৭৮ পয়েন্ট বেড়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত ১৮ পয়েন্ট কমে লেনদেন শেষ করার মধ্য দিয়ে নেতিবাচক যে ইঙ্গিত পুঁজিবাজার আগের দিন দিয়েছিল, সোমবার সেটি আরও জোরাল হলো।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবসে সূচক পড়ল ৫৮ পয়েন্ট, যদিও এক পর্যায়ে কমে গিয়েছিল ৬৮ পয়েন্ট।
এদিন বেড়েছে কেবল ৩৮টি কোম্পানির দর, বিপরীতে কমেছে ২৬৩টির। আগের দিনের দরে হাতবদল হয়েছে ৬৮টি কোম্পানির শেয়ার, যেগুলোর সিংহভাগই ফ্লোর প্রাইসে হাতবদল হয়েছে।
গত ৩১ জুলাই সব শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পতন। গত ১০ আগস্ট ৭৮ পয়েন্ট সূচকের পতন হয়েছিল অর্থনীতি নিয়ে নানা উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ায়।
তবে এরপর থেকে ডলারের বিপরীতে টাকার শক্তি ফিরে পাওয়া, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধিসহ নানা ইস্যুতে গত ১৪ আগস্ট থেকে পুঁজিবাজার টানা বাড়তে থাকে।
সেদিন থেকে ছয় কর্মদিবসে ১৬৭ পয়েন্ট সূচকের উত্থানের পর ২৪ আগস্ট ৩৫ পয়েন্ট দরপতনের মধ্য দিয়ে একদিন বিশ্রাম নেয় পুঁজিবাজার।
এরপর থেকে শুরু হয় আরেক দৌড়। আবার টানা ছয় দিন বাড়ে সূচক। এই সময়ে যোগ হয় ২২৮ পয়েন্ট।
এর মধ্যে রোববার লেনদেনের শুরুতে যে চিত্র দেখা দেয়, সেটি এক বছর আগে ১২ সেপ্টেম্বর বাজার সংশোধন শুরু হওয়ার দিন দেখা গিয়েছিল। আগের দিন বেলা সোয়া ১১টার দিকে সূচক ৭৮ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হচ্ছিল। দিনের সর্বোচ্চ এই অবস্থান থেকে ৯৬ পয়েন্ট কমে লেনদেন শেষ হয় ১৮ পয়েন্ট সূচক হারিয়ে, যদিও এক পর্যায়ে সূচক পড়েছিল ১০৫ পয়েন্ট।
২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর এমন একটি চিত্র দেখা গিয়েছিল, যেদিন থেকে পুঁজিবাজার মূলত সংশোধনে যায়। সে সময়ও পুঁজিবাজার ক্রমেই বাড়ছিল। আর লেনদেন শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যে সূচক বেড়ে যায় ৭৮ পয়েন্ট। সেখান থেকে অবিশ্বাস্যভাবে ১২৪ পয়েন্ট হারিয়ে শেষ পর্যন্ত সূচক কমে ৫৬ পয়েন্ট।
সেদিন সংশোধন শুরু হলেও বড় মূলধনি কিছু কোম্পানির হাত ধরে সূচক বাড়ছিল। তবে অক্টোবরের সেই দিন থেকে তাও কমতে তাকে। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির মধ্যে মতভেদ, বছর শেষে বিনিয়োগ সমন্বয়সহ নানা কারণে বাজার যখন চাপে, তখন গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ হামলার পর শুরু হয় ধস।
রোববারের লেনদেনের এই বিষয়টি স্বাভাবিক ঠেকছিল না। পরে দেশের বাইরে অবস্থানকারী বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী-রুবাইয়াত উল ইসলাম জানান, তারা জানতে পেরেছেন, ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়া হচ্ছে, এমন একটি গুজব ছড়িয়েছে। তিনি নিশ্চিত করেন, এটি উঠে যাচ্ছে না।
তবে এই নিশ্চয়তা দেয়ার পরদিন পতন আরও বড় হলো। লেনদেন শুরু হয়েছিল যদিও ইতিবাচক প্রবণতা নিয়ে, কিন্তু পতন শুরু হতে দেরি হয়নি।
শেয়ারগুলো দর হারানোর পাশাপাশি বড় পতন হয়েছে লেনদেনেও। আগের দিন চলতি বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে লেনদেন হলেও সেটি নেমে এসেছে দেড় হাজার কোটি টাকার নিচে। সাত কর্মদিবসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন এটি।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ এদিনও ফ্লোর প্রাইস চালু রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানান। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘কমিশন ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার কথা ভাবছেও না। অদূর ভবিষ্যতেও ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই। এটি অনির্দিষ্টকালের জন্য চলবে। যদি কেউ এ বিষয়ে কথা বলে, তাহলে বুঝতে হবে কেউ গুজব ছড়াচ্ছে। আমি বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ দিচ্ছি, তারা ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার কোনো কথা যেন বিশ্বাস না করে।’
