বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কার মধ্যে দেশের অর্থনীতি নিয়ে নানা গুজব-গুঞ্জনে ঘুমিয়ে থাকা পুঁজিবাজারে আরও একটি হতাশার লেনদেন দেখল বিনিয়োগকারীরা। ৩৯০টি কোম্পানির মধ্যে এক কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে কেবল ৬৩টি কোম্পানিতে।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসইতে ৭৭টি কোম্পানির একটি শেয়ারও হাতবদল হয়নি। ১২৪টি কোম্পানির এক থেকে এক হাজারটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
এদিন দর বেড়েছে ৪৭টি কোম্পানির, কমেছে ৪২টির। আর ফ্লোর প্রাইসে আগের দিনের দরে হাতবদল হয়ে ২২৪টি কোম্পানির শেয়ার। এই ২২৪ কোম্পানি মিলিয়ে লেনদেন হয়েছে কেবল ৩৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে নতুন তালিকাভুক্ত গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকেই হাতবদল হয়েছে ১৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। বাকি ২২৩ কোম্পানি মিলিয়ে কেবল ১৭ কোটি ৪২ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে।
ডিএসইসির সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স টানা দ্বিতীয় দিন বাড়লেও সপ্তাহের প্রথম তিন দিন যতটা কমেছে, গোটা সপ্তাহে কমেছে ৮৮ পয়েন্ট।
১২ পয়েন্ট সূচক বৃদ্ধির দিন বাজারের হঠাৎ করেই জীবনবিমার শেয়ার দরে লাফ দেখা গেছে। এই খাতের ১৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১১টির, কমেছে একটির। বাকি একটি আগের দিনের দরে লেনদেন হয়েছে।
দরবৃদ্ধির হারও ছিল আকর্ষণীয়। সবচেয়ে বেশি দরবৃদ্ধি পাওয়া ১০টি কোম্পানির মধ্যে ছয়টিই এই খাতের। এর মধ্যে শীর্ষে থাকা দুই কোম্পানি চার্টার্ড লাইফ ও পদ্মা লাইফের দর বেড়েছে সর্বোচ্চ সীমা ১০ শতাংশের কাছাকাছি।
এ ছাড়া সোনালী লাইফের ৭.৯৯ শতাংশ, পপুলার লাইফের ৬.০৯ শতাংশ, ফারইস্ট লাইফের ৫.৯৭ শতাংশ, রূপালী লাইফের শেয়ারের ৪.৫৯ শতাংশ দর বেড়েছে।
সাধারণ বিমা খাতেও আগ্রহ দেখা গেছে কিছুটা। এই খাতে চারটির দরপতনের বিপরীতে বেড়েছে ১৫টি কোম্পানির দর। বাকি ২৪টি আগের দিনের দরে ফ্লোর প্রাইসে লেনদেন হয়েছে।
এদিন এক শ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে কেবল তথ্যপ্রযুক্তি খাতে, যার মধ্যে সাম্প্রতিক ‘হার্টথ্রব’ জেনেক্স ইনফোসিসেই লেনদেন হয়েছে ৬৩ কোটি টাকা।
তবে এদিন ব্যাংক খাতের তৃতীয় স্থানে উঠে ৮২ কোটি টাকা লেনদেন হওয়াকে একটি বিশেষ প্রবণতা বলাই যায়। প্রতি বছর দারুণ লভ্যাংশ দিয়ে আসা কোম্পানিগুলো অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও ব্যবসা খুব একটা খারাপ করেনি, সেটি তাদের প্রান্তিক প্রতিবেদনেই স্পষ্ট। তারপরেও এই খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ নেই বললেই চলে।
বুধবার পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরুর পরপরই গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারদর ১০ শতাংশ পড়ে যাওয়ার মতো ‘বিস্ময়কর’ উদাহরণও তৈরি হয়েছে পুঁজিবাজারে।
এর ভিড়ে হঠাৎ করেই এই খাতের বেশ কিছু কোম্পানির উল্লেখযোগসংখ্যক শেয়ার হাতবদল হয়েছে, যার মধ্যে শীর্ষে ছিল নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি। এ ছাড়া আইএফআইসি, ওয়ান, প্রিমিয়ারসহ কয়েকটি ব্যাংকের বেশ কিছু শেয়ার হাতবদল হয়েছে। তবে যত শেয়ারের বিক্রেতা ছিল, তত ক্রেতা ছিল না কোনোটিরই।
