অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ১০ বিলিয়ন (১ হাজার কোটি) ডলারের বেশি বিদেশি ঋণ পেয়েছিল বাংলাদেশ, যা ছিল আগের বছরের চেয়ে ২৬ শতাংশ বেশি। আড়াই বছরের করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় চাপে পড়া অর্থনীতিকে সামাল দিতে কম সুদের বিশাল অঙ্কের এই ঋণ বেশ অবদান রেখেছিল।
কিন্তু সেই জোয়ার আর নেই। বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভের অন্যতম উৎস বিদেশি ঋণপ্রবাহে ভাটা পড়েছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থার কাছ থেকে ২৪৬ কোটি ২৫ লাখ (২ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন) ডলারের ঋণ-সহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ। এই অঙ্ক গত ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২০ দশমিক ৩০ শতাংশ কম। গত বছরের এই পাঁচ মাসে ৩০৮ কোটি ৯৫ লাখ (৩ দশমিক শূন্য ৯ বিলিয়ন) ডলার এসেছিল।
যুদ্ধের ধাক্কায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিও বেশ চাপে পড়েছে। অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর পাশাপাশি রিজার্ভও কমছে; নেমে এসেছে ৩৪ বিলিয়ন ডলারে। এই চাপ সামাল দিতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন এখন কম সুদের বিদেশি ঋণ-সহায়তা। কিন্তু তেমনটি না হয়ে উল্টো কমছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) গতকাল মঙ্গলবার বিদেশি ঋণপ্রবাহের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, গত অর্থবছরের ধারাবাহিকতায় বিদেশি ঋণপ্রবাহের উল্লম্ফন নিয়ে শুরু হয়েছিল ২০২২-২৩ অর্থবছর। প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রায় ৪৯ কোটি ডলারের বিদেশি ঋণ-সহায়তা এসেছিল, যা ছিল গত জুলাইয়ের চেয়ে ৪৮ দশমিক ৫০ শতাংশ বেশি। কিন্তু দ্বিতীয় মাস আগস্টে এসে হোঁচট খায়। ওই মাসে ৩৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলারের ঋণ ছাড় করে দাতারা, যা ছিল আগের মাস জুলাইয়ের চেয়ে প্রায় ২৩ শতাংশ কম।
পরের দুই মাস সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে অবশ্য কিছুটা বেড়েছে। সেপ্টেম্বরে আসে ৪৮ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। আর সব শেষ অক্টোবরে এসেছে ৬২ কোটি ১৪ লাখ ডলার। সবশেষ নভেম্বর মাসে তা কমে ৪৯ কোটি ডলারে নেমেছে। সব মিলিয়ে পাঁচ মাসের (জুলাই-নভেম্বর) হিসাবে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২০ দশমিক ৩০ শতাংশ বিদেশি ঋণ কম এসেছে দেশে।
‘এই মুহূর্তে কম সুদের বিদেশি ঋণ খুবই প্রয়োজন’ মন্তব্য করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অর্থনীতির বিশ্লেষক আতিউর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের রিজার্ভ চাপের মধ্যে আছে। এই চাপ সামলাতে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকাসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার ঋণ প্রয়োজন। এসব সংস্থার পাইপলাইনে যেসব ঋণ আছে, সেগুলো দ্রুত আনতে পদক্ষেপ নিতে হবে। সুখের খবর হচ্ছে, আইএমএফ ঋণ দিতে রাজি হয়েছে। বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ অন্যরাও আশ্বাস দিয়েছে। এসব ঋণ যত দ্রুত পাওয়া যাবে, ততই মঙ্গল। তাতে সরকার সহজেই সংকট মোকাবিলা করতে পারবে। আমার বিশ্বাস, ২০২৩ সাল থেকেই সরকার সাহস সঞ্চার করে ঘুরে দাঁড়াবে। অর্থনীতিও আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।’
অর্থনীতির আরেক গবেষক আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেছেন, ‘বৈশ্বিক কারণে পৃথিবীর অনেক দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিও বেশ চাপের মধ্যে পড়েছে। এ চাপ সামলাতে এই মুহূর্তে কম সুদের বেশি বেশি বিদেশি ঋণের খুব দরকার ছিল। কিন্তু উল্টো কমে যাচ্ছে। সরকারকে চাপমুক্ত হতে বেগ পেতে হচ্ছে। যুদ্ধের ধাক্কা সামাল দিতে বাংলাদেশের মতো অনেক দেশকে দাতাদের সহায়তা করতে হচ্ছে। সে কারণে এবার ঋণটা একটু কম আসছে। তবে ফেব্রুয়ারিতে যদি আমরা আইএমএফের ঋণের প্রথম কিস্তিটা পেয়ে যাই, তাহলে কিন্তু আমাদের সংকট অনেকটাই কেটে যাবে। রিজার্ভ কমার যে ধারা রয়েছে, সেটা আর থাকবে না।’
