চলতি সপ্তাহের মধ্যে বুধবার সবচেয়ে বেশি সূচক পড়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)। একই দিনে লেনদেন কমেছে হাজার কোটি টাকার বেশি।
বেশ কয়েক দিন ধরেই পুঁজিবাজারে অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ করা যাচ্ছিল। প্রতিদিনই বেশিরভাগ শেয়ারের দরপতনে লেনদেন হয়েছে, কিন্তু সূচকের পতন দেখা গেছে মঙ্গলবার ও বুধবার। তার আগের দুই দিনে সূচকে যোগ হয় ৮৫ পয়েন্ট।
মঙ্গলবার ব্যাপক দরপতনেও সূচক কমে মাত্র ৪ পয়েন্ট, তবে সেই আচরণ থেকে আজ কিছুটা বের হয়ে এসেছে পুঁজিবাজার। বেশিরভাগ শেয়ারের দরপতনের সঙ্গে সূচক কমেছে ৪৫ পয়েন্ট।
যদিও এর চেয়ে বেশি পতনের শঙ্কা ছিল। ১১টা ৭ মিনিটেও আগের দিনের চেয়ে ২৯ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হচ্ছিল, সূচকের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৬২৫ পয়েন্ট। মাঝে একটু কমলেও পরের এক ঘণ্টাতে সূচকের অবস্থান ছিল এর কাছাকাছিই।
এর পর থেকেই ধারাবাহিকভাবে দর হারাতে থাকে শেয়ারগুলো। দুপুর ১টা ৩২ মিনিটে দিনের সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে সূচক কমে যায় ৬৫ পয়েন্ট, তবে শেষ মুহূর্তের সমন্বয়ে ৪৫ পয়েন্ট কমে লেনদেন শেষ হয়েছে। সূচকের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫৫১ পয়েন্টে।
লেনদেন হওয়া সিকিউরিটিজের মধ্যে যতগুলোর দর বেড়েছে, তার দ্বিগুণের বেশি দরপতন হয়েছে। ৫৮টি শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১৫৯টির। আগের দরেই লেনদেন হয়েছে ১৫৪টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট।
কয়েক দিন থেকে আরেকটি প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। মোট লেনদেনের বড় অংশই থাকছে কয়েকটি কোম্পানির দখলে। বুধবারও তার ব্যতিক্রম দেখা যায়নি।
সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয় ওরিয়ন ফার্মার। কোম্পানির ১ কোটি ৭৪ লাখ ১০২টি শেয়ার লেনদেন হয় ২৫৭ কোটি ২৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকায়।
গ্রুপের আরেক কোম্পানি ওরিয়ন ইনফিউশনের লেনদেন হয় ৪০ কোটি ৩১ লাখ ৯০ হাজার টাকার। কোম্পানিটির ৬ লাখ ৬৪ হাজার ৮৭৭টি শেয়ার লেনদেন হওয়ার দিনে দর বেড়েছে ২০ টাকা ৪০ পয়সা।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেডের। যদিও এদিন কোম্পানির দর কমেছে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ। ২২৯ কোটি ৬৯ লাখ ২৮ হাজার টাকায় হাতবদল হয় এক কোটি ৬৬ লাখ ৭১ হাজার ৫২৩টি শেয়ার।
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার লেনদেন হয় ১০২ কোটি ২২ লাখ ৯৭ হাজার টাকার। হাতবদল হয় ৬৩ লাখ ৪১ হাজার ৪৪৫টি শেয়ার।
এসব কোম্পানির লেনদেন কমার সঙ্গে ডিএসইর মোট লেনদেন কমেছে।
মঙ্গলবার লেনদেন হয় ২ হাজার ৮৩২ কোটি ৩০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা, যা চলতি বছরের তো বটেই, গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ। আর ২০১০ সালের মহাধসের পর এটি ছিল সপ্তম সর্বোচ্চ লেনদেন। অর্থাৎ এর চেয়ে আর মাত্র ছয়বার এত বেশি লেনদেন হয়েছে ডিএসইতে।
বুধবার হাতবদল হয়েছে এক হাজার ৮০৮ কোটি ১৯ লাখ ১২ হাজার টাকা। এ সংখ্যাটা আগের দিনের চেয়ে এক হাজার ২৪ কোটি ১১ লাখ ৬২ হাজার টাকা কম।
২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর দর সংশোধনে যায় পুঁজিবাজার। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির মধ্যে মতভেদ শেষে অর্থবছরের সমন্বয় হয়। সবশেষ ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ধস নামে পুঁজিবাজারে।
এর মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো ফ্লোর প্রাইস আরোপ এবং ব্যাংকের এক্সপোজার লিমিট শেয়ারের ক্রয়মূল্য নির্ধারণের পর ৩১ জুলাই থেকে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে; ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে লেনদেন।
এই উত্থান শুরুর আগের কর্মদিবস ২৮ জুলাই সূচক নেমে যায় ৬ হাজার পয়েন্টের নিচে। তা নিম্নমুখীই ছিল। এ নিয়ে বিনিয়োগকারীরা ছিলেন আতঙ্কে।
পরের কর্মদিবস থেকে ৬০০ পয়েন্টের বেশি হারিয়ে ফেলা সূচক ফিরে পেলেও বিনিয়োগকারীদের মনের খেদ মেটেনি। কারণ এই উত্থানের প্রভাব পুঁজিবাজারে সমভাবে পড়েনি। অল্প কিছু কোম্পানির শেয়ারের মাত্রাতিরিক্ত দরবৃদ্ধির মধ্যেও ফ্লোর প্রাইসে গড়াগড়ি খাচ্ছে শতাধিক কোম্পানি। এর মধ্যে কিছু দুর্বল কোম্পানি থাকলেও শক্তিশালী মৌলভিত্তির কোম্পানিও আছে।
লেনদেনে বিষয়ে ট্রেজার সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘আজকের লেনদেন কম বলব না, বরং গতকাল ক্রেজি ট্রানজেকশন হয়েছিল বলা যায়।’
