দরপতন নিয়ে নতুন সপ্তাহ শুরু করল পুঁজিবাজার। যতগুলো কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে, কমেছে তার পাঁচ গুণ। ফ্লোর প্রাইসে ঠেকিয়ে রাখা গেছে আরও শতাধিক কোম্পানির শেয়ারদর।
পুঁজিবাজারে এই চিত্রের মধ্যে ব্যতিক্রম বেক্সিমকো গ্রুপ, যে গ্রুপের চারটি কোম্পানির প্রতিটির দর বেড়েছে। শুধু তাই নয়, চারটি কোম্পানি যেসব খাতে, সেসব খাতে একটি ছাড়া বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানিগুলোর দরই বেড়েছে বেশি।
রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসইতে বেড়েছে ৪৫টি কোম্পানির দর, বিপরীতে কমেছে ২১৯টির। ১০৯টি লেনদেন হয়েছে আগের দিনের দরে, যেগুলোর সিংহভাগের দাম কমার সুযোগই নেই। কারণ, সেগুলো ফ্লোর প্রাইসে লেনদেন হচ্ছে।
এতগুলো কোম্পানির দরপতনের মধ্যেও ডিএসইর সূচক কমেছে ২১ পয়েন্ট। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট যোগ করেছে যেসব কোম্পানি, তার মধ্যে চারটিই বেক্সিমকো গ্রুপের।
সব কোম্পানির মধ্যে লেনদেনে সবাইকে ছাড়িয়ে বেক্সিমকো লিমিটেড, যেটি বিবিধ খাতের একটি কোম্পানি। এই খাতের যত কোম্পনি আছে, তার মধ্যে কেবল এটির দরই বেড়েছে ৬ শতাংশের বেশি।
এই কোম্পানিটি সূচকে যোগ করেছে ৯.২৩ পয়েন্ট।
ব্যাংক খাতে একটি মাত্র কোম্পানির শেয়ারদর ৩ শতাংশের বেশি বেড়েছে। সেটি হলো বেক্সিমকো গ্রুপের আইএফআইসি ব্যাংক।
এই কোম্পানিটি সূচকে যোগ করেছে ১.২৯ পয়েন্ট।
ওষুধ ও রসায়ন খাতে বড় মূলধনি কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে বেক্সিমকো ফার্মার। এর চেয়ে বেশি দাম বেড়েছে কেবল একটি কোম্পানির। সেটি হলো স্বল্প মূলধনি কোহিনূর কেমিক্যালস।
এই কোম্পানিটি সূচকে যোগ করেছে ৩.৯৩ পয়েন্ট।
সিরামিক খাতে বেক্সিমকো গ্রুপের শাইনপুকুর সিরামিকসের দর বেড়েছে এক দিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততটাই, যদিও এই খাতে বাকি প্রায় সব কটির দর কমেছে।
কোম্পানিটি সূচকে যোগ করেছে ০.৯৫ পয়েন্ট।
সব মিলিয়ে চারটি কোম্পানি সূচকে যোগ করেছে ১৫.৪০ পয়েন্ট।
কেবল সূচক বা শেয়ারদর বৃদ্ধি নয়, সর্বাধিক লেনদেন হওয়া ২০টি কোম্পানির মধ্যেও আছে এই চারটি। এর মধ্যে শীর্ষে থাকা বেক্সিমকো লিমিটেডে হাতবদল হয়েছে ২৫১ কোটি ৮৭ লাখ টাকারও বেশি। তৃতীয় অবস্থানে থাকা শাইনপুকুর সিরামিকসে লেনদেন হয়েছে ৬৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
লেনদেনের পঞ্চম স্থানে থাকা বেক্সিমকো ফার্মায় হাতবদল হয়েছে ৪৫ কোটি ১২ লাখ টাকা।