এই অর্থবছরে বিদেশি ঋণ কমার কারণ ব্যাখ্যা করে দীর্ঘদিন আইএমএফের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করে আসা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান মনসুর বলেন, ‘দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা মহামারি করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে গত অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থার কাছ থেকে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ঋণ-সহায়তা পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু এখন তো আর কোভিডের ঋণ পাওয়া যাচ্ছে না। অস্থির বিশ্ব পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশকে ঋণ নিতে হচ্ছে দাতা সংস্থাগুলোকে। সে কারণেই বিদেশি ঋণ কমছে। আমার মনে হচ্ছে, এবার গতবারের চেয়ে ঋণ বেশ খানিকটা কম আসবে।’
ইআরডির তথ্যে দেখা যায়, জুলাই-নভেম্বর সময়ে দাতাদের কাছ থেকে যে ২৪৬ কোটি ২৫ লাখ ডলারের ঋণ-সহায়তা পাওয়া গেছে, তার মধ্যে প্রকল্প সাহায্য এসেছে ২৩৫ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। আর অনুদান পাওয়া গেছে ১০ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে প্রকল্প সাহায্য পাওয়া গিয়েছিল ৩০১ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। অনুদান এসেছিল ৭ কোটি ৬২ লাখ ডলার।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ৭৯৫ কোটি ৭৫ লাখ ৬০ হাজার (৭ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন) ডলার ঋণ-সহায়তা পেয়েছিল বাংলাদেশ। তার আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে এসেছিল ৭৩৮ কোটি (৭ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন) ডলার।
বাংলাদেশে বিদেশি ঋণ বাড়তে থাকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে। ওই বছরই এক লাফে অর্থ ছাড় ৩০০ কোটি থেকে ৬৩৭ কোটি ডলারে উন্নীত হয়। তারপর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আসে ৬৫৪ কোটি ডলার।
সবচেয়ে বেশি দিয়েছে জাপান
২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে সবচেয়ে বেশি অর্থ ছাড় করেছে জাপান, ৭৪ কোটি ২৭ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, এই পাঁচ মাসে মোট বিদেশি ঋণের ৩০ দশমিক ১৬ শতাংশই দিয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
চীনের কাছ থেকে পাওয়া গেছে ৪৬ কোটি ৮৭ লাখ ডলার। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) দিয়েছে ২৪ কোটি ৭ লাখ ডলার। বিশ্বব্যাংক ছাড় করেছে ৪২ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। ভারত দিয়েছে ১৪ কোটি ৯১ লাখ ডলার। এ ছাড়া রাশিয়ার কাছ থেকে পাওয়া গেছে প্রায় ২০ কোটি ডলার। এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি) দিয়েছে ১ কোটি ৫৪ লাখ ১০ হাজার ডলার।
প্রতিশ্রুতি তলানিতে নেমেছে
ইআরডির তথ্য বলছে, জুলাই-নভেম্বর সময়ে দাতাদের ঋণ-সহায়তার প্রতিশ্রুতি তলানিতে নেমে এসেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের এই পাঁচ মাসে ৩৯৩ কোটি ৩৬ লাখ ডলার ঋণ-সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দাতারা। এই বছরের জুলাই-নভেম্বরে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মাত্র ৪৬ কোটি ১৩ লাখ ১০ হাজার ডলারের। এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, গত অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে এই বছরের একই সময়ের চেয়ে সাড়ে ৮ গুণের বেশি প্রতিশ্রুতি পাওয়া গিয়েছিল।
সুদ পরিশোধ বেড়েছে
