করোনাভাইরাস মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় ওলটপালট হয়ে যায় বিশ্ব অর্থনীতি। এর পর থেকেই বিশ্বমন্দার আশঙ্কা করছে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। যার প্রভাব পড়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রেও।
তবে এই সংকটের মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে। দেশটিতে পোশাক রপ্তানিতে চীন ও ভিয়েতনামের চেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি করেছে বাংলাদেশ।
চলতি ২০২২ সালের প্রথম সাত মাসে (জানুয়ারি-জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে ৫৭১ কোটি ডলারের পোশাক কিনেছে। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেশি।
এই সাত মাসে বাংলাদেশের প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ চীন ও ভিয়েতনামের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে যথাক্রমে ৪০ শতাংশ ও ৩৫ দশমিক ৩০ শতাংশ।
জানুয়ারি-জুলাই সময়ে পুরো বিশ্ব থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি বেড়েছে ৩৯ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ কমার্সের অফিস অফ টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য এসেছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশটিতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৭৬ কোটি ডলারের, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ বেশি।
ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানি হয়েছে ৬৯ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৩ দশমিক ১৮ শতাংশ বেশি, মার্চে রপ্তানি হয়েছে ১০৩ কোটি ডলার, যা আগের বছরের চেয়ে ৯৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ৮২ কোটি ডলারের পোশাক, যা আগের বছরের চেয়ে ৭৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ বেশি, মে মাসে রপ্তানি হয়েছে ৮২ কোটি ডলার, যা আগের বছরের চেয়ে ৩৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি।
জুনে রপ্তানি হয়েছে ৯১ কোটি ডলার, যা আগের বছরের চেয়ে ৬৬ দশমিক ১৮ শতাংশ বেশি এবং জুলাইয়ে রপ্তানি হয়েছে ৬৯ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ২২ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ বেশি।
সব মিলিয়ে চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৫৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ তৃতীয় শীর্ষ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে বাংলাদেশ ৫৭১ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে দেশটিতে, দেশি মুদ্রায় যা (প্রতি ডলার ৯৫ টাকা ধরে) ৫৪ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা।
এ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীন পোশাক রপ্তানি করেছে ১ হাজার ২৭৯ কোটি বা ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রথম সাত মাসে চীন প্রথম অবস্থানে রয়েছে। আলোচিত এ সময়ে দেশটির পোশাক রপ্তানি বেড়েছে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪০ শতাংশ।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভিয়েতনাম একই সময়ে ১ হাজার ৯১ কোটি ডলার বা ১০ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার পোশাক রপ্তানি করে দ্বিতীয় শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। এ সময়ে দেশটির রপ্তানি আগের বছরের চেয়ে ৩৫ দশমিক ৩০ শতাংশ বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে অন্য দেশগুলোর মধ্যে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। আলোচিত এ সময়ে দেশটিতে রপ্তানি বেড়েছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ। দেশটি ৩৪১ কোটি বা ৩ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করেছে।
চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে পাশের দেশ ভারত রয়েছে শীর্ষ পাঁচে। এ সময়ে দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানি করেছে ৩৬৯ কোটি বা ৩ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের থেকে ৫৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেশি।
এ সময়ে শীর্ষ ছয়ে রয়েছে মেক্সিকো। দেশটি যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি করেছে ১৮৫ কোটি বা ১ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৭ দশমিক ৮০ শতাংশ বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শীর্ষ সাতে রয়েছে হন্ডুরাস। দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের বাজার দখল করেছে ১৭৭ কোটি বা ১ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ২২ দশমিক ২৩ শতাংশ বেশি।
চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে কম্বোডিয়া ২৫৮ কোটি বা ২ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করতে পেরেছে। আগের বছরের চেয়ে দেশটির রপ্তানি বেড়েছে ৫৫ দশমিক ৯০ শতাংশ।
নবম স্থানে রয়েছে পাকিস্তান। দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে পোশাক রপ্তানি করেছে ১৭০ কোটি বা ১ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলারের। আগের বছরের চেয়ে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৪৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
