পুঁজিবাজারে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আবেদন গ্রহণ হয়েছে।
চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংকটির আইপিওতে বিনিয়োগকারীদের ব্যাপক সাড়া মিলেছে। প্রতিষ্ঠানটিও বিনিয়োগকারীদের দিয়েছে বিশেষ সুবিধা।
প্রাথমিকভাবে অনাবাসী বাংলাদেশিদের (এনআরবি) প্রাধান্য দিয়ে ২৫ শতাংশ শেয়ার বরাদ্দ রাখা হয়। অবশিষ্ট ৭৫ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ করা হয়।
বিনিয়োগকারীরা ১০ হাজার টাকা বা এর গুণিতক সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আইপিও আবেদন করতে পারেন।
পুঁজিবাজারে দীর্ঘদিন পর ব্যাংক খাতের মতো ভালো কোম্পানির আইপিও আসায় বিনিয়োগকারীরা বেশ উৎফুল্ল ও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। পুঁজিবাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া ক্ষুদ্র ও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ফিরে পেয়েছেন আস্থা।
ব্যাংকটির আইপিও আবেদন গত ১৬ অক্টোবর শুরু হয়ে চলে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত।
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের আইপিও আবেদন গ্রহণের সময় বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসগুলোতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আগ্রহের চিত্র দেখা যায়।
মূলত বাড়তি আগ্রহের পেছনে মূল কারণ বিনিয়োগকারীরা ১০ হাজার টাকা বা এর গুণিতক সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আইপিও আবেদন করতে পেরেছেন। পাশাপাশি ব্যাংকটির গ্রোথ ও শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) ভালো অবস্থানে থাকায় কোম্পানিটির আইপিও আবেদনে আগ্রহী ছিল বিনিয়োগকারীরা।
বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যাংকিং খাতের কোম্পানিগুলো ভালো মৌলভিত্তির হওয়ার এ ধরনের কোম্পানি বাজারে আসলে বাজারের গভীরতা বাড়ে। শেয়ারসংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে এসব শেয়ারে কারসাজির আশঙ্কাও কম।
এদিকে বিশেষ সুবিধা থাকায় এ শেয়ারে বিনিয়োগ লাভজনক হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিনিয়োগকারীরা।
গত ১৫ জুন অনুষ্ঠিত ৮২৭তম কমিশন সভায় বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে এই আইপিওর অনুমোদন দেয়া হয়।
আইপিওর মাধ্যমে প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যের ৪২ কোটি ৫০ লাখ শেয়ার ইস্যু করে পুঁজিবাজার থেকে ৪২৫ কোটি টাকা উত্তোলন করবে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক।
উত্তোলিত অর্থ এসএমই, সরকারি সিকিউরিটিজ ও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ এবং প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের খরচ খাতে ব্যয় করবে ব্যাংকটি।
ব্যাংকটির প্রকাশিত প্রসপেক্টাসে বর্ণিত নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন (২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর) অনুযায়ী, ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ১ টাকা ৯১ পয়সা। পুনর্মূল্যায়ন ছাড়া ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ১৪ টাকা ৪২ পয়সা।
ব্যাংকটির আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটির আমানত, ইনভেস্টমেন্ট (বিনিয়োগ), পরিচালন আয়, শেয়ারপ্রতি আয়ে (ইপিএস) ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
ওই ৯ মাসে বিনিয়োগের ওপর আয় হয়েছে ৯৭৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এই বিনিয়োগ আয় থেকে আমানতের ওপর প্রদত্ত মুনাফা বাদ দিয়ে এবং শেয়ার ও সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের ওপর আয়, এক্সচেঞ্জ ব্রোকারেজ কমিশন ও অন্যান্য পরিচালন আয় যোগ করে মোট পরিচালন আয় দাঁড়িয়েছে ৩৯৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
এরপর যাবতীয় পরিচালন ব্যয় (যেমন : বেতন ও মজুরি, ভাড়া, ট্যাক্স ইনস্যুরেন্স, বিদ্যুৎ, আইন খরচ, স্টাম্প, টেলিকমিউনিকেশন, স্টেশনারি, প্রিন্টিং, বিজ্ঞাপন, প্রধান নির্বাহীর বেতন ও ফি, পরিচালকদের ফি, অবচয় এবং প্রভিশনসহ অন্যান্য) বাদ দিয়ে কর পূর্ববর্তী মুনাফা দাঁড়ায় ১৭৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
