টানা ছয় দিন উত্থানের পর এক দিনের বিশ্রাম শেষে আবার পর পর তিন দিনের উত্থান দেখল পুঁজিবাজার।
গত সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ৭৪ পয়েন্টের পর চলতি সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার এক পর্যায়ে সূচক এর চেয়ে বেশি বেড়ে গিয়েও পরে কমে ৪৬ পয়েন্ট। দ্বিতীয় কর্মদিবস সোমবার এক পর্যায়ে সূচক কিছুটা কমে গেলেও শেষ পর্যন্ত ইতিবাচক প্রবণতায় শেষ হয় লেনদেন।
এই তিন দিনে বেড়েছে ১২ট পয়েন্ট। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাধারণ সূচকের অবস্থান একন ৬ হাজার ৪০৭ পয়েন্ট, যা গত ১৬ জুনের পর সর্বোচ্চ। সেদিন সূচক ছিল ৬ হাজার ৪২৫ পয়েন্ট।
দিন শেষে ৬ পয়েন্ট সূচক বাড়লেও লেনদেন অনেকটাই কমেছে।
আগের দিন চলতি বছর প্রথম বছরের মতো দুই হাজার কোটি টাকার বেশি শেয়ার হাতবদল হয়েছিল। লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ১০৫ কোটি ১৪ লাখ ১৫ হাজার টাকা।
সেখোন থেকে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় ৩৬০ কোটি টাকা কমেছে। হাতবদল হয়েছে ১ হাজার ৭৪৪ কোটি ৮৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা।
গত ১৪ আগস্ট থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত টানা ছয় কর্মদিবসে পুঁজিবাজারে সূচক বাড়ে ১৬৭ পয়েন্ট। ২৪ আগস্ট ৩৫ পয়েন্ট দরপতন যে একটি সাধারণ সংশোধন ছিল, সেটি বোঝা যায় তার পর দিনই। সেদিন ৭৪ পয়েন্ট উত্থানের পাশাপাশি চলতি বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়।
রোববার সূচক এর চেয়ে কম বাড়লেও লেনদেন আরও উচ্চতায় পৌঁছে। গত বছরের ৭ অক্টোবরের পর প্রথমবারের মতো লেনদেন দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ায় দেখা যায় উচ্ছ্বাস। এতে স্পষ্ট হয়ে উঠে দীর্ঘ সংশোধন আর অর্থনীতি নিয়ে আতঙ্ক কাটিয়ে বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠছেন।
সোমবার লেনদেন শুরু হয় সূচকের লাফ দিয়েই। শুরুতেই বেড়ে যায় ৩৫ পয়েন্ট। তবে এক পর্যায়ে ১৯ পয়েন্ট কমেও যায়। পরে সেখান থেকে আবার বেড়ে গিয়ে আগের দিনের চেয়ে ৩৯ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হতে থাকে বেলা ১১ টা ৪ মিনিটে।
শেষ দিকে সূচক কমে যায় কি না এমন পরিস্থিতি তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত ইতিবাচক থেকেই শেষ হয় লেনদেন।
সূচকে পয়েন্ট যোগ হলেও দরবৃদ্ধির চেয়ে দরপতনই বেশি হয়েছে। লেনদেন হওয়া সিকিউরিটিজের মধ্যে ১২৩টি দর বেড়েছে, কমেছে ১৮৮টির এবং ৭১টির লেনদেন হয়েছে আগের দরেই।
লেনদেনের বিষয়ে ট্রেজার সিকিউরিটিজের চিফ অপারেটিং অফিসার মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাইরে থেকে কিছু ফান্ড আসার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ মুভমেন্টের কারণে বাজারে একটা লিকিউডিটি তৈরি হয়েছে।
‘এখন দেখা যাচ্ছে, ফ্লোর প্রাইজ থেকে বেশ কিছুটা ওপরে রয়েছে শেয়ারের দাম। ফলে এখানে একটা প্রফিট হয়েছে। যার কারণে অনেকদিন থেকে যাদের ফান্ড আটকে ছিল সেটা রিলিজ হয়েছে। এতে করে যিনি ফার্মাসিউটিক্যালসে ছিলেন সেটা বিক্রি করে টেক্সটাইলে যাচ্ছেন। আবার যারা ৫, ৬ মাস বা একটু বেশি সময় চিন্তা করে বিনিয়োগ করছেন তারা হয়তো অনেকেই ব্যাংকের দিকে যাচ্ছেন। এভাবে বাজারে একটা মুভমেন্ট হচ্ছে। লেনদেনের পরিমাণ তা বলে দিচ্ছে।’
রাজা সেই বস্ত্র খাত
গত এক মাসের বেশি সময় ধরেই এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। মাঝে এক দুই দিন ছাড়া বেশিরভাগ দিনই বস্ত্র খাতেই বেশিরভাগ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।
আগের দিন এই খাতে লেনদেন তিন শ কোটি টাকা ছাড়িয়েছিল। সেখান থেকে অবশ্য কিছুটা কমেছে। হাতবদল হয়েছে ২৯৪ কোটি ৬০ লাখর শেয়ার।
সবচেয়ে বেশি ২৮টি বা ৪৭ শতাংশের বেশি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। ১৭টির অপরিবর্তিত এবং ১৪টির লেনদেন হয়েছে দাম কমে।
তবে শতকরা হিসেবে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে জ্বালানি খাতে। এ খাতে ১২টি বা ৫২ শতাংশের বেশি কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে।
২০০ কোটি ছুঁইছুঁই লেনদেন হয়েছে বিবিধ খাতে।
৮টির দর বেড়েছে এবং ৩টি করে কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে অপরিবর্তিত ও কিছুটা কমে।
প্রকৌশল খাতে তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৮১ কোটি ৯০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।
