× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

অর্থ-বাণিজ্য
Interest rates should be maintained at nine six
google_news print-icon

সুদের হারে নয়-ছয় বহাল রাখা উচিত

সুদের-হারে-নয়-ছয়-বহাল-রাখা-উচিত
বাংলাদেশ চেম্বারের সভাপতি ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ। ছবি: নিউজবাংলা
আমি মনে করি যে, বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের তুলনায় ভালো আছে। এটা সত্যি যে, আমাদের বৈদেশিক বিনিময় হারের ওপর চাপ এসেছে; যেহেতু আমাদের অনেক আমদানি করতে হয়। আমাদের তেল, গ্যাস, কাঁচামাল আবার কিছু খাদ্যশস্য আনতে হয়। কিন্তু আমাদের শক্তির দিক আছে। আমাদের শক্তি হচ্ছে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি। আমাদের শক্তি হচ্ছে আমাদের কৃষক ভাইরা আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা দিয়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে মূল্যস্ফীতি অনেক বেশি। আমাদের দেখতে হচ্ছে দেশি কোম্পানিগুলোর যাতে কোনো ক্ষতি না হয়। আবার রপ্তানি খাতে কারও চাকরি চলে না যায়। বড় বাধা এনার্জি ক্রাইসিস।

সংকটকালে নয়-ছয় সুদের হার বহাল রাখা উচিত বলে মনে করেন বাংলাদেশ চেম্বারের সভাপতি ও পোশাক শিল্পমালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ। তিনি বলেন, ‘এই কঠিন সময়ে ব্যাংক ঋণের সুদের হার বাড়ালে অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান টিকে থাকতে পারবে না। বন্ধ হয়ে যাবে। ব্যাংকিং খাতের প্রধান সমস্যা খেলাপি ঋণ আরও বেড়ে যাবে। তখন ব্যাংকগুলোও বিপদে পড়বে। তাই আমি মনে করি যে, এখন সবচেয়ে জরুরি হলো যারা ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি, তাদের আমাদের একইভাবে দেখা উচিত। আর নতুন করে কেউ যাতে খেলাপি না হয় তাদের জন্য বর্তমান সুদের হার বহাল রাখা উচিত।’

বৃহস্পতিবার নিউজবাংলাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে দেশের অন্যতম শীর্ষ পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ইভিন্স গ্রুপের কর্ণধার আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ সরকারের কাছে এ অনুরোধ করেছেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন নিউজবাংলার বিজনেস এডিটর আবদুর রহিম হারমাছি।

যুদ্ধের ধাক্কায় ওলোটপালট হয়ে যাওয়া বিশ্ব অর্থনীতিতে আগামী দিনগুলো কেমন যাবে? রপ্তানি আয়ের ইতিবাচক ধারা ধরে রাখা কী সম্ভব হবে? নাকি নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হবে। একজন ব্যবসায়ী নেতা পোশাক শিল্প খাতের একজন বড় উদ্যোক্তা হিসেবে আপনার বিশ্লেষণ জানতে চাই।

গত অর্থবছর ছিল করোনাভাইরাস থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর সময়। সব দেশই ভালো করেছে। গত বছর প্রায় সব দেশের অর্থনীতি ভালো ছিল। আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ অর্জিত হয়েছিল। গত অর্থবছর আমরা রপ্তানিতে যে ৩৫ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি দেখেছি, সেটার কারণ হচ্ছে কাঁচামালের দাম অনেক বেড়ে গিয়েছিল। রপ্তানিতে আসলে প্রকৃত প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ থেকে ১২ শতাংশ।

কিন্তু এখন সারা পৃথিবীতে ডলার ক্রাইসিস আছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পৃথিবীর প্রায় সব দেশে একটি বড় মূল্যস্ফীতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমেরিকাতে মূল্যস্ফীতি ৪০ বছরের মধ্যে বেশি। যুক্তরাজ্য, জার্মানি সব দেশে মূল্যস্ফীতি ৯ থেকে ১০ শতাংশের ঘরে। এর বড় কারণ হচ্ছে যুদ্ধ। সারা পৃথিবীর চাহিদার ৪০ শতাংশ খাদ্যশস্য সরবরাহ করত এই দুটি দেশ রাশিয়া-ইউক্রেন। এ ছাড়া ইউরোপ তেল এবং গ্যাসের জন্য নির্ভর করে রাশিয়া আর ইউক্রেনের ওপর। সেটা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে মূল্যস্ফীতি হু হু করে বাড়ছে। বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়েছে।

যদিও আমি মনে করি যে, বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের তুলনায় ভালো আছে। এটা সত্যি যে, আমাদের বৈদেশিক বিনিময় হারের ওপর চাপ এসেছে; যেহেতু আমাদের অনেক আমদানি করতে হয়। আমাদের তেল, গ্যাস, কাঁচামাল আবার কিছু খাদ্যশস্য আনতে হয়। কিন্তু আমাদের শক্তির দিক আছে। আমাদের শক্তি হচ্ছে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি। আমাদের শক্তি হচ্ছে আমাদের কৃষক ভাইরা আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা দিয়েছে।

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে মূল্যস্ফীতি অনেক বেশি। আমাদের দেখতে হচ্ছে দেশি কোম্পানিগুলোর যাতে কোনো ক্ষতি না হয়। আবার রপ্তানি খাতে কারও চাকরি চলে না যায়। বড় বাধা এনার্জি ক্রাইসিস। সরকার চাইলেই কিন্তু বেশি দামে শক্তি কিনতে পারছে না। বাংলাদেশ কিন্তু নিজেই কিছু শক্তি উৎপাদন করে। ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার যে সমস্যা বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্নর বিভিন্ন ভাবে তা ঠিক করার চেষ্টা করছেন। এর মধ্যে একটি হচ্ছে দেশে অপ্রয়োজনীয় আমদানি কমানো হয়েছে। ফলমূল কম আসছে কসমেটিকস কম আসছে। এ বিষয়গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে বাংলাদেশ ব্যাংক এলসি মার্জিন করেছে ১০০ শতাংশ। আবার এনবিআর কর বসিয়েছে। এতে কাজ হয়েছে।

কিন্তু ডলারের বাজার তো স্থিতিশীল হচ্ছে না। বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ কমছেই। এ অবস্থা আর কতদিন চলবে?