এই মুনাফা থেকে করবাবদ ৭৬ কোটি ৬০ লাখ বাদ দিয়ে ব্যাংকটির নিট মুনাফা দাঁড়ায় ৯৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। আর এতে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১.৯১ টাকা। আর শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১৪.৪২ টাকা।
শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ঋণাত্মক (১০.৬৩ টাকা)। এর আগে ব্যাংকটি ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিনিয়োগের ওপর আয় করেছিল ১ হাজার ২০৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।
বছরটিতে মোট পরিচালন আয় থেকে পরিচালন ব্যয় ও কর ব্যয় বাদ দিয়ে নিট মুনাফা হয়েছিল ১০২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। আর এতে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয় ২ টাকা ১০ পয়সা। বছরটিতে শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভি) ছিল ১৩ টাকা ৬৫ পয়সা। শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ছিল ১৫ টাকা ১২ পয়সা।
২০১৯ অর্থবছরে বিনিয়োগের ওপর আয় হয়েছিল ১ হাজার ১০৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা। বছরটিতে নিট মুনাফা হয়েছিল ৩৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আর শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস হয়েছিল ০.৭৯ টাকা। অর্থবছরটিতে শেয়ারপ্রতি সম্পদ ছিল ১২ টাকা ১৭ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ছিল ২ টাকা ২৭ পয়সা।
২০১৮ অর্থবছরে বিনিয়োগের ওপর আয় হয়েছিল ৯৩৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আর অর্থবছরটিতে নিট মুনাফা হয়েছিল ৫৩ কোটি দুই লাখ টাকা। শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয় ১ টাকা ২৫ টাকা। এ সময় ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ ছিল ১২ টাকা ৫১ পয়সা।
আর শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ছিল ঋণাত্মক (০.৩১ টাকা)।
২০১৭ অর্থবছরে বিনিয়োগের ওপর আয় হয়েছিল ৭২০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। আর বছরটিতে নিট মুনাফা হয়েছিল ৩৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। ইপিএস ছিল ০.৯২ টাকা। অর্থবছরটিতে শেয়ারপ্রতি সম্পদ ছিল ১১ টাকা ৭৭ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ছিল ৪ টাকা ১২ পয়সা।
২০১৬ অর্থবছরে বিনিয়োগে আয় ছিল ৪২৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
অর্থবছরে ব্যাংকটির নিট মুনাফা হয়েছিল ৪২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এতে শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস ১ টাকা। এ সময় ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ ছিল ১০ টাকা ৮৬ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ছিল ৫ টাকা ৪১ পয়সা।
লভ্যাংশ বিতরণ
ব্যাংকটি নিট মুনাফার ওপর ২০১৭ অর্থবছরে নগদ ডিভিডেন্ড দিয়েছে ৫ শতাংশ। ২০১৮ অর্থবছরে ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছে। ২০১৯ অর্থবছরে ৫ শতাংশ এবং ২০২০ অর্থবছরে নগদ ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
সম্পদের পরিমাণ
ব্যাংকটির সম্পদ বিবরণে দেখা যায়, সর্বশেষ ৯ মাসে ব্যাংকটির মোট সম্পদ ছিল ১২ হাজার ৭২৭ কোটি ৭০ লাখ টাকার। ২০২০ অর্থবছরে এ সম্পদ ছিল ১২ হাজার ৯০ কোটি ২১ লাখ টাকার। ২০১৯ অর্থবছরে ১০ হাজার ৬৪০ কোটি ৫৩ লাখ টাকার, ২০১৮ অর্থবছরে ৯ হাজার ২১৭ কোটি ১৯ লাখ টাকার, ২০১৭ অর্থবছরে ৭ হাজার ৯১৩ কোটি ৬ লাখ টাকার, ২০১৬ অর্থবছরে ৪ হাজার ৯২৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকার সম্পদ ছিল।
ব্যাংকটির অনুমোদিত মূলধন ২ হাজার কোটি টাকা। আর পরিশোধিত মূলধন ৫১৫ কোটি ৪১ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।
ব্যাংকের দায়
