ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর থেকে অস্বাভাবিক দর বেড়ে যাওয়া কোম্পানিগুলোর টাকা এবার উবে যাচ্ছে কর্পূরের মতো।
মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই নানা গুজব-গুঞ্জনে যেসব শেয়ারের দর লাফাচ্ছিল, সেগুলোর দর টানা তৃতীয় দিনের মতো কমতে থাকায় সোমবার কারিগরি ত্রুটির কারণে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন বিঘ্নিত হলো।
সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১০টা ৫৮ মিনিট পর্যন্ত চলার পর নির্ধারিত সময় ১টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত আর লেনদেন শুরু হতে পারেনি। তবে ২টা ১০ মিনিটে শুরু হয়ে লেনদেন শেষ হয় ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত।
তবে চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন চলেছে স্বাভাবিকভাবেই।
পতনমুখী পুঁজিবাজার লেনদেন স্থগিত হওয়ার আগপর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের অস্বস্তি বাড়িয়েছে। সে সময় প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩২ দশমিক ৯২ পয়েন্ট বা ০.৫১ শতাংশ লেনদেন হচ্ছিল। তখন পর্যন্ত লেনদেন হয় ২২৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।
লেনদেনের নির্ধারিত সময় শেষে বাকি ১৫ মিনিটে সেই অস্বস্তি আরও বেড়েছে। শেষ পর্যন্ত ৩৬ পয়েন্ট কমে সূচকের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৩০৭ পয়েন্ট, যা গত ৪১ কর্মদিবসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
চেক নগদায়নের আগপর্যন্ত শেয়ার কেনা যাবে না, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এই নির্দেশনা দেয়ার পর গত আট কর্মদিবসেই সূচক পড়ল ১৯২ পয়েন্ট।
গত ২৪ আগস্ট সূচক ছিল এর চেয়ে কম ৬ হাজার ২৮০ পয়েন্ট। তবে সে সময় সূচক ছিল ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ছিল স্বস্তির আভাস।
চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে এদিন সূচক কমেছে ০.৭৭ শতাংশ বা ১০ পয়েন্ট। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জেও যদি শতকরা হিসেবে একই হারে পতন হতো, তাহলে সূচক পড়তে পারত ৪৮ পয়েন্ট।
ফ্লোর প্রাইস বিবেচনায় নিলে সূচকের এই পতন বেশ বড়ই বলা যায়। কারণ প্রায় পৌনে তিন শ কোম্পানির শেয়ারদর এখন বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন দর বা ফ্লোর প্রাইসে অবস্থান করছে। বাকি যে এক শর মতো কোম্পানি আছে, সেগুলোর দর কমা সম্ভব।
বাকি কোম্পানিগুলোর যেগুলোর দর কমা সম্ভব, তার মধ্যে ১৮টি ছাড়া কমেছে সবগুলোর। সব মিলিয়ে এই সংখ্যাটি ৮২। আগের দিনের দরে হাতবদল হয়েছে ২১৫টি কোম্পানির।
এদিন শেষ পর্যন্ত লেনদেন হয় ৩৩৪ কোটি ৭৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা।
বেশি লাফানো কোম্পানির দর কমছে বেশি
এর মধ্যে প্রায় সবগুলোই স্বল্প মূলধনি, যেগুলোর দর গত বৃহস্পতিবার থেকে কমছে।
সর্বোচ্চ দর কমেছে জেএমআই সিরিঞ্জের ৮.৭১ শতাংশ। কোম্পানিটির দর ৩১ জুলাই ফ্লোর প্রাইস কার্যকর হওয়ার দিন ছিল ২৯৯ টাকা। ১৮ অক্টোবর দর উঠে যায় ৫৪৯ টাকা ৫০ পয়সা। ৫ দিনেই সেখান থেকে ১৫৫ টাকা ৭০ পয়সা কমে দর দাঁড়িয়েছে ৩৯৩ টাকা ৮০ পয়সা।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮.৪৩ শতাংশ দর কমেছে তমিজউদ্দিন টেক্সটাইলের। ফ্লোর প্রাইস কার্যকরের দিন কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ১৭৮ টাকা ৪০ পয়সা। গত ১৬ অক্টোবর দর ছিল ২৬৭ টাকা ৩০ পয়সা। সেখান থেকে ৭৬ টাকা ১০ পয়সা কমে গিয়ে বর্তমান দর ১৯১ টাকা ২০ পয়সা্
