আগের দুই দিনের ধারাবাহিকতায় পুঁজিবাজারে লেনদেন ও সূচক বাড়ল আবার। আহামরি কোনো বৃদ্ধি না হলেও এক মাস পর প্রথমবারের মতো লেনদেন ছয় শ কোটি টাকার ঘর ছাড়িয়েছে। ফ্লোর ছেড়ে দুই একটি কোম্পানির উঠে আসার চেষ্টাও দেখা যাচ্ছে।
আগের কর্মদিবসে শেয়ার দর দর বৃদ্ধি ও হ্রাস- এই দুই ধরনের কোম্পানির সংখ্যা ছিল ৯১টি, সোমবার সেটিও বেড়ে হয়েছে ৯৪টি।
আগের দিন ফ্লোর প্রাইসে লেনদেন হওয়ার কোম্পানির সংখ্যা ছিল ২৬৫, সেটিও কিছুটা কমে হয়েছে ২৫৯।
এই পরিবর্তনগুলো আহামরি কিছু না হলেও গত দুই মাস ধরে পুঁজিবাজারের আচরণ বিবেচনায় নিলে বিষয়গুলো বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তির আভাস নিয়ে আসতে পারে।
এই ঘুরে দাঁড়ানোর আভাসের মধ্যে ফের ওরিয়ন গ্রুপের চার কোম্পানির শেয়ারে ঊর্ধ্বমুখি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
গত ৩১ জুলাই থেকে দ্বিতীয় দফা ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর এই গ্রুপের চার কোম্পানির শেয়ারে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে তুমুল আলোচনা ছিল।
তিন মাসেরও কম সময়ে এক শ টাকা থেকে ওরিয়ন ইনফিউশনের দর হাজার টাকাতে ঠেকে। কোহিনূর কোমিক্যালসের দর ৩৭৯ টাকা থেকে সাড়ে সাত শ টাকা ছাড়িয়ে যায়। ৮০ টাকার নিচ থেকে ওরিয়ন ফার্মার দর ছাড়ায় দেড় শ টাকার ঘর। বিকন ফার্মা আড়াই শ টাকার কম থেকে পৌঁছে যায় চার শ টাকার কাছাকাছি।
তবে সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে এই কোম্পানির শেয়ারে ব্যাপক পতন দেখা যায়। ধাপ ধাপ করে নামতে নামতে ওরিয়ন ইনফিউশন ৪৭৪ টাকাতেও চলে আসে। ওরিয়ন ফার্মা দেড় শ টাকা থেকে ৮০ টাকার কাছাকাছি নেমে আসে। বিকন ফার্মার শেয়ারদর নামে আড়াই শ টাকার কাছাকাছি আর কোহিনূর ক্যামিকেলস চার শ টাকার কাছাকাছি নেমে আসে।
প্রায় প্রতিদিন সর্বোচ্চ পতন হতে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশনের এখন উল্টোগতি। প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে দিনের সর্বোচ্চ সীমার কাছাকাছি। দর আবার ছাড়িয়েছে আট শ টাকা। ২০ শতাংশ বোনাস শেয়ারের প্রস্তাব সমন্বয়ের পরও কোহিনূর ক্যামিকেলসের দর সাড়ে চার শ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
বিকন ফার্মা আবার তিন শ টাকার ঘরে। সেই তুলনায় ওরিয়ন ফার্মা হারিয়ে ফেলা দরের কমই ফিরে পেয়েছে। সবশেষ দর ৮৮ টাকা ৭০ পয়সা।
বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার শঙ্কায় দেশের অর্থনীতি নিয়ে উৎকণ্ঠায় গত মাস দুয়েক ধরেই পুঁজিবাজার টালমাটাল। ফ্লোর প্রাইসের কারণে শ তিনেক কোম্পানির শেয়ার একটি নির্ধারিত দরের নিচে নামতে না পারার বাস্তবতার মধ্যে লেনদেনও দৃশ্যত আটকে ৭০ থেকে ৮০টি কোম্পানিতে।
এর মধ্যে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশকে ঘিরে রাজনীতিতে উত্তাপের কারণে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর থেকে পুঁজিবাজারে লেনদেন কমতে কমতে দুই শ কোটি টাকার ঘরে নেমে যায়।
তবে শেষমেশ নানা শঙ্কাকে ভুল প্রমাণ করে সমাবেশটি হয়েছে শান্তিপূর্ণ। আর বিএনপি যে কর্মসূচি দিয়েছে, তাও অনেকটাই নমনীয়। আর এরপর থেকেই হাফ ছেড়ে বেঁচেছেন বিনিয়োগকারীরা। ধীরে ধীরে সক্রিয় হতে শুরু করার ইঙ্গিত মিলছে।
সমাবেশের আগের কর্মদিবসে লেনদেন ছিল ২৯৫ কোটি ৭৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা। সমাবেশের পরের কর্মদিবস রোববার তা বেড়ে হয় ৪১৪ কোটি ৮৪ লাখ ৫২ হাজার টাকা।
সোমবার সেখান থেকে আরও খানিকটা বেড়ে গত ১৪ নভেম্বরের পর প্রথমবারের মতো ছাড়ায় পাঁচ শ কোটির ঘর। হাতবদল হয় ৫৬৮ কোটি ৮৯ লাখ ৯৪ হাজার টাকা।
মঙ্গলবার এখান থেকেও আরও কিছুটা বেড়ে হয়েছে ৬১৬ কোটি ৪১ লাখ ৮১ হাজার টাকা।
অন্যদিকে সূচক রোববার বাড়ে ১১ পয়েন্ট, সোমবার ২৭ পয়েন্ট এবং মঙ্গলবার বাড়ল ৪ পয়েন্ট। গত দুই মাসে টানা তিন দিন সূচক ও লেনদেন বাড়ার বিষয়টি এর আগে দেখা যায়নি বললেই চলে।
এদিন দর বেড়েছে ৪৫টি কোম্পানির, কমেছে ৪৯টি। ২৫৯টি লেনদেন হয়েছে আগের দিনের দরে। বাকি ৩৭টির কোনো ক্রেতা ছিল না।
খাতওয়ারি বিবেচনায় দিন সবচেয়ে ভালো গেছে ওষুধ ও রসায়ন খাতে। এক মাত্র এই খাতেই লেনদেন শত কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। হাতবদল হয়েছে ১২১ কোটি টাকার বেশি। দর বেড়েছে ৮টি কোম্পানির, কমেছে ৩টির আর ২০টি আগের দিনের দরে হাতবদল হয়েছে।
