রিজার্ভের টাকা দেশের উন্নয়ন ও মানুষের কল্যাণে ব্যয় করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ অর্থ কেউ চিবিয়ে, গিলে খায়নি; নিয়েও যায়নি।
‘রিজার্ভের টাকা গেল কই’ বলে বিএনপি নেতারা যে বক্তব্য দিচ্ছেন, তার জবাবে সরকারপ্রধান বলেছেন, বিএনপির অর্থ আত্মসাতের অভ্যাস রয়েছে। তারা এসব কথা বলে।
বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপাসন তারেক রহমান মানি লন্ডারিং মামলায় পলাতক আসামি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের অভ্যাস, তারা খালি ওইটা জানে যে, টাকা বোধ হয় সব নিয়েই যেতে হয়।’
আওয়ামী লীগ সরকার একটি অর্থও অপচয় করে না জানিয়ে তিনি বলেছেন, প্রতিটি অর্থ ব্যয় করা হয়েছে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থে।
সাভারের আশুলিয়া বাজারসংলগ্ন কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের নির্মাণকাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। গণভবন প্রান্ত থেকে শনিবার সকালে যুক্ত হন সরকারপ্রধান।
সারা দেশের যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের সুফল দেশের মানুষ পাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘(রিজার্ভের) টাকা কেউ চিবিয়েও খায়নি, গিলেও খায়নি। আর নিয়েও যায়নি, তবে হ্যাঁ বিএনপি বলবে। বিএনপির তো অভ্যাসই। তারেক জিয়া নিজেই যে মানি লন্ডারিং করেছে। তারা নিজেরা চুরি করে অর্থ সম্পদ বানিয়েছে। কারণ তাদের তো কিছুই ছিল না।
‘জিয়াউর রহমান যখন মারা যায়, তখন আমরা ৪০ দিন টেলিভিশনে দেখেছি ভাঙা স্যুটকেস আর গেঞ্জি ছাড়া কিছু রেখে যায়নি, কিন্তু পরে দেখি হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক তারা। জনগণের অর্থ আত্মসাৎ করেই এটা হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের বিরোধী দল থেকে প্রায়ই ‘রিজার্ভের টাকা গেল কোথায়’, এই নিয়ে প্রশ্ন করে। সেই সঙ্গে সারা বাংলাদেশে একটা অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করে। তাদের আমি বলতে চাই, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন রিজার্ভ ছিল মাত্র ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ইউএস ডলার। আর ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত এটি বৃদ্ধি পেয়েছিল মাত্র ৫ বিলিয়নের মতো। সেই জায়গা থেকে আমরা এই রিজার্ভ প্রায় ৪৮ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি।”
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সেটা সম্ভব হয়েছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যোগাযোগ, যাতায়াত, আমদানি সবকিছু প্রায় বন্ধ ছিল, কিন্তু যখন এই যোগাযোগটা খুলে গেছে, তখন আমাদের আমদানি করা…বিশেষ করে সারা বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে যে অর্থনৈতিক মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে, যে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে, তার আঘাতটা তো আমাদের দেশে এসেও পড়েছে।
‘আজকে রিজার্ভের টাকা থেকে যেমন আমাদের আমদানি ব্যয় মেটাতে হচ্ছে, পাশাপাশি আমরা বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন দিয়েছি। করোনা টেস্টিং, সেটাও কিন্তু বিনা পয়সায় করেছি। পৃথিবীর কোনো উন্নত দেশও কিন্তু বিনা পয়সায় টেস্টিংও করায়নি, ভ্যাকসিনও দেয়নি। আমরা নগদ টাকা দিয়ে কিন্তু প্রথম ভ্যাকসিনগুলো কিনি। এরপর কিছু আমরা অনুদান পেয়েছি।’
সারা বিশ্বে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি সামনে এনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খাদ্যপণ্যের দাম কিন্তু সারা বিশ্বে বেড়ে গেছে; পরিবহন ব্যয় বেড়ে গেছে। জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে গেছে। ভোজ্যতেল, গম, ভুট্টাসহ ডাল- যা কিছু আমাদের আমদানি করতে হচ্ছে…আমরা চাল উৎপাদন করছি, খাদ্য আমরা উৎপাদন করছি, আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ, তার পরও কিছু আমাদের আমদানি করতে হয়। বন্যায় যখন ফসল নষ্ট হলো, তখন আমাকে চাল আমদানি করতে হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে নষ্ট হলো। আমাকে আমদানি করতে হয়েছে। কাজেই আমরা যেটুকু করেছি খরচ, সেটা হলো জনগণের স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে।
