লেনদেন ক্রমেই বাড়তে থাকা পুঁজিবাজারে আবার ছন্দপতনের শঙ্কা। দুই দিন আগে লেনদেন হয়েছিল ৩ হাজার কোটি টাকা ছুঁইছুঁই। পরদিন সেখান থেকে কমে যায় ১ হাজার কোটির বেশি। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে তা আরও কমে ১ হাজার ৬০০ কোটির ঘরে নেমেছে।
গত ৩১ জুলাই থেকে পুঁজিবাজারে যে উত্থান শুরু হয়, তাতে বিনিয়োগকারীরা সন্তুষ্ট হতে পারতেন যদি এর সুফল পুঁজিবাজারে সমভাবে পড়ত। কিন্তু এই সময়ে অল্প কিছু শেয়ারের দর উড়তে থাকার মধ্যে বেশির ভাগ সিকিউরিটিজের দরপতন ঘটতে থাকে। এর মধ্যে হঠাৎ লেনদেন নিম্নমুখী নামতে থাকার কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি।
মঙ্গলবার লেনদেন হয় ২ হাজার ৮৩২ কোটি ৩০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা, যা চলতি বছরের তো বটেই, গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ। আর ২০১০ সালের মহাধসের পর এটি ছিল সপ্তম সর্বোচ্চ লেনদেন। অর্থাৎ এর চেয়ে আর মাত্র ছয়বার এত বেশি লেনদেন হয়েছে ডিএসইতে।
সেখান থেকে ১ হাজার ২৪ কোটি ১১ লাখ ৬২ হাজার টাকা কমে বুধবার হাতবদল হয় ১ হাজার ৮০৮ কোটি ১৯ লাখ ১২ হাজার টাকা।
শেষ কর্মদিবসে সেটি আরও ১৪২ কোটি ৫ লাখ ৫২ হাজার টাকা কমেছে। হাতবদল হয়েছে ১ হাজার ৬৬৬ কোটি ১৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
এদিন দরপতন হওয়া কোম্পানির তুলনায় দর বৃদ্ধি হওয়া কোম্পানির সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। তবে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক শেয়ার লেনদেন হয়েছে আগের দিনের দরে, যেগুলোর সিংহভাগই লেনদেন হয়েছে ফ্লোর প্রাইসে।
এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাধারণ সূচক ডিএসইএক্সে কিছু পয়েন্ট অবশ্য যোগ হয়েছে, যদিও একসময় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল।
বেলা ১০টা ৫৭ মিনিটে দিনের সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছায় সূচক। আগের দিনের চেয়ে প্রায় ৪১ পয়েন্ট বেড়ে সূচক দাঁড়ায় ৬ হাজার ৫৯২ পয়েন্টে। তবে পরের আধা ঘণ্টায় ব্যাপক দরপতনে ৪৬ পয়েন্ট কমে যায়। পরে দুই দফায় উত্থানের চেষ্টা করে আগের অবস্থানে ফিরতে পারেনি সূচক। শেষ মুহূর্তের সমন্বয়ের মধ্য দিয়ে সূচকে ১২ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন শেষ হয়।
দিনভর লেনদেন হওয়া সিকিউরিটিজের মধ্যে দর বেড়েছে ১৩১টির, কমেছে ৭৮টির ও আর আগের দরেই লেনদেন হয়েছে ১৬৬টি কোম্পানির।
লেনদেনের বিষয়ে ট্রেজার সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘লেনদেনের ক্ষেত্রে সন্দেহজনক কিছুই দেখা যায়নি। লেনদেন যা হয়েছে ভালোই। মার্কেট যে ধরনের পজ নিচ্ছে বা সমন্বয়সাধন হচ্ছে তা পুনরায় মুভ করার জন্য ভালো প্রস্তুতি বলা যেতে পারে।’
তিনি যোগ করেন, ‘যেসব শেয়ারের দাম অতিমূল্যায়িত হয়েছিল, সেগুলোতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কম। সেগুলো এখনও বায়ার আছে, যদি বায়ারলেস হয়ে যায়, তাহলে অতি সতর্ক হতে হবে।’
সূচকে সবচেয়ে প্রভাব যেসব কোম্পানির
সবচেয়ে বেশি ১ দশমিক ১৯ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে ইউনাইটেড পাওয়ার। এদিন শেয়ারটির দর বেড়েছে ১ দশমিক ১৩ শতাংশ।
সি পার্লের দর ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ০২ পয়েন্ট।
আর কোনো কোম্পানির দরবৃদ্ধিতে সূচকে ১ পয়েন্ট যোগ হয়নি।
ইউনিটক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট সূচকে যোগ করেছে শূন্য দশমিক ৮৫ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৫ দশমিক ৪১ শতাংশ।
এর বাইরে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ইস্টার্ন হাউজিং, ওরিয়ন ফার্মা, বসুন্ধরা পেপার, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও ইনডেক্স অ্যাগ্রো সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ৬ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ২ দশমিক ৭০ পয়েন্ট সূচক কমেছে বিকন ফার্মার দরপতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১ দশমিক ০৭ পয়েন্ট কমেছে বেক্সিমকো লিমিটেডের কারণে। শেয়ার প্রতি দাম কমেছে ১ দশমিক ১৮ শতাংশ।
