গবেষণার মাধ্যমে দেশের পুঁজিবাজারের জন্য উদ্ভাবনী পণ্য ও গুজব প্রতিরোধের উপায় খুঁজতে বললেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম।
নানা গুজব-গুঞ্জনে পুঁজিবাজারে বারবার দরপতনের মধ্যে মঙ্গলবার বিশ্ব বিনিয়োগ সপ্তাহ পালনে ‘ইনভেস্টর রিজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাস্টেনেবল ফাইন্যান্স’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই নির্দেশনা দেন।
বিএসইসির সহযোগী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ অ্যাকাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেটস (বিএএসএম) এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিটিউট অফ ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম) যৌথভাবে সেমিনারের আয়োজন করে।
বিএসইসি চেয়ারম্যানে বলেন, ‘আমাদের আরেকটা জিনিস নিয়ে কাজ করতে হবে, গুজব প্রতিরোধ। একটা ম্যাসেজ কীভাবে বাজারে নিয়ে আসা যায়, প্রচার করা বা দেয়া যায়, সেটা বের করতে হবে।
‘সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে মিথ্যা কথা বলে বা মিথ্যা খবর দিয়ে, বাজার ও মানুষকে বিভ্রান্ত করা এবং তাদের আর্থিক ক্ষতি করা হয়। এটা অপরাধের সামিল। এই জিনিসটাকে আমরা কীভাবে অ্যাড্রেস করব, এটা সবার করা দরকার।’
এটা সামাজিক ব্যাধি আখ্যা দেন শিবলী রুবাইয়াত। বলেন, ‘মানুষকে ভুল তথ্য দিয়ে ভয় দেখিয়ে যেটা হচ্ছে, সেটা সামাজিক অসুখে রূপান্তরিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এখানে আমাদের একদিকে অপরাধীর জন্য ব্যবস্থা, বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকা, এবং কোনো কিছু ক্রস চেক না করে বিশ্বাস করে লস করে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা না ঘটে সেটার জন্য একটা ট্রেনিং প্রোগ্রাম বা এডুকেশনে কাজ বোধ শুরু করার সময় হয়ে গেছে।’
গবেষণার মাধ্যমে নতুন প্রোডাক্ট উদ্ভাবনের ওপর জোর দেন বিএসইসি চেয়ারম্যান। বলেন, ‘সাস্টেবেল ফাইন্যান্সের যে টুলগুলো নিয়ে কাজ করছি, আরও কিছু নতুন আসছে, পুরোনো কিছু নতুন করে রিভাইভ করছি, রিমডেল করছি সেগুলো আপনারা দেখেন। তবে আপনাদের কাছে আমাদের আশা থাকবে যে, আপনারা কিছু ইনোভেটিভ প্রোডাক্ট দেবেন, যেটা বাংলাদেশের মার্কেটের জন্য সাসটেননেবল।
‘অ্যাকাডেমিক প্রতিষ্ঠানগুলো যদি গবেষণা করে ইনোভেটিভ প্রোডাক্ট না দেয়, আমরা কিন্তু রেগুলেটর আমাদের কাজ এগুলো না, আমাদের কাজ হচ্ছে প্রোডাক্টগুলো যেগুলো আসবে সেগুলো দেখেশুনে দেয়া, কোম্পানিগুলো যাতে বেনিফিটেড হয়।’
গবেষণার জন্য তহবিল আছে এবং লাগলে আরও দেয়া হবে বলেও জানান শিবলী রুবাইয়াত। বলেন, ‘আপনাদের কাছে ইনোভেটিভ প্রোডাক্ট চাই। বাংলাদেশের মার্কেটে বাংলাদেশের মতো করে কী আনব, আগামী ২০, ৩০ বছর টার্গেট করে, সেটিই আশা করব আপনাদের কাছে।’
বিনিয়োগ শিক্ষার বিষয়টি পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্তির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসিকে অনুরোধ করার কথাও জানান বিএসইসি প্রধান। বলেন, ‘হিউম্যান ক্যাপিটালের অভাব ও চাকরির সুযোগ রয়েছে। সুতরাং এসব স্থানে যদি বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, কলেজ থেকে এসে যুক্ত হয় তাহলে খুব উপকৃত হবে।’
বিনিয়োগকারীদের এই ধরনের জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ দেয়ার ক্ষেত্রে বিআইসিএম ও বিএএসএম খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলেও জানান তিনি। বলেন, ‘আমি আজকে এফবিসিসিআইয়ের প্রোগ্রামে ছিলাম। সেখানে বন্ড নিয়ে কথা হচ্ছিল। ফাইন্যান্সের অনেক কিছুই জানে না বলে এফবিসিসিআিই স্বীকার করল।
‘বাংলাদেশ ব্যাংক ও আমরা একসঙ্গে লং টার্ম ফাইন্যান্সিংয়ের যে সলিউশনগুলো দিচ্ছি, যেটা বিশ্বব্যাপি অনুসরণ করা হয়। এই বিষয়ে কেউই কিছুই জানে না, এফবিসিসিআইও জানে না।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি বলতে আমরা যে বিষয়টা দেখছি, আমাদের দেশে সেটা অনুমিত হয় না। আমরা যে প্রেক্ষাপটে থাকি, সেখানে গভীর তথ্য নিয়ে আলোচনা করার চেয়ে উচিত হবে সাধারণ জিনিসগুলো মানুষের কাছে বুঝিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা।’
তিনি বলেন, ‘বেসিক যে কনসেপ্ট আছে, তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারি, সে বিষয়ে কাজ করতে হবে। অনেক জটিল বিষয় আছে, যারা স্টেকহোল্ডার, সেগুলো তারা শিখবেন। কিন্তু সাধারণ বিষয়গুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এটাই ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসির প্রধান কাজ, সেটাই আমাদের করতে হবে।’
বিআইসিএমের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট মাহমুদা আক্তারের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন বিএএসএমের ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি) তৌফিক আহমেদ চৌধুরী, বিআইসিএমের ফ্যাকাল্টি সুবর্ণ বড়ুয়া ও অন্যরা।
বিআইসিএমের সহকারী অধ্যাপক সাফায়েদুজ্জামান খানও এ সময় বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন:
