৪৯ কর্মদিবসে ১০ টাকার শেয়ারর দর ৮১৪ টাকা বেড়ে যাওয়ার পর এর নেপথ্যে কারসাজি আছে কি না, সেটি তদন্তে বিএসইসির নির্দেশের পর দিনও লাফ দিল ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ারদর। তবে গ্রুপের অন্য তিন কোম্পানি দর হারিয়েছে। মূলত এই কারণেই দরপতন হওয়া কোম্পানির তুলনায় দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির সংখ্যা বেশি থাকার পরও সূচকের পতন হয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স পড়লে ৬.৬০ পয়েন্ট। যদিও এদিন ১০১টি কোম্পানির শেয়ারর দর বেড়েছে, বিপরীতে কমেছে ৯৩টির দর। আর ১৭৫টির লেনদেন হয়েছে আগের দিনের দরে, যেগুলো মূলত বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন দর বা ফ্লোর প্রাইসে লেনদেন হয়েছে।
পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর ৩১ জুলাই থেকে সূচকের উত্থানের পেছনে প্রধান ভূমিকায় ছিল ৩০ থেকে ৩৫টি কোম্পানি। এর মধ্যে আবার শীর্ষে ছিল ওরিয়ন গ্রুপের চারটি আর বেক্সিমকো গ্রুপের দুটি কোম্পানি।
বৃহস্পতিবারের লেনদেনেও সূচক বাড়া কমায় এই দুই গ্রুপের ছয় কোম্পানির ভূমিকা ছিল সবচেয়ে বেশি।
এদিন ওরিয়ন গ্রুপের চারটির মধ্যে বেড়েছে কেবল ওরিয়ন ইনফিউশনের দর, কমেছে ওরিয়ন ফার্মা, বিকন ফার্মা ও কোহিনূর কেমিক্যালসের দর। এই তিনটি কোম্পানি মিলিয়েই সূচক কমিয়েছে ৩৩.৩০ পয়েন্ট। আর ওরিয়ন ইনফিউশন সূচকে যোগ করেছে ৩.১০ পয়েন্ট।
অর্থাৎ ওরিয়ন গ্রুপের কারণে সূচক কমেছে আসলে ৩০.২০ পয়েন্ট।
ওরিয়ন গ্রুপের ওরিয়ন ফার্মা গত এক মাস ধরে প্রায় প্রতিদিনই লেনদেনের শীর্ষে থাকলেও সেটি নেমে এসেছে তৃতীয় স্থানে। ওরিয়ন ইনফিউশন ছিল এই তালিকার পঞ্চম স্থানে।
আর বেক্সিমেকো গ্রুপের সূচকে প্রভাব ফেলে এমন দুই কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেড ও বেক্সিমকো ফার্মার দর বেড়েছে। দুই কোম্পানি মিলিয়ে সূচকে যোগ করেছে ১৮.৬৩ পয়েন্ট।
সবচেয়ে বেশি লেনদেনের তালিকায় বেক্সিমকো লিমিটেডে অবস্থান ছিল দ্বিতীয় স্থানে। গ্রুপের আরেক কোম্পানি শাইনপুকুর সিরামিকসের অবস্থান ছিল একাদশ স্থানে।
এদিন খাতভিত্তিক সবচেয়ে ভালো করেছে সাধারণ বিমা কোম্পানিগুলোর শেয়ারগুলো। খাত ধরে বেড়েছে দর। এই খাতের ৪১টি কোম্পানির মধ্যে একটির দরও কমেনি, বেড়েছে ৩৩টির দর। অন্য কোনো খাতেই এই প্রবণতা দেখা যায়নি।
সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে এমন ১০টি কোম্পানির মধ্যে চারটি ছিল এই একটি খাতের।
লেনদেনে যে ভারসাম্যহীনতার বিষয়টি গত আড়াই মাস ধরে দেখা যাচ্ছে, সেটি দেখা গেল আবার। মোট লেনদেনের ৪০ শতাংশই হয়েছে ১০টি কোম্পানিতে।
শীর্ষ দশে লেনদেন হয়েছে ৫৭১ কোটি ১৭ লাখ ৩১ হাজার টাকা। আর মোট লেনদেন ছিল এক হাজার ৪১০ কোটি ৯২ লাখ ৬৮ হাজার টাকা।
আগের দিনের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৪১৬ কোটি ৮১ রাখ ৬ হাজার টাকা। ৩৮ কর্মদিবস পর বুধবার লেনদেন এক হাজার কোটি টাকার নিচে নেমে যায়।
‘বাজারের জন্য গুডসাইন নয়’
পুঁজিবাবারের লেনদেন নিয়ে ট্রেজার সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘টার্নওভার যে জায়গায় রয়েছে তা উৎসাহজনক নয়। যেসব সেক্টরে বুল রান হয়েছিল সেগুলোর অরল্টারনেটিভ দেখছি না। ওই সবের লেনদেন কম হলে বাজারের মোট লেনদেনও কম হচ্ছে। ক্যাশ ফ্লো নির্দিষ্ট কিছু স্টকরে মধ্যে আটকে আছে। এর বাইরে ক্যাশ ফ্লো হচ্ছে না। এটা বাজারের জন্য গুড সাইন নয়।’
তিনি বলেন, ‘মার্কেট মেকিংয়ের জন্য যে স্টকের দিকে ক্যাশ যায়, যেটা আসলে লিডিং ক্যাশ ফ্লো, সেটা যারা ফলো করে ইনভেস্ট করেন বা ফলোয়ার, তাদের ক্যাশ ফ্লোটাও ওইদিকে যায়। লিডিং ক্যাশ ফ্লো কোনদিকে যাচ্ছে বোঝা না গেলে অন্যরা সাইডলাইনে চলে যায়।’
পতনমুখী ওরিয়ন ইনফিউশনের দর বেড়ে লেনদেন শেষ হওয়ার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে রসিকতা করে তিনি বলেন, ‘এখনও কিছু সাহসী মানুষ আছেন।’
ওরিয়নের চার কোম্পানির চিত্র
