বেলা একটা ৩৮, লেনদেন শেষ হতে বাকি আরও ১২ মিনিট। সে সময় ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকোর ৮ লাখ ৭ হাজার ১৪৮টি শেয়ারের বিক্রেতা থাকলেও ক্রেতার ঘর শূন্য।
এই কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে সেরা কোম্পানির একটি হিসেবে বিবেচিত, যার প্রতি বছর আকর্ষণীয় প্রবৃদ্ধি এবং দারুণ লভ্যাংশ দেয়া হয়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সেরা ৩০টি কোম্পানি মিলিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ এর একটি এই ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো।
কিন্তু গত মাস দুয়েক ধরে কোম্পানিটির ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না, যে অবস্থা ডিএসই-৩০ এর আরও অনেক কোম্পানির।
সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবস মঙ্গলবার সূচক অনেকখানি বাড়লেও বিপুল সংখ্যক কোম্পানির ক্রেতা না থাকার বিষয়টি আবার দেখা যায়। এর মধ্যে ডিএসই-৩০ এর ৮টি কোম্পানি রয়েছে।
এর মধ্যে ছিল ব্যাংকিং খাতের সবচেয়ে শক্তিশালী কোম্পানির একটি ব্র্যাক ব্যাংক। বেলা একটা ৪১ মিনিটে কোম্পানিটির ৬৫ লাখ ৮৪ হাজার ৩৮৭টি শেয়ারের বিক্রয়াদেশের বিপরীতে ক্রেতা ছিল না একটিওর।
বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন দর বা ফ্লোর প্রাইসে ৩৩ হাজার ৯০০টি শেয়ারের ক্রেতা ছিল ইস্টার্ন ব্যাংকের।
গত দুই বছরে পুঁজিবাজারে তোলপাড় তোলা ফরচুন সুজের ২৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৭টি কোম্পানির বিক্রয়াদেশের বিপরীতে ক্রেতা ছিল না একটির।
লেনদেন শেষ হওয়ার দুই মিনিট আগে প্রতি বছর সবচেয়ে বেশি মুনাফা করা ইসলামী ব্যাংকের ১৩ হাজার ৪৫১টি শেয়ারের ক্রেতা দেখা গেছে।
পুঁজিবাজারে একক কোম্পানি হিসেবে সবচেয়ে বেশি লভ্যাংশ দেয়া গ্রামীণ ফোনেরও ক্রেতা ছিল না। কিন্তু ১ লাখ ৮৮ হাজার ৩৬৯টি শেয়ার বিক্রির চেষ্টা করছিলেন বিক্রেতারা।
লেনদেন শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের ২২ লাখ ৯১ হাজার ২০৮টি, রেনাটার ৩৭ হাজার ৫৪০টি আর, রবির ৩৪ লাখ ১৬ হাজার ২৭৮টি, সিঙ্গার বিডির ৩ হাজার ৩৩১টি আর স্কয়ার ফার্মার ৩ লাখ ৮০ হাজার ৭৫টি শেয়ার বিক্রির আদেশ ছিল। কিন্তু ক্রেতা ছিল না একটিরও।
পুঁজিবাজারে গত দুই মাসে সূচক ১০ শতাংশের মতো বাড়লেও আসলে বাজারে কী হচ্ছে, তার একটি উদাহরণ এটির। ডিএসইর সেরা ৩০ কোম্পানির মধ্যে আটটি দিনভর ক্রেতা শূন্য থাকার মধ্যে কেউ কেউ মাঝে মধ্যে কিছু শেয়ার কিনেছে। আর যেগুলো ডিএসই-৩০ এর বাইরে, সেগুলোর কথা বলাই বাহুল্য।
৩৭টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে সেপ্টেম্বরে অর্থবছর শেষ করা এলআর গ্লোবাল ওয়ানের কেবল বলার মতো কিছু লেনদেন হয়েছে। কোনো কোনোটির একটিও না, কোনো কোনোটির নামকাওয়াস্তে ইউনিট হাতবদল হয়েছে।
