× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

অর্থ-বাণিজ্য
Decline in remittances stopped in November
google_news print-icon

রেমিট্যান্সে পতন থামল নভেম্বরে

রেমিট্যান্সে-পতন-থামল-নভেম্বরে
অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা বলেছেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়াতে অবৈধ হুন্ডি বন্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের ফলে নভেম্বরে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক। তবে, এখনও রেমিট্যান্স প্রবাহ সন্তোষজনক নয়।

সদ্য শেষ হওয়া নভেম্বর মাসে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স কিছুটা বেড়েছে। এ মাসে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ৩০ হাজার (১.৫৯ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই অঙ্ক গত বছরের নভেম্বরের চেয়ে ২ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি। আর আগের মাস অক্টোবরের চেয়ে বেশি ৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংক বৃহস্পতিবার রেমিট্যান্স প্রবাহের হালনাগাদ এই তথ্য প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায়, দুই মাস পর প্রবৃদ্ধিতে ফিরেছে বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভের অন্যতম প্রধান উৎস রেমিট্যান্স। আগের দুই মাস সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে যথাক্রমে ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ এবং ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। আর গত বছরের নভেম্বরে এসেছিল ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার।

অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা বলেছেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়াতে অবৈধ হুন্ডি বন্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের ফলে নভেম্বরে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক। তবে, এই রেমিট্যান্স মোটেই সন্তোষজনক নয়। বৈধ পথে রেমিট্যান্স বাড়াতে হুন্ডি বন্ধে আরও কঠিন পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) ৮৭৯ কোটি ৩১ লাখ (৮.৭৯ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেশি।

২০২১ সালের এই পাঁচ মাসে ৮ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে।

রেমিট্যান্সে পতন থামল নভেম্বরে

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি করে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। জুলাইয়ে এসেছিল ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার; যা ছিল আগের ১৪ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। আর গত বছরের জুলাইয়ের চেয়ে বেশি ছিল ১২ শতাংশ। আগস্টে আসে ২ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১২ দশমিক ৬০ শতাংশ। ওই দুই মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ৪ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে যা ছিল ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি।

কিন্তু সেপ্টেম্বরে এসে হোঁচট খায়। ওই মাসে বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা ১৫৩ কোটি ৯৫ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন; যা ছিল গত বছরের সেপ্টেম্বরের চেয়ে ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ কম। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ১৭২ কোটি ৬৭ লাখ ডলার এসেছিল। পরের মাস অক্টোবরে এসেছিল ১৫২ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। যা ছিল আট মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম।

আমদানি কমার পরও রেমিট্যান্সের ধীরগতির কারণে রিজার্ভ কমে ৩৪ বিলিয়ন ডলারের (৩ হাজার ৪০০ কোটি) নিচে নেমে এসেছে। বৃহস্পতিবার দিন শেষে এই সূচক ছিল ৩৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলঅর।

নভেম্বরে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে ২৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার ডলার।

৪২টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে প্রায় ১২৯ কোটি ডলার। আর ৯টি বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৫২ লাখ ৪০ হাজার ডলার।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ব্যাংকিং চ্যানেলের বদলে অবৈধভাবে হুন্ডিতে অর্থ পাঠানোর কারণ, সেখানে ডলারের দর বেশি পাওয়া যায়। প্রতি ডলারের বিপরীতে তিন থেকে চার টাকার ব্যবধান অনেককেই এভাবে অর্থ পাঠানোতে আগ্রহী করছে।’

তিনি বলেন, খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলারের দর এখন ১১২ থেকে ১১৩ টাকা। ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠালে ১০৭ টাকা পাওয়া যায়। তার সঙ্গে আড়াই শতাংশ প্রণোদনা যোগ হয়ে পাওয়া যায় ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। আর হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠালে, যার নামে পাঠান তিনি ১১৩ টাকা পর্যন্ত পাচ্ছেন।

সে কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ বেড়ে গেছে বলে মনে করছেন আহসান এইচ মনসুর। তার মূল্যায়ন, এ কারণেই ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স কম আসছে।

দীর্ঘ সময় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করে আসা আহসান মনসুর বলেন, ‘মূলত হুন্ডি বেড়ে যাওয়ার কারণেই এই সূচক কমছে। এটা বন্ধ করতে হবে। হুন্ডি কারবারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে কিন্তু রেমিট্যান্স বাড়বে না; রিজার্ভ আরও কমে যাবে।’

রেমিট্যান্সে পতন থামল নভেম্বরে

গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ২১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। যা ছিল ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ বেশি।

তার আগের বছরে (২০২০-২১) অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। যা ছিল আগের বছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।

হুন্ডি বন্ধে নানা পদক্ষেপ

অর্থ পাচার ও কালোটাকা না কমলে বৈধ পথে রেমিট্যান্সও বাড়বে না- বিভিন্ন মহলের এমন বার্তার পর হুন্ডি প্রতিরোধের নতুন কৌশলে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠন করা হয় আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। সম্প্রতি হুন্ডির মাধ্যমে প্রেরিত রেমিট্যান্সের ২৩০ জন বেনিফিশিয়ারির হিসাবে সাময়িকভাবে উত্তোলন স্থগিত করে বিএফআইইউ। বলা হয়, ভবিষ্যতে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাবে এমন প্রতিশ্রুতি দিলে হিসাবগুলো খুলে দেওয়া হবে।