৪৯ কর্মদিবসে ১০ টাকার শেয়ারের দর অবিশ্বাস্যভাবে ৮১৪ টাকা ৯০ পয়সা বা ৭৭৮ দশমিক ৩১ শতাংশ বাড়ার পর নেপথ্যে কী, সেটি খতিয়ে দেখতে তদন্তের নির্দেশ দেয়ার পরও দরবৃদ্ধি দেখা গেছে ওরিয়ন ইনফিউশনের।
যদিও লেনদেনে শেষ হওয়ার আধাঘণ্টা আগেও সাড়ে আট শ টাকার কাছকাছি দরে লেনদেন হচ্ছিল। দিনের এক সময় সর্বনিম্ন ৮৫০ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হলেও ৩.৪৫ শতাংশ বা ৩১ টাকা ৭০ পয়সা বেড়েই লেনদেন শেষ হয়েছে। ৫ লাখ ৩৬ হাজার ৯৪১টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে ৪৮ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
বিকন ফার্মার দর কমেছে ৬.২২ শতাংশ বা ২২ টাকা ৬০ পয়সা। সর্বশেষ ৩৪০ টাকা ৭০ পয়সায় শেয়ার লেনদেন হলেও দিনের সর্বোচ্চ দর উঠেছিল ৩৬৫ টাকায়। কোম্পানিটির ১৩ কোটি ৪ লাখ ৩ হাজার টাকায় ৩ লাখ ৭৭ হাজার ১৭৪টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
এই কোম্পানিটির দরপতনে সূচক কমেছে ২৫ পয়েন্টের বেশি।
দরপতন হয়েছে ওরিয়ন ফার্মারও। ৪ টাকা ৮০ পয়সা বা ৩.৪৭ শতাংশ কমেছে শেয়ারদর। সর্বনিম্ন ১৩২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১৩৭ টাকা ৩০ পয়সাতে কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ক্লোজিং প্রাইস দাঁড়িয়েছে ১৩৩ টাকা ৭০ পয়সা।
৯২ কোটি ৫৯ লাখ ৭৪ হাজার টাকায় ৬৮ লাখ ৭৪ হাজার ৩০১টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
এই কোম্পানিটির কারণে সূচক কমেছে ৫.৪ পয়েন্ট।
দরপতন হয়েছে গ্রুপের আরেক কোম্পানি কোহিনূর কেমিক্যালের। শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪০ হাজার ৭৬০টি, যার মূল্য দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৫৫ লাখ ৮০ হাজার।
সর্বশেষ দর ৬২৩ টাকা ৮০ পয়সা হলেও দিনের বিভিন্ন সময় ৬১৫ টাকা থেকে ৬৪৬ টাকা ৬০ পয়সাতেও শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
এই কোম্পানিটির কারণে সূচক কমেছে ২.৭৯ পয়েন্ট।
কোন খাত কেমন করল
ওষুধ ও রসায়ন খাতে সর্বোচ্চ ২৭৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ২০.৬০ শতাংশ। খাতটিতে ৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। আর ৮টির লেনদেন হয়েছে অপরিবর্তিত দরে। আর দরপতন হয়েছে ১৪টির।
প্রকৌশল খাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। ৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১৪টির লেনদেন হয়েছে আগের দরে। দরপতন হয়েছে ২০টির।
তৃতীয় স্থানে থাকা বিবিধ খাতে লেনদেন হয়েছে ১৫৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা। ৪টির দরবৃদ্ধি, ৪টির দরপতন ও আগের দরে লেনদেন হয়েছে ৫টি কোম্পানির।
চতুর্থ সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে সেবা ও আবাসন খাতে। এ খাতে ২টির দরবৃদ্ধি ও ১টি করে কোম্পানির দরপতন ও অপরিবর্তিত দরে লেনদেন হয়েছে। হাতবদল হয়েছে ১৩৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
৯০ কোটি ৬০ লাখ টাকা লেনদেন করে তালিকার পঞ্চম স্থানে ছিল কাগজ ও মুদ্রণ খাত। ১টি করে কোম্পানির দরবৃদ্ধি ও অপরিবর্তিত দরে লেনদেন হয়েছে। দর কমেছে ৪টি কোম্পানির।
শীর্ষ পাঁচের বাইরে দরবৃদ্ধির হার বেশি
তবে দরবৃদ্ধির হার যেসব খাতে বেশি সেগুলোর লেনদেনের তালিকায় নিচের দিকে ছিল।
সবচেয়ে বেশি দরবৃদ্ধি হয়েছে সাধারণ বিমা খাতে। ৩৩টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির সঙ্গে কোনো দরপতন হয়নি। তবে আগের দরে লেনদেন হয়েছে ৮টি কোম্পানির।
এ খাতের লেনদেন যদিও ৫০ কোটির নিচেই ছিল। হাতবদল হয়েছে ৪৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
ব্যাংক খাতে ৬টি কোম্পানির দরবৃদ্ধি ও ২৩টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে আগের দরে। আর ৪টির দর কমেছে। তবে এ খাতে লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা, যা লেনদেনের ১.১৭ শতাংশ।