আলোচিত এ সময়ে শীর্ষ দশের ঘরে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানি করেছে ১২ কোটি বা শূন্য দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার। আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৭ শতাংশ বেশি।
পোশাকশিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মহামারি করোনা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো এবং ভোক্তাদের কেনাকাটা বৃদ্ধি পাওয়ায় খুচরা বিক্রি স্বাভাবিকের তুলনায় আরও বেড়েছে। তবে মূল্যস্ফীতি, ফেডের হার বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে মন্দার কারণে ২০২২ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা কতটা টিকে থাকবে, সেটি ভাবনার বিষয়।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মোট পোশাক রপ্তানি আগস্ট ২০২২ পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য হারে প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছিল, ফলে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইতিবাচক প্রবণতা বজায় রাখতে পারে।’
পরে অর্থনৈতিক অস্থিরতার কারণে খুচরা বিক্রিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কায় ক্রেতারা সতর্ক আছেন বলে জানান বিজিএমইএর পরিচালক।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ তথ্য বলছে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট দেশের রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৫ দশমিক ৩১ শতাংশ। দুই মাসে মোট রপ্তানি হয়েছে ৮৫৯ কোটি ১৮ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৪ দশমিক ৫২ শতাংশ বেশি।
এই দুই মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৭১১ কোটি ২৬ ডলারের, এই খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৬ শতাংশ। এ ছাড়া জুলাই-আগস্ট সময়ে ২৬ কোটি ৮৫ লাখ ডলারের হোম টেক্সটাইল রপ্তানি হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৫৩ শতাংশ বেশি।
ইপিবি বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যের বৃহত্তম বাজার। বরাবরের মতো বাংলাদেশের পণ্যের আমদানিকারক দেশগুলোর তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষে অবস্থান করছে।
গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা ৫২ দশমিক শূন্য ৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করেছেন, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ২৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেশি।
এর মধ্যে পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ৯ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার। এ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রে মোট রপ্তানির ৯০ শতাংশই এসেছে পোশাক থেকে।
আরও পড়ুন:ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৫ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে। রোববার রাজধানীর গুলশান-২ নগর ভবনের হলরুমে অনুষ্ঠিত বাজেট সভায় সর্বসম্মতভাবে এ বাজেট অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
সভায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটও অনুমোদন দেয়া হয়। সভা থেকে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১ হাজার ৭৮ কোটি টাকা রেকর্ড রাজস্ব আদায় হয়েছে ডিএনসিসির। গত চার বছরে রাজস্ব আদায় বেড়েছে ৭৬ শতাংশ।
সভার শুরুতে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম সূচনা বক্তব্য দেন। পরে ডিএনসিসির প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. বরকত হায়াত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন। এ সময় উপস্থাপিত সংশোধিত বাজেট এবং নতুন বাজেট সভায় সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন লাভ করে।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ছিল সিটি করপোরেশনকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে, সিটি কর্পোরেশনের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা ডিএনসিসির সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেছি।
‘নিজের পায়ে দাঁড়াতে হলে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির বিকল্প নেই। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছি।
‘২০২৪-২৫ অর্থবছরে ডিএনসিসির মোট বাজেটের ৫৩% ব্যয় নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেয়া হবে। মোট ব্যয়ের অর্ধেকের বেশি বহন করা হবে ডিএনসিসির নিজস্ব তহবিল থেকে।’
মেয়র বলেন, ‘কর হার বৃদ্ধি না করেও রাজস্ব আদায়ে নতুন মাইলফলক সৃষ্টি করেছে ডিএনসিসি। অনলাইনে হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহের ফলে রাজস্ব আদায় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। নগরবাসী ঘরে বসেই অনলাইনে ডিএনসিসির হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করতে পারছেন। ফলে নাগরিক ভোগান্তি কমেছে। অনলাইন পদ্ধতির ফলে দুর্নীতি ও অনিয়ম রোধ করা সম্ভব হয়েছে। নিশ্চিত হয়েছে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা।’