জুলাই-নভেম্বর সময়ে আগে নেয়া ঋণের আসল ও সুদ বাবদ ৮৮ কোটি ৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার পরিশোধ করেছে সরকার। গত বছরের একই সময়ে সুদ-আসল বাবদ ৮৬ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার ডলার শোধ করা হয়েছিল। এ হিসাবে এই পাঁচ মাসে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে সুদ-আসল পরিশোধ বাবদ ১ দশমিক ৪০ শতাংশ বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে সরকারকে।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নে বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাসব্যাপী ‘উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মসূচি’র সমাপনী ও সনদ প্রদান অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধায়নে এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে পরিচালিত অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মসূচি “স্কিলস ফর ইন্ডাস্ট্রি কম্পিটিটিভনেস অ্যান্ড ইনোভেশন প্রোগ্রাম (এসআইসিআইপি)” প্রকল্পের অংশ হিসেবে বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করে।
মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, রাজধানীর দিলকুশায় বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের ট্রেনিং সেন্টারে আয়োজিত সমাপনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিবিও কে. এম. আওলাদ হোসেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমইএসপিডি এর পরিচালক নওশাদ মোস্তফা। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এসএমইএসপিডি এর অতিরিক্ত পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম, এসএমইএসপিডি এর যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ ওয়াসিম, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান রফিক আহমেদ ও এসএমই বিভাগের প্রধান জ্যোতির্ময় চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২৫ জন উদ্যোক্তার মাঝে সনদপত্র ও ব্যাংকের পক্ষ থেকে উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্য থেকে সেরা তিনজন উদ্যোক্তাকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
শক্ত গড়নের পাঁজর আর দীর্ঘদেহী গ্রে-হাউন্ড কুকুর জেলার সরাইল উপজেলার ঐতিহ্যবাহী একটি প্রাণী। সাহস আর রণকৌশলে অন্যসব কুকুরের চেয়ে আলাদা। দৌড়ের গতিও অন্যসব কুকুরের চেয়ে বেশি। তীক্ষ্ণ দৃষ্টি আর শিকারে পারদর্শিতার কারণে গ্রে-হাউন্ড কুকুর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ডগ স্কোয়াডেও ব্যবহৃত হয়েছে বলে জানা যায়।
ঐতিহ্যবাহী এই গ্রে-হাউন্ড কুকুর এখন অস্তিত্ব সংকটে। পুরো সরাইল জুড়ে হাতেগোনা কয়েকটি বাড়িতে দেখা মেলে এই কুকুরের। ঐতিহ্যবাহী ও দামি বিরল প্রজাতির এই কুকুরকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে গ্রে-হাউন্ড প্রজনন কেন্দ্র গড়ে তোলার কথা ভাবছে প্রশাসন। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারফ হোসাইন বাসসের সাথে আলাপকালে একথা জানান।
তিনি বলেন, বাণিজ্যিকভাবে গ্রে-হাউন্ড কুকুর উৎপাদন ও বাজারজাত করার বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রাথমিক আলোচনা ও সম্ভাব্যতা যাচাই করেছি। গ্রে-হাউন্ড কুকুরের জাত টিকিয়ে রাখার জন্য একটি প্রজনন কেন্দ্র করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সম্মলিতভাবে কাজ করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঐতিহ্য ধরে রাখতে একটি পরিবার এখনও বংশ পরম্পরায় গ্রে-হাউন্ড কুকুর পালন করছে। সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের চৌরাগুদা গ্রামের দুই ভাই তপন লাল রবিদাস ও যতন লাল রবিদাস বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে গ্রে-হাউন্ড কুকুর পালন করছেন। তবে ব্যয়বহুল খাদ্যাভ্যাসের কারণে গ্রে-হাউন্ড কুকুর পালন তাদের জন্য কষ্টসাধ্য।
জনশ্রুতি আছে, প্রায় দুইশ বছর আগে সরাইলের জমিদার দেওয়ান মোস্তফা আলী হাতি নিয়ে কলকাতা যাচ্ছিলেন। পথে এক ইংরেজ সাহেবের কাছে একটি সুন্দর কুকুর দেখতে পান। তিনি কুকুরটি কেনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে তিনি একটি হাতির বিনিময়ে ইংরেজ সাহেবের কাছ থেকে ঐ স্ত্রী কুকুরটি নিয়ে আসেন।
