ডলারের একক হার ঠিক করে যে বিনিময় মূল্য ঘোষণা করা হয়েছে, তা দেখে তাজ্জব বনে গেছেন অর্থনীতির গবেষক আহসান এইচ মনসুর। বলেছেন, এই সিদ্ধান্তের কোনো মাথামুণ্ডু বুঝতে পারছেন না তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তের আলোকে ব্যাংকারদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্যাংকার্স বাংলাদেশ বা এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রার ডিলার ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন বা বাফেদা ঠিক করেছে যে, এখন থেকে রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে ডলারের বিনিময় হার হবে সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা। তবে রপ্তানি আয় নগদায়ন হবে সর্বোচ্চ ৯৯ টাকায়। আমদানির ঋণপত্র নিষ্পত্তির সময় ডলারের দাম হবে সর্বোচ্চ ১০৪ টাকা ৫০ পয়সা।
প্রতিটি ক্ষেত্রে এত পার্থক্য দেখে হতবুদ্ধি হয়ে গেছেন অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর। তিনি নিউজবাংলাকে বলেছেন, ‘এটা কোনো ভালো সিদ্ধান্ত হয়নি। এই সিদ্ধান্তে বাজার স্থিতিশীল না হয়ে উল্টো আরও অস্থির হয়ে উঠতে পারে। এই সিদ্ধান্তের কোনো মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝতে পারছি না আমি।’
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্ববাজারে পণ্য ও জ্বালানি মূল্যের উল্লম্ফনের কারণে দেশে দেশে ডলারের বিপরীতে মুদ্রার যে অবমূল্যায়ন সমস্যা দেখা দিয়েছে, তা থেকে বাদ নয় বাংলাদেশও। প্রায় দেড় বছর ডলারের দর ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল থাকলেও গত বছরের আগস্ট থেকে বাড়তে বাড়তে আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে তা উঠে গেছে ৯৫ টাকায়, কিন্তু খোলাবাজারে একপর্যায়ে কেনাবেচা হতে থাকে ১২০ টাকায়।
সেখান থেকে কিছুটা কমলেও ডলারের দর নিয়ে উদ্বেগ এখনও যায়নি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ৭ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না।
এই পরিস্থিতিতে নতুন যে সিদ্ধান্ত, তাতে জটিলতা আরও বাড়বে বলে মনে করেন গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান মনসুর। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত না নিয়ে অদ্ভুদ-উদ্ভট একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাফেদা-এবিবি। এই সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই ভালো ফল দেবে না। বাজারের চাহিদা-জোগান বিবেচনায় নিয়ে একটা বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তা না হলে বাজারে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে না।’
তিনি বলেন, ‘টাকার বিপরীতে ডলারের অস্বাভাবিক উল্লম্ফন আমাদের অর্থনীতিকে প্রতি মুহূর্তে তছনছ করে দিচ্ছে। সংকটের মধ্যে ফেলে দিয়েছে আমাদের।
‘আমদানি কমাতে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। কিন্তু কিছুই হচ্ছে না। ডলার ছুটছে তো ছুটছেই। কার্ব মার্কেটে ডলারের দর ফের বাড়তে শুরু করেছে। গতকাল (রোববার) প্রতি ডলার ১১৪ টাকার বেশি দরে বিক্রি হয়েছে।’
বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত কী হতে পারত- এ প্রশ্নের উত্তরে দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে (আইএমএফ) গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করা আহসান মনসুর বলেন, ‘এই মুহূর্তে রেমিট্যান্স, রপ্তানি, আমদানির ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা দাম বেঁধে দেয়ার কোনো মানে হয় না। আমি মনে করি, এই তিন ক্ষেত্রে ডলারের একক দর নির্ধারণ করে দেয়া উচিত। ব্যবধান খুব বেশি হলে ২ শতাংশ থাকতে পারে।’
তার মতে, ডলারের একক দর এখন ১০৫ টাকা বেঁধে (ফিক্সড) দেয়া উচিত। রেমিট্যান্স, রপ্তানি ও আমদানির ক্ষেত্রে দরের ব্যবধান বা পার্থক্য এক থেকে দেড় টাকা (খুব বেশি হলে ২ শতাংশ) হওয়া উচিত। তাহলেই বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।
ডলারের দর এখন কত
বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দর ৯৫ টাকা ঠিক করে দিলেও রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক রোববার ১০৪ টাকা দরে নগদ ডলার বিক্রি করেছে। জনতা ব্যাংক থেকে কিনতে লেগেছে ১০৩ টাকা ৯৫ পয়সা। বেসরকারি সিটি ব্যাংক নিয়েছে ১০৭ টাকা। ইস্টার্ন ব্যাংক বিক্রি করেছে ১০৪ টাকায়।
এদিন খোলাবাজারে প্রতি ডলার ১১৪ টাকা ২০ পয়সায় বিক্রি হয়েছে।
এর আগে মে মাসে খোলাবাজারে ডলারের দর ১০০ টাকা ছাড়িয়েছিল। পরে অবশ্য ১০০ টাকার নিচে নেমে আসে। বেশ কিছুদিন ৯৬ থেকে ৯৮ টাকায় লেনদেন হয়। আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তা ফের ১০০ টাকা ছাড়ায়।
করোনার সময় ডলার কিনে দর ধরে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংক এখন বেচে দর কমাতে চাইছে
করোনা মহামারির কারণে ২০২০-২১ অর্থবছরজুড়ে আমদানি বেশ কমে গিয়েছিল। কিন্তু প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ে উল্লম্ফন দেখা যায়। সে কারণে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়ে যায়। সে পরিস্থিতিতে ডলারের দর ধরে রাখতে ওই অর্থবছরে বাজার থেকে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার কিনেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কিন্তু আগস্ট থেকে দেখা যায় উল্টো চিত্র। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে আমদানি ব্যয়। রপ্তানি বাড়লেও কমতে থাকে রেমিট্যান্স। বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভও কমতে থাকে। বাজারে ডলারের চাহিদা বেড়ে যায়; বাড়তে থাকে দাম। বাজার স্থিতিশীল রাখতে আগস্ট থেকে ডলার বিক্রি শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক, চলে পুরো অর্থবছর।
সেই ধারাবাহিকতায় চাহিদা মেটাতে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরেও ডলার বিক্রি অব্যাহত রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশি মুদ্রা টাকার বিপরীতে আমেরিকান মুদ্রা ডলারের দৌড় থামাতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করেই চলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত (২ মাস ১১ দিন) ২৭০ কোটি (২.৭০ বিলিয়ন) ডলার বিক্রি করা হয়েছে। এর পরও বাজারে ডলারের সংকট কাটছে না।
তবে চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্সপ্রবাহ ফের বাড়তে শুরু করেছে। একই সঙ্গে আমদানি ব্যয়ও কমা শুরু করেছে। তবে এর মধ্যেও গত ২৬ মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের রিজার্ভ ৩৭ বিলিয়নের ঘরে নেমে গেছে।
আরও পড়ুন:স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন করেছে এনআরবিসি ব্যাংক।
১৭ মার্চ দিবসটি উপলক্ষে প্রধান কার্যালয়সহ সারাদেশের বিভিন্ন শাখা-উপশাখার মাধ্যমে হতদরিদ্র, এতিম, পথশিশু ও শিশু-কিশোরদের মধ্যে ইফতার সামগ্রী এবং বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই বিতরণ করা হয়েছে।
এসব কর্মসূচিতে রংপুরের মিঠাপুকুরের সংসদ সদস্য জাকির হোসেন সরকার ও এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল সহ ব্যাংকের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশুদিবস উপলক্ষে মিঠাপুকুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে শিশু-কিশোরদের নিয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদানসহ অংশগ্রহণকারী শিশু-কিশোরদের বঙ্গবন্ধুর জীবনী, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় এমপি জাকির হোসেন সরকার বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হতো না। তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই শোষণের নাগপাশ ছিড়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। শিশু-কিশোরদেরকে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস সম্পর্কে জানানোর জন্য এনআরবিসি ব্যাংকের এই কর্মকান্ড সত্যই প্রশংসনীয়।
এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল বলেন, বাংলাদেশের রূপকার ও বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার এনে দেওয়া স্বাধীনতা সত্যিকার অর্থে স্বার্থক হবে যখন বাংলার প্রতিটি মানুষ অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে কাজ করছে এনআরবিসি ব্যাংক। দারিদ্রমুক্ত, ক্ষুধামুক্ত বাংলা গড়ার লক্ষে প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানুষের দোরগোড়ায় গিয়ে এনআরবিসি ব্যাংক ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। ঘরে বসে মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা এবং গ্রামকে শহরায়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে বিনাজামানতে স্বল্পসুদে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ করছে এনআরবিসি ব্যাংক।
এদিকে রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন এতিম খানার এতিম শিশু, হতদরিদ্র ও পথশিশুদের মাঝে ইফতার বিতরণ করা হয়েছে। একই সাথে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহিদ সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। প্রেস রিলিজ
একীভূত করার লক্ষ্যে বেসরকারি খাতের পদ্মা ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে এক্সপোর্ট ইম্পোর্ট ব্যাংক অফ বাংলাদেশ (এক্সিম ব্যাংক)। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের উপস্থিতিতে এই সমঝোতা স্মারকে সই করেন এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফিরোজ হোসেন ও পদ্মা ব্যাংকের এমডি তারেক রিয়াজ খান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এক্সিম ব্যাংক ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্যাংকস (বিএবি)-এর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, পদ্মা ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিমসহ তিন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ায় মঙ্গলবার থেকে পদ্মা ব্যাংকের কার্যক্রম এক্সিম ব্যাংক নামে চলবে। একীভূত ব্যাংকটি বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হবে।
চুক্তি স্বাক্ষর শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে দুই পদ্ধতিতে একীভূতকরণ হয়ে থাকে। এর একটি হলো একুইজিশন (অধিগ্রহণ), অন্যটি মার্জ (একত্রিত করা)।
‘আমরা পদ্মা ব্যাংককে একুইজিশন করিনি, মার্জ করেছি। এর ফলে পদ্মা ব্যাংকের সব দায়-দেনা এখন এক্সিম ব্যাংক নিয়ে নিয়েছে। পদ্মা ব্যাংক আর থাকছে না। একীভূত করার মাধ্যমে ব্যাংকটির কার্যক্রম চলবে এক্সিম ব্যাংকের নামে। দুই ব্যাংকের পর্ষদ আলোচনার পর আজকে (সোমবার) এ বিষয়ে নীতিগত সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হলো। এই মার্জ বাস্তবায়নে আরও ৩-৪ মাস সময় লাগতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘পদ্মা ব্যাংক একীভূত করার ক্ষেত্রে সরকারের কোনো চাপ ছিল না। আমরা এটা করেছি দেশের স্বার্থে, দেশের অর্থনীতির স্বার্থে। পদ্মা ব্যাংককে একীভূত করা হলেও আমানতকারীদের কোনো সমস্যা হবে না, সবার আমানতই নিরাপদে থাকবে। পদ্মা ব্যাংকের আমানতকারীরা এক্সিম ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পারবেন।’
নজরুল ইসলাম মজুমদার আরও বলেন, ‘পদ্মা ব্যাংককে একীভূত করার কারণে নতুন কার্যক্রম চলবে এক্সিম ব্যাংকের নামে। একীভূত করা হলেও ব্যাংকটির কেউ চাকরি হারাবেন না। পদ্মা ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগে প্রায় ১২শ’ কর্মী রয়েছেন। তাদের কারও চাকরি যাবে না। সবাই কর্মরত থাকবেন এক্সিম ব্যাংকের হয়ে। আমাদের আমানতকারী ও শেয়ারহোল্ডারদেরও কোনো ক্ষতি হবে না। সবকিছু আগের মতোই চলবে।’
চুক্তির বিভিন্ন দিক নিয়ে পরে সংবাদ সম্মেলন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক।
তিনি বলেন, ‘ডিফল্টারদের পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। দুটি অডিট ফার্ম নিয়োগ করা হবে। অডিটের মাধ্যমে পরিচালকদের দায়-দেনাও উঠে আসবে। আইনি প্রক্রিয়া ফলো করে আমরা সামনের দিকে আগাবো। যত দ্রুত সম্ভব দুটি ব্যাংক মার্জ হয়ে এক্সিম ব্যাংকে পরিণত হবে।’
আরও পড়ুন:ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ১৭ মার্চ, ২০২৪ রোববার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোববার এ কথা জানানো হয়।
