ওরিয়ন গ্রুপের তিন কোম্পানির অবিশ্বাস্য উত্থানপর্ব শেষে এখন উল্টো চিত্র। এই গ্রুপের চারটি কোম্পানির মধ্যে একটির দর কমেছে এক দিনে যতটা কমা সম্ভব, প্রায় ততটাই। অন্য তিনটির দরও পতনের সর্বনিম্ন সীমার কাছাকাছি গিয়ে ফিরে এসেছে।
রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে সূচক টেনে নামাতে সবচেয়ে বেশি প্রভাবক ছিল ওরিয়ন ও বেক্সিমকো কোম্পানির চার কোম্পানি।
ওরিয়ন গ্রুপের মতো অতটা না হলেও বেক্সিমকোর এই দুটি কোম্পানির দর গত এক মাসে বেড়েছিল অনেকখানিই। তবে এগুলো এই সময়ে আসলে হারিয়ে ফেলা দরের কিছুটা ফেরত পেয়েছিল মাত্র।
এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৮.৮৩ পয়েন্ট। এর মধ্যে দুই গ্রুপের ওরিয়ন ফার্মা, বিকন ফার্মা, বেক্সিমকো লিমিটেড ও বেক্সিমকো ফার্মা- এই চার কোম্পানির কারণেই কমেছে ৩৮.০৮ পয়েন্ট।
বড় দরপতন, অথচ দর বৃদ্ধি আর পতন হওয়া কোম্পানির মধ্যে সংখ্যাগত পার্থক্য খুব বেশি ছিল না। আর সংখ্যায় সবাইকে ছাড়িয়ে আবারও ফ্লোর প্রাইসে থাকা কোম্পানি। দর বেড়েছে ৯৩টি কোম্পানির, কমেছে ১১৭টির আর আগের দিনের দরে লেনদেন হয়েছে ১৬০টি, যেগুলোর সিংহভাগই হাতবদল হয় ফ্লোর প্রাইসে।
অথচ গত সপ্তাহে দর বৃদ্ধি পাওয়ার তুলনায় পতন হওয়া কোম্পানির সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হওয়ার পরও সূচকের উত্থান দেখা গেছে।
ওরিয়ন ও বেক্সিমকো গ্রুপের পাঁচটি কোম্পানির পাশাপাশি গত ৩১ জুলাই থেকে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই অনেকখানি বেড়েছিল, এমন বেশ কিছু কোম্পানিরও বড় দরপতন হয়েছে।
দরপতনের মধ্যেও বেড়েছে লেনদেন। হাতবদল হয়েছে ১ হাজার ৮১০ কোটি ৫২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা, যা বৃহস্পতিবার ছিল ১ হাজার ৬৬৬ কোটি ১৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
ওরিয়ন ও বেক্সিমকো গ্রুপের শেয়ারে দরপতন নিয়ে ট্রেজার সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ট্রেন্ডি আইটেমগুলোর মধ্যে কয়েকটির বায়ারলেস হতে দেখা গেছে। যার মধ্যে দুটির বায়ার ফিরে আসলেও একটির নেই (ওরিয়ন ফার্মা)। ফলে সেটার ইম্প্যাক্ট সূচকে পড়েছে। যেটার কারণে সাইকোলজিক্যাল অ্যাটিটিউড চেঞ্জ হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে মার্কেটে যে কোনো র্যালি আসার পর এক সময় তা থামবেই। আগেও বলেছি যে, যেসব আইটেমে র্যালি হচ্ছে সেগুলো বায়ারলেস হলে একটু চিন্তা করে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
ওরিয়নের চার কোম্পানির কী অবস্থা
পুঁজিবাজারের টাকা দরপতনের মধ্যে ঘুরে দাঁড়ানো এই ৩১ জুলাই। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৭ কর্মদিবসে সূচক বেড়েছে ৬০০ পয়েন্টেরও বেশি, কিন্তু তা অল্প কয়েকটি কোম্পানির দর অস্বাভাবিক হারে বাড়ার কারণেই। সিংহভাগ কোম্পানি সেই ফ্লোর প্রাইসেই গড়াগড়ি খাচ্ছে।
এই সময়ের মধ্যে বিস্ময় তৈরি করে ওরিয়ন ইনফিউশনের উত্থান। গত ২৮ জুলাই কোম্পানিটির দর ছিল ১০৪ টাকা ৭০ পয়সা। ৩৬ কর্মদিবস শেষে ২১ সেপ্টেম্বর দর দাঁড়ায় ৬২৬ টাকা ৫০ পয়সা। পরের দিন দর দাঁড়ায় ৫৭৫ টাকা ৬০ পয়সা।
কোম্পানিটি রোববার একপর্যায়ে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ৫৩২ টাকা ৫০ পয়সার কাছাকাছি চলে এসেছিল। তবে ৫৩৪ টাকা পর্যন্ত নামার পর আবার ঘুরে দাঁড়ায়। দিনের একেবারে শেষ দিকে হঠাৎ বেড়ে দাম দাঁড়ায় ৫৬৫ টাকা ৭০ পয়সা। কমেছে ৯ টাকা ৯০ পয়সা বা ১.৭২ শতাংশ।
