× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

অর্থ-বাণিজ্য
New possibilities when war stops
google_news print-icon

যুদ্ধ থেমে গেলে নতুন সম্ভাবনা

যুদ্ধ-থেমে-গেলে-নতুন-সম্ভাবনা
বস্ত্রশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন। ছবি: নিউজবাংলা
সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, আমাদের এই ব্যাকওয়ার্ড শিল্প না থাকলে আজকে পোশাকশিল্পের এমন অবদান কোনোভাবেই সম্ভব হতো না। গত অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি থেকে ৫২ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি মুদ্রা দেশে এসেছে, তাতে কিন্তু আমাদেরও বড় অবদান আছে। আমরা তুলা আনি, সেখান থেকে সুতা বানাই, সুতা থেকে কাপড়, কাপড় থেকে ডাইং ফিনিশিং করছি। সেখানে প্রিন্টিং হচ্ছে, চেক হচ্ছে, ডেনিম হচ্ছে, টুইল হচ্ছে, গ্যাবার্ডিন হচ্ছে, নিট ফ্যাব্রিক হচ্ছে নিট খাতকে ৯০ শতাংশ জোগানদাতা আমরা। ওভেন খাতে আমাদের জোগান হচ্ছে রপ্তানির ৪০ শতাংশ। আর ডেনিমের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ জোগানদাতা আমরা: মোহাম্মদ আলী খোকন

বিশ্ববাজারে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ দ্বিতীয় আর চীন প্রথম, গত দশক পর্যন্ত এমনই ছিল প্রচলিত তুলনা। তবে এ বছর অন্তত ইউরোপীয় ইউনিয়নে পোশাকের রপ্তানি বৃদ্ধিতে চীনকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। আর এতে পোশাক রপ্তানিকারকদের পাশাপাশি বস্ত্রশিল্প মালিকদেরও বড় অবদান রয়েছে বলে মনে করেন বস্ত্রশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন। যুদ্ধ থেমে গেলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা দেখা দেবে বলে আশার কথা শুনিয়েছেন তিনি।

গত বৃহস্পতিবার নিউজবাংলাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এই আশার কথা শুনিয়েছেন মোহাম্মদ আলী খোকন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন নিউজবাংলার বিজনেস এডিটর আবদুর রহিম হারমাছি

বস্ত্রশিল্প খাতের অবস্থা এখন কেমন? দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক রপ্তানিতে কতটা অবদান রাখছে এই খাত?

আমরা বস্ত্র খাতের ব্যাকওয়ার্ড শিল্পের (পশ্চাৎ-সংযোগ শিল্প) সবচেয়ে বড় সংগঠন। আমাদের বিনিয়োগের পরিমাণ ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। গত অর্থবছরে রপ্তানিতে আমাদের জোগান ছিল ৩৮ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের ১৬ কোটি ৫০ লাখ মানুষের বস্ত্রের যে জোগান, সেটি আমরাই দিয়ে থাকি। আমরা বছরে দেশে সাত বিলিয়ন মিটার কাপড় জোগান দিই। যার অনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার। সব মিলিয়ে আমাদের বছরের টার্নওভার প্রায় ৩৬ বিলিয়ন ডলার। আমাদের যে বিনিয়োগ ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা, এটি ক্যাপিটাল ইনভেস্টমেন্ট। এর সঙ্গে যদি আমরা ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বিনিয়োগ যোগ করি, তাহলে মোট বিনিয়োগ হবে ২ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে আমাদের এই খাতে ব্যাংকের বিনিয়োগ আছে ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। তাই সামগ্রিক বিচারে আমাদের বস্ত্র খাতের অবদানকে ছোট করে দেখার কোনো অবকাশ নেই।

সবচেয়ে বড় কথা যেটি, সেটি হচ্ছে আমাদের এই ব্যাকওয়ার্ড শিল্প না থাকলে আজকে পোশাকশিল্পের অবদান কোনোভাবেই সম্ভব হতো না। এই যে গত অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি থেকে ৫২ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি মুদ্রা দেশে এসেছে, তাতে কিন্তু আমাদেরও বড় অবদান আছে। আমরা তুলা আনি, সেখান থেকে সুতা বানাই, সুতা থেকে কাপড়, কাপড় থেকে ডাইং ফিনিশিং করছি। সেখানে প্রিন্টিং হচ্ছে, চেক হচ্ছে, ডেনিম হচ্ছে, টুইল হচ্ছে, গ্যাবার্ডিন হচ্ছে, নিট ফ্যাব্রিক হচ্ছে নিট খাতকে ৯০ শতাংশ জোগানদাতা আমরা। ওভেন খাতে আমাদের জোগান হচ্ছে রপ্তানির ৪০ শতাংশ। আর ডেনিমের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ জোগানদাতা আমরা। বাংলাদেশে জ্বালানির বড় গ্রাহক আমরা। ১ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমরা ব্যবহার করছি। করোনাভাইরাসের সময় আমরা বিপদে পড়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণ উদ্যোগে আমরা বেঁচে গিয়েছিলাম। সেই সময়ের উদ্যোগের কারণে পরবর্তী সময়ে আমরা ভালো করতে পেরেছি। আসলে এই শিল্পটি ভালোর দিকে ছিল। নতুন বিনিয়োগ আসছিল; কর্মসংস্থান বাড়ছিল।

আড়াই বছরের করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও পড়েছে। কিছুদিন সংবাদ সম্মেলন করে বস্ত্র খাতের সংকটের কথা বলেছিলেন। এখন কেমন চলছে?

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর ইউরোপে যখন যুদ্ধ লাগল। গত মার্চ থেকে আমাদের অবস্থা খারাপ হতে থাকল। নামতে নামতে গত অক্টোবর আমাদের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গেল; এখন যে ভালো সেটি বলব না। গত নভেম্বরে পোশাক রপ্তানি থেকে ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি যে আয় হয়েছে, সেটি অবশ্যই ভালো অর্জন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এই যে অর্জন হয়েছে তা হচ্ছে আগে আমাদের অনেকগুলো অর্ডার ছিল, সেটির কারণে হয়েছে। সামনে আমাদের অর্ডারগুলো আছে, কিন্তু খুব স্লো (ধীর) ডেলিভারি। সেগুলোর মধ্যে ক্রেতাদের সে রকম চাপ নেই যে মালটি দিতে হবে। অন্য সময় আমাদের ওপর চাপ থাকত যে মাল দিতে হবে। এমন অবস্থা মাঝে মাঝে হতো যে প্রাইজ যেটিই হোক, আমাকে মাল দিতে হবে।

সারা বিশ্বে এখন মন্দার ভাব। সেটির প্রভাব কিন্তু আমাদের দিকে আসছে। কিন্তু একটি কথা আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে আমরা ভালো আছি; অনেক বড় বড় দেশের চেয়ে ভালো আছি। এই তো আমি ইউরোপের কয়েকটি দেশ ঘুরে এলাম, নিজ চোখে দেখে এলাম, তাদের তুলনায় আমরা অনেক ভালো আছি। বাংলাদেশে আমরা যতটা খারাপ করি, তার তুলনায় প্রচার-প্রচারণা বেশি। যেটি ইউরোপে হয় না। ইউরোপে অনেকের ঘরে খাওয়া নেই, কিন্তু আপনি এটির খবর দেখবেন না। কিন্তু বাংলাদেশে যদি ৯০টি ভালো সেবা পাওয়া যায়, আর ১০টি খারাপ সেবা পাওয়া যায়। আমরা ১০টির খবর পাই। আর ৯০টির খবর পাওয়া যায় না। আমি ৫টি কিস্তি আগে দিয়েছি এই খবর হয় না। কিন্তু বিসমিল্লাহ গ্রুপ টাকা নিয়ে গিয়েছে সেই খবর হয়। আমি গণমাধ্যমের সবাইকে বিনীত অনুরোধ করব যে আপনারা দেশকে নিয়ে পজিটিভ নিউজ করেন। বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে; আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে। সমালোচনার পাশাপাশি দেশের ভালো খবরও প্রচার করুন দয়া করে।