বস্ত্র খাতেও দরবৃদ্ধি না হলেও দরপতনের সংখ্যা তুলনামূলক কম। ১০টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৭টির দরপতন ও ৪০টির লেনদেন হয়েছে অপরিবর্তিত দরে।
এর বাইরে আর কোনো খাতে দরবৃদ্ধির হার খুব বেশি ছিল না।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে পেনিনসুলা চিটাগংয়ের। আর দিনেও একই সমান দর বেড়েছিল।
তালিকাভুক্তির পর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো দিন শেয়ারপ্রতি এক টাকা আয় করতে পারেনি। ৩০ টাকা থেকে বেড়ে শেয়ার হাতবদল হয়েছে ৩৩ টাকায়।
৩৩ টাকা থেকে বেড়ে শেয়ার হাতবদল হয়েছে ৩৬ টাকা ৩০ পয়সায়।
এরপরে ৯.৯৭ শতাংশ দর বেড়েছে সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের। শেয়ার হাতবদল হয়েছে ৫০ টাকা ৭০ পয়সায়। আগের দিনে লেনদেন হয়েছিল ৪৬ টাকা ১০ পয়সায়।
নাভানা সিএনজির দর বেড়েছে ৯.৮১ শতাংশ। আগের দিনে ৯.৭৬ শতাংশ বেড়ে শেয়ার লেনদেন হয়েছিল ৩২ টাকা ৬০ পয়সায়। আজকে হাতবদল হয়েছে ৩৫ টাকা ৮০ পয়সা।
২০২১ সালে শেয়ারপ্রতি ২২ পয়সা আয়ের বিপরীতে ৫০ পয়সা নগদ ও প্রতি ১০০টি শেয়ারের বিপরীতে ৫টি শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দেয় কোম্পানি।
এ ছাড়াও দরবৃদ্ধির তালিকায় ছিল ফারইস্ট নিটিং, ইস্টার্ন হাউজিং, ফার কেমিক্যাল, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, মনোস্পুল, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স ও ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স।
দর পতনের শীর্ষ ১০
পতনের তালিকার শীর্ষে রয়েছে বিডি কম। ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ কমে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ৬৯ টাকা ৬০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। আগের দিনে লেনদেন হয় ৭৫ টাকা ১০ পয়সায়।
পতনের তালিকায় পরের স্থানে রয়েছে তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল। ৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ দর কমে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৪৫ টাকা ৮০ পয়সায়। আগের দিনের ক্লোজিং প্রাইস ছিল ২৬২ টাকা ৭০ পয়সায়।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দর হারিয়েছে বিকন ফার্মা। ৬ দশমিক ২২ শতাংশ কমে শেয়ারটি সর্বশেষ ৩৪০ টাকা ৭০ পয়সায় হাতবদল হয়। আগের দিনে লেনদেন হয়েছিল ৩৬৩ টাকা ৩০ পয়সায়।
দর কমার শীর্ষ দশে থাকা অন্য কোম্পানিগুলো ছিল- আজিজ পাইপস, অ্যাপেক্স স্পিনিং, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি, বিডি ল্যাম্পস, সোনালী পেপার, ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন ও বসুন্ধরা পেপার।
সূচকে প্রভাব যাদের
সবচেয়ে বেশি ২৫ দশমিক ১১ পয়েন্ট সূচক কমেছে বিকন ফার্মার দরপতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে ৬ দশমিক ২২ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ৪ পয়েন্ট কমেছে ওরিয়ন ফার্মার কারণে। শেয়ার প্রতি দাম কমেছে ৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
সোনালী পেপারের দর ৪ দশমিক ০৮ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ৫ দশমিক ২৯ পয়েন্ট।
এ ছাড়াও তিতাস গ্যাস, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, কোহিনূর কেমিক্যাল, তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল, বসুন্ধরা পেপার, শাহজিবাজার পাওয়ার ও বিডিকম দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৫৪ দশমিক ৮১ পয়েন্ট।
সবচেয়ে বেশি ১৩ দশমিক ৯১ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেড। এদিন শেয়ারটির দর বেড়েছে ২ দশমিক ৬ শতাংশ।
ইস্টার্ন হাউজিংয়ের দর ৯ দশমিক ৪২ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৪ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট।
বেক্সিমকো ফার্মা সূচকে যোগ করেছে ৪ দশমিক ৭২ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
