তিন কদম উঠে এক কদম পিছলে গেলে একটি নির্দিষ্ট উচ্চতার বাঁশে উঠতে কত সময় লাগবে- গণিতে বহুল ব্যবহৃত এই গল্পের কাহিনি যেন পুঁজিবাজারে। তিন দিনে ৪৩ পয়েন্ট সূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেন তিন শ কোটির ঘর থেকে বেড়ে ছয় শ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার পর চতুর্থ দিনেই ধপাস।
বুধবার সূচকের ১০ পয়েন্ট পতন হয়তো খুব একটা ধর্তব্যের নয়। কারণ, এই উত্থানপতন একটি স্বাভাবিক চিত্র। অর্থনৈতিক সংকটের শঙ্কার মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার আভাসে নভেম্বর আর ডিসেম্বরে গতি হারিয়ে পুঁজিবাজারের লেনদেন নামে ২০ মাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে।
১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের পর রাজনৈতিক উত্তেজনা কমে আসার পর গত তিন দিন পুঁজিবাজারেও বাড়ে গতি।
সমাবেশের আগের কর্মদিবসে লেনদেন ছিল ২৯৫ কোটি ৭৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা। সমাবেশের পরের কর্মদিবস রোববার তা বেড়ে হয় ৪১৪ কোটি ৮৪ লাখ ৫২ হাজার টাকা।
সোমবার সেখান থেকে আরও খানিকটা বেড়ে গত ১৪ নভেম্বরের পর প্রথমবারের মতো ছাড়ায় পাঁচ শ কোটির ঘর। হাতবদল হয় ৫৬৮ কোটি ৮৯ লাখ ৯৪ হাজার টাকা।
মঙ্গলবার এখান থেকেও আরও কিছুটা বেড়ে হয়েছে ৬১৬ কোটি ৪১ লাখ ৮১ হাজার টাকা।
অন্যদিকে সূচক রোববার বাড়ে ১১ পয়েন্ট, সোমবার ২৭ পয়েন্ট এবং মঙ্গলবার বাড়ল ৪ পয়েন্ট। গত দুই মাসে টানা তিন দিন সূচক ও লেনদেন বাড়ার বিষয়টি এর আগে দেখা যায়নি বললেই চলে।
তবে তিন দিনের পর সেটি আর চার হয়নি। চতুর্থ দিনে এসে আবার কমে গেছে লেনদেন। হাতবদল হয়েছে ৪৩০ কোটি ২০ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। আগের দিনের চেয়ে কমেছে প্রায় এক তৃতীয়াংশ বা ১৮৬ কোটি ২০ লাখ ৮৪ হাজার টাকা।
কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর। ২৭টির বৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ৬৮টি। আগের দিনের দরে ফ্লোর প্রাইসে লেনদেন হয়েছে ২৪৬টি কোম্পানি।
রেকর্ড ডেটের কারণে লেনদেন বন্ধ ছিল দুটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের কোম্পানির। বাকি ৪৮টি কোনো ক্রেতা ছিল না।
লেনদেনের বিষয়ে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাজারের ওঠানামার মধ্যে সুযোগ পেলে প্রফিট টেকিং হয় আরকি। কয়েকদিন বাড়ার পরে একটু সুযোগ পাওয়া অনেকে বিক্রি করে কিছুটা প্রফিট তুলে নেয়। এ ছাড়া আর কিছুই নয়।’
কোন খাত কেমন
লেনদেন চার শ কোটির ঘরে নেমে আসার সঙ্গে কমেছে খাতভিত্তিক লেনদেনের পরিমাণও। কোনো খাতেই শত কোটির ঘরে লেনদেন হয়নি। প্রযুক্তি, কাগজ ও জীবন বিমা খাতে দরপতনের পাল্লা ছিল ভারী। বাকি খাতে আর অপরিবর্তিত দরে লেনদেনের সংখ্যা বেশি ছিল।
সবচেয়ে বেশি ৭৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতে, যা লেনদেনের ২০.৭৪ শতাংশ। আগের দিন লেনদেন ছিল ১২১ কোটি ১০ লাখ টাকা বা ৩৪.০৪ শতাংশ।
এদিন খাতের তিনটি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে নয়টির কমেছে ও ১৮টি অপরিবর্তিত দরে লেনদেন হয়েছে।
সর্বোচ্চ দরপতন হয়েছে লেনদেনের দ্বিতীয় স্থানে থাকা প্রযুক্তি খাতে। ৯টির দরপতনের বিপরীতে কেবল একটির দর বেড়ে লেনদেন হয়েছে। খাতটিতে হাতবদল হয়েছে ৫৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, যা লেনদেনের ১৪.৯৯ শতাংশ। আগের দিনে লেনদেন হয়েছিল ৯২ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
তৃতীয় স্থানে থাকা জ্বালানি খাতে লেনদেন হয়েছে ৩৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ১৮টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ফ্লোর প্রাইসে। তিনটির দর বেড়েছে, দুটির কমেছে।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে লেনদেন হয়েছে ৩১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আগের দিন ছিল ৩৯ কোটি ৮ লাখ টাকা। খাতের চারটি করে কোম্পানির দরপতন ও দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৯টির লেনদেন হয়েছে আগের দরে ফ্লোর প্রাইসে।
পঞ্চম স্থানে থাকা প্রকৌশল খাতে লেনদেন হয়েছে ৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩৫ কোটি ২০ লাখ টাকা। এদিন দুটি কোম্পানির দরবৃদ্ধি ও ছয়টির দরপতনের বিপরীতে ৩০টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে অপরিবর্তিত দরে।
