টানা পঞ্চমদিন পতন ঘটতে যাচ্ছে মনে হচ্ছিল যখন, সে সময় হঠাৎ করেই বড় মূলধনি দুই কোম্পানি ওরিয়ন ফার্মা ও বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারদর বাড়তে শুরু করল। আর শেষ এক ঘণ্টা ১৫ মিনিটে সূচকে ৩৭ পয়েন্ট যোগ হয়ে শেষ হলো ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে ২ পয়েন্ট বৃদ্ধিতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা আর চাপ কাটেনি এতটুকু। বিশ্ব অর্থনীতিক চাপ নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যে চেক নগদায়নের আগ পর্যন্ত শেয়ার কেনা যাবে না বলে নির্দেশনা জারির পর থেকে যে টানা দরপতন ঘটছে, তা থেক বের হতে পারেনি পুঁজিবাজার।
এই নির্দেশনা না পাল্টালে পুঁজিবাজারে চাপ বাড়বে বলে স্টক ব্রোকার অ্যাসোসিয়েশন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করার বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর থেকে দরপতনের গতি আরও বেড়েছে।
এদিনও বেশিরভাগ শেয়ার দর হারিয়েছে। ৬১টি কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ৭৬টির আর ২২৬টি কোম্পানি আগের দিনের দরে লেনদেন হয়েছে, যেগুলোর আসলে দর কমার আর সুযোগ নেই এই কারণে যে, এগুলো বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন দর বা ফ্লোর প্রাইসে লেনদেন হয়েছে।
তিন কর্মদিবস পর লেনদেন আবার এক হাজার কোটি টাকার নিচে নেমে গেছে। দিন শেষে হাতবদল হয়েছে, যা গত ৪৫ কর্মদিবসের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন।
হাতবদল হয়েছে ৯৭৫ কোটি ৬২ লাখ ৮৭ হাজার টাকার শেয়ার। গত ১২ অক্টোবর লেনদেন ছিল ৯৯৪ কোটি ১১ লাখ ৬২ হাজার টাকা।
এর আগে শেষ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল গত ১৪ আগস্ট। সেদিন হাতবদল হয়েছিল ৬৪৪ কোটি ৪৫ লাখ ৩১ হাজার টাকা। তবে সে সময় পুঁজিবাজার তলানি থেকে উঠে আসার ইঙ্গিত দিচ্ছিল বলে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা হলেও আশাবাদী হয়ে উঠেছিল।
হঠাৎ পুঁজিবাজারে এই দরপতনের পর চেক ইস্যুটি সামনে এসেছে। ১১ অক্টোবর স্টক ব্রোকারদের প্রতি জারি করা বিএসইসির এক নির্দেশনায় বলা হয়, চেকের টাকা নগদায়নের আগে তা দিয়ে শেয়ার কেনা যাবে না।
এই নির্দেশনার পরই পুঁজিবাজারে লেনদেন কমতে দেখা গেছে উল্লেখযোগ্য হারে। একসময় যে লেনদেন ২ হাজার কোটির ঘরে ও এর কাছাকাছি হতো, সেটি চলে আসে হাজার কোটির ঘরে।
এদিকে চেক নগদায়ন করার সিদ্ধান্ত না পাল্টালে পুঁজিবাজারে চাপ আরও বাড়বে বলে স্টক ব্রোকাররা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে চিঠি দেয়। সোমবার বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রচারের পরদিনই পুঁজিবাজারে চাপ বাড়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এখন পর্যন্ত তাদের অবস্থানে অনড় আছে। সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কোনো আভাস নেই তাদের।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যাদের শেয়ারে ফ্লোর প্রাইসে আটকে গেছে, তারা নতুন করে বাজারে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। এক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা যদি একটা জায়গা থেকে প্রফিট করে আরেক দিকে বিনিয়োগ করেন, সেক্টরাল মুভমেন্ট করান তাহলে ফান্ডগুলো রিলিজ হবে, সবার অংশগ্রহণ বাড়বে। তাহলে একটা ভাইব্র্যান্ট মার্কেট পাবেন। এ জন্য বড়দের এগিয়ে আসতে হবে। ছোটদের বাজার প্রভাবিত করার সক্ষমতা নেই।’