দর বৃদ্ধির বিবেচন হিসাব করলে স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলো প্রাধান্য ছিল লক্ষ্যনীয়। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এমন ১০টি কোম্পানির সাতটিই স্বল্প মূলধনি। বাকি তিনটির শেয়ার সংখ্যাও খুব বেশি নয়।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী বলেন, ‘বাজারে বিভিন্ন ধরনের বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে বলে লেনদেন বেড়েছে। যেহেতু বিএসইসি থেকে স্পষ্ট করে বলে দেয়া হয়েছে ফ্লোর প্রাইস তোলা হবে না, সে কারণে বর্তমান প্রাইসেই সবাইকে পজিশন নিতে হবে।
‘যদি ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া হতো তাহলে হয়তোবা আরও ২০ শতাংশের মতো শেয়ারের দাম কমে যেত এবং তখন হয়তো অনেকে পজিশন নেয়ার কথা ভাবতেন।’
সূচকে প্রভাব যাদের
সবচেয়ে বেশি ২ দশমিক ০১ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে কোহিনূর কেমিক্যাল। এদিন শেয়ারটির দর বেড়েছে ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
বিকন ফার্মার দর ১ দশমিক ০৪ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট।
ওরিয়ন ইনফিউশন সূচকে যোগ করেছে ১ দশমিক ২০ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৩ দশমিক ৪০ শতাংশ।
এর বাইরে সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল, মুন্নু সিরামিকস, বাটা সুজ, লুব রেফ বাংলাদেশ, লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ, সালভো কেমিক্যাল ও ইস্টার্ন ক্যাবলস।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ৯ দশমিক ৫২ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ১ দশমিক ৭১ পয়েন্ট সূচক কমিয়েছে বেক্সিমকো ফার্মা। কোম্পানির দর কমেছে ১ দশমিক ১৯ শতাংশ।
অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের দর ১ দশমিক ৯২ শতাংশ হ্রাসে সূচক কমেছে ১ দশমিক ০৭ পয়েন্ট।
ইউনিক হোটেলের কারণে সূচক হারিয়েছে শূন্য দশমিক ৬৯ পয়েন্ট। এদিন কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে ১ দশমিক ৮১ শতাংশ।
এ ছাড়াও ওরিয়ন ফার্মা, ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, বার্জার পেইন্টস, কেডিএস অ্যাক্সেসরিজ, বসুন্ধরা পেপার ও এডিএন টেলিকমের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৬ দশমিক ৩২ পয়েন্ট।
দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ দর বেড়ে মুন্নু সিরামিকসের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২৭ টাকা ২০ পয়সায়, যা আগের দিন ছিল ১১৫ টাকা ৭০ পয়সা।
৯ দশমিক ৪২ শতাংশ দর বেড়ে তমিজউদ্দিন টেক্সটাইলের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৯৫ টাকা ১০ পয়সায়, যা আগের দিন ছিল ১৭৮ টাকা ৩০ পয়সা।
তালিকার তৃতীয় স্থানে ছিল কোহিনূর কেমিক্যাল। ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ দর বেড়ে শেয়ারটি হাতবদল হয়েছে ৪৫৮ টাকা ৭০ পয়সায়। আগের দিনেও একই সমান দর বেড়ে শেয়ার লেনদেন হয়েছিল ৪২১ টাকা ৮০ পয়সায়।
এ ছাড়া তালিকায় ছিল জুট স্পিনার্স, মুন্নু অ্যাগ্রো, অ্যাম্বি ফার্মা, সালভো কেমিক্যাল, লুবরেফ বাংলাদেশ, বিডি থাইফুড ও ইস্টার্ন ক্যাবলস।
দরপতনের শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ দর কমেছে ইস্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশনের। প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৩ টাকা ৮০ পয়সায়, যা আগের দিন ছিল ৪৬ টাকা।
এর পরেই ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ দর কমে পেপার প্রসেসিংয়ের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২১৭ টাকা ৮০ পয়সায়। আগের দিনের দর ছিল ২২৫ টাকা ৬০ পয়সা।
সোনালী আঁশের শেয়ারদর ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ কমে লেনদেন হয়েছে ৪৯৫ টাকা ৪০ পয়সায়। আগের দিন ছিল ৫১৩ টাকা ১০ পয়সা।
এ ছাড়া তালিকায় পরের স্থানে ছিল প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, জেমিনি সি ফুড, কেডিএস অ্যাক্সেসরিজ, আমরা টেকনোলজিস, সিনোবাংলা, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও জেএমআই সিরিঞ্জেস।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
মন্তব্য