পুঁজিবাজারে বারবার যে আস্থার সংকটের কথা বলা হয়, সেটি দূর না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। বলেছেন, এই আস্থা কোত্থেকে আনবেন, সেটি বুঝতে পারছেন না।
পুঁজিবাজার নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব দাবি পূরণ হয়ে যাওয়ার পরও বাজার গতিশীল না হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এমন মন্তব্য এলো তার পক্ষ থেকে।
সোমবার বিএসইসি কমিশনের হল রুমে ‘বিশ্ব বিনিয়োগ সপ্তাহ-২০২২’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখছিলেন শিবলী রুবাইয়াত।
২০২০ সালের মে মাসে শিবলীর নেতৃত্বে বিএসইসি পুনর্গঠন হলে পুঁজিবাজারে এর প্রভাব স্পষ্ট হয়ে উঠে। খাদের কিনারা থেকে উঠে আসা বাজার এক বছরেই ঘুরে দাঁড়ায়। ২০১০ সালের মহাধসের পর সর্বোচ্চ সূচক, সর্বোচ্চ লেনদেন নিয়ে যখন উচ্ছ্বাস, সে সময় ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে আবার শুরু হয় সংশোধন।
বড় উত্থান শেষে সংশোধন একটি স্বাভাবিক বিষয় হলেও সেটি এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চালু রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বিএসইসির মতভেদ, শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব, এরপর সব শেষ ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ, ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতন- এসব ইস্যুতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অস্থিরতা চলছে।
তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে যে মতভেদ ছিল, সেটি দূর হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক স্পষ্টতই এখন পুঁজিবাজারবান্ধব কথা বলছে, যা গত এক যুগে দেখা যায়নি। পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা শেয়ারের ক্রয়মূল্যে করার দাবিও পূরণ হয়েছে। দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিটি শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়া হয়েছে।
গত দুই মাসে সূচকের উত্থান হয়েছে বটে, তবে বাজারে যে স্বাভাবিক গতি তা ফিরছে না। ঘুরেফিরে ২০ থেকে ৩০টি কোম্পানির শেয়ার নিয়ে চলছে ‘নানা খেলা’। আর বাজার বিশ্লেষকরা বারবার বলে আসছেন বিনিয়োগকারীর আস্থার সংকটের কথা।
এই অনুষ্ঠানেও বিষয়টি উঠে আসে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।'
শিবলী রুবাইয়াত এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের শুনতে শুনতে কান ব্যথা হয়ে গেছে। আস্থা, এই আস্থা যে কোথা থেকে আনব সেটা আমরা বুঝি না।’
পুঁজিবাজার এই অবস্থায় থাকবে না, এটাও বিশ্বাস করেন তিনি। বলেন, ‘আমরা মনে করি আমাদের ১৯৯৬ বা ২০১০ আর ব্যাক করবে না। আমাদেরকে অনেক মানুষ সাহায্য করছে আমরা পুরোনো স্মৃতিগুলো ভুলে যাচ্ছি। আমরা নতুন স্বপ্ন দেখা শুরু করি। আমাদের জন্য ভালো সময় অপেক্ষা করছে। আমাদের সবচেয়ে আস্থার জায়গা প্রধানমন্ত্রী।’
পুঁজিবাজার ও বাংলাদেশ ব্যাংক একসঙ্গে কাজ করলে অর্থনীতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারলে গোটা দেশই উপকৃত হবে বলে মনে বিএসইসি চেয়ারম্যান। বলেন, ‘আমরা ভালো ব্যবসা করলে এনবিআর বেশি কর পায়, ব্রোকারেজ হাউস ভালো ব্যবসা করলে, মার্চেন্ট ব্যাংক ভালো ব্যবসা করলে সেই টাকা দেশের উন্নয়নে লাগে। আমরা সবাই মিলে দেশের কাজ করছি।’
গভর্নর ও নজিবুরকে নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ
একই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার। তিনি সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ না করে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, এই বাজারের উন্নয়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে।
গত তিন মেয়াদে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের মুখ থেকে এই ধরনের পরামর্শ কখনও আসেনি।
বিএসইসি চেয়ারম্যান নতুন গভর্নরের পুঁজিবাজারবান্ধব মনোভাবের বিষয়টিও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বলব, বাংলাদেশ খুব সৌভাগ্যবান যে এমন একজন গভর্নর আমরা পেয়েছি, যিনি ফাইন্যান্স সচিব ছিলেন আর সারাজীবন এগুলো নিয়েই কাজ করেছেন, যা আমাদের দেশের কাজে লাগছে।’
