পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি বে লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ২০২১ সালের যে আর্থিক প্রতিবেদন ৯ মাস পর প্রকাশ করেছে, তাতে হিসাবের মান রক্ষা হয়েছে কি না, তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।
কোম্পানিটি ওই বছরের তিন প্রান্তিক অর্থাৎ ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস ২ টাকা ৭৫ পয়সা দেখায়। কোম্পানিটির যে শেয়ারসংখ্যা, তার হিসাবে ৯ মাসে মুনাফা দাঁড়ায় ৩৮ কোটি ৭৪ লাখ ৪৩ হাজার ২১৮ টাকা।
তবে গোটা অর্থবছর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি ৯৯ পয়সা লোকসান হয়েছে বলে জানানো হয়। অর্থাৎ ৯ মাসে যে পরিমাণ আয় হয়েছে, পরের তিন মাসে সেখান থেকে কমে গেছে এর চেয়ে বেশি।
এই হিসাবে ওই অর্থবছরে কোম্পানিটির লোকসান হয়েছে ১৩ কোটি ৯৪ লাখ ৭৯ হাজার ৫৫৮ টাকা। অর্থাৎ এই তিন মাসে লোকসান হয়েছে ৫২ কোটি ৬৯ লাখ ২২ হাজার ৭৭৬ টাকা।
কোম্পানিটি লোকসান করলেও বিনিয়োগকারীদের বঞ্চিত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির অনুমোদনের ওপর নির্ভর করবে।
এই লভ্যাংশ যে বিনিয়োগকারীদের পছন্দ হয়নি, সেটি লেনদেনেই স্পষ্ট। লভ্যাংশ প্রকাশের দিন কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ১ টাকা ৪০ পয়সা। বর্তমান দর ২৩ টাকা ৯০ পয়সা। এটিই কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস, অর্থাৎ এর চেয়ে নিচে নামা আসলে সম্ভব নয়। এই বাধা না থাকলে দর কোথায় দাঁড়াত, সেটি জানা সম্ভব নয় কোনোভাবে। কারণ লভ্যাংশের ঘোষণার কারণে বৃহস্পতিবার শেয়ারের কোনো মূল্যসীমা ছিল না।
কোম্পানিটি তার লভ্যাংশ ঘোষণার পর শেয়ারপ্রতি আয়ে এই পরিবর্তনের একটি ব্যাখ্যা অবশ্য দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, তাদের ঋণ আদায় সন্তোষজনক ছিল না। আর অনাদায়ী এই ঋণের বিপরীতে সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে গিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় কমে গেছে।
প্রশ্ন উঠেছে, এই সঞ্চিতি কি কেবল শেষ তিন মাসে সংরক্ষণ করা হয়েছে। যদি তা-ই হয়, তাহলে ৯ মাসের মুনাফা দেখে যারা ভালো লভ্যাংশের আশায় শেয়ারে বিনিয়োগ করে লোকসানে পড়েছেন, তাদের দায়ভার কে নেবে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোতে প্রতি তিন মাস অন্তত তাদের লাভ-লোকসানের হিসাব প্রকাশ করতে হয়, যাকে বলা হয় প্রান্তিক প্রতিবেদন। এর মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন কেবল নিরীক্ষিত থাকে, বাকি তিনটি প্রতিবেদন নিরীক্ষা না করার কারণে তাতে কারসাজির সুযোগ থাকে।
বিভিন্ন কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রায়ই দেখা গেছে, কোনো প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি আয় অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যায়। তাতে শেয়ারদরও দেয় লাফ। কিন্তু চূড়ান্ত প্রতিবেদনে তা কমে যায়।
২০২১ সালে বিবিধ খাতের একটি কোম্পানির শেয়ারদর ৯ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকা ছুঁইছুঁই হয়ে যায়। কোম্পানিটি তার স্বাভাবিক আয়ের চেয়ে অনেক বেশি আয় দেখাতে থাকে প্রান্তিক প্রতিবেদনে। তিন প্রান্তিক শেষে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ২৫ পয়সা আয় দেখানোর পর চূড়ান্ত আয় দেখানো হয় ১৮ পয়সা। এরপর কোম্পানির দর কমতে কমতে এখন ১৬ টাকা ৭০ পয়সায় নেমেছে।
সব প্রভিশনিং শেষ প্রান্তিকে!
