প্রবাসী আয় ও রপ্তানিতে সব ব্যাংকে ডলারের দর নতুন করে নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সে প্রতি ডলারের সর্বোচ্চ দর হবে ১০৭ টাকা, আগে যা ছিল ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা। তবে রপ্তানির ক্ষেত্রে ডলারের দর ৫০ পয়সা বাড়িয়ে ৯৯ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) রোববার বৈঠকে বসে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রবাসী আয়ে ডলারের এই নতুন দর ১ নভেম্বর থেকে সব ব্যাংকে কার্যকর হবে। তবে রপ্তানি নগদায়ন বিল কার্যকর হবে সোমবার থেকে।
আমদানির ক্ষেত্রে আগের মতোই রেমিট্যান্স আহরণ ও রপ্তানি বিল নগদায়নে ব্যাংকগুলোর গড় খরচের সঙ্গে এক টাকা যোগ করে আমদানিকারকের কাছে ডলার বিক্রি করবে ব্যাংকগুলো। অর্থাৎ স্প্রেড সীমা হবে এক টাকা।
ডলার নিয়ে প্রায় এক মাস পর বৈঠক করল এই দুই সংগঠন। এর আগে সবশেষ ২৬ সেপ্টেম্বর বৈঠকে প্রবাসী আয়ে ডলার প্রতি ৫০ পয়সা কমিয়ে ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়। ওই বৈঠকে প্রবাসী আয় ছাড়া রপ্তানি ও আমদানির ক্ষেত্রে ডলারের দরে কোনো পরিবর্তন করা হয়নি।
সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বাফেদা চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম। এ সময় এবিবি চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেনসহ এই দুই সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রবাসী আয়ে ডলারের দর ৫০ পয়সা কমানোর কারণ হিসেবে আফজাল করিম বলেন, `বর্তমানে ডলারের ওপর চাপ কমে আসায় নতুন দর নির্ধারণ করা হয়েছে৷ ১ নভেম্বর থেকে নতুন দর কার্যকর হবে। যেসব ব্যাংকে ডলার কেনা রয়েছে তারা ডলারের দর এই সময়ের মধ্যে সমন্বয় করবে।’
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এটাই হবে আন্তঃব্যাংক ডলার বিনিময় হার। এতে আমদানিকারকের খরচ কমবে বলে মনে করছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা।
অস্থির ডলার বাজার নিয়ন্ত্রণে ৮ সেপ্টেম্বর এবিবি ও বাফেদার সঙ্গে আলোচনায় বসে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ডলারের একক রেট সংগঠন দুটি নিজেরা আলোচনা করে ঠিক করবে।
ওই বৈঠকে ডলারের বাজার পর্যবেক্ষণ ও আমদানি-রপ্তানি পরিস্থিতি বুঝতে সময় নেয় ব্যাংক নির্বাহী ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর এই দুই সংগঠন।
পরে ১১ সেপ্টেম্বর এবিবি ও বাফেদা বৈঠক করে। তাতে রপ্তানি আয়ে প্রতি ডলারের সর্বোচ্চ দাম ৯৯ টাকা ও প্রবাসী আয়ে ১০৮ টাকা দাম বেঁধে দেয়া হয়। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। আর এর মধ্য দিয়ে ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে দেশে দেশে মুদ্রার দরপতনের যে সমস্যা দেখা দিয়েছে, তার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। সাত মাসের কম সময়ে দেশের মুদ্রার দর পতন হয়েছে ২৫ শতাংশের বেশি। এই যুদ্ধ শুরুর আগে ডলারের দর ছিল ৮৪ থেকে ৮৫ টাকা।
আরও পড়ুন:আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বহুল প্রতিক্ষিত ৪৭০ কোটি (৪.৭০ বিলিয়ন) ডলার ঋণের প্রথম কিস্তি ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ।
প্রথম কিস্তির এই অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভে যোগ হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক। এর ফলে রিজার্ভ বেড়ে ৩২ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার হয়েছে বলে জানান তিনি।
মেজবাউল হক বলেন, ‘আমরা আইএমএফ ঋণের প্রথম কিস্তি পেয়েছি। প্রথম বারে আমরা ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার পেয়েছি। এর পরের বাকি ৪২২ কোটি ৪০ লাখ ডলার আমরা সমান ছয়টি কিস্তিতে পাবো। প্রতি কিস্তিতে আসবে ৭০ কোটি ৪০ লাখ ডলার, তবে পরের কিস্তি কবে আসবে এখন সেটা বলা যাচ্ছে না।’
বিশ্ব আর্থিক খাতের অন্যতম প্রধান মোড়ল এই সংস্থার কাছ থেকে বাংলাদেশ যে পরিমাণ ঋণ চেয়েছিল, সবাইকে অবাক করে দিয়ে গত সোমবার সংস্থাটি তার চেয়েও বেশি ঋণ দেওয়ার ঘোষণা দেয় আইএমএফ। প্রথম কিস্তির ঋণ যেকোনো মুহূর্তে ছাড় করা হবে বলে বলে জানিয়েছিল সংস্থাটি। মাত্র দুই দিনের মাথায় সেই ঋণের প্রথম কিস্তি বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডারে জমা হলো, বেড়ে গেলো বর্তমান বিশ্ব পেক্ষাপটে অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর সূচক রিজার্ভ।
দুই বছরের করোনা মহামারি ও এক বছরের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কার বড় চাপ সামাল দিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে বাংলাদেশ গত বছরের জুলাই মাসে ৪৫০ কোটি (৪.৫ বিলিয়ন) ডলার ঋণ চেয়েছিল, আইএমএম তার চেয়েও ২০ কোটি ডলার বেশি অর্থাৎ ৪৭০ কোটি (৪.৭০ বিলিয়ন) ডলার দেয়। গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে আইএমএফের সদর দপ্তরে এই ঋণ অনুমোদন করে সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদ।
