বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের পরিধি বাড়াতে হলে দেশের ভালো সরকারি, বেসরকারি ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করতে হবে। আর তাদের তালিকাভুক্ত করতে হলে দিতে হবে সঠিক প্রণোদনা। পাশাপাশি সহজ ব্যাংক ঋণ বন্ধ করতে হবে। অতালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো যেন কর ফাঁকি না দিতে পারে সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
গতকাল শনিবার পুঁজিবাজারবিষয়ক একটি গোলটেবিল বৈঠকে এ বিষয়গুলো উঠে আসে।
বক্তারা বলেন, কোনভাবেই দেশের পুঁজিবাজারে আইপিও বন্ধ করা যাবে না, এ ছাড়া দেশের সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে বিনিয়োগ করা উচিত এবং বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে কর কাঠামো ঠিক করা দরকার। আর পুঁজিবাজারকে বড় করতে হলে সহজ ব্যাংক ঋণ বন্ধ করতে হবে।
শনিবার সকালে দেশের পুঁজিবাজার সাংবাদিকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) আর মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) দেশের পুঁজিবাজার নিয়ে একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।
গোলটেবিল বৈঠকের শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাজার: বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’।
বাজারে ভালো কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করতে হবে
গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান ।
তিনি তার গবেষণায় দেখান, বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ভালো কোম্পানিগুলোর মুনাফা যে হারে বেড়েছে; পুঁজিবাজারও সেই হারেই বেড়েছে।
মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের অনেক বেশি বিলিয়ন ডলার কোম্পানি লাগবে, যে কোম্পানিগুলো রিলায়েবল, যেগুলো অনেক বছর ধরে টেকসইভাবে বাড়তে পারবে।’
এ বিষয়ে মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘যারা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে, তাদের যদি পুঁজিবাজারে আনা যায় তাহলে দেশের পুঁজিবাজারের পরিধি বাড়বে, দেশের বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবে, দেশের অর্থনীতি উপকৃত হবে।’
লাগবে প্রণোদনা, বাড়াতে হবে সুশাসন
মনিরুজ্জামান বলেন, ‘কিছুদিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সার্কুলার ছিল- ঋণ দিতে হলে কোম্পানির নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ওপরে দিতে হবে। এই সার্কুলারটা এখনো পুরোপুরি ইফেক্টিভ হয়নি। এটা যদি বাস্তবায়িত হয় তাহলে দেখা যাবে কোম্পানিগুলো নিরীক্ষিত প্রতিবেদনে সঠিক তথ্য দেবে।’
‘এখন কোম্পানিগুলো কর না দিয়েও ছাড় পেয়ে যায় কিন্তু যখন সঠিক তথ্য দিতে হবে তখন কিন্তু কোম্পানিগুলো ট্যাক্স ইনসেনটিভ পাওয়ার জন্য চেষ্টা করবে তখন কোম্পানিগুলো করা ছাড় পাওয়ার জন্য দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে চাইবে।’
অর্থনীতিবিদ ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ আবু আহমেদ বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হারের পার্থক্য কমপক্ষে ১৫ শতাংশ করতে। কিন্তু বাজেট করার সময় এসব কেন আমলে নেয়া হয় না, আমি বুঝি না।
‘তালিকাভুক্ত হলে যদি ১৫ শতাংশ কম কর দিতে হয় তাহলে অনেক কোম্পানি দেশের পুঁজিবাজারে আসবে বলে মনে করেন তিনি। পাশাপাশি ভালো কোম্পানিগুলো না আসতে চাইলে দরকার হলে আইন করে ভালো কোম্পানি যেমন নেসলে বা ইউনিলিভার-এর মতো কোম্পানিগুলোকে দেশের পুঁজিবাজারে নিয়ে আসা উচিত।’
এ প্রসঙ্গে মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন ‘আমাদের দেশে একটি তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে অনেক কমপ্লায়েন্সের মধ্যে থাকতে হয়। অন্যদিকে নন লিস্টেড কোম্পানিগুলো অনেক ধরনের কমপ্লায়েন্স এড়িয়ে যেতে পারে।’
আইপিও বন্ধ করা যাবে না
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ হেলাল বৈঠকে মত দেন, দেশে যেহেতু শেয়ারের পর্যাপ্ত চাহিদা নেই, তাই আপতত আইপিও বন্ধ করা দরকার। বৈঠকে কেউ কেউ বলেন, বাংলাদেশে আইপিওর মাধ্যমে টাকা তোলা ৫০ শতাংশ কোম্পানি খারাপ করছে।
কিন্তু আইপিও বন্ধ না করার পক্ষে মত দেন বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ।
ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, ‘আমাদের সাপ্লাই এবং ডিমান্ড দুটোই বাড়াতে হবে কোন ভাবেই আইপিও বন্ধ করা যাবে না।’
এছাড়া আইপিওর মাধ্যমে টাকা তোলা কোম্পানি গুলোর খারাপ করারা বিষয়ে সাবেক বিএসইসি চেয়ারম্যান এম খাইরুল হোসেন পৃথিবীর অন্যান্য দেশে আমাদের দেশে তুলনায় বেশি কোম্পানি খারাপ করছে ভারতে ৪০ শাতংশের বেশি কোম্পানি নন পারফরমিং।
মিউচুয়ার ফান্ডের মাধ্যমে বিনিয়োগ করা উচিৎ
আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘সাধারন বিনিয়োগকারীরা যদি দেশের মিউচুয়াল ফান্ড এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের ডিসক্রিশনারি একাউন্টের মাধ্যমে বিনিয়োগ করেন তাহলে কম ক্ষতির মুখে পড়বেন দেশের পুঁজিবাজার স্থিতিশীল হবে। ’
পুঁজিবাজারে কর কাঠামো ঠিক করা দরকার
বিএমবিএ সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘উন্নত দেশ গুলোর তুলনায় আমাদেরতো ডিভিডেন্ড ইল্ড অনেক হাই।ইন্ডিয়ার তুলনায় আমাদের ডাবল ডিভিডেন্ড ইল্ড। ইন্ডিয়াতে ডিভিডেন্ড ইল্ড ২ শতাংশের ঘরে আমাদের দেশে ডিভিডেন্ড ইল্ড চর শতাংশের উপরে। লভ্যাংশ ভাল থাকলেও আমাদের দেশে লভ্যাংশের উপরে বেশি কর দিতে হচ্ছে তাই আনেকে এখানে বনিয়োগ করতে চাননা।’
সহজ ব্যাংক ঋণ বন্ধ করতে
গোল টেবিল বৈঠকে পুঁজিবাজার বড় এবং ভালো করতে সহজ ব্যাংক ঋণ বন্ধ করার পরামর্শ দেন অনেকেই। এ বিষয়ে বিএমবিএ’র সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশে যারা ব্যবসা করে তারা খুব সহজেই ব্যাংক থেকে ঋণ পেয়ে যায়। আমাদের এই বিষয়টি বন্ধ করতে হবে।
বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমাদের স্টাক মার্কেট সঠিকভাবে ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে না। আমাদের ভালো কোম্পানিগুলো বাজারে আসছে না। নতুন নতুন কোম্পানিগুলো আসার মতো সুযোগও তৈরি হচ্ছে না। যেখানে ভালো কোম্পানিগুলোকে ঋণ দিতে ব্যাংক মুখিয়ে আছে, সেখানে তারা ক্যাপিটাল মার্কেটে ভালো সুযোগ না পেলে তারা কেন আসবে? সুতরাং যতদিন ব্যাংকের লং টার্ম লোন দেয়ার তারল্য থাকবে, ততদিন ভালো কোম্পানি এখানে আসতে আগ্রহ দেখাবে না।’
সবার বক্তব্য শেষে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘আমরা ক্রিটিসাইজ করব, আমাদের ভালোর জন্য। তার আগে আমাদের জানতে হবে, বুঝতে হবে, আমাদের তুলনা কার সাথে হচ্ছে, এবং আমাদের বাস্তবতা কোথায়? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলাম তখন একভাবে চিন্তা করতাম, যখন মাঠে এসেছি, দেখছি বইয়ে লেখা নিয়মকানুন সব জায়গায় পালন করা যায় না। বুকসের অ্যাপ্লিকেশন অনেক সময় করা যায় না, এবং বাস্তবতার নিরিখে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আমি অনেক কিছুই চাই করতে। কিন্তু পারব না এই মূহুর্তে বা দুই বছরের মধ্যে। অনেক কিছুই প্রস্তুত না।’
তিনি বলেন,‘ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি যদি না থাকে, কাজ করা না যায়, ডেরিভেটিভস মার্কেট নিয়ে কতটুকু এগুতে পারব। কয়টা লোক এর মানে বোঝে? এই জিনিসটা যে কী, কী করতে হবে, বাংলাদেশের পয়েন্ট ০১ শতাংশ মানুষও কি সেটা জানে। তাহলে কীভাবে ডেরিভেটিস মার্কেট নিয়ে কাজ করব?
‘আমি যেখানেই কাজ করতে যাই, ডিজিটাল বোর্ড নিয়ে, আইটিতে লোক পাই না। আমি যদি অপশনাল ডেরিভেটিস নিয়ে কাজ করছি, কমোডিটি এক্সচেঞ্জ নিয়ে কাজ করছি চিটাগংয়ে, আরইআইটি নিয়ে কাজ করছি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে, কই লোক তো পাচ্ছি না। কে করবে এগুলো। যদি কাজ করারই লোক না থাকে এই মার্কেটে প্লে করবে কারা? তাই লিটারেসি নিয়ে আমাদের প্রথম কাজ করতে হচ্ছে।’
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিলের চেয়ারম্যান ও সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মোঃ জাহিদ হাসান, বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ইউনূসুর রহমান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নাহিদ হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এজাজুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সিএমজেএফ সভাপতি জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএমবিএ সভাপতি ছায়েদুর রহমান। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন সিএমজেএফ সাধারণ সম্পাদক আবু আলী।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
মন্তব্য