একটি কথা আমি বারবার বলে থাকি, কোনো দলের রক্ষণভাগ যত শক্তিশালী, তাকে গোল দেয়া তত কঠিন। আমাদের পোশাকশিল্পের রক্ষণভাগ শক্তিশালী, অর্থাৎ আমরা বস্ত্র খাত হলাম পোশাকশিল্পের রক্ষণভাগ। আমরা শক্তিশালী বলেই পোশাক খাতের অনেক অর্জন হচ্ছে। গ্যাস ও বিদুৎ-সংকটের কারণে আমরা সরকারকে বলেছিলাম যে দরকার হলে আমরা একটু টাকা বাড়িয়ে দিই, আপনারা আমাদের বিদ্যুৎ দেন। আমরা বলেছিলাম আমরা যদি ১ লাখ ডলারের জ্বালানি পাই, তাহলে কিন্তু আমরা ২৪ লাখ ডলার আর্ন করতে পারি। এই পরিসংখ্যান যখন আমরা তুলে ধরেছিলাম; বলেছিলাম যে আমরা সরকারকে সহায়তা করতে চাই। আমরা যদি একসঙ্গে পরামর্শ করে কাজ করি, তাহলে কিন্তু সংকট কাটিয় ওঠা যায়। আমরা যদি সংকটের সময় দোষারোপ করি, তাহলে কিন্তু জাতি সংকট থেকে উদ্ধার হতে পারব না।

এখন কি গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট কেটেছে? আগের চেয়ে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে কি?

উন্নতি হয়েছে ঠিক; কিন্তু সংকট কিন্তু পুরোপুরি কাটেনি। আমরা এটি বুঝি যে সরকার ইচ্ছে করে ব্যয় সংকোচন করেনি। এ ক্ষেত্রে সবাই মিলে সরকারকে সহায়তা করা উচিত বলে আমি মনে করি। বিশ্বের সব দেশ সংকটকে সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করার কারণে কিন্তু সংকট কাটিয়ে উঠেছে। জাতীয় সংকটে সব দল এক হয়ে যায়। কিন্তু আমাদের দেশের সংকটটিকে বিশ্বের দরবারে আরও বড় করে তুলে ধরা হচ্ছে ব্যক্তিগত রাজনৈতিক ফায়দার জন্য। দেশকে কিন্তু আমরা ছোট করছি। আমি একজন ব্যবসায়ী হিসেবে বলব, দেশকে ছোট করে কোনো লাভ নেই। সমস্যা থাকবে, তার সমাধান থাকবে। জ্বালানির সমস্যা সারা বিশ্বের সমস্যা। সুতরাং আমরা মনে করি, সবাই মিলে কাজ করলে এই সংকট আমরা কাটিয়ে উঠতে পারব। আগে আমাদের কোনো জিনিস আনতে যদি ১ বিলিয়ন ডলার খরচ হতো, এখন ১ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়। সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে এই অবস্থা হয়েছে। আমাদের টাকা অতিরিক্ত খরচ হয়েছে। বাংলাদেশে যে উন্নয়নকাজ হয়েছে, গত ১০ বছরে এগুলোকে আপনি ফেলে দেবেন কীভাবে।

এখন একজন রিকশাওয়ালাও রিজার্ভ (বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা মজুত) নিয়ে কথা বলে। এটি আমার কাছে খুব খারাপ লাগে। আমরা জাতি হিসেবে লজ্জিত। রিজার্ভ নিয়ে চিন্তা করার জন্য রাষ্ট্রের অনেক লোকজন আছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যেকোনো সময় বন্ধ হতে পারে বলে আমি মনে করি। তখন বিশ্ব অর্থনীতির বাজার কিন্তু বিশেষভাবে ঘুরে দাঁড়াবে। এই বাজারটিকে ধরার প্রস্তুতি এখন আমরা নিচ্ছি। আগামী দিনে বিশ্ব রাজনীতি ঠান্ডা হয়ে এলে অর্থাৎ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ হয়ে গেলে তখন দেশে দেশে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। এখন বিশ্ব অর্থনীতির যে খারাপ অবস্থা, সেটি একসময় সহনীয় হয়ে যাবে। আর সহনীয় হয়ে গেলে আমাদের জন্য নতুন সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। সবাই মিলে সেই প্রস্তুতিই নিতে হবে। যুদ্ধ থেমে গেলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা দেখা দেবে বলে আমার বিশ্বাস।

দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি হঠাৎ করেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এতে কি আপনারা উদ্বিগ্ন?

আমি যখন ব্যবসায় আসি ’৮৭ সালে, তখন উত্তাল আন্দোলন এরশাদবিরোধী। ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ বুকে-পিঠে লিখে শহীদ হলেন নূর হোসেন। ’৯০-এর গণ-অভ্যুত্থান, এর পরও দেশে আন্দোলন হয়েছে- এগুলো দেখতে দেখতে আমরা ব্যবসায়ীরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। এই বাধাবিপত্তি-উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়েই আমরা ব্যবসায়ীরা ব্যবস্যা করছি। উৎপাদন করছি, কর্মসংস্থান করছি। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।

৩৫ বছরের ব্যবসায়ী হিসেবে আমি মনে করি, এ ধরনের সংকট মোকাবিলা করার মতো ক্ষমতা ব্যবসায়ীদের থাকা উচিত। প্রত্যেক জিনিসের সিজন থাকে। পিঠা উৎসব শীতকালে হয়। রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলো একটি ফেস্টিভ ব্যাপার। এতদিন কিছু ছিল না, এখন দেখা যাচ্ছে সমানতালে দুটো দলই করছে। দুই দলেরই প্রচুর লোকজন হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ এটিকে এনজয় করছে ফেস্টিভ হিসেবে। সুতরাং আমি আতঙ্কিত নই। বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট নতুন কিছু নয়। এর চেয়ে খারাপ সময় আমরা দেখেছি। সেই তুলনায় বাংলাদেশ এখন অনেক ভালো আছে। বাংলাদেশে অর্থনীতি বলেন, অর্থনীতির সাইজ বলেন। বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার এখন ৪৬৫ বিলিয়ন ডলার। আমাদের অবস্থান ৪১তম। আমরা যদি ধরে নিই আগামী পাঁচ বছরে আমাদের অর্থনীতির সাইজ ট্রিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে।

এখন ৪৬৫ বিলিয়ন ডলার। আজ থেকে ২০ বছর আগে আমাদের অর্থনীতি কত ছিল। কয়েক মিলিয়ন ডলারের ছিল। অর্থনীতি আস্তে আস্তে ট্রিলিয়ন ডলারের দিতে এগোচ্ছে। প্রাইভেট ব্যাংকগুলো নিয়ে অনেক লেখা হচ্ছে। কিন্তু এই বেসরকারি ব্যাংকগুলোর যে অবদান আছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে, বাংলাদেশের শিল্পে, আমাদের বস্ত্র সেক্টরে যে বিনিয়োগ আছে তার বেশির ভাগ টাকা বেসরকারি ব্যাংক থেকে আসছে। সুতরাং দু-একটি ব্যাংকের খারাপ দিক নিয়ে আপনি সারা ব্যাংকিং খাতের ওপর ঢালাও কথা বলতে পারেন না। সংকট থাকবে; এর মোকাবিলা থাকবে। এই মুহূর্তে আমাদের সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বস্ত্র খাত কতটা অবদান রাখছে?