কিছু কিছু উন্নয়ন হচ্ছে। গত বছর আমাদের আমদানি হয়েছিল ৮৯ বিলিয়ন ডলার। রপ্তানি হয়েছিল ৫৩ বিলিয়ন ডলার। সেটা সবাইকে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল। সেই অবস্থার উন্নতি হয়েছে। গত মার্চ মাসে ৯ বিলিয়ন ডলারের আমদানি হয়েছিল। সেটা কমে সেপ্টেম্বরে ৫ বিলয়ন ডলারের ঘরে নেমে এসেছে। ৫ মিলিয়ন ডলারের ওপর যেসব এলসি হচ্ছে, সেটা দরকার আছে, কি নেই সেটা দেখা হচ্ছে। তাতে কাজ হচ্ছে। কিন্তু রেমিট্যান্সটা একটু কমে গেছে। তবে রপ্তানিটা কিন্তু নির্ভর করে বিদেশের ওপরে। সেপ্টেম্বরে আমাদের ৭ দশমিক ৫ শতাংশ রপ্তানি কমেছিল। অক্টোবরেও প্রবৃদ্ধি একই পরিমাণ কমেছে। তবে সেপ্টেম্বরের চেয়ে কিন্তু সার্বিক রপ্তানি অক্টোবরে বেশি হয়েছে। সেপ্টেম্বরে পণ্য রপ্তানি থেকে ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার এসেছিল। অক্টোবরে এসেছে ৪ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। বেড়েছে প্রায় ৮ শতাংশ।

একইসঙ্গে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৪ মাসের (জুলাই-অক্টোবর) তথ্য যদি আমরা দেখি, তা হলেও কিন্তু ৭ শতাংশে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। অর্থাৎ গত বছরের জুলাই-অক্টোবরের চেয়ে এই বছরের একই সময়ে পণ্য রপ্তানি থেকে ৭ শতাংশ বেশি বিদেশি মুদ্রা দেশে এসেছে। এটার কারণ হচ্ছে চায়না এখন আর কাপড় বানাতে তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তারা গার্মেন্টসের ওয়ার্কার পাচ্ছে না। ভিয়েতনাম ইলেকট্রনিকস আইটেমের দিকে যাচ্ছে। অন্যদিকে বার্মার সমস্যা রাজনীতি। আফ্রিকায় সমস্যা কম্বোডিয়ায় শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। কাস্টমার ফোকাস করছে বাংলাদেশে যতটুকু তারা পারে। এখানে আমেরিকা-চীনের বাণিজ্যযুদ্ধের সুফলও আমরা পাচ্ছি। এখানে একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, গত অর্থবছরে কিন্তু আমরা আমাদের রপ্তানিতে একটা বড় উল্লম্ফন পেয়েছিলাম। সেই উল্লম্ফনের ওপর যদি এবার আমরা এই সংকটের সময়ে ১০ শতাংশও বেশি (প্রবৃদ্ধি) রপ্তানি করতে পারি, সেটাও একটা ভালো অর্জন বলে আমি মনে করি। আমার বিশ্বাস এটা আমরা পারব। কেননা, সামনে ২৫ ডিসেম্বরের বড়দিন আছে, সেটাকে ঘিরে নভেম্বর-ডিসেম্বরে পোশাক রপ্তানি বাড়বে।

তবে এ ক্ষেত্রে সরকারকে একটি কাজ কিন্তু করতেই হবে, সেটা হচ্ছে, যে করেই হোক আমাদের পোশাক কারখানায় এবং পোশাক শিল্পের ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ শিল্পে (পশ্চাদসংযোগ শিল্প) নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হবে। এখানে আমি একটা কথা বলতে চাই, এজন্য কিন্তু বাইরে থেকে গ্যাস-এলএনজি বা বিদ্যুৎ আমদানি করতে হবে না। বাড়তি ডলার খরচ করতে হবে না। সরকারকেও বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হবে না। শুধু একটি সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই এটা করা সম্ভব। আমরা সরকারকে বারবার এই অনুরোধটা করছি। আশা করছি, সরকার সদয় বিবেচনা করবে।

বর্তমানে যা আছে সেটার ম্যানেজমেন্ট ঠিক করেই কিন্তু সরকার এই সংকট নিরসন করতে পারে। যেমন ধরেন- আমরা আমাদের বাংলাদেশ চেম্বার থেকে সরকারকে বলেছিলাম গাজীপুর, সাভার আর নারায়ণগঞ্জ- এই তিনটি জায়গায় আপনারা গ্যাস যদি নিরবচ্ছিন্ন রাখাতে পারেন, আপনি কিন্তু ৮০ শতাংশ সমস্যা সমাধান করতে পারবেন। কারণ আপনার বেশির ভাগ কারখানা কিন্তু এই জোনে। গাজীপুরে একটি প্ল্যান্ট আছে যেটা থেকে বিদ্যুৎ আসার কথা ২০০ মেগাওয়াট। সেখানে হয় মাত্র ৩০ কিলোওয়াট। এই গ্যাসগুলো যদি কারখানাগুলোকে দিয়ে দেয়া হয় তা হলে কিন্তু সব কারখানা চলবে। ব্যবস্থাপনা ঠিকভাবে করলে এটা ঠিক করা সম্ভব।

আমরা চাচ্ছি কীভাবে দেশের অর্থনীতি ধরে রাখা যায়। যাতে রপ্তানি ঠিক থাকে, চাকরি ঠিক থাকে, ডলারের দাম ঠিক থাকে। দেশ একটি স্ট্যাবল অবস্থায় থাকে। আমরা বুঝি সরকারের অনেক ধরনের সমস্যা আছে। সরকার চেষ্টা করছে। তবে ব্যবস্থাপনা করলে আরও ভালো চালানো সম্ভব।

যুদ্ধের কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির প্রধান দুই বাজার আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোতে রপ্তানি কমে যাবে বলে সবাই আশঙ্কা করছেন। আপনার বিবেচনায় প্রকৃত অবস্থা আসলে কেমন হবে?

এ কথা ঠিক যে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের পোশাকের প্রধান দুই বাজার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় তারা পোশাক কেনা কমিয়ে দিয়েছে। তাদের এখন খাদ্যের পেছনেই অনেক বেশি খরচ করতে হচ্ছে। সে কারণে আমাদের রপ্তানি আয় কমছে। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফসহ বিভিন্ন সংস্থা বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা করছে। এ অবস্থায় আগামী দিন আমাদের রপ্তানি আয়ে খুব ভালো খবর নেই। তবে খুব বেশি আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে আমি মনে করি। হাঁ, বিশ্ব প্রেক্ষাপটে আমাদের এবার প্রবৃদ্ধি কম হবে। তবে আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি নিয়েই অর্থবছর শেষ হবে। কেননা, আমরা ইতিমধ্যে চীনের বাজার বেশ খানিকটা দখল করতে পেরেছি। ভিয়েতনাম-মিয়ানমারের কিছু অর্ডারও বাংলাদেশে আসছে। পাশের দেশ ভারতে আমাদের রপ্তানি বাড়ছে। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, আমরা অতিপ্রয়োজনীয় কম দামি পোশাক বেশি রপ্তানি করি। বিশ্ব অর্থনীতির পরিস্থিতির অবস্থা যত খারাপই হোক না কেন, অতি প্রয়োজনীয় পোশাক কিন্তু সবার কিনতেই হবে। তাই সব মিলিয়ে আমি খুব বেশি চিন্তিত নই।