পুঁজিবাজারের উন্নয়নে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) নতুন চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু। পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিষ্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) এর নির্বাহী কমিটির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে ডিএসইর চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করব। বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নে কী কী করণীয় আছে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত পরামর্শের আলোকে তা নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সিএমজেএফের সভাপতি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন সিএমজেএফের সাধারণ সম্পাদক আবু আলী, সাবেক সভাপতি হাসান ইমাম রুবেলসহ সংগঠনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা।
আর ডিএসইর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন- ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সাইফুর রহমান মজুমদার, সিনিয়র মহাব্যবস্থাপক ও কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আসাদুর রহমান এবং ডিএসইর উপমহাব্যবস্থাপক শফিকুর রহমান।
সিএমজেএফ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ডিএসইর সক্ষমতা বৃদ্ধি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা বাড়ানোর বিষয়কে অগ্রাধিকার দেয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের নিরিখে পুঁজিবাজার অনেক পিছিয়ে আছে। এই গ্যাপ পূরণ করে বাজারের প্রকৃত সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে প্রয়োজন ইনোভেটিভ ও ডাইনামিক উপায়ে কাজ করা। গতানুগতিক ধারা ও গতিতে কাজ করে এটি সম্ভব নয়।
সিএমজেএফের সাবেক প্রেসিডেন্ট হাসান ইমাম রুবেল বলেন, দেশের প্রধান স্টক এক্সচেঞ্জ হিসেবে পুঁজিবাজারে ডিএসইর যে ভূমিকা রাখার কথা, গত কয়েক বছর ধরে তারা তা পারছে না বলে মনে হয়। ডিএসইর বড় ভবন হয়েছে, কিন্তু সে অনুপাতে মর্যাদা ও সক্ষমতা বাড়েনি। এসব বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন।
সিএমজেএফের সাধারণ সম্পাদক আবু আলী সাংবাদিকতা ও পুঁজিবাজারের উন্নয়নে এই সংগঠনের নানা ভূমিকা তুলে ধরেন।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসের লেনদেন শেষ হয়েছে সব ধরনের সূচক উত্থানে। একইসঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণও।
বৃহস্পতিবার ডিএসইতে ৬৬৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের কর্মদিবস বুধবার তা ছিল ৩৮২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১০ দশমিক শূন্য ৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২০৬ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ২ দশমিক ৪৫ ও ডিএসইএস সূচক ১ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ২০৯ দশমিক ৪৩ ও ১ হাজার ৩৪৯ দশমিক ৩২ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩১৯টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৭৯টির এবং কমেছে ৪৫টির। শেয়ার দর পরিবর্তন হয়নি ১৯৫টি কোম্পানির।
লেনদেনে শীর্ষ অবস্থানে থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ইউনিক হোটেল ৪১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা, ইস্টার্ন হাউজিং ৩৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা, জেনেক্স ইনফোসিস ৩৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন ১৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, সী-পার্ল বিচ ১৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, আমরা নেটওয়ার্ক ১৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা, এডিএন টেলিকম ১৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ১৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা এবং অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ১১ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
দেশের অপর শেয়ারবাজার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছে ৯৬ কোটি ১১ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কর্মদিবস বুধবার এখানে ৫ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১২৭টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৪৪টি, কমেছে ২৩টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৬০টির।
আরও পড়ুন:ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য সূচকের উত্থান-পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। ডিএসইতে টাকার অঙ্কে লেনদেন নামমাত্র বেড়েছে।
বুধবার ডিএসইতে ৩৮২ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের দিন থেকে ১১০ কোটি ৬২ লাখ টাকা বেশি লেনদেন হয়েছে। মঙ্গলবার ডিএসইতে ২৭২ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৬ হাজার ১৯৬ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৪৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২ হাজার ২০৬পয়েন্টে।
এদিন ডিএসইতে ৩০৫টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৮০টির, কমেছে ২৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯৮টির।