এদিন সূচক বাড়লেও আবার বেশিরভাগ শেয়ারের দরপতনের চিত্র দেখা গেছে। বেড়েছে ৭৭টির দর, কমেছে ১১২টির, আগের দিনের দরে হাতবদল হয়েছে ১৮০, যেগুলোর সিংহভাগই বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন দর বা ফ্লোর প্রাইসে লেনদেন হয়েছে। এগুলোর মধ্যে বিপুল সংখ্যকের কোনো ক্রেতা দেখা যায়নি।
লেনদেন হয়েছে এক হাজার ২৯০ কোটি ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা, যা আগের দিনের তুলনায় কিছুটা বেশি। সোমবার ১৩ পয়েন্ট সূচক পতনের দিন হাতবদল হয় ১ হাজার ২৮৪ কোটি ৭৩ লাখ ৭২ হাজার টাকা।
ফের ওরিয়নের রাজত্ব
বাজারে এই চিত্রের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে কিছুটা ঝিমাতে থাকা ওরিয়ন গ্রুপের চার কোম্পানির শেয়ারের দামে লাফ দেখা গেছে। দাম বেড়েছে বেক্সিমকো লিমিটেডেরও। আর এই পাঁচ কোম্পানির ওপর ভর করে সূচক বেড়েছে অনেকটাই।
দিন শেষে যে ২৬.৪৮ পয়েন্ট সূচক বেড়েছে, তার মধ্যে ওরিয়ন গ্রুপের বিকন ফার্মা একাই যোগ করেছে ১৭.৫৩ পয়েন্ট। একই গ্রুপের ওরিয়ন ফার্মা ৬.১৩ পয়েন্ট, কোহিনূর কেমিক্যালস ৩.১১ পয়েন্ট এবং ওরিয়ন ইনফিউশন বাড়িয়েছে ২.৬৯ পয়েন্ট।
অন্যদিকে বেক্সিমকো গ্রুপের বেক্সিমকো লিমিটেড বাড়িয়েছে ৪.২৬ পয়েন্ট।
অর্থাৎ এই পাঁচ কোম্পানিই সূচকে যোগ করেছে ৩৩.৭২ পয়েন্ট।
এসব কোম্পানির মধ্যে বিকন ফার্মার দর বেড়েছে ৮.৭২ শতাংশ। আগের দিন দর ছিল ৩২২ টাকা ২০ পয়সা। এখন দাঁড়িয়েছে ৩৫০ টাকা ৩০ পয়সা।
কোহিনূর কেমিক্যালসের দর বেড়েছে ৭.৪৯ শতাংশ। আগের দিন দর ছিল ৬০১ টাকা ৪০ পয়সা। বেড়ে হয়েছে ৬৪৬ টাকা ৫০ পয়সা।
ওরিয়ন ইনফিউশনের দর বেড়েছে ৭.৪৯ শতাংশ। আগের দিন দর ছিল ৬৫২ টাকা ৫০ পয়সা, বেড়ে হয়েছে ৭০১ টাকা ৪০ পয়সা।
ওরিয়ন ফার্মার দর বেড়েছে ৭.২৩ শতাংশ। আগের দিন দর ছিল ১৩৪ টাকা, বেড়ে হয়েছে ১৪৩ টাকা ৭০ পয়সা।
সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া ১০ কোম্পানির মধ্যে একই গ্রুপের এই চারটি কোম্পানি ছিল।
এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে চার মাসেরও কম সময়ে ওরিয়ন ইনফিউশনের দর আট গুণের বেশি বেড়েছে।
বেক্সিমকো লিমিটেডের দর বেড়েছে ৩.৮৪ শতাংশ। আগের দিন দর ছিল ১৩০ টাকা ১০ পয়সা, বেড়ে হয়েছে ১৩৫ টাকা ১০ পয়সা।
একটি কোম্পানি লেনদেন ২০০ কোম্পানির চার গুণ
এদিন যথারীতি লেনদেনের শীর্ষে ছিল ওরিয়ন ফার্মা। আগের কর্মদিবসে দরপতনের দিন লেনদেন এক শ কোটি টাকার নিচে নামলেও দর বাড়ার পর আবার লাফ দিয়ে হাতবদল হয়েছে ১৫২ কোটি ৮৪ লাখ ৩০ টাকার।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেডে। হাতবদল হয়েছে ১২১ কোটি ৯৩ লাখ ৮৯ হাজার টাকার।
এই শীর্ষ দুই কোম্পানির লেনদেন ৩০০টি কোম্পানির সম্মিলিত লেনদেনের চেয়ে বেশি।
