চেক নগদায়নের আগে শেয়ার কেনা নয়-এই সিদ্ধান্ত না পাল্টালে পুঁজিবাজার চাপে পড়বে, চিঠি দিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে স্টক ব্রোকাররা জানানোর পর বিনিয়োগকারীরা দেখছেন চাপ কাকে বলে। এখন আবার ফ্লোর প্রাইস নিয়ে গোপনে আপত্তির কথা বলাবলি হচ্ছে। এটি শেয়ারকে তার নির্ধারিত দরে যেতে বাধা দিচ্ছে, এমন কথা বলে সেটিও তুলে দেয়ার কথা বলছেন কেউ কেউ।
অতীতে দেখা গেছে, কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়লে বিএসইসি অল্প সময়ে, এমনকি ২৪ ঘণ্টাতেও সিদ্ধান্ত পাল্টেছে। কিন্তু এবার তেমনটা হচ্ছে না।
ফ্লোর প্রাইসে বিপুল সংখ্যক কোম্পানির ক্রেতা না থাকলেও দরপতন ঠেকাতে দেয়া এই সিদ্ধান্ত পাল্টানোর কারণ দেখছে না বিএসইসি। চেক নির্দেশনা নিয়েও এখন পর্যন্ত অনড় তারা।
ফ্লোর প্রাইসে যে সংকট
গত ২৮ জুলাই ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর ৩১ জুলাই থেকে প্রতিটি শেয়ারের একটি সর্বনিম্ন দর বেঁধে দেয়া হয়েছে। এই দরের নিচে নামতে পারছে না বলে দুই শতাধিক কোম্পানি দর ধরে রাখতে পারছে।
সমস্যা হচ্ছে, বেঁধে দেয়া এই সর্বনিম্ন দরে শেয়ারের ক্রেতা নেই। এসব কোম্পানির মধ্যে আছে শক্তিশালী মৌলভিত্তির কোম্পানি, যার মধ্যে কয়েকটি বিপুল পরিমাণ মুনাফায় থাকা বহুজাতিক কোম্পানিও।
বিপুল সংখ্যক শেয়ারের ক্রেতা না থাকার পাশাপাশি গত প্রায় তিন মাসে অস্বাভাবিক উত্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর এখন উল্টো দৌড়ের কারণে বাজারে রীতিমতো আতঙ্ক। দর পড়তে থাকার পর চাহিদা কমে গেছে সেগুলোরও।
এতে দুই হাজার কোটি থেকে লেনদেন নেমে এসেছে ৭০০ কোটি টাকার ঘরে এবং তা আরও নিম্নমুখী।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ফ্লোর প্রাইসে আটকে যাওয়ায় শেয়ার বিক্রি করতে পারছে না বিনিয়োগকারীরা। এতে করে ফান্ড রিলিজ না হওয়ার কারণে সেক্টরাল মুভমেন্ট হচ্ছে না।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও মনে করেন ফ্লোর প্রাইস এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ফ্লোর প্রাইস যে পর্যায়ে আছে, এটা এখন শাখের করাত। মানে এদিকেও কাটবে ওই দিকেও কাটবে। এটাকে উইথ ড্র করলে মার্কেট ফল করবে। এর ফলে বিভিন্ন জায়গা থেকে আবার চাপ প্রয়োগ বা দাবি উঠবে এটা আবার দেয়া হোক। আবারও দিতে হবে। এটা সুস্থ মার্কেটের প্রক্রিয়া না। আমাদের মার্কেটে বাধ্য হয়ে বিএসইসি এ ধরনের দিতে হয়েছে। সুস্থ মার্কেটে এসব জিনিস যায় না, আপেও না ডাউনেও না।’
কমিশন কী বলছে
গত ৩১ জুলাই থেকে দ্বিতীয় দফা ফ্লোর প্রাইস কার্যকর হওয়ার পরে দুই বার এই সুবিধা উঠে যাবে, এমন গুজবে বাজারে পতন ঘটে।
বিএসইসির পক্ষ থেকে একাধিকবার বলা হয়েছে ফ্লোর প্রাইস থাকবে অনির্দিষ্টকালের জন্য।
গত শনিবার রাজধানীতে সাংবাদিকদের এক প্রশিক্ষণ কর্মশালাতেও সেই বিষয়টি আবার তুলে ধরেন বিএসিইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘ফ্লোর প্রাই তুলে দেয়ার বিষয়ে কমিশন চিন্তা করছে না।’
উত্তরণের উপায় কী
এখান থেকে উত্তরণের উপায় হিসেবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও প্রতিষ্ঠাগুলোর সামর্থ্য বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন রিচার্ড ডি রোজারিও। তিনি বলেন, ‘যতদিন মার্কেটে ইনস্টিটিটিউশনাল ইনভেস্টর না বাড়বে ততদিন পর্যন্ত এ ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকবে। আপেও ঘটতে থাকবে ডাউনেও ঘটতে থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের যদি ইনস্টিটিউশনাল ইনভেস্টর বেশি থাকত, তাহলে দর বাড়তে থাকলে শেয়ার সাপ্লাই দিত। এরপর যদি বাড়তে থাকতো তাহলে বিএসইসির হাতে আইপিও থাকে, কয়েকটা আইপিও যদি নামিয়ে দেয়া হয় তাহলে মার্কেট স্লো হয়ে যায়। বাইরের দেশে কিন্তু এভাবেই চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স করেই কাজগুলো করা হয়।
