দরপতন ঠেকাতে সব শেয়ারের বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন দর বা ফ্লোর প্রাইসও এখন সূচক পড়ে যাওয়া ঠেকাতে পারছে না। দুই সপ্তাহ আগে ফ্লোর ভেঙে শেয়ারগুলোর বের হয়ে আসার চেষ্টা শুরু হতে না হতেই থেমে গেছে। ফ্লোরের বেশি দর আছে, এমন কোম্পানিগুলোর সিংহভাগই এখন দর হারাচ্ছে, ফলে সূচক পড়ছেই।
রোববার নতুন সপ্তাহ শুরু হলো বেশ বড় দরপতনের মধ্য দিয়ে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে আড়াই শরও বেশি কোম্পানির শেয়ারের দাম কমতে পারছে না, এই অবস্থাতেও সূচক পড়ে গেছে ৪৮ পয়েন্ট। সূচকের বর্তমান অবস্থান গত পৌনে তিন মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
গত ৩১ জুলাই থেকে ফ্লোর প্রাইসে উত্থান শুরুর পর ২২ আগস্ট সূচক পৌঁছে ৬ হাজার ৩০০ পয়েন্ট। এরপর তা আরও টানা বাড়তে বাড়তে একপর্যায়ে ৬ হাজার ৬০০ পয়েন্ট ছাড়িয়ে যায় সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে। এরপর থেকে শুরু হয় টানা পতন।
এই সূচকের উত্থান ভারসাম্যপূর্ণ ছিল না। গোটা চল্লিশেক কোম্পানির শেয়ারের অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির ওপর ভর করে এই উত্থান টেকার কারণ ছিল না। কারণ, যেভাবে দর বেড়েছিল, কিছু কোম্পানি তার চেয়ে দ্বিগুণ গতিতে দর হারিয়েছে।
এর মধ্যে আবার বিশ্বজুড়ে দুর্ভিক্ষের আলোচনা, রিজার্ভ পতনের মধ্যে আইএমএফের ঋণের নানা শর্তসহ দেখা দেয় নানা ইস্যু। এ নিয়ে গত দুই মাস ধরেই বাজারে চলছে অনিশ্চয়তা।
বিপুলসংখ্যক কোম্পানির শেয়ারের ক্রেতা না থাকার কারণে লেনদেনও কমছে। রোববার যা নেমেছে সাত শ কোটির ঘরে, যা গত ১২ কর্মদিবসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
দিনটি শুরু হয়েছিল ২০ পয়েন্ট বেড়ে। কিন্তু প্রধানত ওষুধ ও রসায়ন খাতের বেশ কিছু কোম্পানির বড় দরপতনে সূচক কমতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকে।
শেষ পর্যন্ত ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এর অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩০৪ পয়েন্টে। এর চেয়ে কম সূচক ছিল ৫৭ কর্মদিবস আগে গত ২২ আগস্ট ৬ হাজার ৩০০ পয়েন্টে।
এদিন দর বাড়ে কেবল ২৫টি কোম্পানির, দর হারায় ৮৭টি। আর আগের দিনের দরে হাতবদল হয়েছে ২৩২টি কোম্পানির শেয়ার, যেগুলো মূলত ফ্লোর প্রাইসে লেনদেন হচ্ছে। ৪৫টি কোম্পানির একটি শেয়ারও লেনদেন হয়নি।
দিন শেষে হাতবদল হয়েছে ৭২৪ কোটি ১৫ লাখ ৬৪ হাজার টাকার শেয়ার। এর চেয়ে কম লেনদেন হয়েছিল ১২ কর্মদিবস আগে ২৬ অক্টোবর, ৭৪১ কোটি ৮০ লাখ ৩৬ হাজার টাকা।
এই লেনদেনও আবার ভারসাম্যপূর্ণ নয়। মোট লেনদেনের ৪৬.৫৫ শতাংশ হয়েছে কেবল ১০টি কোম্পানিতে। এই ১০ কোম্পানিতে হাতবদল হয়েছে ৩৩৭ কোটি ১২ লাখ ৭১ হাজার টাকা।
অন্যদিকে ফ্লোর প্রাইসে থাকা ২৩২টি কোম্পানিতে হাতবদল হয়েছে কেবল ২৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এর সাড়ে তিন গুণ লেনদেন হয়েছে শীর্ষে থাকা জেনেক্স ইনফোসিসে। এই কোম্পানিটির ৮৫ কোটি ৩৭ লাখ ২৪ হাজার টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
পতনের হার ব্যাপক
এদিন অনেকগুলো কোম্পানি কেবল দর হারায়নি, দরপতনের হারও ছিল ব্যাপক। তবে সবচেয়ে বেশি পতন হওয়ার তালিকার শীর্ষে দেখালেও দুটি কোম্পানির মধ্যে একটির দর আসলে বেড়েছে। সেটি হলো জেমিনি সি ফুড। ৩০ শতাংশ বোনাস শেয়ার ঘোষণার কারণে মূল্য সমন্বয়ের পর আসলে এর শেয়ারদর বেড়েছে।
এই তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিডি ল্যাম্পসের দরও অতটা কমেনি। ১০ শতাংশের বেশি দরপতন হলেও কোম্পানিটি ৭ শতাংশ বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছে।
ওষুধ খাতের কোম্পানি রেনাটা ছয় শতাংশের বেশি দর হারিয়েছে দেখালেও আসলে ৭ শতাংশ বোনাস শেয়ার সমন্বয় হয়েছে।