‘জনগণের খাদ্য কেনা, ক্যানসারের ওষুধ কেনা, জনগণের মঙ্গলের জন্য আমাদের করতে হয়েছে। সার, জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ আমাদের কিন্তু ক্রয় করতে হচ্ছে, নগদ টাকা দিয়ে আমরা কিনছি। রিজার্ভের টাকা দিয়ে আমরা কিন্তু বিমান ক্রয় করেছি। বিমান ক্রয়, নদী ড্রেজিং আমরা আমাদের রিজার্ভের টাকা দিয়ে করছি।’
রিজার্ভের টাকা উন্নয়নকাজে বিনিয়োগ করা হচ্ছে জানিয়ে কেন বিনিয়োগ করা হচ্ছে তার কারণও ব্যাখ্যা করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু আমরা বিনিয়োগ করছি এই কারণে, সেটা হলো আমরা যদি অন্য দেশের এক্সিম ব্যাংক থেকে লোন নিই, আমাকে সুদসহ সেই ডলার পরিশোধ করতে হয়। কাজেই আমাদের ডলার যদি আমরা খরচা করি, দিই, আমাদের সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে এটা দিচ্ছি, তাতে করে সুদসহ টাকাটা, আমাদের দেশের টাকা দেশেই থেকে যায়। সেটা লক্ষ্য করেই প্রায় ৮ বিলিয়নের মতো আমরা খরচা করেছি।
‘এখান থেকে কিছু ডলার আপনারা জানেন যখন শ্রীলঙ্কা খুব অর্থনৈতিক সমস্যায়, তখন তাদের কিছু টাকা আমরা ধার দিয়েছি। কাজেই এভাবেই কিন্তু আমরা দিচ্ছি। এখানে কিন্তু কোনো পয়সা কেউ তুলে নিয়ে চলে যায়নি। তাদের (বিএনপি) মনে সব সময় ওই রকম ভয় থাকে। এই কথা তারা বলে।’
কেন বিএনপি এসব কথা বলে তার যুক্তিও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বিএনপি বিশেষ করে বলবে। বলার কারণটা হচ্ছে তাদের নেতা তারেক জিয়া মানি লন্ডারিং কেসে সাত বছরের কারাদণ্ড পেয়েছে এবং ২০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড পেয়েছে এবং সে পলাতক আসামি। কাজেই মানি লন্ডারিং যাদের অভ্যাস, তারা খালি ওইটা জানে যে টাকা বোধ হযয় সব নিয়েই যেতে হয়, কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার এ দেশের একটা অর্থও অপচয় করে না। প্রতিটি অর্থ ব্যয় করে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থে, কল্যাণে, তাদের ভালো-মন্দ দেখে।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগ, আমাদের একটা দায়বদ্ধতা আছে জনগণের প্রতি। কারণ জাতির পিতা যে আদর্শ নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন, আমরা সেটাই পূর্ণ করতে চাই। সে লক্ষ্য নিয়ে দেশ পরিচালনা করছি বলে গত ১৩ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে।’
জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ, করোনার অভিঘাত, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে যে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে তা সামাল দিতে এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে, দেশবাসীর কাছে সেই আহ্বান আবারও পুনর্ব্যক্ত করেছেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘টাকা দিয়ে মানুষের যোগাযোগ যেন আরও সহজ হয়, চলাচল সহজ হয় যাতে, পরিবহন সহজ হয় যাতে, তার ব্যবস্থা করছি। নৌপথ, রেলপথ, সড়কপথ, আকাশপথের ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেছি। এটা আকাশ থেকে পড়েনি।
‘বেশির ভাগ কাজ আমরা নিজেদের অর্থ দিয়ে করছি, যেন কারও কাছে হাত পেতে চলতে না হয়। নিজেদের সম্মান নিয়ে আমরা নিজেরা চলব, মাথা উঁচু করে বাংলাদেশ সম্মানের সঙ্গে চলবে।’
আরও পড়ুন:রেমিট্যান্স প্রবাহে সুবাতাস বইছে। গত অক্টোবর মাসে দেশে ২ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে ৩১ অক্টোবর একদিনেই রেমিট্যান্স এসেছে ৯৮ মিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
এই সময়ে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৮ হাজার ৯৩৮ মিলিয়ন ডলার; ২০২৩ সালের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ছিল ৬ হাজার ৮৭৮ মিলিয়ন ডলার।
শুধু ২০২৪ সালের অক্টোবরেই রেমিট্যান্স প্রবাহ ২ হাজার ৩৯৫ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা ২০২৩ সালের অক্টোবরে ছিল এক হাজার ৯৭১ মিলিয়ন ডলার।
বিদেশে বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি, উন্নত রেমিট্যান্স চ্যানেল এবং মৌসুমি প্রবাহ রেমিট্যান্স বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