লেনদেনে ভারসাম্য নেই
যে ৬১টি কোম্পানির দর বেড়েছে সেগুলোতে লেনদেন হয়েছে মোট লেনদেনের প্রায় অর্ধেক, ৪৮০ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
যে ৭৬টি কোম্পানির দর কমেছে, সেগুলোতে লেনদেন হয়েছে মোট ৩৯৬ কোটি ২০ লাখ টাকা।
আগের দেন লেনদেন হওয়া ফ্লোর প্রাইসে থাকা ২২৬টি কোম্পানিতে লেনদেন হয়েছে মাত্র ৪৪ কোটি টাকা। এই তালিকায় আছে শক্তিশালী মৌলভিত্তির ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো, গ্রামীণ ফোন, স্কয়ার ফার্মা, স্কয়ার টেক্সটাইল, রেনাটা, ব্র্যাক ব্যাংকের মতো কোম্পানি।
এদিন সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া কেবল ১০টি কোম্পানিতে হাতবদল হয়েছে মোট লেনদেনের প্রায় অর্ধেক; ৪৫২ কোটি ২৫ লাখ ৩১ হাজার টাকা।
লেনদেনের শীর্ষে থাকা বেক্সিমকো লিমিটেডের লেনদেন হয়েছে ফ্লোর প্রাইসে থাকা ২২৬টি কোম্পানির লেনদেনের আড়াই গুণ। এই একটি কোম্পানির ১১৬ কোটি ২ লাখ ৭১ হাজার টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
ঝড় গেছে স্বল্প মূলধনির ওপর
স্বল্প মূলধনি যে কয়টি কোম্পানির শেয়ারদর এই সময়ে তরতর করে বাড়ছিল, সেগুলোর মধ্যে অনেকগুলো এদিন দরপতনের শীর্ষ তালিকায় চলে এসেছে। এমনকি পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ আয় ও লভ্যাংশ ঘোষণা করা জেমিনি সি ফুডের দর কমেছে সবচেয়ে বেশি।
লভ্যাংশ সংক্রান্ত ঘোষণার কারণে দরপতনের সীমা না থাকার দিন কোম্পানিটির দর কমেছে ১৪ শতাংশের বেশি।
গত বছর শেয়ার প্রতি ৯৩ পয়সা মুনাফা করা কোম্পানিটি গত ৩০ জুন শেয়ার প্রতি ১২ টাকা ৪৯ টানা মুনাফা করে ১০ শতাংশ নগদ ও ৩০ শতাংশ বোনাস শেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এই লভ্যাংশও পাঁচ বছরের সর্বোচ্চ।
দিনের শুরুতে কোম্পানির শেয়ারদর লাফ দিলেও পরে স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোর দর বেঁধে পতনের মধ্যে এটিও দর হারায়। আর মূল্যসীমা না থাকার দিনে দর হারায় সবচেয়ে বেশি।
আগের দিন শেয়ারটির লেনদেন হয়েছিল ৫৯৩ টাকা ৪০ পয়সায়। দিনের শুরুতে দর উঠে যায় ৬৩৮ টাকা ৯০ পয়সায়। তবে দিন শেষে দর দাঁড়িয়েছে ৫০৯ টাকা ২০ পয়সা, যদিও এক সময় দর নেমে যায় ৪৯৫ টাকা ১০ পয়সা পর্যন্ত। দিনের সর্বোচ্চ দরে যিনি কিনেছেন, তার শেয়ার প্রতি এক দিনেই নাই হয়ে গেছে ১২৯ টাকা ৭০ পয়সা বা ২০.৩০ শতাংশ।
লভ্যাংশ ঘোষণার আগে লাফাতে থাকা তমিজউদ্দিন টেক্সটাইলের দর ৮.৭৩ শতাংশ, লভ্যাংশ ঘোষণার পর ২২০ টাকা থেকে ১০ কর্মদিবসে ৩৩৯ টাকায় উঠে যাওয়া পেপার প্রসেসিংয়ের দর ৮.৭২ শতাংশ, লভ্যাংশ ঘোষণার আগে এক মাসেরও কম সময়ে ২২০ টাকা থেকে ৩১৫ টাকায় উঠে যাওয়া অ্যাপেক্স ফুডের দর ৮.৬২ শতাংশ কমেছে।
এক মাসেরও কম সময় ২৮৮ টাকা থেকে ৩৯৪ টাকা হয়ে যাওয়া বিডি ল্যাপস ৮.৫২ শতাংশ, গত ২১ সেপ্টেম্বর ১৭৮ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হওয়া মনোস্পুল পেপার এক মাসেরও কম সময়ে ৪৬৩ টাকা ৪০ পয়সায় উঠে যাওয়া ৮.৪৯ শতাংশ, এক মাসেরও কম সময়ে ৩৮১ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ৫১১ টাকা ৩০ পয়সায় উঠে যাওয়া জেএমআই সিরিঞ্জ ৭.৫০ শতাংশ দর হারিয়েছে।