এদিন দরপতনের সর্বোচ্চ সীমায় ছিল ওরিয়ন ফার্মা।
কোম্পানিটির দর গত ২৮ জুলাই ছিল ৭৮ টাকা ৭০ পয়সা। ৩৭ কর্মদিবস পর ২২ সেপ্টেম্বর দাঁড়ায় ১৪৯ টাকা ৬০ পয়সা, সেদিন সর্বোচ্চ দর ছিল ১৫৬ টাকা ৫০ পয়সা।
এটির পতনের সর্বোচ্চ সীমা ছিল ৯.৯৬ শতাংশ। নামতে পারত ১৩৪ টাকা ৭০ পয়সা পর্যন্ত। এই দরেই হাতবদল হয়েছে বিপুলসংখ্যক শেয়ার। পরের দিন শেষ করে ১৩৫ টাকা ১০ পয়সায়।
এই দরপতনের কারণে ডিএসইএক্স থেকে হারিয়ে গেছে ৮.০২ পয়েন্ট।
এদিন সূচক সবচেয়ে বেশি কমিয়েছে একই গ্রুপের আরেক কোম্পানি বিকন ফার্মা। কোম্পানিটির ৬.২৩ শতাংশ দরপতনে সূচক কমেছে ১১.৪২ পয়েন্ট।
গত ২৮ জুলাই কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ২৪০ টাকা ৬০ পয়সা। ২০ সেপ্টেম্বর উঠে যায় ৩৯৩ টাকায়। সেদিনই অবশ্য দিন শেষ করে ৩৬১ টাকায়। গত বৃহস্পতিবার দর দাঁড়ায় ৩৩৫ টাকা ৬০ পয়সায়।
এদিন দর নামতে পারত ৩০৬ টাকা ৩০ পয়সা পর্যন্ত। নেমেছিল ৩১০ টাকা পর্যন্ত। তবে দিন শেষ করে ৩১৪ টাকা ৭০ পয়সায়। পতন হয় ৬.২৩ শতাংশ।
অস্বাভাবিক হারে লাফাতে থাকা কোহিনূর কেমিক্যালসের দরপতন হয়েছে ৭.০৫ শতাংশ, যে কারণে সূচক কমেছে ২.৭৫ পয়েন্ট।
গত ২৮ জুলাই কোম্পানিটির দর ছিল ৩৭৯ টাকা ৯০ পয়সা। ২১ সেপ্টেম্বর দর উঠে ৭৫৭ টাকা ৪০ পয়সা পর্যন্ত। তবে দিন শেষ করে দর হারিয়ে। গত বৃহস্পতিবার দর ছিল ৬৪৫ টাকা ৪০ পয়সা। ৪৫ টাকা ৫০ পয়সা কমে এখন দাঁড়িয়েছে ৫৯৯ টাকা ৯০ পয়সা।
বেক্সিমকো গ্রুপের কত পতন
এদিন সূচকের পতনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রভাবক ছিল বেক্সিমকো ফার্মা। ১০.০২ পয়েন্ট সূচক কমেছে কোম্পানিটির শেয়ারের ৫.২৫ শতাংশ দরপতনে।
কোম্পানিটির শেয়ারদর গত ২৮ জুলাই ছিল ১৪৬ টাকা। গত ১১ সেপ্টেম্বর উঠে ১৯১ টাকা ৩০ পয়সা। গত বৃহস্পতিবার সেখান থেকে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ১৮০ টাকা ৮০ পয়সা।
রোববার দর দাঁড়ায় ১৭১ টাকা ৩০ পয়সায়। কমেছে ৯ টাকা ৫০ পয়সা।
বেক্সিমকো লিমিটেডের গত ২৮ জুলাই ছিল ১১৪ টাকা ২০ পয়সা। সম্প্রতি দর ১৪৬ টাকা ছাড়িয়ে গেলেও গত বৃহস্পতিবার স্থির হয় ১৩৪ টাকা ৫০ পয়সায়। ২ টাকা ৮০ পয়সা কমে দর দাঁড়িয়েছে ১৩১ টাকা ৭০ পয়সায়।
এই কোম্পানিটির কারণে সূচক কমেছে ৫.৮ পয়েন্ট।
অবশ্য এই দুটি কোম্পানির দর গত বছরের নভেম্বর থেকে অনেকটাই কমে গিয়েছিল। এর মধ্যে বেক্সিমকো লিমিটের ১৯০ টাকার ঘর থেকে নেমে আসে ১১০ টাকার ঘরে, আর বেক্সিমকো ফার্মার দর ২৫৫ টাকা থেকে নেমে আসে দেড় শ টাকার নিচে।
গ্রুপের আরও দুই কোম্পানি শাইনপুকুর সিরামিকস ও আইএফআইসি ব্যাংকের দর খুব একটা পাল্টায়নি এদিন।
সূচকে আরও প্রভাব যেসব কোম্পানির
ওরিয়ন ও বেক্সিমকোর চার কোম্পানির বাইরে ইউনাইটেড পাওয়ারের ২.১ শতাংশ দরপতনে সূচক কমেছে ৭.৬৮ পয়েন্ট।
এই কোম্পানিটির দর গত ২৮ জুলাই থেকে খুব একটা বেড়েছে এমন নয়।
রাষ্ট্রায়ত্ত শিপিং করপোরেশনের শেয়ারদর ৬.৪৫ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ৩.৯৩ পয়েন্ট।
গত ২৮ জুলাই কোম্পানিটির শেয়ারদর দাঁড়ায় ১০৫ টাকা ৭০ পয়সায়। ২২ সেপ্টেম্বর দর দাঁড়ায় ১৬৮ টাকা ৯০ পয়সা। সেটি কমে দাঁড়িয়েছে ১৫৮ টাকা।
শাহজিবাজার পাওয়ারের দর ৭.৬৪ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ৩.২৭ পয়েন্ট।