তিনি বলেন, ‘গতকালের এত বড় ট্রানজেকশনের পরে আজকে যে পজ নিয়েছে বা পুল ব্যাক করেছে, তা বাজারের জন্য ভালো বলে আমি মনে করি। মার্কেট মেকাররা খুব দক্ষতার সঙ্গে বাজার পরিচালনা করছে।’
মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘গতকালের যে লেনদেন, এরপরে আজকের যে সেল প্রেসার ছিল, তা রিমার্কেবল নয়। বেশিরভাগ সিকিউরিটজের দরপতনের সঙ্গে সূচক কমেছে।’
সূচক কমাল যারা
সবচেয়ে বেশি ১০ দশমিক ১১ পয়েন্ট সূচক কমেছে বেক্সিমকোর দরপতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে ৩ দশমিক ১৪ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ২৭ পয়েন্ট কমেছে বিকন ফার্মার কারণে। শেয়ার প্রতি দাম কমেছে ৪ দশমিক ২৪ শতাংশ।
লাফার্জ হোলসিমের দর ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ৪ দশমিক ২৬ পয়েন্ট।
এ ছাড়া বেক্সিমকো ফার্মা, পাওয়ার গ্রিড, কোহিনূর কেমিক্যাল, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল, আরএকে সিরামিকস ও প্রাইম ব্যাংকের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৪০ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট।
সূচক বাড়াল যারা
সবচেয়ে বেশি ৭ দশমিক ৯১ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে ইউনাইটেড পাওয়ার। এদিন শেয়ারটির দর বেড়েছে ২ দশমিক ২২ শতাংশ।
বসুন্ধরা পেপারের দর ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৩ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট।
সি পার্ল সূচকে যোগ করেছে ৩ দশমিক ২৬ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৯১ শতাংশ।
এর বাইরে ডোরিন পাওয়ার, বার্জার পেইন্টস, মীর আকতার, শাহজিবাজার পাওয়ার, জেএমআই হসপিটাল, ইনডেক্স অ্যাগ্রো ও পূবালী ব্যাংক সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ২৬ দশমিক ০৫ পয়েন্ট।
কোন খাত কেমন
দরপতনের পাল্লা ভারী হওয়ায় কোনো খাতেই দরবৃদ্ধি দেখা যায়নি।
তবে আটটি বা ২৫ শতাংশের বেশি কোম্পানির দর বেড়েছে লেনদেনের শীর্ষে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতে।
আগের দিনের চেয়ে ৩০০ কোটির মতো লেনদেন কমে হাতবদল হয়েছে ৪৫৬ কোটি ২০ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ২৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
বিপরীতে ১৬টি কোম্পানির দরপতন হয়েছে। আগের দরেই লেনদেন হয়েছে আরও ৭টি কোম্পানির শেয়ার।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বিবিধ খাতের লেনদেন হয়েছে ৪১৯ কোটি ৭৪ লাখ, অথচ গতকাল এটি ছিল ৫৯২ কোটি ৫২ লাখ টাকা।
আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমলেও এই দুই খাতের লেনদেন মোট লেনদেনের ৫০ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
গতকালের মতোই আর কোনো খাতের লেনদেন ১০ শতাংশ অতিক্রম করতে পারেনি। তবে এক শ কোটির বেশি লেনদেন হয়েছে আরও দুটি খাতে।
তবে দরপতনের পাল্লাই ভারী ছিল খাতটিতে। ৭টি কোম্পানির দরপতনের বিপরীতে বেড়েছে ৪টির ও ২টির লেনদেন হয়েছে অপরিবর্তিত দরে।
প্রকৌশল খাত টপকে তৃতীয় অবস্থানে চলে এসেছে জ্বালানি খাত। ১২৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা লেনদেনের দিনে আটটি কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। বিপরীতে ১০টির দরপতন ও পাঁচটি কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
পরের স্থানে থাকা প্রকৌশল খাতে ৬টি কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৬টির। আগের দরে লেনদেন হয়েছে ১০টির।
দিনভর হাতবদল হয়েছে ১১৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
বস্ত্র খাতের লেনদেন অর্ধেকে নেমে এসেছে। গতকাল ১৪৭ কোটি ১০ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছিল, সেটা আজকে দাঁড়িয়েছে ৭৫ কোটি ৬০ লাখ টাকায়, যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
খাতের ৩টি কোম্পানির দর বেড়েছে, কমেছে ২১টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৩৫টির।
আইটি খাতে লেনদেন হয়েছে ৭৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা বা ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ।
এ ছাড়া দুটি খাতে ৩ শতাংশের বেশি, পাঁচটি খাতে ২ শতাংশের বেশি, তিনটি খাতে ১ শতাংশের বেশি লেনদেন হয়েছে। এক শতাংশের নিচে লেনদেন হয়েছে পাঁচ খাতে।
এ ছাড়া আইটি, ভ্রমণ ও অবকাশ, কাগজ ও মুদ্রণ, জীবন বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বিমা, ট্যানারি খাতে অল্প কিছু কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। তবে সব খাতেই দরপতনই বেশি ছিল।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
