দুই দিন পতন শেষে সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবসে পুঁজিবাজারে সূচক বাড়লেও বাজারে হতাশার চিত্র পাল্টায়নি এতটুকু।
এদিন হাতবদল হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর কমেছে কেবল ছয়টির, বেড়েছে ৭৮টির। সূচক বেড়েছে ৩৯ পয়েন্ট। তারপরও বিনিয়োগকারীরে মধ্যে স্বস্তি ফেরার কোনো আভাসই নেই।
আগের দিনের তুলনায় কিছুটা বাড়লেও ফেরেনি লেনদেনের গতি বা ভারসাম্য। ৩৯০টি কোম্পানির মধ্যে ১১টির লেনদেন স্থগিত ছিল লভ্যাংশ-সংক্রান্ত রেকর্ড ডেটের কারণে। বাকি কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রায় তিন শটির কার্যত ক্রেতা ছিল না।
কোনো শেয়ার হাতবদল হয়নি, এমন কোম্পানি ছিল অবশ্য ৬৬টি। তবে ফ্লোর প্রাইসে হাতবদল হওয়া ২২৯টির লেনদেন ছিল একেবারেই নগণ্য। এতগুলো কোম্পানি মিলিয়ে লেনদেন হয়েছে কেবল ১৪ কোটি ৫ লাখ ৬৭ হাজার টাকা।
এর মধ্যে আবার বেক্সিমকো লিমিটেড, এডভেন্ট ফার্মা, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, রহিমা ফুড, শমরিতা হাসপাতাল, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, বিএসআরএম স্টিল, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, আইএফআইসি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, জেএমআই সিরিঞ্জ, খান ব্রাদার্স, এক্সিম ব্যাংক, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক- এই ১৫টি কোম্পানিতে লেনদন হয়েছে ১১ কোটি ৫৬ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। অর্থাৎ বাকি ২১৪টি কোম্পানি মিলিয়ে লেনদেন হয়েছে ২ কোটি ৪৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা।
লাখ লাখ শেয়ার বসানো থাকলেও ক্রেতার ঘর দিনভর ছিল ফাঁকা। এর মধ্যে আগে থেকে না বসিয়ে ফ্লোর প্রাইসে কিছু কিছু শেয়ার কিনেছেন কেউ কেউ।
এই কিছু শেয়ার যে হাতবদল হয়েছে, তা কেমন ছিল?
১৫টি কোম্পানির কেবল একটি করে, আরও ১৮টি কোম্পানির ২ থেকে ১০টি, ৯টি কোম্পানির ১১টি থেকে ২০টি, ৯টি কোম্পানির ২১ থেকে ৫০টি, ২০টি কোম্পানির ৫১ থেকে ১০০টি, ৩৮টি কোম্পানির ১০১ থেকে ৫০০টি, ২৪টি কোম্পানির ৫০১ থেকে ১ হাজারটি, ৫১টি কোম্পানির ১০০১ থেকে ৫ হাজারটি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
এক কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে কেবল ৬৬টি কোম্পানির। এক লাখ টাকার কম লেনদেন হয়েছে ১৫৪টি কোম্পানিতে।
সব মিলিয়ে এদিন লেনদেন হয়েছে ৪২৮ কোটি ৬৮ লাখ ২১ হাজার টাকার, আগের দিন যা ছিল ৩৫১ কোটি ৯০ লাখ ২৩ হাজার টাকা।
কিছুদিন আগেও এক ঘণ্টাতেই এই পরিমাণ লেনদেন হতো।
এদিন যে পরিমাণ লেনদেন হয়েছে তার ৭৬ শতাংশ, অর্থাৎ ৩২৬ কোটি ৮২ লাখ ২ হাজার টাকা হাতবদল হয়েছে দর বৃদ্ধি পাওয়া ৭৮ কোম্পানিতেই।
এমনকি দর হারানো ৬ কোম্পানির লেনদেনই ফ্লোরে থাকা ২২৯টির চেয়ে বেশি। এসব কোম্পানিতে হাতবদল হয়েছে ১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কয়েক দিনের পতনের পরে আজকে কিছুটা উত্থানই স্বাভাবিক। লেনদেন তলানিতে থাকার কারণ হলো ফ্লোর প্রাইস। বিপুল সংখ্যক শেয়ার ফ্লোরে আটকে আছে। সেগুলোর লেনদেন করা যাচ্ছে না বলেই লেনদেন হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘আগেই বলেছিলাম, ফ্লোর প্রাইস শাখের করাত হয়ে দাঁড়াবে। এ কারণে যেমন বাজারের স্বাভাবিক গতি নষ্ট হয়েছে, তেমনি এখন তুলে দিলেও ধপাধপ পড়তে থাকবে।
‘আমি মনে করি, এই মুহূর্তে ফ্লোর প্রাইস তোলা যাবে না। তবে বাজার স্বাভাবিক হলেই ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দিতে হবে। এতে সাময়িকভাবে কিছুটা পড়লেও আবার ঠিক হয়ে যাবে।’
