কবি তারাপদ রায়ের কবিতা ‘গরিবগঞ্জের রূপকথা’র মতো পরিস্থিতি অনেকটা। কবির সেই বড়সড় গ্রামটি গরিব, কারণ সেখানে টাকা নেই। এ কারণে কলের চাকাও নেই। যেহেতু কলের চাকা নেই, তাই মানুষের হাতে টাকাও নেই।
নিত্যপণ্যের দর বাড়ছে, এ কারণে মানুষ তার সংসারের খরচ কাটছাঁট করতে বাধ্য হচ্ছে। আর যে খাতে খরচ কমাচ্ছে, তাতে আবার আরেকজনের আয় কমে যাচ্ছে।
সরকারি হিসাবেই এখন মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ ছুঁই ছুঁই। অর্থাৎ একই পণ্য বা সেবা নিতে গত বছর এক হাজার টাকা খরচ হলে এখন তা লাগছে ১১০০।
যে সংসারের ব্যয় ছিল ২০ হাজার, তার এখন লাগছে ২২ হাজার, যে সংসারের ব্যয় ছিল ৪০ হাজার তার এখন লাগছে ৪৪ হাজার।
বাড়তি ব্যয় সামাল দিতে কেউ শখ আহ্লাদের পেছনে ব্যয় কমাচ্ছে, কেউ সন্তানদের পেছনে ব্যয় কমাচ্ছে, কেউ ঘোরাঘুরি বাদ দিচ্ছে, কাপড় কম কিনছে, বাজারে কম দামি মাছ ও সবজি কিনছে, কেউ আড্ডায় কম যাচ্ছে, বিয়েসহ সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ না নেয়া, কেউবা রিকশা বাদ দিয়ে হাঁটছেন, বাসার গৃহকর্মী বাদ দিয়েছেন, সন্তানকে প্রাইভেট টিউশন দেয়ার বদলে নিজেই পড়াচ্ছেন।
এই খরচ কমিয়ে দেয়ায় আবার অর্থনীতিতে পড়ছে টাকার টান। যেমন পাড়ার খাবারের দোকানে বিক্রি কমে গেছে, ফুটপাতে ভ্যানের ফল বিক্রেতারও আয় আগের মতো নেই।
গৃহশ্রমিককে বাদ দিয়ে নিজেদের টিকে থাকার যে চেষ্টা, তাতে সেই গৃহশ্রমিকের সংসার কীভাবে চলবে? যে খাবার দোকানে বিক্রি কমে গেছে, সেই দোকানের উদ্যোক্তা বা কর্মচারীদের বিপত্তি আরও বেড়েছে, যে কাপড় বিক্রেতাকে বাড়তি দর পেয়েও মুখ ভার করে রাখতে হচ্ছে আগের চেয়ে কম বিক্রির কারণে, তিনি আবার চায়ের দোকানে কম যাওয়ায় চা বিক্রেতার মন খারাপ করতে হচ্ছে। কারণ বিক্রি কমে গেছে তারও।
রিকশায় না চেপে হেঁটে সাদেকুর রহমানরা দুই বেলায় হেঁটে অফিসে আসা-যাওয়া করায় তার শারীরিক কসরত হচ্ছে বটে, তবে দুই বেলায় তিনি ৫০ টাকা করে যে ১০০ টাকা দুজন রিকশাচালককে দিতেন, সেই টাকাটা এখন তারা কম পাওয়ায় তার সংসারের খরচ মেটানো হয়ে গেছে কঠিন।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ কবে বা কীভাবে তা নিয়ে অর্থনীতিবিদরা সুনির্দিষ্ট কোনো ধারণা দিতে পারছেন না। মূল্যস্ফীতি কমাতে দেশে দেশে যে কৌশলগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে, কাজে আসছে না সেগুলোর কিছুই। সব মিলিয়ে একটি হতাশাজনক সময়ে মানুষ।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম মনে করেন, মানুষের এই খরচ কমানোর প্রবণতা অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘মানুষ ব্যয় কাটছাঁট করলে তার প্রভাব সার্বিক অর্থনীতিতে পড়বে। কারণ ব্যয় কমাতে কেউ বাইরে খাওয়া কমিয়ে দিচ্ছে, তখন রেস্টুরেন্টের ব্যবসা কমবে। ঘোরাঘুরি কম করলে পর্যটন এলাকার মানুষের জীবনমানে প্রভাব পড়বে। পোশাক কেনা কমে যাওয়ায় বস্ত্র ব্যবসায়ীদের ব্যবসায়ও নেতিবাচক ধারা দেখা দেবে। অর্থাৎ সার্বিক অর্থনীতি চাপে পড়বে।’
অর্থনীতিতে এভাবে টাকার স্রোত কমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বেতন বাড়ানোর সুপারিশ এসেছে। তবে ডলারের বিপরীতে টাকার দর কমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বেতন বা মজুরি বাড়ানোর মতো পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে কি না, এ নিয়ে ও আছে প্রশ্ন।
বিশ্ব অর্থনীতিতে যে মন্দার কথা বলাবলি হচ্ছে, তাতে প্রায় সব দেশের মতো ভীষণ চাপে বাংলাদেশের নির্দিষ্ট আয়ের মানুষরাও। খরচ বেড়ে যাচ্ছে, কিন্তু আয় বাড়ছে না। এই অবস্থায় সংসার চালানো হয়ে গেছে কঠিন।
যেভাবে টিকে আছে সংসারগুলো
