নানা আলোচিত সমালোচিত ঘটনা নিয়ে শেষ হয়েছে ২০২২। বছরজুড়েই পুঁজিবাজার নিয়ে ছিল বিভিন্ন ইস্যুতে তোলপাড়। এর ভেতরে দেশের অর্থনীতির চেহারাও বদলেছে অনেকটাই। পুঁজিবাজারের টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে বিনিয়োগকারীরা অনেকটাই ভরসা হারিয়ে ফেলেছেন।
সেন্ট্রাল ডিপোজেটারি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) তথ্যমতে, সদ্য সমাপ্ত ২০২২ সালে বিনিয়োগকারীদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাবের সংখ্যা কমেছে ১ লাখ ৭৩ হাজার ২৩৮টি। এক বছরের ব্যবধানে এ পরিমাণ বিও হিসাব কমে যাওয়াটা স্বাভাবিকভাবে দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা।
সিডিবিএলের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ২ জানুয়ারি বিওধারীর সংখ্যা ছিল ২০ লাখ ৩৪ হাজার ৫৩৯টি। যা গত এক বছরে কমে বছরের শেষ কার্যদিবস ২৯ ডিসেম্বরে দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৬১ হাজার ৩০১টিতে। এতে এক বছরের ব্যবধানে বিওধারীর সংখ্যা কমেছে ১ লাখ ৭৩ হাজার ২৩৮টি বা ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নেয়া বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ ও নজরদারির কারণে বিওধারীর সংখ্যাও কমেছে।
তথ্য অনুযায়ী, বছরের প্রথম কার্যদিবস ২ জানুয়ারি সিডিবিএলে পুরুষ বিওধারীর সংখ্যা ছিল ১৫ লাখ ১১ হাজার ৮২৬টি। ছয় মাসের ব্যবধানে ২ জুন তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ লাখ ৪৬ হাজার ৯১১টিতে। আর সেই পুরুষ বিও হিসাব বছরের শেষ কার্যদিবস ২৯ ডিসেম্বরে কমে দাঁড়ায় ১৩ লাখ ৮৯ হাজার ৮৯০টিতে। এ সময়ে পুরুষ বিওধারীর সংখ্যা কমেছে ১ লাখ ২১ হাজার ৯৩৬টি বা ৮ শতাংশ।
নারী বিওধারীর সংখ্যাও কমেছে উল্লেখযোগ্যভাবে। বছরের প্রথম মাসের একই কার্যদিবসে নারী বিওধারীর সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৭ হাজার ৩৬১টি। যা ছয় মাস পর জুনের একই কার্যদিবসে বেড়ে দাঁড়ায় ৫ লাখ ১৮ হাজার ১৯৯টিতে। কিন্তু তা বছরের শেষে ডিসেম্বরের একই কার্যদিবসে কমে দাঁড়ায় ৪ লাখ ৫৫ হাজার ২৪টিতে। এতে দেখা যায়, এক বছরের ব্যবধানে নারী বিওধারীর সংখ্যা কমেছে ৫ হাজার ৩৩৭টি বা ১০ দশমিক ৩১ শতাংশ।
সিডিবিএলের প্রাপ্ত থেকে দেখা যায়, গত বছরের শুরু থেকে মাঝ পর্যন্ত বিওধারী বা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়লেও তা বছরের শেষে অনেক কমেছে। বছরের শেষ সময়টাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নেয়া বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের পর বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজার ছেড়েছেন।
বিএসইসি ও আর্থিকখাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে দীর্ঘ মতভিন্নতাও দূর হয়েছে এ বছর। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রক্ষণশীল নীতি পরিবর্তনের বিষয়টি আর আভাসে সীমাবদ্ধ নেই। তারা ব্যাংকগুলোকে আরও বেশি বিনিয়োগের সুযোগ দিয়ে নানা নির্দেশও দিয়েছে। বিনিয়োগকারীদের এক যুগের দাবি মেনে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিটেডের গণনা শেয়ারের ক্রয়মূল্যে করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু এসবের কিছুই বিনিয়োগকারীদের হতাশা ঠেকাতে পারেনি। বৈশ্বিক আর দেশের অর্থনীতি নিয়ে নেতিবাচক প্রচারেই উৎকণ্ঠিত ছিল তারা। যার প্রভাব সুস্পষ্ট। এক বছরের ব্যবধানে প্রায় দুই লাখ বিওধারী বাজার ছেড়েছেন।
প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ
এক বছরের ব্যবধানে প্রায় দুই লাখ বিও হিসাব কমার কারণ হিসেবে দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপের অভাব রয়েছে বলে মনে করছেন পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞরা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বছরজুড়েই কৃত্রিমভাবে বাজার রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছে। বাজারকে রক্ষা করতে দীর্ঘমেয়াদী কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। বিএসইসি যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, এসব পদ্ধতিতে বাজার রক্ষা করা যায় না।’
‘বাজার রক্ষা করতে দরকার দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ। নীতিগত পরিবর্তন আনলে বাজার আবারও তার আপন গতিতে ফিরবে’- যোগ করেন তিনি।
ব্রোকারেজ হাউজগুলোও বলছে একই কথা। একাধিক ব্রোকারেজ হাউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বছরের শেষ দিকে একটা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিনিয়োগকারী বাজার থেকে চলে গেছে। অনেকদিনের পুরনো বিনিয়োগকারীও বছরের শেষ সময়টাতে বাজার থেকে বেরিয়ে গেছে।
ইসলামী ব্যাংক সিকিউরিটিজের এমডি ও সিইও জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বছরের শুরুর দিকে বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বাড়লেও তা শেষের দিকে কমার কারণ হচ্ছে, নতুন নিয়ম অনুযায়ী একজন বিওধারীকে অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ৫০ হাজার টাকা রাখতে, আর দ্বিতীয়ত জুনের শেষে নতুন করে বিও হিসাব নবায়ন করতে একটা ফি দিতে হয়। এ দুইটা কারণে দেখা গেছে জুনের পর থেকেই বিও হিসাবের সংখ্যা কমতে শুরু করে।’
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিওতে ১০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা রাখার নিয়মের কারণে তা অনেক বিনিয়োগকারীর সামর্থ্যের বাইরে চলে যাওয়া তারা অনেকেই বাজার থেকে চলে গেছেন। তবে এই এক বছরে আমাদের বিওধারীর সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার বেড়েছে।’
সজিব ইসলাম নামে একজন বিনিয়োগকারী বলেন, ‘বছরের শুরু থেকেই পুঁজিবাজার অনেকটা অস্থির ছিল। বিএসইসির পক্ষ থেকে স্থির মার্কেটের কথা বলা হলেও বাজারকে স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়নি। এই বছর বাজারকে স্থির তো দূরের কথা, বেশিরভাগ সময় নিম্নমুখীই ছিল। বাজার রক্ষা করতে নতুন বছরে নতুন সিদ্ধান্ত নেবেন।’
কমেছে নিষ্ক্রিয় বিও হিসাব
সিডিবিলের প্রাপ্ত তথ্যমতে, নিস্ক্রিয় বিওধারীর সংখ্যা অনেকটা কমেছে। গত বছরের ২ জানুয়ারি নিস্ক্রিয় বিও অ্যাকাউন্ট ছিল ১ লাখ ১৭ হাজার ২০৮টি। যা বছরের শেষে ২৯ ডিসেম্বর কমে দাঁড়িয়েছে ৭৬ হাজার ১টিতে। এতে দেখা যায় বছর শেষে নিষ্ক্রিয় বিওধারীর সংখ্যা কমেছে ৪১ হাজার ২০৭টি বা ৩৫ দশমিক ১৫ শতাংশ।
কমেছে বিদেশি বিও হিসাব
বছরের শেষ কার্যদিবস ২৯ ডিসেম্বর বিদেশি বিও হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৩ হাজার ১১৭টিতে। যা বছরের প্রথম কার্য দিবস ২ জানুয়ারি ছিল ৮৬ হাজার ৩৬১টি। এতে এক বছরের ব্যবধানে বিদেশি বিওধারীর সংখ্যা কমেছে ২৩ হাজার ২৪৪টি বা ২৬ দশমিক ৯১ শতাংশ।
অর্থ ছাড়া বিও হিসাব কমেছে
বিও হিসাব আছে অথচ এতে অর্থ নেই এমন বিও হিসাবের সংখ্যাও এ বছর বেশ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। বছরের প্রথম কার্যদিবস ২ জানুয়ারি অর্থ ছাড়া বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ১৪ হাজার ৪৬২টি। যা বছরের শেষ কার্যদিবস ২৯ ডিসেম্বর কমে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৯৭০টিতে। এতে দেখা যায় এক বছরের ব্যবধানে অর্থ ছাড়া বিওধারীর সংখ্যা কমেছে ১ লাখ ৫০ হাজার ৪৯২টি বা ২৯ দশমিক ২৫ শতাংশ।
এতে বোঝা যাচ্ছে, বছর শেষে যে পরিমাণ বিও হিসাব কমেছে, এর মধ্যে বেশিরভাগই ছিল অর্থ ছাড়া বিও হিসাব। যেসব বিও হিসাবে ন্যূনতম কোনো অর্থ ছিল না, সেসব বিও হিসাবই বছর শেষে অধিকাংশ কমেছে।
আড়াই বছরে সর্বনিম্ন লেনদেন
