বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের পরিধি বাড়াতে হলে দেশের ভালো সরকারি, বেসরকারি ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করতে হবে। আর তাদের তালিকাভুক্ত করতে হলে দিতে হবে সঠিক প্রণোদনা। পাশাপাশি সহজ ব্যাংক ঋণ বন্ধ করতে হবে। অতালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো যেন কর ফাঁকি না দিতে পারে সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
গতকাল শনিবার পুঁজিবাজারবিষয়ক একটি গোলটেবিল বৈঠকে এ বিষয়গুলো উঠে আসে।
বক্তারা বলেন, কোনভাবেই দেশের পুঁজিবাজারে আইপিও বন্ধ করা যাবে না, এ ছাড়া দেশের সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে বিনিয়োগ করা উচিত এবং বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে কর কাঠামো ঠিক করা দরকার। আর পুঁজিবাজারকে বড় করতে হলে সহজ ব্যাংক ঋণ বন্ধ করতে হবে।
শনিবার সকালে দেশের পুঁজিবাজার সাংবাদিকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) আর মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) দেশের পুঁজিবাজার নিয়ে একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।
গোলটেবিল বৈঠকের শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাজার: বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’।
বাজারে ভালো কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করতে হবে
গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান ।
তিনি তার গবেষণায় দেখান, বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ভালো কোম্পানিগুলোর মুনাফা যে হারে বেড়েছে; পুঁজিবাজারও সেই হারেই বেড়েছে।
মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের অনেক বেশি বিলিয়ন ডলার কোম্পানি লাগবে, যে কোম্পানিগুলো রিলায়েবল, যেগুলো অনেক বছর ধরে টেকসইভাবে বাড়তে পারবে।’
এ বিষয়ে মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘যারা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে, তাদের যদি পুঁজিবাজারে আনা যায় তাহলে দেশের পুঁজিবাজারের পরিধি বাড়বে, দেশের বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবে, দেশের অর্থনীতি উপকৃত হবে।’
লাগবে প্রণোদনা, বাড়াতে হবে সুশাসন
মনিরুজ্জামান বলেন, ‘কিছুদিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সার্কুলার ছিল- ঋণ দিতে হলে কোম্পানির নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ওপরে দিতে হবে। এই সার্কুলারটা এখনো পুরোপুরি ইফেক্টিভ হয়নি। এটা যদি বাস্তবায়িত হয় তাহলে দেখা যাবে কোম্পানিগুলো নিরীক্ষিত প্রতিবেদনে সঠিক তথ্য দেবে।’
‘এখন কোম্পানিগুলো কর না দিয়েও ছাড় পেয়ে যায় কিন্তু যখন সঠিক তথ্য দিতে হবে তখন কিন্তু কোম্পানিগুলো ট্যাক্স ইনসেনটিভ পাওয়ার জন্য চেষ্টা করবে তখন কোম্পানিগুলো করা ছাড় পাওয়ার জন্য দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে চাইবে।’
অর্থনীতিবিদ ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ আবু আহমেদ বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হারের পার্থক্য কমপক্ষে ১৫ শতাংশ করতে। কিন্তু বাজেট করার সময় এসব কেন আমলে নেয়া হয় না, আমি বুঝি না।
‘তালিকাভুক্ত হলে যদি ১৫ শতাংশ কম কর দিতে হয় তাহলে অনেক কোম্পানি দেশের পুঁজিবাজারে আসবে বলে মনে করেন তিনি। পাশাপাশি ভালো কোম্পানিগুলো না আসতে চাইলে দরকার হলে আইন করে ভালো কোম্পানি যেমন নেসলে বা ইউনিলিভার-এর মতো কোম্পানিগুলোকে দেশের পুঁজিবাজারে নিয়ে আসা উচিত।’
এ প্রসঙ্গে মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন ‘আমাদের দেশে একটি তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে অনেক কমপ্লায়েন্সের মধ্যে থাকতে হয়। অন্যদিকে নন লিস্টেড কোম্পানিগুলো অনেক ধরনের কমপ্লায়েন্স এড়িয়ে যেতে পারে।’