বড় চিন্তার বিষয়, সেটা হচ্ছে আমাদের রিজার্ভ কিন্তু দিন দিন কমে আসছে। এখন ৩৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। এক বছর আগে ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার। রপ্তানি আয় এবং প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স- এই দুই সূচক এতদিন অর্থনীতিকে সামাল দিয়ে আসছিল, সেই দুই সূচকই কিন্তু ধাক্কা খেয়েছে। রপ্তানির চেয়ে রেমিট্যান্সে কিন্তু বেশি ধাক্কা লেগেছে। সে কারণেই কিন্তু রিজার্ভ কমছে। আমার কেন জানি মনে হচ্ছে, প্রচুর রেমিট্যান্স আসছে হুন্ডির মাধ্যমে। এখানে সরকার বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভালোভাবে নজর দেয়া উচিত। প্রবাসীদের একটি টাকাও যেন হুন্ডির মাধ্যমে না আসে, সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে প্রণোদনার পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিতে হবে। বৈধ পথে শতভাগ রেমিট্যান্স আনার ব্যবস্থা করতে হবে। আর রপ্তানির ইতিবাচক ধারা বজায় রাখতে গ্যাস-বিদ্যুতের কথা তো আমি আগেই বলেছি। বৈশ্বিক কারণে আমাদের অর্থনীতি যে সংকটের মধ্যে পড়েছে, তা কিন্তু রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সের ইতিবাচক প্রবাহ ছাড়া মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। সেটাকে লক্ষ্য রেখেই এখন সরকারের সব পরিকল্পনা নিতে হবে।

জ্বালানিসংকট রপ্তানি খাতে কী ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। শীত মৌসুম আসছে। সরকার বলছে, এই নভেম্বরের মধ্যেই বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। সব মিলিয়ে আপনার কাছে কী মনে হচ্ছে?

আমাদের ক্রেতারা, কাস্টমার এখন একটু ভয় পাচ্ছে। যখন তারা শোনে আমাদের এনার্জি ক্রাইসিস আছে; আর এর কারণে আমাদের ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজগুলো উৎপাদন করতে পারছে না। যেটার কারণে আমরা সরকারের কাছে আবেদন করেছি। আপনারা এনার্জিটা কীভাবে ইন্ডাস্ট্রিকে দেয়া যায় সে-ব্যবস্থা করেন। আমার এ মুহূর্তে যা আছে সেটার ওপর ভিত্তি করে। তা হলে দেখা যাবে, ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজগুলো দাঁড়াতে পারবে। আর ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজগুলো যদি ঠিক থাকে তা হলে রপ্তানি কমবে না। নভেম্বর ও ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপে ক্রিসমাস সেলস খুব ভালো হয়। কিন্তু এবার একটু কম হচ্ছে বলে শুনছি। ওই দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি অনেক বেশি। এই ক্রিসমাসে কিন্তু বেশি বিক্রি হয় ফ্যাশন প্রডাক্টগুলো, সেটা এবার কম হচ্ছে। আমাদের কাছে অর্ডার আছে। কিছু অর্ডার ডেফার্ড হচ্ছে। কাস্টমার অর্ডার দিতে চায়। নতুন নতুন কাস্টমার হচ্ছে। আমাদের কাস্টমারকে কনফিডেন্স দিতে হবে যে, বাংলাদেশ এটা মিট করতে পারবে। বাংলাদেশ এটা ডেলিভারি করতে পারবে।

এক কথায় যদি বলতেন এবার রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হবে, না নেগেটিভ (ঋণাত্মক) প্রবৃদ্ধি হবে?

আমি আগেই বলেছি, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৪ মাস গেছে। এই ৪ মাসে পোশাক রপ্তানিতে সাড়ে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সার্বিক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ শতাংশের বেশি। তাই এটা আমি বলতে পারি, রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হবে সেটাতে কোনো সন্দেহ নেই। নেগেটিভ গ্রোথ গার্মেন্টস খাত থেকে হবে না। তবে এখানে একটি কথা কিন্তু আছে, যেটা আমি আগেও বলেছি, আবার বলছি- গার্মেন্টস খাতে কিন্তু এনার্জি দিতেই হবে। এই খাত কিন্তু ২৪ ঘণ্টা চলতে হয়। এটা ১২ ঘণ্টা চললে সাসটেইনেবল হয় না। টেক্সটাইল না চললে গার্মেন্টস কাপড় পাবে না। যেমন টি-শার্টের ৯০ শতাংশ কাপড় কিন্তু বাংলাদেশেই হয়। এর জন্য স্পিনিং, নিটিং ডাইং ২৪ ঘণ্টা চলতে হয়। আপনি যদি ওভেন দেখেন বা ডেনিম এগুলোর প্রবৃদ্ধি আছে। ডেনিমের ৬০ শতাংশ বাংলাদেশে তৈরি হয়। দেশে যদি ৫০ শতাংশ উৎপাদন না করতে পারে ইন্ডাস্ট্রি সিক (রুগ্ন) হয়ে যাবে। খেলাপি ঋণ বাড়বে। ব্যাংকগুলো বিপদে পড়বে। আবার গার্মেন্টসে অর্ডার থাকা সত্ত্বেও সেটা ফেল করবে। কাস্টমার বাংলাদেশের ওপর কনফিডেন্স হারাবে। এই অপরচুনিটি লস করাটা আমাদের জন্য দুঃখজনক হবে। সঙ্গে সঙ্গে যদি অর্ডার ফেল করে তা হলে আনএমপ্লয়মেন্ট শ্রমিকরা বেকার হবে। এখন দেশ এটা নিতে পারবে না। চাকরি কিন্তু এখন ধরে রাখতে হবে। আমাদের ফরেন কারেনসি যেহেতু এই খাত থেকে আসে, রিজার্ভ বাড়ে- তাই খুব ভেবেচিন্তে এই খাতটার দিকে তাকাতে হবে। তা হলে আমরা সংকট খুব সহজেই মোকাবিলা করতে পারব।

অনেক কিছু করার পর বাংলাদেশ ব্যাংক এখন ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে। এতে কী বাজারে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে?

আমি আগেই বলেছি, নতুন গভর্নর সাবেহ বিচক্ষণতার সঙ্গে সব কিছু সামাল দেয়ার চেষ্টা করছেন। একটার পর এটা পদক্ষেপের কারণে কিন্তু আমদানি ব্যয় অনেক কমে এসেছে। আর আমদানি ব্যয় কমে এলে, ডলারের চাহিদা কমবে; বাজারও ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসবে। তবে আবারও বলছি, রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সের ইতিবাচক ধারা কিন্তু ধরে রাখতেই হবে।

আপনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও উচ্চ মূল্যস্ফীতির কথা বলছিলেন। স্পর্শকাতর এই সূচকটির লাগাম টেনে ধরতে ব্যাংক ঋণ ও আমানতের সুদের হার যেটা বর্তমানে নয়-ছয় শতাংশ আছে, সেটা বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা। বাংলাদেশ ব্যাংকও মনে হচ্ছে, সেটা করতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে রেপো সুদহার ৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ করেছে। সুদের হার বাড়ানোর বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

দেখেন, এই সংকটকালে কঠিন সময়ে এখন কিন্তু সব কোম্পানির খরচ অনেক বেড়ে গেছে। ছোট (ক্ষুদ্র) ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের মালিক প্রায় দেউলিয়ার পথে। আর বড়রা তাদের ফুল ক্যাপাসিটিতে অপারেট করতে পারছে না। কারণ মার্কেটে চাহিদা নেই। মানুষ আর কিনতে পারছে না। তাই সেলস কমে গেছে। এ অবস্থায় সুদের হার বাড়ালে তখন দেখা যাবে ইন্ডাস্ট্রি বা শিল্পকারখানাগুলো আর ভায়বেল হবে না। ঠিকে থাকবে না। সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা সুদের হার বাড়িয়ে আমাদের ব্যাংকিং খাতের প্রধান সমস্যা খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বাড়াব, না আমরা ইন্ডাস্ট্রিগুলোকে চাপ না দিয়ে এই যে একটি ক্রাইসিস সময় যাচ্ছে, যেটা আরও ১ থেকে ২ বছর থাকবে। এটা গভীরভাবে সরকারের নীতিনির্ধারক ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিবেচনা করতে হবে বলে আমি মনে করি।