বে লিজিং জানিয়েছে, গত অর্থবছরে মোট ৫৭ কোটি টাকা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হয়েছে।
শেষ প্রান্তিকে এসে বড় সঞ্চিতি সংরক্ষণের কথা বলেছে, সেটা আগের তিন প্রান্তিকে কেন রাখা হয়নি- এমন প্রশ্নে কোম্পানি সচিব শারমিন আক্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রভিশন রুল পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের বড় কয়েকজন গ্রাহক সময়মতো টাকা দেননি। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের চাপে আমাদের প্রভিশন করতে হয়েছে।’
চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট স্নেহাশীষ বড়ুয়া বলেন, ‘নিয়ম হচ্ছে প্রতি কোয়ার্টারে প্রভিশন রাখতে হয়। একবারে বছর শেষে প্রভিশন রাখা এটা সঠিক নিয়ম নয়।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের যে কথা বে লিজিংয়ের কোম্পানি সচিব বলেছেন, সেটি জানালে স্নেহাশীষ বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক যদি দেখে নিয়ম পরিপালন হচ্ছে না, সে তো চাপ দেবেই। প্রভিশন রাখা দরকার ছিল কিন্তু প্রভিশন রাখা হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংক সেটা করিয়েছে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই ক্ষেত্রে ভুল হতে পারে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে স্নেহাশীষ বড়ুয়া বলেন, ‘সেটা রেয়ার কেস।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক এম সাদিকুল ইসলামও বলেছেন, বে লিজিং যা করেছে, সেটিতে হিসাবমান বজায় থাকেনি। তিনি একে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা হিসেবে দেখছেন।
এই বিশেষজ্ঞ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা প্রতারণা আর অব্যবস্থাপনা। প্রভিশন প্রতি কোয়ার্টারে রাখতে হয়। সেটা না রেখে ৯ মাসে ভালো মুনাফা দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের প্রলুব্ধ করা হয়েছে। তাদের বড় ক্ষতির মধ্যে ফেলা হয়েছে।’
যোগাযোগ করা হলে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির মুখপাত্র রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সঞ্চিতির বিষয়টি অনেক সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে করে। এ ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, সেটি আমরা তদন্ত করে দেখব।’
অর্থবছর শেষ হওয়ার ৯ মাস পর লভ্যাংশ ঘোষণার বিষয়ে অন্য একটি প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘চূড়ান্ত প্রতিবেদন তো অর্থবছর শেষ হওয়ার চার মাসের মধ্যে দেয়ার কথা। কেন এত দেরি করল, সেটিও খতিয়ে দেখব।’
প্রান্তিক প্রতিবেদনে কী তথ্য ছিল
বে লিজিং ২০২১ সালের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত মুনাফা দেখায় শেয়ারপ্রতি ৩১ পয়সা।
যে প্রতিবেদন প্রকাশের কথা ছিল এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে, সেটি কোম্পানিটি প্রকাশ করে ৩০ সেপ্টেম্বর।
একই দিন প্রকাশ করা হয় দ্বিতীয় প্রান্তিকের তথ্যও। জানানো হয়, এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে শেয়ারপ্রতি আয় হয় ৪৯ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২৫ গুণ। ২০২০ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় ছিল কেবল ২ পয়সা।
ওই বছরের ২৮ অক্টোবর প্রকাশ হয় কোম্পানিটির তৃতীয় প্রান্তিকের হিসাব। ওই প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি আয় আবার দেয় লাফ। জানানো হয় জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে শেয়ারপ্রতি আয় হয় ১ টাকা ৯৫ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৯১ পয়সা। তিন প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়ায় ২ টাকা ৭৫ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১ টাকা ২ পয়সা।
কোম্পানিটি ২০২০ সালে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল, শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ১ টাকা ১৪ পয়সা।
এবার আয় বাড়লে লভ্যাংশও বাড়তে পারে- এই আশায় যারা বিনিয়োগ করেছেন, তারা এখন হতাশ।
