বেসরকারি ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স পুনরায় চালু করে দেশের এভিয়েশন বাজারের ৩০ শতাংশ দখলের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এটিএম নজরুল ইসলাম।
মঙ্গলবার ইউনাইটেড এয়ারের সাধারণ সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
এটিএম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের বাজারসহ এই খাত নিয়ে আমরা সার্বিকভাবে বিশ্লেষণ করে দেখেছি। সারা বিশ্বে এভিয়েশন খাত খুব ভাল করছে। হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর আধুনিক হচ্ছে। সে সুবাদে এর সক্ষমতা অনেক বাড়বে। অনেক দেশের ফ্লাইটই তখন এই বিমানবন্দরে আসবে।
‘দেশি এয়ারলাইন্স না এলে আমরা আন্তর্জাতিক বাজার হারিয়ে ফেলব। আমাদের দেশি এয়ারলাইন্স বাড়াতে হবে। আমি মনে করি দেশে একটি এয়ারলাইন্স বাড়ানো উচিত। এ ধরনের চিন্তা থেকেই আমরা ব্যবসা পরিকল্পনা সাজিয়েছি। ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সকে রিভাইভ করতে চাই।
‘ফান্ড ক্রিয়েট করতে পারলে আমরা ছোট করে শুরু করতে পারি। দেশে ও বিদেশে আমরা কার্গো দিয়ে শুরু করতে চাই। দ্বিতীয় ধাপে আমরা আরও ফান্ড যোগাড়ের চেষ্টা করব। তা সম্ভব হলে আমরা দেশে ও আন্তর্জাতিক বাজারে যাত্রী পরিবহন শুরু করব। একইসঙ্গে কার্গো পরিবহনের পরিসর আরও বিস্তৃত করব।’
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমাদের কমপ্লায়েন্স কিছু সমস্যা ছিল। সেটার জন্য বিদেশিরা আসতে চাচ্ছিল না। প্রথম সমস্যা ছিল আমাদের বিমানগুলো সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকা। সেটা আমরা করিয়েছি। ইউনাইটেডের সব উড়োজাহাজ সম্পর্কে আমরা এখন জানি। আরেকটি সমস্যা ছিল বার্ষিক সভা না হওয়া। সেটাও আমরা আজ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি সিদ্ধান্ত পেলে আমরা এখন এগুতে পারব। পরিকল্পনা অনুযায়ী এগুতে পারলে পাঁচ বছরের মধ্যে দেশের এভিয়েশন খাতে আমরা বড় পরিবর্তন আনতে পারব।
‘ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স এক সময় দেশের সবচেয়ে বড় এয়ারলাইন্স ছিল। বাংলাদেশ বিমানের চেয়েও বেশি উড়োজাহাজ ছিল এই এয়ারলাইন্সের বহরে। পুনরায় যাত্রা শুরু করে আমরা যদি আন্তির্জাতিক বাজারের ৪ শতাংশ আর দেশের বাজারের ৩০ শতাংশ নিতে পারলে এই এয়ারলাইন্স দাঁড়িয়ে যাবে।’
ব্যবস্থাপনা পরিচালক এটিএম নজরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে যাওয়া-আসা মিলে বর্তমানে আকাশপথে যাত্রী সংখ্যা বছরে ৮০ থেকে ৯০ লাখ। এর ২২ থেকে ২৫ শতাংশ বাংলাদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর হাতে আছে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থার্ড টার্মিনাল হয়ে গেলে এই সংখ্যা দাঁড়াবে দুই কোটি। তখন আমাদের এয়ারলাইন্সগুলোর স্বক্ষমতা বাড়াতে না পারলে সেই সেই বাজার হাতছাড়া হয়ে যাবে।’
ইউনাইটেড এয়ারের বার্ষিক সাধারণ সভাটি অনলাইন মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। এতে ২৬০ জনের মতো শেয়ার হোল্ডার যোগ দেন। ভোট পড়েছে মোট শেয়ারের ১০ শতাংশের মতো।
সাধারণ সভায় ২০১৫-২০১৬ থেকে ২০২১-২০২২ মোট সাত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন নেয়া হয়। একইসঙ্গে ক্যাপিট্যাল রিস্ট্রাকচারিং ও অ্যাসেট রিস্ট্রাকচারিং-এর অনুমোদন নেয়া হয়েছে।
ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ২০০৭ সালে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। প্রথমে তারা দেশের অভ্যন্তরে সেবা দেয়া শুরু করে। পরে দেশের বাইরের রুটেও সেবা দিচ্ছিল। ২০১০ সালে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় প্রতিষ্ঠানটি।
কোম্পানির পরিচালকদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো ইউনাইটেড এয়ায়ের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এরপর চালু হলেও ২০১৬ সালে এর কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
২০২১ সালে ইউনাইটেড এয়ারকে বাংলাদেশের মূল পুঁজিবাজার থেকে ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এতে তাদের শেয়ার দর নামতে নামতে ২ টাকার নিচে চলে আসে।
ওটিসি মার্কেটে শেয়ার লেনদেন জটিল ও সময়সাপেক্ষ বলে লেনদেনও হচ্ছে না। এতে ৭২ কোটি শেয়ারের মালিকদের টাকা কার্যত শূন্য হয়ে গেছে।