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ১৬৯টি কোম্পানির শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পরও অংশগ্রহণ বাড়েনি বিনিয়োগকারীদের। গত সোমবার প্রথম কর্মদিবসে সূচক পতনের সঙ্গে লেনদেন নামে ২০০ কোটি টাকার নিচে।
এর আগে সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ২২৭ কোটি ৭৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকার শেয়ার। সেটি ছিল ২০২০ সালের ১৬ জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন লেনদেন। তলানিতে নামলেও গত দুই বছরে লেনদেন ২০০ কোটির নিচে নামেনি, কিন্তু সোমবার হাতবদল হয় ১৯৮ কোটি ৮০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা, যা চলতি বছরের তো বটেই, গত ২ বছর ৫ মাসে সর্বনিম্ন। এর চেয়ে কম লেনদেন হয়েছিল ২০২০ সালের ৭ জুলাই। ওই দিন হাতবদল হয়েছিল ১৩৮ কোটি ৫৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।
অর্ধেকের কিছু বেশি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত আসার দিন বুধবার লেনদেন ছিল ৩৩৩ কোটি ৫৮ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। বৃহস্পতিবার লেনদেন কমে ১০৫ কোটি ৮৪ লাখ ২০ হাজার টাকা বা ৩১ দশমিক ৭২ শতাংশ। সোমবার সেটি কমল ২৮ কোটি ৯৪ লাখ ৫ হাজার টাকা বা ১২ দশমিক ৭০ শতাংশ।
আরও পড়ুন:এলএনজি ও সার আমদানিসহ মোট সাতটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি (এসিসিজিপি)।
বুধবার অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, সার ও গ্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকারের পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এসব প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আশা করছি চলতি মৌসুমে সারের সরবরাহে কোনো ঘাটতি হবে না। এছাড়া সরকার এলএনজি আমদানির মাধ্যমে গ্যাসের ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা করছে।’
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাব অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলা আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেটে সিঙ্গাপুরভিত্তিক গানভর সিঙ্গাপুর পিটিই লিমিটেড থেকে দুই কার্গো এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানি করবে।
এর মধ্যে প্রথম কার্গোতে ৩৩ লাখ ৬৬ হাজার টন এমএমবিটিইউ রয়েছে। এর দাম পড়বে ৬৪০ কোটি ১৫ লাখ টাকা। প্রতি এমএমবিটিইউয়ের দর ১৩ দশমিক ৫৭ ডলার। সমপরিমাণের দ্বিতীয় কার্গোর দাম পড়বে ৬ লাখ ৪৯ হাজার ৫৯ কোটি টাকা। প্রতি এমএমবিটিইউয়ের দাম পড়ছে ১৩ দশমিক ৭৭ ডলার।
পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস, ২০০৮ এর অধীনে কোটেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরবরাহকারী নির্বাচন করে পেট্রোবাংলা।
সার আমদানির জন্য বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) পক্ষে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।
সৌদি আরবের সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া আমদানি করবে বিসিআইসি। এর খরচ হবে ১২৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকা এবং প্রতি টনের দাম পড়বে ৩৪৬.৩৩ ডলার।
একইসঙ্গে, ৩০ হাজার টন ব্যাগ গ্রানুলার ইউরিয়া কার্নফুলি ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে ১২০ কোটি ৭৮ লাখ টাকায় আমদানি করা হবে; যেখানে প্রতি টনের দাম পড়বে ৩৩৫.৫০ ডলার।
নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহে দুটি বাফার গোডাউন নির্মাণের দরপত্র বাতিলের জন্য বিসিআইসির আরেকটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কমিটি।
সার আমদানির জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এর মধ্যে একটি হলো- বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন মরক্কোর ওসিপি এসএ থেকে ১৪৯ কোটি ৪০ লাখ টাকায় ৩০ হাজার টন টিএসপি সার আমদানি করবে। প্রতি টনের দাম পড়বে ৪১৫ ডলার।
