জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য সেরা করদাতা হিসেবে মোট ১৪১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ট্যাক্স কার্ড ও সম্মাননা স্মারক দিয়েছে।
রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে সেরা করদাতাদের সম্মাননা ও ট্যাক্স কার্ড তুলে দেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
এবার ব্যক্তিপর্যায়ে ৭৬ জন, কোম্পানি পর্যায়ে ৫৩ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ১২টি ট্যাক্সকার্ড দেয়া হয়।
গত রোববার অর্থ মন্ত্রণালয় এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করে। সে অনুসারে সেরা করদাতাদের বুধবার সম্মাননা স্মারক ও ট্যাক্স কার্ড তুলে দেয়া হয়।
ব্যবসায়ী ক্যাটাগরিতে হাকিমপুরী জর্দার স্বত্বাধিকারী হাজী মো. কাউছ মিয়া অন্য বছরগুলোর মতো ২০২১-২২ করবর্ষেও এনবিআরের সেরা করাদাতা হয়েছেন। তিনি সিনিয়র সিটিজেন ক্যাটাগরিতে এ সম্মাননা পেলেন। কোম্পানি পর্যায়ে টেলিকমিউনিকেশন ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ করদাতার ট্যাক্স কার্ড পায় গ্রামীণফোন।
অন্যান্য ক্যাটাগরিতে ট্যাক্স কার্ড পেয়েছেন মো. নজরুল ইসলাম মজুমদার, মো. মনির হোসেন ও নাফিস শিকদার।
ব্যাংকিং ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পেয়েছে ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যার্ন্ডার্ড চার্টাড ব্যাংকের বাংলাদেশ ব্রাঞ্চ, ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, দি হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন (এইচএসবিসি) লিমিটেড।
নন-ব্যাংকিং ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পেয়েছে ইনফাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমেটেড (ইডকল), আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেড, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স লিমিটেড।
ওষুধ ও রসায়ন ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পেয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, রেনেটা লিমিটেড, বেক্সিমকো লিমিটেড ও ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।
চামড়াশিল্প ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পেয়েছে বাটা সু কোম্পানি, লালমাই ফুটওয়্যার লিমিটেড ও অ্যালায়েন্স লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার লিমিটেড।
অন্যান্য ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পেয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ লিমিটেড, সেখ আকিজ উদ্দিন, আমেরিকান লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও মেঘনাঘাট পাওয়ার লিমিটেড।
প্রকৌশল ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পেয়েছে বাংলাদেশ মেশিন ট্যুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেড, বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেড ও ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পায় অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, প্রাণ ডেইরি লিমিটেড ও স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড।
জ্বালানি ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পেয়েছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড ও পেট্রোমেক্স রিফাইনারি লিমিটেড।
পাটশিল্প ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পায় আকিজ জুট মিলস লিমিটেড, আইয়ান জুট মিলস লিমিটেড ও রোমান জুট মিলস লিমিটেড।
স্পিনিং ও টেক্সটাইল মিলস ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পেয়েছে কোটস বাংলাদেশ লিমিটেড, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল লিমিটেড, নাহিদ কটন মিলস লিমিটেড, এসিএস টেক্সটাইল (বাংলাদেশ) লিমিটেড, বাদশা টেক্সটাইলস লিমিটেড, এপেক্স টেক্সটাইল প্রিন্টিং মিলস লিমিটেড ও এনজেড টেক্সটাইল লিমিটেড।
প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পেয়েছে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া লিমিটেড, সময় মিডিয়া লিমিটেড, টাইমস মিডিয়া লিমিটেড ও মিডিয়াস্টার লিমিটেড।
রিয়েল স্টেট ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পেয়েছে বে ডেভলপমেন্ট লিমিটেড, কনকর্ড রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড, বিল্ডিং টেকনোলজি অ্যান্ড আইডিয়াস লিমিটেড।
তৈরি পোশাক ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পেয়েছে স্কয়ার ফ্যাশন লিমিটেড, ইউনিভার্সেল জিন্স লিমিটেড, জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিক্স লিমিটেড, রিফাত গার্মেন্টস লিমিটেড, প্যাসিফিক জিন্স লিমিটেড, স্নোটেক্স আউটওয়্যার লিমিটেড ও ইয়াংওয়ান হাইটেক স্পোর্টসওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
