অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে নানা গুঞ্জন, গুজবের মধ্যে টানা পতনমুখী পুঁজিবাজারে এক দিনেই সূচক পড়ল প্রায় ১ শতাংশ। ফ্লোর প্রাইসের বাধার কারণে যেসব কোম্পানির শেয়ারদর কমা সম্ভব কমেছে প্রায় সবগুলোর।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পড়েছে ওরিয়ন গ্রুপের আলোচিত দুটি কোম্পানির শেয়ারদর। যেগুলোর দর টানা বৃদ্ধি তৈরি করেছিল বিস্ময়, কিন্তু বছর শেষে লভ্যাংশ এসেছে নগণ্য। এই গ্রুপের চারটি কোম্পানির সবগুলোই দর হারিয়েছে, সেই সঙ্গে কমেছে যেগুলোর শেয়ারদর কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই বাড়ছিল ক্রমাগত।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবসেও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৫১ পয়েন্ট। আগের দিন কমে প্রায় ৪৮ পয়েন্ট। ফলে দুই দিনেই কমল ১০০ পয়েন্ট।
এদিন নতুন করে আরও কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারদর নামল ফ্লোর প্রাইসে। সব মিলিয়ে প্রায় ৩০০ কোম্পানির শেয়ার এখন বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন দরে হাতবদল হচ্ছে।
এদিন বেড়েছে কেবল ১৯টি কোম্পানির শেয়ারদর, বিপরীতে কমেছে ৬৮টির দর। ফ্লোর প্রাইসে থাকা ২৫৬টি বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন দরে লেনদেন হয়েছে। বাকি ৪৬টি কোম্পানির একটি শেয়ারেরও ক্রেতা ছিল না।
দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচকের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৫৩ পয়েন্ট, যা গত ১৭ আগস্টের পর সর্বনিম্ন। সেদিন সূচক ছিল ৬ হাজার ২৪১ পয়েন্ট। তবে সে সময় পুঁজিবাজার ছিল ঊর্ধ্বমুখী।
এদিন পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একঝাঁক কোম্পানি গত সেপ্টেম্বরে সমাপ্ত হওয়া প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এসব কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগেরই ব্যবসা আগের বছরের তুলনায় খারাপ হয়েছে। মৌলভিত্তির একাধিক কোম্পানি লোকসান দিয়েছে। কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের বিষয়টি।
টাকার অবমূল্যায়ন ছাড়াও আমদানি মূল্য ক্রমেই বাড়তে থাকার মধ্যে রেমিট্যান্স ও রপ্তানির নিম্নগতির কারণে রিজার্ভ ক্রমেই কমছে। বাজেট ঘাটতি মোকাবিলায় আইএমএফের কাছ থেকে যে ঋণ পাওয়া যাবে, সেটি আসবে কয়েক কিস্তিতে দীর্ঘমেয়াদে, সে জন্য আবার নানা শর্ত পূরণ করতে হবে। বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে স্বল্প সুদের ঋণের আলোচনা এখনও শেষ হয়নি।
এর মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাংক নিয়ে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। বলাবলি হচ্ছে, ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হয়ে যাবে, সবাই যেন টাকা তুলে নেয়। গুজব এতটাই প্রভাবিত করছে যে বাংলাদেশ ব্যাংককে রীতিমতো বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলতে হয়েছে, মানুষের আমানত সব নিরাপদে আছে। ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ার কোনো শঙ্কাই নেই।
অর্থনীতি নিয়ে মানুষের মধ্যে উৎকণ্ঠার প্রভাব ‘অপরিপক্ব’ পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর অভাবে ভোগা পুঁজিবাজারে ব্যক্তি শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা নানা সময় গুজব-গুঞ্জনে প্রভাবিত হয়ে অস্থিরতা দেখান। সেই বিষয়টি আবার ঘটছে।