এর বাইরে সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে বার্জার পেইন্টস, ওরিয়ন ইনফিউশন, পূবালী ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, জেএমআই সিরিঞ্জেস, ফারইস্ট নিটিং ও ইবনে সিনা।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ৪২ দশমিক ০৮ পয়েন্ট।
আরও পড়ুন:দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবারও সূচকের পতন হয়েছে।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, লেনদেন শুরুর প্রথম দুই ঘণ্টায় ৬৩ হাজার ৩২৬টি লেনদেনের মাধ্যমে ১৭৭ কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের কেনাবেচা হয়েছে, যা মঙ্গলবারের একই সময়ের তুলনায় ৪৭ কোটি টাকা কম।
গতকাল মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২২৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
আজ সকালে ৩৭৩টি কোম্পানি লেনদেন করেছে। এর মধ্যে ১৪০টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৫৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৮০টির শেয়ার। এটি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মিশ্র মনোভাবকেই তুলে ধরে।
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ২৮৩ দশমিক ০৭ পয়েন্টে স্থির হয়।
এদিকে ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক শূন্য দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৫৪ দশমিক ৭৩ পয়েন্টে, তবে ডিএস৩০-এর ব্লু-চিপ শেয়ারগুলোর সূচক ১১ দশমিক ০৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৩১ দশমিক ৮৩ পয়েন্টে দাঁড়ায়।
আরও পড়ুন:ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রেখেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে বেঞ্চমার্ক সূচক উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘আগাম শেয়ার নিষ্পত্তি, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অফ বাংলাদেশের (আইসিবি) মাধ্যমে তারল্য সহায়তা এবং সম্ভাব্য মূলধন লাভের কর কমানোসহ বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের কারণে বাজারে এই ইতিবাচক পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে।’
বিনিয়োগকারীদেরও সচেতনভাবে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করতে দেখা যাচ্ছে। তারা হয় পূর্ববর্তী বিনিয়োগ থেকে মুনাফা সুরক্ষিত করেছে বা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ উপার্জনের প্রতিবেদনসহ স্টকগুলোতে মূলধন পুনরায় বিনিয়োগ করেছে। এই নির্বাচনমূলক পদ্ধতি আশার সঞ্চার করায় তা সামগ্রিক বাজারের গতিতে অবদান রেখেছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১১৬ দশমিক ৯ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে পাঁচ হাজার ৩১৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহের তুলনায় বাজার লেনদেন ৪৫ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ৬০৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা হয়েছে।
আগের পাঁচ সপ্তাহে ৬১৬ পয়েন্ট হারানোর পর টানা দুই সপ্তাহে ২০২ পয়েন্ট যোগ করেছে ডিএসইএক্স।
ডিএসইর খাতভিত্তিক সূচকগুলোকেও বেশ ভালো করতে দেখা গেছে। ৩০টি শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস৩০ ইনডেক্স ৩৯ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৯৬৫ পয়েন্টে লেনদেন শেষ করেছে। একইভাবে শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী ডিএসইএস সূচক ৪৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৮৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকায়।
বাজার কার্যকলাপের একটি প্রধান সূচক বাজার লেনদেন এই সপ্তাহে তিন হাজার ২৯ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে, যা আগের সপ্তাহের দু’হাজার ৮৩ কোটি টাকার লেনদেনের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। সে হিসাবে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৬০৬ কোটি টাকা, যা আগের সপ্তাহের গড় ৪১৬ কোটি টাকার তুলনায় ৪৫ শতাংশ বেশি।