বৈধ উপায়ে পাঠানো রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেওয়া, রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা দেওয়া, রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজ করা, অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ণ অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা ও রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর চার্জ ফি মওকুফ করা হয়েছে।

অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠালে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক।

গত কয়েক মাস ধরে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সপ্রবাহ কমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ নভেম্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, প্রবাসী বাংলাদেশি ও তাদের প্রিয়জনদের জানানো যাচ্ছে যে, কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে (হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে) প্রেরণ করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ এবং এতে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে প্রবাসীদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, ‘আপনাদের অর্জিত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে না পাঠিয়ে বৈধ পথে বা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে প্রেরণ করুন, দেশ গড়ায় মূল্যবান অবদান রাখুন এবং আপনার প্রিয়জনকে ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ রাখুন।’

অবৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে প্রমাণ সাপেক্ষে প্রচলিত আইনে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

সবশেষ বিদেশ থেকে বৈধ পথে রেমিট্যান্স আনার প্রক্রিয়া আরও সহজ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিকাশ, রকেট ও উপায়ের মতো মোবাইলে আর্থিক সেবাদানকারী (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানসমূহের মাধ্যমে সরাসরি প্রবাসী আয় আনার সুযোগ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

গত ২৯ নভেম্বর এক সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, এখন থেকে প্রবাসীরা ঘরে বসেই মোবাইলে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারবেন। হুন্ডি ঠেকাতে রেমিট্যান্স আনার প্রক্রিয়া আরও সহজ করতেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

রেমিট্যান্স কমবে .৪০ শতাংশ:বিশ্বব্যাংক

এদিকে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ নিয়ে হতাশার কথা জানিয়েছে সংস্থা বিশ্বব্যাংক। ওয়াশিংটনভিত্তিক এই উন্নয়ন সংস্থাটি বলেছে, চলতি ২০২২ সাল শেষে বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশি প্রবাসীদের তাদের দেশে পাঠানো রেমিট্যান্সে অঙ্ক দাঁড়াবে ২১ বিলিয়ন (২ হাজার ১০০ কোটি) ডলার। যা হবে ২০২১ সালের চেয়ে ৫ দশমিক ৪০ শতাংশ কম। এই নেতিবাচক প্রবণতা আগামী ২০২৩ সালেও অব্যাহত থাকবে। গত বছর দেশের প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২ দশমিক ২ শতাংশ।

নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর প্রবাসী আয় নিয়ে বিশ্বব্যাংকের ‘অভিবাসন ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে গ্লোবাল নলেজ পার্টনারশিপ অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (নোমাড) এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর (২০২১ সাল) বাংলাদেশে ২২ দশমিক ২০ বিলিয়ন (২ হাজার ২২০ কোটি) আমেরিকান ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। সেই সুবাদে ওই বছরে প্রবাসী আয় প্রাপ্তিতে বিশ্বে সপ্তম অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। চলতি বছর শেষে তা ১২০ কোটি বা ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার কমে ২১ বিলিয়ন ডলারে রেনে আসবে। আর এতে প্রবাসী আয় প্রাপ্তিতে বিশ্বে নবম স্থানে নেমে আসবে বাংলাদেশ। ২০২০ সালে প্রবাসী আয় এসেছিল ২ হাজার ১৭৫ কোটি (২১.৭৫ বিলিয়ন) ডলার।

আরও পড়ুন:
রেমিট্যান্স পাঠাতে চার্জ লাগবে না প্রবাসীদের
রেমিট্যান্সের পর রপ্তানি আয়েও ধাক্কা
৮ মাসে সবচেয়ে কম রেমিট্যান্স, ৩৪ বিলিয়নে নামছে রিজার্ভ
রেমিট্যান্স কমছেই, ২৭ দিনে এসেছে ১৩৬ কোটি ডলার
রেমিট্যান্সে ধীরগতি, ২০ দিনে এসেছে ১১০ কোটি ডলার

মন্তব্য

আরও পড়ুন

অর্থ-বাণিজ্য
It is contradictory to pay 2000 rupees if the return is given Dr Salehuddin

রিটার্ন দিলেই ২ হাজার টাকা দিতে হবে, এটা সাংঘর্ষিক: ড. সালেহউদ্দিন

রিটার্ন দিলেই ২ হাজার টাকা দিতে হবে, এটা সাংঘর্ষিক: ড. সালেহউদ্দিন শনিবার ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ব্র্যাক বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকস ফোরাম আয়োজিত বাজেট-পরবর্তী আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন ড. সালেহউদ্দিন। ছবি: নিউজবাংলা
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে বাজেটের আকার মোটেই বড় নয়। আকার ছোট হলেও বাজেটের বাস্তবায়নই চ্যালেঞ্জের বিষয়। আর জনগণের ওপর করের হার না বাড়িয়ে করের আওতা বাড়ানো উচিত।’

রিটার্ন জমা দিলেই দুই হাজার টাকা দিতে হবে- এটাকে সাংঘর্ষিক মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর প্রফেসর ড. সালেহউদ্দিন।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট-পরবর্তী এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

শনিবার ‘পোস্ট বাজেট ডায়ালগ ফিসক্যাল ইয়ার ২০২৩-২৪’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ব্র্যাক বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকস ফোরাম।

