এ যেন আকাশ থেকে মাটিতে পতন।
বেলা একটা পর্যন্ত লেনদেন আড়াই হাজার কোটি টাকা ছুঁই ছুঁই, সূচক তখন পর্যন্ত বেড়েছে ৭০ পয়েন্ট। শুরুতেই ৫০ পয়েন্ট বেড়ে যাওয়ার পর এই উত্থানে গত ৯ মের অবস্থানকে ছাড়িয়ে যায় কি না, এমন অপেক্ষার মধ্যে হঠাৎ নিম্নমুখী প্রবণতা। কেবল ৫০ মিনিটে ৭৪ পয়েন্টের পতন দেখল বিনিয়োগকারীরা।
সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবসে এই চিত্রই বলে দেয় উত্থান পর্বেও দেশের পুঁজিবাজার স্বাভাবিক আচরণ করছে না।
এই পতনের মূল কারণ অবিশ্বাস্য উত্থানে থাকা ওরিয়ন গ্রুপের একটি কোম্পানির দরপতন। তরতর করে বাড়তে থাকা বিকন ফার্মার শেয়ারদর কেবল ৪.৮০ শতাংশ দরপতনেই সূচক থেকে হারিয়ে গেছে অনেকখানি পয়েন্ট।
কোম্পানিটির দর আগের দিন ছিল ৩৬৯ টাকা ২০ পয়সা। লেনদেনের শুরুতেই তা উঠে যায় ৩৯৩ টাকায়। পরে এক পর্যায়ে নেমে আসে ৩৫০ এ। লেনদেন শেষ করে ৩৬১ টাকায়। দিনের সর্বোচ্চ দরের চেয়ে সমাপ্ত দরের পার্থক্য ৩২ টাকা।
তবে এই গ্রুপের অন্য দুই কোম্পানি ওরিয়ন ইনফিউশনের স্বপ্নের মতো উত্থান অব্যাহত আছে। আরেক কোম্পানি ওরিয়ন ফার্মার দর দিনের শুরুতে অনেকটা বেড়ে গেলেও দিনের সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে ১০ টাকা কমে শেষ করেছে লেনদেন।
এদিন পুঁজিবাজারে যে লেনদেন হয়েছে, তা কেবল চলতি ২০২২ সালের সর্বোচ্চ নয়, গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ। অর্থাৎ গত এক বছরেও এত বেশি লেনদেন দেখেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ।
দিন শেষে হাতবদল হয়েছে ২ হাজার ৮৩২ কোটি ৩০ লাখ ৭৪ হাজার টাকার শেয়ার, যা ২০১০ সালের মহাধসের পর সপ্তম সর্বোচ্চ লেনদেন।
২০২০ সালে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়ানোর পর গত বছরের আগস্টের তিনটি এবং সেপ্টেম্বরের তিনটি কর্মদিবসে এর চেয়ে বেশি লেনদেন হয়।
এর মধ্যে ২০২১ সালের ১৬ আগস্ট ২ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা, ৯ আগস্ট ২ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা, ৬ সেপ্টেম্বর ২ হাজার ৯০১ কোটি টাকা, ৫ সেপ্টেম্বর ২ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা, ৭ সেপ্টেম্বর ২ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা এবং ১০ আগস্ট ২ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা হাতবদল হয়।
২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর দর সংশোধনে যাওয়া পুঁজিবাজারে পরে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির মধ্যে মতভেদ এরপর অর্থবছরের সমন্বয় এবং সবশেষ ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ধস নামে।
এর মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো ফ্লোর প্রাইস আরোপ এবং ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিট শেয়ারের ক্রয়মূল্যে নির্ধারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের কৌশলী সার্কুলারের পর থেকে গত ৩১ জুলাই থেকে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে লেনদেন।
এই উত্থান শুরুর আগের কর্মদিবস ২৮ জুলাই সূচক নেমে গিয়েছে ৬ হাজার পয়েন্টের নিচে এবং ক্রমেই তা ছিল নিম্নমুখী। এ নিয়ে বিনিয়োগকারীরা ছিল আতঙ্কে।
পরের কর্মদিবস থেকে ছয় শ পয়েন্টের বেশি হারিয়ে ফেলা সূচক ফিরে পেলেও বিনিয়োগকারীদের মনের খেদ মেটেনি। কারণ এই উত্থানের প্রভাব পুঁজিবাজারে সমভাবে পড়েনি। অল্প কিছু কোম্পানির শেয়ারের মাত্রাতিরিক্ত দর বৃদ্ধির মধ্যেও ফ্লোর প্রাইসে গড়াগড়ি খাচ্ছে ১৩০টিরও বেশি কোম্পানি। এর মধ্যে কিছু দুর্বল কোম্পানি থাকলেও শক্তিশালী মৌলভিত্তির কোম্পানিও আছে।
সবচেয়ে বেশি নগদ লভ্যাংশ বিতরণ করা ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো বা গ্রামীণ ফোনের মতো কোম্পানিও এই তালিকায় দেখে বিস্মিত হন অনেকেই। তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর সিংহভাগ, মিউচ্যুয়াল ফান্ডের হাতে গোনা এক দুইটি ছাড়া সবগুলোও এই তালিকায়।
লেনদেনের সিংগভাগও কয়েকটি কোম্পানিতেই হচ্ছে। লেনদেন হওয়া ৩৭৩ টি কোম্পানির মধ্যে কেবল ১০টিতে হাতবদল হয়েছে প্রায় ৪৬ শতাংশ। তালিকাটি আরও ছোট করলে দেখা যায় মোট লেনদেনের ৩৫ শতাংশ হয়েছে কেবল ৫টি কোম্পানিতে আর ২৯ শতাংশ লেনদেন হয়েছে কেবল তিনটি কোম্পানিতে।