তৃতীয় সর্বোচ্চ ৮.৩২ শতাংশ দর কমেছে আরামিট লিমিটেডের। ফ্লোর প্রাইস কার্যকরের দিন কোম্পানিটির দর ছিল ২৭৯ টাকা ৮০ পয়সা। গত ২০ অক্টোবর লেনদেন হয় ৪১৯ টাকায়। সর্বোচ্চ দর থেকে চার কর্মদিবসে ১০১ টাকা ৬০ পয়সা কমে বর্তমান দর দাঁড়িয়েছে ৩১৭ টাকা ৪০ পয়সা।
চতুর্থ সর্বোচ্চ ৭.০৯ শতাংশ দর কমেছে সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সের। ফ্লোর প্রাইস কার্যকরের দিন কোম্পানিটির দর ছিল ৬০ টাকা। সম্প্রতি উঠে যায় ৭৪ টাকা ৯০ পয়সায়। যতটুকু বেড়েছিল প্রায় পুরোটা হারিয়ে এখন দর ৬২ টাকা ৯০ পয়সা।
পঞ্চম অবস্থানে ছিল ফ্লোর প্রাইস দেয়ার অল্প দিনেই শেয়ারদর দ্বিগুণ হয়ে যাওয়া জেএমআই হসপিটালের। ফ্লোর প্রাইস কার্যকরের দিন কোম্পানিটির দর ছিল ৭১ টাকা ১০ পয়সা। চলতি মাসের শুরুতে দর উঠে যায় ১৪২ টাকা ৮০ পয়সা। সেখান থেকে ৪৫ টাকা ২০ পয়সা কমে বর্তমান দর ৯৭ টাকা ৬০ পয়সা। আজ কমেছে ৭.০৫ শতাংশ।
ষষ্ঠ অবস্থানে ছিল কোহিনূর কেমিক্যালস, যার দর কমেছে ৬.৯৬ শতাংশ। ফ্লোর প্রাইস কার্যকরের দিন কোম্পানিটির দর ছিল ৩৮৩ টাকা ৬০ পয়সা। দ্বিগুণ হয়ে যেতে সময় লাগেনি। কয়েক দিনেই দর উঠে যায় ৭৫৭ টাকা ৪০ পয়সায়। সেখান থেকে পড়তে পড়তে বর্তমান দর ৫৪৮ টাকা। আজ কমেছে ৬.৯৬ শতাংশ বা ৪১ টাকা।
পরের অবস্থানে ছিল মালেক স্পিনিং মিলস, যার দর কমেছে ৬.৮ শতাংশ। পতনের শীর্ষ দশে থাকা এই একটি কোম্পানিই কেবল স্বল্প মূলধনি নয়। ফ্লোর প্রাইস কার্যকরের দিন কোম্পানিটির দর ছিল ২৮ টাকা ৫০ পয়সা। ৩০ আগস্ট দর উঠে যায় ৪৪ টাকা ১০ পয়সা। বর্তমান দর ২৭ টাকা ৪০ পয়সা।
অষ্টম অবস্থানে ছিল জেমিনি সি ফুডের অবস্থান। কোম্পানিটির দর কমেছে ৬.৬৫ শতাংশ। ফ্লোর প্রাইস কার্যকরের দিন কোম্পানিটির দর ছিল ৩১৮ টাকা ৮০ পয়সা। লভ্যাংশ ঘোষণার পর গত সপ্তাহে দর উঠে যায় ৬৩৮ টাকা। সেখান থেকে ১৮১ টাকা কমে বর্তমান দর ৪৫৭ টাকা ৮০ পয়সা।
নবম স্থানে থাকা কেডিএস অ্যাকসেসোরিজের দর কমেছে ৬.৫৯ শতাংশ। ফ্লোর প্রাইস কার্যকরের দিন কোম্পানিটির দর ছিল ৮০ টাকা ৬০ পয়সা। সেখান থেকে সর্বোচ্চ দর উঠে ৯১ টাকা ৬০ পয়সা। বর্তমান দর ৭৯ টাকা ৪০ পয়সা।
এই তালিকার দশম স্থানে ছিল এএমসিএল প্রাণ, যেটির শেয়ার দর হারিয়েছে ৬.৩৫ শতাংশ। ফ্লোর প্রাইস কার্যকরের দিন কোম্পানিটির দর ছিল ২৭১ টাকা ৪০ পয়সা। গত সপ্তাহে দর উঠে যায় ৩৯৯ টাকা। সেখান থেকে ১০৫ টাকা ৪০ পয়সা দর কমে এখন দাঁড়িয়েছে ২৯৩ টাকা ৬০ পয়সা।
শীর্ষ দশের বাইরে আরও তিনটি কোম্পানির দর ৬ শতাংশের বেশি, চারটি কোম্পানির দর ৫ শতাংশের বেশি, ৬টি করে কোম্পানির দর ৪ ও ৩ শতাংশের বেশি কমেছে।
কী বলছেন বিশ্লেষক
পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে ট্রেজার সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আউট অব বক্স বা পুঁজিবাজারের বাইরে গিয়ে চিন্তা করতে হবে। দেশের সামগ্রিক ইকোনোমি নিয়ে বিচার করতে হবে, ব্যালেন্স অফ পেমেন্টের কী অবস্থা, এসব বিষয় দেখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে বড় ধরনের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকটে রয়েছে এটার ইঙ্গিত স্পষ্ট। ফলে কোম্পানির প্রোডাকশন কমে যাবে। ব্যবসা করতে পারবে না। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেও এর প্রভাব পড়বে। যখন পুরো ইকোনোমি স্লো তখন স্টক মার্কেটের কী হবে?’