বেসরকারি ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের কর্মকর্তা সাদেকুর রহমান। বাসা রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে। স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে সংসার।
নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি তার জীবনাচরণে বেশ পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। তিনি বলেন, ‘আগে যাত্রাবাড়ী থেকে মতিঝিল অফিসে রিকশায় যেতাম, এখন সে পথ হেঁটে যাই।’
সাদেকুর মাছ-মাংসেও খরচ কমিয়েছেন সংসারের খরচ মেটাতে গিয়ে। আগে ভাজি, তরকারি মিলিয়ে তিনটি আইটেম থাকলেও এখন খাবার টেবিলে ওঠে দুটি।
শখ-আহ্লাদ বা কিছুটা বিলাস করার সুযোগ নেই শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা শফিকুল ইসলামের। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন তিনি। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে চারজনের সংসার।
বাড়তি ব্যয় সামাল দিতে দুই মাস আগে তিন রুমের বাসা ছেড়ে দুই রুমের বাসা নিয়েছেন। আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ি বা দাওয়াত-আড্ডায় যাচ্ছেন না সিদ্ধান্ত নিয়েই। সপ্তাহে ছুটির দিন সবাই মিলে বাইরে খাওয়ার অভ্যাসটিও বাদ দিয়েছেন।
শফিকুল বলেন, ‘দুই বছরে বাসাভাড়া বেড়েছে দুই হাজার টাকা। এতদিন মেয়ে স্কুলে পড়ত। সামনের জানুয়ারিতে ছেলেকেও স্কুলে দিতে হবে। তখন খরচ আরও বাড়বে। কী করব জানি না।’
করোনার কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে কোম্পানি ভালো ব্যবসা করতে পারেনি। এ জন্য গত দুই বছরে বেতন বাড়েনি। স্ত্রী একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে চাকরি করতেন। করোনার সময় সেটি বন্ধ হয়ে আর চালু হয়নি। ফলে ব্যয় বাড়লেও কার্যত তার পরিবারের আয় এই সময়ে কমেছে।
বেসরকারি একটি কলেজের প্রভাষক আমেনা সুলতানা। তার স্বামী একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন। দুই মেয়ে ও শ্বশুর-শাশুড়ি নিয়ে বেশ সচ্ছলভাবেই চলছিল এতদিন। কিন্তু হঠাৎ করেই জীবন হয়ে গেছে এলোমেলো।
বাড়তি ব্যয় সামাল দিতে গিয়ে তিনি যা জানালেন, তার অর্থ হচ্ছে, প্রতিদিন একটি রুটিনে যন্ত্রের মতো সব করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘মাসে দু-একবার হলে গিয়ে সিনেমা দেখা, রেস্তোরাঁয় খেতে যেতাম। এখন সেটা বাদ দিয়েছি। আগে নিয়মিত বিউটি পার্লারে যেতাম, এখন সেটাও বাদ দিয়েছি। প্রতি মাসে পোশাক বাবদ যে ব্যয় ছিল সেটা এখন সংসারের অন্য কাজে ব্যয় করতে হচ্ছে। সংসারের ওপর চাপও বাড়ছে।’
বেসরকারি একটি টেলিভিশনে চাকরি করেন সজল রহমান। মিরপুর ৬০ ফিটে থাকেন। স্ত্রী ও এক ছেলে নিয়ে সংসারের আয়ের উৎস তিনি একাই।
আমেনার মতোই অবস্থা তার জীবনেও। বলেন, ‘ছুটির দিনে পরিবারের সবাই বাইরে ঘোরাঘুরি ও রেস্টুরেন্টে খেতাম। এখন সেটা বাদ দিয়েছি। এখন ঘরেই কাটে ছুটির দিন। তাতে খরচটা বাঁচে।’
নারায়ণগঞ্জের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন টিটোন রহমান। বেতন ১৬ হাজার টাকা। ওভারটাইম কাজ করে তা ২০ হাজার হয়। স্ত্রী ও তিন বছরের এক ছেলেকে নিয়ে সাবলেটে থাকেন।
টিটোন বলেন, ‘ঘরভাড়া চার হাজার দেয়ার পর বাজার করতেই হিমশিম অবস্থা। আগে সপ্তাহে তিন দিন মাছ আর এক দিন মাংস খেতাম। কিন্তু গত তিন থেকে চার মাস মাছ সপ্তাহে দুই দিন আর মাংস মাসে দুইবার খেতে পারছি। বাচ্চাকে প্রতিদিন একটি করে ডিম খেতে দেব, তাও ডিমের দাম চড়া। এভাবে চলতে থাকলে সামনে কীভাবে সব সামাল দেব, বুঝতে পারছি না।’
আরেক ঝুঁকি ঋণের জাল