এদিকে জানা গেছে, বিগত ২০১৯-২০, ২০২০-২১, ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে ডিএনসিসির রাজস্ব আদায় হয়েছিল যথাক্রমে ৬১২ কোটি, ৬৯২ কোটি, ৭৯৪ কোটি ও ১০৫৮ কোটি টাকা।
অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উল্লেখযোগ্য খাত হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদ ৫১৭ কোটি ৮৫ লাখ, ট্রেড লাইসেন্স ফি বাবদ ৭৪ কোটি ৯৬ লাখ, সম্পত্তি হস্তান্তর কর বাবদ ২৮০ কোটি, সড়ক খনন ফি বাবদ ১০৪ কোটি ৭৯ লাখ, গরুর হাটের ইজারা বাবদ ৩২ কোটি ৭৭ লাখ, বিজ্ঞাপন ফি বাবদ ১০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ডিএনসিসি রাজস্ব আয় করেছে বলে জানা গেছে।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘সুস্থ, সচল, আধুনিক স্মার্ট ডিএনসিসি গড়তে বাজেটে তিনটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে; এক-জনস্বাস্থ্য রক্ষা, দুই-জলাবদ্ধতা নিরসন, তিন-জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করে পরিচ্ছন্ন শহর গড়তে ডিএনসিসির বাজেটে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
‘জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং খাল উদ্ধারপূর্বক খালের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা হবে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়নসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।’
ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিকের সঞ্চালনায় বাজেট সভায় অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান, ডিএনসিসির সব বিভাগীয় প্রধান ও ডিএনসিসির কাউন্সিলর এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:জাতীয় সংসদে পাস হওয়া নতুন অর্থবছরের (২০২৪-২৫) বাজেট স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে তিনি এই নির্দেশনা দেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনার কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘আজ (সোমবার) প্রধানমন্ত্রী সবাইকে একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। জাতীয় সংসদে গতকাল (রোববার) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট পাস হয়েছে। উনি (প্রধানমন্ত্রী) নির্দেশনা দিয়েছেন, সবাই যাতে যত্নের সঙ্গে নজরদারির মধ্য দিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন করেন।
‘জবাবদিহিতা, দ্রুততা, নিপুণতা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে যাতে বাজেট বাস্তবায়ন হয়- সে বিষয়ে সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’
মাহবুব হোসেন বলেন, ‘সরকার প্রধান মাননীয় মন্ত্রী ও সচিব সবাইকে বলেছেন, এদিকে সবাই যেন আমরা মনোযোগী হই। বাজেট সঠিকভাবে বাস্তবায়নে যাতে আমরা সবাই মনোনিবেশ করি।’
আরও পড়ুন:অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী আয়োজিত বাজেট-উত্তর নৈশভোজে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছলে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান অর্থমন্ত্রী। সূত্র: ইউএনবি
শেখ হাসিনা পরে অর্থমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন টেবিল ঘুরে অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন- সংসদ উপনেতা, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ ও সংসদ সদস্যবৃন্দ।
এছাড়াও নৈশভোজে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ও সচিব এবং ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সৌদি কোম্পানিগুলোকে অফশোর ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে ডিপোজিট করতে আকৃষ্ট করার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে সৌদি আরবের সঙ্গে আর্থিক খাতে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করবে বাংলাদেশ।
রোববার বিকেলে জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট সর্বসম্মতিক্রমে পাস হওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
রিয়াদে সোমবার সৌদি আরবের সঙ্গে দ্বিতীয় রাজনৈতিক পরামর্শ সভায় অংশ নেয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ওই সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং সৌদি আরবের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সৌদিরা যদি আর্থিক খাতে বিনিয়োগ করতে চায় তাহলে আলোচনা করা হবে। তারা আমেরিকা ও ইউরোপে টাকা জমা রাখে। বাংলাদেশও টাকা জমা রাখার একটি সুযোগ করে দিয়েছে। যেকোনো বিদেশি কোম্পানি ও ব্যক্তি বাংলাদেশের অফশোর অ্যাকাউন্টে তাদের অর্থ রাখতে পারবেন। অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে এটিও আলোচনা হবে।’
হাসান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা একটি নতুন সুযোগ তৈরি করে দিয়েছি। এটিকে জনপ্রিয় করতে চাই আমরা। এমন দেশ রয়েছে যেখানে বিদেশি সংস্থা ও ব্যক্তিরা এ জাতীয় ডিপোজিট তৈরি করে।’
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বাড়াতে এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে চলতি বছরের মার্চ মাসে সংসদে অফশোর ব্যাংকিং আইন, ২০২৪ পাস করা হয়।
