আগের দিন ফ্লোর প্রাইসে লেনদেন হয়েছিল ২৩৭টি কোম্পানির শেয়ার। সেই সংখ্যাটি হলো ২১৯। বুধবার দর বেড়েছে বা কমেছে এমন কোম্পানির সংখ্যা ছিল ১১৭, সেটি বেড়ে হয়েছে ১৩২-এ। সেই সঙ্গে পাঁচ কর্মদিবস পর লেনদেন ছাড়িয়েছে হাজার কোটির ঘর।
ফ্লোর প্রাইস ও চেক নগদায়ন ইস্যুতে চাপে পড়া পুঁজিবাজারে সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসইতে বৃহস্পতিবারের এই চিত্র বিনিয়োগকারীদের মনের ভার হয়তো কাটায়নি, তবে কেউ কেউ পরিস্থিতি ঘুরে দাঁড়ানোর সূক্ষ্ম ইঙ্গিত পেলেও পেতে পারেন।
টানা তৃতীয় দিন দরপতন হওয়া কোম্পানির তুলনায় দর বৃদ্ধি পেয়েছে, এমন কোম্পানির সংখ্যা ছিল বেশি। এদিন বেড়েছে ৭৩টি কোম্পানির দর, বিপরীতে দর হারিয়েছে ৫৯টি। আর আগের দিনের দরে লেনদেন হয়েছে ২১৯টি কোম্পানি, যেগুলোর প্রায় সবগুলোই বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন দর বা ফ্লোর প্রাইসে রয়েছে।
দিন শেষে ডিএসইর সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৩৩ পয়েন্ট, অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬৩৭৭ পয়েন্টে।
অব্যাহত দরপতনের মধ্যে গত ৩১ জুলাই থেকে দ্বিতীয় দফায় ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর টানা দূই মাস সূচক ছিল ঊর্ধ্বমুখী। এই সময়ের মধ্যে ৬০০ পয়েন্টের বেশি সূচক থাকলেও বিপুলসংখ্যক কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর থেকে উঠতে না পারা নিয়ে আক্ষেপ অবশ্য ছিল।
এর মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ, বাংলাদেশের রিজার্ভে পতন, বিদ্যুতের লোডশেডিং ও মূল্যস্ফীতিসহ নানা ইস্যুতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যখন নানা গুজব, গুঞ্জন ছড়াচ্ছে, সে সময় অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির একটি নির্দেশের পর তৈরি হয় নতুন চাপ।
১১ অক্টোবর বিএসইসি জানায়, চেক জমা দিয়েই শেয়ার কেনা যাবে না। চেক নগদায়ন হওয়ার পরই কিনতে হবে শেয়ার। এরপর থেকে লেনদেন ক্রমাগত কমতে থাকে। স্টক ব্রোকারদের সমিতির পক্ষ থেকে বিএসইসিকে জানানো হয়, এই নির্দেশনা না পাল্টালে বাজারে চাপ বাড়বে।
সত্য সত্য চাপ বাড়তে থাকে এরপর থেকে। ফ্লোর প্রাইসের মধ্যে যেসব কোম্পানির শেয়ারদর লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল, দর হারাতে থাকে সেগুলোও। আর ফ্লোর প্রাইসের কিছু বেশি দর রয়েছে, এই কোম্পানিগুলো দর হারিয়ে ফ্লোরে নেমে আসতে থাকে।
তবে মঙ্গলবার থেকে এই কোম্পানিগুলো আবার উত্থানে ফিরতে শুরু করে। আর টানা তিন কর্মদিবসে হারানো দর কিছুটা ফিরেও পেয়েছে তারা। তবে শক্তিশালী মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর এখনও ফ্লোরেই অবস্থান করছে, যা পুঁজিবাজারের দুর্বলতার প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবারও সেসব কোম্পানির শেয়ারদরই বেশি বেড়েছে, সেগুলোর দর বৃদ্ধি নিয়ে গত প্রায় তিন মাস ধরে নানা আলোচনা চলছ। বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদরই গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে। তাদের শেয়ারপ্রতি আয়, লভ্যাংশ, শেয়ারপ্রতি সম্পদ, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, ব্যবসা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা বা অন্য কোনো ইস্যু নেই, সেগুলো বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করবে।
সিংহভাগ ক্ষেত্রেই এসব কোম্পানির শেয়ারসংখ্যা কম। আর এই বিষয়টি ব্যবহার করেই নানা সময় শেয়ারদর অস্বাভাবিক হারে বাড়তে দেখা যায়।
এদিনও মোট লেনদেনের ৬০ শতাংশ হয়েছে কেবল ২০টি কোম্পানিতে। সূচক যত পয়েন্ট বেড়েছে তার ৮০ শতাংশ বেড়েছে ১০টি কোম্পানির কারণে।
মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯৪ কোটি ৯৮ লাখ ৫২ হাজার। এর আগে সবশেষ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল ১৯ অক্টোবর। সেদিন হাতবদল হয় ১ হাজার ১৭৮ কোটি ৭১ লাখ ২ হাজার টাকা।