আরও পড়ুন:শেয়ারবাজারে গতি ফেরাতে স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘর্মেয়াদি নীতি সহায়তা দিতে যাচ্ছে সরকার। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ প্রথমবারের মতো নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) যাচ্ছেন। এমন খবরে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে পুঁজিবাজার।
দেশের দুই শেয়ারবাজারে বুধবার উল্লেখযোগ্য উত্থানের ধারাবাহিকতা দেখা গেছে সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবারও। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক বেড়েছে ১৪৭ পয়েন্টের বেশি।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরদিন ৬ আগস্ট ডিএসইর সূচক বৃদ্ধি শুরু হয়। সূচক বৃদ্ধির এই ধারা ১১ আগস্ট পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। ওই চারদিনে সূচকের উত্থান হয় ৭৮৬ পয়েন্ট। এরপর ১২ আগস্ট শুরু হয় ধারাবাহিক পতন।
টানা দরপতন আর লেনদেন খরার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে দেশের শেয়ারবাজার। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বৃহস্পতিবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে মূল্যসূচক। সে সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। এতে এ বাজারটিতেও সবকটি মূল্যসূচক বেড়েছে। এর মাধ্যমে টানা তিন কার্যদিবস দুই শেয়ারবাজারেই মূল্যসূচক বাড়লো।
গতকাল বুধবার থেকে বাজার বড় আকারে ঘুরে দাঁড়ায়। ওইদিন ডিএসইর সূচকে বেড়েছে ১১৮ পয়েন্টের বেশি। আর আজ বৃহস্পতিবার বেড়েছে ১৪৭ পয়েন্টের বেশি।
বিনিয়োগকারীরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা শেয়ারবাজারের গুরুত্ব অনুধাবন করে নিজেই বিএসইসিতে যাচ্ছেন। যেখানে এর আগে কোনো মন্ত্রী বা উপদেষ্টা যাননি। শেয়ারবাজারের জন্য এটি একটি ভিন্ন বার্তা। শেয়ারবাজারের প্রতি অর্থ উপদেষ্টার এমন আগ্রহের কারণে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন বিনিয়োগকারীরা।
বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জানান, শেয়ারবাজারে গতি ফেরাতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা দিতে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এসব সহায়তার আওতাভুক্ত হবেন ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারী, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, উচ্চ সম্পদশালী বিনিয়োগকারী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা।
রাশেদ মাকসুদ বলেন, অর্থ উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সমন্বিতভাবে শেয়ারবাজারের উন্নয়নে নীতি সহায়তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তার মধ্যে কিছু থাকবে স্বল্প মেয়াদে বাস্তবায়নযোগ্য, আর কিছু বিষয় মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে।
যেসব নীতি পদক্ষেপের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- বাজারে তারল্য সরবরাহ বাড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অফ বাংলাদেশের (আইসিবি) বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য তহবিল জোগানে সহায়তা, জরিমানার মাধ্যমে বিএসইসির আদায় করা অর্থ বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় কাজে লাগাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, সরকারি-বেসরকারি ভালো ও লাভজনক কোম্পানিগুলোকে দ্রুত বাজারে আনতে আইপিও আইন সংস্কার ও কর প্রণোদনার ব্যবস্থা করা।