এর মধ্যে ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ইউনাইটেড এয়ারের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ২০১০ সালে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের প্রধান তাসবিরুল আলম চৌধুরীকে বাদ দিয়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয় কাজী ওয়াহিদুল আলমকে।
২০১৬ সালের পর কোম্পানিটির কোনো এজিএম হয়নি। প্রায় ৭ বছর পরে মঙ্গলবার এজিএম অনুষ্ঠিত হয়।
সাধারন সভায় আরও বক্তব্য দেন ইউনাইটেড এয়ারের নতুন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান কাজী ওয়াহিদুল আলম। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি কঠিন সময়ে ইউনাইটেড এয়ার নিয়ে কাজ শুরু করি। বেশিরভাগ দরকারি কাগজপত্র হাতে পাইনি। এজন্য অনেক কাজ এগিয়ে নেয়া যায়নি। আমরা যখন দায়িত্ব নেই তখন ইউনাইটেড এয়ারের ব্যাংক হিসাবে একটি টাকাও ছিল না। কোথাও থেকে টাকা না পেয়ে আমরা নিজেদের পকেট থেকে টাকা দিয়ে কাজ করেছি।
‘বেশ কিছুদিন চালানোর পর বিএসইসি-এর মধ্যস্থাতায় আমরা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে কিছু ঋণ পাই। সেই টাকা দিয়ে আমরা অডিট রিপোর্ট করেছি, ট্যাকনিক্যাল রিপোর্টগুলো করেছি। এখনও আমরা আমাদের খরচগুলো নিজেদের অর্থায়নে করতে বাধ্য হচ্ছি।’
‘আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো- একটি এয়ারলাইন্সের কাজ নির্ভর করে তার লাইসেন্সের ওপর। কিন্তু ইউনাইডেট এয়ারের এখন কোনো এয়ার অপারেটর সার্টিফিকেট (এওসি) নেই। এই সার্টিফিকেটের জন্য সিভিল এভিয়েশন অথরিটির সঙ্গে যোগাযোগ করে এলছি। কিন্তু এই সার্টিফিকেট পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটেনি। কারণ সিভিল এভিয়েশেন আমাদের কাছে বেশকিছু টাকা পায়।’
তিনি বলেন, ‘এই পাওনার বিষয়ে আমরা মন্ত্রণালয় ও বিএসইসি-কে বলেছি যে আমাদের দায় অনেক বড়, ৪০০ কোটি টাকা। আমাদের অ্যাকচুয়াল ডিউ যা আছে তা আমরা দিয়ে দেব। আর সারচার্জ যেটা আছে তা মওকুফ করার জন্য আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছি।
‘আমরা জানতে পেরেছি যে প্রধানমন্ত্রী একটি মতামত ব্যক্ত করেছেন। তিনি আমাদের বিষয়ে ইতিবাচক। আশা করছি এ বিষয়ে একটি সমাধান পাবো।’
‘আরেকটি সমস্যা হলো, বিভিন্ন জায়গা থেকে আমরা আইনি বাধার সম্মুখীন হচ্ছি। আমাদের দুটি এয়ারক্রাফট দেশের বাইরে রয়েছে। একটি ভারতে, অন্যটি পাকিস্তানে। সেখানে এগুলো থাকায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের যে দেনা রয়েছে সেগুলো দেয়ায় আমরা আইনি ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছি। আেও অনেক আইনি ঝুঁকি রয়েছে।’, বলেন ওয়াহিদুল আলম।
তিনি বলেন, ‘আমরা ট্যাকনিক্যাল ইভ্যালুয়েশন করতে সক্ষম হয়েছি। এই মূল্যায়ন থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করছি যে আমরা ইউনাইটেড এয়ার পুনরায় চালু করতে পারব।
‘আমরা একটি নতুন ব্যবসা পরিকল্পনা করেছি। বাইরে থেকে বিনিয়োগ আনার চেষ্টা করছি। প্রতিষ্ঠান চালু হলে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা আমানত ফিরে পাবেন।’
দেশের পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের পছন্দের শীর্ষে ছিল ঢাকা ইন্স্যুরেন্স। সাধারণ বিমার এ কোম্পানিটির শেয়ার দরে সপ্তাহজুড়েই ছিল উল্লম্ফন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনার তথ্য বলছে, ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীর কাছে গত সপ্তাহজুড়েই পছন্দের তালিকায় ছিল। আর এতে সপ্তাহ শেষে এ কোম্পানিটির শেয়ার সবার শীর্ষে উঠে আসে। এতে সপ্তাহজুড়েই কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
জানা গেছে, দুই সপ্তাহ ধরে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম টানা বাড়ছে। এতে ১৫ দিনের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে।
কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসই থেকে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে সতর্ক বার্তা প্রকাশ করা হয়েছে। তবে সেই সতর্ক বার্তা কোম্পনিটির শেয়ারের দাম বাড়ার প্রবণতা থামাতে পারেনি। বরং ডিএসইর বার্তা প্রকাশের পর দাম আরও বেড়েছে।
