ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা কোম্পানিগুলোর এই সীমা পেরিয়ে যাওয়ার যে চেষ্টা বুধবার দেখা গিয়েছিল, সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে তা আরও বাড়ল।
আগের দিন ফ্লোর প্রাইসের বেশি দরে লেনদেন হওয়া কোম্পানির সংখ্যা যেখানে ছিল ১৫৪টি, সেটি আরও বেড়ে হলো ১৬৬টিতে। এখনও দুই শর বেশি কোম্পানির দর ফ্লোর প্রাইসে লেনদেন হলেও সংখ্যাটি গত দুই সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে কম।
আগের দিন ফ্লোর প্রাইসে লেনদেন হয়েছিল ২১৬টি কোম্পানি, যা নেমে এসেছে ২০২টিতে। কোনো লেনদেন না হওয়া কোম্পানির সংখ্যা অবশ্য আগের দিনের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। ১৯ থেকে বেড়ে এটি হয়েছে ২১।
বুধবার ফ্লোর থেকে বের হয়ে আসার প্রবণতা শুরুর আগের দুই দিন ২৩২টি করে কোম্পানি লেনদেন হয়েছে ফ্লোর প্রাইসে। এর মধ্যে মঙ্গলবার ক্রেতা ছিল না ৩০টি কোম্পানির, সোমবার ৪২টি কোম্পানির।
টানা তৃতীয় কর্মদিবস বেড়েছে সূচক, সেই সঙ্গে লেনদেন। ২২ পয়েন্ট বেড়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক ডিএসইএক্সের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৪১০ পয়েন্টে, যা গত ১৭ অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ। সেদিন সূচক ছিল ৬ হাজার ৪১৩ পয়েন্ট।
২২ কর্মদিবস পর প্রথমবারের মতো লেনদেন ছাড়াল দেড় হাজার কোটি টাকার ঘর। লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫১২ কোটি ৪৪ লাখ ৯ হাজার টাকা, যা গত ২ অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ। সেদিন লেনদেন ছিল ১ হাজার ৫৩৩ কোটি ৪০ লাখ ৮১ হাজার টাকা।
এদিন বেড়েছে ৮৪টি কোম্পানির শেয়ারের দর, বিপরীতে কমেছে ৮২টির দর। যেগুলোর দর বেড়েছে তার ১০টির দর বেড়েছে ৯ শতাংশের বেশি। সেই তুলনায় দর কমেছে এমন কোম্পানির পতনের হার ছিল কম।
চেক নগদায়নের আগেও শেয়ার কেনা যাবে বলে বিএসইসি থেকে আদেশ জারির পাশাপাশি আইএমএফের সঙ্গে বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে ফ্লোর প্রাইস না থাকার বিষয়টি জানানোর ঘটনায় আতঙ্ক কমে বাজার ধীরে ধীরে স্বাভাবিকের দিকে ফিরবে বলে আশা করছেন বিনিয়োগকারীরা। পর পর তিন দিন ইতিবাচক প্রবণতায় সে আশা আরও জোরাল হয়েছে।
গত ২৮ জুলাই সূচক ছয় হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে যাওয়ার পর বিএসইসি করোনাকালের মতোই পতন ঠেকাতে ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়। পরদিন থেকে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়িয়ে উত্থানে ফেরার ইঙ্গিত দেয়।
তবে করোনাকালের মতো এবারের উত্থান ভারসাম্য মূল্য ছিল না। বড়জোর ৩০টি কোম্পানির শেয়ারের অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির কারণে সূচক তরতর করে বাড়তে থাকলেও বেশির ভাগ কোম্পানি ফ্লোর প্রাইসেই গড়াগড়ি খেতে থাকে।
এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা যত বাড়ে, ফ্লোরের কোম্পানির সংখ্যা তত বেশি বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে সংখ্যাটি ছাড়িয়ে যায় পৌনে তিন শ।
এই তালিকায় উঠে আসে বহুজাতিক ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, গ্রামীণফোন, রেকিট বেনকিনজার, স্কয়ার ফার্মা, স্কয়ার টেক্সটাইল, ইউনাইটেড পাওয়ার, ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, আইডিএলসি, ডিবিএইচ, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা অয়েলের মতো শক্তিশালী মৌল ভিত্তির কোম্পানি। এমনকি বেক্সিমকো লিমিটেডও আগের বছরের চেয়ে দ্বিগুণ আয় করার তথ্য জানিয়ে শেয়ারপ্রতি ৫০ পয়সা লভ্যাংশ কম দেয়ার সিদ্ধান্ত জানানোর পর নেমে আসে ফ্লোর প্রাইসে।
বুধবারই বেক্সিমকো লিমিটেড ও স্কয়ার ফার্মা ফ্লোর ছেড়ে বের হয়ে এসেছে। পরদিন দর আরও খানিকটা বেড়েছে। বস্ত্র ও জ্বালানি খাতেরও কয়েকটি কোম্পানি শেয়ার বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন দর ছেড়ে বের হয়েছে।