আমার মনে হয়, এখন আর কোনো খরচ না বাড়ানোই ভালো হবে। আপনারা দেখেছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মত অর্গানাইজেশন যারা আমাদের সারাজীবন বলেছে বিদ্যুতের দাম বাড়াও, তারা এখন বলছে যে, এই মুহূর্তে বিদ্যুতের দাম আর বাড়াইও না। তারা বুঝতে পারছে বিদ্যুতের দাম যদি আর একটু বাড়ে করখানাগুলো বসে যাবে। তখন আর কোনো কিছুই কস্ট ইফেক্টিভ হবে না। দেশের মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে যাবে। তাই আমি মনে করি, সবচেয়ে জরুরি হলো যারা ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি, তাদের আমাদের একভাবে দেখা উচিত। আর নতুন করে কেউ যাতে খেলাপি না হয় তাদের জন্য বর্তমান সুদের হার বহাল রাখা উচিত।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ব্যাংকমালিক, ব্যাংকার এবং আমাদের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে নয়-ছয় সুদের হার নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। তার সুফল কিন্তু আমরা পাচ্ছিলাম, দেশ পাচ্ছিল। মহামারি করোনার মধ্যেও দেশের অর্থনীতি সচল ছিল। আমার বিশ্বাস, সুদের হার বাড়ানো হবে, না বর্তমানে যা আছে, তাই থাকবে- সে বিষয়েও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটি সুন্দর সিদ্ধান্ত নেবেন।

নির্বাচন কমিশন ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। জাতীয় নির্বাচন ঘিরে দেশে রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে অর্থনীতির কী হবে? ব্যবসা-বাণিজ্যেরই বা কী হবে?

এটি তো বাংলাদেশের রাজনীতির একটি অংশ। প্রতি ৫ বছরেই হয়। এটি তো ভালো আমাদের বিরোধী দলরা সমাবেশ করছে। জাতীয় নির্বাচন ঘিরে সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং হবে সেটিই স্বাভাবিক। তবে অতীতের মতো সংঘাতের রাজনীতি যেন না হয়, সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। এটি যেন ব্যবসা-বাণিজ্যে কোনো বাধা সৃষ্টি না করে, সেটিই মনে রাখতে হবে।

রাজনীতি করা সবার অধিকার। আমরা চাই একটি শান্তিপূর্ণ সুষ্ঠু পরিবেশ। সেটি থাকলেই ভালো, সরকারিদল-বিরোধীদল সবাই রাজনীতি করবে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের ওপর, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওপর একটু চোখ রাখবেন প্লিজ! বাস-টাসগুলো পুড়িয়ে দিয়েন না, আমরা আমাদের ব্যবসা করি, আপনারা আপনাদের রাজনীতি করেন। আসুন, সবাই মিলেমিশে দেশটিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাই।

আরও পড়ুন:
বিদেশি ঋণে সেই জোয়ার আর নেই
দ্রুত পণ্য খালাসের উদ্যোগে সাড়া নেই
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের পর রপ্তানি আরও বাড়ছে
খোলাবাজারে ডলারের তেজ কমেছে
উচ্চবিত্ত-উচ্চ মধ্যবিত্ত ছাড়া সবাই কষ্টে

মন্তব্য

আরও পড়ুন

অর্থ-বাণিজ্য
The 5th Intex Bangladesh Exhibition starts in Dhaka

ঢাকায় শুরু ১৬তম ইনটেক্স বাংলাদেশ এক্সিবিশন

ঢাকায় শুরু ১৬তম ইনটেক্স বাংলাদেশ এক্সিবিশন

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সফল গার্মেন্টস ক্রেতা, বিপনন ও সরবরাহকারী এবং সোর্সিং এক্সিবিশন খ্যাত ইনটেক্স বাংলাদেশের ১৬তম আসর আজ রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা (আইসিসিবি)-তে শুরু হয়েছে। এই তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক টেক্সটাইল সোর্সিং শোতে ১০টিরও বেশি দেশের ১২৫টির অধিক কোম্পানি অংশ নিচ্ছে, যা বিশ্বব্যাপী ক্রেতা, সরবরাহকারী এবং উৎপাদনকারীদের জন্য একটি গতিশীল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে।

পোশাক খাতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ-এর নিত্য উদ্ভাবনী কৌশল ও উন্নতমানের দ্রুত উৎপাদন ক্ষমতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের চাহিদায় প্রাধান্য পাচ্ছে।

২০২৬ সালের মধ্যে তৈরি পোশাক শিল্প রপ্তানি ৫৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ইনটেক্স-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলো অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা, সাপ্লাই চেইনে বৈচিত্র্য আনা এবং টেক্সটাইল ও পোশাক শিল্পে উদ্ভাবন প্রদর্শনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, গেস্ট অব অনার হিসেবে ছিলেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন।

এছাড়াও বিজিএমইএ, বিকেএমইএ এবং এলএবিসিসিআই, কেবিসিসিআই ও বিজিসিসিআই-এর মতো দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সংস্থার নেতৃবৃন্দও অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

মাহবুবুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশ এখন পোশাক খাতে বিশ্ব বাজারের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দ্রুত টেকসই ও মূল্য-সংযোজিত পোশাক উৎপাদনের একটি বৈশ্বিক কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। উদ্ভাবন, কমপ্লায়েন্স এবং দক্ষ কর্মী নিয়োগে কৌশলগত বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশটি দায়িত্বশীল ফ্যাশন ও টেক্সটাইল সোর্সিংয়ের পরবর্তী অধ্যায় নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। আমরা বিশ্বাস করি, ইনটেক্স বাংলাদেশের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো আমাদের কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, পাশাপাশি বৈশ্বিক প্রতিযোগিতামূলক বাজারে মানসম্পন্ন পণ্য নিশ্চিত করবে”

এই বছরের এক্সপোতে বিভিন্ন দেশের উল্লেখযোগ্য প্যাভিলিয়নের মধ্যে ভারতের (টেক্সপ্রোসিল ও পেডেক্সিলের মাধ্যমে) তুলা, মিশ্র সুতা ও টেকসই টেক্সটাইল প্রদর্শন করছে। চীন নিয়ে এসেছে টেকনিক্যাল ফ্যাব্রিক ও গার্মেন্টস ট্রিম। দক্ষিণ কোরিয়া পরিবেশবান্ধব পারফরম্যান্স উপকরণ প্রদর্শন করছে। অন্যদিকে থাইল্যান্ড ও জাপান নিয়ে এসেছে প্রিমিয়াম শার্টিং ও বোনা পণ্য। বাংলাদেশি প্রদর্শনকারীরা নিটওয়্যার, ডেনিম এবং ভার্টিক্যালি ইন্টিগ্রেটেড উৎপাদন সমাধানের অগ্রগতি তুলে ধরছে।