গত কয়েক দিনের মতো এদিনও বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর হারিয়েছে। আগের দিন দর হারানো কোম্পানির চেয়ে দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির দর ছিল দেড় গুণের বেশি, সেটি এবার হয়েছে দ্বিগুণের বেশি।
এদিন বেড়েছে ৭২টি কোম্পানির দর, বিপরীতে কমেছে ১৫৬টির। ১৪৫ টি কোম্পানি লেনদেন হয়েছে আগের দিনের দরে। এর মধ্যে সিংহভাগই ফ্লোর প্রাইসে হাতবদল হয়েছে।
সূচক পতনের বিষয়ে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, ‘অনেক শেয়ারের ওভার ভ্যালুড হয়ে পড়েছিল। যার কারণে সেগুলো থেকে শেষ দিকে দ্রুত প্রফিট টেকিং হওয়ায় সূচক পতন হয়েছে।’
লেনদেন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ক্রস ট্রেড হওয়ার কারণে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।’
বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বাজারের অনেক কিছুই গ্রামারের বাইরে ঘটছে। পুঁজিবাজারের যে উত্থান তার সুফল পুরো বাজারে সমানভাবে পড়ছে না। এটা চিন্তার বিষয়। এটা স্বাভাবিক আচরণ নয়।’
বিনিয়োগকারীদের বিশ্লেষণ করে সতর্কভাবে বিনিয়োগের পরামর্শ দেন তিনি।
সূচক পতনে প্রধান ভূমিকায় বিকন ফার্মা
সূচকের পতনে প্রধান ভূমিকায় ছিল বিকন ফার্মা। দর কমেছে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ কমায় ডিএসই সূচক থেকে হারিয়ে গেছে ৪৭ দশমিক ০৭ পয়েন্ট।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট কমেছে তিতাস গ্যাসের কারণে। শেয়ার প্রতি দাম কমেছে ২ দশমিক ১১ শতাংশ।
পাওয়ার গ্রিডের দর ২ দশমিক ১২ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ৯ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট।
গ্রামীণফোন, ইউনাইটেড পাওয়ার, জেনেক্স ইনফোসিস, বার্জার পেইন্টস, ইস্টার্ন ক্যাবলস, ইউনিলিভার কনজিউমার ও ইস্টার্ন হাউজিংয়ের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ১০২ দশমিক ১৬ পয়েন্ট।
সূচক বাড়াল যারা
সবচেয়ে বেশি ৩৫ দশমিক ১১ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে লাফার্জ-হোলসিম বাংলাদেশ। শেয়ারটির দর ৩ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে।
একমি ল্যাবরেটরিজের দর ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ১২ দশমিক ৩২ পয়েন্ট।
ওরিয়ন ফার্মা সূচকে যোগ করেছে ১১ দশমিক ২৭ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৩ দশমিক ০৬ শতাংশ।
এর বাইরে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, সি পার্ল, জেএমআই হসপিটাল, বসুন্ধরা পেপার, আইসিবি, কোহিনূর কেমিক্যাল ও ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ১২৬ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট।
কোন খাত কেমন
দরপতনের পাল্লা ভারি হওয়ায় ওষুধ ও রসায়ন ছাড়া আর কোনো খাতেই দরবৃদ্ধি দেখা যায়নি।
১৭টি বা ৫৬ শতাংশের বেশি কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। সাত শ কোটি ছুঁইছঁই হাতবদল হওয়ার মধ্য দিয়ে লেনদেনেও শীর্ষে রয়েছে খাতটি।
হাতবদল হয়েছে ৬৯৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ২৫ দশমিক ৮০ শতাংশ।
বিপরীতে ৬টি কোম্পানির দরপতন হয়েছে। আগের দরেই লেনদেন হয়েছে আরও ৭টি কোম্পানির শেয়ার।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বিবিধ খাতের লেনদেন হয়েছে ৫৯২ কোটি ৫২ লাখ টাকা, বা ২১ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
এই দুই খাত মিলে লেনদেন হয়েছে ৪৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ। আর কোনো খাতের লেনদেন ১০ শতাংশ অতিক্রম করতে পারেনি।
তবে দরপতনের পাল্লাই ভারি ছিল খাতটিতে। ৭টি বা ৫০ শতাংশ কোম্পানির দরপতনের বিপরীতে বেড়েছে ৩টির ও ৪টির লেনদেন হয়েছে অপরিবর্তিত দরে।
প্রকৌশল খাতে ১১টি কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২০টির। আগের দরে লেনদেন হয়েছে ১১টির।
১০ শতাংশের কাছাকাছি লেনদেন হয়েছে একমাত্র এ খাতেই। দিনভর হাতবদল হয়েছে ২৪৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