কোহিনূর কেমিক্যালের দর ৭ দশমিক ৫ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ১ দশমিক ০১ পয়েন্ট।
এ ছাড়া লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ, ওরিয়ন ইনফিউশন, বেক্সিমকো ফার্মা, আইএফআইসি ব্যাংক, আইসিবি, বার্জার পেইন্টস ও পূবালী ব্যাংকের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৮ দশমিক ১৫ পয়েন্ট।
লেনদেনে সেরা ওরিয়ন-বেক্সিমকো
লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করছে ওরিয়ন ফার্মা ও বেক্সিমকো লিমিটেড। ওরিয়ন ফার্মার এক কোটি ২৯ লাখ ৪১ হাজার ২৪৭টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে ১৯৫ কোটি ৪০ লাখ ৩২ হাজার টাকায়।
বেক্সিমকো লিমিটেডের লেনদেন হয়েছে ১৫২ কোটি ২৭ লাখ ২৩ হাজার টাকা। হাতবদল হয়েছে এক কোটি ১২ লাখ ৬২ হাজার ৪৪২টি শেয়ার।
আর কোনো কোম্পানির লেনদেন এক শ কোটি টাকা ছুঁতে পারেনি।
তৃতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের। ৫৪ লাখ ৯৯ হাজার ৫৬৫টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯২ কোটি ২৯ লাখ ১২ হাজার টাকায়।
জেএমআই হসপিটালের লেনদেন হয়েছে ৫৬ কোটি ৩২ লাখ ৯২ হাজার টাকার।
শীর্ষ দশের বাকি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ৩০ থেকে ৫০ কোটির মধ্যেই।
এ তালিকায় ছিল শাহজিবাজার পাওয়ার, একমি ল্যাব, ইউনিক হোটেল, লাফার্জ হোলসিম, বসুন্ধরা পেপার ও ইস্টার্ন হাউজিং।
কোন খাত কেমন
সংখ্যায় প্রকৌশল খাতে সবচেয়ে বেশি দরবৃদ্ধি হলেও জ্বালানি ও প্রযুক্তি খাতে দরবৃদ্ধির হার বেশি ছিল।
জ্বালানি খাতে ১৯টি বা ৮২.৬১ শতাংশ কোম্পানির দর বেড়েছে। বিপরীতে ২টি করে কোম্পানির দরপতন ও অপরিবর্তিত ছিল।
প্রকৌশল খাতে ২৪টি বা ৫৭.১৪ শতাংশ কোম্পানির দর বেড়ে লেনদেন হয়েছে। দর কমেছে ৮টির ও আগের দরে লেনদেন হয়েছে ১০টি কোম্পানির শেয়ার।
প্রযুক্তি খাতে ১০টি বা ৯০ শতাংশের বেশি কোম্পানির দরবৃদ্ধি দেখা গেছে। দর কমেছে মাত্র একটির।
ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের ৩টি কোম্পানিরই দর বেড়েছে।
এ ছাড়াও দরবৃদ্ধি হয়েছে জীবন বিমা, কাগজ ও মুদ্রণ, সেবা ও আবাসন, সিরামিকস, বিবিধ ও ট্যানারি খাতে।
তালিকাভুক্ত ৩৭টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩১টির লেনদেন হয়েছে এবং সবগুলোর দরই অপরিবর্তিত রয়েছে। অর্থাৎ সেগুলো ফ্লোর প্রাইসেই লেনদেন হয়েছে।
আগের দিনের চেয়ে আরও কমলেও শীর্ষে রয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। হাতবদল হয়েছে ৩৭৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ২৩ দশমিক ২৬ শতাংশ।
১৫টি কোম্পানির দরপতন হয়েছে। আগের দরেই লেনদেন হয়েছে ৯টির। আর দরপতনে লেনদেন হয়েছে ১৫টি বা ৫০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বিবিধ খাতের লেনদেন হয়েছে ৩৪৩ কোটি ২০ লাখ।
দুই খাতেই আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমেছে। তবে দুই খাতের লেনদেন মোট লেনদেনের ৪৪ দশমিক ৩০ শতাংশ।
তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৫৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে জ্বালানি খাতে।
এর পরেই ১১৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা প্রকৌশল খাতে এবং প্রযুক্তি খাতে ১১৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে।
আর কোনো খাতের লেনদেন একশ কোটি ছুঁতে পারেনি।
এর পরে লেনদেনের ওপরের দিকে ছিল ভ্রমণ ও অবকাশ, বস্ত্র, জীবন বিমা, কাগজ ও মুদ্রণ, সেবা ও আবাসন, সিমেন্ট, খাদ্য, সিরামিকস ইত্যাদি।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
প্রায় ২০টির মতো কোম্পানির দর বেড়েছে দিনের সর্বোচ্চ সীমা ১০ শতাংশ ও এর আশেপাশে। তিনটির দর বেড়েছে পুরোপুরি ১০ শতাংশ।
দরবৃদ্ধির শীর্ষে অবস্থান করছে অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন। চলতি বছরের ৯ মাসেই কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৩৪ পয়সা।
১০ শতাংশ দর বেড়ে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪০ টাকা ৭০ পয়সায়। আগের দিনে ক্লোজিং প্রাইস ছিল ৩৭ টাকা।