পদক্ষেপগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে- শেয়ারবাজারে লেনদেন নিষ্পত্তির সময় কমিয়ে এক দিনে নামিয়ে আনা, ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে পরিমাণ অনাদায়ি পুঞ্জীভূত ঋণাত্মক ঋণ (নেগেটিভ ইক্যুইটি) রয়েছে চূড়ান্তভাবে সেগুলোর নিষ্পত্তি করা, উচ্চ সম্পদশালী ব্যক্তিদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে মূলধনি মুনাফার কর হার কমানো, শেয়ার পুনঃক্রয় ব্যবস্থা চালুর বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ, বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে ভবিষ্যতে আর কখনও ফ্লোর প্রাইস আরোপ না করা এবং সুশাসন ও আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুন:ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার বিনিয়োগকারীদের কার্যক্রম বেড়েছে। এক লাখ ৩৬ হাজার লেনদেনের মাধ্যমে মোট ১৫ দশমিক ৮ কোটি শেয়ার ও ইউনিট কেনাবেচা হয়েছে, যার মোট লেনদেনের পরিমাণ ৩৪৬ কোটি টাকা। যদিও এটি সোমবারের ৩৫৭ কোটি টাকা থেকে সামান্য কম।
মঙ্গলবার মোট ৩৯৪টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩১২টি কোম্পানির মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে, ৫৭টির কমেছে এবং ২৫টি অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেনের এই অবস্থা বিস্তৃত বাজার পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১১৮ দশমিক ৮০ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৭ দশমিক ৩২ পয়েন্টে বন্ধ হয়েছে। ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক ২৬ দশমিক ২০ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১১৩ দশমিক ৬৬ পয়েন্টে এবং বিশেষায়িত ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ ৫২ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৮৫৮ দশমিক ২৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
দর বৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে- মতিন স্পিনিং মিলস পিএলসি, বিডিকম অনলাইন লিমিটেড, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এসিআই লিমিটেড, মোজাফফর হোসেন স্পিনিং মিলস লিমিটেড, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেড, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড, বাংলাদেশ অটোকারস লিমিটেড এবং জেমিনি সি ফুড পিএলসি।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএএসপিআই সূচক ২ দশমিক ৪১ পয়েন্ট বেড়ে ১৪ হাজার ১৭ দশমিক ৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সিএসইতে দেখা যায়, এক হাজার ৮৩৩টি লেনদেনের মাধ্যমে মোট ৫১ লাখ ৬১ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। লেনদেনের পরিমাণ ১০ কোটি ৮ লাখ টাকা। এই বাজারে সোমবার লেনদেন হয়েছিল ৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৮০টি কোম্পানির মধ্যে ১০২টির মুনাফা বেড়েছে, ৫২টির কমেছে এবং ২২টির শেয়ারমূল্য অপরিবর্তিত রয়েছে। এটিও বাংলাদেশের পুঁজিবাজার সামগ্রিকভাবে ইতিবাচক ধারায় ফেরার ইঙ্গিত দেয়।
আরও পড়ুন:পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেডের (বেক্সিমকো) শেয়ার কারসাজির দায়ে নয় বিনিয়োগকারীকে ৪২৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
মঙ্গলবার বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এই জরিমানা আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের শেয়ারবাজারের ইতিহাসে কোনো কোম্পানির শেয়ার কারসাজির দায়ে এতো বড় অঙ্কের অর্থ জরিমানা এর আগে আর করা হয়নি।
উল্লিখিত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মারজানা রহমানকে ৩০ কোটি, ট্রেড নেক্সট ইন্টারন্যাশনালকে চার কোটি এক লাখ, মুশফিকুর রহমানকে ১২৫ কোটি, মমতাজুর রহমানকে ৫৮ কোটি, জুপিটার ব্যবসাকে ২২ কোটি ৫০ লাখ, অ্যাপোলো ট্রেডিংকে ১৫ কোটি ১০ লাখ, এআরটি ইন্টারন্যাশনালকে ৭০ কোটি, আবদুর রউফকে ৩১ কোটি এবং ক্রিসেন্ট লিমিটেডকে ৭৩ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়াও কমিশন সভায় নয়টি কোম্পানির আইপিও/আরপিওর তহবিলের ব্যবহার পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত হয়।