ফ্লোর প্রাইস ইস্যু ছাড়াও বাংলাদেশে ব্যাংকের রিজার্ভ ৩৯ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে যাওয়া এবং বৈদেশিক বাণিজ্যের বিল পরিশোধের পর সেটি ৩৮ বিলিয়নের নিচে নামার যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে, সেটিও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব ফেলতে পারে।
আবার বিনিয়োগকারীদের মধ্যে গুজবে বিশ্বাস করে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি এর আগেও দেখা গেছে, সেটিও একটি কারণ হতে পারে।
আজ যতগুলো শেয়ারের দাম বেড়েছে কমেছে তার ছয় গুণের মতো। ৩৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ২৬৩টির। আর আগের দরেই লেনদেন হয়েছে ৬৮টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট।
তবে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সিম্পলি প্রফিট টেকিং। আর এর সঙ্গে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ার গুজবে কিছুটা প্যানিকড হয়েছে। এ ছাড়া তেমন কোনো কারণ নেই বাজার পতনের।’
কোন খাত কেমন
গতকাল চারটি খাতের লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়ালেও আজ মাত্র একটি খাতই এই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছে। মাত্র ৩৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধিতে পতনের পাল্লাই ভারী ছিল সব খাতে।
২০৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বা ১৪.৯৬ শতাংশ লেনদেনের মধ্য দিয়ে শীর্ষে রয়েছে প্রকৌশল খাত। আগের দিনেও শীর্ষে থাকা খাতটির লেনদেন ছিল ২৮৮ কোটি ১০ লাখ টাকা বা ১৩.৪০ শতাংশ।
গতকাল যেখানে ১৪টি কোম্পানির দর বেড়েছিল আজ সেখান মাত্র ২টির বেড়েছে। বিপরীতে ৩৭টির দর কমে ও ৩টির অপরিবর্তিত দামে লেনদেন হয়েছে।
আগের দিন ২০০ কোটির বেশি লেনদেন করেও চতুর্থ অবস্থানে থাকা বিবিধ খাত আজ ১৯১ কোটি ১০ লাখ বা ১৩.৯০ শতাংশ লেনদেন করেও তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
এ খাতের কোনো কোম্পানির দর বাড়েনি, বরং কমেছে ১০টির। আর আগের দরেই লেনদেন হয়েছে ৩টি কোম্পানির শেয়ার।
বস্ত্র খাতেও লেনদেন কমার সঙ্গে দরপতন হয়েছে ব্যাপক। ১৬৩ কোটি টাকা লেনদেনের দিনে দাম বেড়েছে মাত্র ৪টি কোম্পানির, বিপরীতে ১৬টির অপরিবর্তিত ও ৩৯টির দাম কমে লেনদেন হয়েছে।
রোববার দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতের অবস্থান নেমে এসেছে চারে। ১৬১ কোটি ৫০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৫টির দরবৃদ্ধি, ২২টির দরপতন ও ৪টির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এই চার খাতেই লেনদেন হয়েছে ১০০ কোটি টাকার বেশি।
আর লেনদেনের পঞ্চম অবস্থানে থাকা জ্বালানি খাতের মাত্র একটি কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। বিপরীতে ২২টির দর পতন হয়েছে। দিনভর লেনদেন হয়েছে ৮৭ কোটি ১০ লাখ টাকার।
ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা সেবা খাতের কোনো কোম্পানির দর বাড়েনি। তবে লেনদেন হয়েছে ৮১ কোটি ৪৮ লাখ টাকার।
এই বাইরে খাদ্য, জীবন বিমা, আইটি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে লেনদেন হয়েছে ৫০ থেকে ৮০ কোটির ঘর পর্যন্ত।