এর মধ্যে সর্বাধিক লেনদেন হওয়া ২০টি কোম্পানিতেই হাতবদল হয়েছে ৬৬৭ কোটি ৭৮ লাভ ১৭ হাজা টাকা।
দর বেড়েছে এমন ৭৮টি কোম্পানিতে লেনদেন হয়েছে ৬০৮ কোটি ৩০ লাখ। দর কমেছে এমন কোম্পানিগুলোতে লেনদেন হয়েছে ৩৬৩ কোটি ২০ লাখ টাকা।
অন্যদিকে ফ্লোরে লেনদেন হওয়া দুই শতাধিক কোম্পানিতে হাতবদল হয়েছে কেবল ৩১ কোটি টাকা।
এদিন সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া সোনালী পেপারে হাতবদল হয়েছে ১২৬ কোটি ৪৬ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। অর্থাৎ ফ্লোরে থাকা কোম্পানিগুলোর মোট লেনদেনের চার গুণেরও বেশি লেনদেন হয়েছে স্বল্প মূলধনি সোনালী পেপারে, যেটিকে ২০০৯ সালে ওটিসি মার্কেটে পাঠানো হয়েছিল।
পুঁজিবাজারের লেনদেন নিয়ে ট্রেজার সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজকে ট্রানজেকশন মোটামুটি হয়েছে, তবে সিলেক্টিভ আইটেমের বাইরে বায় প্রেশার খুব বেশি দেখা যায়নি।
‘আইটি খাতে কয়েকটা কোম্পানি ও ওরিয়ন ফার্মা ভালো করেছে। গতকাল বেশ কিছু কোম্পানির পর্ষদ সভা ছিল, কিন্তু সেই হিসেবে ওই সব কোম্পানি খুব একটা পারফর্ম করতে পারেনি।’
ফ্লোর প্রাইসে থাকা কোম্পানিগুলোর লেনদেন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ফ্লোর প্রাইসের থাকা কোম্পানিগুলো ওই সার্কেল থেকে বের হতে পারছে না। ওই শেয়ার বিক্রি করতে না পারায় টাকা আটকে আছে। যার কারণে সেক্টরার মুভমেন্ট হচ্ছে না, এমনকি সেসবেও লেনদেন হচ্ছে না খুব একটা।’
কাগজ ও মুদ্রণ খাতের বড় লাফ
অবিশ্বাস্য উত্থান হয়েছে কাগজ ও মুদ্রণ খাতের। আগের দিন ৩০ কোটির নিচে লেনদেন হওয়া খাতটি বৃহস্পতিবার শীর্ষে উঠে এসেছে।
খাতের ৬টি কোম্পানিতে লেনদেন হয়েছে ২১৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ২১.৩৮ শতাংশ। বুধবার লেনদেন হয়েছিল ২৬ কোটি ৩৭ লাখ বা ২.৬৩ শতাংশ।
যে ছয়টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে তার মধ্যে দর বেড়েছে ৩টির, কমেছে ২টির ও একটির লেনদেন হয়েছে আগের দরে।
১৪৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা লেনদেন করে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিবিধ খাত। আগের দিনে ১৩৪ কোটি ৫ লাখ টাকা বা ১৯.২৭ শতাংশ লেনদেন করে শীর্ষে ছিল খাতটি। খাতটিতে ৩টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৩টির লেনদেন হয়েছে অপরিবর্তিত দরে ও ৫টির দরপতনে।
এর পরেই ওষুধ ও রসায়ন খাতে লেনদেন হয়েছে ১৪১ কোটি ৮০ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। আগের দিনে এর পরিমাণ ছিল ১০৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ৭টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১৩টির লেনদেন হয়েছে আগের দরে। দরপতন হয়েছে ১০টির।
চতুর্থ সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে প্রকৌশল খাত। ১১৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। বুধবার শতকোটির নিচে ছিল লেনদেন। ১০টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ২২টির লেনদেন হয়েছে আগের দরে। দরপতন হয়েছে ৯টির।
আর কোনো খাতের লেনদেন শত কোটির ঘর অতিক্রম করেনি।
৬৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা লেনদেন করে পঞ্চম স্থানে থাকা প্রযুক্তি খাতের ৪টির দরবৃদ্ধির বিপরীতে আগের দরে লেনদেন হয়েছে ২টি কোম্পানির। ৪টি কোম্পানির দরপতন হয়েছে।
জ্বালানি খাতে ৫৮ কোটি ৩০ লাখ এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ৫২ কোটি ২০ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। বাকি খাতের লেনদেন পঞ্চাশ কোটির নিচে ছিল।
আগের দিনের মতোই সাধারণ বিমা, বস্ত্র, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিপুল সংখ্যক শেয়ার লেনদেন হয়েছে অপরিবর্তিত দরে, যার প্রায় সবই ফ্লোর প্রাইসে। আগের দিনের চেয়ে ৩টি কমে ২৩টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে ফ্লোর প্রাইসেই।
সূচকে প্রভাব যাদের