৯ মাসে ব্যাংকটির দায় ছিল ১১ হাজার ৯৮৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। ২০২০ অর্থবছরে ১১ হাজার ৪২০ কোটি ২১ লাখ টাকা, ২০১৯ অর্থবছরে ১০ হাজার ৭১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, ২০১৮ অর্থবছরে ৮ হাজার ৬৮৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, ২০১৭ অর্থবছরে ৭ হাজার ৪১২ কোটি ৯২ লাখ টাকা এবং ২০১৬ অর্থবছরে দায় ছিল ৪ হাজার ৪৬৫ কোটি ৩ লাখ টাকা।
৪২৫ কোটি টাকার শেয়ার বণ্টন যেভাবে
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের ২০২২ সালের ১৬ জুনের নোটিফিকেশন অনুযায়ী, এনআরবি বা প্রবাসীরা মোট শেয়ারের ২৫% পাবেন অর্থাৎ তারা পাবেন ১০৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা বা ১০ কোটি ৬২ লাখ ৫০ হাজার শেয়ার। অভিবাসী কর্মীদের মাধ্যমে ২৫ শতাংশ আইপিও শেয়ার সাবস্ক্রিপশন পরিপূর্ণ না হলে আনসাবস্ক্রাইবড অংশ অন্যান্য সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আনুপাতিক হারে বণ্টন করা হবে।
যোগ্য বিনিয়োগকারী পাবেন ৬৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বা ৬ কোটি ৩৭ লাখ ৫০ হাজার শেয়ার। মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ১৫ কোটি ৯৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বা ১ কোটি ৫৯ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ শেয়ার। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পাবেন ২৩৯ কোটি ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা বা ২৩ কোটি ৯০ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ শেয়ার।
৪২৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে যেভাবে
জিআইবি তাদের ব্যাংকিং কার্যক্রম আরও গতিশীল ও সেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আইপিও থেকে উত্তোলিত ২৬৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা বা ৬৩.১৮ শতাংশ সরকারি বন্ডে বিনিয়োগ করবে। ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পে (এসএমই) বিনিয়োগ করবে ১০০ কোটি টাকা বা ২৩.৫৩ শতাংশ। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করবে ৫০ কোটি টাকা বা ১১.৭৬ শতাংশ। এ ছাড়া সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয় হবে আইপিও খাতে।
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড বর্তমানে সারা দেশে সব বিভাগে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। একই সঙ্গে দেশে আরও শাখা খোলার মাধ্যমে সব জেলা ও বড় শহরে ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্প্রসারণের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে।
এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে নতুন শাখা খোলা, ব্যবসা কাভারেজ বাড়ানো, নতুন কর্মকর্তা/কর্মচারী নিয়োগ করা, ব্যবসায়িক কৌশল পরিবর্তন, অপারেশনাল ক্রিয়াকলাপের সূত্র পরিবর্তন এবং মূলধন বিনিয়োগ বাড়ানো কার্যক্রম প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এতে করে ব্যাংকের সম্ভাব্য গ্রাহকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিদ্যমান গ্রাহকরা ব্যাংকের অনুগত গ্রাহক হয়ে উঠেছে। একই সঙ্গে বিনিয়োগের সুযোগ বিস্তৃত হয়েছে। ইসলামী চিন্তাধারার লোকেরা এমন একটি ব্যাংকিং কার্যক্রমে জড়িত হতে পছন্দ করে, যেখানে সুদ নেয়ার বা দেয়ার সুযোগ নেই এবং সেসব ব্যাংকের ওপর আস্থা রাখে, যেসব ব্যাংক ইসলামী শরিয়াহ ও নীতির অনুশীলন করে পরিচালনা হয়।
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক সম্পূর্ণভাবে ইসলামী শরিয়াহ ও নীতির অনুশীলন করে কাজ করছে। ব্যাংকে পরিবেশগত বিষয়কে অত্যন্ত অগ্রাধিকার দেয়া হয় এবং এটি ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে গ্রিন ব্যাংকিং নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেয়। ফলে পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে সচেতন ব্যক্তিরা গ্রিন ব্যাংকিং নীতির আওতায় পরিচালিত ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংকিং করার সুযোগ রয়েছে।
জিআইবির গ্রাহকরা সহজেই ব্যালেন্স/স্টেটম্যান্ট দেখা, যেকোনো ব্যাংকে ফান্ড ট্রান্সফার, ক্রেডিট কার্ডের বিল প্রদান ও চেক রিকুইজিশনসহ অন্যান্য অনলাইন ব্যাংকিংয়ের সেবা পাচ্ছে।