তথ্যে জানা যায়, ১২ জানুয়ারি ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দাম ছিল ৪৩ টাকা ৯০ পয়সা। এরপর দাম বাড়তে বাড়তে ২২ জানুয়ারি ৫৭ টাকা ২০ পয়সা ওঠে। এ পরিস্থিতিতে ২৩ জানুয়ারি ডিএসই থেকে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে সতর্ক বার্তা প্রকাশ করা হয়।
ডিএসইর ওই সতর্ক বার্তায় বলা হয়, ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানিটিকে নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশের উত্তরে কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সম্প্রতি শেয়ারের যে অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে তার পেছনে কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদশীল তথ্য নেই।
এরপরও কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে। ইতোমধ্যে প্রতিটি শেয়ারের দাম ৬৫ টাকায় উঠেছে। এর মধ্যে গত সপ্তাহেই দাম বেড়েছে ২৫ শতাংশ। টাকার অঙ্কে বেড়েছে ১৩ টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৬৫ টাকা। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে যা ছিল ৫২ টাকা।
কোম্পানিটি ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। তার আগে ২০২০ সালে কোম্পানিটি ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। এছাড়া ২০১৯ সালে ১৫ শতাংশ নগদ এবং ২০১৮ সালে ১৫ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি।
৪০ কোটি ১২ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের এই কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ৪ কোটি ১ লাখ ২৫ হাজার। এর মধ্যে ৬১ দশমিক ৩৫ শতাংশ আছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ৩৩ শতাংশ শেয়ার আছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং বিদেশিদের কাছে আছে দশমিক ১০ শতাংশ।
শেয়ারের দাম বাড়ার পাশাপাশি কোম্পানিটির শেয়ার বড় অঙ্কে লেনদেন হয়েছে। গত সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ৯৪ লাখ ৪২ হাজার টাকার। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ৯৮ লাখ ৮৮ হাজার টাকা।
গত সপ্তাহে দাম বাড়ার শীর্ষ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা সি পার্ল বিচ রিসোর্টের শেয়ারের দাম বেড়েছে ২০ দশমিক ৫০ শতাংশ। ১৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম বাড়ার মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ ওয়েল্ডিং।
আরও পড়ুন:উদ্ভাবনী সেবা ও দ্রুত সময়ে সর্বোত্তম সেবার প্রসারে দুটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছে এনআরবিসি ব্যাংক। ‘মোস্ট ইনোভেটিভ মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপ (এনআরবিসি প্ল্যানেট)’ ও ‘ফাস্টেস্ট গ্রোয়িং মাইক্রো-ফাইনান্স ব্যাংক’ শীর্ষক অ্যাওয়ার্ড দুটি দিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ম্যাগাজিন দি গ্লোবাল ইকোনমিক্স।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে এক অনুষ্ঠানে ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমালের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। এ সময় ব্যাংকের পরিচালক একেএম মোস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ নাজিম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম আউলিয়া এবং আইসিটি বিভাগের প্রধান ও সিটিও দিদারুল হক মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনআরবিসি ব্যাংক।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশের গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পিছিয়ে পড়া মানুষদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে সহজ শর্ত ও স্বল্প সুদে ঋণ দিতে ২০২১ সালের মার্চে বিশেষ ক্ষুদ্র ঋণ চালু করে এনআরবিসি ব্যাংক। খুব অল্প সময়ে সারা বাংলাদেশে এই সেবা ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ ক্ষুদ্র ঋণ পেয়েছেন। এই সেবার দ্রুত প্রসারের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘ফাস্টেস্ট গ্রোয়িং মাইক্রো ফাইন্যান্স ব্যাংক-২০২২’ প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়া হাতের মুঠোয় সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা সহজে প্রদানের লক্ষ্যে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২০১৯ সালে ‘এনআরবিসি প্লানেট অ্যাপ’ চালু করে এনআরবিসি ব্যাংক। উদ্ভাবনী এই অ্যাপের মাধ্যমে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম কিউআর কোড ব্যবহার করে কার্ড ও চেক ছাড়া টাকা উত্তোলনের সুবিধা চালু করা হয়।