এই দুই কোম্পানিতে হাতবদল হয়েছে ২৭৪ কোটি ৭৭ লাখ ৯২ হাজার টাকা। অন্যদিকে হাতবদল হওয়া ৩৭৪টি কোম্পানির মধ্যে ৩০০টি মিলিয়ে লেনদেন হয়েছে ২৫১ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
অন্যদিকে সবচেয়ে কম লেনদেন হওয়া ১০০টি কোম্পানিতে মিলিয়ে হাতবদল হয়েছে ৫ কোটি ৮৮ লাখ। ২০০টি কোম্পানি মিলিয়ে হাতবদল হয়েছে ৩৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা, যা ওরিয়নের লেনদেনের ২৪ শতাংশ মাত্র।
ফ্লোর প্রাইসকে দোষারোপ
পুঁজিবাজারের লেনদেনের এই চিত্র নিয়ে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, ‘ফ্লোর প্রাইসের কারণেই ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে। এর কারণে অনেক শেয়ারের দাম কমতে পারছে না। একটা রিজনেবল প্রাইসে শেয়ার কিনতে না পারলে নতুন বিনিয়োগ করবে কীভাবে?
‘কোনো শেয়ারের দর যদি বেশি কমে যায়, সেটি পুনরায় তার জায়গায় চলে আসবে। এজন্য এটাকে নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে। মার্কেটে যে বিনিয়োগ, তা এমন নয় যে, নতুন করে ফান্ড ঢুকছে, বিনিয়োগকারীরা একটা বিক্রি করে আরেকটা কিনছেন।’
বাজার পরিস্থিতি নিয়ে ট্রেজার সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘কিছু শেয়ারের ওপর নির্ভর করে ইনডেক্স মুভ করছে। আবার টার্নওভারও ভালো। বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করে বলা যায় সামনে একটা মুভমেন্ট আসতে পারে। মার্কেটের যে সেট-আপ তা নতুন পোলারাইজেশনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এই রকম পরিস্থিতি যখন আসে তার পরে একটা র্যালির সম্ভাবনা থাকে।’
বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার পরামর্শ দেন ডিএসইর এই ব্রোকার। বলেন, ‘বিপুল সংখ্যক শেয়ারের ক্রেতা নাই যেমন ঠিক, তেমনি একটা কথা রয়েছে- মার্কেট ইজ অলওয়েজ গুড। মার্কেট আমার মতো হবে না, আমার সাইকোলজির সঙ্গে নাও চলতে পারে। আমি কতটুকু মানিয়ে চলতে পারছি সেটাই বড় কথা। মার্কেটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে।’
দরপতন-দরবৃদ্ধির হার কম
বড় খাতের মাত্র দুটিতে দরপতনের হার বেশি দেখা গেছে। এর মধ্যে প্রকৌশল খাতে ২২টি বা ৫৩.৩৮ শতাংশ ও খাদ্য খাতে ৯টি বা ৫২.৯৪ শতাংশ কোম্পানির দরপতন হয়েছে।
এ ছাড়া দরপতন বেশি ছিল সেবা ও আবাসন এবং সিরামিকস খাতে।
বিপরীতে কাগজ ও মুদ্রণ খাতের ৪টি বা ৬৬.৬৭ শতাংশ এবং ভ্র্রমণ ও অবকাশ খাতের তিনটি বা শতভাগ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। আর কোনো খাতে দরবৃদ্ধির হার বেশি ছিল না।
দুই দিন পরে আবারও লেনদেনের শীর্ষস্থান দখল করেছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। হাতবদল হয়েছে ২৬৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা, যা লেনদেনের ২১.৯৩ শতাংশ।