আইপিও বন্ধ করা যাবে না
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ হেলাল বৈঠকে মত দেন, দেশে যেহেতু শেয়ারের পর্যাপ্ত চাহিদা নেই, তাই আপতত আইপিও বন্ধ করা দরকার। বৈঠকে কেউ কেউ বলেন, বাংলাদেশে আইপিওর মাধ্যমে টাকা তোলা ৫০ শতাংশ কোম্পানি খারাপ করছে।
কিন্তু আইপিও বন্ধ না করার পক্ষে মত দেন বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ।
ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, ‘আমাদের সাপ্লাই এবং ডিমান্ড দুটোই বাড়াতে হবে কোন ভাবেই আইপিও বন্ধ করা যাবে না।’
এছাড়া আইপিওর মাধ্যমে টাকা তোলা কোম্পানি গুলোর খারাপ করারা বিষয়ে সাবেক বিএসইসি চেয়ারম্যান এম খাইরুল হোসেন পৃথিবীর অন্যান্য দেশে আমাদের দেশে তুলনায় বেশি কোম্পানি খারাপ করছে ভারতে ৪০ শাতংশের বেশি কোম্পানি নন পারফরমিং।
মিউচুয়ার ফান্ডের মাধ্যমে বিনিয়োগ করা উচিৎ
আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘সাধারন বিনিয়োগকারীরা যদি দেশের মিউচুয়াল ফান্ড এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের ডিসক্রিশনারি একাউন্টের মাধ্যমে বিনিয়োগ করেন তাহলে কম ক্ষতির মুখে পড়বেন দেশের পুঁজিবাজার স্থিতিশীল হবে। ’
পুঁজিবাজারে কর কাঠামো ঠিক করা দরকার
বিএমবিএ সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘উন্নত দেশ গুলোর তুলনায় আমাদেরতো ডিভিডেন্ড ইল্ড অনেক হাই।ইন্ডিয়ার তুলনায় আমাদের ডাবল ডিভিডেন্ড ইল্ড। ইন্ডিয়াতে ডিভিডেন্ড ইল্ড ২ শতাংশের ঘরে আমাদের দেশে ডিভিডেন্ড ইল্ড চর শতাংশের উপরে। লভ্যাংশ ভাল থাকলেও আমাদের দেশে লভ্যাংশের উপরে বেশি কর দিতে হচ্ছে তাই আনেকে এখানে বনিয়োগ করতে চাননা।’
সহজ ব্যাংক ঋণ বন্ধ করতে
গোল টেবিল বৈঠকে পুঁজিবাজার বড় এবং ভালো করতে সহজ ব্যাংক ঋণ বন্ধ করার পরামর্শ দেন অনেকেই। এ বিষয়ে বিএমবিএ’র সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশে যারা ব্যবসা করে তারা খুব সহজেই ব্যাংক থেকে ঋণ পেয়ে যায়। আমাদের এই বিষয়টি বন্ধ করতে হবে।
বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমাদের স্টাক মার্কেট সঠিকভাবে ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে না। আমাদের ভালো কোম্পানিগুলো বাজারে আসছে না। নতুন নতুন কোম্পানিগুলো আসার মতো সুযোগও তৈরি হচ্ছে না। যেখানে ভালো কোম্পানিগুলোকে ঋণ দিতে ব্যাংক মুখিয়ে আছে, সেখানে তারা ক্যাপিটাল মার্কেটে ভালো সুযোগ না পেলে তারা কেন আসবে? সুতরাং যতদিন ব্যাংকের লং টার্ম লোন দেয়ার তারল্য থাকবে, ততদিন ভালো কোম্পানি এখানে আসতে আগ্রহ দেখাবে না।’
সবার বক্তব্য শেষে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘আমরা ক্রিটিসাইজ করব, আমাদের ভালোর জন্য। তার আগে আমাদের জানতে হবে, বুঝতে হবে, আমাদের তুলনা কার সাথে হচ্ছে, এবং আমাদের বাস্তবতা কোথায়? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলাম তখন একভাবে চিন্তা করতাম, যখন মাঠে এসেছি, দেখছি বইয়ে লেখা নিয়মকানুন সব জায়গায় পালন করা যায় না। বুকসের অ্যাপ্লিকেশন অনেক সময় করা যায় না, এবং বাস্তবতার নিরিখে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আমি অনেক কিছুই চাই করতে। কিন্তু পারব না এই মূহুর্তে বা দুই বছরের মধ্যে। অনেক কিছুই প্রস্তুত না।’
তিনি বলেন,‘ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি যদি না থাকে, কাজ করা না যায়, ডেরিভেটিভস মার্কেট নিয়ে কতটুকু এগুতে পারব। কয়টা লোক এর মানে বোঝে? এই জিনিসটা যে কী, কী করতে হবে, বাংলাদেশের পয়েন্ট ০১ শতাংশ মানুষও কি সেটা জানে। তাহলে কীভাবে ডেরিভেটিস মার্কেট নিয়ে কাজ করব?