এলাকার প্রবীণদের সাথে কথা বলে জানা যায়, একসময় সরাইল উপজেলার প্রতিটি বাড়িতে দেখা মিলত গ্রে-হাউন্ড কুকুরের। মূলত বাড়ির নিরাপত্তা এবং শেয়াল তাড়ানোর জন্য গ্রে-হাউন্ড কুকুর পালনে উৎসাহী হন সরাইলের বাসিন্দারা। ধীরে ধীরে এই কুকুর বাণিজ্যিকভাবেও লালন-পালন শুরু করেন অনেকে। তবে অন্যসব কুকুরের তুলনায় গ্রে-হাউন্ড পালন কিছুটা ব্যয় সাপেক্ষ। এর ফলে অনেকেই গ্রে-হাউন্ড কুকুর পালন বন্ধ করে দেন। এতেই কমতে থাকে গ্রে-হাউন্ড কুকুরের সংখ্যা। এখন হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার শখের বশে গ্রে-হাউন্ড কুকুর পালন করছে। তবে ঐতিহ্য ধরে রাখার পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে মাত্র তপন রবিদাস ও যতন রবিদাস গ্রে-হাউন্ড কুকুর পালন করছেন।
কুকুর ছানাগুলো বিক্রি করা হয় স্ট্যাম্প করে। তবে পেশায় মুচি তপন ও যতনের জন্য গ্রে-হাউন্ড পালন করা এখন কষ্টকর হয়ে উঠেছে। স্বল্প আয়ে সংসার চালাতেই হিমশিম খেতে হয় তাদের। এর ফলে অর্থের অভাবে ঠিকভাবে গ্রে-হাউন্ড কুকুরের পরিচর্যা করতে পারছেন না দুই ভাই।
তপন লাল রবিদাস বলেন, বড় প্রত্যেকটি কুকুরের জন্য প্রতিদিন অন্তত ৩০০ টাকার খাবারের প্রয়োজন হয়। ভাত, মাছ, মাংস, ডিম ও দুধ ছাড়া অন্য কোনো খাবার খায় না গ্রে-হাউন্ড কুকুর। কিন্তু সবসময় আমরা এই খাবার খাওয়াতে পারি না। আর্থিক টানাপোড়নের সংসারে আমাদের নিজেদের চলতেই কষ্ট হয়। এর মধ্যে কুকুরের খাবারের জন্য বাড়তি টাকা খরচ করা আমাদের জন্য কষ্টকর। শুধুমাত্র পূর্ব পুরুষরা কুকুর পালন করতেন বলেই আমরা এখনও পালন করছি।
প্রাণিসম্পদ বিশেষজ্ঞদের মতে, ঐতিহ্যবাহী এই কুকুরের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। এই কুকুর কেবল সরাইলের ঐতিহ্যই নয়, এটি নিরাপত্তার কাজেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এর সঠিক প্রজনন, রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজেও এদের ব্যবহার করা সম্ভব।
তাদের মতে, সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ ও পৃষ্ঠপোষকতায় ঐতিহ্যবাহী সরাইলের বিরল প্রজাতির মূল্যবান গ্রে-হাউন্ড কুকুরকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা প্রয়োজন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৩ সালে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সরাইল উপজেলা সদরে একটি গ্রে-হাউন্ড কুকুর সংরক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছিল।
তবে উপযুক্ত চিকিৎসা, সুষ্ঠু পরিচালনা ও আর্থিক সংকটের কারণে কয়েক বছর পরই কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। উপজেলা সদরের বড়দেওয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা শাহজাহান ঠাকুর ২০০১ সালে সরাইলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কুকুর প্রজননের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত তার উদ্যোগটিও টেকেনি।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারফ হোসাইন বলেন, সরাইলের ঐতিহ্যের কথা বলতে গেলে বিখ্যাত গ্রে-হাউন্ড কুকুরকে বাদ দেওয়া যাবে না। দেশ বিদেশে এই কুকুর সরাইলের পরিচিতি বহন করে। এছাড়া গ্রে-হাউন্ড কুকুর প্রভুভক্ত। পাশাপাশি গ্রে-হাউন্ড কুকুর বাড়িঘর পাহারা দেয়। গোয়েন্দা তৎপরতার মত গুণও রয়েছে তাদের। সূত্র: বাসস
প্রাইম ব্যাংক পিএলসি গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সহযোগিতায় সম্প্রতি আয়োজন করেছে “ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন: এঙ্গেজিং অ্যান্ড ইনস্পায়ারিং ইয়ুথ ইন ব্যাংকিং” শীর্ষক এক সেমিনার। অনুষ্ঠানটি ব্যাংকের বিশেষ উদ্যোগ ‘প্রাইম একাডেমিয়া’ প্ল্যাটফর্মের আওতায় অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গ্রিন ইউনিভার্সিটির মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন। তিনি বলেন, “টেকসই উন্নয়ন ও যুবশক্তির ক্ষমতায়নে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি অপরিহার্য।” এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. খাজা ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. ফাইজুর রহমান, ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তারেক আজিজ, এবং রেজিস্ট্রার ক্যাপ্টেন (নৌ.) এস. এম. সালাউদ্দিন (এনজিপি, পিএসসি) সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সিনিয়র শিক্ষকবৃন্দ।