এক্সপোর মূল্যবোধ আরও বাড়াতে ইন্টারেক্টিভ বিজনেস ফোরাম (আইবিএফ) দুটি সেশনের আয়োজন করেছে। প্রথম সেশনে টেক্সটাইল উৎপাদন ও ফ্যাশনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সংযুক্তি নিয়ে আলোচনা করা হবে, অন্যদিকে দ্বিতীয় সেশনে বৈশ্বিক শুল্ক ও বাণিজ্য পরিবর্তনের বাংলাদেশি রপ্তানির প্রভাব নিয়ে আলোচনা হবে। এই সেশনগুলোতে এ শিল্পের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা অংশ নিচ্ছেন, যা ব্যবসায়িক স্থিতিস্থাপকতা ও বৃদ্ধির কৌশল প্রদান করবে।

প্রদর্শনীর পাশাপাশি, ইনটেক্স বাংলাদেশ ২০২৫-এ ব্যবসায়িক সভা (বি২বি), ভিআইপি নেটওয়ার্কিং এবং ক্রেতা-সরবরাহকারীদের মধ্যে ম্যাচমেকিং সুবিধা রয়েছে— যা সোর্সিং ও ব্যবসায়িক সম্প্রসারণের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ অভিজ্ঞতা প্রদান করছে।

ওয়ার্ল্ডেক্স ইন্ডিয়ার আয়োজিত এই ইভেন্টটি বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিজিবিএ, ইপিবি এবং আইবিসিসিআই, এলেবিসিসিআই, কেবিসিসিআই ও বিজিসিসিআইয়ের মতো আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থার সমর্থন পেয়েছে।

বাংলাদেশ যখন আরও উদ্ভাবনী ও টেকসই টেক্সটাইল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলেছে, ইনটেক্স বাংলাদেশ বিশ্ব বাজারের সাপ্লাই চেইনের সাথে দেশটিকে সংযুক্ত করার একটি প্রধান সমর্থক হিসেবে কাজ করছে।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Foreign investment in the country has decreased by 5 percent

দেশে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ১৩ শতাংশ

দেশে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ১৩ শতাংশ

দেশে ২০২৪ সালে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ—এফডিআই আগের বছরের চেয়ে ১৩ শতাংশ কমেছে। গত বছর প্রকৃত এফডিআই এসেছে ১২৭ কোটি ডলার। স্থানীয় মুদ্রায় যা প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ। ২০২৩ সালে নিট এফডিআই ছিল ১৪৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার।

গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক সংস্থা আঙ্কটাডের বিশ্ব বিনিয়োগ রিপোর্টে বিদেশি বিনিয়োগ আসার ওই পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে।

বাংলাদেশে ২০২৪ সাল শেষে বিদেশি বিনিয়োগের স্থিতি ১ হাজার ৮২৯ কোটি ডলার, যা দেশের জিডিপির মাত্র ৪ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ায় এ ক্ষেত্রে গড় হার ১৩ শতাংশ।

ভারতের হার ১৪ শতাংশ। ভুটানের মতো দেশে এ হার ১৭ শতাংশ। বাংলাদেশে ২০২৪ সালে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগে অর্থের ঘোষণার পরিমাণও কমেছে।

ঘোষিত অর্থের পরিমাণ ১৭৫ কোটি ডলার। গত বছরের তুলনায় যা ৩৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে বৈধভাবে বিদেশে মাত্র ৭০ লাখ ডলারের বিনিয়োগ হয়েছে। স্থানীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৮৫ কোটি টাকা।

গত পাঁচ বছরের মধ্যে ২০২১ সালে দেশের বাইরে সর্বাধিক ৮ কোটি ডলারের বিনিয়োগ করেন বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ব যখন আরো গভীর সহযোগিতা ও বিস্তৃত সুযোগ সৃষ্টির দিকে এগিয়ে যাওয়ার কথা, তখন ঘটছে তার বিপরীত। ২০২৪ সালে বৈশ্বিকভাবে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) ১১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার, যা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় ধাক্কা। অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগে মন্দা, শিল্প খাতে চাপ এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রতি কম মনোযোগ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। বাণিজ্য উত্তেজনা, নীতিগত অনিশ্চয়তা এবং ভূরাজনৈতিক বিভাজন বৈশ্বিক বিনিয়োগ পরিবেশকে আরো জটিল করে তুলছে।

তবে অন্ধকারে কিছুটা আশার আলোও রয়েছে। ডিজিটাল অর্থনীতিকে সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও এর প্রবৃদ্ধি এখনো অসম। ডিজিটাল বিভাজন দূর করতে ডিজিটাল পরিকাঠামোয় বিনিয়োগ অত্যন্ত জরুরি। কারণ, ডিজিটাল সংযুক্তি হতে পারে অন্তর্ভুক্তিমূলক অগ্রগতির একটি শক্তিশালী চালিকাশক্তি, যদি তা সবার কাছে পৌঁছানো যায়। প্রতিবেদনটি সরকারগুলোকে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের মাধ্যমে গ্লোবাল ডিজিটাল কমপ্যাক্ট এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজিএস) অর্জনে সহায়তা করার বিষয়ে ব্যবহারিক নির্দেশনা দিয়েছে। এ সময়টাই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন একসঙ্গে কাজ করার, যাতে আরো সহনশীল ও টেকসই বিশ্ব গড়ে তোলা যায়। সে লক্ষ্যে প্রতিবেদনটি বিভিন্ন নীতিগত ধারণা ও পরামর্শ তুলে ধরেছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন এবং এর আগ থেকে জ্বালানি সংকটের কারণে বিদেশি বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করে। যার প্রভাব কিছুটা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করা হলেও সেটি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য সন্তোষজনক নয় বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

ওয়ার্ল্ড ইনভেস্টমেন্ট রিপোর্ট ২০২৪ এ প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ২০২০ সালের চেয়ে ২০২১ সালে এফডিআই প্রবাহ বেড়েছিল ১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। ২০২২ সালে প্রবাহ ২০ দশমিক ১৬ শতাংশ বেড়ে ছিল ৩৪৮ কোটি ডলার। ২০২৩ সালে ১৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ কমে প্রবাহ হয়েছে ৩০০ কোটি ৪০ লাখ ডলারের। ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ভিয়েতনামে বেড়েছে ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ। কম্বোডিয়ায় এফডিআই প্রবৃদ্ধি ২০২৩ সালে হয়েছে ১০ দশমিক ৬১ শতাংশ। পাকিস্তানে এফডিআই প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