শেওড়াপাড়ার ছোট্ট একটি টিনের ঘরে বাস করেন আকলিমা খাতুন। স্বামী ও দুই মেয়ে নিয়ে তার সংসার। পাঁচ বাসায় কাজ করে মাসে আয় ৯ হাজার টাকা। আকলিমার স্বামী স্থায়ী কিছু করেন না। কাজের খোঁজে বের হয়ে কোনো কোনো দিন ফেরত আসতে হয় তাকে।
আকলিমা বলেন, ‘চার হাজার টাকা ঘর ভাড়া দেয়ার পর বাকি ৫ হাজার দিয়ে কোনটা রেখে কোনটা কিনব? চারজনের সংসারে চাল, ডাল, তেল কিনতেই সব শেষ। মাছ-মাংস তো দূরের কথা, সবজি কিনে খাব সে উপায়ও নেই। ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি বাজারে নেই।’
বাড়তি ব্যয় সামাল দিতে গিয়ে তিনি যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, সেটি তার ভবিষ্যৎকে আরও অনিশ্চিত করে তুলতে পারে।
আকলিমা জানান, এনজিও বা কোনো সংস্থা বা কারও থেকে টাকা ধার করছেন প্রতি মাসেই। কিন্তু এখানেও দিতে হচ্ছে চড়া সুদ। ২০ হাজার ধার নিলে দেয়া লাগে ২৫ হাজার টাকা। প্রতি মাসেই কিস্তি দিতে হয় দেড় থেকে দুই হাজার টাকা।
কত বেড়েছে খরচ
পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে সেপ্টেম্বর মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ১০ শতাংশ। এ মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
অর্থাৎ গত বছর যা ব্যয় ছিল ১০ হাজার টাকা, চলতি বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৯১০ টাকা। এটি সামগ্রিক গড় হিসাব। ক্ষেত্রবিশেষে ব্যয় আরও বেড়েছে।
যেমন চালের দাম এখন ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি। কাঁচাবাজারে মানুষের ব্যয়ও বেশ বেড়ে গেছে। বেশির ভাগ সবজি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬০ টাকার বেশি দরে।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের হিসাবে দেখা গেছে, এক বছরের ব্যবধানে চালের দাম ১০ থেকে ১৩ শতাংশ বেড়েছে। তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ১৫ থেকে ২৪ শতাংশ। মানভেদে মসুর ডাল সর্বোচ্চ ১৮ শতাংশ, ডিমের দাম ৩১ শতাংশ, লবণ ১২ শতাংশের ওপরে, লেখার কাগজ ২২ শতাংশ, গুঁড়া দুধ মানভেদে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ বেড়েছে। তরল দুধের দর এই সময়ে ৭৫ টাকা থেকে বেড়ে ৯৫ টাকা হয়ে গেছে।
বেতন বাড়ানোর পরামর্শ
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাড়তি ব্যয় নির্বাহে সরকারি ও বেসরকারি চাকরিজীবীদের বিশেষ ইনক্রিমেন্ট দেয়া যেতে পারে। সরকারি নিম্নপদে কর্মরতদের জন্য বিশেষ ইনক্রিমেন্ট সরকার বিবেচনা করবে। আর বেসরকারিদের ক্ষেত্রে সরকারের অনুরোধে তারা বিষয়টি বাস্তবায়ন করবে। শ্রমিক ও অন্য পেশাজীবীদের মজুরি পুনর্নির্ধারণও দরকার। এখানেও সরকারের উদ্যোগ নিতে হবে।
হতদরিদ্র মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বাড়ানোর পরামর্শও এসেছে। তিনি বলেন, ‘এসব বিষয় বিবেচনা করে আয় যদি কিছুটা স্বাভাবিকের কাছাকাছি রাখা যায়, তাহলে অন্তত ভোগে কাটছাঁট করতে হবে না। মানুষের জীবনযাত্রায় যেসব খাত জড়িত সেসব সংযুক্ত খাতগুলোতে নেতিবাচক প্রভাবের মাত্রা কম থাকবে।’
অর্থনীতিবিদ এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘মানুষের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। শুধু বরাদ্দ বাড়ালেই হবে না, এর সুষ্ঠু বণ্টন যেন হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’