দর পতনের দিনে জীবন বিমায় ৭টি, খাদ্য ব্যাংক ও সাধারণ বিমা খাতে ৪টি করে, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ২টি, মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও টেলিযোগাযোগ খাতে একটি করে কোম্পানির দরবৃদ্ধি দেখা গেছে।
সূচক কমাল যারা
সবচেয়ে বেশি ৫ দশমিক ৮ পয়েন্ট সূচক কমেছে বেক্সিমকোর দর পতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪ দশমিক ৫২ পয়েন্ট কমেছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর কারণে। শেয়ার প্রতি দাম কমেছে শূন্য দশমিক ৮২ শতাংশ।
বেক্সিমকো ফার্মার দর ১ দশমিক ৭৭ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ২ দশমিক ৬ পয়েন্ট।
এ ছাড়া আইডিএলসি, পাওয়ার গ্রিড, বসুন্ধরা পেপার, ইস্টার্ন হাউজিং, আইসিবি, গ্রামীণফোন ও ওরিয়ন ফার্মার দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ২৬ দশমিক ৪২ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ২ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে বিকন ফার্মা। শেয়ারটির দর ২ দশমিক ৩৮ শতাংশ দর বেড়েছে।
আইপিডিসির দর ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট।
সি পার্ল সূচকে যোগ করেছে ১ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ।
এর বাইরে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল, কোহিনূর কেমিক্যাল, পূবালী ব্যাংক, ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ওরিয়ন ইনফিউশন, কাশেম ইন্ডাস্টিজ ও ম্যারিকো সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ১১ দশমিক ২৮ পয়েন্ট।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ দর বেড়েছে সি পার্লের। শেয়ারটি সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৬২ টাকা ৮০ পয়সায়। আগের দিনে লেনদেন হয়েছিল ৫৭ টাকা ১০ পয়সায়।
সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স রয়েছে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। শেয়ারের দর ৬ দশমিক ৮০ শতাংশ বেড়ে লেনদেন হয়েছে ৬৭ টাকা ৫০ পয়সায়।
৫ দশমিক ৬৬ দর বেড়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আইপিডিসি। সর্বশেষ শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ৬৯ টাকায়। আগের দিনে ক্লোজিং প্রাইস ছিল ৬৫ টাকা ৩০ পয়সা।
দর বৃদ্ধির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে- কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজ, ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন, ফাইন ফুডস, ওরিয়ন ইনফিউশন, জেমিনি সি ফুড ও পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
দর পতনের শীর্ষ ১০
এই তালিকার শীর্ষে ছিল সোনারগাঁও টেক্সটাইল। শেয়ারটির দর ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ কমে সর্বশেষ ৬৫ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়।
ইস্টার্ন হাউজিং দর পতনের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল। শেয়ারটির দর ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ কমে লেনদেন হয়েছে ৯৪ টাকা ৭০ পয়সায়।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দর হারিয়েছে আরএসআরএম স্টিল। ৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ কমে শেয়ারটি সর্বশেষ ২০ টাকা ৬০ পয়সায় হাতবদল হয়।
দর কমার শীর্ষ দশে থাকা অন্য কোম্পানিগুলো ছিল- এসইএমএল এফবিএলএসএল গ্রোথ ফান্ড, বসুন্ধরা পেপার, অ্যাডভেন্ট ফার্মা, জিএসপি ফাইন্যান্স, ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট, ন্যাশনাল পলিমার ও ই-জেনারেশন।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
মন্তব্য