গত মঙ্গলবার আইএমএফের ওয়েবসাইটে এই ঋণ অনুমোদনের বিষয়টি নিয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার তাৎক্ষণিকভাবে ছাড় করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে আইএমএফ। ২ দশমিক ২ শতাংশ সুদে নেয়া এই ঋণ আসবে সাত কিস্তিতে। শেষ কিস্তি আসবে ২০২৬ সালে।
৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ পেতে ও চলমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার কয়েক মাস ধরেই সংস্কার কর্মসূচি পরিচালনা করছে। চলতি জানুয়ারিতে যখন আইএমএফের ডিএমডি অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ বাংলাদেশ সফরে আসেন, তখন এসব সংস্কারে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। মৌলিক এসব সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত রাখার প্রতিও আইএমএফের ডিএমডি গুরুত্বারোপ করেন তখন।
আইএমএফও তাদের বিবৃতিতে বলেছে, করোনা মহামারির ধাক্কা সামলে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল বাংলাদেশ, কিন্তু যুদ্ধের কারণে তা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তাতে বৈদেশিক বাণিজ্যে চলতি হিসাব ভারসাম্যে বড় ধরনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে, টাকার মান কমে গেছে এবং বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়েছে। সাম্প্রতিক এই অর্থনৈতিক জটিলতাগুলো মোকাবিলায় বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ একগুচ্ছ সমন্বিত পদক্ষেপ নিয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার মনে করে, প্রবৃদ্ধির গতি ত্বরান্বিত করতে, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ আকর্ষণে, উৎপাদনশীলতা বাড়াতে এবং জলবায়ু সহনশীলতা তৈরি করতে হলে তাতৎক্ষণিক এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি কাঠামোগত সমস্যা এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকিগুলোকেও আমলে নিতে হবে।
কক্সবাজারে আনন্দ ভ্রমণ করেছে ইস্টার্ন হাউজিং যুব কল্যাণ সমিতি।
ঢাকা থেকে কক্সবাজারে গিয়ে গত ২৬ থেকে ২৯ জানুয়ারি এ ভ্রমণ করেন সমিতির সদস্যরা।
আনন্দ ভ্রমণের আহ্বায়ক ছিলেন জহির স্টিল অ্যান্ড রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের (জেডএসআরএম) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আলহাজ মো. হুমায়ুন কবির।
আনন্দ ভ্রমণের সদস্য সচিব ছিলেন ইস্টার্ন হাউজিং যুব কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুল সরকার।
রেমিট্যান্সের পালে জোর হাওয়া লেগেছে। চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৫ কোটি ৮৯ লাখ ডলার। এটা এক বছর আগে একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বুধবার প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ বলছে, সব মিলিয়ে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) ১ হাজার ২৪৫ কোটি ২১ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে তা ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি। ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ১৯৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রবাসীরা ১৭০ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন, যা ছিল চার মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৪ কোটি ডলার। অক্টোবর ও নভেম্বরে এসেছিল যথাক্রমে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ও ১৫৯ কোটি ৫২ লাখ ডলার। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাস জুলাই ও আগস্টে অবশ্য ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসে।
জানুয়ারিতে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৪ কোটি ২২ লাখ ডলার। ৪২টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ১৬৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার। আর ৯টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৭০ লাখ ৮০ লাখ ডলার।
ক্যালেন্ডার বছরের হিসাবে ২০২২ সালে ২ হাজার ১২৮ কোটি ৫৪ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স দেশে এসেছিল, যা ছিল আগের বছরের চেয়ে ৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ কম। প্রবাসীরা ২০২১ সালে ২ হাজার ২০৭ কোটি ২৫ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন।
মার্চের শেষ দিকে রমজান মাস শুরু হবে। রোজা ও ঈদ সামনে রেখে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও বাড়বে বলে আশা করছেন জনশক্তি রপ্তানিকারক, ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, ব্যাংকের চেয়ে খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম বেশি হওয়ায় এবং বেশি টাকা পাওয়ায় মাঝে কয়েক মাস প্রবাসীরা অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে দেশে অর্থ পাঠানোয় ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স কমে গিয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক হুন্ডির বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়ায় ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়তে শুরু করেছে।
