বেঙ্গল প্লাস্টিক পাইপস্ লিমিটেডের বিশ্ব ভ্রমণ অফার বিজয়ী পরিবেশকদের নিয়ে নেপালের উদ্দেশ্যে যাত্রা করা হয় | ১৪ অক্টোবর বিজয়ীরা নেপাল গেছেন বলে প্রতিষ্ঠানটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
২৫ জন বিজয়ী পরিবেশকদের ভ্রমণ দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির হেড অফ মার্কেটিং জোহেব আহমেদ।
গত মাসেও বেঙ্গল গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ এর প্রায় ১০০ জন পরিবেশক নিয়ে নেপালে আয়োজিত হয়েছিল বার্ষিক পরিবেশক সম্মেলন। পরিবেশকদের নিয়ে মালয়েশিয়া ও তুর্কিতেও ভ্রমণের পরিকল্পনা রয়েছে বেঙ্গল গ্রুপ অফ ইন্ডাস্টিজের। শুধু দেশের বাহিরেই নয়, অন্যান্য পরিবেশকদের নিয়ে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে আনন্দ ভ্রমণের পরিকল্পনা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।
জোহেব আহমেদ বলেন, পরিবেশকদের জন্য প্রতিষ্ঠানটি সবসময়ই সচেতন এবং বিশ্ব ভ্রমণের মাধ্যমে বেঙ্গল তার পরিবেশকদের সাথে বিদ্যমান সুসম্পর্ক সুদৃঢ়তার সাথে বজায় রাখতে চায়।
ক্রেতাদের সবসময় সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে দাবি করে ওয়ালটন প্লাজার একা কর্মকর্তা বলেছেন, এ কারণেই ২০২২ সালে এর মুনাফা ৯৩ শতাংশ বেড়েছে। প্রবৃদ্ধির এই ধারা বজায় রেখে দ্রুতই দেশের শীর্ষ সেলস নেটওয়ার্ক হতে চায় ওয়ালটন প্লাজা।
তিনি আরও বলেছেন, লক্ষ্য পূরণে প্রতিষ্ঠানটি ওয়ানস্টপ সলিউশন চালু এবং কিস্তি ক্রেতা সুরক্ষা সহায়তা নীতিসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে।
ওয়ালটন প্লাজা আয়োজিত ‘চ্যালেঞ্জারস সামিট-২০২৩’ অনুষ্ঠানে এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ হেডকোয়ার্টার্সে দিনব্যাপী এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
‘আমরা সেরা ছিলাম, আমরা সেরা আছি, আমরা সেরা থাকব’ স্লোগানে সম্মেলনে অংশ নেন দেড় সহস্রাধিক প্লাজা ম্যানেজার ও সহকারী ম্যানেজারসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।
সম্মেলনে ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য ব্যবসা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। সেলস এক্সিকিউটিভদের প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেয় ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।
ওয়ালটন প্লাজার ম্যানেজিং পার্টনার এস এম মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে ‘চ্যালেঞ্জার’স সামিট-২০২৩’-এর প্রধান অতিথি ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান এস এম নূরুল আলম রেজভী। বিশেষ অতিথি ছিলেন ভাইস-চেয়ারম্যান এস এম শামছুল আলম, পরিচালক এস এম মঞ্জুরুল আলম, জাকিয়া সুলতানা ও নিশাত তাসনিম শুচি, ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও গোলাম মুর্শেদ এবং ওয়ালটন প্লাজার চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) মোহাম্মদ রায়হান।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা ও পরিচালনা করেন ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর চিত্রনায়ক আমিন খান।
চ্যালেঞ্জারস সামিটে ওয়ালটন প্লাজার ম্যানেজিং পার্টনার এস এম মাহবুবুল আলম বলেন, ‘যারা প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে নতুন কিছু সৃষ্টি করেন, তারাই হলেন চ্যালেঞ্জার। ওয়ালটন প্লাজার প্রতিটি সদস্য একেকজন চ্যালেঞ্জার। আর চ্যালেঞ্জারদের শক্তি দেশের অগণিত ক্রেতারা।