প্রাইম ব্যাংকের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন শায়লা আবেদিন, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব লায়াবিলিটি, যিনি তরুণদের জন্য ব্যাংকের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরেন।
এছাড়া এম এম মাহবুব হাসান, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ও স্কুল ব্যাংকিং, ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গঠনে আর্থিক সচেতনতার ভূমিকা নিয়ে বক্তব্য রাখেন।
সেমিনারের শেষে প্রাইম ব্যাংক ও গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির মাধ্যমে শিল্প ও শিক্ষাঙ্গনের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক কর্মসূচি এবং যৌথ উদ্যোগ আরও জোরদার হবে।
প্রাইম একাডেমিয়া প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রাইম ব্যাংক দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে একীভূত আর্থিক সমাধান প্রদান করছে—যার আওতায় রয়েছে ডিজিটাল ফি সংগ্রহ, পেরোল সেবা, স্কুল ব্যাংকিং এবং শিক্ষার্থী উপযোগী একাউন্ট সুবিধা—সবকিছু এক প্ল্যাটফর্মে সংযুক্ত।
শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। এতে তরুণরা অনুপ্রাণিত হয় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও জাতীয় উন্নয়নের সঙ্গে নিজেদের স্বপ্নকে যুক্ত করতে উদ্বুদ্ধ হয়।
কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি.’র পরিচালনা পর্ষদের ৬৯তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২২ অক্টোবর, ২০২৫) পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ ও কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি’র চেয়ারম্যান জনাব বাহারুল আলম বিপিএম। উক্ত সভায় কয়েকটি বিনিয়োগ প্রস্তাব ও ব্যাংকের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
জনাব এ কে এম শহিদুর রহমান, বিপিএম, পিপিএম, এনডিসি, মহাপরিচালক, র্যাব; জনাব এ. কে. এম. আওলাদ হোসেন, অ্যাডিশনাল আইজি (অ্যাডমিন), বাংলাদেশ পুলিশ; জনাব মোঃ আকরাম হোসেন, বিপিএম (সেবা), অ্যাডিশনাল আইজি (ফিন্যান্স), বাংলাদেশ পুলিশ; জনাব আবু নাছের মোহাম্মদ খালেদ, বিপিএম, অ্যাডিশনাল আইজি (এইচআরএম), বাংলাদেশ পুলিশ; জনাব মোঃ ছিবগাত উল্লাহ, বিপিএম (সেবা), পিপিএম, অ্যাডিশনাল আইজি (সিআইডি), বাংলাদেশ পুলিশ; জনাব সরদার নূরুল আমিন, বিপিএম (সেবা), অ্যাডিশনাল আইজি (ডেভেলপমেন্ট), বাংলাদেশ পুলিশ; জনাব কাজী মো. ফজলুল করিম, বিপিএম (সেবা), অ্যাডিশনাল আইজি, বাংলাদেশ পুলিশ; জনাব কামরুল আহসান, ডিআইজি (কনফিডেন্সিয়াল), বাংলাদেশ পুলিশ; জনাব মুনতাসিরুল ইসলাম, পিপিএম, অ্যাডিশনাল ডিআইজি (হাইওয়ে পুলিশ), বাংলাদেশ পুলিশ; জনাব আহম্মদ মুঈদ, বিপিএম (সেবা), অ্যাডিশনাল ডিআইজি, বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ পুলিশ; জনাব কামরুল হাসান তালুকদার, ইন্সপেক্টর, বাংলাদেশ পুলিশ; ড. মোঃ মোর্শেদ হাসান খান, স্বতন্ত্র পরিচালক; জনাব সৈয়দ রফিকুল হক, স্বতন্ত্র পরিচালক; জনাব মোহাম্মদ তফাজ্জুল হোসেন, এফসিএ, স্বতন্ত্র পরিচালক; জনাব কিমিয়া সাআদত, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব), কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি. এবং কোম্পানি সচিব জনাব সাইফুল আলম এফসিএস সভায় উপস্থিত ছিলেন।
আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ের সম্পৃক্ততা আরও জোরদার করার লক্ষ্যে ঢাকা অঞ্চলের জন্য এজেন্ট মিট ২০২৫ আয়োজন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