একই সমান দর বেড়ে পেনিনসুলা চিটাগংয়ের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৯ টাকা ৬০ পয়সায়, আগের দিনের সর্বশেষ দর ছিল ৩৬ টাকা।
একই সমান দর বেড়ে ৭২ টাকা ৬০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে তৃতীয় স্থানে থাকা এডিএন টেলিকমের। আগের দিন দর ছিল ৬৬ টাকা।
এ ছাড়াও দরবৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষ দশে রয়েছে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, লুবরেফ বাংলাদেশ, ইনডেক্স অ্যাগ্রো, আজিজ পাইপস, ফাইন ফুডস, ইস্টার্ন হাউজিং ও এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন।
দর পতনের শীর্ষ ১০
পতনের তালিকার শীর্ষে রয়েছে জুট স্পিনার্স। পুঞ্জিভূত লোকসান ও অপারেশনে না থাকার পরেও লাফিয়ে লাফিয়ে দর বাড়ার পরে দর কমছে শেয়ারের।
বৃহস্পতিবার ৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ২২৩ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হয়।
পতনের তালিকায় পরের স্থানে রয়েছে কোহিনূর কেমিক্যাল। ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ দর কমে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬৪৫ টাকা ৪০ পয়সায়।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দর হারিয়েছে লোকসানি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং। ৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ কমে শেয়ারটি সর্বশেষ ৬ টাকা ৭০ পয়সায় হাতবদল হয়।
দর কমার শীর্ষ দশে থাকা অন্য কোম্পানিগুলো ছিল- ওরিয়ন ইনফিউশন, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, সন্ধানী ইন্স্যুরেন্স, বিকন ফার্মা,, তাকাফুল ইন্স্যুরেন্স, সিলভা ফার্মা ও নর্দার্ন জুট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচকের উত্থান হলেও সার্বিক সূচক কমেছে চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ ও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১, কমেছে ৬৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ৭০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০, কমেছে ১৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৭৩ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:টানা দুই দিন উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও ঢাকার পুঁজিবাজারে বইছে সুবাতাস।
সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৭ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট করে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগেরই দাম বেড়েছে। ১০৯ কোম্পানির দরপতন এবং ৫৩ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৩০ কোম্পানির।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও বইছে চনমনে হাওয়া। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে সিএসইতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারের লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে; বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে পতন দিয়ে শুরু হয়েছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে এবং বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের। দরবৃদ্ধির ২৪৫ কোম্পানির বিপরীতে দর কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দিনের শুরুতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৯০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট। সূচক কমলেও বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ১০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫, কমেছে ২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গত সপ্তাহের উত্থানের ধারা ধরে রেখে এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে থাকলেও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৯, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর ৩০ মিনিটে ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২, কমেছে ৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য