তবে চারটি কোম্পানির ৯ শতাংশের বেশি, তিনটি কোম্পানির ৮ শতাংশের বেশি, চারটি কোম্পানির ৭ শতাংশের বেশি, দুটি কোম্পানির ৬ শতাংশের বেশি, ৮ কোম্পানির ৫ শতাংশের বেশি, ৬টি কোম্পানির ৪ শতাংশের বেশি, ৭টি কোম্পানির ৩ শতাংশের বেশি ও ১২টি কোম্পানির ২ শতাংশের বেশি দরপতন হয়েছে।
বিপরীতে ৩টি কোম্পানির ৯ শতাংশের বেশি, একটি করে কোম্পানির ৭, ৬ ও ৫ শতাংশ, তিনটি করে কোম্পানির ৪ ও ৩ শতাংশ ও দুটি কোম্পানির ২ শতাংশ করে দর বেড়েছে।
‘অর্থনীতির অনিশ্চয়তা পুঁজিবাজারে’
পুঁজিবাজারের মন্দার কারণ হিসেবে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করেন ট্রেজার সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘সরকার জ্বালানি শক্তি ব্যবহার কমানোর চেষ্টা করছে। বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ায় উৎপাদনে প্রভাব পড়বে। এতে প্রথম প্রান্তিকে আয় কমবে। যা ইতোমধ্যে আসতে শুরু করেছে।’
তিনি বলেন, ‘রিজার্ভ ও অন্যান্য সূচকের প্রকৃত চিত্র নিয়ে যে আলোচনা চলছে, তা নিয়ে একটা অস্থিরতা রয়েছে। এমনকি নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও নয়, মানুষ চাইছে হাতে টাকা থাকুক। পুঁজিবাজার তো দূরের কথা অন্য কোনো বিকল্প ভাবছেন না তারা।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এলসি খুলছে না ব্যাংকগুলো। এমনকি খাদ্যপণ্যের জন্যও না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, এলসির জন্য তারা ডলার সহায়তা করবে না। নিজেদের রিজার্ভ দিয়ে বা অন্য কোনোভাবে ডলার সংগ্রহ করে ব্যাংকগুলো চাইলে করতে পারে।
‘এমনিতেই রেমিট্যান্স কমে গেছে আমরা খবরে দেখছিই। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি সহায়তা না করে তাহলে ব্যাংকগুলো কোথায় থেকে ব্যবস্থা করবে, এটা একটা প্রশ্ন।’
মোস্তফা বলেন, ‘তবে মার্কেট অনেক দিন থেকেই নেতিবাচক প্রবণতায় ছিল। কারণ কয়েক মাস থেকে নির্দিষ্ট কয়েকটা স্টকের ওপর ভর করে চলছিল। যখন কোনো পরিবার যখন একজন ব্যক্তির ওপর নির্ভরশীল হয়, এবং ওই ব্যক্তির কিছু হলে পরিবার ঝুঁকিতে পড়ে, তেমনটাই হয়েছে পুঁজিবাজারে।’
সূচকে প্রভাব যাদের
সবচেয়ে বেশি ১২ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট সূচক কমেছে রেনাটার দরপতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ। তবে এই কোম্পানিটির শেয়ারদরে আসলে ৭ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়ার ঘোষণার কারণে সমন্বয় হয়েছে।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট কমেছে বিকন ফার্মার কারণে। শেয়ার প্রতি দাম কমেছে ৫ দশমিক ০৭ শতাংশ।
বেক্সিমকো ফার্মার দর ৩ দশমিক ০৪ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ২ দশমিক ৯২ পয়েন্ট।
এ ছাড়া লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ, ওরিয়ন ফার্মা, বসুন্ধরা পেপার, সোনালী পেপার, ইউনিক হোটেল, জেএমআই হসপিটাল ও কোহিনূর কেমিক্যালের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৩৬ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ১ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন। এদিন শেয়ারটির দর বেড়েছে ৫ দশমিক ২৯ শতাংশ।
সি-পার্লের দর ৪ দশমিক ০২ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ১৮ পয়েন্ট।
আর কোনো কোম্পানি সূচকে ১ পয়েন্ট যোগ করতে পারেনি।
মেঘনা পেট্রোলিয়াম সূচকে যোগ করেছে শূন্য দশমিক ৫৪ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ১ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
এর বাইরে সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে এডিএন টেলিকম, আমরা নেটওয়ার্কস, বিডি থাই ফুড, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, মনোস্পুল, বিডি ওয়েল্ডিং ও ন্যাশনাল টি।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ৫ দশমিক ১০ পয়েন্ট।