সাবেক গভর্নর ও ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের প্রফেসর ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘ব্যক্তি করমুক্ত আয়ের সীমা যেটা সাড়ে ৩ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে সেটা ঠিক আছে। কিন্তু দুই হাজার টাকা যা মিনিমাম কর ধরা হয়েছে এটা কেন? রিটার্ন দিলেই দুই হাজার টাকা দিতে হবে- এটাকে আমার কাছে সাংঘর্ষিক মনে হচ্ছে।’

অগ্রাধিকারভিত্তিতে খেলাপি ঋণ আদায়, বিভিন্ন সেক্টরে দুর্নীতি হ্রাস এবং বিদেশে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার বিষয়কে সরকারের অগ্রাধিকার দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অনেক রূপকল্পের কথা বলা হয়েছে। আছে নানা অর্জন আর প্রত্যাশার কথা। কিন্তু কোনো বিষয়েই সুর্নিদিষ্ট দিকনির্দেশনা নেই।’

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের প্রফেসর ড. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে বাজেটের আকার মোটেই বড় নয়। জিডিপির আনুপাতিক হারে বাজেট ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। আকার ছোট হলেও বাজেটের বাস্তবায়নই চ্যালেঞ্জের বিষয়।’

জনগণের ওপর করের হার না বাড়িয়ে করের আওতা বাড়ানোর বিষয়ে পরামর্শ দেন এই অর্থনীতিবিদ।

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যে পরিমাণ টিআইএন (করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর) রয়েছে, কর দেয় এর চেয়ে অনেক কম। এক্ষেত্রে টিআইএনধারীদের কর প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ করের হার না বাড়িয়ে আওতা বাড়াতে হবে।’

অনেক চ্যালেঞ্জকে ভারসাম্য করেই সরকারকে এবারের বাজেট প্রণয়ন করতে হয়েছে বলে মনে করছেন আইপিডিসি ফিন্যান্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোমিনুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমরা রাস্তা-ঘাটসহ দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন চাই। সে সঙ্গে একটি সমতা ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য দেশে সুশাসন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, বিচার ব্যবস্থার উন্নতিসহ একটি ব্যবসা সহায়ক পরিবেশও চাই।’

‘এছাড়া প্রাইভেট সেক্টর সবসময়ই রাজস্ব আহরণে সরকারকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করে থাকে। তাই ব্যবসা-বাণিজ্য করতে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হন এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে সরকারের কাছ থেকে সহায়তা পায় সেটা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাই।’

বাজেট-পরবর্তী এই আলোচনা অনুষ্ঠানে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজেশনের গুরুত্ব, কার্যকরভাবে রাজস্ব আদায়ের কৌশল এবং ইনকাম ট্যাক্স আইনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন স্নেহাশিষ মাহমুদ অ্যান্ড কোম্পানির পার্টনার স্নেহাশিষ বড়ুয়া।

আরও পড়ুন:
বাজেটে কলমের দাম না বাড়ানোর পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী
২০৪১ সালে সোনার বাংলা বিনির্মাণে এবারের বাজেট: কাদের
‘গত বছর কেউ কালো টাকা সাদা করেননি’
দুর্নীতি ও অর্থপাচারের দুষ্টচক্র নিয়ন্ত্রণের নির্দেশনা নেই বাজেটে: টিআইবি
‘বাইসাইকেলে কর আরোপে চাপে পড়বে নিম্ন-মধ্যবিত্ত’

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Last year no one whitened black money

‘গত বছর কেউ কালো টাকা সাদা করেননি’

‘গত বছর কেউ কালো টাকা সাদা করেননি’
মন্ত্রী বলেন, গত বছরের বাজেটে বলেছিলাম, কেউ যদি অপ্রত্যাশিত টাকা দেশে নিয়ে আসে, তাহলে সেই টাকার কোনো কর দিতে হবে না। গত বাজেটে এ সুযোগটি দেয়ার পরও এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রত্যাশিত টাকা বাংলাদেশে আসেনি। তাই এবারের বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়নি।

গত এক বছরে একজনও কালো টাকা সাদা করেননি বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) অর্থ মন্ত্রণালয় আয়োজিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা জানতে চান, গত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিলেও এবারের বাজেটে এ ধরনের কোনো সুযোগ কেন রাখা হয়নি।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, গত বছরের বাজেটে বলেছিলাম, কেউ যদি অপ্রত্যাশিত টাকা দেশে নিয়ে আসে, তাহলে সেই টাকার কোনো কর দিতে হবে না। গত বাজেটে এ সুযোগটি দেয়ার পরও এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রত্যাশিত টাকা বাংলাদেশে আসেনি। তাই এবারের বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়নি।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার পর থেকে অর্থনীতিবিদ ও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে বাজেটে ঘোষণা করা লক্ষ্যগুলোকে অবাস্তব বলা হচ্ছিল। অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজেট ফেল করবে না।

মুস্তফা কামাল বলেন, ‘গত পাঁচ বছরে আমরা যে বাজেটগুলো দিয়েছি, প্রতিবছরই বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা কতটা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি, তা সব সময় প্রচার করেছি। ফেল করিনি, ইনশাআল্লাহ আগামীতেও ফেল করব না। এটি আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।’