অর্থনীতিতে আমাদের অবদান যদি হিসাব করেন, এটাকে কোনোভাবে খাটো করে দেখা যায় না। বাংলাদেশের ৫২ বিলিয়ন ডলারের শিল্পে সরাসরি ১ কোটি ১০ লাখ লোক কাজ করে এখানে। ৫২ বিলিয়ন ডলার অর্থনীতি, এটা হলো রপ্তানি, এতে স্থানীয়ভাবে আমাদের সেক্টরের ৮ বিলিয়ন ডলার, অন্যান্য সেক্টর মিলিয়ে ডোমেস্টিক প্রোডাক্টকে ধরলে আরও ৫ থেকে ৬ বিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ ১৩ বিলিয়ন ডলার হবে। সব মিলিয়ে ৬৫ থেকে ৭০ বিলিয়ন ডলার আমাদের ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট। আমাদের টোটাল ইকোনমিতে আমাদের টোটাল ইন্ডাস্ট্রির অবদান হলো ৩১ দশমিক ৩২ শতাংশ। এটা ২০২২ সালের তথ্য হিসাব করে আমি বললাম। তাহলে ৪৬৫ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির মধ্যে যদি ৩১ দশমিক ৩২ শতাংশ অবদান হয়, তাহলে ভেবে দেখেন কত বড় অবদান আমাদের এই ইন্ডাস্ট্রির।

আমাদের কৃষির অবদান ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। সার্ভিস সেক্টর থেকে ৫১ শতাংশ পাচ্ছি। শিল্প থেকে ৩১ দশমিক ৩২ শতাংশ অবদান আসছে তার মধ্যে ৮৪ শতাংশ টেক্সটাইল থেকে আসছে। আমরা কাজ করছি, সরকারও সহায়তা করছে। আগামীতে প্রতিযোগিতামূলক বাজার হবে। করোনা শেষ হয়ে গেছে। এখন চিন্তা করার সময়ে হয়েছে যে, কোন বাজারটিকে আমরা আগে দখলে নেব।

বস্ত্র খাতে নতুন বিনিয়োগ কেমন আসছে? কর্মসংস্থান কেমন বাড়ছে?

আমাদের সেক্টরে ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের নতুন বিনিয়োগ এসেছে। এগুলোর কোনোটাই বন্ধ হয়নি। আরও হওয়ার কথা ছিল, যুদ্ধের কারণে স্থগিত আছে। আমি বলব, ব্যাকওয়ার্ড শিল্পে আমাদের যে অবস্থানটা আছে, বর্তমানে আমাদের যে টেকনোলজি, ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভুলেশনারি মেশিনারিজ আমাদের আছে। চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, পৃথিবীর এমন কোনো টেকনোলজি নেই যে আমাদের নেই। আমরা প্রস্তুত। বলব যে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ, কোনোটাতে ৭০ ও কোনোটাতে ৪৫ শতাংশ প্রস্তুত। আপনারা বলতে পারেন ৪৫ শতাংশ কেন ৭০ শতাংশ হলো না।

আমাদের জ্বালানি সেক্টরে যেটা হলো কি, আপনি জানেন যে ২০০৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত কানেকশনটা খুবই মন্থর গতিতে যাচ্ছে, যেটা গ্যাসের যতটুকু চাহিদা সেই তুলনায় আমাদের কূপগুলো খনন হয়নি। আমাদের নিজস্ব যে গ্যাস বা সম্পদ সেটা ধীরে ধীরে কমে আসছে এবং যার কারণে আমাদের ওভেন শিল্পগুলোতে প্রচুর গ্যাসের দরকার হয়। এত দিন যদি আমাদের সেই পরিমাণ ইউটিলিটি থাকত, তাহলে হয়তো সেটা হয়ে যেত। যেহেতু এটা প্রাকৃতিক সম্পদ, এই সম্পদের একটা নির্দিষ্ট সময় থাকে, মেয়াদ থাকে, তারপর আস্তে আস্তে নিম্নমুখী হতে থাকে। সুতরাং যেটা ২৭০০ এমএমসি গ্যাস উঠত চার-পাঁচ বছর আগে, সেটা ২৩০০ এমএমসিতে নেমে এসেছে। এটাকে পূরণ করার জন্য আমরা এলএনজি কিনছি। আমরা লং টার্মে ৫০০ এমএমসিএফটি কিনছি প্রতিদিন। আমাদের শর্ট টার্মে সেখান ২০০ আমরা কিনছি। কখনো আসছে, কখনো আসতে পারছে না। যুদ্ধের কারণে বিগত দুই-তিন মাসে আসতে পারছে না। প্রাইস অনেকটা হাই হয়ে গেছে। এসব কারণে আমাদের ওভেন শিল্পগুলো আমরা সেভাবে আগাতে পারিনি। কিন্তু আমাদের যে ইয়ার্ন বলি, ইয়ার্নে আমরা ৯০ শতাংশ সফল, ম্যান-মেড ফাইবারে আরও ৫ শতাংশ এগিয়ে যাব। ২০২৩ সালে সম্ভবত আমরা ৯৫ শতাংশ অর্জন করব।

ডেনিমে আমরা প্রায় পুরোটাই সফল হয়েছি। ওভেন-নিটে তো আমাদের পুরো সাপ্লাই ঠিক আছে। আমরা আগামীতে চেষ্টা করব, আমরা দেখছি সরকার অনেক চেষ্টা করছে যে, নতুন কোনো গ্যাসক্ষেত্র খুঁজে বের করা যায় কিনা। আসলে কি, আমদানিনির্ভর জ্বালানি নিয়ে ইন্ডাস্ট্রি সাসস্টেইনেবল (টেকসই) হওয়া সম্ভব নয়।

আমাদের নিজস্ব যে গ্যাসগুলো আছে, আগামী পাঁচ বছরে যদি আমাদের পাইপলাইনে যুক্ত হয়, আমি জানি সরকার কাজ করছে, বিভিন্ন জায়গায় কূপ খুঁজছে, সংস্কার করছে, ভোলায় দেখে আসলাম প্রতিদিন ১ থেকে ১০০ অতিরিক্ত গ্যাস থাকে সেটা জাতীয় গ্রিডে যোগ করার জন্য চেষ্টা করছে। সেটাকে লিক্যুইড ফর্মে আনার জন্য পাইপলাইনে। এভাবে দেখা গেছে, সিলেটের হরিপুর গ্যাসক্ষেত্রে নতুন আরেকটা কূপ পাওয়া গেছে। আমরা যদি নিজস্ব রিসোর্সগুলো ব্যবহার করতে পারি, আবার যদি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট, পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট চালু হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে গ্যাসনির্ভর পাওয়ার প্ল্যান্ট যদি কমে আসে, সেই বিদ্যুৎটা যদি শিল্পে সাপ্লাই দেয়া যায়, তাহলে আমি মনে করি যে অর্থনীতিতে পোশাকশিল্পের রপ্তানি ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। আর বর্তমানে অর্থনীতিতে ৩১ দশমিক ৩২ শতাংশ যে শিল্পের অবদান তা ৪০ শতাংশে গিয়ে দাঁড়াবে। আমরা যদি গ্যাসকে রিঅ্যারেঞ্জমেন্ট করতে পারি, আমরা যদি বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে কয়লাভিত্তিক ও পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করতে পারি এবং এটা যদি শিল্পে ব্যবহার করতে পারি, অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে।

আমদানি কমছে। এটা একটা স্বস্তির খবর। তবে ক্যাপিটাল মেশিনারি আমদানি বেশ কমে গেছে। এতে কি দেশে বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না?