অর্থনীতিবিদরা এসব পরিসংখ্যানের ইতিবাচক প্রভাব তুলে ধরে বলছেন, মজবুত রেমিট্যান্স প্রবাহ অভ্যন্তরীণ খরচ বাড়াতে পারে এবং দেশের জন্য বহিরাগত অর্থনৈতিক চাপের প্রভাব কমাতে তা সহায়ক হতে পারে।
স্থায়ী রেমিট্যান্স প্রবাহ দেশের অর্থনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী করার চলমান প্রচেষ্টায় সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদী বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন:বকেয়া ৮৫০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ না করা হলে ৭ নভেম্বরের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হবে বলে বাংলাদেশকে জানিয়েছে আদানি পাওয়ার। বকেয়া না পেয়ে প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৩১ অক্টোবর বকেয়া পরিশোধের নির্ধারিত সময়সীমা পার হওয়ার পর বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৭০ মিলিয়ন ডলারের ঋণপত্র খোলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিতে উল্লিখিত শর্ত পূরণ করেনি বিপিডিবি।
বকেয়া পরিশোধে বিলম্বের কারণে আদানি পাওয়ার ৩১ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশে তাদের বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী- ভারতের ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় অবস্থিত এক হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আদানি গ্রুপ বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। কিন্তু গত শুক্রবার দিনের বেলা আদানি গ্রুপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে মাত্র ৭২৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে।
এদিকে পায়রা, রামপাল ও এসএস পাওয়ার ওয়ানসহ অন্যান্য বড় কারখানাতেও জ্বালানি সংকটের কারণে উৎপাদন কমে গেছে।
সূত্রের বরাত দিয়ে টাইমস অফ ইন্ডিয়া বলছে, ডলার সংকটের কারণে সময়মতো অর্থ পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহকারীদের মধ্যে আদানি গ্রুপই সবচেয়ে বড়। এরপর যথাক্রমে রয়েছে পায়রা (এক হাজার ২৪৪ মেগাওয়াট), রামপাল (এক হাজার ২৩৪ মেগাওয়াট) এবং এসএস পাওয়ার (এক হাজার ২২৪ মেগাওয়াট)।
পিজিসিবির তথ্য অনুযায়ী, বাগেরহাটের বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানির রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং এসএস পাওয়ারের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি কয়লা সংকটের কারণে ইতোমধ্যে অর্ধেক ক্যাপাসিটি নিয়ে চলছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অক্টোবরে চুক্তি অনুযায়ী আদানিকে ৯০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু আগের মাস গুলোতে ২০ থেকে ৫০ মিলিয়ন ডলার করে দিয়েছে। যেখানে প্রতিমাসে বিল বাবদ ৯০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার করে দেওয়ার চুক্তি রয়েছে। আদানির কাছ থেকে বাংলাদেশ প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কেনে ১০ থেকে ১২ টাকায়। এরসঙ্গে ইন্দোনেশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়লা কেনার বিষয়টি জড়িত।
এদিকে আদানি গ্রুপ এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে কোম্পানিটির এক নির্বাহী কর্মকর্তা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে আগে বলেছিলেন, তারা আশা করেছিলেন একটি সমাধান হবে। কিন্তু সময়মতো বিল না দেয়া এবং বিষয়টি পরিষ্কার না করায়, ভারতের সবচেয়ে বড় বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিকে কঠোর অবস্থান নিতে হয়। কারণ তাদের যেসব বিনিয়োগকারী আছে তাদেরও অর্থ পরিশোধ করতে হবে।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) প্রদত্ত প্লাটিনাম লিড সনদ পেয়েছে বাংলাদেশের আরও একটি কারখানা।
ভবন নকশা, নির্মাণ ও পরিচালনায় টেকসই উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনাকারী সদস্যপদভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ইউএসজিবিসির তথ্য অনুযায়ী, গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত পোশাক কারখানা কটন ফিল্ড বিডি লিমিটেড কারখানাটি ১১০ এর মধ্যে ৮৬ স্কোর করেছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)-এর তথ্য অনুসারে, এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এখন ২৩০টি লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন (লিড) প্রত্যায়িত কারখানা রয়েছে, যার মধ্যে ৯২টি প্লাটিনাম স্ট্যাটাস এবং ১২৪টি গোল্ড স্ট্যাটাস অর্জন করেছে।
