করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে ভারতের অর্থনীতিতে যে অন্ধকার ছাপ পড়েছিল, তা কাটতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনৈতিক দেশগুলোর তালিকায় দেশটির পেছনে পড়েছে যুক্তরাজ্য।
২০২১ সালের শেষ তিন মাসের হিসাবে যুক্তরাজ্যকে সরিয়ে ভারত এখন পৃথিবীর পঞ্চম বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তি। আর পঞ্চম থেকে যুক্তরাজ্যের অবস্থান এখন ষষ্ঠ।
অথচ গত এক দশক আগে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনৈতিক দেশের তালিকায় প্রথম দশের ভেতরেও ছিল না ভারত।
এর আগেও যুক্তরাজ্যকে ছাড়িয়ে পঞ্চম অর্থনৈতিক শক্তি হলেও ভারত নিজের অবস্থান ধরে রাখতে পারেনি।
এবার সহসাই যুক্তরাজ্যের পক্ষে ভারতকে টপকানো সম্ভব নয়। কারণ দেশটি এরই মধ্যে ৪০ বছরে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে, সেখানে ভারতীয় অর্থনীতি এ বছরও ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পূর্বাভাস মতে, ভারতের সামনে আছে কেবল যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান ও জার্মানি।
সম্প্রতি ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের কারণে পশ্চিমা দেশগুলো জ্বালানি ও খাদ্যের কারণে যে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে, ভারতকে তা মোকাবিলা করতে হচ্ছে না। দেশটি রাশিয়া থেকে সস্তায় জ্বালানি তেল, সার, খাদ্যশস্য কিনে চলেছে। একই সঙ্গে পশ্চিমাদের সঙ্গেও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ধরে রেখেছে।
ভারতের দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আম আদমি পার্টির (এএপি) পক্ষে আতিশির নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। দ্রুতই আনুষ্ঠানিকভাবে দলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে ঘোষণা দেয়া হবে। সে দেশের সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি এ খবর দিয়েছে।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করছেন। এরপরই দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আতিশি দায়িত্ব নেবেন বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার এএপি’র বিধায়কদের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বিধায়কদের বৈঠকে দলের নেতা দিলীপ পান্ডে প্রস্তাব করেন যে, নতুন মুখ্যমন্ত্রীর বিষয়ে অরবিন্দ কেজরিওয়াল সিদ্ধান্ত নেবেন। এএপির জাতীয় আহ্বায়ক আতিশির নাম প্রস্তাব করলে দলটির বিধায়করা সবাই উঠে দাঁড়ান এবং প্রস্তাবটি গ্রহণ করেন।
বর্তমানে দিল্লি সরকারের শিক্ষা ও গণপূর্ত বিভাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন আতিশি। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করা এই ব্যক্তি দিল্লির স্কুলগুলোতে শিক্ষার মান পরিবর্তনের জন্য ব্যাপকভাবে কাজ করছেন।
দুর্নীতির মামলায় সিসোদিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন ৪৩ বছর বয়সী আতিশি। কেজরিওয়াল ও সিসোদিয়া যখন কারাগারে ছিলেন, তখন আতিশি এএপি পার্টির সব ধরনের ইভেন্ট এবং মিডিয়াগুলোতে দলের অবস্থান স্পষ্ট করেন।
এর আগে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দলীয় সভায় হঠাৎ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিনি বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেবেন। মানুষের রায়ে যদি ফের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন, তাহলেই কেবল ওই চেয়ারে আবার বসবেন তিনি।
আবগারি দুর্নীতি মামলায় প্রায় ছয় মাস জেলে ছিলেন কেজরিওয়াল। কয়েকদিন আগেই ছাড়া পেয়েছেন তিনি। তারপর রোববার প্রথমবার দলীয় কার্যালয়ে যান এবং দলীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানেই হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন তিনি।
আরও পড়ুন:সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে কোন স্ট্যাটাসে আছেন অন্তর্বর্তী সরকার সেটি জানে না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা কোন স্ট্যাটাসে সেখানে অবস্থান করছেন সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত দিল্লির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে চায়নি ঢাকা।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশটিতে কোন স্ট্যাটাসে আছেন এবং আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে চেয়েছি কি না?- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানি না। আমি অফিশিয়ালি তাদের কোনো কিছু বলিনি।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। দেশ ছাড়ার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পাসপোর্টের মেয়াদ ৪৫ দিন পর শেষ হওয়ার কথা। পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি কোন প্রক্রিয়ায় সেখানে অবস্থান করবেন জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘সবকিছুই আইন দিয়ে চলে না। ভারত সরকার তাকে আশ্রয় দিয়েছে, তিনি সেখানে থাকছেন। আমাদের এটা সেভাবে দেখতে হবে।’
সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনসহ যা কিছু হচ্ছে তা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এ নিয়ে ভারতের মন্তব্য করা ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রতিবেশী দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তৃতীয় মেয়াদের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এস জয়শঙ্কর এসব কথা বলেন বলে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
নরেন্দ্র মোদির ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতি এবং বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জয়শঙ্কর বলেন, ‘সবসময় সবকিছু নিজের অনুকূলে থাকে না। কোথাও না কোথাও থেকে কিছু কথা আসতে থাকে। কেউ না কেউ কিছু একটা বলে ফেলে বা করে ফেলে। এটা হয়, স্বাভাবিক।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে যা হয়েছে সেটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাদের নিজস্ব রাজনীতি রয়েছে। আমরা বর্তমান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাব। তারা তাদের অবস্থান বুঝে নিক, সম্পর্কের মহত্ব বুঝুক। তাহলে প্রতিবেশীদের মধ্যকার সম্পর্কের মান ও মাত্রা অন্যরকম হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবেশী উভয়েই উভয়ের ওপর নির্ভরশীল হয়। আমাদের অন্য প্রতিবেশী দেশগুলোতেও আগে যেসব রাজনৈতিক ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়ে গেছে। বাংলাদেশেও অভ্যন্তরীণভাবে যা হওয়ার হবে। সেটা নিয়ে আমাদের মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
‘তবে দুই দেশের সম্পর্ক আমাদের দিক থেকে স্থিতিশীল রাখতে চাই, সামনে এগিয়ে নিতে চাই। আমাদের পারস্পরিক ভালো সহযোগিতা রয়েছে, আমাদের ভালো বাণিজ্য রয়েছে। জনগণের সঙ্গে জনগণের ভালো সহযোগিতা রয়েছে। আমরা সেই পথ ধরেই এগিয়ে যেতে চাই।’
ভারতের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, 'ভারতের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পররাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে কীভাবে এগিয়ে নেয়া যায়, আমাদের কূটনীতি ও অন্যান্য আলোচনা সেটাকে কেন্দ্র করেই হয়। সেসঙ্গে এটা আমাদেরও দায়িত্ব যে পৃথিবীতে শান্তি বজায় থাকুক। এটা আমাদের জন্যও প্রয়োজন।'
আরও পড়ুন:আফগানিস্তানের মধ্যাঞ্চলীয় দাইকুন্দি প্রদেশে বন্দুকধারীদের গুলিতে ১৪ জন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানায়।
হামলায় হতাহত লোকজন দাইকুন্দি প্রদেশের বাসিন্দা ছিলেন। হজযাত্রীদের স্বাগত জানাতে গিয়েছিলেন তারা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুফতি আবদুল মতিন কানি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
এদিকে বিদ্রোহী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের কাছে ইলিশ চেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে চিঠি দিয়েছেন ভারতের ব্যবসায়ীরা। বুধবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই ভারতে বাংলাদেশের ইলিশ আসতে থাকে। তবে এবার তাতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এমন অবস্থায় ফিশ ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন ইলিশ রপ্তানির জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পদ্মার ইলিশ এপারে এলে খুশি হন মৎস্য ব্যবসায়ীরাও। কারণ এই ইলিশ বিক্রি করে তাদের অনেকটাই লাভ হয়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে গোটা বিষয়টিতে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
হিন্দুস্তান টাইমস আরও জানিয়েছে, গত পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ আমদানি হয়েছে। এবারও সেই রীতি মেনে ভারতে ইলিশ পাঠানোর জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের কাছে আবেদন করেছে ফিশ ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ত্রিপুরা এবং আসামেও বাংলাদেশের ইলিশ রপ্তানি হয়ে এসেছে। বছর ভর এপার বাংলার মানুষ বাংলাদেশের ইলিশের জন্য মুখিয়ে থাকেন। আর বাংলাদেশের ইলিশ হলে তাদের পূজার আয়োজন একেবারে জমে যায়। গত বছরও এক হাজার ৩০০ টন ইলিশ গেছে বাংলাদেশ থেকে। তবে এবার কতটা ইলিশ আসবে, এমনকি আদৌ আসবে কিনা তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
বাংলাদেশের উন্নয়নে ভারতীয় লাইন অফ ক্রেডিট (এলওসি) প্রকল্পগুলো গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এগুলো অব্যাহত থাকবে বলে পুনর্ব্যক্ত করেছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘এগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প এবং আমরা এগুলো অব্যাহত রাখব।’
উপদেষ্টা এই প্রকল্পগুলো অগুরুত্বপূর্ণ মনে হওয়ার কোনো অবকাশ রাখেননি।
আলোচনাকালে ড. সালেহউদ্দিন ভারতীয় হাইকমিশনারকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য।’
ভারতের পক্ষ থেকে বিষয়টি স্বীকার করে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ড. সালেহউদ্দিন ভবিষ্যতে সহযোগিতার পারস্পরিক সুবিধার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সহযোগিতা বাড়বে এ প্রত্যাশায় রয়েছি।’