মানুষের কর্মদক্ষতা ও দায়বদ্ধতার ওপর ভর করেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে চান জানিয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘সবকিছুর মূলে হচ্ছে এ দেশের মানুষ, জনগোষ্ঠী- তাদের কর্মদক্ষতা, দেশের প্রতি তাদের মায়ামমতা, মানুষের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা, এটা অসাধারণ এক উদাহরণ আমি মনে করি।

‘এবং সে জন্য আমার বড় বিশ্বাস, আপনার মতো করে আমি বিশ্বাস করি যে, আমাদের পরাজয় নেই। ইনশাআল্লাহ আমরা বিজয়ী হবই হব।’

রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সরকার যখন প্রথম দায়িত্ব গ্রহণ করে তখন এনবিআরের রাজস্ব ছিল ৫৯ হাজার কোটি টাকা। এখন সেটা ২ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকায় উত্তীর্ণ হয়েছে। যদি ৫৯ হাজার কোটি টাকা থেকে এখন যদি তিন লাখ কোটি টাকাতে যায়, যেটুকুন বাড়তি বলছেন, এটা আমরা অর্জন করতে পারব ইনশাআল্লাহ। আমাদের প্রজেকশন যেগুলো আছে, আমরা ফুলফিল করতে পারব।’

আরও পড়ুন:
বাজেট নিয়ে আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলন শনিবার
দুর্নীতি ও অর্থপাচারের দুষ্টচক্র নিয়ন্ত্রণের নির্দেশনা নেই বাজেটে: টিআইবি
‘বাইসাইকেলে কর আরোপে চাপে পড়বে নিম্ন-মধ্যবিত্ত’

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
The price of fish has increased by 40 per kg

আলুর কেজি ৪০, দাম বেড়েছে মাছের

আলুর কেজি ৪০, দাম বেড়েছে মাছের ফাইল ছবি
আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি। কচুরমুখী বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে। করলা ও কাকরোল ৮০ টাকা কেজি, কচুরলতি কেজিপ্রতি ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, পেঁপে, ধুন্দল, পটল, বরবটি, শসা ও টমেটো ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সবজির দাম যেমন ছিল গত কদিন ধরে, প্রায় তেমনই আছে এখনও। তবে মাছের দাম বেড়েছে কিছুট। মাংসের দামও আছে আগের মতো।

শুক্রবার সরকারি ছুটির দিনে রাজধানীর মহাখালী, আরজতপাড়া ও মধ্যবাড্ডার বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি। কচুরমুখী বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে। করলা ও কাকরোল ৮০ টাকা কেজি, কচুরলতি কেজিপ্রতি ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, পেঁপে, ধুন্দল, পটল, বরবটি, শসা ও টমেটো ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ঢেঁড়শ ও বেগুন ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। কাঁচামরিচের দাম কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজি দরে। আর পেঁয়াজের কেজি ৮০ টাকা।
গত সপ্তাহের মত গরুর মাংস, সোনালী মুরগি এবং ডিমের দাম অপরিবর্তত থাকলেও কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম।

গত সপ্তাহের তুলনায় প্রকারভেদে মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে প্রায় ৫০ থেকে ২০০ টাকা। ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে এক কেজি ওজনের ইলিশ। ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি দরে।

আইড় মাছ প্রতি কেজি ১৪০০ টাকা, রুপচাঁদা প্রতি কেজি ১৬০০ টাকা, আকার ভেদে পুঁটি মাছ প্রতি কেজি ৫০০-৭০০ টাকা, বড় সাইজের গলদা চিংড়ি প্রতি কেজি ১৩০০-১৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে রুই মাছ। কাতল মাছে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা, বাইলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা কেজি দরে।

হাইব্রিড তেলাপিয়া মাছ গত সপ্তাহে ২০০ টাকা দামে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। পাঙাশ মাছ প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি কই বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকায়, শিং প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়।

আরও পড়ুন:
৭ কার্যদিবসের মধ্যে জাহিনটেক্সের আয়করের তথ্য দেয়ার নির্দেশ
ক্যাপিটেক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট আনছে ২০০ কোটি টাকার মিউচুয়াল ফান্ড
চিনিতে কেজিপ্রতি ২০ টাকা বেশি, বেড়েছে মাছের দামও

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
All outlets closed business Gotal Grameen Uniqlo

সব বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ, ব্যবসা গোটাল গ্রামীণ ইউনিক্লো

সব বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ, ব্যবসা গোটাল গ্রামীণ ইউনিক্লো
ইউনিক্লো সোশ্যাল বিজনেস বাংলাদেশ লিমিটেড বৃহস্পতিবার গ্রামীণ ইউনিক্লোর ওয়েবসাইটে ৩০ মে বিবৃতি দিয়ে বলেছে, আমরা ১৮ জুনের মধ্যে কার্যক্রম শেষ করতে চেয়েছিলাম, তবে আমাদের সব পণ্য  বিক্রি হয়ে যাওয়ায় ৩০ মে-এর মধ্যেই সব কার্যক্রম বন্ধ করছি।

বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিল তৈরি পোশাকের বৈশ্বিক ব্র্যান্ড গ্রামীণ ইউনিক্লো। এরই মধ্যে ব্র্যান্ডটি তার সব বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে।

গ্রামীণ ইউনিক্লো-এর ফেসবুক পেজে পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজধানীর বেইলিরোড ও মিরপুর-১২ এলাকাতে গিয়েও তাদের কোনো শো-রুম খোলা পাওয়া যায়নি।