তবে আগ্রহ বাড়লেও কেবল ৫টি কোম্পানির দর বেড়েছে। দুটির দরপতন হয়েছে। আর আগের দিনের দরে হাতবদল হয়েছে ৩০টি, যেগুলো ফ্লোর প্রাইসে রয়েছে।
ডিএসইর লেনদেন এদিন আগের দিনের তুলনায় খুব বেশি বেড়েছে তেমন নয়। হাতবদল হয়েছে ৫৫২ কোটি ১৩ লাখ ৭২ হাজার টাকা, যা আগের দিন ছিল ৪৬৮ কোটি ৫১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।
সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৮৩ কোটি ৬২ লাখ ১৬ হাজার টাকা।
লম্বা সময় ধরে প্রথম স্থানটা দখলে রেখেছে প্রযুক্তি খাত। ৫টি বা ৬২ দশমিক ৫০ শতাংশ কোম্পানির দরবৃদ্ধির সঙ্গে হাতবদল হয়েছে ১০৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, যা লেনদেনের ১৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ। বিপরীতে ২টি কোম্পানির দরপতন ও একটির লেনদেন হয়েছে আগের দরে।
৯৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা বা ১৬ দশমিক ৪০ শতাংশ লেনদেন করে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতে ফ্লোর প্রাইসে লেনদেনের সংখ্যা বেশি ছিল।
৪টি কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে ১৫টির লেনদেন হয়েছে আগের দরে, যার প্রায় সবগুলোই ফ্লোর প্রাইসে গড়াগড়ি খাচ্ছে। ৩টির দরপতন হয়েছে।
চতুর্থ সর্বোচ্চ ৪৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা হাতবদল হয়েছে জীবনবিমা খাতে।
৪২ কোটি ৪০ লাখ টাকা লেনদেন করে পঞ্চম অবস্থানে থাকলেও কাগজ ও মুদ্রণ খাতে কোনো কোম্পানির শেয়ারের দরবৃদ্ধি হয়নি। দুটির আগের দরে ও তিনটির দরপতনে লেনদেন শেষ হয়েছে।
সাধারণ বিমা খাতে হাতবদল হয়েছে ২৬ কোটি ৯ লাখ টাকার, যা আগের দিন ছিল ১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
লেনদেনের বিষয়ে ক্যাল সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রাজেশ সাহা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আর্থিক সংকটের মধ্যে মানুষ বেশ কিছু খাতে নিরাপদ বোধ করছে না। যেমন- উল্লেখযোগ্যহারে বস্ত্র, জ্বালানি ইত্যাদি, সেটা সঙ্গত কারণেই। আর ট্রেড ভলিউম কমছে, কারণ মানুষ লসে আছে। আর যে ভলিউম হচ্ছে সেটার বড় অংশ থাকছে ফোর্স সেল, যা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বেশি এক্সিকিউট করছে।
‘বাজারে পজিটিভ মুভ থাকলে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করতে চান না। কারণ তারা লসে রয়েছেন। ফলে তারা চান যতটা সম্ভব লস রিকাভার করতে। এসব কারণে ভলিউম কমে যায়।’
তিনি বলেন, ‘জীবন বিমা বা সাধারণ বিমায় বিগত সময়ে ব্যাপক কারেকশন হয়েছে। অনেকের বিনিয়োগ আটকে আছে এবং সেগুলোতে খুব বেশি মুভ দেখা যায় না। যখন শর্টটাইমে কিছু মুভমেন্ট হলে মানুষ তখন একটু চেষ্টা করে পুষিয়ে নেয়ার। এ জন্যই কিছুটা চাঙাভাব দেখা গেছে।
‘ব্যাংকের শেয়ারে এখন কিছুটা আগ্রহের কারণ হতে পারে বছর শেষের দিকে আসছে। ব্যাংকের বেশিরভাগ শেয়ার রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে। ফলে তারা কিছুটা অ্যাপিটাইট ক্রিয়েট করে কিছু মুনাফা করার চেষ্টা করে থাকতে পারেন।’
সূচকে প্রভাব যাদের
সবচেয়ে বেশি ১২ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ। এদিন শেয়ারটির দর বেড়েছে ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ।
বেক্সিমকো ফার্মার দর ২ দশমিক ৮৭ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৮ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট।
অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ সূচকে যোগ করেছে ৩ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৩ দশমিক ২২ শতাংশ।
এর বাইরে সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে স্কয়ার ফার্মা, ই-জেনারেশন, ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এডিএন টেলিকম, পূবালী ব্যাংক, বেক্সিমকো গ্রীণ সুকুক বন্ড ও ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ৩৪ দশমিক ৭১ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ১২ দশমিক ১৯ পয়েন্ট সূচক কমেছে আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের দরপতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে ৩৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ। যদিও এই কোম্পানিটির দর আসলে সমন্বয় হয়েছে। কোম্পানিটি ৮০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়ার প্রস্তাব করেছে, যেটির রেকর্ড ডেট ছিল বুধবার। এই বোনাস শেয়ার সমন্বয়ের পর কোম্পানিটির দর আসলে বেড়েছে।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪ দশমিক ৮১ পয়েন্ট কমেছে ওরিয়ন ফার্মার কারণে। শেয়ার প্রতি দাম কমেছে ৪ দশমিক ৪০ শতাংশ।
ইস্টার্ন হাউজিংয়ের দর ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ২ দশমিক ৫০ পয়েন্ট।
এ ছাড়া ইউনিক হোটেল, কোহিনূর কেমিক্যালস, বসুন্ধরা পেপার, জেএমআই হসপিটাল, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, কেডিএস অ্যাক্সেসরিজ ও লুবরেফ বাংলাদেশের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৩২ দশমিক ২৪ পয়েন্ট।
দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০
সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ দর বেড়ে চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪০ টাকা ৯০ পয়সায়। আগের দিনে লেনদেন হয় ৩৭ টাকা ২০ পয়সায়।
৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ বেড়ে পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫৭ টাকা ৪০ পয়সায়, যা আগের দিন ছিল ৫২ টাকা ৫০ পয়সায়।
তালিকার তৃতীয় স্থানে ছিল সোনালী আঁশ। ৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ দর বেড়ে শেয়ারটি হাতবদল হয়েছে ৮০৬ টাকা ২০ পয়সায়। আগের দিনের দর ছিল ৭৪২ টাকায়।
এ ছাড়া দরবৃদ্ধির দশে ছিল- সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ই-জেনারেশন, আমরা টেকনোলজিস, পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও এডিএন টেলিকম।
দরপতনের শীর্ষ ১০
সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ দর হারিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে ইস্টার্ন হাউজিং। ৯৩ টাকা ৩০ পয়সায় বেচাকেনা হয়েছে শেয়ারটি, গতকাল ছিল ৯৮ টাকা ৯০ পয়সা।
লুবরেফ বাংলাদেশের দর ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ কমে ৩৭ টাকা ৯০ পয়সায় প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের দিন দর ছিল ৪০ টাকা।
৪ দশমিক ৮১ শতাংশ দর কমে কেডিএস অ্যাক্সেসরিজের শেয়ার বেচাকেনা হয়েছে ৮৬ টাকা ৯০ পয়সায়। আগের দিনের দর ছিল ৯১ টাকা ৩০ পয়সায়।
এ ছাড়াও পতনের তালিকায় শীর্ষ দশের মধ্যে ছিল- ওরিয়ন ফার্মা, ইস্টার্ন ক্যাবলস, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, জেএমআই হসপিটাল, কোহিনূর কেমিক্যাল, বিডি ওয়েল্ডিং ও অ্যাপেক্স ফুডস।
আরও পড়ুন:তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
মন্তব্য