এছাড়া সৌদি আরবের মা’দেন থেকে প্রতি টন ৫৮১ ডলার দরে ২৭৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানি করবে বিএডিসি।
মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান এবং তার স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশিরের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) বুধবার দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়ে তাদের ব্যাংক হিসাবের যাবতীয় তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে।
বিএফআইইউর সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের তথ্য তলব করার এই নির্দেশের ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা-সংশ্লিষ্ট ধারা প্রযোজ্য হবে বলে বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়েছে। চিঠিতে তলব করা ব্যক্তির নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টের তথ্য দেয়া হয়েছে।
বিএফআইইউর নির্দেশনায় বলা হয়েছে, হিসাব তলব করা ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী চিঠি দেয়ার তারিখ থেকে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে বিএফআইইউতে পাঠানোর জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, পুঁজিবাজারে কারসাজির দায়ে গত ২৪ সেপ্টেস্বর তারকা এই ক্রিকেটারকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
আরও পড়ুন:তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম বাড়ানো হয়েছে। ১২ কেজির সিলিন্ডারে দাম বেড়েছে ৩৫ টাকা। একইসঙ্গে লিটার প্রতি অটো গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে প্রায় দেড় টাকা।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বুধবার সংবাদ সম্মেলনে দাম বৃদ্ধির এই ঘোষণা দেন।
দাম বৃদ্ধির কারণে এখন থেকে ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম হবে এক হাজার ৪৫৬ টাকা। আর অটোগ্যাস লিটার প্রতি ৬৬ টাকা ৮৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন দর আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকেই কার্যকর হচ্ছে।
আমদানিনির্ভর এলপিজির আন্তর্জাতিক বাজার বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশেও দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছে বিইআরসি।
গত সেপ্টেম্বর মাসে ১২ কেজি এলপি গ্যাসের দাম ছিল এক হাজার ৪২১ টাকা। অন্যদিকে অটোগ্যাস লিটার প্রতি দাম ছিল ৬৫ টাকা ২৬ পয়সা। আগের মাস আগস্টে ১২ কেজি এলপি গ্যাসের দাম ছিল এক হাজার ৩৭৭ টাকা।
২০২১ সালের ১২ এপ্রিলের আগে পর্যন্ত এলপিজির দর ছিল কোম্পানিগুলোর ইচ্ছাধীন। ১২ এপ্রিল বিইআরসি কর্তৃক দর ঘোষণার সময় বলা হয়, আমদানিনির্ভর এই জ্বালানির দাম নির্ধারণে সৌদি রাষ্ট্রীয় কোম্পানি আরামকো ঘোষিত দরকে ভিত্তি মূল্য হিসেবে ধরা হবে।
আরামকো নির্ধারিত দর উঠা-ওঠা-নামা করলে ভিত্তিমূল্য উঠা-নামা করবে। অন্যান্য কমিশন অপরিবর্তিত থাকবে। ঘোষণার পর থেকে প্রতি মাসে এলপিজির দর ঘোষণা করে আসছে বিইআরসি। টানা তিন মাস ধরে আন্তর্জাতিক বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকায় বাংলাদেশেও এলপিজির দাম বাড়ছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বৈদেশিক ঋণপ্রাপ্তির চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি ঋণ পরিশোধ করেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)।
সোমবার এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইআরডি। তাতে বলা হয়েছে, জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ ৪৫৮ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ পেয়েছে। তবে একই সময়ে দেশটিকে ঋণের কিস্তি বাবদ ৫৮৯ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হয়েছে। এতে ঘাটতি ছিল ১৩১ মিলিয়ন ডলার।