যোগাযোগের জন্য গ্রামীণ ইউনিক্লো-এর ফেসবুক পেজে দেয়া ফোন নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া গেছে।

অবশ্য এর আগে ১৮ জুনের মধ্যে গ্রামীণ ইউনিক্লো তাদের ১০টি বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ করার পাশাপাশি ব্যবসা কার্যক্রমও বন্ধের কথা জানিয়েছিল। তবে পরে আরেক পোস্টে বলা হয়, ৩০ মে-এর মধ্যেই বন্ধ হচ্ছে সব দোকান।

ইউনিক্লো সোশ্যাল বিজনেস বাংলাদেশ লিমিটেড বৃহস্পতিবার গ্রামীণ ইউনিক্লোর ওয়েবসাইটে ৩০ মে বিবৃতি দিয়ে বলেছে, আমরা ১৮ জুনের মধ্যে কার্যক্রম শেষ করতে চেয়েছিলাম, তবে আমাদের সব পণ্য বিক্রি হয়ে যাওয়ায় ৩০ মে-এর মধ্যেই সব কার্যক্রম বন্ধ করছি।

গ্রামীণ ইউনিক্লোর ওয়েবসাইটে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘আমরা দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, গ্রামীণ ইউনিক্লোর ১০টি স্টোর (বিক্রয়কেন্দ্র) ১৮ জুন, ২০২৩ সালের মধ্যে আমরা বন্ধ করব এবং এর সঙ্গে সঙ্গে গ্রামীণ ইউনিক্লোর ব্যবসার কার্যক্রমও বন্ধ হবে।

গত ১১ মে দেয়া বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি বলেছিল, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সে সঙ্গে ব্যবসায়িক পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মনে করছি, আমাদের ব্যবসার একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য অর্জন করতে সফল হয়েছি। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আমাদের ব্যবসার কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

জাপানি খুচরা বিক্রেতা কোম্পানিটি গ্রামীণ ব্যাংক গ্রুপের সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে ২০১০ সালে ইউনিক্লো সোশ্যাল বিজনেস বাংলাদেশ লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করে। তারপর ২০১৩ সালে গ্রামীণ ইউনিক্লো প্রাথমিকভাবে রাজধানী ঢাকায় একটি বিক্রয়কেন্দ্র চালু করে। পর্যায়ক্রমে বিক্রয়কেন্দ্র বাড়ানো হয়।

গ্রামীণ ইউনিক্লোর বাংলাদেশে ব্যবসা গোটানোর প্রক্রিয়াটি চলতি বছরের শুরুর দিকে দৃশ্যমান হয়। প্রতিষ্ঠানটিগত ফেব্রুয়ারিতে নয়াপল্টন, সাভার সিটি সেন্টার, খিলগাঁও তালতলা ও নিউ এলিফ্যান্ট রোডে থাকা বিক্রয়কেন্দ্র এক সঙ্গে বন্ধ করে দেয়।

পরে বন্ধ হয় যমুনা ফিউচার পার্ক, গুলশান-বাড্ডা লিংক রোড, নারায়ণগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সড়ক, সায়েন্স ল্যাব, নরসিংদী, পুরান ঢাকার ওয়ারী, মোহাম্মদপুর রিং রোড, মেট্রো শপিং মল, যাত্রাবাড়ী এবং মিরপুর-১২ এলাকার বিক্রয়কেন্দ্র।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Did not budget on IMF advice Finance Minister

আইএমএফের পরামর্শে বাজেট করিনি: অর্থমন্ত্রী

আইএমএফের পরামর্শে বাজেট করিনি: অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ফাইল ছবি
এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাকে স্পষ্টভাবে বলতে পারি, তাদের পরামর্শ মোতাবেক আমরা আমাদের বাজেট করি নাই।’

বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়ন করা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার আগামী অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনের পর শুক্রবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখন পৃথিবীতে সবাই সবার সঙ্গে সম্পৃক্ত। একে অপরের সাথে অ্যালাইনড। কেউ আলাদাভাবে বসবাস করার কোনো সুযোগ-সুবিধা নাই। আপনি যদি আমদানি করেন, তাহলেও কাউকে লাগবে, রপ্তানি করলেও কাউকে লাগবে।

‘আর আপনার এখন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ হচ্ছে। অন্য দেশ থেকে বলে দেয়া হচ্ছে কোন দেশে থেকে সেই জিনিসটি পাওয়া যাবে এবং আমরা সেটা পেতে পারি। সেখানে আমাদের যে সাবলীলভাবে যে সাধ বা সাধ্য, এগুলো একসাথে এখন পরিচালনা করা সম্ভব নয়। মাঝেমধ্যে এ ধরনের অবস্থার সৃষ্টি হলে সেটাও ফ্লেক্সিবল ওয়েতে আমরা একটা সমাধান খুঁজে বের করি।’