লভ্যাংশ কত
বে লিজিং ২০২১ সালে বিনিয়োগকারীদের জন্য ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা অনুমোদন দিলে তারা এই লভ্যাংশ দিতে পারবে।
আগামী ৩০ অক্টোবর সাধারণ সভায় এবারের লভ্যাংশের অনুমোদন নিতে হবে। সে জন্য রেকর্ড ডেট ঠিক হয়েছে ৬ অক্টোবর।
সেখানে অনুমোদন পেলে বে লিজিংয়ের ১০০টি শেয়ারের বিপরীতে বিনিয়োগকারীরা পাঁচটি করে শেয়ার পাবেন।
২০০৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এ কোম্পানির শেয়ার বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে।
২০১৮ অর্থবছরে বে লিজিং ২১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা মুনাফা করেছিল; লভ্যাংশ দিয়েছিল শেয়ারপ্রতি ১ টাকা।
২০১৯ অর্থবছরে মুনাফা করে ১৫ কোটি ৪ লাখ টাকা। লভ্যাংশ দেওয়া হয় ৭৫ পয়সা। এ ছাড়া প্রতি ১০০ শেয়ারে নতুন ২ দশমিক ৫০টি শেয়ার।
২০২০ অর্থবছরে মুনাফা করে ১৬ কোটি টাকা। লভ্যাংশ দেওয়া হয় ১ টাকা।
পুঁজিবাজারে এ কোম্পানির ১৪ কোটি ৮ লাখ ৮৮ হাজার শেয়ার রয়েছে। এর মধ্যে ৩০ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ আছে পরিচালকদের হাতে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে আছে ২১ দশমিক ৪২ শতাংশ শেয়ার, বিদেশিদের হাতে আছে দশমিক ১৫ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৪৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ শেয়ার।
কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ১৪০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা; রিজার্ভের পরিমাণ ১২৬ কোটি ৩ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন:দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সূচক বাড়ার মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে।
ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
রবিবার লেনদেন শুরুর আধা ঘণ্টা পর অর্থাৎ সকাল সাড়ে ১০টায় ডিএসইর সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৩ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৫৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। ডিএসই শরীয়াহ্ সূচক ৫ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে যথাক্রমে ১২০১ ও ২১৫৬ পয়েন্টে রয়েছে।
এই সময়ের মধ্যে লেনদেন হয়েছে ১১১ কোটি ৪ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট।
রবিবার এ সময়ে লেনদেন হওয়া কম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২০৩টির, কমেছে ৭৪টির এবং অপরির্বতিত রয়েছে ৯৩টি কম্পানির শেয়ার।
রোববার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত লেনদেনের শীর্ষে থাকা ১০ কম্পানি হলো-খান ব্রাদার্স, শাইনপুকুর সিরামিক, সালাম স্টিল, রবি, ডোমেনেজ, আইপিডিসি, লাভেলো আইসক্রিম, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, রূপালি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ও ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
এর আগে আজ লেনদেন শুরুর প্রথম ৫ মিনিটে ডিএসইএক্স সূচক বাড়ে ৮ পয়েন্ট।
সকাল ১০টা ১০ মিনিটে সূচক আগের অবস্থান থেকে আরো ১২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। এরপর সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী দেখা যায়। লেনদেন শুরুর ২০ মিনিট পর অর্থাৎ সকাল ১০টা ২০ মিনিটে সূচক আগের দিনের চেয়ে ২৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৫৫১ পয়েন্টে অবস্থান করে।
অপরদিকে লেনদেন শুরুর আধা ঘণ্টা পর অর্থাৎ সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সিএএসপিআই সূচক ২৭ পয়েন্ট বেড়ে ১৫ হাজার ৫৪৬ পয়েন্টে অবস্থান করে।
এরপর সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী দেখা যায়।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এসময়ের ২০টি কম্পানির দাম বেড়েছে, কমেছে ৮টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২টি কম্পানি শেয়ারের দর।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
মন্তব্য