১০ অক্টোবর ২০২৫ কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত এই এজেন্ট মিটে অংশ নেন ব্র্যাক ব্যাংকের ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর অঞ্চলের মোট ১১৬টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের এজেন্ট প্রতিনিধিরা। আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রসারের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই আয়োজনটি ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে এজেন্টদের সরাসরি মতবিনিময়ের এক অনন্য প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করেছে।
আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও তারেক রেফাত উল্লাহ খান, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব এসএমই ব্যাংকিং সৈয়দ আব্দুল মোমেন, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিএফও এম. মাসুদ রানা এফসিএ, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড চিফ অপারেটিং অফিসার মো. সাব্বির হোসেন, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব অল্টারনেট ব্যাংকিং চ্যানেলস নাজমুল রাহিম এবং হেড অব এজেন্ট ব্যাংকিং মো. নাজমুল হাসান। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতি এই আয়োজনকে তাৎপর্যপূর্ণ ও অনুপ্রেরণামূলক করে তুলেছে।
দিনব্যাপী এই আয়োজনে মতবিনিময়, এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রমের হালনাগাদ তথ্য, ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নির্ধারণ এবং মাঠ পর্যায়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় করণীয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। ব্যাংকটির কর্মকর্তারা এজেন্টদের বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন, যাতে তাঁরা দেশের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থিক সেবার পরিসর আরও বিস্তৃত করতে উদ্বুদ্ধ হন।
অনুষ্ঠানে প্রান্তিক পর্যায়ে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতে অসামান্য অবদান রাখা সেরা পারফর্মিং এজেন্টদের ‘ডায়মন্ড’ ক্যাটাগরিতে স্বীকৃতি ও পুরস্কার প্রদান করা হয়। এই স্বীকৃতি শুধু তাঁদের ব্যক্তিগত অর্জনই নয়, বরং ব্র্যাক ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সক্ষমতার প্রতিফলন।
এজেন্টদের সক্রিয় অংশগ্রহণ, আলোচনা ও আইডিয়া শেয়ারিং অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত ও অর্থবহ করে তোলে। এটি এজেন্ট ব্যাংকিং সেবার নেটওয়ার্ককে আরও শক্তিশালী করার ব্যাপারে ব্যাংকটির প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
ব্যাংকের প্রযুক্তি সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক গ্রাহকদের জন্য নিরাপদ, সুরক্ষিত ও সুবিধাজনক ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করে যাচ্ছে। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকরা খুব সহজেই অ্যাকাউন্ট খোলা, টাকা জমা দেওয়া, লোন নেওয়া ও রেমিটেন্সের টাকা উত্তোলন করতে পারছেন।
ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি.:
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি. ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ২৯৮টি শাখা ও উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১,১২১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং দশ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। বিশ লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২৪ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
দেশের ২৩টি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ৪২ জন মেধাবী শিক্ষার্থীর অ্যাকাডেমিক সাফল্য উদযাপন করেছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। এ উপলক্ষে গতকাল ২১ অক্টোবর র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন ঢাকায় আয়োজিত হয় ‘ব্রিটিশ কাউন্সিল স্কলার্স’ অ্যাওয়ার্ড ২০২৫।’
