অতি ক্ষুদ্রঋণ চালু করার পর এবার বিকাশের গ্রাহকদের জন্য ইসলামিক সঞ্চয় সেবা চালু করছে বেসরকারি খাতের দি সিটি ব্যাংক লিমিটেড।
এখন বিকাশ অ্যাপ থেকেই সিটি ব্যাংকের ইসলামিক শরিয়াহভিত্তিক মাসিক সঞ্চয় সেবা নিতে পারবেন বিকাশ গ্রাহকেরা। ফলে দেশের যেকোনো স্থান থেকে ঘরে বসে কাগজপত্র বা ফর্ম পূরণের ঝামেলা ছাড়াই ইসলামিক সঞ্চয় সেবা নেয়ার সুযোগ পাবেন তারা।
রাজধানীর একটি হোটেলে সোমবার বিকাশ অ্যাপে সিটি ব্যাংকের ইসলামিক সঞ্চয় সেবা চালুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার, শরিয়াহ সুপারভাইজরি কমিটির চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসাইন মোল্লা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন, বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীরসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
মাত্র কয়েক মিনিটে সহজ কয়েকটি ধাপে বিভিন্ন মেয়াদ ও অংকের ইসলামিক সঞ্চয় গ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছে সিটি ব্যাংক ও বিকাশের এই যৌথ উদ্যোগ। এর আগে অন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিকাশের মাধ্যমে সঞ্চয় সেবা চালু করলেও এটিই প্রথম ইসলামিক সঞ্চয় সেবা।
ভবিষ্যতের আর্থিক নিরাপত্তা ও পরিকল্পনা বিবেচনায় প্রতি মাসে কিছু সঞ্চয় করার জন্য এখন আর ব্যাংকে গিয়ে নতুন অ্যাকাউন্ট খোলার ঝামেলা থাকবে না। ফলে ব্যাংকিং সেবার ভেতরে এবং বাইরে থাকা বিশাল জনগোষ্ঠী সহজেই ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক সঞ্চয় সেবা নিতে পারবেন, যা সার্বিকভাবে সঞ্চয়কে উদ্বুদ্ধ করবে এবং অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে।
সিটি ব্যাংকের এই ইসলামিক ডিপিএস সঞ্চয় সেবা চালু করার জন্য বিকাশ অ্যাপের ‘ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সঞ্চয়’ বা সেভিংস অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপর ‘ইসলামিক সেভিংসে ট্যাপ করে সেভিংস’-এর মেয়াদ ও জমার ধরন নির্বাচন করতে হবে। বর্তমানে মাসিক ৫০০, এক হাজার, দুই হাজার এবং তিন হাজার টাকা কিস্তিতে সর্বনিম্ন দুই বছর থেকে সর্বোচ্চ চার বছর মেয়াদে সঞ্চয় স্কিম থেকে নিজের পছন্দমতো সঞ্চয় করতে পারবেন গ্রাহক। সঞ্চয়ের মেয়াদ পূরণ হওয়ার পর গ্রাহকেরা মুনাফাসহ পুরো টাকা বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে ক্যাশ আউট করতে পারবেন কোনো ক্যাশ আউট খরচ ছাড়াই।
প্রতি মাসের নির্ধারিত তারিখে বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে সঞ্চয়ের কিস্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সিটি ইসলামিক অ্যাকাউন্টে জমা হয়ে যাবে। তাই নির্ধারিত তারিখের আগেই প্রয়োজনীয় টাকা বিকাশ অ্যাকাউন্টে রাখার জন্য ক্ষুদে বার্তা দিয়ে স্মরণ করিয়ে দেয়া হবে গ্রাহককে।
এ ছাড়া গ্রাহক যেকোনো সময় বিকাশ অ্যাপ থেকে জমার পরিমাণ, সঞ্চয়ের সময়কাল ও মুনাফার পরিমাণ সরাসরি দেখতে পারবেন।
বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করেই যে কোনো গ্রাহক এই সঞ্চয় সেবাটি নিতে পারবেন। সেবাটি গ্রহণ করতে ডিজিটাল নিবন্ধনের মাধ্যমে গ্রাহকের তথ্য হালনাগাদ থাকতে হবে।
বিকাশ অ্যাপ থেকেই যেকোনো সময় তথ্য হালনাগাদের সুযোগ রয়েছে।
এর আগে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর বিকাশের গ্রাহকদের জন্য ‘ডিজিটাল ন্যানো লোন’ সেবা চালু করে সিটি ব্যাংক, যার মাধ্যমে নথিপত্র ছাড়া মুহূর্তেই ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ মিলছে। এতে সুদহার বছরে ৯ শতাংশ।
এই সেবায় ইতোমধ্যে প্রায় ৮০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে ব্যাংকটি। এ জন্য এখন নতুন করে আমানত সেবার দিকে যাচ্ছে তারা।
বর্তমানে বিকাশের মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ও ঢাকা ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাব খুলে প্রতি মাসে টাকা জমা করা যাচ্ছে। এই স্কিমের আওতায় প্রতি মাসে জমার টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিকাশ হিসাব থেকে কেটে নেয়া হচ্ছে এবং মেয়াদ শেষে মুনাফাসহ আসল টাকা চলে যাচ্ছে বিকাশ হিসাবে। আবার মেয়াদ শেষে মুনাফাসহ পুরো টাকা তুলতে খরচও লাগছে না।
সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান, তার ভাই ও পরিবারের অন্য সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। সূত্র: ইউএনবি
এর আগে আজিজ খান ও তার পরিবারের সদস্যদের অ্যাকাউন্টের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
বিএফআইইউ এক চিঠিতে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের বিধান অনুযায়ী আজিজ খান, তার ভাই ও পরিবারের অন্য সদস্যদের ব্যাংক হিসাবে ৩০ দিনের জন্য লেনদেন বন্ধ রাখতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে।
সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ জন প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর একজন।
মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান এবং তার স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশিরের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) বুধবার দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়ে তাদের ব্যাংক হিসাবের যাবতীয় তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে।
বিএফআইইউর সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের তথ্য তলব করার এই নির্দেশের ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা-সংশ্লিষ্ট ধারা প্রযোজ্য হবে বলে বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়েছে। চিঠিতে তলব করা ব্যক্তির নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টের তথ্য দেয়া হয়েছে।
বিএফআইইউর নির্দেশনায় বলা হয়েছে, হিসাব তলব করা ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী চিঠি দেয়ার তারিখ থেকে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে বিএফআইইউতে পাঠানোর জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, পুঁজিবাজারে কারসাজির দায়ে গত ২৪ সেপ্টেস্বর তারকা এই ক্রিকেটারকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
আরও পড়ুন:সদ্যসমাপ্ত সেপ্টেম্বর মাসে দেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে ২৪০ কোটি ৪৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। রেমিট্যান্স প্রবাহে গত চার বছরের মধ্যে একক মাসে প্রবাসী আয়ের দিক থেকে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে জুনে ব্যাংকিং চ্যানেলে ২৫৪ কোটি ডলার এবং তার আগে ২০২০ সালের জুলাইয়ে ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্ট বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। এটা আগের অর্থবছরের একই মাসে ছিল মাত্র ১ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার।
এছাড়া আগের মাস আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১৮০ মিলিয়ন ডলার। আগস্টে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ছিল ২ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেপ্টেম্বরে প্রতিদিন গড়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে আট কোটি ডলার। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এই অংকটা ছেল চার কোটি ৪৫ লাখ ডলার। সে হিসাবে রেমিট্যান্স প্রবাহ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
একক মাস হিসেবে গত বছরের তুলনায় এ বছরের সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ৮০.২ শতাংশ। গত বছরের সেপ্টেম্বরের রেমিট্যান্স এসেছিল ১৩৩ কোটি ডলার। তার আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৪ কোটি ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, সেপ্টেম্বরে দেশে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬৩ কোটি ৮৩ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ কোটি ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৬৫ কোটি ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬২ লাখ ডলার।
আলোচিত সময়ে সরকারি বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, পুলিশের কমিউনিটি ব্যাংক, বিদেশি হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে কোনো রেমিটেন্স আসেনি।
শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ব্যাপক রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসীরা আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ১.০৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স বেশি পাঠিয়েছেন, এ হিসাবে প্রবৃদ্ধি ৮০ দশমিক ২২ শতাংশ।
ব্যাংকাররা বলেন, নতুন সরকারের শুরু থেকে প্রবাসীরা হুন্ডিতে রেমিট্যান্স পাঠানো কমিয়ে দিয়েছেন। এখন তারা লাইনে দাঁড়িয়ে হলেও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। সে সুবাদে দেশের প্রবাসী আয় ব্যাপক পরিমাণে বাড়ছে।
আরও পড়ুন:চলতি সেপ্টেম্বরের চার সপ্তাহেই রেমিট্যান্স প্রবাহ দুই বিলিয়ন ডলার (২১১ কোটি ডলার) ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২০ টাকা হিসাবে) এর পরিমাণ ২৫ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকার বেশি।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি মাস সেপ্টেম্বরের প্রথম ২৮ দিনে ২১১ কোটি ৩১ লাখ ১০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। আর প্রতিদিন আসছে গড়ে ৭ কোটি ৫৫ লাখ ডলার বা ৯০৬ কোটি টাকা। যদিও আলোচিত সময়ে সাতটি ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি।
আলোচিত সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৫৮ কোটি ৬৫ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৯ কোটি ২৬ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৪২ কোটি ৮৬ লাখ ৭০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫৩ লাখ ডলারের বেশি রেমিট্যান্স।