দরপতনের শীর্ষ দশে থাকা অন্য দুটি কোম্পানির মূলধনও ১০০ কোটি টাকা কম। এর মধ্যে ৫৭ কোটি টাকা মূলধনের বিডিকমের দর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯.৮৭ শতাংশ কমেছে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর শেয়ারদির দর ছিল ৩৩ টাকা। ১২ অক্টোবর এক পর্যায়ে লেনদেন হয় ৭৯ টাকা ৯০ পয়সায়। সেখান থেকে কেবল ৬ কর্মদিবসে নেমে এসেছে ৪৮ টাকা ৩০ পয়সা।
এই তালিকার দশম স্থানে থাকা ৯৩ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের ইস্টার্ন হাউজিং দর হারিয়েছে ৭.০৯ শতাংশ। গত ১৪ সেপ্টেম্বর ৭৬ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। গত ১৭ অক্টোবর এক পর্যায়ে ১৪৭ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। চার কর্মদিবসে সেখান থেকে নেমে এসেছে ১১৫ টাকা ৪০ পয়সায়।
শীর্ষ দশের বাইরে ইস্টার্ন কেবলসের দর ৬.৭৫ শতাংশ, আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের দর ৬.৭৪ শতাংশ, সোনালী আঁশের দর ৫.৮৬ শতাংশ, রহিমা ফুডের দর ৫.৫৯ শতাংশ, মুন্নু অ্যাগ্রোর দর ৫.৫২ শতাংশ, অ্যামবি ফার্মার দর ৪.৬৭ শতাংশ, ওয়াটা কেমিক্যালসের দর ৩.৭৮ শতাংশ, হাক্কানি পাল্প ও আজিজ পাইপসের দর ৩.৭১ শতাংশ, নর্দার্ন জুটের দর ৩.৪৫ শতাংশ, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের দর ৩.২৬ শতাংশ, অ্যাপেক্স স্পিনিংয়ের দর ৩.১০ শতাংশ, এএমসিএল প্রাণের দর ২.৮০ শতাংশ, মুন্নু সিরামিকসের দর ২.৩৩ শতাংশ কমেছে। এসব কোম্পানির বেশিরভাগের দর গত কয়েকদিন ধরে ক্রমাগতভাবে বাড়ছিল।
রক্ষাকর্তা এবার ওরিয়ন-বেক্সিমকো
অস্বাভাবিক উত্থানের পর দরপতনের ধারায় থাকা ওরিয়ন ফার্মা ও বেক্সিমকো লিমিটেড এদিন সূচকের রক্ষাকর্তা হয়ে এসেছে।
তবে দিনের অর্ধেক বেলা পর্যন্ত চিত্রটা এমন ছিল না। আড়াই মাসেরও কম সময়ে ৭৮ টাকা থেকে ১৫৬ টাকা হয়ে যাওয়া ওরিয়ন ফার্মার দর ক্রমেই কমছিল।
আগের দিন দর ছিল ১১৩ টাকা ২০ পয়সা। সূচক যখন কমে গিয়েছিল, তখন এই কোম্পানিটির দর ১০৯ টাকা ৪০ পয়সায়। তবে শেষ ঘণ্টায় উল্টো দৌড় দিয়ে এক পর্যায়ে হয়ে যায় ১২৩ টাকা। দিন শেষে দর দাঁড়িয়েছে ১২১ টাকা ২০ পয়সা।
এই একটি কোম্পানির কারণেই সূচক বেড়েছে ৮.৪৩ শতাংশ।
২৮ জুলাই ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর ১১৫ টাকা দর থাকা বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারদর কম সময়েই হয়ে যায় ১৪৬ টাকা। সেখান থেকে পড়তে পড়তে বুধবার দাঁড়ায় ১২২ টাকা ২০ পয়সা। এক পর্যায়ে দর আরও কমে ১২০ টাকায় নেমে আসে। তবে সেখান থেকে ৩ টাকা ৪০ পয়সা যোগ হয়ে ১২৩ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন শেষ করে।
এই কোম্পানিটির কারণে সূচকে যোগ হয়েছে ৪.৭৩ পয়েন্ট।
এছাড়া স্বল্প মূলধনি কোম্পানি সোনালী পেপারের দর ৫.৯৯ শতাংশ বাড়ায় ৭.২১ পয়েন্ট, কোহিনূর কেমিক্যালসের দর ৫.৫৯ শতাংশ বাড়ায় ৩.৮৭ পয়েন্ট, সি পার্লের দর ৩.৩৩ শতাংশ বাড়ায় ২.৪৫ পয়েন্ট, এডএন টেলিকমের দর ৭.৯৯ শতাংশ বাড়ায় ২.১ পয়েন্ট, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্টের দর ৬.৩৩ শতাংশ বাড়ায় ২.০৩ পয়েন্ট, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের দর ০.৮৩ শতাংশ বাড়ায় ১.৯২ পয়েন্ট, ঢাকা ব্যাংকের দর ২.২৭ শতাংশ বাড়ায় ১.৭১ পয়েন্ট এবং ইসলামী ব্যাংকের দর ০.৬১ শতাংশ বাড়ায় ১.৪৫ পয়েন্ট সূচক বেড়েছে।