‘ক্রেতাদের কারণে ওয়ালটন আজ দেশ ছাড়িয়ে পুরো বিশ্বে অন্যতম শীর্ষ ব্র্যান্ড হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই তাদের জন্য সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।’
ওই সময় তিনি ওয়ালটন প্লাজার জন্য ‘ক্রেতা তুমি আপনজন, ঘোর বিপদেও আমরা সাথী সারাক্ষণ’ শীর্ষক নতুন স্লোগান ঠিক করেন।
এস এম মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্যের বাজার পরিবর্তনশীল। মার্কেট কী ধরনের পরিবর্তন চায়, আমাদের সেলস এক্সিউিটিভরা হলেন তার বার্তাবাহক। তারা যদি সঠিক মেসেজ দেন, তবে আমরা সময়োপযোগী সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে এগিয়ে যেতে পারব।’
গোলাম মুর্শেদ বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তি খাতে আমাদের অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে, কিন্তু ওয়ালটন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বাংলাদেশের চিত্র পাল্টে গেছে। এখন প্রায় প্রত্যেক পরিবারেই ফ্রিজ-টিভির মতো ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য আছে। ক্রেতারা সবসময় আমাদের পাশে ছিলেন।
‘এর সঙ্গে আমাদের চৌকস সেলস টিমসহ সকল বিভাগের সদস্যদের নিরলস শ্রমে ওয়ালটন আজ শীর্ষ ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে। এখন আমাদের লক্ষ্য বিশ্বজয়ের। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জটা অনেক বড়, যা আমাদের মোকাবিলা করতে হবে।’
মোহাম্মদ রায়হান বলেন, ‘ওয়ালটন প্লাজার সেলস ফাইটারগণ হচ্ছে বিশ্বের সেরা। ওয়ালটন পণ্য বিশ্বের শ্রেষ্ঠ পণ্য। এমন শক্তিশালী সেলস বাহিনী এবং শ্রেষ্ঠ পণ্য থাকতে বিদেশি কোনো ব্র্যান্ড কিংবা পণ্য বাংলাদেশের বাজারে কখনোই সুবিধা করতে পারবে না। দেশের বাজারে সবসময় আমরাই শীর্ষে থাকব।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্বে একমাত্র ওয়ালটন প্লাজাই কিস্তি ক্রেতা সুরক্ষা সহায়তা সুবিধা চালু করেছে। আমরা প্রতিটি ঘরে ওয়ানস্টপ সার্ভিস পৌঁছে দিচ্ছি। ২০২২ সালে ১২ লাখ ৫০ হাজার ক্রেতা আমাদের কাস্টমার ব্যাংকে যুক্ত হয়েছেন।
‘চলতি বছর আরও ১৮ লাখ কাস্টমার আমাদের ব্যাংকে যুক্ত হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতিটি বাড়ি ওয়ালটন প্লাজার কাস্টমার ব্যাংকের আওতায় আসবে। ওয়ালটন প্লাজা হবে দেশের শীর্ষ সেলস নেটওয়ার্ক।’
সম্মেলনে বিভিন্ন অঞ্চলের ওয়ালটন প্লাজা শাখার সেরা ম্যানেজার ও এরিয়া ম্যানেজাদের পুরস্কৃত করা হয়। সবশেষে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
আরও পড়ুন:দেশে ব্যবসার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা দুর্নীতিকেই প্রধান বাধা হিসেবে দেখছেন বলে জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
গত বছরের এপ্রিল থেকে জুলাইয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে জরিপের সময় ব্যবসায়ীরা এমন মত দেন বলে জানায় সংস্থাটি।
ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরাম বিশ্বজুড়ে এ জরিপ পরিচালনা করে। গত দুই দশকের মতো গত বছরও সংস্থাটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে জরিপের কাজে অংশ নেয় সিপিডি।
উদ্যোক্তা মতামত জরিপের ফল প্রকাশ করে রোববার এর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
রাজধানীর ধানমন্ডি কার্যালয়ে ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে সিপিডি জানায়, জরিপে অংশগ্রহণকারী ৬৪.৬ শতাংশ ব্যবসায়ী দুর্নীতিকে তাদের ব্যবসার প্রধান প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখেছেন। লাইসেন্স নেয়া কিংবা কর দেয়ার মতো কাজে গিয়ে তাদের ঘুষ দিতে হয়েছে।