ব্যাংকের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ব্যাংকের ডাইরেক্টর বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন ও নাসির উদ্দিন, এফসিএমএ এবং অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর আলতাফ হুসাইন।
বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে যাচ্ছে চতুর্থ প্রজন্মের পদ্মা ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের উপস্থিতিতে একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শুরু করতে ব্যাংক দুটি একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করবে।
সোমবার ওই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে দুই ব্যাংকের উদ্যোক্তারাও উপস্থিত থাকবেন।
পদ্মা ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার বিষয়ে বৃহস্পতিবার এক্সিম ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। একীভূত হওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এদিন দুপুরের পর পরিচালনা পর্ষদের সভা ডাকে পদ্মা ব্যাংকও। এ সভায় ব্যাংক দুটি একীভূত হওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানা গেছে।
ব্যাংক দুটি একীভূতকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক স্ নিয়মকানুন ও ব্যাংকিং বিধিমালা সঠিকভাবে অনুসরণ করেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘কীভাবে এই একীভূত হওয়ার কার্যক্রম সম্পন্ন হবে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা ও পরামর্শক্রমে দুই ব্যাংকের আইনজীবী মিলে ঠিক করবেন। এ নিয়ে সোমবার একটি সমঝোতা চুক্তি হবে। ওই চুক্তির পর একীভূত হওয়ার কার্যক্রমের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
২০১৩ সালে চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংক হিসেবে অনুমোদন পায় সাবেক ফারমার্স ব্যাংক। প্রতিষ্ঠার মাত্র তিন বছর পর বেঁচে থাকার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল ব্যাংকটি। ফলে আওয়ামী লীগের প্রাক্তন প্রেসিডিয়াম সদস্য মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে ২০১৭ সালে ব্যাংকটির বোর্ড ভেঙে দেয়া হয়। তখন ফারমার্স ব্যাংককে আর্থিক মন্দা থেকে উদ্ধার করতে সরকার একটি আর্থিক লাইফলাইন নিয়ে পদক্ষেপ নেয়।
ফারমার্স ব্যাংকের নাম বদলে করা হয় পদ্মা ব্যাংক। ২০১৮ সালে পদ্মা ব্যাংকের নতুন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন দেশের বিশিষ্ট শিল্পোদ্যোক্তা ও শীর্ষ ব্যবসায়ী ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত। তার সুদক্ষ নেতৃত্বে ব্যাংকটি অনেক ক্ষেত্রেই সফলতা অর্জন করে। যেমন- ৯০০ কোটি টাকা নগদ আদায়, ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করা। পাশাপাশি ব্যক্তি এবং করপোরেট অ্যাকাউন্টের বিপরীতে ৪ হাজার ১০০ কোটি টাকা প্রদান করা। স্বতন্ত্র এবং ক্ষুদ্র আমানত ধরে রাখার হার ছিল ন্যূনতম ৫০ শতাংশ।
এ ছাড়া ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের নেতৃত্বে ব্যাংকটির কার্যক্রম পরিচালনায় বেশ কিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে ক্রেডিট অ্যাডমিনসহ লেনদেনের কেন্দ্রীয়করণ, ৩টি নতুন শাখা ও ১৪টি উপশাখা চালু করা, ইসলামী ব্যাংকিং সিস্টেম প্রবর্তন করা, বাংলাদেশ অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউস (বিএসিএইচ) এবং রিয়েল-টাইম গ্রোস সেটেলমেন্টের (আরটিজিএস) মাধ্যমে লেনদেন নিষ্পত্তিকরণ এবং কিউআর কোড, পদ্মা ওয়ালেট, ই-চালান ইত্যাদি চালু করা।
প্রসঙ্গত, পদ্মা ব্যাংককে অন্য একটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার নিমিত্তে ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত এ বছরের জানুয়ারি মাসে পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে বিরতি নেন এবং সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিমকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান-এর দায়িত্ব দেয়া হয়।
৪ মার্চ ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্যাংকসের (বিএবি) একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে গভর্নর জানান, চলতি বছরের মধ্যে ৭ থেকে ১০টি দুর্বল ব্যাংককে সবল বা ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা হতে পারে।