২০২৫ সালের মে/জুন সেশনের কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল এবং পিয়ারসন এডএক্সেল-এর (ও লেভেল/আইজিসিএসই/ইন্টারন্যাশনাল জিসিএসই) পরীক্ষায় নয়টি বা তার বেশি বিষয়ে সর্বোচ্চ গ্রেড অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের এ সম্মানজনক পুরস্কার প্রদান করা করা হয়। যুক্তরাজ্যের এক্সাম বোর্ডগুলোর পক্ষে ব্রিটিশ কাউন্সিল এই পরীক্ষা পরিচালনা করে। ব্রিটিশ কাউন্সিলের পুরস্কারপ্রাপ্ত মেধাবী শিক্ষার্থীদের কঠোর পরিশ্রম, সৃজনশীলতা ও শেখার আগ্রহের প্রতিফলন, যারা দেশের ভবিষ্যৎ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ব্রিটিশ কাউন্সিলের কান্ট্রি ডিরেক্টর বাংলাদেশ, স্টিফেন ফোর্বস বলেন,
“আজ আমরা শিক্ষার্থীদের নিষ্ঠা ও সাফল্য উদযাপন করছি; একইসাথে শিক্ষার্থীদের সাফল্যে অভিভাবক এবং শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। ব্রিটিশ কাউন্সিল শিক্ষা ও কর্মজীবন, উভয় ক্ষেত্রেই তরুণদের পূর্ণ সম্ভাবনা বিকাশে ভূমিকা রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যুক্তরাজ্যের এক্সাম বোর্ড পরীক্ষার ফলাফল তাদের ভবিষ্যতের যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশাবাদী। যারা এবার কাঙ্ক্ষিত ফল অর্জন করতে পারেননি, তাদের প্রচেষ্টাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ; সামনে নিশ্চয়ই তারা প্রচেষ্টার সুফল পাবেন। সকল শিক্ষার্থীকে স্বপ্নপূরণের পথে অভিনন্দন ও শুভকামনা জানাই।”
অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন স্কুলের দুই শ’রও বেশি শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্ব, শিক্ষক, অভিভাবক ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের পার্টনার স্কুলের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।
অনুষ্ঠানে একটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়, যেখানে ব্রিটিশ কাউন্সিলের বৈশ্বিক শিক্ষা কার্যক্রমের প্রভাব এবং পূর্বে পুরস্কারপ্রাপ্তদের আন্তর্জাতিক সাফল্য তুলে ধরা হয়। এরপর, কীভাবে বাংলাদেশের আরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনে এগিয়ে যেতে পারেন এ নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের চলমান বিভিন্ন উদ্যোগ সম্পর্কে ধারণা দেন সংস্থাটির এক্সামস ডিরেক্টর বাংলাদেশ ম্যাক্সিম রাইমান।
আয়োজনের মূল আকর্ষণ ছিল পুরস্কার প্রদান পর্ব। ৪২ জন শিক্ষার্থীকে তাদের অনন্য ফলাফলের স্বীকৃতিস্বরূপ ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্ত দু’জন শিক্ষার্থী তাদের অভিজ্ঞতা, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নিয়ে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য রাখেন। ব্রিটিশ কাউন্সিলের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর তাহনি ইয়াসমিনের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপনী ঘোষণা করা হয়। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের অংশগ্রহণে এক প্রাণবন্ত ও উৎসবমুখর পরিবেশে আয়োজনটি শেষ হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন এক্সাম বোর্ডের প্রতিনিধিবৃন্দ। অনুষ্ঠানের অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে ছিলেন কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্টের কান্ট্রি লিড সারওয়াত রেজা; পিয়ারসন এডএক্সেল বাংলাদেশ ও নেপালের রিজিওনাল ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল মামুন বিন কুদ্দুস; পিয়ারসন এডএক্সেল বাংলাদেশের রিজিওনাল ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার জান্নাতুল ফেরদৌস সিগমা; এবং অক্সফোর্ড একিউএ’র কান্ট্রি ডিরেক্টর বাংলাদেশ শাহিন রেজা।
বাংলাদেশের তরুণদের আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা, সৃজনশীলতা ও ব্যক্তিগত বিকাশের মাধ্যমে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি নিয়ে কাজ করছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। ‘ব্রিটিশ কাউন্সিল স্কলার্স’ অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ ব্রিটিশ কাউন্সিলের সে অঙ্গীকারেরই প্রতিফলন। ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সর্বাঙ্গীণ শিক্ষাই আত্মবিশ্বাসী ও নেতৃত্বগুণসম্পন্ন নাগরিক তৈরি করতে পারে বলে বিশ্বাস করে ব্রিটিশ কাউন্সিল।
মন্তব্য