সংস্থাটির ভাষ্য, ব্যবসায় অন্যান্য প্রধান সমস্যার মধ্যে রয়েছে অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া এবং অদক্ষ আমলাতন্ত্র, যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার অস্থিতিশীলতা ও নীতি ধারাবাহিকতার অভাব। এসব কারণে দেশের ব্যবসায়িক পরিবেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।
দেশে প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসার পরিবেশ আরও খারাপ হয়েছে জানিয়ে সিপিডি বলেছে, বেসরকারি খাতে সুশাসন, নীতিশাস্ত্রের অভাব এবং দুর্বল তদারকির কারণে প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশের অবনতি হয়েছে।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘২০২১-এর তুলনায় ২০২২ সালে ব্যবসার পরিবেশ দুর্বল ছিল। কর কাঠামোতে এখনও ভারসাম্য আনা যায়নি। সড়ক, রেল, নৌপথে অনেক অবকাঠামো মানসম্মত নয়।’
সুপারিশ
জরিপের ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নে ব্যবসায়ীদের মত ও নিজেদের সুপারিশ পেশ করে সিপিডি।
ব্যবসায়ীরা মনে করেন, পরিবেশবান্ধব শহর গড়ে তুলতে বিদেশি সহযোগীদের কাছ থেকে আলাদা ঋণ আসা উচিত। এতে পরিবেশ দূষণ অনেকাংশে কমবে।
রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে ব্যবসায় মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রা সংকট ও অস্থিতিশীল নীতির মতো নতুন চ্যালেঞ্জ মাথাচাড়া দিয়েছে জানিয়ে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন ও সুদহারের সীমা উন্মুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছে সিপিডি।
সংস্থাটির মতে, বাংলাদেশের আর্থিক খাতে বড় ধরনের সংস্কার প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত মেনে চলার অংশ হিসেবে ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধন, ঋণে সুদহারের সীমা তুলে নেয়া, বকেয়া ঋণে স্বচ্ছতা, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং ইন্স্যুরেন্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অথরিটির (আইডিআরএ) কার্যকর ভূমিকা প্রয়োজন।
জরিপ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাজারে প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে প্রতিযোগিতা কমিশন, ভোক্তা অধিকার, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, এনবিআর ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের যথাযথ ভূমিকা পালন করা উচিত।
আরও পড়ুন:জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অথরাইজড ইকোনমিক অপারেটর (এইও) সনদপত্র পেয়েছে ফেয়ার ইলেক্ট্রনিক্স লিমিটেড।
আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের হাত থেকে এই সনদ গ্রহণ করেন ফেয়ার ইলেকট্রনিক্স ও ফেয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান রুহুল আলম আল মাহবুব।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বারস অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে ফেয়ার ইলেক্ট্রনিক্সসহ ৯টি প্রতিষ্ঠানকে এনবিআরের কাস্টমস মূল্যায়ন ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা অধিদপ্তরের এইও সনদ দেয়া হয়।