সেই সঙ্গে অনেকটা বেড়ে গিয়ে পরে দর হারানো ওরিয়ন গ্রুপের দুটি কোম্পানির শেয়ারদর বেশ খানিকরা বেড়েছে। স্বল্প মূলধনি যেসব কোম্পানির শেয়ারদর লাফ দেয়ার পর অনেকটাই কমে গিয়েছিল, সেগুলোরও অনেকগুলোকে কিছু হারানো টাকা ফিরে পাওয়া গেছে।
তবে এখনও সূচক বা বাজার মূলধনে প্রভাব ফেলে এমন বহুজাতিক বা দেশি মৌল ভিত্তির বহু কোম্পানি ফ্লোর প্রাইসে পড়ে আছে। শেয়ারপ্রতি আয় ও সম্পদমূল্যের বিবেচনায় আকর্ষণীয় দরে থাকা ব্যাংক খাতের শেয়ারগুলোরও চাহিদা নেই বললেই চলে।
শার্প সিকিউরিটিজের পরিচালক সৈয়দ গোলাম ওয়াদুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সবাই (বিনিয়োগকারী) ভাবতে শুরু করেছিলেন, মার্কেট হয়তো অনেক খারাপ হবে। অনেকেই শেয়ার কিনছিলেন না, কিন্তু সেই জায়গা থেকে যখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে তখন আস্থা বাড়ছে। এটাই তো মার্কেটে হয়ে আসছে। আস্থা ফিরছে, বায়ার আসছে দেখেই, শেয়ারদর বেড়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘যখন প্যানিকড হয়ে পড়ে তখন দর কমে যায়, ফ্লোর প্রাইসে ক্রেতা থাকে না। আস্থা বাড়ার কারণে এখন যেসব শেয়ারের দাম একটু বেশিই বেড়ে গেছে, সেদিকে না গিয়ে ফ্লোর প্রাইসে থাকা শেয়ারের দিকে ঝুঁকছেন।’
ট্রেজার সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘ফ্লোর প্রাইস থেকে শেয়ারগুলো বের হওয়া বাজারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফ্লোর প্রাইসে যে ফান্ডগুলো আটকে ছিল সেটা রিলিজ হয়ে সেক্টরাল মুভমেন্ট হলেই বাজারের টার্নওভার বেড়ে যাবে। নতুন ফান্ড আসার প্রয়োজন পড়বে না, নতুন ফান্ড আসলে ভালো। তবে সেক্টরাল মুভমেন্ট হলে বাজারের টাকাতেই বাজার ঘুরে দাঁড়াবে।’
সূচকে প্রভাব যাদের
৪ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে ওরিয়ন ফার্মা। এদিন শেয়ারটির দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের দর ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৩ দশমিক ৬২ পয়েন্ট।
ইউনিক হোটেল সূচকে যোগ করেছে ৩ দশমিক ০৭ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
এর বাইরে সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ, নাভানা ফার্মা, জেএমআই হসপিটাল, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, স্কয়ার ফার্মা ও কোহিনূর কেমিক্যাল।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ২১ দশমিক ৭১ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ১ দশমিক ০৪ পয়েন্ট সূচক কমেছে বেক্সিমকো ফার্মার দরপতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে শূন্য দশমিক ৭৯ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শূন্য দশমিক ৯৭ পয়েন্ট কমেছে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের কারণে। শেয়ার প্রতি দাম কমেছে ২ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
বেক্সিমকো লিমিটেডের দর শূন্য দশমিক ৫১ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে শূন্য দশমিক ৯৫ পয়েন্ট।
এ ছাড়া বসুন্ধরা পেপার, জেনেক্স ইনফোসিস বাংলাদেশ, সি-পার্ল, ইস্টার্ন হাউজিং, এডিএন টেলিকম, মনোস্পুল ও আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৭ দশমিক ৫২ পয়েন্ট।
লেনদেন কমলেও সেরা বিবিধ খাত
বৃহস্পতিবার ৫টি খাতের লেনদেন শতকোটি ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে তিনটিতে লেনদেন হয়েছে দুইশ কোটির ওপরে। প্রায় সমান কোম্পানির দরবৃদ্ধি ও দরপতনের কারণে জীবন বিমা ছাড়া প্রধান খাতগুলোর সবগুলোতেই অপরিবর্তিত দরে লেনদেনের হার বেশি ছিল।
জীবন বিমায় কোনো দরপতন হয়নি। ১১টি বা ৮৪.৬২ শতাংশ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ২টির লেনদেন হয়েছে অপরিবর্তিত দরে। তবে সংখ্যায় দরবৃদ্ধি বেশি ছিল প্রকৌশল খাতে।