শুধু তাই নয়, বিশ্বের শীর্ষ ১০০টি সর্বোচ্চ রেটপ্রাপ্ত লিড সার্টিফায়েড কারখানার মধ্যে এখন বাংলাদেশেরই ৬২টি।
দেশ থেকে ১৭ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ পাচারের তথ্য জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, বিভিন্ন ঘটনার ভিত্তিতে ধারণা করা যায় যে বাংলাদেশ থেকে বছরে গড়ে ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ বিভিন্ন দেশে পাচার করা হয়েছে।
রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) কার্যালয়ে শনিবার ‘পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উপায়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে মোট কী পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা সম্ভব নয়। তবে ব্যাংকের মতো আনুষ্ঠানিক মাধ্যম ব্যবহার করে ১৭ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ পাচারের কথা জানা যায়।’
টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার বলয় প্রতিষ্ঠা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখলের মাধ্যমে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ পাচার করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রাজনীতি, আমলাতন্ত্র ও ব্যবসা- এই ত্রিমুখী আঁতাত মূল ভূমিকা পালন করেছে।
‘সব প্রতিষ্ঠানেই দীর্ঘ সময় ধরে দলীয়করণের চর্চা হয়েছে। গত ১৫-১৬ বছরে আমরা এর চূড়ান্ত রূপ দেখেছি। এতে আমলাতন্ত্রকে কর্তৃত্ব দিয়েছে রাজনৈতিক শক্তি আর তা বাস্তবায়নে ব্যবহার করা হয়েছে বিভিন্ন এজেন্সিকে। ফলে এসব জায়গায় কতটুকু পরিবর্তন আনা যাবে, তা গুরুত্বপূর্ণ।’
‘যে পরিবর্তন আসবে বলে আমরা আশা করছি তা যেন টেকসই হয়’, যোগ করেন তিনি।
পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত একটি দৃষ্টান্ত আছে। সেটি হলো, সিঙ্গাপুর থেকে। দেশটি থেকে ২০০৭ সালে পাচার হওয়া অর্থ ফেরতের উদ্যোগ নেয়া হয় এবং পারস্পরিক আইনি সহায়তার মাধ্যমে ২০১৩ সালে ৯ দশমিক ৩ বিলিয়ন বা ৯৩০ কোটি ডলার ফেরত আনা সম্ভব হয়েছিল।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা সম্ভব। তবে তা অনেক কঠিন ও দীর্ঘ প্রক্রিয়া। যেসব দেশে অর্থ পাচার করা হয়েছে, ওইসব দেশের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে পাচার করা অর্থ ফেরত আনা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে দেশগুলোর এ বিষয়ে সহযোগিতার মনোভাব গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘অর্থ পাচার বন্ধে সাপ্লাই (যে দেশ থেকে পাচার হয়) ও ডিমান্ড (যে দেশে পাচার হয়) উভয়ের মধ্যে সহযোগিতার পরিবেশ থাকতে হবে। পাচার হওয়া অর্থ ফেরতে সহযোগিতা করতে বিভিন্ন দেশে বিশেষজ্ঞদের সিন্ডিকেট আছে। সে কারণে আমরা একজন সাবেক মন্ত্রীর কয়েকটি দেশে কয়েক শ’ অ্যাপার্টমেন্টের বিষয়ে জানতে পারছি। কিন্তু এই ঘটনা বরফখণ্ডের চূড়ামাত্র, এমন পাচারকারী আরও অনেকে আছেন।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), সিআইডি, এনবিআর, অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস, বিএফআইইউ- অর্থ পাচার বিষয়ে এসব প্রতিষ্ঠানের পরিষ্কার পথনকশা আছে। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে হবে, শুধু মুখের কথায় কাজ হবে না। অর্থ পাচার রোধে বেশ কিছু আইনেরও প্রয়োজন আছে।’
আরও পড়ুন:সাধারণ মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে চাল আমদানিতে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহার করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার রাজস্ব কর্তৃপক্ষ একটি সংবিধিবদ্ধ নিয়ন্ত্রণ আদেশ (এসআরও) জারি করেছে।
এর আগে খাদ্য অধিদপ্তর দেশের সামগ্রিক চালের মজুদ নিয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়। বাংলাদেশ বাণিজ্য ও ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) চালের দাম পরিস্থিতি নিয়ে খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং এনবিআরকে আরেকটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছে।
