বিপুল সংখ্যক কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে গড়াগড়ি খাওয়ার মধ্যে আরও দরপতন হলো পুঁজিবাজারে। প্রতি দিনই নতুন নতুন কোম্পানি নামছে ফ্লোরে।
পুঁজিবাজার নিয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রধান দাবিগুলো পূরণ এবং অর্থনীতি নিয়ে আতঙ্ক কমে আসার মধ্যে পুঁজিবাজারের এই চিত্র ক্রমেই হতাশ করছে বিনিয়োগকারীদের।
রোববার ৪৮, পরের দিন ৪ পয়েন্টের পর মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাধারণ সূচক কমল আরও ২১ পয়েন্ট। লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কিছুটা বাড়লেও ৬০টি কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১৩৬টির দর। আর আগের দিনের দরে হাতবদল হয়েছে ১৭৪টির দর, যেগুলোর প্রায় সবগুলো ফ্লোর প্রাইসে রয়েছে। ফ্লোরের আশেপাশে আছে আরও বিপুল সংখ্যক কোম্পানির শেয়ার।
গত ৩১ জুলাই থেকে পুঁজিবাজারের সূচক ও লেনদেন ঘুরে দাঁড়ানোর পর এই প্রথমবারের মতো টানা তিন কর্মদিবস বাড়ল সূচক।
এই প্রায় দুই মাস সূচক বাড়তে থাকলেও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের উচ্ছ্বাস কিন্তু ফেরেনি। এর কারণ, সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারগুলো দর হারাতে হারাতে ফ্লোরের দিকে ছুটতে থাকলেও সূচক বেড়েছে অল্প কয়েকটি কোম্পানির দর অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকার কারণে। লেনদেনেও সিংহভাগও হয় অল্প কয়েকটি কোম্পানিতে।
আজ হাতবদল হওয়া ৩৭০টি কোম্পানিতে সম্মিলিতভাবে যে লেনদেন হয়েছে তার ২৬ শতাংশ হয়েছে কেবল পাঁচটি কোম্পানিতে। আর শীর্ষে থাকা দুটি কোম্পানিতেই হাতবদল হয়েছে মোট লেনদেনের ১৫ শতাংশের বেশি।
এদিন দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় গত এক মাস ধরে তুমুল আলোচিত ওরিয়ন ও বেক্সিমকো গ্রুপের কোনো কোম্পানিকে দেখা যায়নি। বিপুল সংখ্যক কোম্পানির দর হারানোর মধ্যেও চারটি কোম্পানির দর বেড়েছে ৯ শতাংশের বেশি, একটির দর ৮ শতাংশের বেশি, দুটির ৭ শতাংশের বেশি।
এদিন সকালের শুরুতে চিত্রটি ছিল বেশ আশা জাগানিয়া। সকাল সাড়ে দশটার দিকেও সূচকের অবস্থান আগের দিনের চেয়ে ২৯ পয়েন্ট বেশি ছিল। সে সময় বেশিরভাগ কোম্পানির দর বাড়ছিল। এরপর থেকে ধীরে ধীরে দরপতনের পাল্লা ভারি হতে থাকে, কমতে থাকে সূচক।
দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে সূচকের সর্বোচ্চ পতন দেখা যায়। দিনের সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে ৫২ পয়েন্ট কমে লেনদেন হচ্ছিল তখন। তবে সেখান থেকে কিছুটা উদ্ধার হয় সূচক। বেলা মেষে ডিএসইএক্সের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৪৮৯ পয়েন্টে। সাত কর্মদিবস পর সূচকের অবস্থান সাড়ে ছয় হাজারের নিচে নামল।
বাজার নিয়ে শঙ্কার কথা জানালেন মিয়া আব্দুর রশিদ সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা শেখ ওহিদুজ্জামান স্বাধীন।
তিনি বলেন, ‘দুই তিন পতনের পর আজকে আরও বেশি পড়ল। যদি এখান থেকে আগামীকাল ঘুরে না দাঁড়ায় তাহলে আরও বড় কারেকশনের আশঙ্কা রয়েছে। আগেও এমনটা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘মার্কেট মেকাররা যেভাবে চাচ্ছেন বাজার পরিচালনা করছেন বা বিভিন্ন টুলস অ্যাপ্লাই করে দেখছেন। সম্প্রতি অনেক প্রতিষ্ঠান মার্কেট মেকার লাইসেন্সের জন্য আবদেন করছে। তারা নিজেদের মতো করে মার্কেট মেকিংয়ের চেষ্টা করছে বা নিজেদের সক্ষমতা যাচাই করছে বলে আমার ধারণা।’
সূচক কমাল যারা
সবচেয়ে বেশি ৪ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট সূচক কমেছে বিকন ফার্মার দরপতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট কমেছে বেক্সিমকো লিমিটেডের কারণে। শেয়ার প্রতি দাম কমেছে ২ দশমিক ১১ শতাংশ।
ইউনাইটেড পাওয়ারের দর ১ দশমিক ৩১ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ৩ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট।
এ ছাড়া লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ, বেক্সিমকো ফার্মা, আইসিবি, শাহজিবাজার পাওয়ার, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, বার্জার পেইন্টস ও পাওয়ার গ্রিডের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ২৩ দশমিক ১৭ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ১ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে ওরিয়ন ফার্মা। এদিন শেয়ারটির দর বেড়েছে ২ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ৫২ পয়েন্ট।