সব মিলিয়ে কেবল ১০টি কোম্পানি সূচকে যোগ করেছে ৩৫.৯০ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ৫ দশমিক ২৩ পয়েন্ট সূচক কমেছে লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশের দরপতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে ১ দশমিক ৫ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৮১ পয়েন্ট কমেছে জেএমআই সিরিঞ্জেসের কারণে। শেয়ার প্রতি দাম কমেছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ।
ইস্টার্ন হাউজিংয়ের দর ৭ দশমিক ৫ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ৩ দশমিক ৭ পয়েন্ট।
এ ছাড়াও অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, বেক্সিমকো ফার্মা, জেমিনি সি ফুড, ইস্টার্ন ক্যাবলস, মনোস্পুল ও রহিমা ফুডের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ২৭ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট।
কোন খাত কেমন
শীর্ষে উঠে এসেছে বিবিধ খাত। হাতবদল হয়েছে ১৮০ কোটি ২৫ লাখ টাকা বা ১৯.৫৯ শতাংশ। খাতটিতে ৬টি কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। আর ৩টি করে কোম্পানির লেনদেন হয়েছে অপরিবর্তিত দর ও দরপতনে।
দুই দিন লেনদেন কমল ওষুধ ও রসায়ন খাতে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খাতটিতে লেনদেন হয়েছে ১৭১ কোটি ১০ লাখ টাকা। ১০টি করে কোম্পানির দরবৃদ্ধি ও দরপতন হয়েছে। আর ১১টির লেনদেন হয়েছে আগের দরে।
প্রকৌশল খাতে তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৫৫ কোটি ২০ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। ৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১৯টির লেনদেন হয়েছে আগের দরে। দরপতন হয়েছে ১৫টির।
চতুর্থ স্থানে থাকা খাদ্য খাতে লেনদেন হয়েছে ৭১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। ৫টির দরবৃদ্ধি, ৭টির দরপতন ও আগের দরে লেনদেন হয়েছে ৮টি কোম্পানির।
৫১ কোটি ৬২ লাখ টাকা লেনদেন করে তালিকার পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে সেবা ও আবাসন খাত। ১টি করে কোম্পানির দরবৃদ্ধি ও আগের দরে লেনদেন হয়েছে। ২টির দরপতন হয়েছে।
বাকি খাতের লেনদেন ছিল পঞ্চাশের নিচে।
দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০
১০ শতাংশ দর বেড়েছে নাভানা ফার্মার। শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ৩১ টাকা ৯০ পয়সায়। আগের দিনের দর ছিল ২৯ টাকা।
৭.৯৯ শতাংশ দর বেড়েছে এডিএন টেলিকম। প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৭ টাকা ৩০ পয়সায়। আগের দর ছিল ৯০ টাকা ১০ পয়সা।
ইন্দো-বাংলা ফার্মার শেয়ারদর ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেড়ে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২২ টাকা ৫০ পয়সায়। আগের দিনে লেনদেন হয়েছিল ২০ টাকা ৯০ পয়সায়।
এ ছাড়াও দরবৃদ্ধির তালিকায় রয়েছে ওরিয়ন ফার্মা, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, সোনালী পেপার, কোহিনূর কেমিক্যাল, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স, ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস ও লুবরেফ বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
মন্তব্য