দু’টি প্রতিবেদনেই চালের ওপর সব ধরনের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে।
স্থানীয় চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে সহায়তার জন্য গত ২০ অক্টোবর এনবিআর আমদানি শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসব দীপাবলি (কালীপূজা) উপলক্ষে ভারতে সরকারি ছুটির কারণে বৃহস্পতিবার বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
রপ্তানি বন্ধ থাকলেও বেনাপোল কাস্টমস হাউস ও বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। একই সঙ্গে দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপারও নিয়মিত রয়েছে।
আগামীকাল শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় শনিবার সকাল থেকে ফের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম যথারীতি চলবে এ বন্দরে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘দীপাবলি উপলক্ষে ভারতের পেট্রাপোলের ব্যবসায়ীরা সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন। মূলত বুধবার বিকেল থেকেই ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
‘এ বিষয়ে তারা আমাদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, তবে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে। বেনাপোল বন্দর ও কাস্টমসে স্বাভাবিক নিয়মে কার্যক্রম চলছে। শনিবার সকাল থেকে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি চালু হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার বলেন, ‘ভারতে দীপাবলি উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার কোনো পণ্য আমদানি-রপ্তানি হবে না, তবে বন্দর ও কাস্টমসের সকল কার্যক্রম চালু রয়েছে।
‘ভারত থেকে আমদানি পণ্য নিয়ে আসা খালি ট্রাক ফেরত যাওয়ার জন্য চেকপোস্ট কার্গো শাখা খোলা। সেই সাথে দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্ট যাত্রী চলাচল স্বাভাবিক।’
আরও পড়ুন:বিশ্বের বৃহত্তম পিৎজা চেইন ডোমিনোজ পিৎজা বাংলাদেশে নিজেদের ব্যবসা দ্রুত সম্প্রসারণ করছে।
এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ে ডোমিনোজ পিৎজা উদ্বোধন করেছে তাদের ৩৬তম রেস্তোরাঁ।
গ্রাহকদের চিজি হ্যাপিনেসের সুযোগ দিতে ২০ অক্টোবর শাখাটি উদ্বোধন হয়।
বাংলাদেশে ডোমিনোজ পিৎজা চালু হওয়ার পর থেকেই সুস্বাদু খাবারের পাশাপাশি দ্রুততম ডেলিভারির মাধ্যমে মাত্র ৩০ মিনিটেই খাবার পৌঁছে দিচ্ছে গ্রাহকদের দ্বারপ্রান্তে। পাইপিং হট পিৎজা, নতুন শুরু হওয়া অরেগানো রাইস এবং সসি পিৎজা, গার্লিক ব্রেড, চকো লাভা কেক ছাড়াও অন্যান্য সুস্বাদু খাবার ও ডেজার্ট সরবরাহ করতে ডোমিনোজ পিৎজা সর্বদা সচেষ্ট।
ডোমিনোজ পিৎজার ৩০ মিনিটে ডেলিভারীর বিশ্বব্যাপী সমাদৃত সেবাটি বনানীর কামাল আতাতুর্ক রেস্তোরাঁ থেকেও পাওয়া যাবে।
রেস্তোরাঁটি উদ্বোধনের সময় ডোমিনোজ পিৎজা বাংলাদেশের ম্যানেজমেন্ট টিম ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন এসওএস চিলড্রেনস ভিলেজের শিক্ষার্থীরা, যারা এ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বিনা মূল্যে পড়াশোনার সুযোগ পেয়ে থাকে।
ডোমিনোজ পিৎজা বাংলাদেশের চিফ অপারেটিং অফিসার আহমেদ শোয়েব ইকবাল বলেন, ‘ডোমিনোজ পিৎজা গত সাড়ে ৫ বছরে এই দেশে সবচেয়ে দ্রুততার সাথে বড় হওয়া ফুড ব্র্যান্ড এবং বনানীর কামাল আতাতুর্কে আমাদের নতুন এই রেস্টুরেন্ট খুলতে পেরে আমরা বেশ গর্বিত।
‘এ দেশে আমাদের ক্রমবর্ধমান গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে আমরা ক্রমাগত আমাদের রেস্টুরেন্ট নেটওয়ার্ক প্রসারিত করছি। ডোমিনোজ পিৎজার প্রতি ভালোবাসা ও সমর্থনের জন্য আমরা বাংলাদেশের জনগণকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ রেস্টুরেন্টে সবাইকে স্বাগত জানাতে আমরা উন্মুখ। বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ রেস্টুরেন্ট থেকে আমরা বনানী ব্লক এ, বি, সি, ডি, জির সাথে বারিধারা ডিওএইচএস, নেভি হেড কোয়ার্টার এবং গুলশান-২-এ হোম ডেলিভারি করতে পারব।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য