আরও পড়ুন:পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখায় প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে শাখা ম্যানেজারসহ ৩ কর্মকর্তাকে আটকের পর কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আনোয়ার হোসেন সাগর। এদিন দুপুরে তাদের আদালতে প্রেরণ করে সাঁথিয়া থানা পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের জিআরও এএসআই মাহবুবুর রহমান জানান, বিকেলে সাঁথিয়া থানা থেকে এনে তাদের আদালতে তোলা হয়। এ সময় কেউ তাদের জন্য জামিন আবেদন করেননি। ফলে আদালত তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আটককৃতরা হলেন- অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপক (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) সুজানগর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা হারুন বিন সালাম, সিনিয়র অফিসার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর এলাকার বাসিন্দা আবু জাফর এবং ক্যাশিয়ার বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সুব্রত চক্রবর্তী।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী বিভাগীয় অফিস থেকে ৫ সদস্যবিশিষ্ট অডিট টিম কাশিনাথপুর শাখায় অডিটে আসে। দিনভর অডিট করে তারা ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আর্থিক অনিয়ম পান। এ বিষয়ে সাঁথিয়া থানায় ওই শাখার ম্যানেজার (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) হারুন বিন সালাম, ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী ও সিনিয়র অফিসার আবু জাফরকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দিলে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে তাদের তিনজনকে আটক করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অডিটে অনিয়ম ধরা পড়লে তাদের আটক করে সাঁথিয়া থানা পুলিশকে খবর দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আজ (শুক্রবার) দুপুরে জিডির ভিত্তিতে আটককৃতদের আদালতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে দুদক আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরডিআরএস বাংলাদেশ-এর ট্রাস্টি বোর্ডের নতুন চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হলেন ফারুক আহমেদ।
ট্রাস্টি বোর্ডের ৬৬তম সভায় এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ফারুক আহমেদ ২৭ এপ্রিল থেকে পরবর্তী তিন বছরের জন্য চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালন করবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বাস্থ্য বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিপ্রাপ্ত ফারুক আহমেদের উন্নয়ন খাতে রয়েছে বিস্তৃত অভিজ্ঞতা।
তিনি এক সময় ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন এবং ঢাকায় বিশ্বব্যাংক কার্যালয়ে বিভিন্ন পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জেনেভাভিত্তিক গ্যাভি, দ্যা ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স (এঅঠও)-এর বোর্ড সদস্য ছিলেন, এছাড়া তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিশ্বব্যাংকের বিভিন্ন কমিটিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ফারুক আহমেদ সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানি (এসএমসি) এন্টারপ্রাইজের পরিচালনা পরিষদের একজন সদস্য। তিনি বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ ওয়ার্কিং গ্রুপেরও একজন সদস্য।
ফারুক আহমেদ ২০২০ সালের ১৬ মার্চ থেকে আরডিআরএস-এর ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
আরডিআরএস বিশ্বাস করে, ফারুক আহমেদের নেতৃত্বে সংস্থাটি দেশজুড়ে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি অব্যাহত রাখতে এবং এ সম্পর্কিত কার্যক্রমকে বেগবান করতে সক্ষম হবে। প্রেস রিলিজ
উৎসবমুখর পরিবেশে বৃহস্পতিবার উদযাপন করা হয়েছে ১৩৭তম বন্দর দিবস।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে বন্দর ভবন চত্বরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য ও বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলন করেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।