ট্রেজার সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ মনে করেন,বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিটি পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদেরকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে। নিউজবাংলাকে তিনি, ‘সামগ্রিক অর্থনৈতিক সংকটের কথা বিবেচনা করেই মানুষ চিন্তিত। আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো যখন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মানুষ নিশ্চিন্ত থাকতে বলে, তাদের পুঁজি নিরাপদে রয়েছে বলে জানায়, তখন মানুষ আরও বিচলিত হয়ে পড়েন। ফলে সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার প্রতিফলন পুঁজিবাজারে দেখা যাচ্ছে।’
ওরিয়নের ধপাস
এদিন ডিএসইতে সূচক যতটা কমেছে তার প্রায় এক তৃতীয়াংশই কমিয়েছে ওরিয়ন গ্রুপের চার কোম্পানি।
নয় মাসেরও কম সময়ে শেয়ারদর ১০ গুণ হয়ে যাওয়ার পর ওরিয়ন ইনফিউশন যে আর্থিক প্রতিবেদন ও লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, তা ব্যাপকমাত্রায় হতাশ করেছে শেয়ারধারীদের। একই দশা ওরিয়ন ফার্মার, যে কোম্পানির শেয়ারদর তিন মাসে দ্বিগুণ বেড়ে যাওয়ার পর এমনিতেই আছে পতনের ধারায়।
এই দুটি কোম্পানির শেয়ারদরই এদিন সবচেয়ে বেশি কমেছে এবং সূচক পতনের প্রধান দুই অনুষঙ্গও এই দুটি।
এর মধ্যে শেয়ার প্রতি ২ টাকা ১০ পয়সা আয় করে এক টাকা নগদ ও প্রতি ১০টি শেয়ারের বিপরীতে একটি বোনাস শেয়ার ঘোষণা করা ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ারদর কমেছে সবচেয়ে বেশি ১২০ টাকা ৭০ পয়সা বা ১২.৫৮ শতাংশ।
গত ২০ জুনও কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৮০ টাকা। বিস্ময়কর উত্থানে অক্টোবরের শেষে ছুঁয়ে যায় এক হাজার টাকা।
গুঞ্জন ছিল কোম্পানির ব্যবসা বেশ ভালো হয়েছে, লভ্যাংশ হিসেবে আসবে দারুণ ঘোষণা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা যায় আগের বছরের তুলনায় শেয়ার প্রতি আয় বেড়েছে কেবল ৭৩ পয়সা।
লভ্যাংশের ঘোষণার কারণে এদিন শেয়ারটির কোনো মূল্যসীমা ছিল না। আগের দিন দর ছিল ৯৫৯ টাকা ২০ পয়সা। দিন শেষে দাঁড়িয়েছে ৮৩৮ টাকা ৫০ পয়সায়। এক পর্যায়ে নেমে যায় ৮১৭ টাকায়।
এই কোম্পানিটির দরপতনে ডিএসইতে সূচক কমেছে ৫.০৩ পয়েন্ট।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দর কমলেও সূচক সবচেয়ে বেশি ৬.৬৬ পয়েন্ট কমিয়েছে ওরিয়ন ফার্মা। এই কোম্পানিটির শেয়ারদর গত ২৮ জুলাই ফ্লোর প্রাইস দেয়ার দিন ছিল ৭৮ টাকা ৭০ পয়সা। কিন্তু অস্বাভাবিক উত্থানে সেপ্টেম্বরের শেষে উঠে যায় ১৫৬ টাকা ৫০ পয়সায়।
অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই শেয়ারদর ছিল পতনমুখি। এর মধ্যে রোববার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ যে লভ্যাংশ ঘোষণা করে, তাতে দেখা যায়, এবার কোম্পানির আয় গত বছরের চেয়ে কমেছে, সেই সঙ্গে কমেছে লভ্যাংশ।
আগের বছর কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি ৪ টাকা ১ পয়সা আয় করে ১ টাকা ২০ পয়সা লভ্যাংশ দিয়েছিল। এবার শেয়ার প্রতি আয় কমে হয়েছে ৩ টাকা ৬২ পয়সা, লভ্যাংশের ঘোষণা এসেছে এক টাকা।