আর অপরিবর্তিত দরে বেশি লেনদেন হয়েছে বস্ত্র খাতে ৪৫টি, ব্যাংক ২৭টি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ১৮টি, মিউচ্যুয়াল ফান্ড ২৬টি, প্রকৌশলের ২২টি ও ফার্মার ১৫টির।
ছয়টি খাতে শত কোটির ওপরে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে একটির লেনদেন তিনশ কোটি ছাড়িয়েছে। সবচেয়ে বেশি দরবৃদ্ধি দেখা গেছে সাধারণ বিমা খাতে।
আর বস্ত্র খাতে সবেচেয়ে বেশি ৫১টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে অপরিবর্তিত দরে।
বুধবারের চেয়ে প্রায় শত কোটির কাছাকাছি লেনদেন কমলেও শীর্ষে রয়েছে বিবিধ খাত। হাতবদল হয়েছে ২৪২ কোটি ২৩ লাখ টাকা, যা আগের দিনে ছিল ৩১৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
তিনটি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৫টি করে কোম্পানির লেনদেন হয়েছে আগের দর ও দরপতনে।
একধাপ ওপরে উঠে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতে। হাতবদল হয়েছে ২২৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, যা গতকাল ছিল ১৭৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
১১টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১৫টির লেনদেন হয়েছে আগের দরে। আর দরপতন হয়েছে ৫টির।
২০০ কোটি ২২ লাখ টাকা লেনদেন করে তৃতীয় স্থানে ছিল প্রযুক্তি খাত। ৪টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১টির লেনদেন হয়েছে আগের দরে। ৬টি কোম্পানির দরপতন হয়েছে।
চতুর্থ সর্বোচ্চ ১১৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে প্রকৌশল খাতে। ১৫টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ২২টির লেনদেন হয়েছে অপরিবর্তিত দরে। ৫টির লেনদেন হয় দর কমে।
পাঁচে থাকা জ্বালানি খাতে হাতবদল হয়েছে ১১১ কোটি ২ লাখ টাকা। ৬টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১১টির লেনদেন হয়েছে আগের দরে। ৫টির লেনদেন হয়েছে দরপতনে।
এ ছাড়াও সাধারণ বিমা, সেবা ও আবাসন, ভ্রমণ ও অবকাশ, কাগজ ও মুদ্রণ এবং বস্ত্র খাতে লেনদেন হয়েছে ৮৬ থেকে ৭২ কোটির মধ্যে। বাকি খাতের লেনদেন ছিল ৫০ কোটির নিচে।
দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০
শীর্ষ দশের সব কটির দর বেড়েছে ৯ শতাংশের ওপরে। সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ দর বেড়ে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২৬ টাকা ৯০ পয়সায়, যা আগের দিনে লেনদেন হয়েছিল ১১৫ টাকা ৪০ পয়সায়।
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে ছিল বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন। শেয়ারটি হাতবদল হয়েছে ১৪৫ টাকা ৯০ পয়সায়। আগের দিনের দর ছিল ১৩২ টাকা ৭০ পয়সা।
নাভানা ফার্মার দর ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেড়ে ১০৯ টাকা ৬০ পয়সা বেচাকেনা হয়েছে। আগের দিনের সমাপনী দর ছিল ৯৯ টাকা ৭০ পয়সা।
এ ছাড়া তালিকায় ছিল- প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স, আইটি কনসালট্যান্টস, ইন্দো-বাংলা ফার্মা, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, পেনিনসুলা চিটাগং ও বিডি থাই ফুড।
দরপতনের শীর্ষ ১০
সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ কমে মনোস্পুলের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৪৭ টাকা ৮০ পয়সায়। আগের দিনে দর ছিল ৩৭৭ টাকা ৯০ পয়সা।
ইনফরমেশন সার্ভিসেসের দর ৭ দশমিক ০৬ শতাংশ কমে ৬৭ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। যার দর ছিল ৭২ টাকা ২০ পয়সা।
৬ দশমিক ৬১ শতাংশ দর কমে সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার বেচাকেনা হয়েছে ৭৭ টাকা ৬০ পয়সায়। আগের দিনের দর ছিল ৮৩ টাকা ১০ পয়সা।
শীর্ষ দশের মধ্যে ছিল আমরা টেকনোলজিস, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স।
আরও পড়ুন:পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
মন্তব্য