কোম্পানিগুলো হলো- বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, বেস্ট হোল্ডিং, ইনডেক্স এগ্রো, জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং, লুব-রেফ (বাংলাদেশ) লিমিটেড, নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস, রিং শাইন টেক্সটাইল, সিকদার ইন্স্যুরেন্স ও সিলভা ফার্মাসিউটিক্যালস।
আরও পড়ুন:ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের (পিএলসি) শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধান করতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বুধবার বিএসইসির এক আদেশে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের দাম ও পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে উঠা-নামা করেছে, যা অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক বলে মনে হচ্ছে।
বিএসইসির আদেশে বলা হয়, উল্লিখিত স্ক্রিপের ইউনিটের এমন অস্বাভাবিক উঠা-নামার পেছনে বাজার কারসাজি, অভ্যন্তরীণ লেনদেন, অন্যান্য বাজারের অপব্যবহারসহ বিভিন্ন কারণ উদঘাটনে ৬ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার কেনাবেচা তদন্ত করবে ডিএসই।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, কিছু ব্যবসায়ী গ্রুপ ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক হওয়ার চেষ্টা করছে। তাই তারা বড় অঙ্কের শেয়ার কিনছে। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে এই ব্যাংকের শেয়ারের দাম হু হু করে বেড়েছে।
জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে পুঁজিবাজারে কারসাজির অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে। শেয়ার কারসাজিতে জড়িত থাকায় দেশসেরা এই ক্রিকেটারকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার নিয়ে এই কারসাজি করেন সাকিব আল হাসান।
সাকিব আল হাসানের পাশাপাশি শেয়ারবাজারের আলোচিত চরিত্র আবুল খায়ের ওরফে হিরু, তারা বাবা আবুল কালাম মাতবর, মো. জাহিদ কামাল, হিরুর প্রতিষ্ঠান মোনার্ক মার্ট, ইসহাল কমিউনিকেশন ও লাভা ইলেকট্রোডস ইন্ডাস্ট্রিজের বিরুদ্ধে কারসাজিতে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। এ কারণে এসব ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানকেও জরিমানা করা হয়েছে।
এর আগে একাধিক শেয়ার কারসাজির তদন্ত প্রতিবেদনে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নাম উঠে আসে। তবে কারসাজির প্রমাণ পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে তাকে জরিমানা করেনি বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, ফরচুন সুজ, বিডিকম অনলাইন, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক ও ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার কারসাজির বিষয়ে করা তদন্ত প্রতিবেদনে সাকিব আল হাসানের নাম জড়ায়। তবে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কারসাজির জন্য তাকে জরিমানা করা হয়নি। এবারই প্রথম সাকিবের বিরুদ্ধে শেয়ার কারসাজির প্রমাণ মিললো।
এর আগে শেয়ারবাজারে কারসাজির অভিযোগ তদন্তে সাকিবের নাম যতবার উঠে আসে সবগুলোতেই আলোচিত শেয়ার কারসাজিকারী আবুল খায়ের হিরুর নাম ছিল। সাকিবের বিরুদ্ধে কারসাজির প্রমাণ না মিললেও হিরুর বিরুদ্ধে কারসাজির প্রমাণ মেলে এবং তাকে জরিমানা করা হয়।
এবারও সাকিবের সঙ্গে শেয়ার কারসাজিতে হিরুর নামে উঠে এলো। প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজিতে জড়িত থাকায় হিরুকে ২৫ লাখ এবং সাকিব আল হাসানকে ৫০ লাখ টাকা জারিমানা করা হয়েছে।
এছাড়া হিরুর বাবা আবুল কালাম মাতবরকে ১০ লাখ, মো. জাহিদ কামালকে এক লাখ, হিরুর প্রতিষ্ঠান মোনার্ক মার্টকে এক লাখ, ইসহাল কমিউনিকেশনকে ৭৫ লাখ ও লাভা ইলেকট্রোডস ইন্ডাস্ট্রিজকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বিএসইসির এর আগে ‘দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম’-এর শুভেচ্ছা দূত হিসেবে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নিয়োগ বাতিল করে। গত ২৮ আগস্ট জরুরি সভা করে এই সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য