মোস্তফার মতে, যে স্টকগুলোতে এক সপ্তাহ বা দুই সপ্তাহের র্যালি হয়েছিল তা কোনো টার্গেট করে ঢুকেছিল, হয়তো টার্গেট পূরণ হয়নি সেখান থেকে চলে যাচ্ছেন। আবার যারা ডিভিডেন্ড খেয়ে লাভ করবেন বলে চিন্তা করেছিলেন তারা হয়তো দেখছেন আশা পূরণ হচ্ছে না, তারা চলে যাচ্ছেন। এই ধরনের ফ্লাইং ফান্ড স্থায়ী হয় না।
সূচকে প্রভাব যাদের
সবচেয়ে বেশি ৯ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট সূচক কমেছে বেক্সিমকো ফার্মার দরপতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৬১ পয়েন্ট কমেছে বিকন ফার্মার কারণে। শেয়ার প্রতি দাম কমেছে ২ দশমিক ৩১ শতাংশ।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের দর ৪ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ২ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট।
এ ছাড়াও কোহিনূর কেমিক্যাল, জেএমআই হসপিটাল, জেএমআই সিরিঞ্জেস, বসুন্ধরা পেপার, সোনালী পেপার, ওরিয়ন ফার্মা ও আল-আরব ব্যাংকের দরপতনে সূচক কমেছে সবচেয়ে বেশি।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ২৬ দশমিক ৪১ পয়েন্ট।
বিপরীতে ১ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন। এদিন শেয়ারটির দর বেড়েছে ১ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
নাভানা ফার্মার দর ১০ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে শূন্য দশমিক ৭৮ পয়েন্ট।
এডিএন টেলিকম সূচকে যোগ করেছে শূন্য দশমিক ৬৭ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৫ দশমিক ১২ শতাংশ।
এর বাইরে সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে সি-পার্ল, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস, এনসিসি ব্যাংক, প্রগতি ইন্স্যুরেন্স, ইন্দো-বাংলা ফার্মা, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স ও লাভেলো আইসক্রীম।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ৪ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট।
কোন খাত কেমন
লেনদেনের শীর্ষে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত। লেনদেন হয়েছে ৭০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। ৩টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১৩টির দরপতন হয়েছে। আর ১৪টির লেনদেন হয়েছে আগের দরে।
৬২ কোটি ৫০ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বিবিধ খাতে। খাতটিতে কোনো কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়নি। ৬টি কোম্পানি দর কমেছে বাকি ৬টির দর ছিল অপরিবর্তিত।
তৃতীয় স্থানে রয়েছে প্রকৌশল খাত। ৪২ কোটি ২৩ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। ৩টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ২৪টির লেনদেন হয়েছে আগের দরে। দরপতন হয়েছে ১৩টির।
এরপরেই প্রযুক্তি খাতে লেনদেন হয়েছে ২৬ কোটি ১০ লাখ টাকা। ১টির দরবৃদ্ধি, ৪টির দরপতন ও আগের দরে লেনদেন হয়েছে ৫টি কোম্পানির।
২২ কোটি ৬ লাখ টাকা লেনদেন করে তালিকার পঞ্চম স্থানে ছিল সেবা ও আবাসন খাত। ১টি কোম্পানির আগের দরে লেনদেন হয়েছে। ৩টির দরপতন হয়েছে।
এ ছাড়া খাদ্য খাতে ১৯ কোটি ৪০ লাখ, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ১৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা এবং কাগজ ও মুদ্রণ খাতে ১০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। আর কোনো খাতের লেনদেন ১০ কোটি ছুঁতে পারেনি। চারটি খাতে লেনদেন হয়েছে পাঁচ কোটির ওপরে।