এখাতে একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, ক্যাপিটাল মেশিনারি কিন্তু গ্রোসারি জিনিস নয় যে প্রতিদিন আমদানি করা হয়। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে দেখা যায়, দুই বছরে একবার আনতে হয়। আপগ্রেশনের কারণে বা অন্য কারণে আমদানি করতে হয়। ক্যাপিটাল মেশিনারি (মূলধনি যন্ত্রপাতি) আমদানি কমে গেছে এটা আশঙ্কার কিছু নেই। শিল্পের কাঁচামাল (র-ম্যাটেরিয়াল) আমদানি কমে গেলে আশঙ্কার কারণ আছে। ক্যাপিটাল মেশিনারি না এলে উৎপাদন হবে না, র-ম্যাটেরিয়াল আসবে না, টাকাও দরকার নাই। কিন্তু আমার মেশিন আছে, কিন্তু র-ম্যাটারিয়ালের কারণে মেশিন বন্ধ আছে এটা আশঙ্কার বিষয়। কিন্তু মেশিনারি আমদানির হ্রাসে আশঙ্কার কোনো কারণ নেই।

সহায়ক ব্যবসা-বাণিজ্য বিনিয়োগ পরিবেশের জন্য আপনার প্রত্যাশা কী?

রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আমরা ব্যবসায়ীরা জড়াতে চাই না। বিরোধী দল হোক বা সরকারি দল হোক, দেশকে নিয়ে প্রপাগান্ডা (গুজব) ছড়ানো থেকে প্রথমে আমাদের বিরত থাকতে হবে। পৃথিবীর কোনো জাতি এটা করে না। দেশের অর্থনীতি যত শক্তিশালী হবে, এর সুফল কিন্তু আমরা নাগরিক হিসেবে সবাই পাব।

জাতি হিসেবে আমাদের দায়িত্ব যাদের জন্য আজকে মুক্ত স্বদেশ তাদের লাল সালাম। দেশটা স্বাধীন না হলে আমরা কয়টা বাঙালি শিল্পের মালিক হতাম। সুতরাং আমি বলব, জাতি হিসেবে ’৭১ সালে একত্রিতভাবে, সম্মিলিত শক্তি না হলে আমরা কিন্তু পাকিস্তানকে পরাজিত করতে পারতাম না। সুতরাং প্রত্যেকটা সংকটে আমাদের এক হতে হবে। শুধু ব্যক্তিস্বার্থে কাজ-ক্ষমতা দেখলে হবে না। ’৭১ সালে যেমন জাতীয় ঐক্য হয়েছিল। আমি মনে করি অর্থনীতি সংকটে ঐক্য হওয়া উচিত। প্রপাগান্ডা ছড়ানো ঠিক নয়।

এ দেশের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। যে দেশ নিজের টাকা দিয়ে পদ্মা সেতু বানাতে পারে, বিভিন্ন ধরনের টানেল করতে পারে- সেই জাতিকে কখনো আপনি খারাপ বলতে পারেন না। আমি বলছি, ১০টা ব্যাংকের ক্লায়েন্ট খারাপ করছে, সেটা যদি ৩০টা টিভি চ্যানেল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রচার করে, তাহলে ৯০টা ক্লায়েন্ট যে ভালো করছে তাদের আমরা কেউ চিনি না। আমরা খারাপকে চিনি, ভালোকে চিনি না। আমি মনে করি, আমাদের ঐক্য থাকতে হবে। জাতীয় অর্থনীতি ও দেশকে বাঁচাতে হবে। দেশটা আমার, আপনার দেশ। দেশর সুনাম নষ্ট করা যাবে না। জাতি হিসেবে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

অর্থ-বাণিজ্য
Inflation in the country was 1138 percent in November

নভেম্বরে দেশে মূল্যস্ফীতি ১১.৩৮ শতাংশ

নভেম্বরে দেশে মূল্যস্ফীতি ১১.৩৮ শতাংশ
বিবিএস-এর তথ্য বলছে, খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ থেকে সামান্য বেড়ে ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ হয়েছে।

নভেম্বরে দেশে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। আগের মাস অক্টোবরে তা ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এই হার গত চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ।

এদিকে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ থেকে সামান্য বেড়ে ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ হয়েছে নভেম্বরে। শহর এবং গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতির হারও গত মাসে বেড়েছে।

নভেম্বরে গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং অক্টোবরে ছিল ১১ দশমিক ২৬ শতাংশ।

একই সময়ে গ্রামাঞ্চলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১৩ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং অক্টোবরে ছিল ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। তবে গ্রামাঞ্চলে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি নভেম্বর ও অক্টোবরে অপরিবর্তিত ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ ছিল।

অন্যদিকে নভেম্বরে শহরাঞ্চলে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১১ দশমিক ৩৭ শতাংশ, যা অক্টোবরে ছিল ১০ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

নভেম্বরে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ১৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ, যা অক্টোবরে ছিল ১২ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং নভেম্বরে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ, যা অক্টোবরে ছিল ৯ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।

নভেম্বরে মজুরি হার সূচক ছিল ৮ দশমিক ১০ শতাংশ, যা অক্টোবরে ছিল ৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।

আরও পড়ুন:
অক্টোবরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২.৬৬ শতাংশ
সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ
মূল্যস্ফীতি আগস্টে কমে এসেছে: বিবিএস
জুলাইয়ে রেকর্ড উচ্চতায় মূল্যস্ফীতি
বাজারের সঙ্গে মিলছে না সরকারের মূল্যস্ফীতির হিসাব

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Day long free health camp on Uber Bangladeshs 8th anniversary 

উবার বাংলাদেশের অষ্টম বার্ষিকীতে দিনব্যাপী ফ্রি হেলথ ক্যাম্প 

উবার বাংলাদেশের অষ্টম বার্ষিকীতে দিনব্যাপী ফ্রি হেলথ ক্যাম্প  উবার টপ ড্রাইভার-পার্টনারদের জন্য দিনব্যাপী ফ্রি হেলথ ক্যাম্প আয়োজন করে। ছবি: উবার
ঢাকায় ২০১৬ সালের নভেম্বরে যাত্রা শুরুর পর থেকে উবার দেশের পরিবহন খাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। ধীরে ধীরে তাদের সেবার পরিধি বৃদ্ধি করে তারা মানুষের নানাবিধ প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম হয়েছে।