ওই সময় বোর্ড সদস্য (প্রকৌশল) কমোডর মোহাম্মদ মাহবুবুবর রহমানসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পতাকা উত্তোলনকালে চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থানরত সব জলযান ও জাহাজ থেকে একনাগাড়ে এক মিনিট হুইসেল বাজানো হয়। এরপর বন্দর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহায়েল উপস্থিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে বন্দর দিবসের কেক কাটেন ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদ, বন্দরের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার ও অন্যান্য সংগঠনের নেতারা।
কর্ণফুলীর মোহনায় ১৩৬ বছর আগে ২৫ এপ্রিল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর। ইংরেজ শাসনামলের প্রথম দিকে ইংরেজ ও দেশীয় ব্যবসায়ীরা বার্ষিক এক টাকা সালামির বিনিময়ে নিজ ব্যয়ে কর্ণফুলী নদীতে জেটি নির্মাণ করেন। পরে ১৮৬০ সালে প্রথম দুটি অস্থায়ী জেটি নির্মাণ করা হয়। ১৮৭৭ সালে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার গঠিত হয়।
১৮৮৮ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে দুটি মুরিং নির্মাণ হয়। একই বছরের ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার কার্যকর হয়। এরপর ১৮৯৯ থেকে ১৯১০ সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার এবং আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে যুক্তভাবে চারটি স্থায়ী জেটি নির্মাণ করে। ১৯১০ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে রেলওয়ের সংযোগ সাধন হয়।
১৯২৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দরকে মেজর পোর্ট ঘোষণা করা হয়। সেই থেকেই চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রেখে আসছে।
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে টানা তৃতীয় দিনের মতো কমেছে স্বর্ণের দাম। ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ভরিতে কমেছে ৬৩০ টাকা। সে হিসাবে স্বর্ণের ভরি দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫৬১ টাকা। আগের দিন বুধবার তা ছিল এক লাখ ১৪ হাজার ১৯১ টাকা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়।
স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠনটি জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের দাম কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা ৫০ মিনিট থেকে স্বর্ণের নতুন নির্ধারিত দাম কার্যকর হবে।
বাজুস এর আগে চলতি এপ্রিল মাসের ৬, ৮ ও ১৮ তারিখ তিন দফা স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে ভালো মানের স্বর্ণের ভরিতে ৬ এপ্রিল ১ হাজার ৭৫০ টাকা, ৮ এপ্রিল ১ হাজার ৭৫০ টাকা ও ১৮ এপ্রিল দুই হাজার ৬৫ টাকা বাড়ানো হয়। মাঝে ২০ এপ্রিল ভরিতে ৮৪০ টাকা দাম কমানোর পরদিন ২১ এপ্রিল আবার ৬৩০ টাকা বাড়ায় বাজুস।
এবার শুরু হয় দাম কমানোর পালা। সবশেষ দাম বাড়ানোর দু’দিন পর ২৩ এপ্রিল ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে তিন হাজার ১৩৮ টাকা ও ২৪ এপ্রিল দু’হাজার ৯৯ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয় বাজুস। আর বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ভরিতে ৬৩০ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ টানা তিন দিনে স্বর্ণের দাম ভরিতে কমেছে পাঁচ হাজার ৮৬৮ টাকা।
সোনার দামে এমন উত্থান-পতনের কারণ জানতে চাইলে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখন নতুন পদ্ধতি বা পলিসি অনুসরণ করে গোল্ডের দাম নির্ধারণ করি। সেটি হচ্ছে বিশ্ব স্বীকৃত ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল পলিসি।