আরেক বাজার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। সিএসইতে ৫ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) টানা পতন চলছে। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্য দিবসে সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা দু’দিন পতন দেখল পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরা। সূচকের সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও।
ডিএসই’র তথ্যমতে, মঙ্গলবার ১০ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট সূচক কমে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন ডিএসইতে ২৭২ কোটি ৫ লাখ ৫১ হাজার টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে। এটা আগের দিনের চেয়ে ৪৫ কোটি ৫৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা কম। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩১৭ কোটি ৬০ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এর আগে ২৩ মার্চ পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছিল ২৮৬ কোটি ৯৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকার শেয়ার।
তথ্যমতে, মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৮৫টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ২৮টির এবং কমেছে ৫৬টির। শেয়ার দর পরিবর্তন হয়নি ২০১টির।
এদিন ডিএসইতে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। সে সুবাদে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনের শীর্ষে স্থান পায়। এদিন ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ২০ কোটি ৪২ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ইউনিক হোটেল ১৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, সী পার্ল বিচ ১৮ কোটি ২২ লাখ টাকা, আরডি ফুড ১২ কোটি ১৬ লাখ টাকা, জেনেক্স ইনফোসিস ১২ কোটি ৯ লাখ টাকা, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন ৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, শাইনপুকুর ৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকা, আলহাজ্ব টেক্সটাইল ৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা এবং আমরা নেটওয়ার্ক ৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
অপর শেয়ারবাজার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ২২ লাখ টাকা শেয়ার। আগের কার্যদিবস সোমবার ৭ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।
এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১০১টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ১৯টির, কমেছে ৩৪টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৪৮টির।
আরও পড়ুন:দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সব মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। তবে টাকার অংকে লেনদেন বেড়েছে ৩০ কোটি।
সোমবার ডিএসইর প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ১১ পয়েন্ট কমেছে। বর্তমানে সূচকটি অবস্থান করছে ৬ হাজার ২০৩ পয়েন্টে। একইসঙ্গে ‘ডিএস-৩০’ সূচক ২ পয়েন্ট কমে এবং ‘ডিএসইএস’ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে যথাক্রমে ২২১৫ ও ১৩৪৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
এদিন ডিএসইতে ৩১৭ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছে ২৮৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ একদিনের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ৩০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
ডিএসইতে মোট ২৮৩ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে দর বেড়েছে ২৮ কোম্পানির। দরপতন হয়েছে ৭২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮৩ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দর।
অপর বাজার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। সিএসইতে ৭ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
মহান স্বাধীনতা দিবসে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) লিমিটেড।
ডিএসইর নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবুর নেতৃত্বে রোববার সকালে শহীদ বেদিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
নবনিযুক্ত পরিচালনা পর্ষদের সদস্য অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, মো. আফজাল হোসেন, রুবাবা দৌলা, ডিএসইর শেয়ারহোল্ডার পরিচালক মো. শাকিল রিজভী, শরীফ আনোয়ার হোসেন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এম. সাইফুর রহমান মজুমদার এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএসই’র প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা সাত্তিক আহমেদ শাহ, প্রধান রেগুলেটরি কর্মকর্তা খাইরুল বাসার, সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো. ছামিউল ইসলাম, সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার, কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আসাদুর রহমান, উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুর রহমান প্রমুখ।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ না থাকাকে দেশের পুঁজিবাজারের চলমান তারল্য সংকটের মূল কারণ হিসেবে দেখছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান (সালমান এফ রহমান)।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ক্যাপিটাল মার্কেটের একটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্ট্রাকচারাল ডিফেট (কাঠামোগত দুর্বলতা) রয়ে গেছে। আমরা অনেকেই অনেক কথা বলি কিন্তু এসব দুর্বলতা সমাধানে যেসব কাজ করা দরকার আমরা তা করছি না।’
বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), দৈনিক সমকাল এবং চ্যানেল ২৪-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ২০২৩-২৪ প্রাক-বাজেট আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সালমান এফ রহমান।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি এ বিনিয়োগ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি এনালাইসিস করে দেখেছি যে, আমাদের দৈনিক যে লেনদেন এতে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ হচ্ছে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের। আর ৫ থেকে ১০ শতাংশ হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী। আইসিবি টোটালি ইনঅ্যাকটিভ (নিষ্ক্রিয়), এছাড়া সিটি ব্যাংক ও অন্যান্য বিনিয়োগকারী ব্যাংক রয়েছে তারা দৈনিক লেনদেনের ৫ শতাংশ অংশগ্রহণ করছে। মূল সমস্যাটা এই জায়গাতেই।’
তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দেশের ফ্রন্টিয়ার মার্কেটে দৈনিক লেনদেনে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ থাকে ৯০ শতাংশ আর ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী থাকে ১০ শতাংশ।’
সালমান এফ রহমান বলেন, ‘আমি আজকেও এটা শুনেছি যে, কথার কথায় সবাই বলে ছোট বিনিয়োগকারীদের আমাদের বাঁচাতে হবে। ছোট বিনিয়োগকারীকে রক্ষা করা তো সরকারের দায়িত্ব না। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের এখানে বিনিয়োগ করাই উচিত না। তাদের উচিত প্রাতিষ্ঠানিক মাধ্যমে বিনিয়োগ করা।
‘এখানে আমরা শুধু ব্রোকারকে ব্যবহার করি মধ্যস্থতাকারী হিসেবে, কিন্তু বিনিয়োগের সিদ্ধান্তগুলো একজন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী হিসেবে আমি নিজে নিচ্ছি। আর যখনই আমার ভুলের কারণে আমি লস করি তখন দায়িত্বটা সরকারে হয়ে যাবে। বাহ খুব সুন্দর।’
প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, ‘এই স্ট্রাকচারাল ডিফেটটা (কাঠামোগত দুর্বলতা) যদি আমরা না ঠিক করতে পারি, তাহলে আমাদের পুঁজিবাজার বড় করা অনেক বেশি কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে।’
সালমান এফ রহামন বলেন, ‘মুদ্রাস্ফীতি বিশ্বব্যাপী সমস্যা। রিজার্ভের সমস্যা সমাধানে আমরা আমদানি কমাতে সক্ষম হয়েছি। আগামী জুনে রিজার্ভ নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে, আইএমএফ ঋণ দেবে না বিভিন্ন আশঙ্কা করেছিলেন অনেকে। কিন্তু আইএমএফ থেকে ঋণ পাওয়া গেছে। প্রথম দফায় ঋণ ছাড়ও হয়েছে। ব্যাংক সুদের হার সীমা তুলে দেওয়া হচ্ছে। ম্যাক্রো ইকোনমিতে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে আমরা সঠিক পথেই আছি।’
তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজার চাঙা করতে বন্ড মার্কেটকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। সব পণ্যে প্রণোদনা দিতে হবে। আমরা অনেক দেশ, এমনকি উন্নত দেশের তুলনায় ভালো আছি। বেসরকারি খাতের সহযোগিতায় আমরা অনেক ভালো পজিশনে আছি। কৃষি, প্রবাসী আয় ও রপ্তানি খাতের কারণে আমাদের পজিশন ধরে দেখতে পেরেছি।’
সালমান এফ রহমান বলেন, ‘ট্যাক্স জিডিপি অনুপাত বিশ্বের মধ্যেই কম। ট্যাক্স নেট ও জিডিপি বাড়াতে হলে অটোমেশনের বিকল্প নেই। কাঠামোগত সমস্যা আছে, তা হচ্ছে পরোক্ষ করের নির্ভরশীলতা। এটা কমাতে হবে। প্রত্যক্ষ কর বাড়াতে হবে। বড় সমস্যা হচ্ছে আমরা এখনো রাজস্ব আদায়ে কাস্টমসের নির্ভরতা বেশি। এটা কমাতে হবে।
‘ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন যদি ২০১৪ সালে করতে পারতাম তাহলে এই সেক্টর নিয়ে এতো প্রশ্ন উঠতো না। কর আইন সহজ করতে হবে। কর নেট বৃদ্ধির কথা বলি, কিন্তু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কর দিতে চায় না। এটাই বাস্তবতা। সবাই করের আওতায় না এলে করনেট বৃদ্ধি কীভাবে হবে? ব্যবসায় লাভ করছে, কিন্তু কর দিতে সমস্যা কোথায়? সব জায়গায় কর অব্যাহতি দিলে কর কোথা থেকে আসবে।’
মেনমেইড ফাইবারে কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে মেনমেইড ফাইভার মেনমেইড ফাইভার শুরু করেছি। এতদিন আমরা কী করলাম? ইয়াংওয়ান ২০ বছর আগে এগুলো করেছে। বর্তমানে তারা বিলিয়ন ডলারের মেনমেইড করতেছে, তাদের কি ইনসেন্টিভ দেয়া হইছে? তাহলে আমরা কেন এতদিন বসে রইলাম?’
ডিসিসিআই সভাপতি সামীর সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, এফবিসিসিআই’র সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, সাবেক সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য