‘আমি যেখানেই কাজ করতে যাই, ডিজিটাল বোর্ড নিয়ে, আইটিতে লোক পাই না। আমি যদি অপশনাল ডেরিভেটিস নিয়ে কাজ করছি, কমোডিটি এক্সচেঞ্জ নিয়ে কাজ করছি চিটাগংয়ে, আরইআইটি নিয়ে কাজ করছি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে, কই লোক তো পাচ্ছি না। কে করবে এগুলো। যদি কাজ করারই লোক না থাকে এই মার্কেটে প্লে করবে কারা? তাই লিটারেসি নিয়ে আমাদের প্রথম কাজ করতে হচ্ছে।’
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিলের চেয়ারম্যান ও সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মোঃ জাহিদ হাসান, বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ইউনূসুর রহমান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নাহিদ হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এজাজুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সিএমজেএফ সভাপতি জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএমবিএ সভাপতি ছায়েদুর রহমান। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন সিএমজেএফ সাধারণ সম্পাদক আবু আলী।
আরও পড়ুন:
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সূচক বাড়ার মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে।
ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
রবিবার লেনদেন শুরুর আধা ঘণ্টা পর অর্থাৎ সকাল সাড়ে ১০টায় ডিএসইর সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৩ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৫৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। ডিএসই শরীয়াহ্ সূচক ৫ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে যথাক্রমে ১২০১ ও ২১৫৬ পয়েন্টে রয়েছে।
এই সময়ের মধ্যে লেনদেন হয়েছে ১১১ কোটি ৪ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট।
রবিবার এ সময়ে লেনদেন হওয়া কম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২০৩টির, কমেছে ৭৪টির এবং অপরির্বতিত রয়েছে ৯৩টি কম্পানির শেয়ার।
রোববার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত লেনদেনের শীর্ষে থাকা ১০ কম্পানি হলো-খান ব্রাদার্স, শাইনপুকুর সিরামিক, সালাম স্টিল, রবি, ডোমেনেজ, আইপিডিসি, লাভেলো আইসক্রিম, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, রূপালি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ও ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
এর আগে আজ লেনদেন শুরুর প্রথম ৫ মিনিটে ডিএসইএক্স সূচক বাড়ে ৮ পয়েন্ট।
সকাল ১০টা ১০ মিনিটে সূচক আগের অবস্থান থেকে আরো ১২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। এরপর সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী দেখা যায়। লেনদেন শুরুর ২০ মিনিট পর অর্থাৎ সকাল ১০টা ২০ মিনিটে সূচক আগের দিনের চেয়ে ২৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৫৫১ পয়েন্টে অবস্থান করে।
অপরদিকে লেনদেন শুরুর আধা ঘণ্টা পর অর্থাৎ সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সিএএসপিআই সূচক ২৭ পয়েন্ট বেড়ে ১৫ হাজার ৫৪৬ পয়েন্টে অবস্থান করে।
এরপর সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী দেখা যায়।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এসময়ের ২০টি কম্পানির দাম বেড়েছে, কমেছে ৮টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২টি কম্পানি শেয়ারের দর।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
ছবি: সংগৃহীত
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
মন্তব্য