জুলাইয়ের শেষ দিন থেকে জ্বালানি খাতের এই একটি কোম্পানির দরই অনেকখানি বেড়েছে। ২৯ জুলাই দর ছিল ৬৬ টাকা ১০ পয়সা। ২২ জুলাই ছিল ১০০ টাকা ৮০ পয়সা।
সেটি কমে দাঁড়িয়েছে ৯৩ টাকা ১০ পয়সায়।
জেএমআই হসপিটালের দর কমেছে ৮.২১ শতাংশ, যার কারণে সূচক কমেছে ৩.২ পয়েন্ট।
কোম্পানিটির শেয়ারদর গত ২৮ জুলাই ছিল ৬৮ টাকা ৪০ পয়সা। গত সপ্তাহে দাম বেড়ে হয়েছে ১৩৮ টাকা ৯০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দর দাঁড়ায় ১৩১ টাকা ৫০ পয়সা। ১০ টাকা ৮০ পয়সা হারিয়ে এখন দর ১২০ টাকা ৭০ পয়সা।
সূচক পতনে ভূমিকা রাখা দশম কোম্পানি বসুন্ধরা পেপার মিলসের দর কমেছে ৭.১২ শতাংশ, যে কারণে সূচক কমেছে ২.৬৩ পয়েন্ট।
গত ২৮ জুলাই কোম্পানিটির দর ছিল ৪৮ টাকা ৮০ পয়সা। গত বৃহস্পতিবার দাঁড়ায় ৮৯ টাকা ৯০ পয়সায়, যদিও দর উঠে ৯৩ টাকা পর্যন্ত।
একদিনে ৬ টাকা ৪০ পয়সা কমে দর দাঁড়িয়েছে ৮৩ টাকা ৫০ পয়সা।
লেনদেনে সেরা ওরিয়ন-বেক্সিমকো
দরপতন হলেও লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করছে ওরিয়ন ফার্মা ও বেক্সিমকো লিমিটেড।
ওরিয়ন ফার্মার এক কোটি ২৭ লাখ ১১ হাজার ৩২০টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে ১৭৯ কোটি ১৮ লাখ ৬৫ হাজার টাকায়।
বেক্সিমকো লিমিটেডের লেনদেন হয়েছে ১১৪ কোটি ৫৯ লাখ ১ হাজার টাকা। হাতবদল হয়েছে এক কোটি ১৪ লাখ ৫৯ হাজার ১০টি শেয়ার।
আর কোনো কোম্পানির লেনদেন এক শ কোটি টাকা ছুঁতে পারেনি।
তৃতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের। এক কোটি ২০ লাখ ৬৩ হাজার ৫০২টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৭ কোটি ৬৫ লাখ ২১ হাজার টাকায়।
চুতুর্থ স্থানে আছে দর হারানো বিডিকম, যার লেনদেন হয়েছে ৮৪ কোটি ৪৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকার। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের লেনদেন হয়েছে ৬২ কোটি ৭ লাখ ৮ হাজার টাকার শেয়ার।
জেএমআই হসপিটালের ৫৮ কোটি ও ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ৫৭ কোটির ওপরে লেনদেন হয়েছে।
শাহজিবাজার পাওয়ার, বিবিএস ও ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিংয়ের লেনদেন হয়েছে ৩০ থেকে ৫০ কোটির মধ্যেই।
কোন খাত কেমন
ব্যাপক দরপতনের কারণে বেশিরভাগ খাতেই দরপতন হয়েছে, বিপরীতে দরবৃদ্ধি দেখা গেছে দুই-একটিতে।
কোম্পানির সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি দরবৃদ্ধি হয়েছে প্রকৌশল খাতে। ২৬টি বা ৬১.৯০ শতাংশ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে।
শতভাগ দরবৃদ্ধির বেশি হয়েছে ছোট খাত ভ্রমণ ও অবকাশ এবং পাটে।
২৩টি কোম্পানির দর বেড়েছে বস্ত্র খাতের। বিপরীতে ৩১টির দর অপরিবর্তিত থেকে লেনদেন হয়েছে, কমেছে ৪টির দর।
এ ছাড়াও সেবা ও আবাসন খাতে ৭৫ শতাংশ, কাগজ ও মুদ্রণ খাতে ৬৬ শতাংশ, সিরামিকস ৬০ শতাংশ, জীবন বিমা খাতে ২৫ শতাংশ, জ্বালানি ও খাদ্য খাতে ২১ শতাংশ করে কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে।
তালিকাভুক্ত ৩৭টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩০টির লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে একটির দরবৃদ্ধি ও সবগুলোর দরই ফ্লোর প্রাইসেই অপরিবর্তিত হয়েছে।