সি পার্ল সূচকে যোগ করেছে ১ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
এর বাইরে সাইফ পাওয়ার, মীর আকতার হোসেন লিমিটেড, ইনডেক্স অ্যাগ্রো, সোনালী পেপার, কেয়া কসমেটিকস, আইপিডিসি ও এডিএন টেলিকম সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ১২ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট।
শীর্ষ ৫ খাত যেমন
প্রযুক্তি খাতে ৮টি বা ৭২.৭৩ শতাংশ, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ৩টি বা শতভাগ, কাগজ ও মুদ্রণ খাতে ৩টি বা ৫০ শতাংশ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। আর কোনো খাতে দরবৃদ্ধি দেখা যায়নি।
লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে বিবিধ খাত। ২৩২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বা ১৭.০৩ শতাংশ লেনদেনের বিপরীতে খাতটির ৯টি কোম্পানির দরপতন হয়েছে। ৪টির লেনদেন হয়েছে আগের দরে। মাত্র একটির দর বেড়েছে।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতে লেনদেন হয়েছে ২২৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা বা ১৬.৩৮ শতাংশ। এদিন ৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১৩টির দরপতন ও ৯টির দর অপরিবর্তিত ছিল।
আরও তিন খাতে ১০০ কোটির বেশি লেনদেন হলেও তা মোট লেনদেনের ১০ শতাংশের নিচে ছিল।
তৃতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে সেবা ও আবাসন খাতে। ১৩৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা লেনদেনের বিপরীতে ২টি করে কোম্পানির দরবৃদ্ধি ও দরপতন হয়েছে।
এর পরে রয়েছে দিনের সর্বোচ্চ দরবৃদ্ধি পাওয়া প্রযুক্তি খাত। লেনদেন হয়েছে ১৩০ কোটি ২৫ লাখ টাকা। ৮টির দরবৃদ্ধি ও ৩টির দরপতন হয়েছে।
পঞ্চম অবস্থানে থাকা প্রকৌশল খাতে ১২২ কোটি ৪০ লাখ টাকা লেনদেন হয়। খাতের ৭টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ২৪টির দর ও অপরিবর্তিত ছিল ১১টির।
আর কোনো খাতের লেনদেন একশ কোটি স্পর্শ করেনি।
জ্বালানি, বস্ত্র, ভ্রমণ খাতেন লেনদেন হয়েছে পঞ্চাশ থেকে ৯০ কোটির মধ্যে।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
শীর্ষ দশের প্রায় সবগুলো কোম্পানির দর বেড়েছে দিনের সর্বোচ্চ সীমা ও এর আশেপাশে।
দরবৃদ্ধির শীর্ষে অবস্থান করছে এডিএন টেলিকম। ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ দর বেড়ে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮১ টাকা ২০ পয়সায়। আগের দিনে ক্লোজিং প্রাইস ছিল ৭৪ টাকা ৫০ পয়সা।
৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ দর বেড়ে ইনডেক্স অ্যাগ্রোর শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৪১ টাকা ২০ পয়সায়, আগের দিনের সর্বশেষ দর ছিল ১২৮ টাকা ৯০ পয়সা।
৯ দশমিক ২৭ শতাংশ দর বেড়ে ১৪০ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে তৃতীয় স্থানে থাকা আজিজ পাইপসের শেয়ার। আগের দিন দর ছিল ১২৮ টাকা ৩০ পয়সা।
এই তালিকায় আরও ছিল মীর আকতার হোসেন লিমিটেড, ইস্টার্ন হাউজিং, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, কেয়া কসমেটিকস, লাভেলো আইসক্রিম, ন্যাশনাল হাউজিং ও সাইফ পাওয়ার।
দর পতনের শীর্ষ ১০
এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে দেখা গেছে লোকসানি জুট স্পিনার্সকে। রোববার ৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ২০৪ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়।
পতনের তালিকায় পরের স্থানে রয়েছে প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স। ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ দর কমে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬৬ টাকা ৯০ পয়সায়।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দর হারিয়েছে মুন্নু অ্যাগ্রো। ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ কমে শেয়ারটি সর্বশেষ ৫৫৫ টাকা ৫০ পয়সায় হাতবদল হয়।
দর কমার শীর্ষ দশে থাকা অন্য কোম্পানিগুলো ছিল- সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স, শাহজিবাজার পাওয়ার, এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্স, জেমিনি সি ফুড, সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ, মালেক স্পিনিং ও বিকন ফার্মা।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
মন্তব্য