আগের দিন শেয়ারদর ছিল ১১৬ টাকা ৯০ পয়সা। মূল্যসীমা না থাকার দিন দর কমেছে ১৩ টাকা ৯০ পয়সা বা ১১.৮৯ শতাংশ। দিন শেষে দর দাঁড়িয়েছে ১০৩ টাকা যা গত ৬ সেপ্টেম্বরের পর সর্বনিম্ন।
একই গ্রুপের আরেক কোম্পানি বিকন ফার্মার দর কমেছে ৭ টাকা ১০ পয়সা বা ২.৫১ শতাংশ। গত ৩১ জুলাই ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর ২৪৬ টাকা ৯০ পয়সা থেকে অল্প কয়েক দিনে ৩৯৩ টাকায় উঠে যাওয়ার পর লভ্যাংশ মনঃপুত না হওয়ার পর দর কমছেই। দিন শেষে দর দাঁড়িয়েছে ২৭৫ টাকা ৫০ পয়সা, যা এক পর্যায়ে নেমে যায় ২৬০ টাকা ১০ পয়সায়।
এই কোম্পানিটির দরপতনে সূচক কমেছে ৩.৩৬ পয়েন্ট।
গ্রুপের অপর কোম্পানি কোহিনূর ক্যামিকেলস এবার লভ্যাংশ বাড়ালেও তা প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। গত ৩১ জুলাই ফ্লোর প্রাইসের প্রথম দিন শেয়ারদর ৩৮৩ টাকা ৬০ পয়সা থেকে তরতর করে বাড়তে বাড়তে সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে ৭৫৭ টাকা ৪০ পয়সায় উঠে যা।
সেখান থেকে পড়তে পড়তে দিন শেষে দর দাঁড়িয়েছে ৫০৩ টাকা ৮০ পয়সায়, যদিও দিনের এক পর্যায়ে দর নেমে এসেছিল ৪৮৭ টাকা ৭০ পয়সায়।
ঝড় গেছে অন্য যেগুলোর ওপর দিয়ে
ওরিয়ন গ্রুপই কেবল নয়, ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর অস্বাভাবিক দর বেড়েছিল যেসব কোম্পানির, সেগুলোর পতনের হারও এখন বেশি।
সোমবার তৃতীয় সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ দর কমেছে সিনোবাংলার ইন্ডাস্ট্রিজের, যেটির দর ফ্লোর প্রাইসের প্রথম দিন ৫৪ টাকা ৫০ পয়সা থেকে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে উঠে যায় ৯৩ টাকা ৮০ পয়সায়। সর্বোচ্চ এই দর থেকে ২০ পয়সা কমে বর্তমান দর ৭৩ টাকা ৮০ পয়সা।
নতুন তালিকাভুক্ত নাভানা ফার্মার শেয়ারদর ৯.৯৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৯৫ টাকা ৭০ পয়সা, যেটি সম্প্রতি লাফিয়ে লাফিয়ে ১৩২ টাকায় উঠে যায়।
পঞ্চম সর্বোচ্চ ৯.৯২ শতাংশ কমে জেএমআই হসপিটালের শেয়ারদর দাঁড়িয়েছে ৮১ টাকা ৭০ পয়সা। এই কোম্পানির শেয়ারদর ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর ৭১ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়ে যায় ১৪২ টাকা ৮০ পয়সা।
বসুন্ধরা পেপার মিলের দর ৯.৭৭ শতাংশ কমে হয়েছে ৯৬ টাকা ১০ পয়সা। ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর এই কোম্পানির শেয়ার দর ৫০ টাকা ৯০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়ে যায় ১২৬ টাকা।
৯.৭৬ শতাংশ কমে বিডিকমের শেয়ারদর দাঁড়িয়েছে ৩৭ টাকা ৯০ পয়সায়। এই কোম্পানিটির শেয়ারদর ফ্লোর প্রাইসে ৩০ টাকা ৮০ পয়সা থেকে কারণ ছাড়াই বেড়ে ৭৯ টাকা ৯০ পয়সায় উঠে গিয়েছিল।
অষ্টম সর্বোচ্চ ৮.৭৯ শতাংশ কমে জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ারদর ৯৭ টাকা ৫০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। কোম্পানিটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে পাঁচ বছরের চুক্তি করার পর শেয়ারদর তরতর করে বাড়ছিল। গত এক মাসে ৬৮ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১১৬ টাকায় উঠে গিয়েছিল।