বাকি খাতে লেনদেন হয়েছে ৩০ কোটির নিচে। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি খাতের অপরিবর্তিত দরে লেনদেন করা কোম্পানির হার বেশি। সাধারণ বিমা ৩০টি বা ৭১.৪৩ শতাংশ, ব্যাংক ৩০টি বা ৯০.৯১ শতাংশ, বস্ত্র ৪৩টি বা ৯৩.৪৮ শতাংশ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ১৮টি বা ৯০ শতাংশ ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ২০টি বা ৯৫.২৪ শতাংশ কোম্পানির লেনদেন হয়েছে অপরিবর্তিত দরে।
সূচকে প্রভাব যাদের
সবচেয়ে বেশি ২ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট সূচক কমিয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন। কোম্পানির দর কমেছে ৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
বেক্সিমকো ফার্মার দর ১ দশমিক ২৭ শতাংশ হ্রাসে সূচক কমেছে ১ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট।
ওরিয়ন ফার্মার কারণে সূচক হারিয়েছে শূন্য দশমিক ৯৬ পয়েন্ট। এদিন কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে ২ দশমিক ১৪ শতাংশ।
এ ছাড়াও বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, বসুন্ধরা পেপার মিল, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, নাভানা ফার্মা, লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ও জেনেক্স ইনফোসিসের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৯ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ২ দশমিক ২১ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে কোহিনূর কেমিক্যালস। কোম্পানিটি শেয়ারদর বেড়েছে ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
সি-পার্লের দর ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে শূন্য দশমিক ৬০ পয়েন্ট।
ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন সূচকে যোগ করেছে শূন্য দশমিক ৫১ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
এর বাইরে সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে বিডি থাই ফুড, বাটা সুজ, পূবালী ব্যাংক, সোনালী আঁশ, অ্যাপেক্স ফুডস, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার ও কে অ্যান্ড কিউ।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ৪ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট।
দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০
এই তালিকায় আগের দিনের মতোই স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলো দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় ছিল।
সবচেয়ে বেশি ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ দর বেড়ে কোহিনূর কেমিক্যালের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৯৭ টাকা ৪০ পয়সায়, যা আগের দিন ছিল ৪৫৮ টাকা ৭০ পয়সা।
৮ দশমিক ৭১ শতাংশ দর বেড়ে নর্দার্ন জুট ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৫৫ টাকা ৭০ পয়সায়, যা আগের দিন ছিল ২৩৫ টাকা ২০ পয়সা।
তৃতীয় স্থানে ছিল জুট স্পিনার্স। ৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ দর বেড়ে শেয়ারটি হাতবদল হয়েছে ৩২২ টাকা ৭০ পয়সায়। আগের দিনে শেয়ার লেনদেন হয়েছিল ২৯৭ টাকা ৬০ পয়সায়।
তালিকায় ছিল ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন, সোনালী আঁশ, কে অ্যান্ড কিউ, অ্যাপেক্স ফুডস, বিডি থাই ফুড, বিডি ওয়েল্ডিং ও জেমিনি সি ফুড। এর মধ্যে ইন্ট্রাকো ছাড়া সবই স্বল্প মূলধনি। আর বিডি থাই ফুডের শেয়ার সংখ্যাও বেশি নয় খুব একটা।
দরপতনের শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি ৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ দর কমেছে ওরিয়ন ইনফিউশনের। প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭৭৮ টাকা ৭০ পয়সায়, যা আগের দিন ছিল ৮৪১ টাকা ৫০ পয়সা।
এর পরেই ৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ দর কমে মুন্নু অ্যাগ্রোর শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮১১ টাকা ৬০ পয়সায়। আগের দিনের দর ছিল ৮৫৭ টাকা ৭০ পয়সা।
অ্যাম্বি ফার্মার শেয়ারদর ৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ কমে লেনদেন হয়েছে ৫৫১ টাকা ৩০ পয়সায়। আগের দিন দর ছিল ৫৭৯ টাকা ৭০ পয়সা।
এ ছাড়া তালিকায় পরের স্থানে ছিল তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল, আমরা টেকনোলজিস, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, রংপুর ফাউন্ড্রি, বিডি কম, হাক্কানি পাল্প ও আইটি কনসালট্যান্টস।
আরও পড়ুন:
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
মন্তব্য