মৌলভিত্তির কোম্পানিরও করুণ চিত্র
বেলা ২টা ২০ মিনিটের দিকে বহুজাতির কোম্পানি গ্রামীণফোনের শেয়ারের একজনও ক্রেতা ছিল না। সে সময় ফ্লোর প্রাইসে বিক্রেতা ছিল ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬২৪ জন।
একই সময় স্কয়ার টেক্সটাইলের ৪ লাখ ২৬ হাজার ৭০১১টি শেয়ার সর্বনিম্ন দরে বসিয়েও ক্রেতা পাচ্ছিলেন না কেউ।
বছরের পর বছর ধরে আকর্ষণীয় লভ্যাংশ দিয়ে আসা ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ক্ষেত্রেও একই চিত্র। ক্রেতা ছিল না একজনও। ফ্লোর প্রাইসে বসিয়ে রাখা ছিল ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৯০২টি শেয়ার।
ওষুধ খাতের শক্তিশালী কোম্পানি রেনাটার ৭০ হাজার ৫৩৯টি শেয়ার বসানো ছিল, কিন্তু ক্রেতার ঘর ছিল শূন্য।
কিছুদিন আগেও দিনে দুই শ বা আড়াই শ কোটি টাকা লেনদেন হওয়া বেক্সিমকো লিমিটেডের চিত্রও একই রকম করুণ। বেলা ২টা ২০ মিনিটে এই কোম্পানিটির ৫৩ লাখ ৮৫ হাজার ৬০১টি শেয়ার বসানো ছিল, কিন্তু ক্রেতার ঘর ছিল ফাঁকা।
আর্থিক খাতের শক্তিশালী কোম্পানি ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিংয়ের ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯০৩টি, আইডিএলসির ১০ লাখ ৯৪ হাজার ৩১২টি, মাস কয়েক আগেও তরতর করে দাম বাড়তে থাকা আইপিডিসির ১২ লাখ ৩৭ হাজার ৩৫৩টি, ব্যাংক খাতে শক্তিশালী কোম্পানি ব্র্যাকের ৯৯ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫টি শেয়ার বসানো ছিল, ক্রেতার অভাবে যেগুলোর বিক্রেতার ঘর ছিল ফাঁকা।
এমনকি তালিকাভুক্তির পর সপ্তম দিবসেই ক্রেতাশূন্য ছিল গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের। বেলা ২টা ২১ মিনিটে অভিহিত মূল্যের ১০ শতাংশ কমে বসানো ছিল ৭৭ লাখ ২৭ হাজার ২১৯টি শেয়ার। অর্থবছর শেষ হতে চলেছে, এর মধ্যেও আইপিওর শেয়ার হওয়ার কথা ছিল আকর্ষণীয়। কিন্তু ১০ শতাংশ লোকসান দিয়ে তা ছেড়ে দিতে চাইছেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু ক্রেতার অভাবে সম্ভব হচ্ছে না।
এসব কোম্পানির লেনদেন একেবারে হয়নি এমনকি নয়, তবে পরিমাণ ছিল নগণ্য। এদিন ক্রেতা ছিল না মোট ৭৮টি কোম্পানির শেয়ারে। বাকি যেসব কোম্পানির শেয়ার হাতবদল হয়েছে, তার মধ্যে ২২০টির লেনদেন ছিল একেবারেই তলানিতে। এসব কোম্পানির মধ্যে আছে মৌলভিত্তির অসংখ্য লাভজনক উদ্যোগ, যেগুলো বছরের পর বছর ধরে বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণীয় লভ্যাংশ দিয়ে আসছে এবং বিশ্ব সংকটের মধ্যেও যাদের ব্যবসা চলমান।
গত আগস্ট থেকেই পুঁজিবাজারের লেনদেন অল্প কয়েকটি কোম্পানিতেই সীমাবদ্ধ হয়ে রয়েছে। দিন যত যাচ্ছে, লেনদেন ভালো হচ্ছে এমন কোম্পানির সংখ্যাও কমছে।
দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০
গত কয়েকদিন ধরে টানা দরপতন হতে থাকা বেশি কিছু কোম্পানির দর এদিন দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়েছে।
তবে এই তালিকার শীর্ষে ছিল নতুন তালিকাভুক্ত চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স। প্রতি দিনই প্রায় ১০ শতাংশ বাড়তে বাড়তে ১০ টাকার অভিহিত মূল্যের শেয়ারের দর দাঁড়িয়েছে ৫৪ টাকা ২০ পয়সায়, যা আগের দিন ছিল ৪৯ টাকা ৩০ পয়সা।
এরপরেই ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বেড়ে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৫ টাকায়, যা আগের দিন ছিল ৭৭ টাকা ৬০ পয়সা।