বাংলাদেশি ও বিদেশি নাগরিকদের ক্ষেত্রে এই সেবার নিয়ম-নীতি শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
অফশোর ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোতে বৈদেশিক মুদ্রায় ডিপোজিট করার এই সুযোগ দেশে বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সহজতর করা এবং ডলারের একটি প্রধান উৎস তৈরি করছে।
‘বাজেটে বিদেশনির্ভরতা অনেক কমিয়ে আনা হয়েছে’
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নয়ন বাজেটে বিদেশনির্ভরতা অনেক কমিয়ে আনা হয়েছে। এখন আমাদের দেশের উপযোগী বা পছন্দমতো না হলে অনেক বিদেশি ঋণপ্রস্তাব আমরা ফিরিয়ে দেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির আমলে বাজেটের আগে অর্থমন্ত্রীকে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে প্যারিস কনসোর্টিয়ামে যেতে হতো। তাদের সময় বিশেষ করে উন্নয়ন বাজেটে বিদেশনির্ভরতা ছিল ৫০ শতাংশের বেশি।
‘আজকে এটি ১৫-২০ শতাংশে নেমে এসেছে। আমরা বিশ্বব্যাংক থেকে শুরু করে অনেকের ঋণপ্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছি, ফিরিয়ে দেই।
‘সামগ্রিক ও বৈশ্বিক অর্থনীতির স্বার্থে কিছু বৈদেশিক ঋণ নিতে হয়। যেমন আমরা বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের পার্টনার। সেখানে আমাদের জন্য বরাদ্দ থাকে। সেটি না নিলে ল্যাপস হয়ে যায়। এজন্য ক্ষেত্রবিশেষে নিতেও হয়।’
বাজেটের সমালোচনাকে গতানুগতিক আখ্যা দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবারই বাজেট প্রস্তাব ও পাসের পর একটি মহল বলে যে বাজেট উচ্চাভিলাষী, বাস্তবায়নযোগ্য নয়। অথচ গত ১৫ বছরে আমাদের প্রণীত বাজেট বাস্তবায়নের হার ৯২ থেকে ৯৬ শতাংশ।
‘দেশ এগিয়ে গেছে। মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। দারিদ্র্য ৪১ থেকে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশে এবং অতি দারিদ্র্য ২৫ দশমিক ৫ থেকে মাত্র ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। গড় জিডিপি ভারতকে ছাড়িয়ে গেছে এবং অনেক আগেই পাকিস্তানকে ছাড়িয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, আমাদের উন্নয়ন-অগ্রগতি আজ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছি। কেউ বাঁচতে পারবে না। দুর্নীতির সঙ্গে যিনিই জড়িত থাকুক না কেন, আমরা ছাড় দেব না।’
শনিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সূত্র: ইউএনবি
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে যেসব অর্থ প্রকাশ করা হয়নি সেই অর্থ মূলধারায় আনার লক্ষ্যে বাজেটে সেই অর্থকে বৈধ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সেই অর্থগুলোকে অর্থনীতির মূলধারায় আনতে হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা সাধারণ ক্ষমার প্রস্তাব দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘অতীতে এ ধরনের সুযোগ প্রায়ই দেয়া হতো। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া, সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান ও গণফোরাম নেতা ড. কামাল হোসেনও অতীতে এই সুযোগ নিয়েছেন।
সংসদ নেতা বলেন, ‘সুষ্ঠু নীতি এবং গণমানুষের শক্তির ভিত্তিতে সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।
‘এই বাজেট বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা সবাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব এবং এর মাধ্যমে দেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাজেটকে কেউ উচ্চাভিলাষী বলেছেন, কেউ বলেছেন ঘাটতি বাজেট। কিছুক্ষণ আগে বিরোধী দলের নেতাও বলেছেন যে এই বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
‘আমি এই বাজেটকে উচ্চাভিলাষী মনে করি না। চ্যালেঞ্জ নেয়াই আমাদের কাজ। আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই এবং সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা যে লক্ষ্য নির্ধারণ করি তা কখনোই শতভাগ পূরণ হয় না। সেটা করা সম্ভব নয়। তারপরও আমাদের একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য আছে, আমরা সেখানে পৌঁছাতে যাচ্ছি। আমরা সেটা করতে সক্ষম হয়েছি। দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ সরকার দলের নির্বাচনি ইশতেহার ভুলে যায়নি মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের আগে ইশতেহার তৈরি করি। কিন্তু এই ইশতেহারের কথা আমরা ভুলে যাই না। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে জাতির কাছে দেয়া ওয়াদা আমরা পূরণ করি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এই বাজেট প্রণয়ন করেছি এবং উন্নয়ন বাজেট দিয়েছি। এখানে কমানোর কিছু নেই।
‘এই বাজেটের মাধ্যমে ২০৪১ সাল পর্যন্ত ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।’
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সরকার একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করে বাজেট দেয়। সে বিষয়টি মাথায় রেখেই ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট দিয়েছি, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এযাবৎকালের সর্ববৃহৎ। কাজেই এই বাজেটকে মোটেই উচ্চাভিলাষী মনে করি না।’
শনিবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ সময় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটকে আমি মোটেই উচ্চাভিলাষী মনে করি না। একটা লক্ষ্য আমরা স্থির করি। শতভাগ কখনও পূরণ হয় না। তারপরও আমাদের সুনির্দিষ্ট একটা লক্ষ্য থাকে যে এখানে আমরা যাব। সেটা আমরা যেতে পেরেছি।
‘কোথায় ৬২ হাজার কোটি টাকার বাজেট, আর কোথায় সাত লাখ কোটি টাকার বাজেট! এটাও তো সন্তুষ্টির জায়গা হওয়া উচিত যে আমরা এই জায়গায় আসতে পেরেছি। চ্যালেঞ্জ নিয়েছি বলেই (বড় বাজেট বাস্তবায়ন) সম্ভব হয়েছে।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘আমাদের ইচ্ছেটা কী? দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন। সেজন্যই তো উন্নয়নটা হয়। উন্নয়নের ধারা যেন অব্যাহত থাকে সে লক্ষ্যেই আমরা এই বাজেট প্রণয়ন করেছি এবং উন্নয়ন বাজেট দিয়েছি। এখানে কমানোর কিছু নেই।’
তিনি বলেন, ‘এই বাজেটের মধ্যে আগামী দিনে আমরা যে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছি ২০২১ থেকে ২০৪১ সাল, সেটি বাস্তবায়নে সক্ষম হব। সেই ধারাবাহিকতা আমাদের আছে।
‘আমরা একটা রাজনৈতিক দল করি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আমাদের নিজেদের ঘোষণাপত্র আছে, আমরা নির্বাচনের আগে ইশতেহার ঘোষণা করি। এই ইশতেহার আমরা কখনো ভুলে যাই না।
‘জাতির কাছে যে ওয়াদা দিয়ে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমরা ক্ষমতায় এসেছি, তা পালন করি। আমাদের নির্বাচনি ইশতেহারতে অগ্রাধিকার এবং মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের যে দিকনির্দেশনা তা বাজেটে উঠে এসেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। বাজেটের ওপর এ পর্যন্ত বিরোধীদলীয় নেতাসহ ২৩৪ জন সংসদ সদস্য বক্তব্য দিয়েছেন। তারা বাজেটের ওপর আলোকপাত করেছেন এবং পরামর্শ দিয়েছেন। এর বাইরে অনেকেই বাজেট নিয়ে আলোচনা করেছেন। বাজেট নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা যে যাই করুন তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ কেউ বাজেটকে উচ্চাভিলাষী বলেছেন, কেউ বলেছেন ঘাটতি বাজেট। কিছুক্ষণ আগে বিরোধীদলীয় নেতা বললেন এই বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, আমাদের প্রবৃদ্ধির হার কমাতে হবে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি কমাতে হবে ইত্যাদি। এই চ্যালেঞ্জ নেয়ার মতো সক্ষমতা আছে কি না। চ্যালেঞ্জ নেয়াটাই তো আমাদের কাজ। চ্যালেঞ্জ নিয়েই তো আমরা চলতে চাই, চ্যালেঞ্জ নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
আরও পড়ুন:জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ২০১ কোটি টাকার মূল রাজস্ব বাজেট অনুমোদন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার জবি উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিমের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৬তম সিন্ডিকেট সভায় এই বাজেট পাস হয়।
সিন্ডিকেট সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে বাজেট আলোচনা শুরু করেন।
অর্থ কমিটির ৮০তম সভায় সুপারিশকৃত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধনী বাজেট ও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটটি উপস্থাপন করেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটটি বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম প্রশাসনের প্রথম বাজেট।
সিন্ডিকেট সভায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যায়ের জন্য ২০১ কোটি টাকার মূল রাজস্ব (পরিচালন ও উন্নয়ন) বাজেট পাস হয়। এর মধ্যে ১৬৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা ইউজিসির অনুদান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব খাত থেকে আসবে ৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা। ফলে ঘাটতি থাকবে ৩৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
বাজেটে গবেষণায় মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। এর মধ্যে পিএইচডি গবেষণার জন্য এই প্রথমবারের মতো দুই কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশোধিত বাজেটে ইউজিসি থেকে চার কোটি টাকা পারিতোষিক বাবদ বরাদ্দ পায়। এছাড়াও বাজেটে সেবা সহায়তা বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
মেধাবৃত্তির জন্য ১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা আগে ছিল ৬৫ লাখ টাকা। পরিবহনে তিন কোটি ৮০ লাখ, লাইব্রেরির জন্য ২৭ লাখ (আগে ছিল সাত লাখ) এবং চিকিৎসার জন্য ২৫ লাখ (আগে ছিল ১০ লাখ) টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
শিক্ষা সফর, অনুদান, অনুষ্ঠানাদিতেও বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সেবা সহায়তায় বরাদ্দ ছিল মোট বাজেটের ৩ দশমিক ০৮ শতাংশ (৫ কোটি এক লাখ ৭০ হাজার টাকা)। সেখানে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৭ কোটি ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, যা মোট বাজেটের বরাদ্দের ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য