‘এতদিন আমরা আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে গোল্ডের দাম নির্ধারণ করতাম। সেক্ষেত্রে বিশ্ববাজারে যখন স্বর্ণের দাম কমত তখন আমরা কমাতাম। আর যখন বাড়ত তখন বাড়াতাম।’
তিরি আরও বলেন, ‘এখন আমরা আমাদের স্বর্ণের সবচেয়ে বড় বাজার তাঁতীবাজারের বুলিয়ান মার্কেট ফলো করে দর নির্ধারণ করি। এই বাজারে স্বর্ণের দাম ঘণ্টায় ঘণ্টায় উঠা-নামা করে। সেটা অনুসরণ করে আমরা নতুন দর নির্ধারণ করে থাকি। সেক্ষেত্রে দিনে দু’বারও গোল্ডের দাম বাড়ানো-কমানো হতে পারে।’
আরও পড়ুন:কোভিড-১৯ মহামারির অভিঘাতে সমগ্র বিশ্ব যখন টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে পতিত হয়, ঠিক সেই সময় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে টেনে তুলতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিশ্বের দরবারে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যায়।
যদিও একটি শ্রেণি বাজারে নেতিবাচক ভূমিকা রাখতে বরাবরই সক্রিয় ছিল। তবে দূরদর্শী নেতৃত্বগুণে বিনিয়োগকারীদের অর্থের সুরক্ষা দিতে বারবার বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হতে দেননি অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
সম্প্রতি বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে অস্বাভাবিক আচরণ করছে পুঁজিবাজার। নিয়ন্ত্রক সংস্থাও এ পরিস্থিতি সামাল দিতে এরই মধ্যে অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করে বাজারকে স্থিতিশীল করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এমনকি পরিস্থিতি অনুকূলে আনতে গতকাল ফ্লোর প্রাইসমুক্ত সব শেয়ারে একদিনের দর কমার নিম্নসীমা (সার্কিট ব্রেকার) ৩ শতাংশে বেঁধে দিয়েছে সংস্থাটি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএসইসির সময়োপযোগী এমন পদক্ষেপ বাজারকে আবারও টেনে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে সন্দেহভাজন বেশকিছু লেনদেন পরিলক্ষিত হয়েছে বাজারে। এতে বিশেষ একটি শ্রেণি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য বাজারকে ম্যানিপুলেট করার চেষ্টা করছে। কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসও এতে জড়িত রয়েছে। বাজারে অবাঞ্ছিত বিক্রির আদেশ দিয়ে তারা অস্থিরতা তৈরি করছে। তাছাড়া বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে বাজারে একটা শ্রেণি স্বার্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। ফলে বেশ কিছুদিন ধরে বাজার কিছুটা অস্বাভাবিক আচরণ করছে।
এ বিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে বেশ কিছু ট্রেডার নিজেদের মধ্যে যোগশাজসের মাধ্যমে প্রথমে কম দরে শেয়ার বিক্রি করত। পরে তাদের দেখাদেখি সাধারণ বিনিয়োগকারীরা যখন প্যানিক হয়ে শেয়ার বিক্রি করত তখন তারা আবার কম দরে শেয়ারগুলো কিনে নিত। এভাবে তারা নিজেদের মধ্যে শেয়ার লেনদেন করে প্যানিক সৃষ্টির মাধ্যমে ভালো শেয়ারগুলোর দাম কমাত। এই কাজে তাদের বেশ কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসও সহযোগিতা করত।’
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে শেয়ারের দর কমার কথা নয়। গুটি কয়েক অসাধু ট্রেডারের কারসাজিতে বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এতে বড় বড় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আল-আমিন বলেন, ‘এক শ্রেণির অসাধু বিনিয়োগকারী চাচ্ছেন বর্তমান কমিশন বিদায় হয়ে নতুন কেউ দায়িত্বে আসুক, যাতে তারা নতুন করে আরও সুযোগ নিতে পারেন। তারাই বিভিন্ন দুর্বল শেয়ারে কারসাজি করে সুবিধা নিচ্ছেন।