শীর্ষ বিশে থাকা ব্যাংক খাতের একমাত্র কোম্পানি হিসেবে আইএফআইসির শেয়ার হাতবদল হয়েছে ১৮ কোটি ৭২ লাখ টাকার। লেনদেনের তালিকায় কোম্পানিটির অবস্থান ষোড়শ।
সব মিলিয়ে এই চারটি কোম্পানিতে লেনদেন হয়েছে ৩৮২ কোটি ৪৪ লাখ ১২ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ২২.৬০ শতাংশ।
দর হারালেও ওরিয়ন গ্রুপে তুমুল আগ্রহ
গত তিন মাসে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে ওরিয়ন গ্রুপের তিনটি কোম্পানির। তবে নানা আলোচনার পর এদিন তিনটি কোম্পানিই দর হারালেও লেনদেনের দিকে এই খাতের প্রাধান্য দেখা গেছে।
লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ফার্মায় হাতবদল হয়েছে ২০১ কোটি ২৫ লাখ টাকার।
টানা বাড়তে থাকা কোম্পানিটির শেয়ারদর কিছুটা কমলেও দিনের শুরুতে দিয়েছিল লাফ। আগের দিন ১২৫টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন শেষ করা কোম্পানিটির দর এক পর্যায়ে ১৩১ টাকা ৬০ পয়সায় উঠে যায়। পরে অবশ্য কমতে কমতে ১২০ টাকা ৩০ পয়সায় নামে। শেষ পর্যন্ত ১২৩ টাকা ৩০ পয়সায় শেষ করে লেনদেন।
তিন মাসেরও কম সময়ে ৭৯ টাকা থেকে ৪১৯ টাকায় উঠে যাওয়া ওরিয়ন ইনফিউশন এদিন দর হারিয়েছে ২.৭২ শতাংশ। তবে শীর্ষ লেনদেনের তালিকায় এই কোম্পানিটির অবস্থান ছির ষষ্ঠ স্থানে।
শুরুতে অবশ্য দর বেড়ে ৪৩৭ টাকা ৯০ পয়সায় উঠে গিয়েছিল। পরে নেমে আসে ৩৮২ টাকা ৮০ পয়সায়। দিন শেষ করে ৪০৭ টাকা ৬০ পয়সায়।
এই গ্রুপের আরেক কোম্পানি বিকন ফার্মার বড় দরপতন হয়েছে। বৃহস্পতিবার দর ছিল ৩২৭ টাকা ৯০ পয়সা। সেখান থেকে কমে গেছে ২৬ টাকা। শতকরা হিসেবে কমেছে ৭.৯৩ শতাংশ।
ওরিয়ন গ্রুপের তিনটি কোম্পানিতে লেনদেন হয়েছে মোট ২৫৮ কোটি ৬৬ লাখ ৮৯ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ১৫.২৯ শতাংশ।
অর্থাৎ বেক্সিমকো ও ওরিয়ন গ্রুপে লেনদেন হয়েছে মোট ৬৪০ কোটি ৫৯ লাখ ২৮ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৩৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
‘এটা কারসাজি’
এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সূচকের উত্থানের পেছনে গুটি কয়েক কোম্পানির ভূমিকার মধ্যে ঢালাও দরপতন নিয়ে হতাশ বিনিয়োগকারীরা।
মাসুম জামান নামে এক বিনিয়োগকারী বলেন, ‘বাজারে এত টার্নওভার, এগুলোতে এমনি এমনি হচ্ছে না। মানুষকে দেখাচ্ছে যে, মার্কেট এখন ভালো। সবগুলারই তো দাম কমছে, কিন্তু এমন হওয়ার কথা ছিল কি?’