২০২৩ সালে ৪৫টি স্বল্পোন্নত দেশে (এলডিসি) এফডিআই ১৭ শতাংশ বেড়ে ৩১ বিলিয়ন ডলারে দাড়িয়েছে। এর প্রায় ৫০ শতাংশ প্রবাহ কেন্দ্রীভূত ছিল কম্বোডিয়া, ইথিওপিয়া, বাংলাদেশ, উগান্ডা এবং সেনেগাল—এ পাঁচ দেশে। গত এক দশকে স্বল্পোন্নত দেশের বহিঃখাতগুলোয় অর্থায়নের অন্যান্য উৎসের তুলনায় এফডিআই প্রবৃদ্ধিই পিছিয়ে আছে। সামগ্রিকভাবে উন্নয়ন সহায়তা এবং রেমিট্যান্স হার স্বল্পোন্নত দেশের তুলনায় উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলোর তুলনায় বেশি। ওই বছর বৈশ্বিকভাবে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) প্রবাহ ১০ শতাংশের বেশি কমে ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলারে স্থবির ছিল।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Bri has invented three new varieties of rice

নতুন আরো তিন জাতের ধান উদ্ভাবন করেছে ব্রি

নতুন আরো তিন জাতের ধান উদ্ভাবন করেছে ব্রি

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) ধানের আরও তিনটি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছে। এর মধ্যে একটি লবণাক্ততা সহনশীল, একটি উচ্চফলনশীল বোরো এবং অন্যটি ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী। এ নিয়ে ব্রি আটটি উচ্চফলনশীল বা হাইব্রিড জাতসহ মোট ১২১টি ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে।

নতুন উদ্ভাবিত তিনটি জাত হলো; লবণাক্ততা সহনশীল ব্রি-১১২, উচ্চফলনশীল বোরো ব্রি-১১৩ ও ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী ব্রি-১১৪। গত বুধবার জাতীয় বীজ বোর্ডের (এনএসবি) ১১৪তম সভায় নতুন এ তিনটি জাত অনুমোদন করা হয়।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ানের সভাপতিত্বে বোর্ড সভায় ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মোহাম্মদ খালেকুজ্জামানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ জানায়, নতুন উদ্ভাবিত জাতগুলোর মধ্যে ব্রি ধান-১১২ লবণাক্ততা সহনশীল ও মাঝারি জীবনকালীন রোপা আমনের জাত। এ জাতের ডিগপাতা প্রচলিত ব্রি ধান-৭৩-এর চেয়ে খাড়া। ব্রি ধান-১১২ লবণাক্ততার মাত্রাভেদে হেক্টর প্রতি ৪ দশমিক ১৪ থেকে ৬ দশমিক ১২ টন ফলন দিতে সক্ষম। এ জাতের জীবনকাল ১২০ থেকে ১২৫ দিন এবং গাছের উচ্চতা ১০৩ থেকে ১০৫ সেন্টিমিটার। গাছের কাণ্ড মজবুত। এ কারণে ঢলে পড়ে না। এ জাতের ধানের চাল মাঝারি চিকন ও সাদা। ভাত ঝরঝরে। এটি লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে। দানা মাঝারি চিকন ও শিষ থেকে ধান সহজে ঝরে পড়ে না। জীবনকাল তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় উপকূলীয় লবণাক্ত অঞ্চলে ফসল কর্তনের পর মধ্যম উঁচু থেকে উঁচু জমিতে সূর্যমুখী ও লবণ সহনশীল সরিষা আবাদের সুযোগ তৈরি হবে।

ব্রি ধান-১১৩ জাতটি বোরো মৌসুমের জনপ্রিয় জাত ব্রি-২৯-এর বিকল্প হিসেবে ছাড়করণ করা হয়েছে। এটি মাঝারি চিকন দানার উচ্চফলনশীল জাত। এ জাতের ডিগপাতা খাড়া, প্রশস্ত ও লম্বা এবং ধান পাকলেও সবুজ থাকে। গাছ শক্ত ও মজবুত বিধায় সহজে হেলে পড়ে না। জাতটির গড় জীবনকাল ১৪৩ দিন। চালের আকার-আকৃতি মাঝারি চিকন ও রং সাদা। দেখতে অনেকটা নাজিরশাইলের মতো। এ ধানের চালে অ্যামাইলোজের পরিমাণ ২৮ শতাংশ এবং ভাত ঝরঝরে। এ ছাড়া প্রোটিনের পরিমাণ ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। প্রস্তাবিত জাতের ফলন পরীক্ষায় দেখা গেছে, জাতটি ব্রি ধান-৮৮-এর চেয়ে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি ফলন দিয়েছে। এ জাতের গড় ফলন হেক্টরে ৮ দশমিক ১৫ টন। উপযুক্ত পরিবেশে সঠিক ব্যবস্থাপনা করলে জাতটি হেক্টরে ১০ দশমিক ১ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম।

কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, নতুন ব্রি ধান-১১৪ বোরো মৌসুমের দীর্ঘ জীবনকালীন ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী জাত। এ জাতের ডিগপাতা খাড়া, প্রশস্ত ও লম্বা। গাছ মজবুত এবং হেলে পড়ে না। পাতার রং গাঢ় সবুজ। এর গড় ফলন হেক্টরপ্রতি ৭ দশমিক ৭৬ টন। দানা মাঝারি মোটা এবং সোনালি বর্ণের। ভাত ঝরঝরে হয়। জাতটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতাসম্পন্ন। ফলে এ জাতের ধান চাষে কৃষককে ব্লাস্ট রোগ নিয়ে বাড়তি চিন্তা করতে হবে না, উৎপাদন খরচ সাশ্রয় হবে।

ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান বলেন, জাতগুলো অনুমোদন লাভ করায় এখন আমরা এসব ধানের বীজ বাজারজাত করতে পারব। কৃষকেরা এ জাতের ধান চাষ করে লাভবান হবেন। তাদের উৎপাদনও বাড়বে। উপকূলীয় অঞ্চলে পানিতে লবণের পরিমাণ বেশি থাকায় অনেক সময় ধান চাষ করা যেত না। এখন আমাদের ব্রি ধান-১১২ সেসব এলাকায় সহজে চাষ করা যাবে। এ ছাড়া অন্য জাতগুলো আমাদের ধান উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আমরা আশাবাদী।

সূত্র: বাসস

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Customs VAT and Tax Office will be open on June 23 and 26

২১ ও ২৮ জুন কাস্টমস, ভ্যাট ও কর কার্যালয় খোলা থাকবে

২১ ও ২৮ জুন কাস্টমস, ভ্যাট ও কর কার্যালয় খোলা থাকবে

আগামী ২১ ও ২৮ জুন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং এর অধীনে সব কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর কার্যালয় খোলা থাকবে। শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও ওই দুই দিনও খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

মূলত রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনবিআর। গতকাল বুধবার এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে এনবিআর। গত ২ জুন আগামী অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। ২২ জুন বাজেট চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) মোট ৩ লাখ সাড়ে ২১ হাজার কোটি টাকা আদায় করেছে। এটি সাময়িক হিসাব। ভ্যাটের রিটার্ন দাখিলের হিসাবের এই সংখ্যা আরও বাড়বে। লক্ষ্য অর্জনে শুধু জুন মাসেই সব মিলিয়ে ১ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করতে হবে এনবিআরকে।

এনবিআরকে চলতি অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকার সংশোধিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে। মূল লক্ষ্য ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
From now on the dollar will be market based Governor

এখন থেকে ডলারের দাম হবে বাজারভিত্তিক: গভর্নর

জুনের মধ্যে আইএমএফের ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়
এখন থেকে ডলারের দাম হবে বাজারভিত্তিক: গভর্নর

বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে উল্লেখ করে ডলার-টাকার বিনিময় হার এখন থেকে বাজারনির্ভরভাবে নির্ধারণের সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দুবাই থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন।

এ সিদ্ধান্তের ফলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে বাংলাদেশ আগামী জুন মাসের মধ্যে ১৩৩ কোটি ডলারের ঋণ কিস্তি পাবে বলেও জানান তিনি।

ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করা নিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশের দর-কষাকষি চলছিল। মূলত সে কারণে আইএমএফ ঋণের কিস্তি ছাড় করছিল না। এর মধ্যে গতকাল জানা যায়, বাংলাদেশ ডলারের বিনিময় আরও নমনীয় করতে রাজি হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে চলমান ৪৭০ কোটি ডলারে ঋণের দুটি কিস্তি একসঙ্গে ছাড় করতে রাজি হয়েছে আইএমএফ।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, গত ৯ মাসে রিজার্ভ থেকে কোনো ডলার বিক্রি করা হয়নি, তবুও বিনিময় হার স্থিতিশীল রয়েছে এবং তাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না। এ অবস্থায় বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং এ বিষয়ে ব্যাংকারদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, বাজারভিত্তিক করায় হঠাৎ করে ডলারের রেট অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। দীর্ঘদিন ধরে ডলারের রেট ১২২ টাকার আশপাশে রয়েছে এবং তা সেখানেই থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের ডলারের রেট দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা-সরবরাহ অনুযায়ী নির্ধারিত হবে, বাইরের দেশের নির্দেশে নয়। বর্তমানে বাজারে ডলারের সরবরাহও পর্যাপ্ত রয়েছে।

তবে, তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, দুবাইভিত্তিক কিছু সিন্ডিকেট বাজারে অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা করতে পারে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সতর্ক থাকবে এবং সার্বক্ষণিক নজরদারি করবে। কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার, ড. মো. হাবিবুর রহমান, কবির আহমেদ, উপদেষ্টা আহসান উল্লাহ এবং নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান।

এদিকে গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) চলতি বছরের জুনের মধ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির জন্য নির্ধারিত ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার একত্রে ছাড় করবে।

বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার স্বার্থে সকল বিষয় সতর্কতার সাথে পর্যালোচনা করে উভয়পক্ষ রাজস্ব ব্যবস্থাপনা, মুদ্রা বিনিময় হারসহ অন্যান্য সংস্কার কাঠামো বিষয়ে সম্মত হয়েছে। রাজস্ব ব্যবস্থাপনা এবং বিনিময় হার ব্যবস্থায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বিষয়ে অধিকতর পর্যালোচনার লক্ষ্যে চতুর্থ রিভিউ সম্পন্ন হওয়ার পর উভয় রিভিউয়ের জন্য নির্ধারিত কিস্তির অর্থ একত্রে ছাড় করা হবে বলে বিগত তৃতীয় রিভিউয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের এপ্রিলে ঢাকায় অনুষ্ঠিত চতুর্থ রিভিউয়ের সময় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত ব্যাংক-ফান্ড সভায় এবিষয়ে আলোচনা চলমান ছিল।

এ ছাড়া বিশ্ব ব্যাংক, এডিবি, এআইআইবি, জাপান এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে আরও প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেট সহায়তা জুন মাসের মধ্যে পাবে বলে বাংলাদেশ প্রত্যাশা করছে। উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে এ অর্থ পাওয়া গেলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও শক্তিশালী হবে। ফলে মুদ্রার বিনিময় হারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয় যে, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বাজেট সহায়তা গ্রহণের ক্ষেত্রে যেসকল সংস্কার কর্মসূচি নেয়া হচ্ছে তা সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব বিবেচনায় পরিকল্পিত এবং জাতীয় স্বার্থে গৃহীত। এ সকল সংস্কার কর্মসূচির ক্ষেত্রে উন্নয়ন সহযোগীদের কার্যক্রম শুধুমাত্র কারিগরি সহায়তা প্রদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
The United States and China agree to reduce tariffs

শুল্ক কমাতে একমত যুক্তরাষ্ট্র ও চীন

শুল্ক কমাতে একমত যুক্তরাষ্ট্র ও চীন

বাণিজ্যযুদ্ধের তীব্রতা কমিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। পরস্পরের ওপর আরোপ করা পাল্টাপাল্টি বাণিজ্য শুল্ক ৯০ দিনের জন্য ব্যাপক পরিসরে কমাতে একমত হয়েছে দুই দেশ। গতকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতিকে হুমকির মুখে ফেলে দেওয়া বাণিজ্যযুদ্ধের উত্তেজনা কমাতেই এই চুক্তি হয়েছে বলে জানা গেছে। খবর বিবিসির।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক আরোপের আগে চীনের ওপর মার্কিন শুল্ক ছিল ২০ শতাংশ। পরে নতুন শুল্ক যখন ট্রাম্প ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেন তখন তিনি বলেছিলেন তিন মাস সবার জন্য বাড়তি ১০ শতাংশ শুল্ক হার প্রযোজ্য হবে।

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় দুপক্ষের মধ্যে আলোচনার পর এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, গঠনমূলক ও দৃঢ় আলোচনার পর উভয় দেশ ৯০ দিনের জন্য শুল্ক স্থগিত করতে রাজি হয়েছে। এর আওতায় দেশ দুটি পারস্পরিক শুল্ক ১১৫ শতাংশ কমাবে।

চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত বর্তমান ১৪৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনবে। অন্যদিকে চীন মার্কিন পণ্যের ওপর আরোপ করা ১২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনবে। উভয় দেশের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, আগামী ১৪ মে থেকে শুল্কের এই কাঁটছাট কার্যকর হবে।

যুক্তরাষ্ট্র-চীন বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে স্কট বেসেন্ট বলেন, আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে এসেছি যে, আমাদের অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। দুই পক্ষের প্রতিনিধিদলই একমত হয়েছে যে তারা বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে চায় না। মার্কিন অর্থমন্ত্রী বলেন, উভয় দেশই নিজেদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করতে পেরেছে। আমাদের লক্ষ্য ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্যের পথে অগ্রসর হওয়া এবং এটি তারই সূচনা।

প্রথম দফায় শুল্ক আরোপের ফলে বিশ্ববাজারে বড় ধরনের অস্থিরতা দেখা দিয়েছিল এবং বৈশ্বিক মন্দার শঙ্কাও জোরালো হয়েছিল। তবে এবার এই চুক্তির ঘোষণায় বিশ্ব শেয়ারবাজারে তাৎক্ষণিক ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