এছাড়া এই অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খোলা, টাকা স্থানান্তর, মোবাইল ব্যাংকিং, গ্যাস-বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন সরকারি সেবার বিল প্রদান, মোবাইল রিচার্জ, ব্যালান্স অনুসন্ধানসহ সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা রাত-দিন যেকোনো স্থানে বসে গ্রহণ করা যায়।
সারাবিশ্বের বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ২০২২ সালের কর্মকাণ্ডকে মূল্যায়ন করে ‘বার্ষিক গ্লোবাল ইকোনমিক্স অ্যাওয়ার্ডস-২০২২’ শীর্ষক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে এনআরবিসি ব্যাংকসহ বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে অ্যাওয়ার্ড দিয়েছে দি গ্লোবাল ইকোনমিক্স লিমিটেড।
ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল বলেন, ‘প্রবাসীদের স্বপ্নের এই ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে খুব সহজে সব মানুষের দুয়ারে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেয়া। এজন্য তথ্য-প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে একটি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছি।
‘প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষ যারা ব্যাংকিং সেবা থেকে বঞ্চিত থেকেছে তাদের জন্য চালু করেছি ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্প। এতে বিনা জামানতে স্বল্প সুদে ঋণ নিয়ে ঘরে বসেই তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হচ্ছে। এসব ভালো কাজের আন্তর্জাতিক এই স্বীকৃতি আমাদের দায়িত্ববোধ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।’
আরও পড়ুন:নোয়াখালীতে সোনালী ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলন ও ব্যবসায়িক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ব্যাংকের জেনারেল ম্যানেজারস অফিস, নোয়াখালীর আওতাধীন প্রিন্সিপাল অফিস, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর এবং নোয়াখালী ও ফেনী করপোরেট শাখার প্রধান এবং এসব প্রিন্সিপাল অফিসের আওতাধীন শাখা ব্যবস্থাপকরা অংশ নেন।
শনিবার নোয়াখালী পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সোনালী ব্যাংকের সিইও অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আফজাল করিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ ও জেনারেল ম্যানেজার মো. মনিরুজ্জামান।
সভাপতিত্ব করেন জেনারেল ম্যানেজারস অফিস, নোয়াখালীর জেনারেল ম্যানেজার মো. শাহজাহান।
সভার শুরুতে নোয়াখালীর জেনারেল ম্যানেজার মো. শাহজাহান গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত অর্জিত ব্যবসায়িক চিত্র উপস্থাপন করেন। এরপর জেনারেল ম্যানেজারস অফিসের আওতাধীন অঞ্চল প্রধানরা ও করপোরেট শাখার প্রধানরা পর্যায়ক্রমে তাদের ব্যবসায়িক চিত্র তুলে ধরেন।
ভারতের পুঁজিবাজারে শুক্রবার ব্যাপক দরপতন হয়েছে বিশ্বের অন্যতম ও এশিয়ার শীর্ষ ধনী গৌতম শান্তিলাল আদানির মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর শেয়ারের।
দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, সকালে লেনদেন শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আদানি গ্রুপের ৯ কোম্পানির সবগুলোর শেয়ারের দরপতন হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটিভিত্তিক বিনিয়োগ গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের এক প্রতিবেদনের পর শেয়ারদর ৮ শতাংশ হারিয়েছিল আদানির কোম্পানিগুলো। এর দুই দিন পর শুক্রবার লেনদেন শুরুর কয়েক ঘণ্টায় প্রায় ২ লাখ কোটি রুপি কমে যায় কোম্পানিগুলোর বাজার মূলধন।
সবশেষ দরপতনের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবারের পর পুঁজিবাজারে বাজার মূলধন ২ লাখ ৭৫ হাজার কোটি রুপি হারিয়েছে বহুজাতিক কোম্পানি আদানি গ্রুপ।
কোম্পানিটির মালিকানাধীন আদানি টোটাল গ্যাসের শেয়ারদর কমেছে ১৯.৬৫ শতাংশ। এ ছাড়া আদানি ট্রান্সমিশনের ১৯ শতাংশের বেশি এবং আদানি গ্রিন এনার্জির শেয়ারদর কমেছে সাড়ে ১৫ শতাংশ।