‘ফোর্সড সেলের মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার তারা কম দরে কিনে নিচ্ছেন। কমিশনের উচিত হবে কারসাজিকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা, যাতে তারা বারবার বাজারকে ম্যানিপুলেট করার সাহস না পায়।’
এদিকে শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক সময়ের টানা পতন ঠেকাতে আবারও শেয়ারের মূল্যসীমায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে বিএসইসি এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে।
ওই আদেশে বলা হয়, এখন থেকে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর এক দিনে ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না। বর্তমানে দরভেদে কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত দরপতন হতে পারে।
দেশের পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে আদেশে জানানো হয়েছে। সার্কিট ব্রেকারের এ সিদ্ধান্ত বুধবার থেকে কার্যকর করতে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে নির্দেশও দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘আজকের এই সার্কিট ব্রেকার আরোপ বাজারে কারসাজি রোধ করবে। এটি সন্দেহভাজন লেনদেন বন্ধ করবে। আর এ সিদ্ধান্তের ফলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও উচ্চ সম্পদশালী একক বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি সক্রিয় হবে বলে আশা করছি।’
তিনি বলেন, ‘অনেক ভালো শেয়ার বর্তমানে আন্ডারভ্যালুতে আছে। এখানে তারা বিনিয়োগ করবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।’
সার্কিট ব্রেকার বাজারের দরপতন ফেরাতে ব্যর্থ হলে আবারও ফ্লোর প্রাইস দেয়ার কোনো সিদ্ধান্ত আছে কি না জানতে চাইলে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আশা করছি, আমাদের বাজারে আর কখনও ফ্লোর প্রাইস দিতে হবে না। শিগগিরই বাজার একটা স্থিতিশীল অবস্থানে ফিরবে।’
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম একদিনের ব্যবধানে আরেক দফা কমেছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম ভরিতে দু’হাজার ১৩৯ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। বলা হয়েছে,
স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। নতুন নির্ধারিত দাম বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেল ৪টা ৫০ মিনিট থেকে কার্যকর হবে।
বাজুস এর আগের দিন মঙ্গলবার ঘোষণা দিয়ে ওই দিন থেকে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা নির্ধারণ করে। সে হিসাবে দুদিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে কমলো ৫ হাজার ২৭৭ টাকা।
নতুন নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ১৩৯ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৯৯৫ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৯ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের ভরি ১ হাজার ৭১৪ টাকা কমিয়ে ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম ভরিতে ১ হাজার ৩৭৭ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৫ হাজার ২০৯ টাকা।
অবশ্য স্বর্ণালঙ্কার কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের এর চেয়ে বেশি অর্থ গুনতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে স্বর্ণের গহনা বিক্রি করা হয়। সে সঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় নূন্যতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হবে ১ লাখ ২৩ হাজার ৩৫৮ টাকা।