আইএমএফ নিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আইএমএফ আমাদেরকে কখনও কখনও এসে দেখে। শুধু আমরা না, আইএমএফের সাথে যারা সম্পৃক্ত, সবাইকেই দেখে। ব্যালেন্স শিট ঠিক আছে কি না, রেভিনিউ অ্যাকাউন্ট ঠিক আছে কি না, ইনকাম-এক্সপেনডিচার ঠিক আছে কি না..এগুলোতে দেখে। এই দেখাটা ভালো। আইএমএফের সাথে যারা কাজ করে, আমি মনে করি যে, এটা একটা ভালো দিক। ভালো দিক এই জন্য বলব যে, তারা শুধুমাত্র অর্থ দিয়ে…অর্থ দেয়া মানে লোন দেয়া; লোন দিয়েই সাহায্য করে না, পাশাপাশি কিছু প্রজেক্টও সাজেস্ট করে।

‘প্রজেক্টগুলা কীভাবে ডেলিভার করা যাবে, সুন্দরভাবে ডেলিভার করা যাবে কম সময়ে, এফিশিয়েন্টলি ডেলিভার করা যাবে, এগুলো তারা প্রেসক্রাইব করে। এগুলা থেকে আমি মনে করি যে, আমাদেরও শেখার অনেক কিছু থাকে এবং অনেক সময় আমরা সফল হই তাদের পরামর্শ অনুযায়ী। আমি আপনাকে স্পষ্টভাবে বলতে পারি, তাদের পরামর্শ মোতাবেক আমরা আমাদের বাজেট করি নাই।’

সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যকে সামনে রেখে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার বিকেলে টানা পঞ্চমবারের মতো বাজেট পেশ করেন তিনি। এটি দেশের ইতিহাসে ৫২তম ও আওয়ামী লীগ সরকারের পাঁচ মেয়াদের ২৪তম বাজেট।

আরও পড়ুন:
ছাগল উৎপাদনে চতুর্থ বাংলাদেশ
প্রস্তাবিত বাজেটে উপেক্ষিত প্রবাসীরা
বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল আওয়ামী লীগের
প্রস্তাবিত বাজেটে মানুষের কষ্ট লাঘব হবে: ওবায়দুল কাদের
বাইসাইকেলের চাকা ঘোরাতে বাড়ছে খরচ

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Tough times budget not taking chances on austerity CPD

কঠিন সময়ের বাজেটে কঠিন ব্যবস্থার সুযোগ নেয়া হয়নি: সিপিডি

কঠিন সময়ের বাজেটে কঠিন ব্যবস্থার সুযোগ নেয়া হয়নি: সিপিডি জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার উত্থাপন করা আগামী অর্থবছরের বাজেট নিয়ে শুক্রবার পর্যালোচনা তুলে ধরেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। ছবি: সংগৃহীত
ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘আমরা যদি দেখি যে, জিডিপির এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেই ধরনের প্রক্ষেপণ এখানে করা হয়েছে, সেখানে আমরা গত অর্থবছরে এবং তার আগের অর্থবছরের সাথে এই অর্থবছরের তুলনা করেছি। সেখানে যে অনুমিতিগুলো করা হয়েছে, সেগুলোর ব্যাপারেও আমাদের বক্তব্য হচ্ছে যে, এই অনুমিতিগুলো অনেকগুলো অর্থনীতির যে সূচকগুলো, সেই সূচকগুলোর যে প্রবৃদ্ধি এবং প্রক্ষেপণ করা হয়েছে, সেই অনুমিতিগুলোর কিন্তু বাস্তবতার সঙ্গে তেমন মিল নেই।’

কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে মন্তব্য করে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বলেছে, বাস্তবতা অনুযায়ী কঠিন ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ নেয়নি সরকার।

জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার উত্থাপন করা আগামী অর্থবছরের বাজেট নিয়ে শুক্রবার পর্যালোচনায় এ কথা বলেছেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে আয়োজিত এ পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘গত ২৭ মে আমরা বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি পর্যালোচনা তুলে ধরেছিলাম। সেখানেও আমরা বলেছিলাম যে, ২০২৩-২৪ অর্থবছর একটি চ্যালেঞ্জিং অর্থবছর এবং এই চ্যালেঞ্জিং অর্থবছরের সময়েই কিন্তু ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটটি উপস্থাপন করা হচ্ছে। ২০২২-২৩ চলমান অর্থবছরটি খুবই চ্যালেঞ্জিং এবং এই অর্থবছরে আমরা দেখছি যে, বাংলাদেশের অর্থনীতির যে সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা সেটা কিন্তু ক্রমান্বয়ে এবং ব্যাপকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং এই দুর্বলতার কারণ একদিকে যেমন বৈশ্বিক কারণ, অন্যদিকে কিন্তু অভ্যন্তরীণ কারণও রয়েছে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন এমন একটি সময় দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে যে, ২০২৬ সালে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হব এবং আমাদের সামনে রয়েছে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করার যে মাইলস্টোন ২০৩০ সালে, সেটি এবং আমাদের আরও একটি বৈশিষ্ট্য এই সময়ে দেখা যাচ্ছে যে, আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এবং অর্থনীতিতে, বিশেষ করে বহিঃখাতে সহায়তার জন্য আমরা কিন্তু আইএমএফ-আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের একটি লোন (ঋণ) নিয়েছি ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।

‘সেই প্রোগ্রামের অধীনেও আমাদের রয়েছে এবং এই অর্থবছরে যে বাজেটটি দেয়া হলো, এই বাজেটটি বর্তমান সরকারের বর্তমান মেয়াদের শেষ বাজেট। এ সমস্ত বিবেচনায় এই বাজেটটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই বাজেটে অনেক প্রত্যাশাও ছিল।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ ছিল, সেটি আমি একটু পরেই দেখাচ্ছি, কিন্তু আমাদের কাছে মনে হয়েছে, এই কঠিন সময়ে আসলে কঠিন কিছু ব্যবস্থা নেয়ার যেটা সুযোগ ছিল, সেটি কিন্তু নেয়া হয়নি।’