অন্যান্য করদাতা পর্যায়ে চার ক্যাটাগরিতে ১২টি প্রতিষ্ঠান ট্যাক্স কার্ড পায়। এরমধ্যে ফার্ম ক্যাটাগরিতে মেসার্স এসএন করপোরেশন, মেসার্স ফখর উদ্দিন আলী আহমদ, মেসার্স মো. জামিল ইকবাল ও মেসার্স ছালেহ আহাম্মদ।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পেয়েছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড। ব্যক্তিসংঘ ক্যাটাগরিতে সেনা কল্যাণ সংস্থা হেড অফিস ও বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট।
অন্যান্য ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পেয়েছে আশা, বুরো বাংলাদেশ, ইউনাইটেড ডেভলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ ফর প্রোগ্রামড অ্যাকশন (উদ্দীপন) ও রিসোর্স ইন্টিগ্রেশন সেন্টার (রিক)।
ব্যক্তি পর্যায়ে ৭৬ জন পেয়েছেন ট্যাক্স কার্ড। তাদের মধ্যে সিনিয়র সিটিজেন ক্যাটাগরিতে মো. কাউছ মিয়া ছাড়াও সর্বোচ্চ করদাতা হিসেবে ট্যাক্স কার্ড পেয়েছেন খাজা তাজমহল, ফজলুর রহমান, এম সাহাবুদ্দিন আহমেদ ও ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার বদরুল হাসান।
গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাটাগরিতে ট্যাক্স কার্ড পান মো. নাসির উদ্দিন মৃধা, এ মতিন চৌধুরী, ডা. মো. আমজাদ হোসেন, মো. জয়নাল আবেদীন, লে. জেনারেল আবু সালেহ মো. নাসিম (অব.), চিকিৎসক ক্যাটাগরিতে ডা. জাহাঙ্গীর কবির, প্রফেসর ডা. একেএম ফজলুল হক, অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, ড. নার্গিস ফাতেমা ও ডা. এনএএম মোমেনুজ্জামান।
সাংবাদিক ক্যাটাগরিতে ট্যাক্স কার্ড পেয়েছেন ফরিদুর রেজা, মাহফুজ আনাম, মতিউর রহমান, শাইখ সিরাজ ও নঈম নিজাম। আইনজীবী ক্যাটাগরিতে শেখ ফজলে নূর তাপস, আহসানুল করিম, তৌফিকা আফতাব, ব্যারিস্টার নিহাদ কবির ও অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন।
প্রকৌশলী ক্যাটাগরিতে ট্যাক্স কার্ড পেয়েছেন মো. জহুরুল ইসলাম, প্রকৌশলী মো. মোখলেসুর রহমান ও মো. আব্দুল্লাহ। স্থপতি কাটাগরিতে মোহাম্মদ ফয়েজ উল্লাহ, এনামুল করিম নির্ঝর ও স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। অ্যাকাউন্ট্যান্ট ক্যাটাগরিতে মাশুক আহমেদ, মো. মোক্তার হোসেন ও রাকেশ সাহা এফসিএ।
খেলোয়াড় ক্যাটাগরিতে ট্যাক্স কার্ড পেয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল খান ও কাজী নুরুল হাসান (সোহান)।
অভিনেতা-অভিনেত্রী ক্যাটাগরিতে ট্যাক্স কার্ড পেয়েছেন মাহফুজ আহমেদ, মেহজাবীন চৌধুরী ও পীযূষ বন্দোপাধ্যায়। কণ্ঠশিল্পী ক্যাটাগরিতে তাহসান রহমান খান, এস ডি রুবেল, কুমার বিশ্বজিৎ দে।
নারী ক্যাটাগরিতে ট্যাক্স কার্ড পেয়েছেন আনোয়ারা হোসেন, আমিনা আহমেদ, শাহনাজ রহমান, তাসনীম মাহমুদ ও পারভীন হাসান। প্রতিবন্ধী ক্যাটাগরিতে আকরাম মাহমুদ, ডা. মো. মামুনুর রশিদ ও লুবনা নিগার।
বেতনভোগী ক্যাটাগরিতে ট্যাক্স কার্ড পেয়েছেন মোহাম্মদ ইউসুফ, রুবাইয়াৎ ফারজানা হোসেন, হোসনে আরা হোসেন, লায়লা হোসেন ও এম এ হায়দার হোসেন।
তরুণ ক্যাটাগরিতে ট্যাক্স কার্ড পেয়েছেন সাফওয়ান সোবহান, আসিফ ইকবাল মাহমুদ, নাসিরুউদ্দিন আক্তার রশীদ, রাইসা সিগমা হিমা ও রবিন রাজন সাখাওয়াত।
ব্যবসায়ী ক্যাটাগরিতে ট্যাক্স কার্ড পেয়েছেন গোলাম দস্তগীর গাজী, এস এম শামছুল আলম, মো. মাহবুবুর রহমান, গাজী গোলাম মূর্তজা ও এস এম আশরাফুল আলম।
নতুন করদাতা ক্যাটাগরিতে ট্যাক্স কার্ড পেয়েছেন এরিক এম ওয়াকার, ওবায়দুল ইসলাম কিরণ, নাজমা আক্তার, লুইস এনরিকে ম্যায়োর্গা, জুমারা বেগম, সাকেব মোহাম্মদ আলী ও সাদরুদ্দিন উদ্দিন আহসান আলী।
ট্যাক্স কার্ড পাওয়া ব্যক্তিরা রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সুবিধা পাবেন। তাদের জন্য বরাদ্দ রাখা হবে বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ, তারকা হোটেলসহ সব আবাসিক হোটেল বুকিংয়ে অগ্রাধিকার। পাশাপাশি কার্ডধারী নিজে ও তার স্ত্রী বা স্বামী, নির্ভরশীল সন্তানের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে কেবিন সুবিধা প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার পাবেন। থাকবে আকাশ, রেল ও জলপথে সরকারি যানবাহনে টিকিট প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার এবং জাতীয় অনুষ্ঠান, সিটি করপোরেশন, পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকার কর্তৃক আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ।
আরও পড়ুন:৫৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি সকাল ৬টা ১১ মিনিটে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ওই সময় তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কয়েক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। ওই সময়ে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা, তিন বাহিনীর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিদেশি কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
পরে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:চলতি বছরের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এ ডাকটিকিট অবমুক্ত করা হয়।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ড. মুশফিকুর রহমান ও ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএম শাহাবুদ্দিন।