এক্সিম ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯৯ সালে। ২০০৪ সালে ব্যাংকটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। সবশেষ বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারে এক্সিম ব্যাংকের শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ১০ টাকা। এদিন ব্যাংকটির শেয়ারের দাম ১ শতাংশের মতো বেড়েছে।
আরও পড়ুন:নারী উদ্যোক্তা ও কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতে গ্যারান্টি সুবিধা প্রদানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি।
ক্ষুদ্র শিল্পের কাঙ্ক্ষিত বিস্তার, কর্মসংস্থান সৃষ্টি তথা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে নারী উদ্যোক্তা এবং কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতে ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধা প্রদানের জন্য মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে দুটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
চুক্তি দুটির অধীনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধা গ্রহণ করে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক নারী উদ্যোক্তা এবং কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতে জামানতবিহীন বিনিয়োগ করতে সক্ষম হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার এবং নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিনের উপস্থিতিতে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ হাবিব হাসনাত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ক্রেডিট গ্যারান্টি ডিপার্টমেন্টের পরিচালক নাহিদ রহমান চুক্তি দুটি স্বাক্ষর করেন। এ ছাড়াও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং বিনিয়োগ বিভাগের প্রধান এস এম মিজানুর রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ব্যাংকিং খাতে ব্যাংকিং অ্যাপ ‘সেলফিন’ ব্যবহারের মাধ্যমে ঢাকা ওয়াসার সর্বোচ্চ বিল সংগ্রহে প্রথম পুরস্কার অর্জন করেছে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডিএন্ডসি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, ১০ মার্চ প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ঢাকা ওয়াসা আয়োজিত ‘বিল কালেকশন অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান অনুষ্ঠানে ইসলামী ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার নিকট ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট হস্তান্তর করেন।
ঢাকা ওয়াসার ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও প্রকৌশলী তাকসিম এ খানের সভাপতিত্বে এতে এলজিআরডিএন্ডসি মন্ত্রণালয়ের সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার ও ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. সুজিত কুমার বালা।
এ সময় এলজিআরডিএন্ডসি মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন নির্বাহী ও কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। প্রেস রিলিজ
অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির হার সন্তোষজনকে পর্যায়ে উন্নীতকরণে সোনালী ব্যাংক পিএলসির উদ্যোগে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের কনফারেন্স কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ব্যাংকের সিইও অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আফজাল করিম।
ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মীর মোফাজ্জল হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির হার সন্তোষজনক পর্যায়ে উন্নীত করার লক্ষ্যে কৌশল ও কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়।
সভায় অন্যদের মধ্যে ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টরবৃন্দ ও জেনারেল ম্যানেজারবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশ নেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
মন্তব্য