সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের ক্রিকেটের পোস্টার বয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপনও বটে। বর্তমানে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এই অধিনায়কের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তাকে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে কাজে লাগাতে কয়েক বছর আগে বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ দেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিনিয়োগকারীদের মাঝে সচেতনতা তৈরিতে তাকে দিয়ে বানানো হয় টেলিভিশন বিজ্ঞাপনও।
বিএসইসির এই বিশেষ দূতের নামই এবার জড়িয়ে পড়েছে শেয়ার কারসাজির সঙ্গে।
সম্প্রতি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সাতটি কোম্পানির শেয়ারে কারসাজি করে যে চক্রটি ১৩৭ কোটি টাকা মুনাফা করেছে বলে বিএসইসির তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, সেই চক্রের সঙ্গে নাম এসেছে দেশসেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানেরও। বিএসইসির এনফোর্সমেন্ট বিভাগ কারসাজির ঘটনায় যে সাতটি প্রতিবেদন করেছে, সেখানে কমপক্ষে দুটিতে সাকিবের বিও হিসাবের কথা উল্লেখ আছে। আর কয়েকটির মধ্যে তার মালিকানাধীন কোম্পানি মোনার্ক হোল্ডিংস লিমিটেডের নাম এসেছে।
এসব কারসাজিতে মূল অভিযুক্ত পুঁজিবাজারে বহুল আলোচিত-সমালোচিত মুখ আবুল খায়ের হিরু। সমবায় অধিদপ্তরের প্রথম শ্রেণির এই কর্মকর্তার ব্যবসায়িক পার্টনার সাকিব আল হাসান। যদিও বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, তদন্তের পর সাকিবকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘তদন্তে প্রথমে তো অনেক নাম আসে। পরে তাদের সঙ্গে কথা বলে কমিশন সিদ্ধান্ত নেয় কে আসলে জড়িত। তাদের কথা ঠিক হলে তাদের অব্যাহতি দেয়া দেয়া হয়।’
তবে যে তদন্তে সাকিবের নাম এসেছে, সেখানে কারসাজিকারীর সঙ্গে নাম আসা ব্যাক্তিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের একটি সারসংক্ষেপ দেয়া আছে এবং সেটার পরেই কারসাজি ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে জরিমানা করেছে বিএসইসি।
ক্যারেবিয়ান প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগ খেলতে ওয়েস্ট ইন্ডিজে অবস্থান করছেন সাকিব আল হাসান। মঙ্গলবার রাতে এ ব্যাপারে সাকিবের বক্তব্য জানতে তার মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে এসএমএস পাঠালেও কোনো উত্তর দেননি।
তবে মিরপুর বিসিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাকিবের শেয়ার কারসাজি নিয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘এটা ক্রিকেটের বিষয় না। এ নিয়ে কিছু বলার নেই আমার।’
তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, হিরুর মালিকানাধীন দেশ আইডিয়াল ট্রাস্ট কো-অপারেটিভ লিমিটেড অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েট এশিয়ান ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার নিয়ে কারসাজি করে প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকা মুনাফা করে। এই কারসাজির সহযোগী হিসেবে সাকিবের নাম এসেছে। হিরুর মালিকানাধীন এই কোম্পানি যখন শেয়ারের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়িয়েছে, সেখানে অবদান ছিল সাকিবেরও।
এ ছাড়া আবুল খায়েরের বোন কনিকা আফরোজ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটের সঙ্গে এক জায়গায় ও আবুল খায়েরের বাবা আবুল কালাম মাতবর অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটের সঙ্গে দুই জায়গায় সহযোগী হিসেবে সাকিবের নাম পাওয়া যায়।
এসব কারসাজির জন্য বিএসইসি মোট ১০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। তবে এই তালিকায় ছাড় পেয়েছেন সাকিব।
বিএসইসির এনফোর্সমেন্ট বিভাগের চলতি বছরের ২০ জুনের চিঠি থেকে জানা যায়, আবুল খায়েরের মালিকানাধীন দেশ আইডিয়াল ট্রাস্ট কো-অপারেটিভ লিমিটেড এশিয়ান ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার নিয়ে কারসাজি করে। ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ অক্টোবরের মধ্যে এশিয়ান ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার নিয়ে কারসাজি করে দেশ আইডিয়াল ট্রাস্ট কো-অপারেটিভ লিমিটেড। এ সময় বিমা কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৩০ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ৬৮ টাকা ৬০ পয়সা হয়। এতে তারা মুনাফা করে ৩ কোটি ২৪ লাখ ৮৫ হাজার ৪২ টাকা। এ সময় তাদের আনরিয়েলাইজড গেইন বা সম্ভাব্য মুনাফা ছিল ৫ কোটি ২৪ লাখ ২১ হাজার ২২৫ টাকা। পরে আইডিয়াল ট্রাস্ট কো-অপারেটিভকে জরিমানা করা হয়েছে ৭২ লাখ টাকা।
গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার নিয়ে কারসাজির ঘটনাটি ঘটে হিরুর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটের নামে। ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল থেকে ৬ জুনের মধ্যে বিমা কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে কারসাজি করে কাজী সাদিয়া হাসান অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েট। এ সময় তারা মুনাফা করে ১ কোটি ৮৮ লাখ ২৮ হাজার ১৪ টাকা। এ সময় তাদের আনরিয়েলাইজড গেইন হয় ৫৭ লাখ ২৮ হাজার ৪৯১ টাকা। কারসাজির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পরে কাজী সাদিয়া হাসান অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটকে জরিমানা করা হয় ৪২ লাখ টাকা।
২০২১ সালের ৪ এপ্রিল থেকে ৩ মের মধ্যে ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার নিয়ে কারসাজি করে কাজী সাদিয়া হাসান অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েট। এ সময় তারা মুনাফা করে (রিয়েলাইজড গেইন) ৪ কোটি ৩৪ লাখ ৬১ হাজার ৪০৫ টাকা। আর আনরিয়েলাইজড গেইন ছিল ৯৫ লাখ ৫১ হাজার ৭০৫ টাকা। পরে প্রতিষ্ঠানটিকে জরিমানা করা হয়েছে ৯৫ লাখ টাকা।
এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার নিয়েও কারসাজি করে চক্রটি। বিএসইসির এনফোর্সমেন্ট বিভাগের গত ৬ জুলাইয়ের চিঠি থেকে জানা যায়, হিরুর বোনের খোলা কনিকা আফরোজ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েট এই ব্যাংকটির শেয়ার নিয়ে কারসাজি করে। ২০২১ সালের ৫ মে থেকে ২৪ মের মধ্যে এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার নিয়ে কারসাজি করে কনিকা আফরোজ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েট। এ সময় তারা মুনাফা করে (রিয়েলাইজড গেইন) ১৫ কোটি ২২ লাখ ৯৯ হাজার ৬০৮ টাকা। আর আনরিয়েলাইজড গেইন হয় ২৩ কোটি ৩৩ লাখ ৮৯ হাজার ৮৭২ টাকা। পরে কনিকা আফরোজ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটকে জরিমানা করা হয় ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
তালিকাভুক্ত ফরচুন সুজ লিমিটেডের শেয়ার নিয়ে কারসাজি করে হিরুর বাবা আবুল কালাম মাতবর অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েট। ২০২১ সালের ১৭ মে থেকে ২০ মের মধ্যে ফরচুন সুজ লিমিটেডের শেয়ার নিয়ে কারসাজি করে আবুল কালাম মাতবর অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েট। এ সময় তারা মুনাফা করে (রিয়েলাইজড গেইন) ৬ কোটি ১৩ লাখ ৪৫ হাজার ৩৯২ টাকা। আর আনরিয়েলাইজড গেইন করে ২৩ কোটি ৮৯ লাখ ৭৭ হাজার ৩৫৫ টাকা। পরে আবুল কালাম মাতবর অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটকে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করে বিএসইসি।
তালিকাভুক্ত বিডিকমের শেয়ার নিয়ে কারসাজিতেও জড়িত দেশ আইডিয়াল ট্রাস্ট কো-অপারেটিভ। বিএসইসির তথ্য বলছে, ২০২২ সালের ৭ মার্চ থেকে ১০ মার্চের মধ্যে বিডিকমের শেয়ার নিয়ে কারসাজি করে ডিআইটি কো-অপারেটিভ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েট। মুনাফা করে (রিয়েলাইজড গেইন) ২ কোটি ৬৫ লাখ ২৬ হাজার ৭৬০ টাকা। এ সময় তাদের আনরিয়েলাইজড গেইন হয় ১৮ কোটি ৯ লাখ টাকা। বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটিকে জরিমানা করা হয় ৫৫ লাখ টাকা।
২০২১ সালের ১১ নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত কারসাজির মাধ্যমে ওয়ান ব্যাংকের শেয়ারের দাম বাড়াতে ভূমিকা রাখে আবুল কালাম মাতবর অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েট। আর এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি মুনাফা করে (রিয়েলাইজড গেইন) ১৪ কোটি ৩৫ লাখ ৬৪ হাজার ৪৩৭ টাকা। আর আনরিয়েলাইজড গেইন দাঁড়ায় ১৪ কোটি ৩৮ লাখ ১১ হাজার ৬৬ টাকা। কিন্তু তাদের জরিমানা করা হয় ৩ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়গুলো তো বিএসইসির দেখার কথা। পুরো পুঁজিবাজার এখন জুয়াড়িদের হতে। বিনিয়োগকারীদেরও একটি বিশাল অংশ মনে করেন, ওরা না থাকলে মার্কেটে প্রাণ থাকবে না। দেশের পুঁজিবাজার যখন পড়ে গেছে, তখন জুয়াড়িদের ডেকে চা খাইয়েছে কমিশন।’
আরও পড়ুন:
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
মন্তব্য