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় রাইডশেয়ারিং অ্যাপ উবার তাদের অষ্টম বার্ষিকী উদযাপন করছে।

ঢাকায় ২০১৬ সালের নভেম্বরে যাত্রা শুরুর পর থেকে উবার দেশের পরিবহন খাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। ধীরে ধীরে তাদের সেবার পরিধি বৃদ্ধি করে তারা মানুষের নানাবিধ প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম হয়েছে।

উবার বাংলাদেশ গত আট বছরে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। প্ল্যাটফর্মটি ৭২ লাখেরও বেশি যাত্রীকে সেবা দিয়েছে এবং সাড়ে ৩ লাখ ড্রাইভার-পার্টনারের জন্য আয়ের সুযোগ তৈরি করেছে।

উবার চালকরা গত আট বছরে ১২২ কোটি কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন, যা পৃথিবী থেকে চাঁদে প্রায় ৩ হাজার বার যাতায়াত করার সমান।

দেশে ২০১৬ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে উবার ১৬ কোটি ৬ লাখ ট্রিপ সম্পন্ন করেছে। এতে বোঝা যায় দেশজুড়ে উবার ব্যবহারকারীদের একটি বিপুল ও ক্রমবর্ধমান সংখ্যা রয়েছে।

একই সঙ্গে সাড়ে তিন লাখ ড্রাইভার-পার্টনার উবার প্ল্যাটফর্ম থেকে আয় করেছেন।

উবার বাংলাদেশ তাদের অষ্টম বার্ষিকী উপলক্ষে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের অংশ হিসেবে ‘থ্যাংক ইউ’ ক্যাম্পেইন চালু করেছে।

গত ২৪ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই ক্যাম্পেইনের আওতায় উবার শীর্ষ ড্রাইভার-পার্টনার, যাত্রী ও হিরো পার্টনারদের স্বীকৃতি প্রদান ও উদযাপনের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে যাত্রাপথে চালক ও যাত্রীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য অন-ট্রিপ থ্যাংক ইউ টোকেন প্রদান।

উবার টপ ড্রাইভার-পার্টনারদের জন্য দিনব্যাপী ফ্রি হেলথ ক্যাম্প আয়োজন করেছে। পাশাপাশি শীর্ষ যাত্রীদের জন্য বিশেষ লাইফস্টাইল ভাউচার প্রদান করা হয়েছে।

এই উদ্যোগগুলো কমিউনিটির প্রতি উবারের অঙ্গীকারের প্রতিফলন। এ বিশেষ স্বীকৃতি উবারের সেবায় সবসময় এগিয়ে থাকা হিরো-পার্টনারদের প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে উবার বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড নাশিদ ফেরদৌস বলেন, ‘গত আট বছরে উবার বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। উবার যাত্রীদের চালকদের সাথে সংযুক্ত করে, যারা আমাদের প্ল্যাটফর্মের মেরুদণ্ড। আমরা আমাদের কমিউনিটির জন্য সেবা উন্নত করতে ও অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

বছরজুড়ে উবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বিআরটিএর মতো রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর সঙ্গে একযোগে কাজ করেছে।

নিরাপদ সড়ক সপ্তাহের অংশ হিসেবে সড়ক নিরাপত্তা সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য উবার একাধিক উদ্যোগ চালু করা করেছে, যা কমিউনিটির প্রতি প্রতিষ্ঠানটির গভীর দায়বদ্ধতার বহিঃপ্রকাশ।

আরও পড়ুন:
সাশ্রয়ী ও নিরাপদ অটোরিকশায় চড়বেন যেভাবে
মানা বেতে যাতায়াতে বিশেষ ছাড় পাবেন উবার যাত্রীরা
নিরাপদ সড়ক গড়ে তুলতে যৌথ উদ্যোগ বিআরটিএ ও উবারের
যেভাবে মা দিবসকে করে রাখতে পারেন স্মরণীয়
দেশে উবারের যাত্রীরা ভুলে সবচেয়ে বেশি ফেলে যান যেসব জিনিস

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Import and export stop at four land ports of Sylhet

আমদানি-রপ্তানি বন্ধ, সিলেটের চার স্থলবন্দরে স্থবিরতা

আমদানি-রপ্তানি বন্ধ, সিলেটের চার স্থলবন্দরে স্থবিরতা আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দরে চলছে স্থবিরতা। ছবি: নিউজবাংলা
ভারতীয়দের বাধার মুখে শেওলা স্থলবন্দর, জকিগঞ্জ ও চাতলাপুর শুল্ক স্টেশন দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে শুল্কায়ন জটিলতায় তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে পাথর আমদানি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে স্থবির হয়ে আছে এসব বন্দর ও শুল্ক স্টেশন।

ভারতীয়দের বাধায় সিলেট বিভাগের তিন শুল্ক স্টেশন দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের আপত্তিতে সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি হচ্ছে না। ফলে স্থবির হয়ে আছে এসব বন্দর ও শুল্ক স্টেশন।

জানা যায়, ভারতের আসাম রাজ্যের শ্রীভূমিতে (করিমগঞ্জ) সনাতনী ঐক্য মঞ্চ নামের একটি সংগঠনের বিক্ষোভের মুখে গত রোববার সিলেটের বিয়ানীবাজারের শেওলা স্থলবন্দর ও সোমবার জকিগঞ্জ শুল্ক স্টেশন দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে ভারতীয়দের বিক্ষোভের কারণে গত ৩০ নভেম্বর থেকে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার চাতলাপুর শুল্ক স্টেশন দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।

অন্যদিকে শুল্কায়ন জটিলতায় তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।

আমদানিকারক সূত্র জানায়, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ ও ইসকন থেকে বহিষ্কৃত নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে গত রোববার ভারতের শ্রীভূমি জেলার সুতারকান্দি স্থলবন্দরে মিছিল নিয়ে জড়ো হয় কয়েক শ’ লোক। তারা সীমান্ত এলাকায় বিক্ষোভ করে। পরে ভারতীয় বিক্ষোভকারীরা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে সুতারকান্দি (বাংলাদেশের শেওলা) স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়।

সোমবার একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় ভারতের করিমগঞ্জ শুল্ক স্টেশনে। ফলে সোমবার থেকে ওই স্টেশন দিয়েও আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়।

এদিকে পণ্য পরিমাপ সংক্রান্ত জটিলতায় গত মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ভারতের ডাউকি স্থলবন্দর (বাংলাদেশের তামাবিল) দিয়ে পাথর-চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা।

এই বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি করা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, তামাবিল ও শেওলা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে যে পাথর আমদানি করা হয় তা সরাসরি খনি থেকে ট্রাকে লোড করা হয়। ফলে পাথরের সঙ্গে মাটি ও বালি মিশ্রিত থাকে। আগে শুল্কায়নের পূর্বে বন্দর কর্তৃপক্ষ মাটি ও বালির ওজন বাদ দিয়ে পাথরের ওজন নির্ণয় করত। কিন্তু বর্তমানে স্থলবন্দরের নতুন কর্মকর্তারা মাটি ও বালির ওজন ছাড় না দেয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে।