জ্বালানি, বস্ত্র, ব্যাংক, সাধারণ বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং মিউচুয়্যাল ফান্ডের সবগুলোর লেনদেন হচ্ছে অপরিববর্তিত দরে বা ফ্লোর প্রাইসে।
দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০
১০ শতাংশ দর বেড়েছে নাভানা ফার্মার। শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ৩৮ টাকায়। আগের দিনের দর ছিল ৩৫ টাকা।
৫.৯০ শতাংশ দর বেড়েছে বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস। প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৩ টাকা ৩০ পয়সায়। আগের দর ছিল ২২ টাকা।
এডিএন টেলিকমের শেয়ারদর ৫ দশমিক ১১ শতাংশ বেড়ে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০২ টাকা ৭০ পয়সায়। আগের দিনে লেনদেন হয়েছিল ৯৭ টাকা ৭০ পয়সায়।
এ ছাড়াও দরবৃদ্ধির তালিকায় রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন, ইন্দোবাংলা ফার্মা, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, প্রগতি ইন্স্যুরেন্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, সি-পার্ল ও লাভেলো আইসক্রিম।
আরও পড়ুন:শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচকের উত্থান হলেও সার্বিক সূচক কমেছে চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ ও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১, কমেছে ৬৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ৭০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০, কমেছে ১৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৭৩ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:টানা দুই দিন উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও ঢাকার পুঁজিবাজারে বইছে সুবাতাস।
সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৭ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট করে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগেরই দাম বেড়েছে। ১০৯ কোম্পানির দরপতন এবং ৫৩ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৩০ কোম্পানির।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও বইছে চনমনে হাওয়া। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে সিএসইতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারের লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে; বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে পতন দিয়ে শুরু হয়েছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে এবং বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের। দরবৃদ্ধির ২৪৫ কোম্পানির বিপরীতে দর কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দিনের শুরুতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৯০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট। সূচক কমলেও বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ১০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫, কমেছে ২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গত সপ্তাহের উত্থানের ধারা ধরে রেখে এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে থাকলেও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৯, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর ৩০ মিনিটে ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২, কমেছে ৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য