দরবৃদ্ধির চেয়ে দরপতন বেশি খাতটিতে। ১৭টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ২টির অপরিবর্তিত ও ২৩টির লেনদেন হয়েছে দর কমে।
দেড় শ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতে। ৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ৫টির এবং ১৭টির অপরিবর্তিত রয়েছে।
এ ছাড়া ১০০ কোটি টাকা লেনদেন ছাড়িয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান, খাদ্য এবং জ্বালানি খাতে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে ১টি ছাড়া বাকি ২১টি কোম্পানি দরপতন হয়েছে।
আর খাদ্যে ৪৭ ও জ্বালানি খাতে ৫২ শতাংশের বেশি কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে।
সূচক বাড়াল যারা
সবচেয়ে বেশি ৪ দশমিক ২৫ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে গ্রামীণফোন। শেয়ারটির ১ দশমিক ৫২ শতাংশ দর বেড়েছে।
বিকন ফার্মার দর ১ দশমিক ৯১ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ২১ পয়েন্ট।
অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ সূচকে যোগ করেছে ১ দশমিক ১২ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৫ দশমিক ৫১ শতাংশ।
এ ছাড়া বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, পূবালী ব্যাংক, পাওয়ার গ্রিড, বেক্সিমকো লিমিটেড, ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলনও আইএফআইসি ব্যাংক সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ১০ দশমিক শূন্য ৯৫ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ০.৭৫ পয়েন্ট সূচক কমেছে লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশের কারণে। শেয়ারটির দরপতন হয়েছে ১.২২ শতাংশ।
এর পরেই ০.৭৫ পয়েন্ট সূচক কমেছে স্কয়ার ফার্মার দরপতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে শূন্য দশমিক ৫২ শতাংশ।
আইসিবির দর ১.২৩ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে শূন্য দশমিক ৬৯ পয়েন্ট।
এছাড়া ওরিয়ন ফার্মা, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, আইডিএলসি, লঙ্কাবাংলা, তিতাস গ্যাস, ইউনাইটেড পাওয়ার ও ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৪ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট।
দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০
দর বাড়ার শীর্ষে রয়েছে জিবিবি পাওয়ার লিমিটেড। শেয়ারটির দর ২ টাকা বা ৯.৭১ শতাংশ বেড়ে সর্বশেষ ২২ টাকা ৬০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।
২ হাজার ৪৪৯ বারে কোম্পানির ৫৬ লাখ ৮৪ হাজার ৩৬০টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। আজ কোম্পানিটির দর বেড়েছে ২ টাকা বা ৯.৪৮ শতাংশ। শেয়ারটি সর্বশেষ ২৩ টাকা ১০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।
অ্যাপেক্স ফুডস লিমিটেড তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে। কোম্পানিটির ৮.৭৪ শতাংশ বেড়েছে। ক্লোজিং প্রাইস দাঁড়িয়েছে ২৩৩ টাকা ৮০ পয়সা।
এ ছাড়া তালিকায় নাম লিখিয়েছে- আমান ফিড, ওরিয়ন ইনফিউশন, ন্যাশনাল টি, ইয়াকিন পলিমার, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি এবং গোল্ডেনসন।
দরপতনের শীর্ষ ১০
দরপতনের শীর্ষে রয়েছে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। শেয়ারটির দর ৩ টাকা ৭০ পয়সা বা ৬.৩৭ শতাংশ কমেছে।
সোমবার কোম্পানিটি সর্বশেষ ৫৪ টাকা ৪০ পয়সা দরে লেনদেন হয়। এদিন কোম্পানিটি ১ হাজার ১০৮ বারে ৯ লাখ ৬৭ হাজার ৬২৫টি শেয়ার লেনদেন করেছে। যার বাজার মূল্য ৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
উত্তরা ফাইন্যান্স এই তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। দর ১ টাকা ৯০ পয়সা বা ৪.৮২ শতাংশ কমে ৩৭ টাকা ৫০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দরপতন হয়েছে গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালসের। ৪.৪০ শতাংশ দর কমে দর দাঁড়িয়েছে ৩৬ টাকা ৯০ পয়সা।
এর পরেই ছিল ইসলামী ইন্স্যুরেন্স। ২ টাকা ৬০ পয়সা বা ৪.২৭ শতাংশ কমে শেয়ারটি ৫৮ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হয়।
তালিকায় থাকা কোম্পানিগুলো হচ্ছে- হাক্কানি পাল্প, ওরিয়ন ফার্মা, ওয়াটা কেমিক্যাল, বে-লিজিং, প্রিমিয়ার লিজিং ও ফনিক্স ফাইন্যান্স।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
মন্তব্য