ঋণ পরিশোধের হিসাব বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূলধনের ৪১৫ দশমকি ৬ মিলিয়ন ডলার এবং সুদ বাবদ ১৭৩ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়েছে। এটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সুদ পরিশোধে ব্যয় বৃদ্ধি হয়েছে ১৯ মিলিয়ন ডলার।
এই মাসগুলোতে দেশটির বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি ব্যাপক কমায় এই চ্যালেঞ্জকে আরও জটিল করে তুলেছে। কেননা নতুন প্রতিশ্রুতির রেকর্ড মাত্র ২ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
সদ্যসমাপ্ত সেপ্টেম্বর মাসে দেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে ২৪০ কোটি ৪৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। রেমিট্যান্স প্রবাহে গত চার বছরের মধ্যে একক মাসে প্রবাসী আয়ের দিক থেকে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে জুনে ব্যাংকিং চ্যানেলে ২৫৪ কোটি ডলার এবং তার আগে ২০২০ সালের জুলাইয়ে ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্ট বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। এটা আগের অর্থবছরের একই মাসে ছিল মাত্র ১ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার।
এছাড়া আগের মাস আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১৮০ মিলিয়ন ডলার। আগস্টে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ছিল ২ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেপ্টেম্বরে প্রতিদিন গড়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে আট কোটি ডলার। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এই অংকটা ছেল চার কোটি ৪৫ লাখ ডলার। সে হিসাবে রেমিট্যান্স প্রবাহ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
একক মাস হিসেবে গত বছরের তুলনায় এ বছরের সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ৮০.২ শতাংশ। গত বছরের সেপ্টেম্বরের রেমিট্যান্স এসেছিল ১৩৩ কোটি ডলার। তার আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৪ কোটি ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, সেপ্টেম্বরে দেশে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬৩ কোটি ৮৩ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ কোটি ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৬৫ কোটি ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬২ লাখ ডলার।
আলোচিত সময়ে সরকারি বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, পুলিশের কমিউনিটি ব্যাংক, বিদেশি হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে কোনো রেমিটেন্স আসেনি।
শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ব্যাপক রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসীরা আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ১.০৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স বেশি পাঠিয়েছেন, এ হিসাবে প্রবৃদ্ধি ৮০ দশমিক ২২ শতাংশ।
ব্যাংকাররা বলেন, নতুন সরকারের শুরু থেকে প্রবাসীরা হুন্ডিতে রেমিট্যান্স পাঠানো কমিয়ে দিয়েছেন। এখন তারা লাইনে দাঁড়িয়ে হলেও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। সে সুবাদে দেশের প্রবাসী আয় ব্যাপক পরিমাণে বাড়ছে।