ওয়েট স্কেলে কড়াকড়ি ওজন নির্ণয়ের কারণে কয়লা-পাথর আমদানি থেকে বিরত রয়েছেন জানিয়ে ব্যবসায়ীরা বলেন, এ অবস্থায় আমদানি অব্যাহত রাখলে পাথরবাহী প্রতি ট্রাকে ন্যূনতম ১০ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হবে। বিষয়টি নিয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বললেও কোনো সুরাহা পাচ্ছেন না বলে জানান তারা।

আমদানি-রপ্তানি বন্ধ, সিলেটের চার স্থলবন্দরে স্থবিরতা

তামাবিল কয়লা, পাথর ও চুনাপাথর আমদানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস উদ্দিন লিপু বলেন, ‘ওজন জটিলতায় আমরা পাথর আমদানি বন্ধ রেখেছি। লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেও পাথর আমদানি করতে গিয়ে আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।

‘আমদানি বন্ধ থাকায় ওপারে ভারতে কয়লা-পাথরবাহী শত শত ট্রাক লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এখন রপ্তানিকারকরা আমাদের কাছে পণ্যবাহী ট্রাকের ক্ষতিপূরণ দাবি করছে।’

তামাবিল কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা তানভির হোসেন বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে। ব্যবসায়ীরা পাথর আমদানি বন্ধ রাখায় এমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’

তামাবিল স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় কয়লা-পাথর আমদানি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। আমরা কয়লা-পাথর ব্যবসায়ীদের সমস্যার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।’

এদিকে ভারতীয়দের বাধায় অন্য সীমান্ত দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হওয়া প্রসঙ্গে সিলেট পাথর আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি আতিক হোসেন বলেন, ‘ইসকন ইস্যুতে ভারতের সুতারকান্দি ও করিমগঞ্জ বর্ডার দিয়ে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। ভারতীয় লোকজনের বাধার মুখে ভারত থেকে বাংলাদেশে কিংবা বাংলাদেশ থেকে ভারতে পণ্যবাহী গাড়ি ঢুকতে পারছে না।’

তিনি জানান, মঙ্গলবার পর্যন্ত ভারতের সুতারকান্দিতে পাথরসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী অন্তত দুশ’ ট্রাক এবং এপারে শেওলা শুল্ক স্টেশনে অর্ধশতাধিক ট্রাক আটকা পড়েছে। এছাড়া সিলেটের জকিগঞ্জের ওপারে ভারতের করিমগঞ্জে আটকা পড়েছে ফল ও কাঁচামাল বোঝাই অর্ধশতাধিক ট্রাক। পণ্য খালাস না হওয়ায় ট্রাকে ফলসহ কাঁচামাল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, বর্ডারে পণ্য আটকা পড়ায় ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। প্রতিদিনই আমদানিকারকদের ব্যাংক ঋণের সুদ গুনতে হচ্ছে। এছাড়া পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ থাকায় লোড-আনালোড এবং স্থানীয় পাথরভাঙার কলগুলোর হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন।

বিয়ানীবাজারের শেওলা স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এই বন্দর দিয়ে মূলত কয়লা ও পাথর আমদানি হয়। আর রপ্তানি হয় ভোগ্যপণ্য, সিমেন্টসহ কিছু পণ্য। তবে ভারত সীমান্তে সমস্যার কারণে তিনদিন ধরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।’

এদিকে জকিগঞ্জ শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আরিফ উদ্দিন বলেন, ‘এই স্টেশন দিয়ে মূলত কমলাসহ কিছু ফলমূল আমদানি হয়। তবে সোমবার থেকে কোনো পণ্য আমদানি হয়নি।’

আরও পড়ুন:
সিলেট সীমান্তে সোয়া কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ
সিলেটে চোরাচালান বহাল, কেবল সিন্ডিকেটের হাতবদল

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Chevron to invest in new offshore gas exploration

নতুন উপকূলীয় গ্যাস অনুসন্ধানে বিনিয়োগ করবে শেভরন

নতুন উপকূলীয় গ্যাস অনুসন্ধানে বিনিয়োগ করবে শেভরন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে মঙ্গলবার যমুনায় বহুজাতিক কোম্পানি শেভরনের কর্মকর্তারা সাক্ষাৎ করেন। ছবি: পিআইডি
শেভরনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক ক্যাসুলো বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক কার্যক্রম এবং ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে গ্যাসের বাড়তি চাহিদা শেভরনকে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নতুন খনন কার্যক্রমে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করেছে। আমরা নতুন উপকূলীয় গ্যাস অনুসন্ধানে বিনিয়োগ করব।’

বাংলাদেশে নতুন গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমে বিনিয়োগ করতে চায় শেভরন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানিটি বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা বাড়ানোর প্রয়াসে এই বিনিয়োগের পরিকল্পনা নিয়েছে।

কোম্পানিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক ক্যাসুলোর নেতৃত্বে শেভরনের কর্মকর্তারা সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই ইচ্ছা ব্যক্ত করেন।

শেভরনের কর্মকর্তারা বলেন, বিগত শেখ হাসিনা সরকার গত দুই বছরে কোম্পানিটিকে অর্থ প্রদান বন্ধ করার পর অন্তর্বর্তী সরকার কয়েক মিলিয়ন ডলারের বকেয়া পরিশোধ শুরু করেছে।

‘আমরা নতুন উপকূলীয় গ্যাস অনুসন্ধানে বিনিয়োগ করব। আর নতুন গ্যাসের মজুদ দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাড়িয়ে তুলবে।’

ফ্রাঙ্ক ক্যাসুলো বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক কার্যক্রম এবং ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে গ্যাসের বাড়তি চাহিদা শেভরনকে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নতুন খনন কার্যক্রমে বিনিয়োগ করতে উদ্বুদ্ধ করেছে।’

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নতুন গ্যাসের মজুদ অন্বেষণে শেভরনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার অর্থনৈতিক কার্যক্রম বৃদ্ধির মধ্যে স্থানীয় কোম্পানিগুলোতে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে।

‘আমরা এখন ব্যবসার জন্য প্রস্তুত। আমরা দেশে আরও সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানাই। প্রধান বহুজাতিক কোম্পানি ইতোমধ্যে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।’

এ সময় দেশে ভালো বিনিয়োগের পরিবেশ নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকার যেসব সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে তার একটি সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা।

অধ্যাপক ইউনূস স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য শেভরনের সামাজিক দায়বদ্ধতার কার্যক্রমের প্রশংসা করেন।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, ‘সরকার আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যে শেভরনের বকেয়া পরিশোধ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই শেভরন ও পেট্রোবাংলা ছয় মাসের ঋণ পরিশোধের চুক্তিতে পৌঁছেছে।’

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Government plans to reduce operating expenses

পরিচালন ব্যয় কমানোর পরিকল্পনা সরকারের

পরিচালন ব্যয় কমানোর পরিকল্পনা সরকারের গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের লোগো। ফাইল ছবি
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক নথি অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সরকারি ব্যয়ের ৫৮ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৫৮ দশমিক ৪ শতাংশ হবে পরিচালন ব্যয়।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন বৈশ্বিক ও দেশীয় চ্যালেঞ্জের কারণে যেসব পরিচালন ব্যয় বেড়েছিল, আগামী বছরগুলোতে তা কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক নথি অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সরকারি ব্যয়ের ৫৮ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৫৮ দশমিক ৪ শতাংশ হবে পরিচালন ব্যয়।