নবম সর্বোচ্চ দর কমেছে আইএসএনের। ৮.৭৫ শতাংশ কমে বর্তমান দর দাঁড়িয়েছে ৫৬ টাকা ৩০ পয়সা। সম্প্রতি কোম্পানিটির শেয়ারদর লাফিয়ে লাফিয়ে ৭৬ টাকা ৪০ পয়সায় উঠে গিয়েছিল।
প্রথম প্রান্তিকে তিন গুণ আয় দেখানো জেমিনি সি ফুড ছিল দরপতনের সর্বোচ্চ তালিকায়। ৮.৭৪ শতাংশ কমে শেয়ারদর দাঁড়িয়েছে ৪০৪ টাকা ১০ পয়সা।
ফ্লোর প্রাইসে কোম্পানটির শেয়ারদর ৩১৬ টাকা ৮০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়ে যায় ৬৩৮ টাকা ৯০ পয়সা। বিনিয়োগকারীরা অবশ্য ৩০ শতাংশ বোনাস শেয়ার পেতে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে লভ্যাংশ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট শেষ হয়েছে।
আরও ছয়টি কোম্পানির শেয়ারদর ৮ শতাংশের বেশি, ৫টির দর ৭ শতাংশের বেশি, ৬টির দর ৬ শতাংশের বেশি, ৪টির দর ৫ শতাংশের বেশি, ২টি করে কোম্পানির দর ৪ ও ৩ শতাংশের বেশি কমেছে। ২ শতাংশের বেশি কমেছে ৫টি কোম্পানির দর।
আরও পড়ুন:দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সূচক বাড়ার মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে।
ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
রবিবার লেনদেন শুরুর আধা ঘণ্টা পর অর্থাৎ সকাল সাড়ে ১০টায় ডিএসইর সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৩ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৫৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। ডিএসই শরীয়াহ্ সূচক ৫ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে যথাক্রমে ১২০১ ও ২১৫৬ পয়েন্টে রয়েছে।
এই সময়ের মধ্যে লেনদেন হয়েছে ১১১ কোটি ৪ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট।
রবিবার এ সময়ে লেনদেন হওয়া কম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২০৩টির, কমেছে ৭৪টির এবং অপরির্বতিত রয়েছে ৯৩টি কম্পানির শেয়ার।
রোববার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত লেনদেনের শীর্ষে থাকা ১০ কম্পানি হলো-খান ব্রাদার্স, শাইনপুকুর সিরামিক, সালাম স্টিল, রবি, ডোমেনেজ, আইপিডিসি, লাভেলো আইসক্রিম, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, রূপালি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ও ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
এর আগে আজ লেনদেন শুরুর প্রথম ৫ মিনিটে ডিএসইএক্স সূচক বাড়ে ৮ পয়েন্ট।
সকাল ১০টা ১০ মিনিটে সূচক আগের অবস্থান থেকে আরো ১২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। এরপর সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী দেখা যায়। লেনদেন শুরুর ২০ মিনিট পর অর্থাৎ সকাল ১০টা ২০ মিনিটে সূচক আগের দিনের চেয়ে ২৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৫৫১ পয়েন্টে অবস্থান করে।
অপরদিকে লেনদেন শুরুর আধা ঘণ্টা পর অর্থাৎ সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সিএএসপিআই সূচক ২৭ পয়েন্ট বেড়ে ১৫ হাজার ৫৪৬ পয়েন্টে অবস্থান করে।
এরপর সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী দেখা যায়।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এসময়ের ২০টি কম্পানির দাম বেড়েছে, কমেছে ৮টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২টি কম্পানি শেয়ারের দর।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
মন্তব্য