তালিকার তৃতীয় স্থানে ছিল বিডি কম। ৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ দর বেড়ে শেয়ারটি হাতবদল হয়েছে ৩৬ টাকা ৭০ পয়সায়। আগের দিনের দর ছিল ৩৩ টাকা ৪০ পয়সা।
৯ শতাংশের বেশি বেড়েছে ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন, পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও নাভানা ফার্মার দর, যেগুলো আগের কয়েকদিন ধরে ক্রমাগত দরপতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল।
বিডি থাই ফুড, অ্যাপেক্স ফুডস ও জুট স্পিনার্সের দর বেড়েছে ৮ শতাংশের বেশি। দশম স্থানে থাকা ওরিয়ন ফার্মার দর বেড়েছে ৭.৭২ শতাংশ, যে কোম্পানির দর ১৫৬ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৮৪ টাকা ১০ পয়সায় নেমে এসেছিল সোমবার।
ফ্লোর প্রাইসে অস্বাভাবিক উত্থানে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৭৯ টাকা থেকে দ্বিগুণ হতে সময় লেগেছিল কেবল দেড় মাস।
আরও ৩টি কোম্পানির দর ৭ শতাংশের বেশি, ৬টি কোম্পানির দর ৬ শতাংশের বেশি, ১১টির দর ৫ শতাংশের বেশি, ৮টির দর ৪ শতাংশের বেশি, ১০টির দর ৩ শতাংশের বেশি, ৮টির দর ২ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
দরপতন যেমন
যে ৬টি কোম্পানির দরপতন হয়েছে, তার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে আলহাজ্ব টেক্সটাইল। ২ দশমিক ২১ শতাংশ কমে শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ১৩২ টাকা ৩০ পয়সায়, আগের দিনে দর ছিল ১৩৫ টাকা ৩০ পয়সা।
সোনালী আঁশের দর ১ দশমিক ২৯ শতাংশ কমে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬৮১ টাকায়, আগের দিন ক্লোজিং প্রাইস ছিল ৬৮৯ টাকা ৯০ পয়সা।
বাজা সুজের দর কমেছে ১ দশমিক ২৩ শতাংশ। শেয়ার হাতবদল হয়েছে ৯২৯ টাকায়। আগের দিনের দর ছিল ৯৪০ টাকা।
ওরিয়ন ইনফিউশনের দর ১.১০ শতাংশ কমে ৭৬১ টাকা ৬০ পয়সা, প্রিমিয়ার ব্যাংকের দর শূন্য দশমিক ৭৬ শতাংশ কমে ১২ টাকা ৯০ পয়সা ও মেট্রো পেট্রোলিয়ামের দর শূন্য দশমিক ৪৯ শতাংশ কমে ২০০ টাকা ১০ পয়সায় হাতবদল হয়েছে।
সূচকে প্রভাব যাদের
সবচেয়ে বেশি ৬ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে বিকন ফার্মা। এদিন শেয়ারটির দর বেড়েছে ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ।
সোনালী পেপারের দর ৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৩ দশমিক ১৬ পয়েন্ট।
ওরিয়ন ফার্মা সূচকে যোগ করেছে ২ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৭ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
এর বাইরে সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে সি-পার্ল, নাভানা ফার্মা, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, ইস্টার্ন হাউজিং, জেনেক্স ইনফোসিস ও জেএমআই হসপিটাল।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ২২ দশমিক ৭১ পয়েন্ট।
বিপরীতে শূন্য দশমিক ৩৪ পয়েন্ট সূচক কমেছে ওরিয়ন ইনফিউশনের দরপতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে ১ দশমিক ১০ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শূন্য দশমিক ৩১ পয়েন্ট কমেছে বাটা সুজের কারণে। শেয়ার প্রতি দাম কমেছে ১ দশমিক ২৩ শতাংশ।
প্রিমিয়ার ব্যাংকের দর শূন্য দশমিক ৭৭ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে শূন্য দশমিক ২৩ পয়েন্ট।
এ ছাড়া মেঘনা পেট্রোলিয়াম, আলহাজ্ব টেক্সটাইল ও সোনালী আঁশের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ৬টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ১ দশমিক ২৭ পয়েন্ট।
আরও পড়ুন:তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
মন্তব্য