‘সামষ্টিক অর্থনীতির বিভিন্ন চাপ’

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘যদি আমরা সামষ্টিক অর্থনীতির দিকে তাকাই, এখানে যে ১৫টি অর্থনীতির বিভিন্ন চাপ যেটি রয়েছে, সেটি আমরা উল্লেখ করছি। আপনারা সেগুলো জানেন। একটি হচ্ছে যে রাজস্ব আহরণ কমে যাচ্ছে এবং এই বছরে কম হচ্ছে। ঘাটতি হয়েছে এবং সরকারি ব্যয়, সেটাও একটা জায়গায় স্থবির হয়ে আছে। জাতীয় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন কম হয়েছে সেটা এবং তা ছাড়া তার পাশাপাশি আমরা দেখছি যে, ব্যাংক খাত থেকেও ঋণ নেয়া হচ্ছে এবং বিশেষ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া হয়েছে এবং তার পাশাপাশি যেটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, মানুষের জীবনে আঘাত করছে, সেটি হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য আকাশচুম্বী হয়ে গেছে এবং তার পাশাপাশি ব্যাংকিং খাতে যে ঋণখেলাপির পরিমাণ, সেটিও কিন্তু ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।

‘এ ছাড়া ব্যাংকিং খাতে এক ধরনের তারল্যের ওপরে চাপ পড়েছে এবং যদি বহিঃখাতের দিকে তাকাই, রপ্তানি প্রবৃদ্ধির হার নিম্নমুখী। রেমিট্যান্স প্রবাহের হার নিম্নে। এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার যে রিজার্ভ, সেখানে এক ধরনের বৈদেশিক মুদ্রার একটা স্ক্যারসিটি অর্থাৎ অভাব কিছুটা দেখা দিচ্ছে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কিন্তু ক্রমান্বয়ে নিম্নমুখী হচ্ছে। তার পাশাপাশি আমরা এটার ফলাফলটা দেখতে পাচ্ছি যে, আমদানি করার ক্ষেত্রে যতটুকু করার কথা, সেটা করা যাচ্ছে না। বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খাতে ব্যাপক একটা ঘাটতি দেখা যাচ্ছে, যার ফলে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং তার পাশাপাশি আমরা দেখছি যে, টাকা এবং ডলারের যে বিনিময় হার, সেইখানে কিন্তু একটা অবনমন হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে এতগুলি চাপের মুখে কিন্তু সামগ্রিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ভঙ্গুর হয়ে গিয়েছে।’

জিডিপি ও বিনিয়োগের প্রক্ষেপণ নিয়ে সিপিডির ভাষ্য

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘আমরা যদি দেখি যে, জিডিপির এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেই ধরনের প্রক্ষেপণ এখানে করা হয়েছে, সেখানে আমরা গত অর্থবছরে এবং তার আগের অর্থবছরের সাথে এই অর্থবছরের তুলনা করেছি। সেখানে যে অনুমিতিগুলো করা হয়েছে, সেগুলোর ব্যাপারেও আমাদের বক্তব্য হচ্ছে যে, এই অনুমিতিগুলো অনেকগুলো অর্থনীতির যে সূচকগুলো, সেই সূচকগুলোর যে প্রবৃদ্ধি এবং প্রক্ষেপণ করা হয়েছে, সেই অনুমিতিগুলোর কিন্তু বাস্তবতার সঙ্গে তেমন মিল নেই।

‘আমরা দেখছি যে, বার্ষিক উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি অর্থাৎ জিডিপি প্রবৃদ্ধি; সাত দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে এবং মনে করা হচ্ছে যে, গত অর্থবছরেও সেটা সাত দশমিক ৫ শতাংশ ধরা হয়েছিল। পরবর্তীতে এটাকে নামিয়ে ৬ শতাংশ করা হয়েছে এবং মনে করা হচ্ছে যে, এই আগামী ২০২৪ অর্থবছরে ঘুরে দাঁড়িয়ে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি সাড়ে সাত শতাংশ হবে এবং আমরা যদি বিনিয়োগ, সরকারি বিনিয়োগ এবং জিডিপির রেশিও দেখি, হার দেখি, সেখানে ছয় দশমিক ৩ শতাংশ, সেটা ধরা হয়েছে।

‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে যে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ। এখানে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ জিডিপির অংশ হিসেবে ২৭ দশমিক ৪ শতাংশ ২০২৪ সালে ধরা হয়েছে, কিন্তু আসলে ২০২৩ সালে আমরা দেখেছি, সেটা কিন্তু যেটা ধরা হয়েছিল, তার চাইতে কম এ পর্যন্ত হয়েছে এবং সেটা ২১ দশমিক ৮ শতাংশ। এখান থেকে কীভাবে এতটা জাম্প দিয়ে ২৭ দশমিক ৪ শতাংশ হবে, এটি একটি আমাদের কাছে উচ্চাকাঙ্ক্ষা মনে হয় যে, এই যে ঘুরে দাঁড়ানোর এবং ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এক বছরের মধ্যে এতখানি উল্লম্ফন হবে, সেটা অনেকটাই একটা বিরাট আকাঙ্ক্ষা বলা যায়।’