প্রধান উপদেষ্টার গণমাধ্যম শাখা থেকে এমন তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় পর্যায়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাত বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫’ তুলে দিয়েছেন।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক এ পুরস্কার প্রদান করেন তিনি।
এবার স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ পুরস্কার বিতরণ পর্বটি সঞ্চালনা করেন। তিনি পুরস্কার বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫ তুলে দেবেন।
ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।
তথ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সাতজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ২০২৫ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন।
গত ১১ মার্চ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
যেসব ব্যক্তি এবার স্বাধীনতা পুরুস্কার পাচ্ছেন তারা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
আরও পড়ুন:ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামান রবিবার যে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন, তাতে বলা হয়, ‘সরকার আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করল। ছুটিকালীন সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
‘তবে জরুরি পরিষেবা, যেমন: বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।’
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতা-বহির্ভূত থাকবে। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।
‘জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসসমূহ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে। আদালতের কার্যক্রমের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নে সবার আগে পরিবার থেকে নারীকে সাহস দিতে হবে। যেকোনো সংকটে নারীর পাশে ঢাল হয়ে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, পরিবার পাশে না থাকলে রাষ্ট্রের পক্ষে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। পরিবার নারীকে সাহস দিলে রাষ্ট্রও নারীর পাশে থেকে সাহস জোগাতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীর প্রতিবন্ধকতা কখনও শেষ হয় না। সমাজে একটা গোষ্ঠী আছে, যারা নারীকে ক্ষমতায়িত করতে চায় না। দুর্বল নারীকে যত পছন্দ করে, সবলচিত্তের নারীকে তারা পছন্দ করে না। এটাই বাস্তবতা।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে (৮ মার্চ) সামনে রেখে জাতীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।
এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
উপদেষ্টা বলেন, ‘একজন নারীকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা হলে সে দেশের কাজে ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও পরিবারের পাশাপাশি সমাজেরও দায় রয়েছে। নারীর চলার পথ পুরুষের পাশাপাশি নির্বিঘ্ন ও নির্ভরতার হতে হবে।’
তিনি বলেন, “নারী এখন যে অবস্থানে রয়েছে, সে অবস্থানে থেকে নারী বলে বিতর্কিত নয়, কাজে সে বিতর্কিত হোক, অদক্ষ বলে বিতর্কিত হোক, শুধু নারী বলেই ভূল, নারী বলেই অদক্ষ, এ কথাটা বলা যাবে না। আমি বলব ‘স্কাই ইজ দ্য লিমিট।
“তাই তার চিন্তার গন্ডিটাকে তার পারিপার্শ্বিকতার নেতিবাচক মনোভাবে আটকে না রেখে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে তাদের পাশে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অভিভাবককে বুঝতে হবে, ছেলে ও মেয়ে দুজনই পরিবারের সম্পদ। পরিবারের উচিত নারীকে ক্ষমতায়িত করা।”
আরও পড়ুন:চলতি বছর ব্যতিক্রমী কিছু মানুষ ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
এ বছর কারা ও কতজন এ পুরস্কার পাচ্ছেন, তা জানাননি উপদেষ্টা।
সচিবালয়ে রবিবার স্বাধীনতা পুরস্কার সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে তিনি উল্লিখিত বক্তব্য দেন।
উপদেষ্টা বলেন, কমিটি কিছু নাম সুপারিশ করেছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নামের তালিকা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানো হবে।
দেশের জন্য অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর ব্যতিক্রমী কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ওই সময়ে উপস্থিত আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, এর আগে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে দলগত ও গোষ্ঠীগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো। র্যাবের মতো বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানকেও দেশের সর্বোচ্চ এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।
এ বছর ১০ জনের কম ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য