সনদ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো আমদানিকৃত পণ্য সহজেই বন্দর থেকে খালাস করে নিজস্ব কারখানায় নেয়াসহ ১০ ধরনের সুবিধা পাবে। তারা কাস্টম হাউস বা শুল্ক স্টেশনের পরিবর্তে নিজস্ব আঙিনায় পণ্যের চালানের কায়িক পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ পাবে। বন্দরে পণ্য আসার আগেই বিল অফ এন্ট্রি দাখিলসহ শুল্কায়নের কাজ শেষ করতে পারবে।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভারতের আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে পুঁজিবাজারে ধোঁকাবাজির অভিযোগ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর এশিয়ার শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির সম্পত্তির পরিমাণ অব্যাহতভাবে কমছে। তিনি ফোর্বসের তালিকায় বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনী থেকে সপ্তমস্থানে নেমে গেছেন।
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ ফার্ম নামের ওই প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে শেয়ার দরে কারচুপি’র অভিযোগ আনার পর তিন দিন ধরে দরপতনে কোম্পানির শেয়ারদর প্রায় ২০ শতাংশ কমে গেছে।
ফোর্বস জানায়, আদানির সম্পদের মূল্য কমে বর্তমান দাঁড়িয়েছে আনুমানিক ৯ হাজার কোটি ডলারে। তিন দিনের ব্যবধানে তার ২২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ কমেছে।
তবে এখনও এ সম্পদ নিয়ে এখন ও এশিয়ার শীর্ষ ধনী আদানি রয়েছেন। এশিয়ার দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী হলেন মুকেশ আম্বানি, যার সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৮ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। আম্বানি বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় দশম স্থানে রয়েছেন। বর্তমানে এ তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন ফরাসি ধনকুবের বার্নার্ড আর্নল্ট
গৌতম আদানির মালিকানাধীন আদানি গ্রুপ ভারতের সবচেয়ে বড় বন্দর পরিচালনাকারী ও তাপ কয়লা উৎপাদন কোম্পানি। এছাড়া অবকাঠামো নির্মাণ, পণ্যদ্রব্য উৎপাদন, বিদ্যুৎ উৎপাদন, আবাসন ব্যবসায়ও বিনিয়োগ রয়েছে তারা।
ভারতের পুঁজিবাজারে শুক্রবার ব্যাপক দরপতন হয়েছে বিশ্বের অন্যতম ও এশিয়ার শীর্ষ ধনী গৌতম শান্তিলাল আদানির মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর শেয়ারের।
দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, সকালে লেনদেন শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আদানি গ্রুপের ৯ কোম্পানির সবগুলোর শেয়ারের দরপতন হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটিভিত্তিক বিনিয়োগ গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের এক প্রতিবেদনের পর শেয়ারদর ৮ শতাংশ হারিয়েছিল আদানির কোম্পানিগুলো। এর দুই দিন পর শুক্রবার লেনদেন শুরুর কয়েক ঘণ্টায় প্রায় ২ লাখ কোটি রুপি কমে যায় কোম্পানিগুলোর বাজার মূলধন।
সবশেষ দরপতনের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবারের পর পুঁজিবাজারে বাজার মূলধন ২ লাখ ৭৫ হাজার কোটি রুপি হারিয়েছে বহুজাতিক কোম্পানি আদানি গ্রুপ।
কোম্পানিটির মালিকানাধীন আদানি টোটাল গ্যাসের শেয়ারদর কমেছে ১৯.৬৫ শতাংশ। এ ছাড়া আদানি ট্রান্সমিশনের ১৯ শতাংশের বেশি এবং আদানি গ্রিন এনার্জির শেয়ারদর কমেছে সাড়ে ১৫ শতাংশ।
এগুলোর বাইরে আদানি পোর্টসের শেয়ারগুলোর দর কমে ৫.৩১ শতাংশ, যেখানে আদানি পাওয়ার ও আদানি উইলমারের শেয়ারদর কমে ৫ শতাংশ করে। গ্রুপের হোল্ডিং কোম্পানি আদানি এন্টারপ্রাইজেসের শেয়ারদর কমে ৬.১৯ শতাংশ।
আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে সম্প্রতি শেয়ার নিয়ে কারসাজির অভিযোগ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার গ্রুপের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা করা হবে, কিন্তু ওই বার্তার পরও পতন ঠেকানো যায়নি পুঁজিবাজারে।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানে ডলারের তীব্র সংকটে পণ্যবাহী হাজারো কন্টেইনার সমুদ্রবন্দরগুলোতে আটকে আছে জানিয়ে দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস (এফটি) বলেছে, পতনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে দেশটির অর্থনীতি।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি এ শঙ্কার কথা জানিয়েছে বলে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে এফটির খবরে বলা হয়, পাকিস্তানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিশ্চল হয়ে পড়ছে, যা শ্রীলঙ্কার মতো হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
বৈদেশিক মুদ্রার পর্যাপ্ত রিজার্ভ না থাকায় শ্রীলঙ্কা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনার সামর্থ্য হারায়, যা গত বছরের মে মাসে দেশটিকে খেলাপিতে পরিণত করে।
বস্ত্র কারখানার মালিকদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুৎ ও সম্পদ ব্যবহারে মিতব্যয়িতার অংশ হিসেবে কারখানাগুলো বন্ধ কিংবা কম সময় ধরে চালু রাখা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ সংকটে ভুগতে থাকা কারখানাগুলোর সংকট আরও ঘনীভূত হয় সোমবার, যেদিন ১২ ঘণ্টার বেশি সময় অন্ধকারে ছিল গোটা পাকিস্তান।
ইসলামাবাদভিত্তিক মার্কো ইকনোমিক ইনসাইটসের প্রতিষ্ঠাতা সাকিব শেরানি এফটিকে বলেন, এরই মধ্যে বেশ কিছু শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এসব কারখানা ফের চালু না হলে বেশ কিছু ক্ষতি হবে, যা অপূরণীয়।
তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে থাকা পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ৫০০ কোটি ডলারের নিচে নেমেছে। এ দিয়ে এক মাসের গোটা আমদানি ব্যয়ও মেটানো যাবে না।
এমন পরিস্থিতি থেকে অর্থনীতিকে টেনে তুলতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছ থেকে ৭০০ কোটি ডলার অর্থনৈতিক সহায়তা প্যাকেজ নিয়েও অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের সাবেক উপদেষ্টা আবিদ হাসান এফটিকে বলেন, এখন প্রতিটি দিনই গুরুত্বপূর্ণ। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায় কী, তা স্পষ্ট নয়।
পাকিস্তানের পরিকল্পনামন্ত্রী আহসান ইকবাল বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাঁচাতে দেশটি ব্যাপক হারে আমদানি কমিয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন:ডলারের বিপরীতে রেকর্ড পরিমাণ কমল পাকিস্তানি রুপির মান। বৃহস্পতিবার দেশটিতে প্রতি ডলার ২৫৫ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে, যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় ২৪ রুপি বেশি।
পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ পেতে ডলারের বিনিময় হারে নিয়ন্ত্রণ উঠিয়ে নেয় পাকিস্তান সরকার। এরপর থেকে দ্রুত নামতে থাকে পাকিস্তানি রুপির মান।
পাকিস্তানের বর্তমান সরকার দেশটির অর্থনীতি বাঁচাতে গত বছর আইএমএফের কাছে ৬৫০ কোটি ডলারের জরুরি ঋণ সহায়তার আবেদন করেছিল । ওই আবেদন পর্যালোচনা শেষে দেশটিকে ১১০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার কথা থাকলেও এখনও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল সেই অর্থ ছাড়েনি।
এই অর্থ ছাড়াও পুরো ঋণ সহায়তা পেতে দেশটির সরকারকে কিছু শর্ত দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল।
পাকিস্তানের বর্তমান রিজার্ভ ৬০০ কোটি ডলারের কম, যা গত আট বছরে সর্বনিম্ন। এ ছাড়া দেশটিতে গত বছরের ভয়াবহ বন্যার পর মূল্যস্ফীতিও ব্যাপক বেড়েছে। বন্যায় দেশটিতে ৩০০ কোটি ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে।
মন্তব্য