। এই লেনদেন আগের দিনের তুলনায় ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ কম। সিএসইতে সূচক বাড়লেও বেশির ভাগ শেয়ারের দাম কমে গেছে।
বুধবার সিএসইতে মোট ১৭৪টি শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ৩৬টির বা ২১ শতাংশের।আর দাম কমেছে ৬৮টির বা ৩৯ শতাংশের। আর দাম অপরিবর্তিত ছিল ৭০টির বা ৪০ শতাংশের।
আরও পড়ুন:পুঁজিবাজারে আসছে জীবন বিমা খাতের কোম্পানি ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।
বুধবার কোম্পানিটি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে শেয়ার ছেড়ে জনসাধারণের কাছ থেকে ১৬ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহের অনুমোদন পেয়েছে। এজন্য ১০ টাকা অবিহিত মূল্যের এক কোটি ৬০ লাখ শেয়ার ছাড়তে হবে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিএসইসি জানায়, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স আইপিওর মাধ্যমে সংগ্রহ করা টাকার একটা অংশ সরকারি ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করবে। বাকি অংশ বিনিয়োগ করবে পুঁজিবাজার ও এফডিআরে। আর কিছু টাকা শেয়ার ছাড়ার জন্য প্রয়োজনীয় খরচ বা ইস্যু ব্যবস্থাপনার ব্যয় মেটাবে।
ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে ২০১৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি। বিমা কোম্পানির অনুমোদনের শর্ত অনুযায়ী বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরুর তিন বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে হয়। কিন্তু সেই শর্ত পূরণে এই কোম্পানিটির লেগে গেল প্রায় ৯ বছর। যৌক্তিক কারণ ছাড়া ঘোষিত সময়ে পুঁজিবাজারে আসতে না পারলে নির্দিষ্ট হারে জরিমানা দেয়ারও বিধান রয়েছে।
ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স মূলত জীবন বিমা করে থাকে। এছাড়া তারা গ্রুপ বিমা ও ক্ষুদ্র বিমাও রয়েছে তাদের সেবার তালিকায়। কোম্পানিটির ইস্যুব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আছে বিএমএসএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।
বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে দেশে মোট ৮১টি বিমা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে জীবন বিমা ৩৫টি আর সাধারণ বিমা ৪৬টি। উভয় ধরনের বিমা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এখন পর্যন্ত পঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে ৫৬টি।
আরও পড়ুন:আইন মানছে না পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি বারাকা পাওয়ার লিমিটেড। শ্রম আইন অনুযায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ড (ডব্লিউপিপিএফ) গঠন করেনি কোম্পানি কর্তৃপক্ষ, তবে আগের অর্থবছরে ফান্ড গঠন করা হলেও দুটি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের মুনাফা থেকে কখনোই ডব্লিউপিপিএফ গঠন করা হয়নি।
এভাবে আইন না মেনে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করছে কোম্পানি। কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এসব তথ্য জানা গেছে।
২০০৬ সালের শ্রম আইনের ২৩২ ধারা অনুযায়ী, প্রতি বছর নিট মুনাফার ৫ শতাংশ দিয়ে ডব্লিউপিপিএফ গঠন এবং তা কর্মীদের মধ্যে বিতরণ বাধ্যতামূলক, কিন্তু বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার কর্তৃপক্ষ ২০২১-২২ অর্থবছরের ব্যবসায় ওই ফান্ড গঠন করেনি।
বাংলাদেশ ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রোডিউসার অ্যাসোসিয়েশেন (বিআইপিপিএ) ওই ফান্ড গঠনের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি চেয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে। সেই আবেদন মঞ্জুর না হতেই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ কার্যকর করা শুরু করে দিয়েছে।
এমনিতেই বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের সাবসিডিয়ারি কর্ণফুলী পাওয়ার ও বারাকা শিকলবাহা পাওয়ার ডব্লিউপিপিএফ গঠন না করে শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। এবার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারও একই অনিয়ম করেছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলো কয়েক কোটি টাকার নিট মুনাফা ও সম্পদ বেশি দেখিয়েছে।
যেভাবে অনিয়ম
২০২০-২১ অর্থবছরে ১৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকার নিট মুনাফা করা বারাকা পতেঙ্গায় ১ কোটি ৬ লাখ টাকার ডব্লিউপিপিএফ ফান্ড গঠন করা হয়েছিল, তবে ওই অর্থবছরে সাবসিডিয়ারি কোম্পানিগুলোসহ বারাকা পতেঙ্গার নিট মুনাফা হয়েছিল ১০৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা। পুরোটার ওপর ফান্ড গঠন করলে হতো ৫ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