স্বর্ণের দাম কমানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রূপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রূপার ভরি ১ হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করা আছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের বাজারে গত বছর প্রথমবারের মতো ল্যাপটপ নিয়ে আসে ট্রেন্ডি প্রযুক্তি ব্র্যান্ড ইনফিনিক্স। ইনবুক ওয়াইটু প্লাস নামের ল্যাপটপটি দিচ্ছে চমৎকার ডিজাইন, শক্তিশালী পারফরম্যান্স ও সাশ্রয়ী দামের প্রতিশ্রুতি। অল্প সময়ের মধ্যেই প্রযুক্তিপ্রেমী শিক্ষার্থী ও এক্সিকিউটিভদের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে এ ল্যাপটপ।
দেখে নেওয়া যাক কী আছে ইনফিনিক্স ইনবুক ওয়াইটু প্লাস ল্যাপটপটিতে। এর ফিচার, পারফরম্যান্স ও ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতাই বা কেমন।
ডিজাইন ও গঠন
স্লিক ও হালকা ডিজাইনের ইনফিনিক্স ইনবুক ওয়াইটু প্লাস সহজেই সবার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। শিক্ষার্থী ও ব্যস্ত এক্সিকিউটিভদের জন্য এ ল্যাপটপ যথার্থ। এর পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক মেটালিক ডিজাইন স্থায়িত্ব নিশ্চিত করে। একই সঙ্গে দেয় প্রিমিয়াম অনুভূতি। স্লিক প্রোফাইল ও প্রাণবন্ত ডিসপ্লের সঙ্গে যুক্ত সরু বেজেল ল্যাপটপটির সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে। ফলে বাজারের একই ধরনের দামি ল্যাপটপের সমকক্ষ হয়ে ওঠে ওয়াইটু প্লাস।
তা ছাড়া এর মসৃণ এজি গ্লাস টাচ প্যানেলের কারণে সিল্কি-স্মুথ ও স্থায়ী টাচের অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। ১.৫ মিলিমিটার কি ট্র্যাভেল এবং ব্যাকলাইটিংযুক্ত রেসপনসিভ কি-বোর্ড টাইপিংকে করে তোলে সহজ ও আরামদায়ক। তাই কম আলোতেও টাইপ করতে কোনো সমস্যা হয় না।
পারফরম্যান্স ও প্রোডাক্টিভিটি
১১তম প্রজন্মের কোর আই৫ প্রসেসর ও ৮ জিবি র্যাম রয়েছে ইনফিনিক্স ওয়াইটু প্লাসে। স্টোরেজের প্রয়োজন মেটাতে এতে আছে ৫১২ জিবি এনভিএমই পিসিআইই এসএসডি। প্রোডাক্টিভিটি সফটওয়্যার, ওয়েব ব্রাউজ করা কিংবা কনটেন্ট স্ট্রিম করাসহ সব ধরনের উচ্চ চাহিদাসম্পন্ন অ্যাপ্লিকেশন চালানো যায় খুব সহজেই। এর ইন্টিগ্রেটেড ইন্টেল ইউএইচডি গ্রাফিকস সাধারণ গেমিং ও মাল্টিমিডিয়া এডিটিংয়ের জন্য স্বাচ্ছন্দ্যময় গ্রাফিকস পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে। উইন্ডোজ ১১ পরিচালিত ইনফিনিক্স ইনবুক ওয়াইটু প্লাসের অপারেটিং সিস্টেম সবার পরিচিত ও ব্যবহার করা সহজ।
ডিসপ্লে ও মাল্টিমিডিয়া অভিজ্ঞতা
উজ্জ্বল রং ও ওয়াইড অ্যাঙ্গেলের সঙ্গে স্পষ্ট ও পরিষ্কার ভিজ্যুয়াল দেয় ১৫.৬ ইঞ্চি ফুল এইচডি আইপিএস ডিসপ্লেযুক্ত ইনবুক ওয়াইটু প্লাস। ৮৫ শতাংশ স্ক্রিন-টু-বডি রেশিওর সঙ্গে চমৎকার মাল্টিমিডিয়া অভিজ্ঞতার জন্য ডিসপ্লেটি দারুণ। কাজেই আপনার প্রিয় নেটফ্লিক্স সিরিজ দেখা কিংবা ফটো এডিট করা— সবই হবে স্বাচ্ছন্দ্যে।
ল্যাপটপটিতে আছে ডুয়েল এলইডি ফ্ল্যাশ ও এআই নয়েজ ক্যান্সেলেশন প্রযুক্তিযুক্ত ১ হাজার ৮০ পিক্সেলের ফুল এইচডি+ ক্যামেরা। এর ফলে ভিডিও কলের অভিজ্ঞতা হবে আরও উন্নত।
ব্যাটারি লাইফ ও চার্জিং
ইনবুক ওয়াইটু প্লাসের ৫০ ওয়াট-আওয়ার ব্যাটারি ক্যাপাসিটি কোনো চার্জ ছাড়াই প্রতিদিনের কাজে আট ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাকআপ দিতে সক্ষম। পাশাপাশি এর ৪৫ ওয়াট টাইপ-সি পোর্টযুক্ত চার্জারে ডিভাইসটি দ্রুত ও সহজেই চার্জ করা যায়। ফলে ভারী চার্জার বহনের প্রয়োজন হয় না।
দাম
ল্যাপটপটির বর্তমান বাজারমূল্য ৫৮ হাজার ৯৯০ টাকা। অনুমোদিত ইনফিনিক্স রিটেইলার থেকে ল্যাপটপটি কেনা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য