স্টক ব্রোকারদের সমিতির এই নেতা বলেন, ‘এই মার্কেটে কয়েকটা জায়গায় ডেভেলপ করা দরকার হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে একটা হলো- মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সংখ্যা বাড়ানো। আইসিবি একটা সংগঠন প্রায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে, এটার তেমন কোনো কার্যক্রমই নাই। ইউনিট ফান্ড বিক্রি করার ব্যবস্থা করতে হবে যাতে এদের সাইজটা বড় করা যায়।
‘শিল্প ঋণ সংস্থা যেটা এখন অকার্যকর হয়ে গেছে। আরেকটা সংগঠন কার্যকর হয়ে গেছে। এসব জিনিসগুলো ঠিক করতে হবে।’
চেক নির্দেশনা নিয়ে আপত্তি যেখানে
১১ অক্টোবর স্টক ব্রোকারদের প্রতি জারি করা বিএসইসির এক নির্দেশনায় বলা হয়, চেকের টাকা নগদায়নের আগে তা দিয়ে শেয়ার কেনা যাবে না। এই সিদ্ধান্ত না পাল্টালে পুঁজিবাজারে চাপ আরও বাড়বে বলে স্টক ব্রোকাররা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে চিঠি দেয়।
গত সোমবার বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রচারের পরদিনই পুঁজিবাজারে চাপ বাড়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এখন পর্যন্ত তাদের অবস্থানে অনড় আছে। সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কোনো আভাস নেই তাদের।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের অনেকেই লেনদেন কমার পেছনে চেক নগদায়নের ইস্যুটি উল্লেখ করেছেন। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন সিইও ফোরাম এবং মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সায়েদুর রহমান বলেন, ‘চেক নগদায়নের জন্য যদি বসে থাকি তাহলে বিনিয়োগকারী ডিমোরালাইজড হবে। কারণ, চেক দিলে সেটা নগদায়ন হতে ২৪ ঘণ্টা বা কখনও সেটা ৩৬ ঘণ্টাও লেগে যেতে পারে। তাহলে শেয়ার কিনতে পারবেন ২৪ বা ৩৬ ঘণ্টা পরে। তাহলে বিনিয়োগকারী কী করবেন?
‘আরেকটা পার্ট হলো- ব্যাংক, ইন্স্যুরেন্স, লিজিং, এরা কিন্তু ব্রোকারেজ হাউসে টাকা রাখে না। সারাদিন ট্রেড করে বিকালে চেক বা পে অর্ডার নিয়ে যায়। তারা কী করবে?’
এ বিষয়ে ডিবিএ সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, ‘চেকের যে জিনিসটা করা হয়েছে, ব্রোকারেজ হাউসের জন্য খুবই ভালো। ব্রোকাররা খুব খুশি হবে। ক্লায়েন্টরা চেক দিয়ই শেয়ার কিনতে চায়, সেখান থেকে তারা মুক্ত হচ্ছে, কিন্তু এটা হতে পারে না। রিয়েল টাইম ব্যাংকিং না আসে তার আগে এটা করা যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘বড় বড় গ্রুপ, প্রতিষ্ঠান যারা তারা চেক দিয়ে ট্রেড করে। আমার হাউসে এক প্রতিষ্ঠান ১০ কোটি টাকার অর্ডার দিয়েছে, কিন্তু দিনের শেষে ইস্যু করে গেছে ৪০ লাখ টাকা। সে কি আমাকে ১০ কোটি টাকা দিয়ে ফেলে রাখবে? যেহেতু রিয়েল টাইম ব্যাংকিং না, এটা দিতে গেলেও দুই সময় লাগবে আবার নিতে গেলেও দুইদিন সময় লাগবে। টাকার তো ভ্যালু আছে, সে এভাবে ফেলে রাখবে না।
‘আবার মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর আন্ডারে ব্রোকারেজগুলো ট্রেড করে তারা দিন শেষে অ্যামাউন্টটা থাকে সেটা থাকে দিতে হয় চেক হিসাবে। এখন আগে থেকেই যদি তাদেরকে টাকা দিয়ে আসতে হয় তাহলে অনেক ঝামেলার ব্যাপার এবং হবেও না।’
তিনি বলেন, ‘যে বড় বড় প্রতিষ্ঠান ট্রেড করছে তারা কখনও ক্যাশ দিয়ে ট্রেড করে? চেক পাশ হওয়ার পরে ট্রেড করে? কখনই না। তারা চেক দিয়েই ট্রেড করে। এখন চেক যদি বাউন্স করে সেটার জন্য তো আইন আছেই। বিচার হতেই পারে, সুযোগ আছে।
‘আমরাও যে সবার চেক দিয়েই শেয়ার কিনি তা নয়। কোনটা বাউন্স হওয়ার আশঙ্কা আছে, কোনটার নাই, এসব বুঝেই তো করি। কিছু কিছু যে হয় না, তা নয়, এসব তো ব্যবসার মধ্যেই থাকবেই।’
বিএসইসির বক্তব্য নেই
এ বিষয়ে জানতে বিএসইসির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কমিশনার বা সুপারভিশন অ্যান্ড রেগুলেশন অব ইন্টারমিডিয়ারিজ (এসআরআই) বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগের কথা বলেন।
কমিশনার এবং ওই বিভাগের নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম ও পরিচালক মনসুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
অতিরিক্ত পরিচালক গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘এই বিষয়ে আমার স্যারদের সঙ্গে কথা বললেই ভালো হয়।’
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
মন্তব্য