অর্থনীতিতে চাপ সামাল দিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে বাংলাদেশ ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছিল। অবশ্য আইএমএফ তার চেয়েও ২০ কোটি ডলার বেশি দেবে।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে আইএমএফের সদর দপ্তরে এই ঋণ অনুমোদন করেছে সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদ। প্রথম কিস্তির ঋণ যেকোনো মুহূর্তে জমা হবে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডারে।
আরও পড়ুন:শেষ হলো মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ‘ডিআইটিএফ’-এর ২৭তম আসর। বরাবরের মতো মেলার এই আসরেও দর্শনার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল ওয়ালটনের দৃষ্টিনন্দন ও শৈল্পিক ডিজাইনের স্টল।
মেলায় অত্যাধুনিক ও উদ্ভাবনী ফিচারের পরিবেশবান্ধব টেকসই স্মার্ট প্রযুক্তিপণ্য প্রদর্শন করে সেরা ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছে ওয়ালটন। একই সঙ্গে এবারের বাণিজ্য মেলাতে ইলেকট্রনিক্স ক্যাটাগরিতে সেরা প্রিমিয়ার স্টলের পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশি সুপার ব্র্যান্ড ওয়ালটন।
২৭তম বাণিজ্য মেলায় ১৪টি ক্যাটাগরিতে ৪৭টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। প্রথমবারের মতো এ বছর বাণিজ্য মেলায় ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড চালু করে আয়োজক সংস্থা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। এ ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে ওয়ালটন।
মঙ্গলবার রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ডিআইটিএফ-২৩ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে সেরা ইনোভেশন ও সেরা ইলেকট্রনিক্স স্টল ক্যাটাগরিতে ওয়ালটনকে প্রথম পুরস্কার দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার অ্যান্ড কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ বাবু।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইপিবি’র ভাইস-চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান।
অতিথিদের কাছ থেকে সেরা ইনোভেশন এবং সেরা ইলেকট্রনিক্স স্টলের পুরস্কারের ক্রেস্ট ও সনদ গ্রহণ করেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইভা রিজওয়ানা নিলু ও মো. হুমায়ুন কবীর।
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ক্যাটাগরিতে দ্বিতীয় সেরার পুরস্কার পেয়েছে বেঙ্গল পলিমার ওয়্যারস্ লিমিটেড। প্যাভিলিয়ন ডিজাইনে আধুনিকতা ও নতুনত্বের জন্য এই পুরস্কার দেয়া হয়।
রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে মঙ্গলবার ২৭তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০২৩ এর সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে বেঙ্গল পলিমার কর্তৃপক্ষের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।
বেঙ্গল গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ-এর পক্ষ থেকে পুরস্কারটি গ্রহণ করেন হেড অফ মার্কেটিং জোহেব আহমেদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ প্যাভিলিয়নগুলোর মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ সুবিধা অনুমোদনের বিষয়টিকে অর্থনীতির জন্য স্বস্তিকর হিসেবে দেখছে ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তারকে উদ্ধৃত করে বুধবার এক বিবৃতিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘আইএমএফের পক্ষ থেকে ঋণপ্রাপ্তির অনুমোদন বাংলাদেশের ঋণপ্রাপ্তির যোগ্যতা এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ।’
তিনি বলেন, ‘আইএমএফ বাংলাদেশকে ঋণ অনুমোদনের ক্ষেত্রে কিছু প্রাতিষ্ঠানিক ও পলিসি সংস্কারের শর্তারোপ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আর্থিক খাত, নীতি কাঠামো, জ্বালানি খাত, সরকারি অর্থব্যবস্থা, স্থানীয় রাজস্ব বৃদ্ধি, জলবায়ু স্থিতিশীল করতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ইত্যাদি।’
আইএমএফের সিদ্ধান্তকে সময়োপযোগী আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘কারণ এই ঋণ সুবিধা বাংলাদেশকে বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়তা করবে।
‘এই ঋণপ্রাপ্তিতে তাৎক্ষণিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি পাবে, যা আমাদের অর্থনীতিতে স্বস্তি ফিরিয়ে আনবে। এমনকি সরকার আমদানির ক্ষেত্রে এলসি খোলার কঠোর শর্তাবলী প্রত্যাহারের বিষয়ে বিবেচনা করার সুযোগ পাবে। আসন্ন রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনা করে ঋণটি অবশ্যই ব্যবসায়ীদের স্বস্তি দেবে।’