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার পর জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন করেন।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে যে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে, তা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:
প্রস্তাবিত বাজেটে উপেক্ষিত প্রবাসীরা
বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল আওয়ামী লীগের
প্রস্তাবিত বাজেটে মানুষের কষ্ট লাঘব হবে: ওবায়দুল কাদের
বাইসাইকেলের চাকা ঘোরাতে বাড়ছে খরচ
নির্বাচন কমিশনের জন্য বরাদ্দ বাড়ছে ৭০ শতাংশ

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Actions proposed in the budget are impractical CPD

বাজেটে প্রস্তাবিত পদক্ষেপ বাস্তববর্জিত: সিপিডি

বাজেটে প্রস্তাবিত পদক্ষেপ বাস্তববর্জিত: সিপিডি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট-পরবর্তী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। ছবি: সংগৃহীত
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে না। এটি কমানোর জন্য যে আর্থিক পদক্ষেপগুলো নেয়া দরকার, বাজেটে তা নেই।’

চলমান অর্থনীতির সংকটগুলো মোকাবিলার ক্ষেত্রে বাজেটে ঘোষিত পদক্ষেপগুলো বাস্তববর্জিত বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। তিনি বলেছেন, সংকট মোকাবিলায় ঘোষিত বাজেটে স্বীকৃতি ও সমাধান দুটোই অপ্রতুল।

বৃহস্পতিবার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট-পরবর্তী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘প্রথম বিষয়টি হচ্ছে চলমান অর্থনৈতিক সংকট এবং সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচকগুলো ঘোষণা করা হলো সেই সূচকগুলো যেভাবে প্রাক্কলন করা হয়েছে আমাদের কাছে মনে হয়েছে তা বাস্তববর্জিত এবং অর্জন করা সম্ভব নয়। দ্বিতীয়ত, মূল্যস্ফীতির চাপ বা এর লাগাম টানার জন্য যে সমাধান দেয়া হয়েছে এগুলোও সম্ভব নয়।

‘মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে না। এটি কমানোর জন্য যে আর্থিক পদক্ষেপগুলো নেয়া দরকার, বাজেটে তা নেই।’

তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতির নিয়ন্ত্রণের জন্য যে আর্থিক পদক্ষেপগুলো- যেমন: আমদানি করা নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু কিছু পণ্যের ওপর কর থাকে, সেখানে যদি কর রেয়াত দেয়া যায় তাহলে কিছুটা স্বস্তি পেতাম। কিন্তু সেখানে আমরা তেমন কোনো পদক্ষেপ দেখিনি।’

সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘২০২৩-২৪ সালের বাজেট এমন সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে যখন অর্থনীতির মূল সূচকগুলো ভেঙে গিয়েছে। অর্থনীতির স্থিতিশীলতা এখন আর নেই। এখানে নানামূখী চাপ রয়েছে। বহির্খাতের চাপ রয়েছে; রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্স যেভাবে আসার কথা ছিল সেভাবে আসছে না। অভ্যন্তরীণ সম্পদ সঞ্চালন কিংবা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না।

‘সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল মূল্যস্ফীতির চাপ, সেটিও রয়ে গেছে। পুরো অর্থবছর জুড়েই মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমূখী ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানোর কথা বলেছিলাম। সেটি বাড়ানো হয়েছে। এটি খুবই ভালো।

‘তবে আমরা দেখছি সরকারি ৩৮টি সেবা পেতে রিটার্ন সাবমিট করতে হবে এবং আয় যেটাই হোক, রিটার্ন সার্টিফিকেট পেতে ২ হাজার টাকা দিতে হবে। সেটি আমাদের কাছে অবিবেচনাপ্রসুত মনে হয়েছে। সরকারি বিভিন্ন সেবা পেতে যে ২ হাজার টাকা ন্যূনতম কর নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটি তুলে দেয়া উচিত।’

সংস্কারের কথা তুলে ধরে ফাহমিদা খাতুন বলেন, বাজেটে আমরা যেসব সংস্কার প্রস্তাব করেছিলাম, সেগুলোর কোনো প্রতিফলন নেই। এই বাজেটটি এমন একটি সময়ে প্রণয়ন করা হয়েছে যখন আন্তর্জাতিক দুটি সংস্থার বিভিন্ন শর্ত রয়েছে, যেহেতু তারা ঋণ দেবে।

‘বাজেট ডকুমেন্টে তিনবার আইএমএফ-এর কথা বলা হয়েছে। পরিষ্কারভাবে আইএমএফ-এর শর্তের কথা বলা না হলেও সেই শর্ত পালনের ইঙ্গিত রয়েছে বাজেটে। সবমিলিয়ে চলমান অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবিলার ক্ষেত্রে ঘোষিত বাজেটে স্বীকৃতি ও সমাধান দুটিই অপ্রতুল।’

আরও পড়ুন:
নির্বাচনী সুবিধা নেয়ার বাজেট: জাপা
প্রস্তাবিত বাজেটে উপেক্ষিত প্রবাসীরা
প্রস্তাবিত বাজেটে মানুষের কষ্ট লাঘব হবে: ওবায়দুল কাদের

মন্তব্য

p
উপরে