১০ দশমিক ৮০ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে বিকন ফার্মা। এদিন শেয়ারটির দর বেড়েছে ৮ দশমিক ১৮ শতাংশ।
সোনালী পেপারের দর ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৩ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট।
ওরিয়ন ফার্মা সূচকে যোগ করেছে ৩ দশমিক ২৬ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
এর বাইরে সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে ইউনিক হোটেল, বসুন্ধরা পেপার, শাহজিবাজার পাওয়ার, ইউনাইটেড পাওয়ার, নাভানা ফার্মা, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ও লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৮২ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ১ দশমিক ২৬ পয়েন্ট সূচক কমেছে বেক্সিমকো ফার্মার দরপতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে ১ দশমিক ০১ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১ দশমিক ০১ পয়েন্ট কমেছে তমিজউদ্দিন টেক্সটাইলের কারণে। শেয়ার প্রতি দাম কমেছে ৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
এসিআই ফর্মূলেশনের শেয়ারদর ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে শূন্য দশমিক ৭৭ পয়েন্ট।
এ ছাড়াও আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, ইস্টার্ন ক্যাবলস, বার্জার পেইন্টস, আল-আরব ব্যাংক, ইস্টার্ন হাউজিং, জেএমআই সিরিঞ্জেস ও বিডি ল্যাম্পসের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৫ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট।
দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০
১০ শতাংশ নগদ বা শেয়ার প্রতি ১ টাকা এবং ১:২ অনুপাতে বা বিদ্যমান ২টি শেয়ারের বিপরীতে একটি রাইট শেয়ার ইস্যু করার ঘোষণার পর সিনোবাংলার দর বেড়েছে ২৯.৯০ শতাংশ বা ১৮ টাকা। কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭৮ টাকা ২০ পয়সায়। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৬০ টাকা ২০ পয়সায়।
এর পরেই ১০.৯৩ শতাংশ দর বেড়েছে আফতাব অটোসের। ৫ শতাংশ করে নগদ ও বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণার পরে কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়ে লেনদেন হয়েছে ২৮ টাকা ২০ পয়সায়। আগের দিনে দর ছিল ২৫ টাকা ৬০ পয়সা।
সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের দর ৯.৯৪ শতাংশ বেড়ে ৫৮ টাকা ৬০ পয়সায় শেয়ার লেনদেন হয়েছে। গতকাল এটি ৫৩ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হয়েছিল।
শীর্ষ দশের মধ্যে বসুন্ধরা পেপার, নাভানা ফার্মা ও নাভানা সিএনজির দর বেড়েছে ৯ শতাংশের ওপরে। ইনফরমেশন সার্ভিসেস ও বিকন ফার্মার দর বেড়েছে ৮ শতাংশের বেশি। আর ইউনিক হোটেল ও ইনডেক্স অ্যাগ্রোর দর বেড়েছে ৭ শতাংশের ওপরে।
দর পতনের শীর্ষ ১০
এই তালিকার শীর্ষে ছিল তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল। ৮.৩৮ শতাংশ দর কমে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ২০৭ টাকা ৬০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। আগের দিনে লেনদেন হয় ২২৬ টাকা ৬০ পয়সায়।
পরের স্থানে ছিল অ্যারামিট ইন্ডাস্ট্রিজ। ৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ দর কমে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩১৯ টাকা ৯০ পয়সায়। আগের দিনের ক্লোজিং প্রাইস ছিল ৩৪২ টাকা ৪০ পয়সা।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দর হারিয়েছে বিডি ল্যাম্পস। ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ কমে শেয়ারটি সর্বশেষ ২৭৪ টাকা ৩০ পয়সায় হাতবদল হয়। আগের দিনে লেনদেন হয়েছিল ২৯৩ টাকা ৪০ পয়সায়।
দর কমার শীর্ষ দশে থাকা অন্য কোম্পানিগুলো ছিল- অ্যাপেক্স ফুডস, এসিআই ফর্মুলেশনস, জেমিনি সি-ফুড, ইস্টার্ন ক্যাবলস, সোনালী আঁশ, বিডি ওয়েল্ডিং ও পেপার প্রসেসিং।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
মন্তব্য