জিআইবির এসএমই ব্যাংকিং
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড এসএমই ক্লায়েন্টদের বৈচিত্র্যপূর্ণ আর্থিক চাহিদা মেটাতে যুগোপযোগী নানা ধরনের এসএমই প্রোডাক্ট প্রবর্তন করেছে। ব্যাংকটি এসএমই ক্লায়েন্ট, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এবং নারী উদ্যোক্তাদের জন্য রিভলভিং এবং মেয়াদি বিনিয়োগ সুবিধা দেয়।
জিআইবি দেশব্যাপী ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলোর অর্থায়নে আরও বেশি সুযোগ পেতে সহায়তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার চেষ্টা করছে। এসএমই সেক্টরে আর্থিক মধ্যস্থতাকারীদের বিস্তৃতি আরও কার্যকরভাবে এবং দক্ষতার সঙ্গে সমর্থন করার জন্য ব্যাংক বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও পড়ুন:রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে অর্থবছরের শেষ দিন আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের সব ব্যাংকের শাখাগুলোতে ব্যাংকিং লেনদেন চলবে।
সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সমকালকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৩০ জুন সকাল ১০টা পর্যন্ত ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯২২ কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহ হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান। তিনি বলেন, গত অর্থবছরের চেয়ে এবার বেশি রাজস্ব আদায় হওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে।
সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে নারী কেলেং্কারীসহ দুর্নীতি, অর্থপাচার, শেয়ার কারসাজি ও যৌন হয়রানিসহ একাধিক অভিযোগ এনেছেন ব্যাংকের এক গ্রাহক
গতকাল বুধবার (২৫ জুন) দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) এসব অভিযোগ তুলে লিখিত আবেদন জমা দেন শিমুল সর্দার নামে এক গ্রাহক। একই অভিযোগে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং আর্থিক খাত বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার কাছেও চিঠি পাঠিয়েছেন।
দুদকে দেওয়া ১০ পাতার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আলমগীর কবির দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ— তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মনীতি উপেক্ষা করে নামে-বেনামে ঋণ দিয়েছেন, চলতি ঋণের সুদ মওকুফ করেছেন এবং অযোগ্য প্রতিষ্ঠানকে একক সিদ্ধান্তে ঋণ অনুমোদন করেছেন। এসব কর্মকাণ্ডের ফলে বর্তমানে সাউথইস্ট ব্যাংকের হাজার কোটি টাকার আমানত ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর কবির ব্যাংকটির অর্থ সরবরাহ ও ব্যবস্থাপনায় একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করেছিলেন। ব্যাংকের প্রতিটি বড় সিদ্ধান্ত—যেমন নতুন শাখা খোলা, ইন্টেরিয়র ডিজাইন, বুথ বসানো, সফটওয়্যার কেনা ইত্যাদিতে তার একক নিয়ন্ত্রণ ছিল। এসব কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর অধিকাংশই ছিল তার আত্মীয়স্বজন বা ঘনিষ্ঠজনদের মালিকানাধীন।
সাবেক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির গুরুতর অভিযোগও তুলেছেন অভিযোগকারী। অভিযোগে বলা হয়, আলমগীর কবির একাধিক নারী কর্মকর্তাকে নিজের অফিসে ডেকে নিয়ে তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে হয়রানি করেছেন। এসব ঘটনার কিছু প্রমাণ ইতোমধ্যে ভুক্তভোগীদের কাছে রয়েছে এবং তারা আইনগত পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন। এছাড়া তিনি নিজের পছন্দের কিছু নারীকে ব্যাংকের অধীনস্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘গ্রিন স্কুল’ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ‘বে লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড’-এ চাকরি দিয়েছেন বলেও অভিযোগে জানান।
শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, শেয়ার কারসাজির অভিযোগে আলমগীর কবিরকে ইতোমধ্যে ১২ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তার নেতৃত্বে সাউথইস্ট ব্যাংকের ২৩২ কোটি টাকা বে লিজিংয়ে বিনিয়োগ করা হয়, যা বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ-৪-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বে লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড বর্তমানে আর্থিকভাবে এতটাই দুর্বল যে, প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংকের পাওনা ফেরত দিতে পারছে না।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বে লিজিংয়ের পুঞ্জীভূত লোকসান দাঁড়ায় ১৭২ কোটি টাকায়। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান চেয়ারম্যান সুরাইয়া বেগম—যিনি আলমগীর কবিরের স্ত্রী—তাঁর মাধ্যমে ব্যাংকটির সঙ্গে বে লিজিংয়ের লেনদেন ‘ব্যাংকসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে লেনদেন’ হিসেবে চিহ্নিত হয়। এতে করে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ২৭ (১-খ) ধারা লঙ্ঘন করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, আলমগীর কবির ব্যাংকের ফাউন্ডেশন ও শিক্ষা বিভাগের তহবিল থেকেও অর্থ তুলে এনে বে লিজিংয়ে সরবরাহ করেছেন। ব্যাংকের মেয়াদি আমানত ও কলমানির অর্থ আটকে আছে ওই প্রতিষ্ঠানটিতে। বারবার চিঠি পাঠিয়েও কোনো অর্থ ফেরত পায়নি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। শুধু মূলধন নয়, প্রতিষ্ঠানটি সুদও পরিশোধ করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড এর ২৯ তম বার্ষিক সাধারন সভা ২৪ জুন ২০২৫ইং তারিখে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ২০২৪ইং সালের নিরীক্ষিত বার্ষিক প্রতিবেদন এবং ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন করা হয়। পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান জনাব মোস্তফা কামাল সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন কোম্পানীর পরিচালক মিসেস বিউটি আক্তার, ব্যারিষ্টার হাসান রাজিব প্রধান, জনাব মনজুর মো: সাইফুল আজম এফসিএমএ, মিসেস তাহমিনা বিনতে মোস্তফা, জনাব তায়েফ বিন ইউসুফ, মিসেস তানজিমা বিনতে মোস্তফা, জনাব ওয়াশিকুর রহমান, জনাব তানভীর আহমেদ মোস্তফা , মিসেস সামিরা রহমান, মিসেস তাসনিম বিনতে মোস্তফা, জনাব মোঃ বেলায়েত হোসেন ভূইয়া, জনাব মোহাম্মদ সাইদ আহমেদ রাজা এবং মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সানা উল্লাহ, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা শেখ বিল্লাল হোসেন এফসিএ, কোম্পানীর অডিটর এ.কে.এম. আমিনুল হক এফসিএ, সিনিয়র পার্টনার মেসার্স এ.হক এন্ড কোং চাটার্ড একাউন্টেন্টস এবং আবদুর রহিম মিয়া, এফসিএ, পার্টনার মেসার্স ইসলাম জাহিদ এন্ড কোং, চাটার্ড একাউন্টেন্টস, মোঃ ফিরোজুল ইসলাম সিনিয়র এক্সিঃ ভাইস প্রেসিডেন্ট (অর্থ ও হিসাব) ও কোম্পানী সচিব মো: মাসুদ রানা এবং কোম্পানীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়ারহোল্ডার সভায় সংযুক্ত ছিলেন।
মেঘনা ব্যাংক পিএলসি’র ১২তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ২৩ জুন ২০২৫, সোমবার রাজধানীর মহাথালীতে অবস্থিত ম্যাডোনা টাওয়ারে অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত বার্ষিক সাধারণ সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের সম্মানিত চেয়ারপার্সন মিসেস উজমা চৌধুরী।
বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান জনাব তানভীর আহমেদ, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মো. আলী আক্তার রেজভী, এফসিএ এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ মামুনুল হক। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক জনাব রজব আলী, জনাব এম. নজরুল ইসলাম এবং জনাব হাবিবুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব কাজী আহ্সান খলিল এবং ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি সচিব জনাব সজিব কুমার সাহা, এফসিএ এবং ব্যাংকের সম্মানিত শেয়ারহোল্ডারবৃন্দ।
সভায় ব্যাংক নিজেদের পরিষেবা বৃদ্ধি, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রচারণা, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখা এবং টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।