শীর্ষ ৫ খাত যেমন
আগের দিনের মতোই শীর্ষ রয়েছে প্রযুক্তি খাত। লেনদেন হয়েছে ১৫৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা, যা আগের দিনে ছিল ১৫০ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
৫টি করে কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৪টির দরপতন হয়েছে। ২টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে আগের দরে।
১৪৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা থেকে কমে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতে হাতবদল হয়েছে ১১৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা। বুধবার লেনদেন ছিল ১৭১ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
একটি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১৯টির লেনদেন হয়েছে অপরিবর্তিত দরে, ৯টির দরপতনে।
তৃতীয় স্থান ধরে রেখেছে সেবা ও আবাসন খাত। লেনদেন হয়েছে ৬৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা, যা আগের কর্মদিবসে ছিল ৬৯ কোটি টাকা।
খাতের একটি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে অপরিবর্তিত দরে ও তিনটির দরপতনে।
৬৪ কোটি ২০ লাখ টাকা লেনদেন করে চতুর্থ স্থানে থাকা বিবিধ খাতের ৮টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে আগের দরে আর ৫টির দরপতনে।
পরের স্থানে থাকা কাগজ ও মুদ্রণ খাতে হাতবদল হয়েছে ৫৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা, যা বৃহস্পতিবার ছিল ৬৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
দুটি করে কোম্পানির দরবৃদ্ধি, দরপতন ও অপরিবর্তিত দরে লেনদেন হয়েছে।
বাকি খাতের লেনদেন ছিল ৫০ কোটির নিচে।
দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০
সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ দর বেড়ে চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৮ টাকা ১০ পয়সায়। আগের দিনে লেনদেন হয় ২৫ টাকা ২৬ পয়সায়।
৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেড়ে বিডি ওয়েল্ডিং শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩২ টাকা ৯০ পয়সায়, যা আগের দিন ছিল ৩০ টাকায়।
তালিকার তৃতীয় স্থানে ছিল আমরা নেটওয়ার্কস। ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ দর বেড়ে শেয়ারটি হাতবদল হয়েছে ৫৩ টাকা ৬০ পয়সায়। আগের দিনের দর ছিল ৪৮ টাকা ৯০ পয়সা।
এ ছাড়া দরবৃদ্ধির দশে ছিল- মুন্নু অ্যাগ্রো, বিডি থাইফুড, ওরিয়ন ইনফিউশন, মনোস্পুল, বেঙ্গল উইন্ডসর, সি-পার্ল ও এডিএন টেলিকম।
দরপতনের শীর্ষ ১০
সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ কমেছে জেএমআই হসপিটালের শেয়ার দর। প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯০ টাকা ৭০ পয়সায়, যা আগের দিনে ছিল ১০০ টাকা ৭০ পয়সায়।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ কমে বসুন্ধরা পেপারের দর নেমেছে ১০৬ টাকা ৫০ পয়সায়। আগের দিনের দর ছিল ১১৭ টাকা ৯০ পয়সা।
৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ দর কমে নাভানা ফার্মার শেয়ার বেচাকেনা হয়েছে ১০৬ টাকা ৩০ পয়সায়। আগের দিনের দর ছিল ১১৭ টাকা ৪০ পয়সায়।
এ ছাড়াও পতনের তালিকায় শীর্ষ দশের মধ্যে ছিল- সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ, লুবরেফ বাংলাদেশ, কোহিনূর কেমিক্যাল, ইস্টার্ন হাউজিং, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, আইটি কনসালট্যান্টস ও সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্স।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
মন্তব্য