দরবৃদ্ধির শীর্ষে অবস্থান করছে ইনডেক্স অ্যাগ্রো। ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ দর বেড়ে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২৫ টাকা ৬০ পয়সায়। আগের দিনে ক্লোজিং প্রাইস ছিল ১১৪ টাকা ২০ পয়সা।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দর বেড়েছে মীর আকতার হোসেন লিমিটেডের। ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বেড়েছে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬০ টাকা ৯০ পয়সায়, আগের দিনের সর্বশেষ দর ছিল ৫৫ টাকা ৪০ পয়সা।
তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানি শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৭ পয়সা লোকসানে রয়েছে।
বুধবার ৯ দশমিক ৯১ শতাংশ দর বেড়ে প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১১৪ টাকা ২০ পয়সায়। আগের দিন দর ছিল ১০৩ টাকা ৯০ পয়সা।
এ ছাড়া দরবৃদ্ধির তালিকায় রয়েছে বসুন্ধরা পেপার, অ্যাডভেন্ট ফার্মা, বিডিকম, ডোরিন পাওয়ার, আরএসআরএম স্টিল, এডিএন টেলিকম ও ইন্দো-বাংলা ফার্মা।
দর পতনের শীর্ষ ১০
পতনের তালিকার শীর্ষে রয়েছে জুট স্পিনার্স। পুঞ্জিভূত লোকসান ও অপারেশনে না থাকার পরেও লাফিয়ে লাফিয়ে দর বাড়তে দেখা গেছে কোম্পানিটির শেয়ারের।
বুধবার ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ কমে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ২৪৩ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়।
পতনের তালিকায় পরের স্থানে রয়েছে আরেক লোকসানি কোম্পানি বিডি ওয়েলডিং। ৮ দশমিক ৫২ শতাংশ দর কমে লেনদেন হয়েছে ২৭ টাকা ৯০ পয়সায়।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দর হারিয়েছে ন্যাশনাল টি। বিশাল লোকসান থাকার পরে কোম্পানির শেয়ার বেড়েছিল, বুধবার ৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ কমে শেয়ারটি সর্বশেষ ৬৪৩ টাকা ৩০ পয়সায় হাতবদল হয়।
দর কমার শীর্ষ দশে থাকা অন্য কোম্পানিগুলো ছিল- ইস্টার্ন ক্যাবলস, নর্দার্ন জুট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি, অ্যাটলাস বাংলাদেশ, সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ, সোনালী আঁশ, আজিজ পাইপস ও কোহিনূর কেমিক্যালস।
আরও পড়ুন:শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচকের উত্থান হলেও সার্বিক সূচক কমেছে চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ ও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১, কমেছে ৬৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ৭০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০, কমেছে ১৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৭৩ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:টানা দুই দিন উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও ঢাকার পুঁজিবাজারে বইছে সুবাতাস।
সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৭ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট করে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগেরই দাম বেড়েছে। ১০৯ কোম্পানির দরপতন এবং ৫৩ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৩০ কোম্পানির।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও বইছে চনমনে হাওয়া। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে সিএসইতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারের লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে; বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে পতন দিয়ে শুরু হয়েছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে এবং বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের। দরবৃদ্ধির ২৪৫ কোম্পানির বিপরীতে দর কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দিনের শুরুতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৯০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট। সূচক কমলেও বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ১০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫, কমেছে ২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গত সপ্তাহের উত্থানের ধারা ধরে রেখে এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে থাকলেও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৯, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর ৩০ মিনিটে ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২, কমেছে ৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য