আলোচিত সময়ে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি এমন ব্যাংকের সংখ্যা সাতটি। এর মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল ও বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বা রাকাব এবং বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে- কমিউনিটি ব্যাংক, আইসিবি ব্যাংক, বিদেশি খাতের হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অফ পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, আগস্ট মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২২২ কোটি (২ দশমিক ২২ বিলিয়ন) ডলার। এটা তার আগের বছরের (আগস্ট-২০২৩) একই সময়ের চেয়ে ৬২ কোটি ডলার বেশি। গত বছরের আগস্ট মাসে এসেছিল প্রায় ১৬০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স।
আরও পড়ুন:অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগকে সমর্থন করতে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে ৩৫০ কোটি ডলার সহজ শর্তে ঋণ দেবে।
নিউ ইয়র্ক সময় বুধবার জাতিসংঘ সদরদপ্তরে সাধারণ পরিষদের অধিবেশেনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা সাক্ষাৎ করেন। ওই সময় বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট এ সহায়তার ঘোষণা দেন।
অধ্যাপক ইউনূসের দীর্ঘদিনের বন্ধু অজয় বাঙ্গা বলেন, ‘কমপক্ষে ২ বিলিয়ন ডলার হবে নতুন ঋণ এবং আরও ১.৫ বিলিয়ন ডলার বিদ্যমান কর্মসূচি থেকে পুনঃব্যবহার করা হবে।’
তিনি জানান, বিশ্বব্যাংক ডিজিটালাইজেশন, তারল্য সংকট থেকে উত্তরণ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ এবং পরিবহন খাতের সংস্কারে সহায়তা দিতে এ ঋণ দেবে।
সাক্ষাৎকালে অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গৃহীত ব্যাপক সংস্কার কর্মসূচির জন্য বিশ্বব্যাংকের সহায়তা কামনা করেন।
তিনি বিশ্বব্যাংকের ঋণ কর্মসূচিতে উদ্ভাবন আনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘দেশ পুনর্গঠনের এটি একটি বড় সুযোগ।’
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট দক্ষিণ এশিয়ায় জ্বালানি খাতের সহযোগিতা এবং নেপাল ও ভুটানে উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ কীভাবে ভারত ও বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভাগ করা যেতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করেন।
সাক্ষাৎকালে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে মূল নীতি হার (রেপো রেট) ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এটি আগামীকাল বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) থেকে কার্যকর হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক একই সময়ে স্ট্যান্ডিং ল্যান্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) এবং স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) যথাক্রমে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ১১ ও ৮ শতাংশ করেছে।
পলিসি রেট বাড়লে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া ব্যয়বহুল হবে। আর তা জনগণকে ব্যয় সংকোচন ও চাহিদা কমাতে বাধ্য করবে। এর ফলে পরবর্তীতে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস পাবে।
গত ২৫ আগস্ট পলিসি রেট ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৯ শতাংশ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বিগত সরকার সবশেষ ৮ মে পলিসি রেট ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে সাড়ে ৮ শতাংশ করেছিল। সে সময় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মূল্যস্ফীতি কমার কোনো লক্ষণ না থাকায় সুদের হার বাড়ানো হয়, যা গত বছরের মার্চ থেকে ৯ শতাংশের বেশি ছিল।
১২ মাস পর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশে। গত জুলাইয়ে ভোক্তা মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা ২০১০-১১ অর্থবছরের পর সর্বোচ্চ। ফলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আরও খারাপ হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ২০২৫ সালের মার্চ বা এপ্রিলের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৬ থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন।
আরও পড়ুন:ব্যাংকিং খাত সংস্কার, অর্থ পাচার রোধ ও ট্যাক্স রিটার্ন জমার ক্ষেত্রে আধুনিকায়নের বিষয়ে আইএমএফের কারিগরি সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে আইএমএফের আবাসিক প্রতিনিধি জয়েন্দু দে-সহ নয় সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নানা সংস্কারের জন্য অর্থ প্রয়োজন। বৈঠকে এ বিষয়ে আইএমএফ মিশনকে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কী কী সংস্কার করেছে, তা-ও তাদের জানানো হয়েছে। এক্ষেত্রে আইএমএফের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দরকার।’
সরকার নিজস্ব রিসোর্স ব্যবহার করেই অর্থনৈতিক খাতে এগিয়ে যেতে চায় বলেন উল্লেখ করেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, তবে আইএমএফ বড় উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা বাংলাদেশের। তাই তাদের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে চায় সরকার।
ড. সালেহউদ্দিন জানান, এ বিষয়ে শুধু আইএমএফ নয়; বিশ্বব্যাংকসহ অন্য দাতা সংস্থাগুলোর সঙ্গেও এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তার বিষয়ে কাজ করছে দাতা সংস্থাগুলো। আগামী অক্টোবরে ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হবে।
মন্তব্য