বস্ত্র খাতে ১৪৭ কোটি ১০ লাখ টাকা বা ৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। আর কোনো খাতের লেনদেন পাঁচ শতাংশ অতিক্রম করতে পারেনি।
এ খাতের ৬টি কোম্পানির দর বেড়েছে, কমেছে ১৭টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৩৬টির।
পঞ্চম স্থানে থাকা আইটি খাতে ১২৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৪টির দর বেড়েছে, কমেছে ৬টির ও একটির লেনদেন হয়েছে আগের দরে।
জ্বালানি খাতে লেনদেন একশ কোটি অতিক্রম করলেও দরপতনই বেশি ছিল।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে ৯টি বা ৪০ শতাংশ কোম্পানির দরবৃদ্ধি ছাড়া আর কোনো খাতে উল্লেখযোগ্য দরবৃদ্ধি দেখা যায়নি।
লেনদেনে রাজা বেক্সিমকো-ওরিয়ন ফার্মা
একক কোম্পানি হিসেবে লেনদেনে শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। এই কোম্পানিটির ৩৪২ কোটি ৫ লাখ ৮৭ হাজার টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩২৭ কোটি ২৫ লাখ ১৭ হাজার টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে ওরিয়ন ফার্মার।
তৃতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত জাহাজ প্রতিষ্ঠান শিপিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশে। এই কোম্পানিটির ১৫৫ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
আর কোনো কোম্পানিতে শত কোটি টাকা লেনদেন হয়নি। শীর্ষ দশের অন্য কোম্পানিগুলো হলো একমি ল্যাবরেটরিজ, লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট, জেএমআই হসপিটাল, ইস্টার্ন হাউজিং, শাহজিবাজার পাওয়ার, ডেল্টা লাইফ ও বেক্সিমকো ফার্মা।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
এদিন দরবৃদ্ধির শীর্ষে অবস্থান করছে লোকসানি সেন্ট্রাল ফার্মা। ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ দর বেড়ে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩ টাকা ৯০ পয়সায়। আগের দিনে ক্লোজিং প্রাইস ছিল ১২ টাকা ৭০ পয়সা।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দর বেড়েছে শাহজিবাজার পাওয়ার পাওয়ারের। ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ বেড়েছে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৫ টাকা ২ পয়সায়, আগের দিনের সর্বশেষ দর ছিল ৮৭ টাকা ২০ পয়সা।
তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে ঋণ কেলেঙ্কারি ও লোকসানে ডুবে থাকা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন ক্যাপিটালের।
৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ দর বেড়ে প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১১ টাকা ২০ পয়সায়। আগের দিন দর ছিল ১০ টাকা ৩০ পয়সা।
বিডিকমের দর ৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ বেড়ে শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৪৭ টাকা ৩০ পয়সায়।
এ ছাড়াও দরবৃদ্ধির তালিকায় রয়েছে সি পার্ল, ইন্দো-বাংলা ফার্মা, বসুন্ধরা পেপার, ওরিয়ন ইনফিউশন, জেএমআই হসপিটাল ও আমারটেক।
দর পতনের শীর্ষ ১০
পতনের তালিকার শীর্ষে রয়েছে বিডি ওয়েলডিং। অজানা কারণে লাফিয়ে লাফিয়ে দর বাড়তে দেখা গেছে লোকসানি কোম্পানিটির।
মঙ্গলবার ৯ দশমিক ২২ শতাংশ কমে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ৩০ টাকা ৫০ পয়সায় লেনদেন হয়।
পতনের তালিকায় পরের স্থানে রয়েছে আরেক লোকসানি কোম্পানি। ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ দর কমে লেনদেন হয়েছে ১১ টাকা ৪০ পয়সায়। তার আগে তিন কর্মদিবস দর বেড়েছিল। অবশ্য এই প্রবণতা নতুন নয়, মাঝে মাঝেই দর বেড়ে লেনদেন হতে দেখা যায়।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দর হারিয়েছে স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকসের। ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ কমে শেয়ারটি সর্বশেষ ১৫২ টাকা ৩০ পয়সায় হাতবদল হয়।
দর কমার শীর্ষ দশে থাকা অন্য কোম্পানিগুলো ছিল- ই-জেনারেশন, ইস্টার্ন ক্যাবলস, ন্যাশনাল টিউবস, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ, জেনেক্স ইনফোসিস, রতনপুর স্টিল ও পেপার প্রসেসিং।
আরও পড়ুন:
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
মন্তব্য