শিবলী রুবাইয়াত পুঁজিবাজারে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিবকে নজিবুর রহমানের সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিয়েও কথা বলেন, যাকে পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘নজিবুর রহমান একটি ডাইনামিক এবং ভাইব্রেন্ট এনবিআর করতে ভূমিকা রেখেছেন। করোনার মধ্যে যখন পুঁজিবাজার সংকটের মধ্যে পড়ে তখন অনেক টাকা দরকার পড়ে। তখন ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড গঠন করে পুঁজিবাজারকে বিভিন্নভাবে সাপোর্ট দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘সিএমএসএফ আসার পরই ২০ বছরের পুরোনো চারটি ডিবেঞ্চার এবং দুটি বন্ড কূপন পেমেন্টের মাধ্যমে বাকি ছিল, তা দিতে বাধ্য হয়েছে এবং সব টাকা আদায় করেছে। এই মুহূর্তে আর কারও বন্ড বা ডিবেঞ্চারের পেমেন্ট আনক্লেইমড নাই।'
অনুষ্ঠান কক্ষে আসার পর নজিবুর রহমানের সঙ্গে তার আলাপচারিতাও তুলে ধরেন শিবলী রুবাইয়াত। বলেন, “আমি ঢুকতে ঢুকতে আমি ওনার সামনে যাওয়া আগেই তিনি বলে উঠলেন, ‘কি মার্কেট এত উঠানামা করে কেন?’ আমি তো হেসে দিচ্ছি, ‘আমি কী বলব ওনাকে? আমি বলেছি একটু উঠানামা তো করবেই।’ বললেন, ‘দেইখো বেশি যাতে কারও ক্ষতি না হয়।’ তার মানে প্রতিদিন তিনি খবরের কাগজ পড়েন।”
বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়াতে আরও কিছু মিউচ্যুয়াল ফান্ড আসবে বলেও জানান বিএসইসি প্রধান। বলেন, ‘ডিভিডেন্ড ঘোষণা করে বিনিয়োগকারীদের না দেয়ার যে প্রবণতাটা ছিল, তা অনেকাংশেই বন্ধ হয়ে গেছে। আর যদি কেউ না দেয় তাহলে সেটা সিএমএসএফ নিয়ে যাবে।’
মৃত্যুর ২৮ বছর পর শহীদ জননী জাহানারা ইমামের পাওনা টাকা দেয়ার বিষয় উল্লেখ করে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘কয়েকদিন আগে শহীদ জননীর পাওনা টাকা সিএমএসএফের মাধ্যমে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে কিন্তু মানুষ একটা বিষয় পরিষ্কার বার্তা পেয়েছে যে, পুঁজিবাজারে আর কারও টাকা না পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কারও ন্যায্য পাওনা না দিলে যে কেউ না কেউ আদায় করবে তা পরিষ্কার।’
ব্যাংকের দৃষ্টিভঙ্গী পাল্টানোর তাগিদ
পুঁজিবাজার নিয়ে ব্যাংক খাতের মনোভাব সহযোগিতামূলক হওয়া উচিত বলেও মনে করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান। বলেন, ‘ব্যাংকিং সেক্টর যেন মনে না করে ক্যাপিটাল মার্কেট রিচ হলে মানি মার্কেটের কখনোই ক্ষতি হবে। তা কখনোই হবে না।
‘গভর্নর নিজেই বলেছেন, আপনারা যা-ই করেন টাকা তো আমার কাছেই রাখতে হবে। তারমানে ব্যাংকিং সেক্টর আর ক্যাপিটাল মার্কেট এক।’
শিবলী রুবাইয়াত বলেন, ‘ক্যাপিটাল মার্কেটে যা ব্যবসা হয় ঘুরেফিরে ব্যাংকের কাছেই থাকে। তাই কোনোভাবেই ব্যাংকিং সেক্টরের কোনো অসুবিধাই হবে না। আর আমাদের কোথাও টাকা রাখার জায়গা নেই। আমরা দিনশেষে ঘুরেফিরে রউফ তালুকদার সাহেবের (গভর্নর) কাছেই যাব। যা নেব ওনার কাছ থেকেই নেব আর যা দেবো ওনাকেই দেবো। সুতরা ব্যাংকিং সেক্টর বা মানি মার্কেট যেন কখনও মনে না করে ক্যাপিটাল মার্কেট রিচ হয়ে গেলে মানি মার্কেটের আবার ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।’
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।
কমিশনের নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানের সঞ্চালনায় প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন কমিশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ছায়েদুর রহমান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ব্রোকার অ্যাসোসিয়েশসের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও এবং বাংলাদেশ অ্যাসেসিয়েশন অফ পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ এর সেক্রেটারি জেনারেল আমজাদ হোসেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংক, পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
মন্তব্য