শুল্ক কমানোর চুক্তির ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্ববাজারে চাঙাভাব দেখা দেখা গেছে। হংকংয়ের প্রধান সূচক ৩ শতাংশ বেড়ে গেছে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ স্টক ফিউচারের উত্থান হয়েছে। এছাড়া বাড়তি শুল্ক স্থগিতের খবরে চীনা মুদ্রা ইউয়ানের দর বেড়ে ছয় মাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইউরোপীয় শেয়ারবাজারগুলোও উচ্চমুখী প্রবণতায় লেনদেন শুরু করে এবং মার্কিন বাজারগুলোও ২ থেকে ৩ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে, এই সময়সীমার মধ্যে চীনের উচিত হবে ফেন্টানিল নামক ভয়াবহ মাদকের অবৈধ রপ্তানি বন্ধে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া। এ বিষয়ে চীনের সদিচ্ছা দেখে ওয়াশিংটন আশাবাদ প্রকাশ করেছে।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানিলের প্রবেশ ঠেকাতে চীন পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে না এমন অভিযোগ তুলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমে চীনা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
NBR will form special units to prevent money smuggling

টাকা পাচার ঠেকাতে বিশেষ ইউনিট গঠন করবে এনবিআর

টাকা পাচার ঠেকাতে বিশেষ ইউনিট গঠন করবে এনবিআর
টাকার পাচার রোধে এনবিআর তিনটি উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছে। প্রথমত, আমদানি-রপ্তানিতে মিথ্যা ঘোষণা ও ট্রান্সফার প্রাইসিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাচার ঠেকাতে দক্ষ কর্মকর্তাদের দিয়ে বিশেষায়িত একটি ইউনিট গঠন করা যেতে পারে। এই ইউনিটের সদস্যরা প্রতারণা হয় বা হতে পারে- এমন বিল অব এন্ট্রিগুলো তদারকি ও তদন্ত করবেন। এই ইউনিট গঠন হলে একদিকে টাকা পাচার বন্ধের পাশাপাশি এনবিআরের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির সক্ষমতা বাড়বে।

টাকা পাচার ঠেকাতে বিশেষ ইউনিট গঠন করতে চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। মূলত বাণিজ্যের আড়ালে যে বিদেশে টাকা পাচার হয়, তা প্রতিরোধ করতেই এমন উদ্যোগ। দুই প্রক্রিয়ায় টাকা পাচার হয় বলে মনে করে এনবিআর। এগুলো হলো-আমদানি-রপ্তানিতে মিথ্যা ঘোষণা এবং ট্রান্সফার প্রাইসিং। এসব কারণে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব লোকসান হয় বলে মনে করে এনবিআর।

সম্প্রতি এনবিআর মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি রাজস্ব কৌশল নামে ১০ বছরের একটি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে। সেখানে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে।

গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটির (জিএফআই) উদ্ধৃতি দিয়ে এনবিআরের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাণিজ্যের আড়ালে (মিথ্যা ঘোষণা) ৭০ শতাংশ অর্থ পাচার হয়ে থাকে।

টাকার পাচার রোধে এনবিআর তিনটি উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছে। প্রথমত, আমদানি-রপ্তানিতে মিথ্যা ঘোষণা ও ট্রান্সফার প্রাইসিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাচার ঠেকাতে দক্ষ কর্মকর্তাদের দিয়ে বিশেষায়িত একটি ইউনিট গঠন করা যেতে পারে। এই ইউনিটের সদস্যরা প্রতারণা হয় বা হতে পারে- এমন বিল অব এন্ট্রিগুলো তদারকি ও তদন্ত করবেন। এই ইউনিট গঠন হলে একদিকে টাকা পাচার বন্ধের পাশাপাশি এনবিআরের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির সক্ষমতা বাড়বে।

সাধারণত আমদানিকালে তুলনামূলক বেশি দাম দেখিয়ে অর্থ দেশের বাইরে পাচার করা হয়। মূলত মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে এভাবে টাকা পাচার করা হয়। দুই বছর আগে এনবিআর পাচার টাকা ফেরত আনার সুযোগ দিলেও কেউ তা নেননি।

এনবিআরের দ্বিতীয় সুপারিশ হলো, বিদেশি কূটনীতিক মিশনে রাজস্ব খাতের কর্মকর্তাদের জন্য এটাশে পদ সৃষ্টি করা। এনবিআরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাণিজ্যের আড়ালে মিথ্যা ঘোষণা এবং ট্রান্সফার প্রাইসিং ইস্যুটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে। যেসব দেশ থেকে পণ্য আসে, সেখানে পণ্যের মূল্য কত, তা জানা সম্ভব হয় না। আবার নানাভাবে বিভিন্ন দেশে টাকা পাচার হয়। এনবিআর বলছে, বিভিন্ন দূতাবাসে, বিশেষ করে বাংলাদেশে বড় বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোতে রাজস্ব খাতে কর্মকর্তাদের জন্য এটাশে পদ সৃষ্টির সুপারিশ করেছে এনবিআর। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জাপান, ভারতের মতো দেশ এমন পদ সৃষ্টি করেছে বলে এনবিআরের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এনবিআরের তৃতীয় সুপারিশ হলো, পাচার টাকা ফেরত আনতে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। যেমন দক্ষ জনবল নিয়োগ দেওয়া; যেসব দেশে পাচার হয়, সেখানে তদারকি ও পর্যবেক্ষণ বৃদ্ধি; আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করা। এসব করা হলে পাচার টাকা চিহ্নিত করে ফেরত আনা সহজ হবে। এ ছাড়া টাকা পাচারে সহায়তাকারীদের শাস্তির আওতায় আনার কথাও বলেছে এনবিআর।

এনবিআরের একজন কর্মকর্তা বলেন, টাকা পাচারের কারণে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারায় সরকার। টাকা পাচার বন্ধ করতে পারলে অর্থনীতি আরও চাঙা হবে। এ ছাড়া সরকারের রাজস্ব আদায়ও বাড়বে।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর অর্থনীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রতিবেদন তৈরি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। বর্তমান বাজারদরে এর পরিমাণ ২৮ লাখ কোটি টাকা। এই হিসাবে প্রতিবছর গড়ে ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আর্থিক খাতের রাঘববোয়াল (ক্রীড়নক), আমলা ও মধ্যস্বত্বভোগীরা এই পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন। গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটি রিপোর্টস (জিএফআইআরএস) এবং কিছু নির্দিষ্ট পূর্বানুমানের ভিত্তিতে টাকা পাচারের হিসাব করেছে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি।

দেশ থেকে কারা, কীভাবে, কোথায় টাকা পাচার হয়েছে- সেই চিত্র তুলে ধরে শ্বেতপত্রে বলা হয়, টাকা পাচারের জন্য দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আর্থিক খাতের ক্রীড়নক, আমলাদের মধ্যে এক ধরনের অনৈতিক চক্র গড়ে ওঠে। ঘুষ-দুর্নীতি, আর্থিক অপরাধ, মিথ্যা ঘোষণার আড়ালে বাণিজ্য, ব্যাংক থেকে চুরি করা টাকা, খেলাপি ঋণের অর্থ, রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রকল্পের খরচ বাড়িয়ে দেখানো, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, কর ফাঁকি- এসব কর্মকাণ্ডের অর্থ পাচার করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, হংকং, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভারতসহ করের অভয়ারণ্য নামে পরিচিত ছোট ছোট দেশে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার হয়েছে। মূলত বাড়ি কিনে এবং ব্যবসায় বিনিয়োগ করে টাকা পাচার করা হয়।

মন্তব্য

p
উপরে