আরও পড়ুন:গণঅভ্যুত্থান ও বিপ্লবের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত বর্তমান সরকার বাংলাদেশের জন্য নতুন আশার সঞ্চার করেছে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের প্রাণপ্রিয় দেশ এখন গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধির সুযোগ পেয়েছে। আমরা সবাই একসঙ্গে এগোলে আমাদের বাংলাদেশ দ্রুততম সময়ের মধ্যে দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে এনে একটি উন্নত দেশে রূপান্তরিত হবে। আমরা এ মহৎ লক্ষ্যে অবদান রাখতে এবং বাংলাদেশের কল্যাণে নিবেদিতভাবে কাজ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। পাশাপাশি আমরা নৈতিক ব্যবসায়িক চর্চা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতে বিশ্বাস করি। সে কারণে আমাদের যেকোনো প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে যেকোনো বিভ্রান্তি বা গুজব দূর করতে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা, প্রমাণপত্র এবং তথ্য প্রদানে সদা প্রস্তুত।
নাফিজ সরাফাত
দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা চৌধুরী নাফিজ সরাফাত সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সামাজিক প্ল্যাটফর্মে প্রচারিত বিভ্রান্তিকর তথ্যের ব্যাপারে নিজের অবস্থান প্রকাশ করেছেন।
দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলোতে ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে প্রকাশিত ব্যাখ্যা অনুসারে, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত তার ব্যবসায়িক সাফল্যে ঈর্ষান্বিত একটি মহলের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারের শিকার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলোকে তিনি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছেন।
প্রকাশিত ব্যাখ্যায় চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বলেন, ‘আমাদের হাজারো পরিশ্রমী সহকর্মী এবং স্টেকহোল্ডারদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। অথচ সম্প্রতি লক্ষ করছি, আমার ব্যবসায়িক সাফল্যে ঈর্ষান্বিত একটি চক্র সত্য ও মিথ্যার মিশ্রণ ঘটিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে, যা শুধু সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যমই প্রশ্নবিদ্ধ করছে না, বরং আমরাও অন্যায্যভাবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছি।’
এ ছাড়া তিনি উল্লেখ করেন যে, তার মালিকানাধীন কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এক টাকাও খেলাপি ঋণ নেই এবং প্রতিষ্ঠানগুলো যথাযথ নিয়ম মেনে কর প্রদান করে আসছে।
তিনি বলেন, ‘প্রায় দেড় দশক ধরে দেশের আর্থিক, অবকাঠামো, শিক্ষা ও সংবাদমাধ্যম খাতের উন্নয়নে আমরা নিরলসভাবে কাজ করছি।’
প্রথম আলোতে প্রকাশিত ব্যাখ্যার উদ্ধৃতি থেকে জানা যায়, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত দেশে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক বিনিয়োগ নিয়ে এসেছেন, যার মধ্যে রয়েছে General Electric (U.S.), Nebras Power (Qatar) এবং Kohlberg Kravis Roberts (U.S.)-এর মতো খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারত্ব। এ ছাড়াও The US Trade and Development Agency (USTDA)-এর অনুদান ও SERV (Swiss Govt.), DEG, AIIB, OPEC Fund, এবং Standard Chartered Bank-এর দীর্ঘমেয়াদি বৈদেশিক ঋণের সহায়তায় বাংলাদেশে বড় পরিসরের উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।
প্রকাশিত ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছে, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। যেখানে অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠে, সেখানে এ বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে পরিচালিত হচ্ছে।
পূর্বাচলে জমি বরাদ্দ নিয়ে যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন এবং কেবল ধারণাপ্রসূত বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
এ ছাড়াও পদ্মা ব্যাংক নিয়ে ওঠা বিতর্ক সম্পর্কে তার বক্তব্য ছিল, ‘আমি দায়িত্ব নেয়ার আগেই ফারমার্স ব্যাংক লুটপাটের শিকার হয়েছিল। আমাকে দেয়া দায়িত্ব ছিল ব্যাংকটিকে পুনরুদ্ধার করা।