২০২১-২২ অর্থবছরে সাবসিডিয়ারিসহ কোনো কোম্পানিতেই ডব্লিউপিপিএফ ফান্ড গঠন করেনি বারাকা পতেঙ্গা কর্তৃপক্ষ। অথচ ২০২১-২২ অর্থবছরে সমন্বিতভাবে (কনসোলিডেট) নিট মুনাফা হয়েছে ৪২ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এর ওপরে ৫ শতাংশ হারে ফান্ড গঠন করলে হতো ২ কোটি ১১ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানির সচিব মোহাম্মদ রানা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রতিবেদনে সবকিছুই দেয়া আছে। সেটার বাইরে কোনো প্রশ্ন থাকলে জানতে ফোন করবেন।’
২০২১ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের পরিশোধিত মূলধন ১৭২ কোটি ৯৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। উদ্যোক্তা বা পরিচালক ছাড়া অন্য বিনিয়োগকারীদের মালিকানায় রয়েছে ৬১ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
বর্তমানে কোম্পানির শেয়ার ইস্যুমূল্যের নিচে লেনদেন হচ্ছে। মঙ্গলবার শেয়ারটি ২৯ টাকা ৩০ পয়সায়, অর্থাৎ ফ্লোর প্রাইসে বেচাকেনা হয়। অথচ কোম্পানিটির কাট-অফ প্রাইস ছিল ৩২ টাকা।
কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হওয়ার ৮ মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে ওই প্রাইসের নিচে নেমে আসে। গত বছরের ৬ মার্চ সর্বপ্রথম শেয়ারটি কাট-অফ প্রাইসের নিচে নামে।
তারপরেও বিনিয়োগকারীদের চাহিদা কম থাকা এমন কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা ৩২ টাকার কাট-অফ প্রাইসে খুশি হতে পারেননি। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির বুক বিল্ডিংয়ে কাট-অফ প্রাইস নির্ধারণে নতুন কড়াকড়ি আরোপের কারণে ৩২ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল কোম্পানিটির কাট-অফ প্রাইস। অন্যথায় কারসাজির মাধ্যমে প্রাইস অনেক ওপরে নিয়ে যেত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
বারাকা পাওয়ারের জন্য গড় ৩০ টাকা ৫০ পয়সা করে প্রতিটি শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ২২৫ কোটি টাকা শেয়ারবাজার থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৯ টাকা করে ইস্যুর কারণে গড় প্রাইস ৩০ টাকা ৫০ পয়সায় নেমে আসে।
২০২১-২২ অর্থবছরে শেয়ারহোল্ডাররা শেয়ারপ্রতি ১ টাকা লভ্যাংশ পেয়েছেন। অর্থাৎ ৩০ টাকা ৫০ পয়সা বিনিয়োগের বিপরীতে প্রাপ্তি ১ টাকা বা ৩ দশমিক ২৮ শতাংশ। ঝুঁকিমুক্ত ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিটের মুনাফা (এফডিআর) এর চেয়ে বেশি হয়।
আরও পড়ুন:ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার মূল্য সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। টাকার অঙ্কে বেড়েছে লেনদেনও। অপর বাজার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দেখা গেছে একই চিত্র।
ডিএসইতে ৬০৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিন চেয়ে ৯৮ কোটি ৪ লাখ টাকা বেশি। গতকাল সোমবার ৫০৯ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৬ হাজার ২৯১ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৭২ পয়েন্টে। আর অপেক্ষাকৃত ভালো মৌলভিত্তি বা ব্লুচিপ খ্যাত ডিএস৩০ সূচক ১৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২২৬ পয়েন্টে।
ডিএসইতে ৩৫০টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে দর বেড়েছে ৭১টির, কমেছে ১০১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭৮টির।
সিএসই সার্বিক সূচক সিএসপিআই ১০১ পয়েন্ট বেড়েছে। সিএসইতে ১২ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সোমবার মূল্য সূচকের সামান্য উত্থানে লেনদেন শেষ হলেও টাকার অঙ্কে আগের দিনের তুলনায় কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। অপর পুঁজিবাজার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক ও লেনদেন উভয়ই বেড়েছে।
ডিএসইতে ৫০৯ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে ১৮৩ কোটি ১২ লাখ টাকা কম। আগের দিন ৬৯২ কোটি ৭৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ৬ হাজার ২৬৩ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১ হাজার ৩৬৫ পয়েন্টে। ডিএস৩০ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ২১১ পয়েন্টে।
ডিএসইতে ৩৪৯টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বাড়ে ৩৪টির, কম ১৪০টির এবং অপরিবর্তিত থাকে ১৭৫টির।
অপর পুঁজিবাজার সিএসইতে সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়। আজ সিএসইর সার্বিক সূচক সিএসপিআই ২ পয়েন্ট বাড়ে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবসে সিএসইতে ৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। আগের দিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৮ কোটি ২ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য