চলতি অর্থবছরে মোট সরকারি ব্যয়ের ৫৯ শতাংশ পরিচালন ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।

পরিচালন ব্যয়ের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত সরকারি কর্মচারীদের বেতন ও মজুরি, পণ্য ও সেবা ক্রয়, ভর্তুকি ও স্থানান্তর পেমেন্ট, দেশীয় ও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এবং ‘খাদ্য হিসাব পরিচালনা’ সংক্রান্ত ব্যয়।

নথি অনুসারে, কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ২০১৯ সালের পরিচালন ব্যয় ৫৫.৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৩ সালে ৬২.৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

বর্ধিত ব্যয়ের মূল চালিকাশক্তি

ক্রমবর্ধমান ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতায় সুদ পরিশোধ ক্রমাগত বেড়েছে।

নথিতে বলা হয়, সামাজিক কল্যাণ ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার পদক্ষেপের ওপর জোর দিয়ে ২০১৯ সালে মোট সরকারি ব্যয়ের ভর্তুকি এবং স্থানান্তর সংক্রান্ত ব্যয় ২.৯ শতাংশ থেকে ২০২৪ সালে বেড়ে প্রায় ৪ শতাংশ হয়েছে।

২০১৯ অর্থবছর থেকে ২০২৩ অর্থবছর পর্যন্ত পরিচালন ব্যয় গড়ে জিডিপির ৭ দশমিক ৬ শতাংশ বজায় ছিল।

২০২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এ অঙ্ক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮.৬ শতাংশে।

দেশীয় সুদের হারের ঊর্ধ্বগতি এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বিনিময় হারের অস্থিরতা থেকে এটি বেড়েছে এবং এটি একই সঙ্গে সুদ পরিশোধ ব্যয়ও বাড়িয়েছে।

এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও সরকার কৌশলগত সমন্বয় ও আর্থিক শৃঙ্খলার মাধ্যমে মধ্যমেয়াদে পরিচালন ব্যয় জিডিপির ৮.৩ শতাংশে স্থিতিশীল রাখার প্রত্যাশা করছে।

২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে খাদ্য ভর্তুকি ১৪.১ শতাংশ বেড়েছে। এটিও পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধির একটি কারণ।

বেতন ও পণ্য ব্যয় ব্যবস্থাপনা

বেতন ও ভাতা সংক্রান্ত খাতে ২০১৯ সালে জিডিপির ১.৮ শতাংশ এবং ২০২৩ সালে ১.৪ শতাংশ কমে গেছে, তবে তা বেতন কমানোর কারণে নয়, বরং সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণেই হয়েছে।

২০২৫ সালে বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় জিডিপির ১ দশমিক ৫ শতাংশ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা ২০১৯ সালের ১ দশমিক ৮ শতাংশের চেয়ে কম।

নথিতে বলা হয়, দক্ষ সরকারি সেবা প্রদান নিশ্চিত করার পাশাপাশি বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় বাড়াতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

কোভিড-১৯ মহামারির বছরগুলোতে আরও গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে সম্পদের পুনর্বিন্যাস এবং ২০২২ সাল থেকে গৃহীত সাশ্রয়ী নীতির কারণে পণ্য ও সেবার ওপর ব্যয় ২০২১ সালের মোট ব্যয়ের ৭.৩ শতাংশ ছিল। ২০২৩ সালে সেখান থেকে কমে দাঁড়ায় ৫.৯ শতাংশে।

২০২৪ অর্থবছরের সংশোধিত প্রাক্কলনে দেখা যায়, এ অর্থবছরে পণ্য ও সেবা খাতে ব্যয় ছিল মোট ব্যয়ের ৬ দশমিক ১ শতাংশ।

মধ্যমেয়াদে পণ্য ও সেবা খাতে ব্যয় ৬ শতাংশের কাছাকাছি থাকবে বলে প্রাক্কলন করেছে অর্থ বিভাগ।

ভর্তুকি যৌক্তিকীকরণ এবং সামাজিক সমর্থন জোরদার করা

সরকার ভর্তুকি বরাদ্দগুলো যুক্তিসঙ্গতভাবে নির্ধারণের জন্য একটি কৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এতে ঝুঁকিপূর্ণ জনগণের জন্য জীবনযাত্রা সহায়তা কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে।

ক্রমবর্ধমান প্রয়োজনীয় ব্যয়ের মধ্যে কৃষি, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে রয়েছে।

জ্বালানি খাতে ধীরে ধীরে ভর্তুকি কমানো হবে। নিয়মতান্ত্রিক মূল্য সমন্বয় এবং ফর্মুলাভিত্তিক জ্বালানি মূল্য নির্ধারণের প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের মাধ্যমে এটি করা হবে।

প্রবৃদ্ধি ও স্থায়িত্ব বাড়ানো

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে সরকার রপ্তানি বহুমুখীকরণ, রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি, কৃষি উন্নয়ন এবং তৈরি পোশাক খাতে সবুজ প্রযুক্তি গ্রহণের জন্য আর্থিক প্রণোদনা প্রদানের পরিকল্পনা করেছে।

হাইব্রিড প্রযুক্তি, বৈদ্যুতিক যানবাহন এবং আইসিটি পরিষেবা রপ্তানির ওপরও জোর দেয়া হচ্ছে।

দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি কৃষি ও রপ্তানিতে বিশেষ মনোযোগ দেয়া হবে বলে নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:
অন্তর্বর্তী সরকার সংখ্যালঘুদের তুলনামূলক বেশি নিরাপত্তা দিচ্ছে: জরিপ
সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমার সময় বাড়ল
সরকারি প্রাথমিকে ৬ হাজার ৫৩১ শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর করে অধ্যাদেশ
দুদক পুনর্গঠনের কাজ প্রায় শেষ: প্রধান উপদেষ্টা

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
The donation box of Pagla Mosque has a record of 82134304 Tk

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে রেকর্ড ৮,২১,৩৪,৩০৪ টাকা

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে রেকর্ড ৮,২১,৩৪,৩০৪ টাকা শনিবার সকালে টাকা গণনা শুরু হয়ে তা শেষ হয় সন্ধ্যা ৬টায়। ছবি: নিউজবাংলা
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলো শনিবার সকালে খুলে ২৯ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। দিনভর গুনে দেখা গেছে, সেখানে জমা পড়েছে রেকর্ড আট কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা। এছাড়াও পাওয়া গেছে বৈদেশিক মুদ্রা, সোনা ও রুপা।

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার পাওয়া গেছে ২৯ বস্তা টাকা। তিন মাস ১৩ দিনে দানবাক্সে এবার মিলেছে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ।

শনিবার সকালে দানবাক্সগুলো খুলে গণনা শুরু হয়। দিনভর গুনে দেখা গেছে, সেখানে জমা পড়েছে আট কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা। এছাড়াও পাওয়া গেছে বৈদেশিক মুদ্রা, সোনা ও রুপা।

কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক মিজাবে রহমত এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে রেকর্ড ৮,২১,৩৪,৩০৪ টাকা
দানবাক্সে পাওয়া যাওয়া স্বর্ণ ও রুপার অলংকারের অংশবিশেষ। ছবি: নিউজবাংলা

এর আগে চলতি বছরের ১৭ আগস্ট মসজিদের ৯টি দানবাক্স খুলে পাওয়া গিয়েছিল ২৮ বস্তা টাকা। তখন দিনভর টাকা গণনা শেষে পাওয়া যায় সাত কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা।