ট্রেজার সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নির্দিষ্ট কয়েকটা শেয়ারের ওপর ভর করে টার্নওভারটা চলছে। এক্ষেত্রে অনেকেই মনে করছেন যে, তার ইনস্ট্রুমেন্ট হোল্ড করে সময় নষ্ট হচ্ছে। এই ধারণা থেকে তারা যেসকল ইনস্ট্রুমেন্টের ভলিউম, টার্নওভার বেশি, সেগুলোতে আসছেন, পারচেজ করছেন। এইভাবে তখন অন্যান্য স্টকগুলোর ওপরে একটা সেল প্রেসার আসছে। এ কারণে গেইনারের চেয়ে লুজারের সংখ্যা বেশি।’
তিনি বলেন, ‘এর কারণ হলো- একদিন, দুইদিন, তিনদিন দেখার পরে মানুষ অস্থির হতেই পারে। তারা তখন মনে করেন, অমুক স্টক চালু আছে, তাহলে সেটাতেই যাই। এই ধরনের বিনিয়োগকারী যারা, তারা হাতের স্টকটা বিক্রি করেই নতুন আরেকটা কিনবে। তখন দেখা যাচ্ছে, যেসব আইটেম একটু স্লো সেগুলোতে সেল প্রেসার আসছে। দর হারাচ্ছে।’
নাম প্রকাশের অনুরোধ জানিয়ে ডিএসইর এক ব্রোকার বলেন, ‘বর্তমান বাজারের যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে এতে সাধারণের টাকা না, কারণ সাধারণের টাকা দিয়ে এভাবে র্যালি সম্ভব না। এটা নির্দিষ্ট শ্রেণি বা গোষ্ঠী দ্বারা অর্গানাইজড ওয়েতে করানো হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘একেক সময় একেক সেক্টরে র্যালি তৈরি করা হচ্ছে। এভাবে মানুষের মনে এই ধারণা বদ্ধমূল করা হচ্ছে যে, একেক সময় একেকটা খাত পারফর্ম করবে। এতে করে নির্ধারিত আইটেম মানুষকে খাওয়ানো সহজ হবে। আর সেটাই করা হচ্ছে। এভাবে করলে মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হবে।’
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ দর বেড়েছে আরেএসআরএম স্টিলের। সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ২৩ টাকা ১০ পয়সায়। আগের দিনে লেনদেন হয়েছিল ২১ টাকায়।
শাইনপুকুর সিরামিকস রয়েছে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। শেয়ারের দর ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়ে লেনদেন হয়েছে ৫০ টাকা ৩০ পয়সায়।
৭ দশমিক ৬২ শতাংশ দর বেড়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইয়াকিন পলিমার। সর্বশেষ শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ২৫ টাকা ৪০ পয়সায়। আগের দিনে ক্লোজিং প্রাইস ছিল ২৩ টাকা ৬০ পয়সা।
এ ছাড়া দর বৃদ্ধির সেরা দশে জায়গা করে নিয়েছে- কোহিনূর কেমিক্যাল, সি পার্ল, বেক্সিমকো, আইডিএলসি, এসিআই ফর্মূলেশনস, ইস্টার্ন হাউজিং ও ইট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন।
দর পতনের শীর্ষ ১০
এই তালিকার শীর্ষে ছিল বিকন ফার্মা। শেয়ারদর ৭ দশমিক ৯২ শতাংশ কমে সর্বশেষ ৩০১ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়।
পতনের তালিকায় পরের স্থানে রয়েছে সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স। ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ দর কমে লেনদেন হয়েছে ৬৪ টাকা ৭০ পয়সায়।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দর হারিয়েছে প্রাইম ফাইন্যান্স। ৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ কমে শেয়ারটি সর্বশেষ ১২ টাকায় হাতবদল হয়।
দর কমার শীর্ষ দশে থাকা অন্য কোম্পানিগুলো ছিল- ফাস ফাইন্যান্স, পেপার প্রসেসিং, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, ইন্দোবাংলা ফার্মা, সিলভা ফার্মা, ইবনে সিনা ফার্মা ও আইপিডিসি।
কোন খাত কেমন করল
শীর্ষে রয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। লেনদেন হয়েছে ৪৪১ কোটি ৪০ লাখ বা ২১ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
দরবৃদ্ধি হয়েছে ৭টি কোম্পানির। বিপরীতে দর কমেছে ১৯টির। পাঁচটির লেনদেন হয়েছে আগের দরে।
লেনদেনের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিবিধ খাত। ৩৩৪ কোটি ১০ লাখ টাকা লেনদেনের দিনে এ খাতেও দরপতন হয়েছে বেশি। ৮৯টির দর পতনের বিপরীতে বেড়েছে দুটির ও অপরিবর্তিত ছিল চারটির।
১৪৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা লেনদেন করে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে প্রকৌশল খাত। ৯টি কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে ৫টির দর অপরিবর্তিত ছিল এবং ২৮টির দরপতন হয়েছে।
পরের অবস্থানে থাকা বস্ত্র খাতে লেনদেন হয়েছে ১২৫ কোটি ৯৪ লাখ। ৪১টি কোম্পানির দরপতনের বিপরীতে ১টির বেড়েছে। ১৬টির দর অপরিবর্তিত ছিল।
পঞ্চম অবস্থানে থাকা সিরামিক খাতে লেনদেন হয়েছে ৮০ কোটি ৬০ লাখ টাকার। এ খাতে ৩টি কোম্পানির দর কমেছে। আর একটি করে কোম্পানির দর বৃদ্ধি ও অপরিবর্তিত ছিল।
আরও পড়ুন:তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
মন্তব্য