প্রায় আড়াই বছর আগে করোনা মহামারির সময় সাধারণ ছুটির বিধিনিষেধ শেষে পুঁজিবাজার চালু হলে লেনদেনে যে খরা দেখা গিয়েছিল, সেটি ফিরে এসেছে।
গত ৮ কর্মদিবসের মধ্যে ৫ কর্মদিবস তিন শ কোটি টাকার ঘরে লেনদেন হওয়ার পর এবার তা নেমে এসেছে দুই শ কোটির ঘরে।
এমন চিত্র সবশেষ দেখা গিয়েছিল ২০২০ সালের জুলাই। সে সময় ১৪ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত টানা ৮ কর্মদিবস দুই শ কোটি টাকার ঘরে লেনদেন হয়েছিল।
সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবস মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ২৭১ কোটি ৯৭ লাখ ৬১ হাজার টাকা। আগের দিনও লেনদেন ছিল ৩৪৪ কোটি ৮৬ লাখ ২৭ হাজার টাকা।
লকডাউনে লেনদেন বন্ধ হয়ে যাবে, এমন আতঙ্কে ২০২১ সালের ৫ এপ্রিলের পর এটিই সর্বনিম্ন লেনদেন। সেদিন হাতবদল হয় ২৩৬ কোটি ৬০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।
আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমলেও সূচক ১৬ পয়েন্ট। ৫০টি কোম্পানির শেয়ারের দর বাড়ার বিপরীতে এদিন দর হারায় ২৫টি কোম্পানি। ফ্লোর প্রাইসে আগের দিনের দরে লেনদেন হয়েছে ২২৮টি কোম্পানি। ৮৭টি কোম্পানির একটি শেয়ারও হাতবদল হয়নি।
গত ৩১ জুলাই দ্বিতীয় দফায় ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর পুঁজিবাজার মাস দুয়েক চাঙা থাকলেও গত দুই মাস ধরে তা ক্রমেই নিম্নমুখি। ফ্লোর প্রাইস ছাড়িয়ে যেমন কোম্পানির শেয়ারের দর তরতর করে বাড়ছিল, এর মধ্যে সিংহভাগই ফ্লোর প্রাইস বা আশেপাশের দরে নেমেছে।
শক্তিশালী বহু কোম্পানি, যেগুলো বছরের পর বছর বিনিয়োগকারীদেরকে দারুণ মুনাফা দিয়ে আসছে, সেগুলোর শেয়ারেরও ক্রেতা নেই। এখন আলোচনা হচ্ছে, ফ্লোর প্রাইসের কারণে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে।
তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেছেন, তারা বাধ্য হয়েই ফ্লোর প্রাইস দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে এটি তুলে দেয়া হলে শেয়ারের দর পড়ে গিয়ে বিনিয়োগকারীরা বড় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন। তার মতে, দেশের সামগ্রিক আর্থিক যে পরিস্থিতি, তার মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারে।
পুঁজিবাজারের লেনদেন প্রসঙ্গে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুঁজিবাজারের ভলিউম কমার কারণই হলো ফ্লোর প্রাইস। আগেও বলেছি, এটা শাখের করাত। তুলে দিলেও সমস্যা, আবার থাকার কারণে বায়ার নাই।’
তিনি বলেন, ‘এর সঙ্গে অর্থনৈতিক সংকটের কারণেও বিনিয়োগ কমেছে। আর্থিক খাতে বিভিন্ন অনিয়মের খবর পত্র-পত্রিকায় আসছে। যেগুলো দেখে মানুষ বিনিয়োগের সাহস করবে কীভাবে?’