এগুলোর বাইরে আদানি পোর্টসের শেয়ারগুলোর দর কমে ৫.৩১ শতাংশ, যেখানে আদানি পাওয়ার ও আদানি উইলমারের শেয়ারদর কমে ৫ শতাংশ করে। গ্রুপের হোল্ডিং কোম্পানি আদানি এন্টারপ্রাইজেসের শেয়ারদর কমে ৬.১৯ শতাংশ।
আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে সম্প্রতি শেয়ার নিয়ে কারসাজির অভিযোগ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার গ্রুপের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা করা হবে, কিন্তু ওই বার্তার পরও পতন ঠেকানো যায়নি পুঁজিবাজারে।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য সূচকের সামান্য উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেয়া ৫১ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে টাকার অংকে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে।
বৃহস্পতিবার ডিএসইতে ৫০৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে ২২৯ কোটি ৬ লাখ টাকা কম। বুধবার ৭৩৪ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসই প্রধান বা ডিএসইএক্স সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৬ হাজার ২৯৬ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৭৪ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৩০ পয়েন্টে।
ডিএসইতে এদিন ৩৪৭টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৩টির, কমেছে ১৩৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭৮টির।
অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। সিএসই সার্বিক সূচক সিএসপিআই ১০ পয়েন্ট কমেছে। এদিন সিএসইতে ২১ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
কর্মক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ১৭ কর্মকর্তা ও ৩ অংশীজনকে সার্টিফিকেট অফ মেরিট সম্মাননা দেয়া হয়েছে।
‘আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস’ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই সম্মাননা দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বারস অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। এতে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
সম্মাননাপ্রাপ্ত এনবিআরের কর্মকর্তারা হলেন- প্রথম সচিব ড. মো. নেয়ামুল ইসলাম; ঢাকা দক্ষিণ কাস্টমস, এক্সাইস ও ভ্যাট কমিশনারেটের যুগ্ম-কমিশনার মো. রুহুল আমিন; মোছা. শাকিলা পারভীন; আবদুল রশীদ মিয়া; মংলা কাস্টমস হাউসের যুগ্ম-কমিশনার মহিববুর রহমান ভূঞা; নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. পায়েল পাশা ও এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব মো. পারভেজ রেজা চৌধুরী।
সম্মাননা পাওয়া অন্যরা হলেন- বৃহৎ করদাতা ইউনিটের উপ-কমিশনার মিতুল বণিক; ঢাকা (পূর্ব) কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট মো. ইফতেখার আলম ভূঁইয়া; চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার মোছা. আয়শা সিদ্দিকা; ঢাকা কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার মিজ জেবন্নেছা; এনবিআরের সহকারী প্রোগ্রামার কামরুন নাহার মায়া; ঢাকা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাতের রাজস্ব কর্মকৰ্তা বিপ্লব রায়; সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা অনিমেষ মণ্ডল; মো. ফাহাদ চৌধুরী; মনিরুল ইসলাম এবং মো. আসাদুজ্জামান খান।
এছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক) অংশীজন হিসেবে অবদান রাখার জন্য সার্টিফিকেট অফ মেরিট এবং সম্মাননা স্মারক দেয়া হয়।
বাংলাদেশসহ ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউসিও) সদস্যভুক্ত ১৮৩টি দেশে বৃহস্পতিবার একযোগে দিবসটি উদযাপন হচ্ছে। ২০০৯ সাল থেকে ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশন এ দিনটিকে কাস্টমস দিবস হিসেবে ঘোষণার পর থেকেই বাংলাদেশও দিবসটি উদযাপন করছে।
এবার ১৫ম আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস উদযাপিত হচ্ছে। এবারের দিবসের মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের লালন: কাস্টমসে জ্ঞানচর্চা ও উত্তম পেশাদারত্বের বিকাশ’।
আরও পড়ুন:জনস্বার্থে গ্যাসের দাম পুনঃনির্ধারণের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছে ফেডারেশন অফ চেম্বার্স অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। সংগঠনটির সভাপতি