ভারতের বিদ্যমান তিনটি এলওসি প্রকল্পের বাস্তবায়ন ও বিতরণ চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং ভারতীয় পক্ষ এ বিষয়ে মতামত নিয়েছে।
ভারতকে প্রতিবেশী ও গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার উল্লেখ করে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, দুই দেশ তাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার উপায় খুঁজছে।
ভারতের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরে ড. সালেহউদ্দিন জোর দিয়ে বলেন, এগুলো বাংলাদেশের চাহিদার আলোকে শুরু করা হয়েছে। যদিও কিছু বিতরণ সমস্যা রয়েছে, আমরা সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করছি।’
ভবিষ্যতের জন্য ভারতীয় অর্থায়নের আওতায় নতুন প্রকল্পগুলোর সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমাদের যা আছে তা নিয়ে আমরা থেমে থাকব না। ভবিষ্যৎ প্রকল্প, সেগুলোর অর্থায়ন ও বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা চলছে।’
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার বিষয়টি স্বীকার করে এটি মোকাবিলা করা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন উপদেষ্টা।
তিনি আরও জানান, ভারতীয় হাইকমিশনার তাকে আশ্বাস দিয়েছেন যে উভয় পক্ষেরই যেন সুবিধা হয় এমনভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আরও মানসম্পন্ন রপ্তানিকে উৎসাহিত করার প্রচেষ্টা চলছে।
বাণিজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং গবেষণাগারের উন্নয়নে সহায়তা দিয়ে থাকে ভারত।
ভারত বাংলাদেশে তাদের কোনো এলওসি প্রকল্প বন্ধ করেনি জানিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ‘এই প্রকল্পগুলো চলমান এবং বিভিন্ন খাতে বিস্তৃত বড় উদ্যোগ। ঠিকাদাররা আবার কাজে ফিরবেন।’
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পৃক্ততার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ভার্মা বলেন, 'আমরা সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত রয়েছি এবং উপদেষ্টার সঙ্গে আমার বৈঠক তার প্রমাণ।’
প্রকল্প বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে হাইকমিশনার বলেন, ভারতের পক্ষ থেকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এগুলো সমাধান করা হবে।
ভারতীয় অর্থায়নে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে উপদেষ্টার সামনে তুলে ধরেন হাইকমিশনার এবং এই প্রকল্পগুলো এগিয়ে নেয়ার ব্যাপারে জোর অঙ্গীকার জানান।
বাংলাদেশ ও ভারত এ পর্যন্ত তিনটি লাইন অফ ক্রেডিট চুক্তি সই করেছে। প্রথমটি ৮৬২ মিলিয়ন ডলারের, যা ২০১০ সালের আগস্টে সই হয়। দ্বিতীয়টি দুই বিলিয়ন ডলারের, যা ২০১৬ সালের মার্চে সই হয় এবং তৃতীয়টি সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারের, যা ২০১৭ সালের মার্চে সই হয়।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে যেকোনো বৈঠক আয়োজনের ক্ষেত্রে নিয়মিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের বৈঠকের সম্ভাব্যতা নিয়ে এক সাংবাদিক জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যে প্রক্রিয়া আছে, সে অনুযায়ী আমরা এগোব।’
তিনি বলেন, ‘এমন নয় যে তারা এক মাস আগে এ ধরনের বৈঠক চাইবে; বরং একটি পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘তারা ১০০ শতাংশ নিশ্চিত নন যে মোদি ইউএনজিএতে (জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন) থাকবেন। আসলে তারা যদি দেখা করতে না চায়, তাহলে কিছু করার নেই।’
এর আগে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস দাবি করেছিল, চলতি সপ্তাহের শুরুতে বাংলাদেশ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করেছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রতিনিধি দলের ব্যাপারে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, প্রতিনিধি দলের সদস্য ১০ থেকে ১২ জনের বেশি হবে না।
কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তালিকার বাইরেও আরেকটি তালিকা রয়েছে বলে জানান তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যাচ্ছি।’
আগামী ২২ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে পা রাখবেন প্রধান উপদেষ্টা। ২৯ সেপ্টেম্বর তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
আগামী ১০ সেপ্টেম্বর শুরু হবে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশন। আর উচ্চ পর্যায়ের সাধারণ বিতর্ক শুরু হবে ২৪ সেপ্টেম্বর।
এর আগে ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর সামিট অব দ্য ফিউচার অনুষ্ঠিত হবে।
এই সামিটে সব বয়সী নেতা, বিশেষজ্ঞ ও কর্মীরা একত্রিত হবেন। আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা কীভাবে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চাহিদা আরও ভালোভাবে মেটাতে পারে, তা নিয়ে এতে আলোচনা হবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য