ঐতিহাসিক এই মসজিদে টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার, বৈদেশিক মুদ্রা ছাড়াও প্রচুর পরিমাণ হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলও দান করেন অনেকে।

জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে শনিবার সকাল ৭টায় দানবাক্সগুলো খোলা হয়। পরে দানবাক্সের টাকা বস্তায় ভরা হয়। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বস্তা থেকে টাকাগুলো মসজিদের দ্বিতীয় তলায় মেঝেতে ঢেলে শুরু হয় গণনা। গণনা চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে রেকর্ড ৮,২১,৩৪,৩০৪ টাকা

পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত উদ্দীন ভূইয়া বলেন, ‘টাকা গণনায় অংশ নেন পাগলা মসজিদ মাদ্রাসার ১৩০ জন ও আল-জামিয়াতুল ইমদাদিয়া মাদ্রাসার ১৫৫ জন ছাত্র, পাগলা মসজিদের ৩৬ জন স্টাফ, রূপালী ব্যাংকের ৭৫ জন কর্মকর্তা, সেনাবাহিনীর ১০ জন সদস্য, ১০ জন আনসার সদস্য, ২০ জন পুলিশ, পাঁচজন র‍্যাব সদস্য এবং জেলা প্রশাসনের ২০ জন।’

তিনি জানান, এবার দানবাক্স খোলার সময় পার হয়ে যাওয়ায় একটি টিনের ট্রাঙ্ক বাড়ানো হয়েছে। মসজিদটিতে আগে নয়টি দানবাক্স থাকলেও এখন দুটি বাড়ানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বলেন, ‘পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেয়ার পাশাপাশি অসহায় এবং জটিল রোগে আক্রান্তদের সহায়তা করা হয়।’

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে রেকর্ড ৮,২১,৩৪,৩০৪ টাকা

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী জানান, দানবাক্স খোলা থেকে শুরু করে বস্তায় ভরা এবং গণনা শেষে ব্যাংকে সব টাকা নিরাপদে পৌঁছে দেয়া পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তার কাজে তিনি সশরীরে উপস্থিত থেকে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে দায়িত্ব পালন করেন।

মসজিদ কমিটি সূত্রে জানা যায়, ছয় তলাবিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য একটি মেগা প্রকল্প করা হবে। এতে মসজিদ, মাদ্রাসাসহ অর্ধলাখ মুসল্লি যাতে একত্রে নামাজ আদায় করতে পারেন, এরকম আকর্ষণীয় একটি ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। সে সঙ্গে একসঙ্গে পাঁচ হাজার নারীর আলাদাভাবে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে। এ প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হয়েছে । তারা যাচাই-বাছাই করে নকশা চূড়ান্ত করে দিলে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে কাজ শুরু হবে। এতে প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা।

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে রেকর্ড ৮,২১,৩৪,৩০৪ টাকা

মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান জানান, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এসে দান করছেন এই মসজিদে। মনের আশা পূরণের জন্য তারা এই দান করে থাকেন।

দানবাক্স খোলার পর থেকেই টাকা গণনা দেখতে মসজিদের আশপাশে ভিড় জমান উৎসুক মানুষ। তাদের একজন শেখ বোরহান উদ্দিন বাজিতপুর উপজেলার বাসিন্দা।

বোরহান বলেন, ‘মানুষের মুখে আর বিভিন্ন টেলিভিশন ও পত্রিকায় পাগলা মসজিদের দানবাক্সে জমা পড়া টাকার কথা শুনি। গতবার দেখতে এসেছিলাম। এবারও নিজ চোখে দেখতে এসেছি। এত পরিমাণ টাকা একসঙ্গে কখনও দেখিনি।’

গণনায় অংশ নেয়া হেফজখানা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ইমদাদুল্লাহ জানান, দানবাক্স খোলার পর থেকে গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত মাদ্রাসার সব শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান করেন।

আরও পড়ুন:
পাগলা মসজিদে দানের অঙ্ক রেকর্ড ছাড়াল, গণনা চলছে
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার ২৭ বস্তা টাকা, চলছে গণনা
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল রেকর্ড ৬,৩২,৫১,৪২৩ টাকা
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে আছে শত শত চিঠিও
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে রেকর্ড ৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Paracetamol wont heal the countrys wounds Finance Adviser

দেশে যে ক্ষত হয়েছে সেটা প্যারাসিটামলে সারবে না: অর্থ উপদেষ্টা

দেশে যে ক্ষত হয়েছে সেটা প্যারাসিটামলে সারবে না: অর্থ উপদেষ্টা
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিগত সরকারের রেখে যাওয়া অনিয়ম-দুর্নীতি দুই-চার মাসে স্বাভাবিক করা সম্ভব নয়। তবে ভবিষ্যতে কেউ আর দেশ থেকে অর্থ পাচার করতে পারবে না।’

‘দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আমরা চেষ্টা করছি। আপনারা হতাশ হবেন না। গত ১৫ বছর ধরে যা হয়েছে তা অকল্পনীয়। যে ক্ষত তৈরি হয়েছে সেটা প্যারাসিটামলে সারবে না। সেজন্য কিছু হার্ড ডিসিশন নিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ শনিবার এক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

রাজধানীর একটি হোটেলে ‘প্রাইভেট সেক্টর আউটলুক: প্রত্যাশা ও অগ্রাধিকার’ শীর্ষক এই বাণিজ্য সম্মেলনের আয়োজন করে ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘বিগত সরকারের রেখে যাওয়া অনিয়ম-দুর্নীতি দুই-চার মাসে স্বাভাবিক করা সম্ভব নয়। তবে ভবিষ্যতে কেউ আর দেশ থেকে অর্থ পাচার করতে পারবে না।’

তিনি বলেন, ‘ক্ষয় হয়ে যেতে শুরু করা দেশের অর্থনীতিতে কিছুটা স্থিতিশীলতা আসতে শুরু করেছে। বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। বিদেশি সহযোগী সংস্থাগুলো খুবই ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে।’

বেসরকারি খাতে ঋণের বিষয়ে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পলিসি রেট আপাতত বাড়ানো হচ্ছে না। বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ যেন না কমে সেদিকে নজর দিচ্ছে সরকার।’

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রাজস্ব আদায়কারী এবং আইনপ্রণেতা আলাদা করা হবে।’

এলডিসি গ্রাজুয়েশন হলে গার্মেন্টস শিল্পে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলেও উল্লেখ করেন অর্থ উপদেষ্টা।

আরও পড়ুন:
ভারত ইচ্ছেমতো স্লুইস গেট খোলে আর বন্ধ করে: অর্থ উপদেষ্টা
ভবিষ্যতে কেউ টাকা পাচার করতে পারবে না সে পলিসি হচ্ছে: অর্থ উপদেষ্টা
স্বল্পমেয়াদি সংস্কারে অগ্রাধিকার দিচ্ছে বর্তমান সরকার: অর্থ উপদেষ্টা
বিশ্বব্যাংক ও আইএফসি তিন খাতে সংস্কারে সহায়তা দেবে
ব্যাংক খাত সংস্কার ও অর্থপাচার রোধে আইএমএফের সহায়তা চায় বাংলাদেশ

মন্তব্য

p
উপরে