খাতের ১৪টি বা ৪৬.৬৭ শতাংশ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৮টি করে কোম্পানির দর কমে ও অপরিবর্তিত থেকে লেনদেন হয়েছে।
বিবিধ খাতে লেনদেন হয়েছে ২১৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা। ৫টি করে কোম্পানির দরবৃদ্ধি ও দরপতন হয়েছে। ৩টির দর অপরিবর্তিত ছিল।
শীর্ষ অবস্থান থেকে নেমে প্রকৌশল খাতে হাবদল হয়েছে ১৮৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। ১০টি করে কোম্পানির দরবৃদ্ধি ও অপরিবর্তিত ছিল। আর কমেছে ২২টি কোম্পানির দর।
৭৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে চতুর্থ অবস্থানে চলে এসেছে সেবা ও আবাসন খাত। খাতের ৪টি কোম্পানির মধ্যে একটির দর বেড়ে ও তিনটির দর কমে লেনদেন হয়েছে।
এর পরেই কাগজ ও মুদ্রণ খাতের লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। ৪টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে একটি করে কোম্পানির দরপতন ও অপরিবর্তিত ছিল।
এরপরে লেনদেনের ওপরের দিকে ছিল জ্বালানি, বস্ত্র, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও খাদ্য খাত।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
৮.৭২ শতাংশ দর বেড়েছে অ্যাপেক্স ফুডসের। শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৪৫ টাকা ৪০ পয়সায়। আগের দিনে দর ছিল ২২৫ টাকা ৭০ পয়সা।
সমান দর বেড়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিকন ফার্মা। ৩২২ টাকা ২০ পয়সা থেকে বেড়ে শেয়ারটি সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৩৫০ টাকা ৩০ পয়সায়।
মনোস্পুল পেপারের দর ৮ দশমিক ৭১ শতাংশ বেড়ে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৪৫ টাকা ৭০ পয়সায়।
দরবৃদ্ধির তালিকায় ছিল কোহিনূর কেমিক্যাল, ওরিয়ন ইনফিউশন, ওরিয়ন ফার্মা, জুট স্পিনার্স, কে অ্যান্ড কিউ, পেপার প্রসেসিং ও এডিএন টেলিকম।
দর পতনের শীর্ষ ১০
পতনের তালিকার শীর্ষে দেখা গেছে কেয়া কসমেটিকসকে। ৬ দশমিক ০২ শতাংশ কমে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ৭ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়। আগের দিনে লেনদেন হয় ৮ টাকা ৩০ পয়সায়।
পরের স্থানে ছিল ইন্টারন্যাশনাল লিজিং। ৫ দশমিক ৭১ শতাংশ দর কমে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬ টাকা ৬০ পয়সায়।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দর হারিয়েছে বিডি ওয়েলডিং। ৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ কমে শেয়ারটি সর্বশেষ ২৫ টাকা ৭০ পয়সায় হাতবদল হয়। আগের দিনের দর ছিল ২৬ টাকা ৯০ পয়সায়।
এ ছাড়া দরপতনের তালিকায় ছিল বিডি থাই ফুড, আরএসআরএম স্টিল, দেশবন্ধু পলিমার, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, কপারটেক, মীর আকতার হোসেন লিমিটেড ও ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
মন্তব্য