মো. জসিম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এ চিঠি বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে জসিম উদ্দিন যা লিখেছেন তা হুবহু তুলে ধরা হলো-
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আসসালামু আলাইকুম।
আপনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের পথে দৃপ্ত গতিতে এগিয়ে চলেছে। আপনার বিচক্ষণ পরিকল্পনা ও আন্তরিক প্রয়াস আমাদের অর্থনীতিকে সুদৃঢ় ভিত্তি দিয়েছে।
বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্রুততম অগ্রসরমান অর্থনীতি। আপনার সুপরিকল্পিত পরিকল্পনা সুষম বাস্তবায়নের ফলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণ করেছে বাংলাদেশ।
আপনার দিক-নির্দেশনা ও বিচক্ষণ পরিকল্পনা এবং আন্তরিক প্রয়াসে কোভিড-পরবর্তী বিদ্যমান বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করে যখন আমরা সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি সে মুহূর্তে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি আমাদের অর্থনীতিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।
আপনার ঘোষিত ২০৪১ সালের রূপকল্প বাস্তবায়ন, এসডিজি অর্জন ও ট্রিলিয়ন ডলার ইকনোমিতে পদার্পণ করতে আমাদের অধিকতর বিনিয়োগ ও টেকসই শিল্পায়নের বিকল্প নেই। চাহিদা অনুযায়ী স্পট মার্কেট থেকে জ্বালানি গ্যাস ক্রয় করা হলে উৎপাদন খাতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার শর্তে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে ক্যাপটিভ-এর ক্ষেত্রে গ্যাসের মূল্য প্রতি কিউবিক মিটার ১৬ টাকার স্থলে সর্বোচ্চ ২৫ টাকা অর্থাৎ ৫৭% বৃদ্ধি করা যেতে পারে বলে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল।
তবে ক্যাপটিভ খাতে গ্যাসের মূল্য ৮৭.৫% বৃদ্ধি করে ৩০ টাকা করা হয়েছে। পাশাপাশি বৃহৎ, মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প খাতে ব্যবহৃত গ্যাসের বর্তমান হার যথাক্রমে ১১.৯৮, ১১.৭৮ ও ১০.৭৮ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে সকল স্তরে একই হার ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ খাতে ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য ৫.০২ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১৪ টাকা করা হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন মূল্য কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, কোভিড মহামারি ও ইউক্রেন সংকটের ফলে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল ও উৎপাদন উপকরণসহ সব খাতে ব্যাপক মূল্য বৃদ্ধি সে সঙ্গে সার্বিক পরিবহন ব্যয় এবং মুদ্রা বিনিময় হার অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যবসা পরিচালনার খরচ অত্যধিক বেড়ে চলেছে। এতে শিল্প কারখানাগুলো সচল রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
এর আগে গত বুধবার জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে বিদ্যুতের পর শিল্প, বিদ্যুৎ ও বাণিজ্যিক খাতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়- যা ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
এতে দেখা যায়, বৃহৎ শিল্পে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম ১১ টাকা ৯৮ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়। অর্থাৎ দাম বেড়েছে প্রায় তিন গুণ।
শিল্পে উৎপাদিত নিজস্ব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (ক্যাপটিভ) জন্য ইউনিট প্রতি গ্যাসের দাম ১৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে। সার কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ১৬ টাকা (ইউনিট প্রতি) অপরিবর্তিত থাকছে।
মাঝারি শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ১১ টাকা ৭৮ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ১০ টাকা ৭৮ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে।
চা–বাগানের ক্ষেত্রে দাম ১১ টাকা ৯৩ পয়সা অপরিবর্তিত থাকছে। হোটেল ও রেস্তোরাঁ খাতে ব্যবহৃত বাণিজ্যিক শ্রেণির গ্রাহকেরা ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতি ইউনিটে দাম দেবেন ৩০ টাকা ৫০ পয়সা। আগে তারা দিচ্ছিলেন ২৬ টাকা ৬৪ পয়সা।
মন্তব্য