কেমন ছিল করোনাকালের চিত্র
সারা বিশ্বে করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ার পর ২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকেই আতঙ্কে পুঁজিবাজারে লেনদেন নেমে যায় তলানিতে। জানুয়ারিতেও দুই শ কোটির ঘরে নেমে আসে। তবে পরে বাড়তে বাড়তে হাজার কোটির ঘরও ছাড়িয়ে যায়।
সে সময় বিশ্বজুড়ে লকডাউনের কারণে মানুষ ছিল আতঙ্কে। ৮ মার্চ দেশেও যখন ভাইরাসটির সংক্রমণ হয়, তখন এই আতঙ্ক একেবারে জেঁকে বসে। ১৯ মার্চ কেবল ৪৯ কোটি ১২ লাখ ১৬ হাজার টাকার শেয়ার হাতবদল হয়। ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটিতে লেনদেন বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগের দিন হাতবদল হয় ৩৪৮ কোটি ১৩ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।
দুই মাসেরও বেশি সময় লেনদেন স্থগিত থাকার পর ৩১ মে চালু হয় পুঁজিবাজার। তবে আতঙ্কের কারণে সে সময়ও বিনিয়োগকারীরা যায়নি ব্রোকারেজ হাউজে। লেনদেন হতে থাকে এক শ কোটি টাকারও নিচে। জুলাইয়ের শুরু থেকে লেনদেন ফের কিছুটা বাড়তে থাকে। সেই বছরের জুলাইয়ে যে চিত্র ছিল, আড়াই বছর পর এসে দেশের পুঁজিবাজারে এখন সেই একই চিত্র।
তখন একটু একটু করে লেনদেন বাড়তে থাকার পর বিনিয়োগকারীরাও সক্রিয় হচ্ছিল। এক পর্যায়ে বাজারে দেখা দেয় চাঙাভাব। লেনদেন প্রথমে হাজার কোটি, এরপর দুই হাজার কোটি, এবং এক পর্যায়ে ছাড়িয়ে যায় তিন হাজার কোটির ঘর।
শেয়ারদর বাড়তে থাকায় বাড়তে থাকে মূল্যসূচক। এক পর্যায়ে ২০১০ সালের মহাধসের পর সর্বোচ্চ সূচকে পৌঁছার পর এক যুগের হতাশা কাটার আলোচনা বড় হয়ে উঠে।
দবে এখন পুঁজিবাজারে ঠিক উল্টো চিত্র। ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে উদ্বেগ, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উৎকণ্ঠা তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। পুঁজিবাজারে আতঙ্ক আরও বেশি। এই বাজার ব্যক্তি শ্রেণির বিনিয়োগকারী নির্ভর, যারা নানা সময় নেতিবাচক খবরে আতঙ্কিত হয়ে কম দামে শেয়ার বেচে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, আবার ইতিবাচক হতে পারে, এমন খবরেও বেশিদামে শেয়ার কিনে পড়ে আরেক ক্ষতিতে।
সূচকে প্রভাব যাদের
সবচেয়ে বেশি ৩ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে বিকন ফার্মা। এদিন শেয়ারটির দর বেড়েছে ২ দশমিক ৮১ শতাংশ।
অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের দর ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ২২ পয়েন্ট।
ওরিয়ন ইনফিউশন সূচকে যোগ করেছে ১ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ।
এর বাইরে সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে বসুন্ধরা পেপার, সি-পার্ল, ইস্টার্ন হাউজিং, ওরিয়ন ফার্মা, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, জেনেক্স ইনফোসিস ও পূবালী ব্যাংক।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ১৪ দশমিক ১২ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি শূন্য দশমিক ৭৫ পয়েন্ট সূচক কমিয়েছে কনফিডেন্স সিমেন্ট। কোম্পানির দর কমেছে ৪ দশমিক ৮১ শতাংশ।
পদ্মা অয়েলের দর শূন্য দশমিক ৯০ শতাংশ হ্রাসে সূচক কমেছে শূন্য দশমিক ৪০ পয়েন্ট।
সোনালী পেপারের কারণে সূচক হারিয়েছে শূন্য দশমিক ৩৬ পয়েন্ট। এদিন কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে শূন্য দশমিক ৮১ শতাংশ।
এ ছাড়াও কোহিনূর কেমিক্যালস, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ইউনিক হোটেল, আমরা টেকনোলজিস, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স ও ই-জেনারেশনের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ২ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট।
দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ দর বেড়ে মুন্নু অ্যাগ্রোর শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭০৮ টাকা ১০ পয়সায়, যা আগের দিন ছিল ৬৫৮ টাকা ৭০ পয়সা।
এরপরেই ৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ বেড়ে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬০৯ টাকা ৫০ পয়সায়, যা আগের দিন ছিল ৫৬৭ টাকা।
তালিকার তৃতীয় স্থানে ছিল মুন্নু সিরামিকস। ৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ দর বেড়ে শেয়ারটি হাতবদল হয়েছে ১১৪ টাকা ১০ পয়সায়। আগের দিনের দর ছিল ১০৭ টাকা।
এ ছাড়া তালিকায় ছিল অ্যাম্বি ফার্মা, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, ইস্টার্ন হাউজিং, বসুন্ধরা পেপার, অলিম্পিক ইন্ডস্ট্রিজ, পেপার প্রসেসিং ও মনোস্পুল।
দরপতনের শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি ৪ দশমিক ৮১ শতাংশ দর কমেছে কনফিডেন্স সিমেন্টের। প্রতিটি শেয়ার লেনদেন ৮৯ টাকায়, যা আগের দিন ছিল ৯৩ টাকা ৫০ পয়সা।
এর পরেই ২ শতাংশ দর কমে প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১১২ টাকা ৭০ পয়সায়। আগের দিনের দর ছিল ১১৫ টাকা।
১ দশমিক ৮৩ শতাংশ দর কমে পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৬ টাকা ৭০ পয়সায়। যা আগের দিন ছিল ২৭ টাকা ২০ পয়সা।
এ ছাড়া তালিকায় পরের স্থানে ছিল আমরা টেকনোজিস, কোহিনূর কেমিক্যাল, পদ্মা অয়েল, অগ্নি সিস্টেমস, সোনালী পেপার, বিডি কম ও বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
মন্তব্য