সম্প্রতি সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি. বরিশাল জেলায় অবস্থিত বিভিন্ন স্কুল থেকে আগত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকদের নিয়ে লিড ব্যাংক হিসেবে ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা এর নির্দেশনায় “স্কুল ব্যাংকিং কনফারেন্স-২০২৫” আয়োজন করেছে।
উক্ত কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব ইমতিয়াজ আহমেদ মাসুম, নির্বাহী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব), বাংলাদেশ ব্যাংক, বরিশাল এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব আবিদুর রহমান চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব), সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি., জনাব মোঃ আলী হোসেন, অতিরিক্ত পরিচালক, ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা, জনাব মোঃ হারুনুর রশিদ, জেলা শিক্ষা অফিসার, বরিশাল এবং সম্মানিত অতিথি জনাব মোঃ মাহাবুব-উল আলম, উপপরিচালক, ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা।
উক্ত কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোহাম্মদ রাশেদুল আমিন। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের মধ্য হতে উক্ত কনফারেন্সে জাহানারা ইসরাইল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বরিশাল থেকে রাবিয়া কামাল (দশম শ্রেণী) এবং বরিশাল জেলা স্কুল, বরিশাল থেকে মোঃ হাসনাইন বিন কবির (দশম শ্রেণী) বক্তব্য রাখেন।
উক্ত কনফারেন্সে বরিশাল জেলার ৪৫ টি তফসিলী ব্যাংকের ৪৫ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বরিশাল জেলার বিভিন্ন স্কুল থেকে ১৮০ জন শিক্ষার্থী ও ৪৫ জন শিক্ষক এবং অতিথি সহ সর্বমোট ৩৫০ জন অংশগ্রহণ করেন। কনফারেন্সে বক্তারা শৈশব থেকেই সঞ্চয়, বিনিয়োগ ও দায়িত্বশীল অর্থ ব্যবস্থাপনার অভ্যাস গড়ে তোলা ও আধুনিক ব্যাংকিং প্রযুক্তির সাথে ছাত্র-ছাত্রীদের পরিচিত করানোর লক্ষ্যে স্কুল ব্যাংকিং এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন।
এছাড়াও স্কুল ব্যাংকিং এর উপর নির্মিত ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী, র্যালী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিক্ষার্থীদের জন্য কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজনের মধ্য দিয়ে কনফারেন্সের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
১৬ জুন, ২০২৫ তারিখে ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি. এর নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদের ৪০তম সভা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, গুলশান-১, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব মুঃ ফরীদ উদ্দীন আহমদ। সভায় পর্ষদের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মোঃ হুমায়ুন কবীর, স্বতন্ত্র পরিচালক ড. শহিদুল ইসলাম জাহীদ, জনাব মোহাম্মদ সাইফুল আলম এবং ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জনাব মোঃ হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সর্বজনাব শফিউদ্দিন আহমেদ এবং মোহাম্মদ ইকবাল কার্যপোলক্ষ্যে সভায় যোগদান করেন। সভায় ব্যাংকের ব্যবসা বাণিজ্য, আমানত ও রেমিট্যান্স সংগ্রহ বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ আদায়ে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়।
জনতা ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান ১৫ জুন রোববার জনতা ব্যাংক স্টাফ কলেজ ঢাকা কর্তৃক আয়োজিত ২৫ (পঁচিশ) দিন ব্যাপী ফাউন্ডেশন কোর্স ফর অফিসার্স (ব্যাচ ০৫/২০২৫) শীর্ষক প্রশিক্ষণ কোর্স উদ্বোধন করেন। উক্ত প্রশিক্ষণ কোর্সে জনতা ব্যাংকের ৫০ জন সিনিয়র অফিসার অংশগ্রহণ করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জনতা ব্যাংক স্টাফ কলেজের ডিজিএম-স্টাফ কলেজ ইনচার্জসহ অন্যান্য নির্বাহী ও অনুষদ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য