‘সঠিক পুনর্বিবেচনা ও শ্রেণিবিন্যাস করার পর দেখা যায়, প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণের বোঝা নিয়ে ব্যাংকটি কার্যত দেউলিয়া অবস্থায় ছিল।’
তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, তার সময়ে ব্যাংকটির পরিচালনা রক্ষণশীল ছিল এবং তার নেতৃত্বাধীন পরিচালনা পর্ষদের দেয়া কোনো ঋণ খেলাপি হয়নি।
আরও জানানো হয়, সম্প্রতি চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের বিরুদ্ধে রেইস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের কারসাজির অভিযোগ উঠেছে, তবে তিনি একে পুরোপুরি ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যা দেন।
তার দাবি, প্রতিষ্ঠানটির নামমাত্র চেয়ারম্যান থাকা সত্ত্বেও প্রকৃত মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ ছিল ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসান তাহের ইমামের হাতে।
এ বিষয়ে তিনি দীর্ঘদিন আগেই হাইকোর্ট ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (BSEC) কাছে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন।
ব্যবসায়িক পরিমণ্ডলে তার কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা আছে বলে যে গুঞ্জন ছড়ানো হচ্ছে, সেটাকেও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে আখ্যা দেন তিনি।
নাফিজ সরাফাত বলেন, ‘আমি আমার সততা, মেধা ও সহকর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশেই ব্যবসা করছি এবং ভবিষ্যতেও তা-ই করে যাব।’
এ বিবৃতির মাধ্যমে চৌধুরী নাফিজ সরাফাত পুনরায় স্পষ্ট করেছেন যে, তিনি তার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সব ধরনের গুজব ও বিভ্রান্তি দূর করতে প্রয়োজনীয় তথ্য ও ব্যাখ্যা প্রদানে সদা প্রস্তুত।
আরও পড়ুন:সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে টানা চার দিন আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে এ সময়ে বেনাপোল শুল্ক ভবন ও বন্দরে পণ্য উঠানামা, খালাস এবং বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক থাকবে।
ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ক্লিয়ারিং এজেন্টস স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্ত্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘শারদীয় দূর্গাপূজার সরকারি ছুটির কারণে ৯ অক্টোবর বুধবার থেকে ১২ অক্টোবর শনিবার পর্যন্ত পেট্রাপোল বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তাই এ সময় বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে। তবে ইলিশের চালান গ্রহণ করা হবে। ১৩ অক্টোবর রোববার সকাল থেকে আবারও আমদানি-রপ্তানি চালু হবে।’
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, ‘দুর্গাপূজার ছুটির কারণে চারদিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে বলে ওপারের ক্লিয়ারিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন পত্র দিয়ে আমাদেরকে অবহিত করেছে।’
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) রাশেদুল সজীব নাজির বলেন, ‘দুর্গাপূজার ছুটির বিষয়টি ওপারের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন। তবে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও এপারের বন্দরে পণ্য উঠানামা, খালাস ও পণ্যের শুল্কায়ন কাজকর্ম স্বাভাবিক নিয়মে চলবে। বেনাপোল বন্দরে পণ্য খালাসের পর ভারতীয় ট্রাক দেশে ফিরে যেতে পারবে।’
বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ওসি ইমতিয়াজ ভুইয়া বলেন, ‘পূজার ছুটিতে দুদেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও এ সময় দুদেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক থাকবে।’
মন্তব্য