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, সরকার ইতোমধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার অনুমোদন ও বাস্তবায়ন করেছে। আর্থিক খাতকে শক্তিশালী করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে কিছু প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকঘোষিত সাম্প্রতিক মুদ্রানীতিতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সুশাসন নিশ্চিত করার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি ঋণের সুদহারের সীমা শিথিল করা হয়েছে এবং বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারের স্থিতিশীলতা আনতে ক্রমান্বয়ে বাজারভিত্তিক এবং একক বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার চালু করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি নতুন আয়কর আইন মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হয়েছে, যার অন্যতম লক্ষ্য হলো করজাল বাড়ানো, যাতে করে দেশীয় রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি করা যায়। পাশাপাশি নতুন আয়কর আইন অটোমেশনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে, যার ফলে বিদেশি বিনিয়াগ আকৃষ্ট হবে।
বৈশ্বিক কারণে অর্থনীতিতে চাপ সামলাতে আইএমএফের কাছ থেকে বাংলাদেশ যে পরিমাণ ঋণ চেয়েছিল সংস্থাটি তার চেয়েও বেশি ঋণ দিচ্ছে।
সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ৪৫০ কোটি (৪.৫ বিলিয়ন) ডলার চেয়েছিল, আইএমএম তার চেয়ে ২০ কোটি ডলার বেশি অর্থাৎ ৪৭০ কোটি ডলার দেবে।
স্থানীয় সময় সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে আইএমএফের সদরদপ্তরে সংকটকালে বাংলাদেশের বহুল প্রত্যাশিত এই ঋণের প্রস্তাব অনুমোদন করে সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদ। মঙ্গলবার দুপুরে আইএমএফের ওয়েবসাইটে ঋণ অনুমোদনের বিষয়টি নিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হয়।
আরও পড়ুন:অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদনই প্রমাণ করে যে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির মৌলিক ক্ষেত্রগুলো শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির মৌলিক বিষয়গুলো বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে ভালো।’
আইএমএফ বোর্ড সভায় বাংলাদেশের জন্য ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ প্রস্তাব অনুমোদনের পর বুধবার অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল যে সামষ্টিক অর্থনীতির মৌলিক দুর্বলতার কারণে আন্তর্জাতিক অর্থায়ন সংস্থাটি বাংলাদেশকে এ ধরনের ঋণ সুবিধা দেবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আইএমএফ ঋণ অনুমোদন করে সে আশঙ্কা ভুল প্রমাণ করেছে।’
বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ) এবং এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (ইএফএফ)-এর আওতায় প্রায় ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার এবং রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ)-এর আওতায় প্রায় ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার পাবে।
আইএমএফ ইসিএফ বা ইএফএফ অনুমোদনের ফলে ৪২ মাসের মধ্যে নির্ধারিত সাতটি কিস্তির মধ্যে প্রথম হিসাবে প্রায় ৪৭৬ মিলিয়ন ডলার তাৎক্ষণিকভাবে বিতরণ করা সম্ভব হয়েছে। অবশিষ্ট অর্থ ছয়টি সমান কিস্তিতে দেয়া হবে, প্রতিটি কিস্তি হবে ৭০৪ মিলিয়ন ডলার। ৪২ মাসের এই কর্মসূচি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা, দুর্বলদের সুরক্ষা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সবুজ প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সহায়তা করবে।
সংস্কারগুলো বৃহত্তর সামাজিক ও উন্নয়নমূলক ব্যয় সক্ষম করার জন্য বাজেট সক্ষমতা তৈরি করবে, আর্থিক খাতকে শক্তিশালীকরণ, নীতি কাঠামোর আধুনিকীকরণ এবং জলবায়ু স্থিতিশীলতা গড়ে তোলার দিকে মনোনিবেশ করবে।
আইএমএফ-কে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে মহামারি থেকে বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের চলতি হিসাবের ঘাটতি, টাকার অবমূল্যায়ন এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস পেয়েছে।
কর্তৃপক্ষ এই সর্বশেষ অর্থনৈতিক বিঘ্ন মোকাবেলায় একটি বিস্তৃত ব্যবস্থা নিয়েছে। কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে যে, এই তাৎক্ষণিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার পাশাপাশি প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে, বেসরকারি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে, উৎপাদনশীলতা বাড়াতে এবং জলবায়ু স্থিতিশীলতা গড়ে তুলতে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত দীর্ঘস্থায়ী কাঠামোগত সমস্যা এবং দুর্বলতাগুলোও মোকাবেলা করতে হবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য