আগের দিনের চেয়ে লেনদেন আরও কমলেও শীর্ষে রয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। হাতবদল হয়েছে ৩২০ কোটি ৮০ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ১৮ দশমিক ২৩ শতাংশ।
১৯টি কোম্পানির দরপতন হয়েছে। আগের দরেই লেনদেন হয়েছে ৯টির, দরবৃদ্ধি হয়েছে ২টির।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বিবিধ খাতের লেনদেন হয়েছে ২৬৬ কোটি ৯৬ লাখ। ৩টি কোম্পানির দরবৃ্দ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৭টির ও ৩টির অপরিবর্তিত ছিল।
তৃতীয় সর্বোচ্চ ২০৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে প্রকৌশল খাতে।
এর পরেই ১৫৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা প্রযুক্তি এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।
জ্বালানি খাতে ১৩৯ কোটি ৮০ লাখ ও বস্ত্র খাতে ১২৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
বাকি খাতের লেনদেন এক শ কোটির নিচে ছিল।
এর পরে লেনদেনের ওপরের দিকে ছিল সেবা ও আবাসন, কাগজ ও মুদ্রণ, খাদ্য ইত্যাদি খাত।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
শীর্ষ দশের প্রায় সবগুলো কোম্পানির দরই বেড়েছে দিনের সর্বোচ্চ সীমা ১০ শতাংশ ও এর আশেপাশে।
দরবৃদ্ধির শীর্ষে অবস্থান করছে সি পার্ল। ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ দর বেড়ে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩৭ টাকা ৬০ পয়সায়। আগের দিনে ক্লোজিং প্রাইস ছিল ১২৫ টাকা ২০ পয়সা।
৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দর বেড়ে মনোস্পুলের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২০৩ টাকা ৯০ পয়সায়, আগের দিনের সর্বশেষ দর ছিল ১৮৫ টাকা ৪০ পয়সা।
৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ দর বেড়ে ২১ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে তৃতীয় স্থানে থাকা ফারইস্ট নিটিংয়ের শেয়ার। আগের দিন দর ছিল ১৯ টাকা ৩০ পয়সা।
এ ছাড়াও দরবৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষ দশে রয়েছে অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন, নাহি অ্যালুমিনিয়াম, অ্যাপেক্স ফুডস, নর্দার্ন জুট ম্যানুফ্যাকচারিং, পেপার প্রোসেসিং, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স ও ইন্ট্রাকো রি –ফুয়েলিং স্টেশন।
দর পতনের শীর্ষ ১০
পতনের তালিকার শীর্ষে রয়েছে ওরিয়ন ফার্মা। রোববার ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ কমে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ১৩৫ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়।
পতনের তালিকায় পরের স্থানে রয়েছে জেএমআই হসপিটাল। ৮ দশমিক ২১ শতাংশ দর কমে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২০ টাকা ৭০ পয়সায়।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দর হারিয়েছে শাহজিবাজার পাওয়ার। ৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ কমে শেয়ারটি সর্বশেষ ৯৩ টাকা ১০ পয়সায় হাতবদল হয়।
দর কমার শীর্ষ দশে থাকা অন্য কোম্পানিগুলো ছিল- বিডি থাইফুড, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, বসুন্ধরা পেপার, কোহিনূর কেমিক্যাল, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, মীর আকতার ও বিকন ফার্মা।
আরও পড়ুন:
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
মন্তব্য